দেহ পাবি, মন পাবিনা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: সোম, ০৯/০৮/২০১০ - ১:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিরোনামে দেয়া সংলাপটি শোনেননি বা জানেননা এমন বাংলাদেশী বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এটি ঢাকাই চলচিত্রের একটি কমন সংলাপ যেটি ভিলেনের কবলে পড়া নায়িকা ভিলেনের উদ্দেশ্যে বলে থাকেন। কোলকাতার চলচিত্রের কথা জানিনা। তবে সেখানেও এমন সংলাপ থাকার কথা; কারণ, মুম্বাইয়ের হিন্দী চলচিত্রেও এমন সংলাপ শুনেছি। আমরা জানি ঢাকাই চলচিত্রে নায়িকার তনু-মন নায়কের প্রতি সমর্পিত, এবং ভাইস-ভার্সা

শিরোনামে দেয়া সংলাপটি শোনেননি বা জানেননা এমন বাংলাদেশী বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এটি ঢাকাই চলচিত্রের একটি কমন সংলাপ যেটি ভিলেনের কবলে পড়া নায়িকা ভিলেনের উদ্দেশ্যে বলে থাকেন। কোলকাতার চলচিত্রের কথা জানিনা। তবে সেখানেও এমন সংলাপ থাকার কথা; কারণ, মুম্বাইয়ের হিন্দী চলচিত্রেও এমন সংলাপ শুনেছি। আমরা জানি ঢাকাই চলচিত্রে নায়িকার তনু-মন নায়কের প্রতি সমর্পিত, এবং ভাইস-ভার্সা। ভিলেন কবলিত বিপন্ন নায়িকা এভাবে নায়কের অস্তিত্বের কথা ভিলেনকে জানিয়ে হুঁশিয়ার করেন বা তাকে আরো আগাতে নিরুৎসাহিত করেন। ভিলেন বাস্তববাদী মানুষ তাই সে নায়িকার এমন চালবাজিতে ভোলেননা, সে মনের তোয়াক্কা না করে নায়িকার দেহকে অধিকার করতে উদ্যত হন। এরপর কী কী ঘটে আমরা জানি, সেগুলো বলা নিষ্প্রয়োজন। তবে চলচিত্রের শেষ প্রান্তে কাহিনীকার/পরিচালক আমাদেরকে এমন একটা ধারণা দিয়ে আশ্বস্ত করতে চান যে শেষতক নায়কই নায়িকার দেহ-মনের অধিকারী হয়েছেন, এবং ভাইস-ভার্সা।

চলচিত্রের কথা বাদ দিয়ে আমাদের নিজেদের কথা ভাবি। খুব ছোটবেলা থেকে যখন আমাদের মন-হৃদয় ইত্যাদি ব্যাপারে কোন জ্ঞান তৈরি হয়না তখনও আমাদের মন ভালো থাকে, মন খারাপ হয়। ঐ বয়সে কিছু চেয়ে বা না চাইতে পেলে ভালো লাগে। আবার কিছু চেয়ে না পেলে মন খারাপ হয়। একই ঘটনা মোটামুটি আমাদের সারা জীবনভর চলে। খুব ছোটবেলা থেকে শুরু করে আমাদের চারপাশের মানুষেরা আমরা কখন কী চাই তার খুব কমই জানতে আগ্রহী হন। আর জানতে পেলেও তা দেবার ব্যবস্থা করা হয় আরো অনেক কম - তা সাধ্যের সীমায় থাকুক আর না থাকুক। চাওয়াটা বস্তুগত না হলেও তা পূরণ করতে অন্যের আগ্রহ কমই থাকে। এমনকি নিকটজনদের মধ্যে যাদেরকে আমরা প্রিয়জন মনে করি তাদের আচরণও খুব ব্যতিক্রম কিছু হয়না। এভাবে চারপাশের মানুষের অবজ্ঞা, অবহেলা, অসামর্থ আমাদের মনকে তাদের সীমার বাইরে নিতে থাকে। আমাদের মন ক্রমশঃ অন্যের জন্য অধরা হতে থাকে। আপাতদৃষ্টিতে এই ব্যাখ্যাটিতে আমাদের মনকে লোভীর মন বলে মনে হলেও আসলে তা নয়। মনের চাহিদা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার আর চাহিদা তৈরি হলেই তার যোগান দিতে হবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু মন অভিমানী, তাই যুক্তির বেড়াজালে সে আবদ্ধ থাকতে চায়না।

বয়ঃসন্ধিকাল থেকে যখন আমাদের শরীর পরিবর্তিত হতে থাকে, শারিরীক চাহিদা তৈরি হতে থাকে তখন থেকে আমরা এই বিশেষ চাহিদাটার সাথে মনকে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করি। এটি আসলে একধরণের সামাজিক শিক্ষার ফল। আমরা গর্বের সাথে বলি, ইতর প্রাণীরা শুধু জৈবিক তাড়নায় মিলিত হয়; কিন্তু মানুষ শুধু দেহের সাথেই মিলেনা - মনের সাথেও মিলে। সামাজিক শিক্ষা আমাদের এই ধারণা দেয় যে, দুজন নারী-পুরুষ শারিরীকভাবে মিলতে হতে হলে তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে হবে। অথবা ভালোবাসা থাকুক বা না-ই থাকুক তাদের মধ্যে অন্ততঃ বৈবাহিক সম্পর্ক থাকতে হবে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকার শর্তটা দুনিয়ার অনেক জায়গায়ই শিথিল হয়ে গেছে। এমনকি দুজন মানুষ মানে একজন নারী আর একজন পুরুষ অমন শর্তটাও শিথিল হয়ে গেছে। পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা এখনো গ্রহনযোগ্য শর্ত বলে মনে করা হয়। বিদ্যমান আইনগুলো আবার ভালোবাসা-টাসা কিছু বোঝেনা। তাদের জিজ্ঞাস্য দুজনে প্রাপ্তবয়স্ক কিনা, দুজনের এই ব্যাপারে অপ্রভাবিত সম্মতি আছে কিনা। শেষমেশ ব্যাপারটা এই দাঁড়ালো যে দুজন মানুষের পারস্পারিক সম্মতি থাকলেই তারা দৈহিকভাবে মিলিত হতে পারবে। এভাবে দেহতো পাওয়া গেল, কিন্তু মন? মন কি ততক্ষণে অচ্ছ্যুৎ হয়ে গেছে?

না, আমরা এত সহজে মনের ব্যাপারে হাল ছাড়িনা। এই জন্যই সামনা-সামনি, টেলিফোনে বা ইন্টারনেটে আমাদের এত গুজুর গুজুর। স্পর্শ করা যায় অথবা যায়না এমন সব উপহারের এই জন্য এত রমরমা বাণিজ্য। এই ব্যাপারে নানা সেক্টরে আরো কত যে বাণিজ্য ছড়িয়ে-লুকিয়ে আছে তা বলে শেষ করা যাবেনা। এই প্রচেষ্টা, এই উদ্যোগ, এই বাণিজ্য সবই বিবাহপূর্ব, বিবাহোত্তর বা বিবাহ-বহির্ভূত প্রেম-ভালোবাসার জন্য। মোবাইল ফোন, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, পার্ক-রেস্টুরেন্ট উপচে পড়ে আমাদের ভালোবাসার কথায়। আমাদের মুখ আর কানের ক্রমাগত পরিশ্রম হতে থাকে। আমরা মোটামুটি সান্ত্বনা পাই যে এবার মনের একটা গতি হল, দেহ যথাসময়ে যথারীতি আসবে।

মনের গতি হবার ব্যাপারে আমাদের এই সান্ত্বনা যে নিতান্তুই দুর্বল ভিত্তির উপর দাঁড়ানো সেটা টের পেতে থাকি যখন মন কষাকষি বা ভুল বোঝাবুঝিগুলো শুরু হয়। ব্যাপারটার অসারত্ব আরো প্রতিভাত হয় যখন অনেকক্ষেত্রে তৃতীয় জনের উপস্থিতি স্পষ্ট হতে থাকে এবং পরিণতিতে সম্পর্কটাই ভেঙে যায় অথবা সম্পর্কটা মচকে গিয়ে ঝুলে থাকে। মন কষাকষি বলুন, ভুল বোঝাবুঝি বলুন আর আরেকজনের সাথে প্রেমই বলুন সব কিছুই প্রমাণ করে দুজনের অন্ততঃ একজনের ক্ষেত্রে একটা পর্যায়ে অন্যজনের মনকে অধিকার করে রাখার বা নিজের মনকে অন্য জনের প্রতি সমর্পণ করার ইচ্ছায় ঐকান্তিক ছিলেননা। কোনকালে অমন ইচ্ছে নূন্যতম থেকে থাকলেও অন্য কোন প্রলোভন বা অন্য কোন আশা সে ইচ্ছের উপর জয়ী হয়েছে। যুগের পর যুগ ধরে মানুষ এই অসৎ প্রবণতা দেখিয়ে আসছে, অন্য অপশনে প্রলোভিত হচ্ছে। এসব নিয়ে আমাদের লজ্জা, অনুশোচনা বা দুঃখ নেই। এরপরও আমাদের মুখে মনের জয়গান গাওয়াটা কতটুকু শোভন?

বলতে পারেন সব সম্পর্কই তো এমন নয়। সারা জীবন অটুট থাকে এমন সম্পর্কও তো আছে। তা আছে, তবে সেখানেও একজনের চাওয়া-পাওয়ার সাথে আরেকজনের চাওয়া-পাওয়ার অমিল আছে। মতের অমিল আছে (সেটা থাকাই স্বাভাবিক), ব্যক্তিত্বের সংঘাত আছে, কে কার জন্য কতটুকু স্যাক্রিফাইস করল তা নিয়ে বিবাদ আছে। বাহ্যিকভাবে অটুট সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাই দেহ-মনের দূরত্ব তৈরি হয়।

আবার চলচিত্রের কথায় ফিরে যাই। চিত্রপরিচালক নায়ক-নায়িকাকে বাসরঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভাবেন তাঁর কাজ শেষ। যেহেতু নায়ক-নায়িকা পরস্পরকে পেয়েছে তাই আমরা স্বস্ত্বির নিঃশ্বাস ফেলি, আনন্দিতও হই। বাস্তবেও অল্প বা অনেক প্রতিকূলতা শেষে আমাদের পরিচিত কোন জুটি পরস্পরকে পেলে আমরা আনন্দিত হই। কিন্তু একথা কে বলতে পারে যে, নায়িকা যখনই নায়ককে আলিঙ্গন করেন তখন প্রতিবারই নায়িকার মনজুড়ে শুধু এই নায়কই থাকেন? অথবা প্রতিবার নায়িকাকে আলিঙ্গনরত নায়কের মনজুড়ে প্রতিবারই শুধু এই নায়িকাই থাকেন? না, এমন কথা কেউ বলতে পারেননা। মানুষ নাকি একটানা তিন মিনিটের বেশি কোন বিষয়ে অ্যাটেনশন ধরে রাখতে পারেনা। সুতরাং কারো একান্ত নৈকট্যের সময়েও একজনের মন জুড়ে শুধুই তার সঙ্গী/সঙ্গিনী একথা অনেক সময়েই হয়তো সত্য, তবে সবসময়ে না। বুদ্ধিমান চিত্রপরিচালক সাধারণত ঐ জটিলতায় যেতে চাননা। ঐ জটিলতার পথ ধরে হাঁটেন টেলিভিশনের মেগাসিরিয়ালের পরিচালকরা। তারা প্রায়ই দেখাতে চান দেহদ্বয় অভিসারী হলেও মনদ্বয় অপসারী হয়।

পদার্থবিজ্ঞান একই সময়ে একই স্থানে একাধিক বস্তুর উপস্থিতিকে স্বীকার না করলেও মানুষ তার মনে একই সময়ে বহুজনকে একই প্রকার পদে ঠাঁই দিতে পারে। অনেককেই দেখেছি, আপনারাও দেখেছেন, যারা একইসাথে একাধিকজনের সাথে প্রেম (প্রচলিত অর্থে) করেন। এমন ব্যক্তিদের সবাই যে ভণ্ড-প্রতারক তা নন্। একজনের সাথে আলাপের সময় অন্যজনের প্রসঙ্গ হয়তো উহ্য থাকে, কিন্তু সেটা সব সময় প্রতারণার উদ্দেশ্যে নয়। দুজনকেই তীব্রভাবে (সমান তীব্র নয়) ভালবাসার কারণে, দুটি সম্পর্ককেই একসাথে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে এমন ছলনা করা হতে পারে। প্রশ্ন করতে পারেন, এটি কি প্রতারণা নয়? আমি বলব, হ্যাঁ এটি এক ধরণের প্রতারণাই বটে, তবে তা বৈষয়িক উদ্দেশ্যে নয়। মানুষের মনের এই বহুমাত্রা ও বিচিত্রগামীতা তার নিজের সৃষ্টি নয় - এটি মানবজন্মসূত্রে পাওয়া। লোকে এই বহুমাত্রার বা বিচিত্রগামীতার নিয়ন্ত্রণ কামনা করে। তা অমন কামনা লোকে করতেই পারে, কিন্তু চাইলেই কি তা পাওয়া যায়?

প্রেম (প্রচলিত অর্থে) করার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠতা অঘোষিত আবশ্যিক শর্ত। এখানে একনিষ্ঠতা মানে দেহ-মনে একনিষ্ঠতা। এই আবশ্যিক শর্ত যে মানুষ কমই মানতে পারে সেটা প্রমাণ করার দরকার পড়েনা। বিয়ের ক্ষেত্রে এই শর্ত আরো কঠোর। শারিরীকভাবে একনিষ্ঠ না হলে তা আদালতে পর্যন্ত তোলা যাবে। মনের দিকে একনিষ্ঠ না হলে সেখানে আইনগত বিচ্ছেদ চাওয়ারও সুযোগ থাকে। যে মানুষ বিবাহপূর্বকালে বহুবল্লভ/বহুবল্লভা থাকে, যে মানুষ সেকালে একসাথে একাধিকজনকে মনে ঠাঁই দেয়, বিয়ের পর সে রাতারাতি ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে গেছে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। এমনকি বিবাহপূর্বকালীন সময়ে ভেজিটেবল থাকা মানুষটা বিয়ের পর ক্ষুদে ডন জুয়ান হয়ে উঠবেনা এই নিশ্চয়তা নেই। আসলে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি এইক্ষেত্রে মানুষকে আশা দিতে পারে, নিশ্চয়তা দেয়না।

যারা ভালোবেসে বিয়ে করেন তাদের দাম্পত্যসম্পর্কের সাথে যারা তথাকথিত সেটেল ম্যারেজ করেন তাদের দাম্পত্যসম্পর্কের অমিল খুব কম। আগে জানা থাকলে, পরে কিছু সুবিধা হবে এমন ভাবাটা একটা দুরাশা। আমরা ছোটবেলা থেকেই কমপক্ষে একজোড়া দম্পতিকে (আমাদের বাবা-মা) খুব কাছ থেকে দেখে থাকি। তবু নিজে বিয়ে না করা পর্যন্ত আমারা কেউ ধারণাও করতে পারিনা দাম্পত্যসম্পর্কটা আসলে কী? এই অজানা পরিস্থিতিতে পূর্বরাগ ধন্বন্তরী কোন দাওয়াই নয়। যে কোন সম্পর্ক জটিল ক্রাইসিসের মধ্য দিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তার ওয়েল্ডিং কতটা মজবুত, পারস্পারিক আস্থা ও নির্ভরতা কতটা গভীর তা পরীক্ষিত হয়না। ঢাকাই নাটক-সিনেমাতে প্রেমকে বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোটাকে জাতীয় সমস্যা হিসাবে দেখাতে চাইলেও মূল ক্রাইসিসটা শুরু হয় বিয়ের পর। সেখানে বিয়ের আগের প্রবল এক্সটার্নাল ফ্যাক্টররা নিতান্তই গৌণ। দুই ইন্টার্নাল ফ্যাক্টরের চাপে পূর্বরাগ তার এন্ডুরেন্স লিমিট পার হয়ে যেতে চায়। এমনিতেই বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে (তা যে প্রক্রিয়াতেই বিয়ে হোকনা কেন) ঠোকাঠুকিগুলো যখন শুরু হয় তখন কী চাইলাম আর কী পাইলাম জাতীয় ভাবনা মাথায় আসতে থাকে। সেই সাথে পূর্বতন-বর্তমান-সম্ভাব্য সব অপশনের সাথে বিদ্যমান বাস্তবতাকে তুলনা করা চলতে থাকে মনে মনে, কখনো কথায় কথায়। আমার মত মেয়ে বলে তোমার মত অপদার্থের ঘর করছে, অন্য কেউ হলে লাথি মেরে এই সংসার ছেড়ে চলে যেত অথবা কত ভাল ভাল মেয়েরা আমার পিছে ঘুরেছে, তাদের বাবা-মারাও রাজি ছিলেন, খালি আমার কপালে দুর্গতি ছিল বলে শেষতক তোমার মত বউ জুটেছে এই জাতীয় সংলাপ তারই বহিঃপ্রকাশ।

মন আর মগজ, হৃদয় আর বুদ্ধির সম্পর্ক আর পার্থক্য নিয়ে যে অনিঃশেষ বিতর্ক আছে তা আমরা জানি। শারীরবিদ্যা-ভৌতবিদ্যার ব্যাখ্যার সাথে দর্শন-মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা যে মিলবেনা তাও আমরা জানি। আমরা নিশ্চিত ভাবেই জানি সেই বিতর্কের ফলাফল যাই হোকনা কেন দেহ-মন নিয়ে আমাদের দুর্গতির শেষ হবেনা; প্রেম কী আর ভালোবাসাই বা কী সেই সংজ্ঞায়ণও শেষ হবেনা। তবু কোন প্রেম-ভালোবাসা মনের মত চঞ্চল, বহুমাত্রিক ও বহুগামী ধারণাকে দেহের ফ্রেমে আবদ্ধ করে একমাত্রা ও একনিষ্ঠতায় চালাতে পারবেনা।

মানুষের বয়স যখন বাড়তে থাকে তখন সে আস্তে আস্তে নিঃসঙ্গ হতে থাকে। শৈশব-কৈশোর-যৌবনের প্রিয় মানুষেরা আস্তে আস্তে দূরে যেতে যেতে অচেনা হয়ে যায়। মনের কথা বলার মত, বোঝার মত মানুষ কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় চলে যায়। শারিরীক শক্তি, মনের জোর আর যৌবনের মত সম্পর্কের বাঁধনও কেবল পূর্বস্মৃতির চিহ্ন বয়ে বেড়ায়। নিতান্ত কথা বলার মানুষও তখন চারপাশ হাতড়ে পাওয়া যায় না।

মানুষ যখন মারা যায় তখন তার মৃতদেহের সৎকার কিভাবে হবে তা নিয়ে তার নিকটজনেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে কবরস্থ করা বা ভস্ম করার চেষ্টা হয়। কেউ ভাবেননা যাবার বেলায় তার মনে কী ছিল - কী আশা বা কষ্ট নিয়ে সে চলে গেল। মাটি বা আগুন তার দেহকে গ্রাস করে, নিঃশেষিত করে - কিন্তু মন? সে তখনো অধরাই থেকে যায়। হায় তার মনের খবর কেউই নিলনা!


মন্তব্য

দুর্দান্ত এর ছবি

ইদানিং পেটের দায়ে কিছু ইন্ভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কারের সাথে চিঠি চালাচালি করতে হচ্ছে। তাদের প্রতিটি চিঠির গোড়ায় একটা কথা লেখা দেখিঃ

"Past performance is no guarantee of future results, and current performance may be lower or higher than the performance data quoted"

---

যেকোন সুসম্পর্কেই সাম্যভাব দরকার। আগের প্রজন্মের কিছু নারী ভাতকাপড়ের জন্য পুরুষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, তাই মন বা শারিরীক সন্তুষ্টির প্রশ্ন ভাতকাপড়ের নিশ্চয়তার কাছে হেরে গিয়েছিল। এখন এই নির্ভরশীলতা কমছে, তাই শুধু গায়ের জোরে সংসার টিকিয়ে রাখা যাবে না। আমার প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়েরই প্রথম সংসার টেকেনি, নানান কারনে। প্রথম সংসার না টেকাতে পারাকে আগে সামাজিক অপরাধ মনে করা হত, ইদানিং এটাকে আগের চাইতে অনেকটাই সহজ করে নেয়ার মানিসিকতা দেখে ভাল লাগছে।

---
যে সম্পর্কে শারিরীক সন্তুষ্টি নেই, সেখানে যতই মনের মিল থাকুক সেটা কি আর সংসার থাকে?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. এই চিঠির মানে আমি যা বুঝলাম তা হচ্ছে, "তুমি ভালো-মন্দ যাই হও না কেন (অতীতে, বর্তমানে বা ভবিষ্যতে) সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আসলে কোন কিছুই বিবেচ্য না। আমার যখন যেভাবে ইচ্ছা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করব, সেভাবেই আচরণ করব"।

২. গায়ের জোরে সংসার এখনো টেকে। অর্থনৈতিক ব্যাপারটা মুখ্য, তবে একমাত্র নয়। এর বাইরে সামাজিক নিরাপত্তা, সংস্কার এমন সব বিষয় আছে। আমার এক বান্ধবী আছেন যিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী, তিনি বলেছিলেন, "অর্থনৈতিক স্বাবলম্বন নারীর ক্ষমতায়ণকে নিশ্চিত করেনা"। তা যে করে না সেটা তিনি নিজের জীবন দিয়ে (মরে গিয়ে নয়) সেটা বুঝেছেন। তিনি এটাও বলেছিলেন, "আমি এই লোকের (তার স্বামী) সাথে থাকতে চাইনা, তবে বিবাহবিচ্ছেদ করলে আমার পক্ষে একা থাকা আরো অনিরাপদ হয়ে যাবে। তখন গায়ে পড়ে এসে খোঁজ-খবর করার, সুযোগ নেবার লোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে"। যে সংসার টেকার না তাকে কোন যুক্তি বা জোড়াতালি দিয়ে টেকানোর চেষ্টা না করাই উচিত। একে পজেটিভলি দেখাই উচিত। যদিও সেই দেখার চোখ এখনও আমাদের সমাজে অর্জিত হয়নি।

৩. যে সম্পর্কে শারিরীক সন্তুষ্টি নেই, সেখানে যতই মনের মিল থাকুক সেটা কি আর সংসার থাকে?

সেটা সংসারের লাশ। আর এই লাশ যতদিন কাঁধে বয়ে বেড়াবেন, ততই দুর্গন্ধ ছড়াবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমার একটা মোটাদাগের অবজার্ভেশন আছে। অবজার্ভেশনই মাত্র- সিদ্ধান্ত নয়।
আমাদের প্রচলিত সামাজিকতায় সুখী দাম্পত্যে যে কোন একজনই আসলে সর্ব্বোচ্চ ছাড়টুকু দেয়। তত্বে হয়তো বলবে- দুজনের পারস্পরিক ত্যাগেই সুখী দাম্পত্য। কিন্তু বাস্তবে ছাড়টুকু সমানুপাতিক হয়না।

ব্যক্তিগতভাবে আমি শারীরিক এবং মানসিক একগামীতায় বিশ্বাস করি- অন্ততঃ বিয়ের পর। শারীরিক এবং মানসিক সততা একটা দম্পতির পরস্পরের প্রতি দেয়া কমিটমেন্ট।
মানুষ যেহেতু মানুষ তারপক্ষে কি আসলেই সম্ভব অতোটা কমিটেড থাকা? শরীর কিংবা মন অথবা শরীর এবং মন দুটোই বাঁধন ছিড়তে পছন্দ করে। কিন্তু ঐ যে কমিটমেন্ট। দুজন মানুষের পরস্প্রের প্রতি প্রতিশ্রুতি।
নিজের সঙ্গে বোঝাপড়াড়া দরকার। এই প্রতিশ্রুতি পালন করার মতো শক্তি না থাকলে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করাটাই ভুল অথবা শুরুর পর প্রতিশ্রুতি পালন করতে না পারলে সম্পর্ক জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখা আরো মারাত্বক ভুল।

নিজেকেই প্রশ্ন করি- মুলতঃ বহুগামী মানুষের এতো প্রতিশ্রুতিতে যাওয়ার দরকার কি? কোন দরকার নাই!
কিন্তু ঐ জ্ঞানবৃক্ষের ফল ভক্ষন যদি করবেনই তার জন্য মুল্য পরিশোধ করতে ও প্রস্তুত থাকেন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার গোটা বক্তব্যর সাথে প্রবলভাবে সহমত।

ছাড় দেবার ব্যাপারে কোন কালেই 'ইনসাফ' হয়নি। ছাড় দেবার মাত্রাটা কাছাকাছিও হয়না। আর যে ক্রমাগত ছাড় দিয়ে গেল তার কোন মূল্যায়ণও হয়না।

যারা একনিষ্ঠ থাকতে পারেননা তাদের উচিত নয় বিয়ে ধরণের ব্যাপারে যাওয়া। একনিষ্ঠ থাকার প্রতিশ্রুতি দেব আবার বহুগামী হব তাতো হয়না। তবু বিয়ে নামের সামাজিক প্রতিষ্ঠানটি থেকে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর লোভে বহুগামীরাও বিয়ে করে বা অনুরূপ প্রতিশ্রুতিতে যায়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্পর্শ এর ছবি

ইয়ে, বহুবিবাহ তো করা যায়। চিন্তিত


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হুঁ তা করা যায়, তবে যারা বহুবিবাহ করেন তারা মনের মত ফালতু বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না মনে হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

মানুষের মনের এই বহুমাত্রা ও বিচিত্রগামীতা তার নিজের সৃষ্টি নয় - এটি মানবজন্মসূত্রে পাওয়া। লোকে এই বহুমাত্রার বা বিচিত্রগামীতার নিয়ন্ত্রণ কামনা করে। তা অমন কামনা লোকে করতেই পারে, কিন্তু চাইলেই কি তা পাওয়া যায়?
পাশে থাকাই মনের মিল প্রমাণ করেনা। তাই কবি ইয়ে স যতার্থই বলেছেন-

Those that I fight I do not hate / Those that I guard I do not love

ওলি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মানুষ জানেনা সে আসলে কী চায় বা কী চেয়েছিল।
মানুষ জানেনা ভবিষ্যতে সে কী চাইবে বা কী করবে, কোন ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়াই বা কী হবে।
মানুষ তার অতীত আচরণের ব্যাখ্যা দেয় বর্তমানের অবস্থানে দাঁড়িয়ে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দ্রোহী এর ছবি

আমিতো মনে মনে অনেকেরই দেহ পেতে চাই। তাদের নাম বলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের/স্ত্রীর হাতে মার খেতে চাচ্ছি না। হো হো হো


কি মাঝি, ডরাইলা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মেম্বর ইয়ে হইলেও ঈমানদার আছে।

মেম্বর, শুধু আপনি কেন সবাই এটা চায় - তা সেটা সে স্বীকার করুক বা না করুক।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নৈষাদ এর ছবি

আরে ঘটনা কী?

‘ইতর প্রাণীরা শুধু জৈবিক তাড়নায় মিলিত হয়’ – এটাকেই সাধারন সিদ্ধান্ত হিসাবে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ। (সিরাতের একটা লেখায় দুর্দান্তও এই উপসংহার টেনেছেন)। আমি প্রাণী বিশেষজ্ঞ নই, কিন্তু ছোটবেলা থেকে একটি চমৎকার একটি প্রাণী কুকুরকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। কুকুর (স্ত্রী-লিঙ্গ) বাচ্চা প্রসব করে শীতের শুরুতে এবং শুধু মাত্র একটি মাসেই মিলিত হয়। আমার ধারণা কুকুর শুধুমাত্র ‘বংশবৃদ্ধির’ জন্যই মিলিত হয়। অন্যান্য প্রাণীর বেলায়ও ‘মেটিং-টাইম’ বলে একটা শব্দ বহুল প্রচারিত এবং সেই সময়েই তারা মিলিত হয়, যা সবসময়েই বংশবৃদ্ধির সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু মানুষ... কি আর বলব। জানতে ইচ্ছে হয় মানুষ যদি জৈবিক তাড়নায় মিলিত নাই হয় তবে দেশে দেশে বিলিয়ন ডলারের রেডলাইট এরিয়া কেন গড়ে উঠেছে?

অথবা প্রেম-ভালবাসা জাতীয় শব্দের ‘সুগার কোটিং’ দিয়ে ‘জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণীর’ জৈবিক তাড়নাকে জাস্টিফাই করে কন্ট্রাসেপ্টিভ/কন্ডমের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে? আমার ধারণা, সেই বাক্যটার উল্টোটাই সত্য।

হাসান মোরশেদ যেমনটি বলেছেন, আমাদের প্রচলিত সামাজিকতায় সুখী দাম্পত্যে যে কোন একজনই আসলে সর্ব্বোচ্চ ছাড়টুকু দেয়। বাস্তবে ছাড়টুকু সমানুপাতিক হয়না, এবং এদেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেয়েরাই একতরফা ভাবে এই ছাড়টুকু দিয়ে যায়। এবং এই ছাড়টুকুর জন্যই আমরা কম ডিভোর্সের হারের জন্য গর্ব করি।

শারীরিক একগামীতা তেমন কঠিন বিষয় নয় হয়ত। কিন্তু মানসিক একগামীতা?

প্রেম-ভালবাসার মত বিমুর্ত ধারণাকে বুঝার মত বুদ্ধিমাত্তা আমার নেই। আগ্রাসী প্রেম-ভালবাসার সাথে যৌনতার সম্পর্ক নিয়েও আমি খুব নিশ্চিত নই। তবে আমার করপোরেট জীবনে (ব্লগে এসে জানলাম এটা আসলে বেশ অশ্লীল একটা গালি) বিভিন্ন বয়সের (৫৫+ ও আছেন) ম্যাচিওর ‘সুখী’ মানব-মানবীর ‘সুইসাইডাল এক্টিভিটি’ দেখে আমি আর আমার আরেক বিদেশ-গামী বন্ধু মাস ছয়েক আগে ‘প্রেম অন্ধ’ ক্লিশেটা আসলে কতটা সত্য হাঁড়ে হাঁড়ে স্বীকার করে নিয়েছি। অবশ্য আমার বন্ধু এটাও স্বীকার করেছে, ক্লাশ সিক্স থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া পর্যন্ত সে প্রায় সবটা সময়ই অন্ধ ছিল (দেশ ছাড়ার আগে আবেগে আপ্লুত হয়ে জনা পনেরোর নাম মনে করতে পেরেছে)।

দুর্দান্ত এর ছবি

আমার ধারণা কুকুর শুধুমাত্র ‘বংশবৃদ্ধির’ জন্যই মিলিত হয়। অন্যান্য প্রাণীর বেলায়ও ‘মেটিং-টাইম’ বলে একটা শব্দ বহুল প্রচারিত এবং সেই সময়েই তারা মিলিত হয়, যা সবসময়েই বংশবৃদ্ধির সাথে সম্পর্কযুক্ত।

সিরাতের লেখায় আমার বক্তব্যটি ঠিক করে বোঝাতে পারিনি। দুঃখিত। আমি বলেছি অন্যান্য সকল জীব শুধু তাড়নার বশবর্তী হয়েই মিলিত হয়। মিলন=বংশবৃদ্ধি, এরকম উপসংহারে আসার জন্য যে ধরনের কারন-ফলাফল যুক্তি বা ভবিষ্যত চিন্তা বা পরিকল্পনার প্রয়োজন, সেটা মানুষ ছাড়া অন্য প্রানীর ক্ষেত্রে হয় কি না, সেটা এখনো গবেষনার বিষয়। কার্তৃক মাসে সক্ষম কুকুরেরা সন্তানের মুখ দেখতে আকুল হয়ে উঠছে, এটা ভাবতে পারছি না।

মানুষও বেশীরভাগ সময়ে তাড়নার আওতার ভেতরেই থাকে। তবে যেখানে মানুষ ব্যাতিক্রম, সেটা হল কখনো কখনো সে তাড়নার বশবর্তী না হয়েও শুধুই সন্তানের মুখ দেখতে মিলিত হয়। এটা সে করে, বা করতে পারে, কারন সে কারন-ফলাফল এর সম্পর্ক বোঝে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারে। সন্তানাদি চাইছে, কিন্তু হচ্ছে না এমন জুটির ঘড়ি-ক্যালেন্ডার ধরে তাড়নাহীন মিলিত হবার ঘটনা আমার এই যুক্তির প্রমান হতে পারে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. বংশ টিকিয়ে রাখার ব্যাপারটা জৈবিক তাড়নার মধ্যে পড়ার কথা। ইতর প্রাণীদের ক্ষেত্রে যৌনকর্মটা ইনসটিংকটের মধ্যেই আছে। প্রকৃতিই মেটিং সিজন দিয়ে তাকে সীমাবদ্ধ করেছে। মানুষের বুদ্ধিমত্তা আছে আর সে মেটিং সিজন দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে আবদ্ধ নয় বলে তার যৌনকর্মের ব্যপ্তি বিশাল ও বহুমাত্রিক।

২. প্রেম-ভালোবাসার ব্যাপারে সুগার কোটিং-এর বদনাম কিছুটা তো দিতেই পারেন। এই ভণ্ডামী মানুষের মজ্জাগত। সেটাকে কখনো সামাজিকতা, কখনো নান্দনিকতা, কখনো মানবিকতা ইত্যাদি বলে মহান করে তোলা হয় আরকি।

৩. মানসিক একনিষ্ঠতা পরম অর্থে সম্ভব নয়। তবে সেটা বিদ্যমান শারিরীক একনিষ্ঠতা ও সম্পর্কের মাত্রাকে ব্যাহত না করলেই হয়।

৪. আপনার কাছ থেকে কিছু গল্প শোনা আমাদের পাওনা হয়ে গেল দেখছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফকির লালন এর ছবি

আরে বাপ্স, জটিল সবকিছু।

আমার ধারনা, কনজিউমারিজমের যুগে, ভালোবাসার অনেকখানিই ভালো 'বাসা' বা অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে থাকে, নতুবা, ভালো বাঁশেই পরিনত হয়। একালের নায়ক নায়িকারা এত হিসেবী যে চট করে আজকাল আর কুল গোত্রহীন বান ভাসানো প্রেমেটেমে পরে বলে মনে হয়না। তার আগে অবচেতনে কম্প্যাটিবিলিটির বেশ শক্ত হিসেব নিকেশ হয় বলে ধারনা করি। সব মোবাইল ফোনের দোষ, সম্পর্কের সহজলভ্যতায়, সম্পর্কের স্বতস্ফুর্তা আর প্রাণ লোপ পেয়েছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌, ভালোবাসা সব সময়েই ভালো 'বাসা'র উপর দাঁড়ানো ছিল। সেই আমলেও রসিক কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা ধনী বিবাহিতা/বিধবা প্রেমিকা-কাম-স্পন্সর খুঁজতেন। এর ভুরি ভুরি উদাহরণ আপনি জানেন। সাধারণ মানুষদের মধ্যেও জাত-গোত বা শ্রেণী-অবস্থান মিলিয়ে দেখার ব্যাপারটা কাজ করেছে সব সময়ই - আপনি যেটাকে কম্প্যাটিবিলিটি বলছেন। অসম শ্রেণীর প্রেম মূলতঃ বাংলা-হিন্দী সিনেমাতেই সীমাবদ্ধ।

মোবাইল ফোন, ফেসবুক, স্কাইপকে দোষারোপ করাটা মনে হয় ঠিক হবেনা। এগুলোর উপর ভর করা সম্পর্কেও নিশ্চয় এক ধরণের প্রাণ আছে যেটা আমাদের চোখে বা অনুভবে ধরা পড়েনা। সম্পর্কের সহজলভ্যতায় স্বতঃস্ফূর্ততা আর প্রাণ অনেকটাই কমে গেছে ঠিক, তার সাথে পারস্পারিক বিশ্বাসযোগ্যতা মোটামুটি শূন্যের কোঠায় চলে গেছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

জি.এম.তানিম এর ছবি

ভাবালো অনেক... আরো কয়েকবার পড়তে হবে...
চলুক
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পড়ুন এবং ভাবুন, তবে তাতে কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। যে পদ্ধতি অনুসরণ করুন না কেন পরিণতি একই প্রকার হবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মানুষ নাকি একটানা তিন মিনিটের বেশি কোন বিষয়ে অ্যাটেনশন ধরে রাখতে পারেনা।
তার মানে যা করতে হবে তা এই তিন মিনিটের মধ্যেই শেষ করতে হবে? চিন্তিত

বিবাহের ব্যাপারে আমার মতে একেবারে চোখ বন্ধ করে আগুনে ঝাঁপ দেয়া উচিৎ। বিয়ের চাইনিজ রেস্টুরেন্টের আলো-আঁধারিতে বসে লাড়কা-লাড়কির জানাশোনা আসলে একটা সিস্টেম লস। বিয়ে ব্যাপারটাই হলো একটা জুয়া।

আধা আধি জেনে নিয়ে শুরু করা সংসারে যে পরিমান ঝামেলা তৈরী হবে কাউকে একেবারে না জেনে শুরু করা সংসারেও তাই। তবে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আশাহত হবার সুযোগ কম। কারণ এখানে কোনো আশাই তৈরী হয় নাই।

আর মনের ঠিকানা? হে হে হে মরার আগ পর্যন্ত যখন এই ব্যাটার ঠিকানা পাওয়ার চান্স নাই, তখন আমরা আর ঐদিকে না তাকাই। সিনেমার ভিলেনের মতো আমরা মন ছেড়ে দেহ নিয়েই ভাবি বরং। চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যা কিছু করার জন্য মনের অ্যাটেনশন জরুরী না, সুতরাং সময় নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন।

বিয়ে না করেই (যদি সত্য বলে থাকেন) বিয়ের ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ (এটা জুয়া) সঠিক। তবে মানুষ আশাহত হয়ই - তা কারণ থাকুক আর না থাকুক।

নিজের মনের ঠিকানা অন্য কেউ খুঁজে না পাক অন্ততঃ নিজে চিনে রাখুন। তাতে শত কষ্টের মধ্যেও নিজে নিজের সান্ত্বনার জায়গাটা বের করে নিতে পারবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্পর্শ এর ছবি

অসাধারণ লেখা পাণ্ডবদা। ভয় ধরিয়ে দিলেন কিন্তু এসব নিয়ে! ইয়ে, মানে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

স্পর্শ, ভয় পেলে যা হবে ভয় না পেলেও তাই হবে। সুতরাং চোখ বুঁজে ঝাঁপ দিয়ে ফেলুন জলদি। মানুষের effective যৌবনের আয়ু কিন্তু খুবই কম। মোট আয়ুর বেশির ভাগ প্রস্তুতি আর অবসরপূর্ব ছুটিতে চলে যায়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মানুষ জটিল প্রাণী। কিন্তু মন জিনিসটা অন্যবিধ প্রাণীরও আছে বলে সন্দেহ করি।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মন ব্যাপারটাই একটা ভ্রান্ত ধারমা। মূল পোস্টেই আমি কিন্তু বলেছি,

মন আর মগজ, হৃদয় আর বুদ্ধির সম্পর্ক আর পার্থক্য নিয়ে যে অনিঃশেষ বিতর্ক আছে তা আমরা জানি। শারীরবিদ্যা-ভৌতবিদ্যার ব্যাখ্যার সাথে দর্শন-মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা যে মিলবেনা তাও আমরা জানি।

যদি মন আর মগজ একই জিনিষ হয় বা হৃদয় আর বুদ্ধিমত্তার ঠাঁই একই জায়গায় থেকে থাকে তাহলে মন বা হৃদয় সব জীবেরই থাকার কথা। যাকগে, এটা লঘু রচনা। এখানে বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

মোদ্দা কথা হইলো টেনশন নিয়া লাভ নাই। মরতে যখন হবেই তখন আর ভেবে লাভ কি? ফলাফল যখন একই আসবে তাহলে অংক কশারই বা কি দরকার।

পাণ্ডবদা এটা সত্যিকার অর্থেই একটা ভালো লেখা।

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা। আজকাল আপনার দেখাই পাওয়া যায়না, খুব ব্যস্ত নাকি?

অংক কষলেও লাভ নাই। মানুষ বেশিরভাগ সময় হুটহাট করে সব করে ফেলে। আবার বেশি অংক কষলে ভালো ফল পাওয়া যাবে অমনটাও ঠিক না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

চমৎকার লাগল লেখাটা।
পড়তে গিয়ে মনে হলো এটা যেমন ঠিক

সারা জীবন অটুট থাকে এমন সম্পর্কও তো আছে। তা আছে, তবে সেখানেও একজনের চাওয়া-পাওয়ার সাথে আরেকজনের চাওয়া-পাওয়ার অমিল আছে। মতের অমিল আছে (সেটা থাকাই স্বাভাবিক), ব্যক্তিত্বের সংঘাত আছে, কে কার জন্য কতটুকু স্যাক্রিফাইস করল তা নিয়ে বিবাদ আছে। বাহ্যিকভাবে অটুট সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাই দেহ-মনের দূরত্ব তৈরি হয়।

তেমনি এমন ও তো হয় যে কেউ কেউ একজনকেই এতটা ভালবাসে যে মাঝে মাঝে অন্য কাউকে ভাল লাগলেও সেটা তার সেই একজনের প্রতি ভালবাসাকে ম্লান করতে পারে না। তারা পরস্পরের প্রতি সব সময় বিশ্বস্ত থাকে। এটা কি ব্যতিক্রম? নাকি জোর করে বিশ্বস্ত থাকার চেষ্টা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জীবনটাতো একরৈখিক না দিদি, তাই নানা ফ্যাক্টর বিবেচনা করে মানুষকে চলতে হয়। যে অবস্থাটার কথা বললেন সেখানে পারস্পারিক বিশ্বস্ততা আর আছে বলে মনে হয়না - ভাণ আছে কেবল। বিশ্বাস না থাকলেও ভালোবাসা আছে কথাটা কেমন কেমন যেন লাগে, ঠিক ভরসা বা আস্থা করে উঠতে পারিনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তিথীডোর এর ছবি

"বোঝা যায় আধো প্রেম,
আধখানা মন...
সমস্ত কে বুঝেছে কখন!"
সর্ম্পক, শব্দটাই বড় অদ্ভুত...

দারুণ একটা লেখা!!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। মানুষ বলেই সম্পর্কগুলো জটিল আর বহুমাত্রিক।

অটঃ মাউস ঠিক হয়ে যাবার পর সচলে আপনার দেখা খুব কম পাওয়া যাচ্ছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

পাণ্ডবদা, লেখাটা তো খাসা, কিন্তু দেখুন দেখি, আপনার এই 'সংসারোহং অতীব বিচিত্র' বাণী শুনে ওদিকে ধুগোদা আর বিয়া করতে চান্না বলে পোস্ট করে দিছেন! চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধুগো "বিয়ে কর্তে চাইনা" বল্লেইতো আর হলনা। একবার দেশে আসতে দেন, দেখেন ওর বিয়ে দিতে পারি কিনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমি একজনের লগে আড্ডাচ্ছিলাম; তখন কী কারণে যেন কথা ওঠে সেটেল ম্যারেজ নিয়ে। আমি এইটার বিপক্ষে কথা কইতেছিলাম। সে কয়- এইটা একটা আবিষ্কার। একটা মাইয়ারে আবিষ্কার। প্রেম কইরা সেইটা বুঝবেন না।

আমি কইছিলাম- আবিষ্কার যদি বাজে হয়!

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাহলে সেটেল ম্যারেজের উলটো অপশনটা বিবেচনা করা যাক। প্রচলিত অর্থের বিবাহপূর্ব প্রেম করে একজন মানুষকে কতটুকু চেনা যায়-বোঝা যায়? খুব সামান্যই। যদি বিবাহপূর্বকালীন সময়ে একত্রে বসবাস করা যায় তাহলে আরেকটু বেশি জানা-বোঝা যায়, তবে সেটাও যথেষ্ট নয়। কারণ, সেখানে পারস্পরিক দায়িত্ব কম - যে কোন সময় অস্বীকার করাও চলে। ক্রাইসিসগুলোর মধ্য দিয়ে না গেলে কখনোই একটা সম্পর্কের খামতিগুলো চোখে পড়েনা, মানুষটার সীমাবদ্ধতাগুলোও ধরা পড়েনা। তাই প্রেম করে বিয়ে করেও অনেকেই 'বাজে আবিষ্কার' করতে পারেন। অমন উদাহরণ আমাদের চারপাশে ছড়ানো আছে। এমন বাজে আবিষ্কারের পর নিজের নির্বুদ্ধিতা বা কপালকে দোষারোপ করা ছাড়া কিছু করার থাকেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

অ:ট:

সৈয়দ মকসুদকে নিয়ে আপনার লেখাটা কখন সচলে দিচ্ছেন?

--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

guest write rajkonya এর ছবি

অনেক ভাবনার মধ্যে ফেলে দিলেন!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

রাজকন্যা, ভাবলে যে ফল পাবেন; চোখ-কান বুঁজে ঝাঁপিয়ে পড়লেও একই ফল পাবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।