‘স্বাধীন বাঙলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ যা পরবর্তীতে ‘স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র’ নামে পরিচিত হয় তার প্রতিষ্ঠালগ্নে যে দশ জন শব্দসৈনিক জড়িত ছিলেন তাঁদের কয়েকজনের সাক্ষাতকারের উপর ভিত্তি করে সৈয়দ আবুল মকসুদ “স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র অরণ্য-বেতার” নামে একটি রচনা লেখেন যা অক্টোবর ২০০৬-এ প্রকাশিত ‘প্রথম আলো’র ঈদসংখ্যায় ছাপা হয়। রচনাটিতে প্রকাশিত শ ...
‘স্বাধীন বাঙলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ যা পরবর্তীতে ‘স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র’ নামে পরিচিত হয় তার প্রতিষ্ঠালগ্নে যে দশ জন শব্দসৈনিক জড়িত ছিলেন তাঁদের কয়েকজনের সাক্ষাতকারের উপর ভিত্তি করে সৈয়দ আবুল মকসুদ “স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র অরণ্য-বেতার” নামে একটি রচনা লেখেন যা অক্টোবর ২০০৬-এ প্রকাশিত ‘প্রথম আলো’রঈদসংখ্যায় ছাপা হয়। রচনাটিতে প্রকাশিত শব্দসৈনিকদের সাক্ষাতকারগুলো নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। কিন্তু রচনাটির ভূমিকাতে জনাব মকসুদ যে তার নিজস্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ যোগ করেছেন সেটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভূমিকাটির গুরুত্ব এইখানে যে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের ভাষ্য ও ব্যাখ্যা কারা নির্মাণ করছেন সেটা আমাদের ভালোভাবে জানা থাকা উচিত। তাদের দৃষ্টিভঙ্গী কী এবং তাদের গবেষণা ও প্রকাশনার উদ্দেশ্য কী সেটাও আমাদের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার। প্রায় দুই পৃষ্ঠাব্যাপী রচনাটির ভূমিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এখানে উল্লেখ করে আলোচনা করা হল।
“ছয় দফা কোন স্বাধীনতার দাবীনামা নয়। স্বাধীনতার সত্যিকার ঘোষণা আওয়ামী লীগ থেকে আসে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে এক অবিস্মরণীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। ২৬ মার্চ, ২৭ মার্চ বা অন্য কোনো দিনের স্বাধীনতার ঘোষণাকে ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’’ বলে বিবেচিত করা যায় না। ১০ এপ্রিলের আগে প্রদত্ত ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’’ যিনি যখন যেখানেই এবং যে মাধ্যমেই দিয়ে থাকুন না কেন, তার কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো মূল্য নেই। তার যেটুকু মূল্য আছে তা হলো সেই ঘোষণায় স্বাধীনতাকামী মানুষ - যে অল্পসংখ্যক মানুষ ওই ঘোষণা শুনেছিল - অনুপ্রাণিত হয়েছিল।“
এখানে আমরা জানতে পারলাম যে আমাদের আসল স্বাধীনতা দিবস হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল। এর আগে ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত এবং পরবর্তীতে এম এ হান্নান-মেজর জিয়াউর রহমান-আবুল কাশেম সন্দ্বীপ-বেলাল মোহাম্মদ প্রমূখ কর্তৃক পঠিত স্বাধীনতার ঘোষণার কোন মূল্য নেই। তাই ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস হতে পারেনা। মকসুদ সাহেবের বিবেচনায় অয়্যারলেস মারফত দেয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার কোনো মূল্য নেই। সাধারণতঃ কোনো ফর্মাল ঘোষণা রেডিও বা টিভি বা সংবাদ সম্মেলন বা প্রেসনোট মারফত দেয়া হয়। অয়্যারলেস মারফত ঘোষণা দেয়াটা একটা ব্যতিক্রম। অবশ্য অমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু মাথা ঠাণ্ডা করে ঘোষণাটি যে দিতে পেরেছিলেন তাই যথেষ্ট। মকসুদ সাহেব “যে মাধ্যমেই দিয়ে থাকুন না কেন” বলে বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর অয়্যারলেস মারফত ঘোষণাটিকেই নাকচ করতে চাইলেন।
আমরা মনে হয় কুম্ভকর্ণের জাত। নয়তো আমাদের আসল স্বাধীনতা দিবস কোনটা সেটা ১৯৭১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আমরা কেউ আবিষ্কার করতে পারলামনা! ভাগ্যিস মকসুদ সাহেব ছিলেন তাই আমরা আমাদের আসল স্বাধীনতা দিবসটা খুঁজে পেলাম। কিন্তু ২০০৬ সালের পর আরো ৪ বছর কেটে যাবার পরও নতুন আবিষ্কৃত স্বাধীনতা দিবস নিয়ে জনাব মকসুদ বা এই রচনার প্রকাশক ‘প্রথম আলো’ আর কোন লাফ-ঝাঁপ করলোনা কেন? নাকি “বদলে যাও - বদলে দাও” কার্যক্রমের ভবিষ্যত অংশ হিসেবে এই নতুন স্বাধীনতা দিবসটাকে চালু করা হবে?
“শেখ মুজিবকে বাদ দিয়ে, তাঁর পরামর্শ না নিয়ে, খেয়ালখুশিমতো বা স্রেফ আত্মরক্ষার প্রয়োজনে বা নিজের নিরাপত্তার জন্য সেই দুঃসময়ে কোনো ব্যক্তি যদি সামরিক অফিসার জিয়াকে স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য তোষামোদ করে থাকেন বা অনুরোধ করে থাকেন অথবা চাপ দিয়ে থাকেন, তা তিনি যত সদিচ্ছা বা দেশপ্রেম থেকেই করুন না কেন, অনধিকারচর্চা করেছেন, সীমা লঙ্ঘন করেছেন, যা স্রেফ মারাত্মক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।“
এখানে বঙ্গবন্ধু যে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সেই বার্তা চট্টগ্রামেও পাঠানো হয়েছিল সেই সত্যটা একেবারে চেপে যাওয়া হয়েছে। এম এ হান্নান বা মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন; বেলাল মোহাম্মদরা মেজর জিয়াউর রহমানকে সেই ঘোষণা পাঠ করতে অনুরোধ করেছিলেন - এতে সীমালঙ্ঘন বা অনধিকারচর্চা হল কীভাবে? নাকি তখন তাঁদের উচিত ছিল পাকিস্তানের কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু বরাবর দরখাস্ত লিখে সেটার উত্তরের অপেক্ষা করা! এটা ঠিক যে সেসমস্ত ঘোষণার ভাষা হুবহু বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার ভাষা ছিলনা, কিন্তু মূল বক্তব্য একই ছিল। মকসুদ সাহেবের মতে “এটা স্রেফ মারাত্মক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে”। স্বাধীন বাঙলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র স্থাপণ ও সেখান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠ অবশ্যই মারাত্মক অপরাধ - তবে সেটা পাকিস্তানীদের আর তাদের দোসরদের চোখে। মকসুদ সাহেব একটু ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে এভাবে নিজের আসল পরিচয়টা দিয়ে দিলেন!
“স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অর্থ বা শত্রুপক্ষের উসকানিতে বা প্ররোচনায় একতরফাভাবে কেউ - তা তিনি যত বড় ও জনপ্রিয় নেতাই হোন - স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে সেই স্বাধীনতার যুদ্ধ বিন্দুমাত্র আন্তর্জাতিক সমর্থন পেত না, স্বীকৃতি তো কেউ দিতই না, কোনো পরোক্ষ সমবেদনাও কেউ জানাত না; পরিণামে অল্প সময়ের মধ্যেই তা দমন করা পাকিস্তানী সৈন্যদের পক্ষে সম্ভব হতো। ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্বাধীনতা শুধু নয়, ছয় দফাভিত্তিক পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন বা আধা-স্বাধীনতার দাবিও দুর্বল হয়ে যেত। শুধু তা-ই নয়, জাতির জীবনে এক মহাদুর্যোগ ডেকে আনা হতো, প্রাণহানিই ঘটত - স্বাধীনতা আসত না।“
স্বাধীনতার ঘোষণাটি দিয়েছিলেন খোদ বঙ্গবন্ধু। সেটা তিনি আবশ্যিক বিবেচনায়ই দিয়েছিলেন। এই ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকে অর্থের লোভ দেখানো, উসকানি দেবার চেষ্টা বা কোনো প্ররোচনা দেবার চেষ্টা করার চিন্তা বালখিল্যতামাত্র। স্বাধীনতার ঘোষণাটি অবশ্যই একতরফা হতে হবে। সেই একমাত্র তরফটি পূর্ব বাংলার স্বাধীনতাকামী জনগণ। এখানে পাকিস্তানী বা তাদের দোসরদের মত অন্য কোনো তরফ খোঁজার বা তাদের মতামত নেবার কোনো অবকাশ নেই। এম এ হান্নান বা মেজর জিয়াউর রহমান বা আবুল কাশেম সন্দ্বীপ স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তাঁদের কেউ জীবিতাবস্থায় নিজে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন অমন দাবীও করেননি। সবাই জানেন, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। এ’কথা কেউ দাবী করবেনা যে ঐ ঘোষণা পাঠ শুনেই সবাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। বেশিরভাগ মানুষ কোন প্রকার ঘোষণা না শুনেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। যদি ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানীদের দ্বারা নিহত হতেন, অথবা বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে নাও পারতেন তাতেও মুক্তিযুদ্ধ বন্ধ থাকতোনা। মুক্তিযুদ্ধ হুট করে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নয়। দেশের মানুষ জানতো মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। তাই স্বাধীনতার ঘোষণা কোন হঠকারী ব্যাপার নয়। মকসুদ সাহেব এখানে “তা তিনি যত বড় নেতাই হোন” কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণাকে হঠকারী ও অপরিণামদর্শী ব্যাপার হিসাবে দেখাতে চেয়ে খোদ বঙ্গবন্ধুকেই খাটো করার প্রয়াস পেয়েছেন। যাকগে, বাংলাদেশের মানুষ জানেন “তা তিনি যত বড় নেতাই হোন” আসলে কত বড় নেতা, আর তাঁরা একথাও বোঝেন যে অমন উক্তি করা মকসুদ সাহেব কোন গোত্রের লোক।
কেউ কেউ মনে করতে পারেন মকসুদ সাহেব এখানে বুঝি জেনারেল জিয়াকে বোঝাচ্ছেন, আসলে তা নয়। বঙ্গবন্ধু-জিয়া প্রসঙ্গে নেতা বলতে বঙ্গবন্ধুকেই বোঝায়। বঙ্গবন্ধু কোটি কোটি মানুষের কাছে “মুজিব ভাই” বা “শেখ সাহেব” ছিলেন। পক্ষান্তরে জেনারেল জিয়াকে “জিয়া ভাই” বা “জিয়া সাহেব” বলার কেউ ছিলেননা - তিনি তো “ভাই” নন্ তিনি তো “স্যার”।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছে কবে? বাংলাদেশের স্বীকৃতি তো ডিসেম্বরের আগে মেলেনি। তাহলে তার আগে মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যে অল্প সময় (!) পাকিস্তানীরা পেয়েছিল তাতে মকসুদ সাহেবের ফর্মুলামত আমাদের মুক্তিযুদ্ধতো দমন করতে পারা উচিত ছিল। কিন্তু তাতো হয়নি। আসলে মুক্তিযুদ্ধে স্বরূপ মকসুদ সাহেবদের চোখে কখনোই ধরা পড়বেনা।
সত্তরের নির্বাচনের পরে ‘ছয় দফা’‘এক দফা’ হয়ে গিয়েছিল। এই অলিখিত সত্যটা এই দেশের মানুষ জানেন। তাই মুক্তিযুদ্ধ তাঁদের কাছে অপ্রত্যাশিত কোনো ব্যাপার ছিলনা - শুধু এর ভয়াবহতাটা সম্পর্কে তাঁদের ধারণা ছিলনা। মকসুদ সাহেব সেখানে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পরও ছয় দফা ভিত্তিক পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন আর আধা-স্বাধীনতার সুযোগ দেখেছেন। আচ্ছা, আধা-স্বাধীনতা ব্যাপারটা কী? পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও কখনো আধা-স্বাধীনতা বলে কিছু কি কখনো ছিল? পাঠক এখানে কি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কনফেডারেশন গঠনের চেষ্টার গন্ধ পাচ্ছেন না?
মকসুদ সাহেব যত যুক্তিই দিননা কেন, যতই ‘স্বাধীনতা আসত না’ বলুন না কেন ঐসব ‘হঠকারী’ কাজগুলোর পরেও স্বাধীনতা কিন্তু এসেছে। মকসুদ সাহেবদের মত আরো অনেকে ১৯৭১ সালেও নানা যুক্তি-পরিসংখ্যান দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধে কেন আমাদের পক্ষে জয় লাভ করা সম্ভব না, কেন মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া উচিত না সেসব বুঝিয়েছেন। এদেশের না-বুঝ মানুষ সেসব তত্ত্বকথায় কান না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।
“স্বাধীনতার ঘোষণা বা ডাক দেওয়ার অধিকার একটি দেশের দুয়েকজন মানুষের বেশি কারো থাকে না। ওই বেতার কেন্দ্রে আকস্মিকভাবে সেদিন বা সেই কয়েকটি দিন যারা নানা রকম ঘোষণা দিয়েছিলেন বা কথিকা প্রচার করেছিলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার এবং সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দেওয়ার কোনো নৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার তাদের ছিল না। তবে তারা নিজেদের বুদ্ধি ও স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বতোপ্রণোদিত হয়ে যেটুকু করেছেন সে জন্য তারা ধন্যবাদার্হ, এমনকি পুরস্কারযোগ্য। একাত্তরের মার্চ মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার অধিকার ছিল শুধু শেখ মুজিবের অথবা তাঁর নির্দেশপ্রাপ্ত অনুসারীদের কারো। তাঁর পক্ষে সৈয়দ নজরুল বা তাজউদ্দিন আহমদের। কারণ ৩ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত শেখ মুজিব ও তাঁদের নির্দেশেই বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছিল। কোনো কনিষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা বা বেতারকর্মীর নির্দেশে নয়। তাঁরা ছাড়া অন্য কারও - কোনো ব্যক্তির বা অন্য কোনো দলীয় নেতার - স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার একেবারেই কোনো অধিকার ছিল না। বরং পরিস্থিতি পালটে গেলে তা হতো নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার পথে মারাত্মক বাধা বিশেষ।“
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম একদিন দু’দিনের ব্যাপার নয়, এবং এটি আওয়ামী লীগের একার সংগ্রামও নয়। কেউ স্বাধীনতার ডাক দিলেন বা ঘোষণা দিলেন আর দেশের সবাই স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়লেন ব্যাপারটা এমন নয়। যে কোন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জানা মানুষ এই সত্যটা জানেন। যদি স্বাধীনতা সংগ্রাম কোন ডাক বা ঘোষণা নির্ভর হত, তাহলে মাওলানা ভাষানীর “ওয়ালাইকুম আস্সালাম” বা শাজাহান সিরাজের “স্বাধীনতার ইশ্তেহার” পাঠের মাধ্যমেই তার সূচনা হয়ে যেত। ইতিহাসের অমোঘ পরিক্রমায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার যাত্রাপথের কাণ্ডারী হবার দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর উপর এবং একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের হাল ধরার দায়িত্ব তাজউদ্দীন আহ্মদের উপর এসে পড়েছিল।
এটা ঠিক যে তখন স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার নৈতিক অধিকার কেবল বঙ্গবন্ধুরই ছিল, এবং তিনি সেটা পালনও করেছেন। কিন্তু গবেষক মকসুদ সাহেব এতো গবেষণা করেও সেই সত্যটাতে পৌঁছাতে পারেননি। স্বাধীন বাঙলা বেতারে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ ও স্বাধীনতা বিষয়ক কথিকা পাঠের নৈতিক অধিকার প্রতিটি স্বাধীনতাকামী বাঙালীরই ছিল। সেদিন যাঁরা সে সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন।
৩রা মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলেছে। এমনকি মকসুদ সাহেবের বলা সৈয়দ নজরুল ইসলাম বা তাজউদ্দিন আহমদের নির্দেশেও না। উনারা বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন সত্য, কিন্তু তাঁরা কোনো নির্দেশ দেননি। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকাকে খাটো করার প্রয়াসে মকসুদ সাহেব এখানে তাঁর সাথে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দিন আহমদকে টেনেছেন। কনিষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা (মেজর জিয়া) বা বেতারকর্মীরা দেশ কীভাবে চলবে সেই নির্দেশনা দেননি - অহেতুকভাবে সে প্রসঙ্গ টানা হয়েছে।
“পরিস্থিতি পালটে গেলে”বলতে মকসুদ সাহেব কী বুঝিয়েছেন? যদি মুক্তিযুদ্ধে আমরা হেরে যেতাম? যদি সত্যি অমন কিছু হত তাহলে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মেজর জিয়াসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকেরা, স্বাধীন বাঙলা বেতারের কর্মীরা ফায়ারিং স্কোয়াড বা ফাঁসির দড়ি ছাড়া অন্য কিছু পেতেন না। এই সত্য তাঁরা সবাই জানতেন, এবং জেনে-শুনেই ঐ পথে পা বাড়িয়েছেন। আর “নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই”টা কী? ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানীরা এই দেশের মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তাতে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা আসুক বা না আসুক প্রত্যক্ষ লড়াইটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে গিয়েছিল। সেখানে “নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্বাধীনতার লড়াই” নামক কোন বস্তু নেই। পাকিস্তানীদের কাছে আমরা পরাজিত হলে আমাদের জন্য কোন নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থাই থাকতনা। মকসুদ সাহেব কি বলতে চাচ্ছেন যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একটা অনিয়মতান্ত্রিক কাজ? তা সেটা অনিয়মতান্ত্রিক বটেই, তবে সেটা পাকিস্তানী আর তার সহযোগীদের চোখে। মকসুদ সাহেব কোন নিয়মের দলে?
“যুক্তির প্রয়োজনে বলতে হয় তারা সেদিন যে কাজটি করেছিলেন তাতে দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের আবেগ ও অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছিল, কিন্তু কাজটিতে দায়িত্বজ্ঞানহীনতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কারণ ‘ঘোষণা’টি প্রচারিত হয়েছিল অতি উৎসাহবশত এবং প্রধান নেতার সঙ্গে অথবা তাঁর কোনো উপযুক্ত মুখপাত্র বা প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শ না করে - এমনকি তখনও তারা জানেন না তাদের শীর্ষনেতা কোথায় কী অবস্থায় আছেন, তিনি জীবিত না মৃত। যদি শেখ মুজিব গ্রেপ্তার না হতেন, ইয়াহিয়া তাঁর কাছে আরও কিছু সময় চাইতেন, তাহলে ওই ঘোষণার পরিণামে গোটা পরিস্থিতি এক জটিলতর ও বীভৎস আকার ধারণ করত।“
তাহলে দেখা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু বা কেন্দ্রিয় কোন নেতার নির্দেশ ছাড়া স্বাধীন বাঙলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র স্থাপণ ও সেখান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ হচ্ছে “দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বহিঃপ্রকাশ”। চমৎকার! যদি বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতাদের মূল অংশ যদি ২৫শে মার্চ রাতেই নিহত হতেন তাহলে আমাদের কী করা উচিত হত? মুখে আঙুল দিয়ে বসে থাকা? আসলে মকসুদ সাহেব ঠাণ্ডা মাথায় দুটি দেশের মধ্যে বাঁধা যুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের পার্থক্যটাই বুঝতে অক্ষম, অথবা বুঝতে চাননা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশ-দেশের মানুষ-দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে এবং নিজের বিবেক যাতে সায় দেয় এমন যে কোন কাজ করতে একজন মুক্তিযোদ্ধার কারো অনুমতির প্রয়োজন হয়না। তবে দলগত যুদ্ধের সময় কৌশলগত কারণে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। যখন দলগত যুদ্ধ শুরু হয়নি, প্রতিরোধ শুরু হয়েছে কেবল তখন স্বাধীন বাঙলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র স্থাপণ ও সেখান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ অত্যন্ত জরুরী একটা কাজ ছিল। শব্দ-সৈনিকেরা জীবন বাজি রেখে সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটিই করেছিলেন। জানিনা দায়িত্ববান মকসুদ সাহেব তখন কোথায় ছিলেন। তার কি তখন উচিত ছিলনা চট্টগ্রামে গিয়ে এই “দায়িত্বজ্ঞানহীন” কাজটা বন্ধ করা?
মকসুদ সাহেবের কল্পনা মোতাবেক যদি বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার না হতেন এবং জানোয়ার ইয়াহিয়া তাঁর কাছে সময় চাইতো তাহলে কি পরিস্থিতি ভিন্ন হতো? অবশ্যই না, কারণ এরমধ্যে পাকিস্তানীরা গণহত্যা শুরু করে দিয়েছিল। পরিস্থিতি তখনই জটিল আর বীভৎস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কী করা মকসুদ সাহেবের স্মৃতিশক্তি দুর্বল, তিনি ২৫শে মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানীদের শুরু করা গণহত্যার কথা ভুলেই গেছেন!
“বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে বেতার থেকে যখন বলা হলো যে, মুজিব তাদের সঙ্গেই আছেন এবং যেকোনো সময় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন, ওই পরিস্থিতিতে যদি পাকিস্তানী কোনো সৈন্য তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলত তাতে চিরকালের জন্য না হলেও বাঙালীর মুক্তিসংগ্রাম স্তব্ধ হয়ে যেত। তাঁর বিকল্প আর কোনো নেতা ছিলেন না, যিনি স্বাধীনভাবে অথবা ভারত বা চীন সহযোগিতায় মুক্তিসংগ্রাম ওই মুহূর্তে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। ভুলে গেলে চলবে না যে দেশের চরম ডান ও চরম বাম গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তারা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সর্বাত্মক সহায়তা দিত। পরাশক্তিগুলিও ছিল বিভক্ত। সেদিক বিবেচনা করলে ওই ঘোষণা ও গোপন বেতার চালু করা ছিল এক ধরণের নির্বুদ্ধিতা। কিন্তু বাঙালীর ভাগ্য ভালো যে, অনুমানের ওপর করা কাজটি শেষ অবধি তাদের পক্ষেই গেছে।“
স্বাধীন বাঙলা বেতারে শুধু ঐ ঘোষণা কেন অমন আরো অনেক প্রপাগান্ডামূলক জিনিষ প্রচার করা হয়েছে। পরবর্তীকালে প্রচারিত “চরমপত্র”ও এক ধরণের প্রপাগান্ডা। মুক্তিযুদ্ধে এমনটা হবেই। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের মানুষের মনোবল চাঙা হয়। ভাগ্যিস ঐ দলে মকসুদ সাহেবের মত জ্ঞানী কেউ ছিলেননা তাই তাঁরা গোপন বেতার চালু করার মত “নির্বুদ্ধিতা”র কাজটি করতে পেরেছিলেন। মকসুদ সাহেবের মত মানুষ তখন দেশের নেতৃত্বে থাকলে সম্ভবতঃ মুক্তিযুদ্ধ শুরু করার মত “নির্বুদ্ধতা” কেউ করতে পারতোনা।
বঙ্গবন্ধু আদৌ বেঁচে আছেন কিনা সেটা ১৯৭২ সালের জানুয়ারীর আগে কেউই নিশ্চিত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকুন বা না থাকুন সেটা বিবেচনা না করেই তাজউদ্দিন আহমদসহ আমাদের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধকে স্বাধীনভাবে ও সঠিকভাবে পরিচালনা করে বিজয় অর্জন করেছিলেন। মকসুদ সাহেবের চিন্তামত আমাদের মুক্তিসংগ্রাম বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতেও “স্তব্ধ” হয়ে যায়নি।
মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করে ছিল সেকথা সবাই জানেন, আর চীন যে বিরোধিতা করেছিল সেটাও সবাই জানেন। তবুও ‘ভারত বা চীনের সহযোগিতায়’ মুক্তিসংগ্রামের কথা বলে মকসুদ সাহেব কি মুক্তিযুদ্ধে চীনের ভূমিকাটি আমাদের ভুলিয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু দেশের মানুষ তো মকসুদ সাহেবের মত দুর্বল স্মৃতিশক্তির না। চরম ডান আর চরম বামদের নাম এক নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করে চরম বামদের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বানিয়ে দিলেন। অথচ আমরা পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি এবং অন্যান্য সোভিয়েত ঘরাণার বামদের মুক্তিযুদ্ধের কথা জানি। বামদের মধ্যে চীনাবাদামরা যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল সেটাও সবার জানা। কিন্তু কী করা, মকসুদ সাহেব তো আমাদেরকে ইতিহাসের নতুন পাঠ দিতে বসেছেন।
“অল্প কয়েকজন সামরিক অফিসার ও কয়েকজন নিচের পর্যায়ের বেতার কর্মীই যদি একটি সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সফল হতে পারেন, তাহলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকার কোনো মূল্য থাকে না। ওই ঘোষণাকে যত বেশি মূল্য দেওয়া যাবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের মর্যাদা তত ক্ষুণ্ন হবে - তাদের ক্ষমাহীন ব্যর্থতার কথা ততই প্রকট হয়ে উঠবে। জাতির ঐতিহাসিক মুহূর্তে তাদের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার কথা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।“
মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনেই যুদ্ধ করেছে। তাঁদের যুদ্ধ করা বা স্বাধীন বাঙলা বেতারের কার্যক্রম রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকাকে কখনোই ক্ষুণ্ন করেনি। তাঁরা পরস্পরের সহযোদ্ধামাত্র, প্রতিপক্ষ নন্। আর আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বও জাতির ঐতিহাসিক মুহূর্তে কোন “অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা”র পরিচয় দেননি। সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম ও স্বাধীন বাঙলা বেতারের কার্যক্রমকে এভাবে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিপক্ষে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা মকসুদ সাহেবদের মত কূটবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরাই করতে পারে। এব্যাপারে দেশের সাধারণ মানুষের মনে কোন দ্বিধা নেই।
এই ভূমিকার শেষে মকসুদ সাহেব এই রচনা আরো বিস্তারিত পরিসরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছেন। গ্রন্থাকারে এটি প্রকাশিত হলে (বা ইতিমধ্যে যদি প্রকাশিত হয়ে থাকে) সাধারণ মানুষ স্বাধীন বাঙলা বেতারের কথা, শব্দসৈনিকদের কথা জানার জন্য বইটি কিনবেন। শব্দসৈনিকদের নাম ভাঙিয়ে বই বিক্রি করে সেই বইয়ে মকসুদ সাহেব তাঁদেরকে হেয় করে, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাকে ব্ল্যাকআউট করে, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ব্যর্থ বলে নানা কূটকচালের ধোঁয়াশা পাঠকদের মনে ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলোর মত প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক সেই লেখা ছাপিয়ে নিজেদেরকে মকসুদ সাহেবের দলের বলে প্রতিষ্ঠা করে। আমাদের জাতীয় ইতিহাস নিয়ে যথেচ্ছ ব্যাখ্যা, সত্যের অপলাপ, জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, বিকৃত তথ্য পরিবেশন করার জন্য মকসুদ সাহেবদের মত আরো অনেকে সক্রিয়। তাদের এই বেলাতেই চিনে নিতে হবে।
৪ | লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৩:৫১অপরাহ্ন)
অদ্ভূত সব কথাবার্তা এইসব লোকজনের।
নিয়মতন্ত্রের বড় ভক্ত দেখা যাচ্ছে এই গান্ধীকাফন গায়ে জড়ানো বুদ্ধিজীবিকে। নিয়মতন্ত্র কায়েম করতে গিয়ে গান্ধী সুভাষ বসুকে বের করে দিয়েছিলেন কংগ্রেস থেকে। নিয়মতন্ত্রের নিয়মে ভারত পাকিস্তান ভাগ হয়েছে কুটকৌশলে, পর্দার আড়ালে।
নিয়মতন্ত্রকে অস্বীকার করা হয়েছিলো বলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ন্যুনত্ম কোন হীনমন্যতার সুযোগ নেই,আমাদের স্বাধীনতায় কোন কুটকৌশল নেই, অনেক দাম দিয়ে স্ট্রেটফরোয়ার্ড আদায় করা স্বাধীনতা আমাদের।
একাত্তুরে এই ভদ্রলোকের ভূমিকা কি?
সকল 'বিদগ্ধ' জনের একাত্তুরের ভূমিকা আর্কাইভ করা দরকার।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
৫ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১১:৩২পূর্বাহ্ন)
গান্ধীকাফনের পরিকল্পনা-উৎপত্তি কিন্তু সুপ্রাচীন এবং সুপরিকল্পিত। এর বিকাশ ও বিবর্তন ধারাবাহিক ও বিস্তৃত। প্রতি আমলে এদের চিনতে পারাটাই দরকারী ব্যাপার। কয়েকটা হয়তো ধরা পড়ে, তবে বেশির ভাগ পার পেয়ে যায়।
'বিদগ্ধ' জনদের একাত্তরের ভূমিকা খুব সক্রিয় হবার কথা না। কারণ, এদের সাহস কম। এরা সরাসরি কোন পক্ষ নিতে পারেনা, খালি বিভ্রান্তি ছড়ায়। এরা আসলে যে পক্ষের লোক তাদের দুঃসময়ে এরা গা ঢাকা দেয়। তাদের পক্ষের সুদিন আসলে মাঝে মাঝে ঘি-ননীর জন্য কান্নাকাটি করে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
৬ | লিখেছেন অনিন্দ্য রহমান (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৪:০৫অপরাহ্ন)
১
জ্ঞানের সর্তক ও দায়িত্বশীল প্রয়োগ না ঘটার আগ পর্যন্ত তা জ্ঞান নয়।
২
আর প্রথম আলোর পলিটিকাল লাইনটিই এমন। কলামিস্ট এর সাথে কম্প্লাই করেন কেবল। গোড়া থেকে আরো শক্তভাবে টান দেয়া উচিৎ।
___________________________ Any day now, any day now,
I shall be released.
৭ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১১:৪০পূর্বাহ্ন)
১. তাহলে জনমানসের জন্য ক্ষতিকর বা মানবতার জন্য ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমগুলো যে ধারণাসমষ্টির উপর দাঁড়ানো তাকে আমরা কী বলব?
২. কলামিস্টের সাথে কম্প্লাই করা সম্পাদকের পত্রিকার সামস্টিক নীতিটা কী হয় তাহলে? যে পত্রিকায় সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনিসুল হক, আবুল মোমেন, আলতাফ হোসেন, আবুল হায়াত, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বিচারপতি গোলাম রব্বানী, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, মঈনুস্ সুলতান, মামুন রশীদ, গোলাম মুরশিদ, ফজলুর রহমান, এ এফ এম আব্দুল আলী আর আনিসুজ্জামান কলাম লেখেন সেখানে সম্পাদক কোন কলামিস্টের সাথে কী কম্প্লাই করেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
৮ | লিখেছেন অনিন্দ্য রহমান (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০৮/২০১০ - ১১:৫২পূর্বাহ্ন)
ব্যাপারটা উল্টা দিক থেকে হয়। মানে, কলামিস্টরা যাই লেখেন না কেন মোটের ওপর তা প্রথম আলোর মৌলিক এজেন্ডার পরিধির বাইরে খুব বেশি হয়ত যেতে পারে না।
___________________________ Any day now, any day now,
I shall be released.
এইবার তো আমাকে বিপদে ফেলে দিলেন দেখছি! আপনার কথাটা সত্য হলে প্রথম আলোর মৌলিক এজেন্ডার পরিধি কতদূর? অথবা তার মৌলিক এজেন্ডা কত কিছুকে (পড়ুন কত পারস্পরিক বিপরীতধর্মী ধারণাকে) একসাথে ধারণ করতে পারে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১০ | লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৪:৪৬অপরাহ্ন)
মকসুদ সাহেব বাংলাদেশ বেতারে কিছু ইংরেজী পান্ডুলিপি লিখতেন। আমি ডিপলোম্যাটিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামস আর ওয়ার্ল্ডমিউজিক দেখতাম শুরুতে। তার এক পাকিস্তানপন্থী বন্ধু রেডিওর আধিকারিক ছিলেন আলফাজ সাহেব,ঢাবি থেকে ইংরেজীতে থার্ড ক্লাস পাওয়া লোক, কিন্তু বাংলা প্রায় বলেন না,পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে জিতলে মিরপুর বিহারীক্যাম্প সন্নিবর্তী কাবাব হাউজ থেকে বিফ চাপ নিয়ে সরকারী গাড়ীতে বাড়ি ফিরতেন। উনি রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজানোর বিপক্ষে। নজরুলপন্থী। আমি তেল না দিয়ে উনার নিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গে দিয়েছিলাম। তবে মকসুদ সাহেব আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে অদৃশ্য মাছি তাড়াতেন। উনি আমার ডেস্কে আসেননি আলফাজ সাহেবকে দিয়ে সালাম দেয়াতেন,মেনে নিতে পারেন নি বিসিএস নেটিভ,পরনে জিন্স,আলফাজ সাহেব বলতেন ইউ আর নো মোর আ ভ্যাগাবন্ড,ইউ আর আ সিভিল সার্ভেন্ট,বিহেব ইওরসেলফ।সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারিনা এই তথ্য আমার শিবিরীয় ব্যাচমেটদের কাছ থেকে জেনে যাওয়ায় ভোর চারটায় আমাকে আফিসার ইন চার্জ করে ডিউটি রুমে বসিয়ে রাখতেন। ফজরের নামাজ পড়ে নুরজাহানের গান শুনতে শুনতে সরকারী ফোন ঘুরাতেন, খুব শীত পড়েছে, তাই লেপ মুড়ি দিয়ে বেড টি, আপনারো সময় আসবে বছর পাঁচেক পরে। আর হ্যাঁ রবীন্দ্র সঙ্গীত এতো বাজছে কেন, কিউশিট কে করেছে, কোন মালাউনের ---।আমি উনাদের স্যাডিজমের গিনিপিগ ছিলাম। তবে লড়াইটা জমপেশ ছিল। আমার মৃত্যুর শহর উপন্যাস পড়ে সাজাহান ফারুকের সামনে ইংরেজীর ঐ পেডাগগ কেঁদেছেন,আমাকে রাঙ্গামাটি স্টেশনে বদলী করতে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুকেরা আমাকে লেখা পড়েই বুকে টেনে নিয়েছেন। অগত্যা রাজাকার বন্ধুর টেবিলে বসে সুড়ুত সুড়ুত করে চা খেতে খেতে মকসুদ সাহেব আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে সিএসপিদের প্রশংসা করতেন, জগতের কিছু কিছু উন্নাসিকের চোখে আই এম নট স্মার্টার দ্যান এইটথ গ্রেড।ফলে এই স্পষ্ট পাকিস্তানপন্থী আড্ডায় বোকার মতো ঢুকে পড়ে জায়গা টাকে মুশতাকের বার্ড ষড়যন্ত্রের অকুস্থল মনে হয়েছে। সুতরাং ষষ্ঠপান্ডবকে ধন্যবাদ কুরুক্ষেত্রের লড়াইএ জ্ঞানপাপসমকসুদের ওপরে আলোক সম্পাতের জন্য। এগুলো ভিত্তিহীন ডিফেমেশন নয়, তার ব্যাচমেট আবদুল্লাহ আল ফারুক যে বয়েসে কালুরঘাট বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র গড়েছেন,বা একি ব্যাচের সাজাহান ফারুক কলকাতায় সাধীন বাংলা বেতারে যোগ দিয়েছেন, আলফাজ সাহেব তখন রাওয়ালপিন্ডির মুখপাত্র হয়ে রাজশাহীতে ইয়াহিয়ার পক্ষে মাইকিং করেছেন, সিএসপি মারগুব মোর্শেদ ঐ সময় রাজশাহীতে। আর মকসুদ সাহেব তখন পিকিং পিকিং (ভেতরে পাকি পাকি) বলে অনেক ডেকেছেন,পিকিং আসেনি।এখনো তার আশা পিকিং আসবে। পাকি তো আসবে না, পুড়ে যাচ্ছে-ডুবে যাচ্ছে। এখন পিকিং ই ভরসা।
১১ | লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৪:৫৪অপরাহ্ন)
দারুন। এইসব প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বহু গড়ে উঠা মিথ্যে মিথ আর ছদ্ম আইকনদের ভেঙ্গে দেবে।
চিন্তা করুন কবছর আগেও প্রথম আলোতে সৈয়দ সাহেবের জ্ঞানীবচন পাঠ করে মফস্বলের এক উঠতি তরুন তাকে প্রণম্য ধরে নিতো। আহা কি দার্শনিক। খেলকা ছাড়া কিছু পরিধান করেননা।
এখন এই যে বিকল্প পাঠের অবারিত সুযোগ। সবদিক জেনেবুঝে নিজেরটা বেছে নেয়া।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
১২ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১২:৪৯অপরাহ্ন)
এখানেতো কেবল গল্পের হাইলাইটস্ বললেন। মূল গল্প বিস্তারিতভাবে পড়তে পাওয়াটা কিন্তু আমাদের পাওনা রয়ে গেল।
১৯৬২ সালের পরবর্তী গণচীনের বৈদেশিক নীতি খেয়াল করলে দেখা যায়, গণচীনের নিরাপত্তা ও অর্থনীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও প্রবল যোগাযোগ না থাকলে তারা বাইরের কোন ব্যাপারে বল-ভরসা যোগায় না। বড় জোর মুখে মুখে কিছু সান্ত্বনা বা পিঠ চাপড়ানি দেয়। "পিকিং-ই ভরসা" বলা বেকুব কি এখনকার দুনিয়ায় এখনো আছে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৩ | লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৫:৪৪অপরাহ্ন)
এইসব ধরি মাছ না ছুই পানি বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে আশঙ্কাটা হল, এরা তাদের নিরীহ "নিয়মতান্ত্রিক" শস্তা কথার চটকে জনগণের মগজ ধোলাইয়ের কাজে বেশ পারঙ্গম। স্বীকার করতে কুন্ঠা নেই, এইসব মিঠেকড়া কথার ইন্দ্রজালে আমিও জড়িয়েছিলাম, যদিও সে ঘোর কাটতে বেশি সময় নেয়নি। মাসকাওয়াথ ভাইয়ের মন্তব্যটা পড়ে তাই খুব একটা অবাক হলামনা।তবে একটা প্রশ্ন, এই পিকিংপন্থী ছুপা রুস্তমদের আখেরী খায়েশটা কী? কোন উদ্দেশ্যে এসব বুলি তারা আউড়াচ্ছেন?
১৪ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১১:৪৪পূর্বাহ্ন)
পিকিং বা পিকিংপন্থী কোন রাজনৈতিক দলের সাথে মকসুদ সাহেবের কোনো যোগাযোগ আছে বলে আমার জানা নেই। মকসুদ সাহেবের কার্যক্রমের সাথে আজকের পিকিং-এর কোনো যোগাযোগ আছে বলে মনে হয়না। সুতরাং তার বা তাদের মত ব্যক্তিদের খায়েশ অতীতে নিজেদের ব্যর্থতার শোধ তুলে নিজেদের মনোমত ভবিষ্যত গড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৫ | লিখেছেন সুহান রিজওয়ান (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৭:৩৬অপরাহ্ন)
সত্যি কথা বলতে আমি অনেকটাই রাজনীতি বিমুখ। ... তবে ইতিহাস বিমুখ নই, জন্মের প্রায় দেড়যুগ এই দেশে কী ঘটে গিয়েছিলো, তা অল্পবিস্তর জানি, নানা মুনির মুখ থেকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীতে ইতিহাস পর্যালোচনা শুনেছি- কখনো অবাক হয়েছি বিকৃত তথ্য পেয়ে এবং অন্যান্য পক্ষ হতে সেই বক্তার অবস্থান বিবেচনা করে তার তথ্য বিকৃতকরণের পেছনের যুক্তিটি খুঁজে পেয়েছি। ...
আগামীতে যারা এই দেশে জন্ম নেবেন, তারা প্রকৃত ইতিহাস জানবার পর এই সব কলামিস্টের কলাম পড়ে কলামিস্টদের সম্পর্কে কী অদ্ভূত ধারণা নিয়ে বড় হবেন- তা জানার বড় কৌতূহল হয়...
১৬ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১২:০০অপরাহ্ন)
সুহান, রাজনীতিবিহীন ইতিহাস সোনার পাথরবাটির মত অবাস্তব জিনিষ। ইতিহাসের প্রতিটি ব্যক্তির কার্যক্রম, বক্তব্য, ভূমিকা রাজনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইতিহাসে এমন কোন দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নেই যার কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নেই।
আজকে যারা বক্তব্য রাখছেন, কলাম লিখছেন তারা আগামীদিনের ইতিহাসের অংশ। তাদের রাজনৈতিক অবস্থানই আগামীকাল ইতিহাসে তাদের স্থান নির্ধারণ করে দেবে। তবে এর ব্যতিক্রম যে হয় না তা নয়, ডেকামেরনের Ser Ciappelletto-রা সব সময়ই ছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
বিশেষ কিছু জানতে পারবেন বলে মনে হয় না। কেন মনে হয় না সেটা হাসান মোরশেদের মন্তব্যের জবাবে বলেছি। তবু খোঁজ রাখা দরকার। কে জানে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হতেই পারে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এ’কথা কেউ দাবী করবেনা যে ঐ ঘোষণা পাঠ শুনেই সবাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। বেশিরভাগ মানুষ কোন প্রকার ঘোষণা না শুনেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। যদি ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানীদের দ্বারা নিহত হতেন, অথবা বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে নাও পারতেন তাতেও মুক্তিযুদ্ধ বন্ধ থাকতোনা। মুক্তিযুদ্ধ হুট করে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নয়। দেশের মানুষ জানতো মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী।
২৪ | লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ১২:১২অপরাহ্ন)
১৯৭১ সালের যুদ্ধটা যে আর দশটা যুদ্ধের মত দুটা দেশের যুদ্ধ না, গৃহযুদ্ধ না - এটা যে মুক্তিযুদ্ধ - এই কথাটাই কিছু মানুষ বুঝতে চায় না। মুক্তিযুদ্ধ ব্যাপারটা আসলে কী, অন্য প্রকার যুদ্ধের সাথে এর পার্থক্যটা কোথায় সেটা বোঝানোটা জরুরী হয়ে পড়েছে। তাহলে ১৯৭১-এ কে কী করল, কেন করল ইত্যাদি নিয়ে বেহুদা তর্ক এড়ানো যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
২৫ | লিখেছেন সৌরভ [অতিথি] (যাচাই করা হয়নি) (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ১১:৪২অপরাহ্ন)
"শব্দসৈনিকদের নাম ভাঙিয়ে বই বিক্রি করে সেই বইয়ে মকসুদ সাহেব তাঁদেরকে হেয় করে, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাকে ব্ল্যাকআউট করে, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ব্যর্থ বলে নানা কূটকচালের ধোঁয়াশা পাঠকদের মনে ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন।"--ভয়াবহ।
মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ক যেসব বই বাজারে মেলে তার বড় অংশ পড়লেই তথ্য বিকৃতির দরুন "ভয়াবহ" বলবেন। এই দেশে আবর্জনা ছাপানো আর প্রকাশ করা খুব সোজা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বদরুদ্দীন উমর নিয়ে বিশ্লেষণ খসড়া করেছি। কিছুদিন পর আপাবো। ফরহাদ মজহারের তিনটা বই প্রয়োজন। ভাবান্দোলন, মোকাবেলা আর সাঁইজীর দৈন্য গান। তবে সেটা অন্য কারণে। যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী সিরিজের জন্য অনলাইনে যা পাওয়া যায় তাতেই চলে।
অন্যজনের নাম উল্লেখ করতে পারতেন। সলিমুল্লাহ খান। তাঁর বিষয়ে কথাবার্তা কুলদা রায়ের সাথে ফেসবুকে করা হয়েছে। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন।
না জেনে ট্যাগিং করার লোভ সামলানো এখন অনেকের জন্য কষ্টের হয়ে গেছে। বাই দা ওয়ে, আজ সলিমুল্লাহ খানের জন্মদিন।
-------------------------------------------------------------- অভ্র আমার ওংকার
১. অনলাইনের মাল-মশলা দিয়ে যদি ফরহাদ মজহার নামানো যায় তাহলে দেরী না করাই উত্তম। বদরুদ্দীন উমরের ব্যাপারে অপেক্ষায় আছি।
২. ফেসবুকের সূত্র ধরেই কথাটা বলা। ব্যাপারটা প্রমাণিত না বলে এখানে নামটা বলিনি। এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে আমরা এখনই না আসি। কুলদা রায় যেহেতু কথাটা বলেছেন তাই সেটা প্রমাণের দায় তার উপরেই বর্তায়। আমরা কিছু সময় বরং অপেক্ষা করি, দেখি কুলদা রায় কী বলেন। তাতেই প্রমাণিত হবে তিনি কি ঠিক কথা বলেছিলেন নাকি অহেতুক ভুল ট্যাগিং করেছিলেন। আশা করি ব্যাপারটা ফের্মার শেষ উপপাদ্য প্রমাণের মত কিছু হবে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
....এইসব দেবতাবেশী ভন্ডের দল দেবতার ঢঙ্গে চলেন, বলেন, লেখেন আর ভেতর থেকে গভীরভাবে বিশ্বাস করেন এ দেশের কিছু হবে না, যেখানে যতটুকু সর-মাখন পান ছেকে তুলে খান-জমান। এদের অতীত-বর্তমান কর্মকান্ড নিয়ে আরো বেশী অনুসন্ধান হওয়া দরকার।
..তবে পিকিংপন্থী হলেই কেউ সৈআম'দের মতন দর্শনধারী ভন্ডসাধু হয়না।
লেখককে অভিনন্দন।
পিকিংপন্থী বলতে আজকের দিনে আসলে কী বোঝায়? মাওবাদী বললেও না হয় কিছু বুঝতাম। তা যাকগে, মাওবাদী বলুন আর পিকিংপন্থীই বলুন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে গণচীনের আর চেয়ারম্যান মাওয়ের ভুমিকা এরা কীভাবে মূল্যায়ণ করেন? যদি তারা গণচীনের আর চেয়ারম্যান মাওয়ের তখনকার ভূমিকা সমর্থন করেন তাহলে তাদের সাথে জামাতীদের পার্থক্যটা কোথায়? এমনকি ১৯৭৫ সালের পরেও তারা কোনদিন কি পিকিং-এর কাছে এই ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা চেয়েছেন? ভণ্ডসাধু কাকে বলে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই মকসুদ্যারে দেখলেই কেন জানি বিরক্ত লাগে। এর লেখা কোনোদিন পড়ি নি, তাই জানি না কী লেখেন উনি। উনার গান্ধী হওয়ার লেবাস থেকে ঝুর ঝুর করে ভন্ডামি ঝরে পড়ে।
১০ এপ্রিলের স্বাধীনতা দিবস তো হুদা ভাইয়ের তেলের ড্রামের স্বাধীনতা দিবসের চাইতেও উপাদেয়।
প্রথম আলোয় একবার বিচারপতি হাবিবুর রহমান নিরপেক্ষ স্বাধীনতার ইতিহাস লেখার একটা নমুনা হাজির করেছিলেন। সেখানে লিখেছিলেন, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী বাহিনী একটু 'পিটুনি' দিয়েছিল !!!
কয়েক সপ্তাহ আগে অনেক আগ্রহ নিয়ে "ওরা আসবে" শিরোনামে একটা বই পড়েছিলাম। বইটা কী করে আমাদের ঘরে এলো, তা আমরা কেউ জানি না। কিন্তু ভূমিকাটা পড়ে মনে হলো মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা। মেলা খাটনী খাইট্যা প্রায় আটশ পৃষ্ঠার বইটা শেষ করে মনে হলো লেখক আবুল চৌধুরী আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন একটা বিকৃত বই লেখার জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত।
একবার ভাবলাম একটা রিভিউ লিখি, পরে মনে হলো বইটা পড়ে অনেক সময় নষ্ট করেছি, রিভিউ লিখে বাকী সময়টা নষ্ট না করি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মাকসুদ ঘরানার লেখকদের থেকে লোকজনকে সাবধান করার জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত।
যদিও আমি আপনার মতো এতো ভাল লিখতে পারব না। ধিক্কার জানাই এই সব তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের, ঘৃণা প্রথম আলোরও কিছু প্রাপ্য, এই ধরনের লেখকদের জায়গা দেয়ার জন্য।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
১.
ছয় দফা অবশ্যই কোন স্বাধীনতার দাবীনামা নয়। স্বাধীনতার কথা সত্তর কেন, একাত্তরের শুরুতেও বলা হয়নি। স্বাধীনতার ইচ্ছা আর ঘোষণা দুটোই এসেছিল ধীরে, ঘটনাক্রমে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছিলেন--
আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল,- প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। ... আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।.....এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
২৫ মার্চের ঘটনাপ্রবাহ (গনহত্যা থেকে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার) ৭ই মার্চের ঘোষণাকে নতুন মাত্রা দেয়। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের একটি লেখা থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি। (এই লেখাতে ) তিনি একাত্তরের পটভুমি ব্যাখ্যা করার পর লিখলেন-
তারপর এলো ১লা মার্চ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সারা দেশে শুরু হলো ব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন।... ... ক্যাপ্টের শমসের মবিন এবং মেজর খালেকুজ্জামান আমাকে জানান যে স্বাধীনতার জন্য আমি যদি অস্ত্র তুলে নেই, তাহলে তারাও দেশের মুক্তির জন্য প্রাণ দিতে কুন্ঠাবোধ করবেন না... ...৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ঘোষণা আমাদের কাছে এক গ্রীণ সিগন্যাল বলে মনে হলো। আমরা আমাদের পরিকল্পনাকে চুড়ান্ত রূপ দিলাম। কিন্তু তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে তা জানালাম না।
অর্থাৎ, বাঙালী সামরিক অফিসারদের কাছেও ৭ই মার্চের নির্দেশ স্বাধীনতার প্রস্তুতিরই ইশারা ছিল। ফলে ২৫শে মার্চের গনহত্যার পর (যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নেই যে অধিকাংশই বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তারপূর্ব স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে পাননি, তথাপি) বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে কী হবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশ সবার কাছেই ছিল। ফলে, এম এ হান্নান, মেজর জিয়াউর রহমান, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ বা বেলাল মোহাম্মদ প্রমূখদের ঘোষণাকে অনধিকার চর্চা বলার সুযোগ নেই।
২.
২৬শে মার্চ থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত সময়টাতে যুদ্ধের কর্তৃত্ব নিয়ে বেশ জটিলতা ছিল। মাওলানা ভাসানী চাচ্ছিলেন একটি সর্বদলীয় কমিটি করতে। কিন্তু তাজউদ্দীনসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য ছিল- সত্তরের নির্বাচনের ফলাফল এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুসারে তাদের দলেরই অস্থায়ী সরকার গঠন করা উচিত। অন্যদিকে তোফায়েল আহমদসহ কয়েকজন নেতা এমন দাবীও করছিলেন যে, তাজউদ্দীন আহমদ নয়, বরং তাদেরকেই বঙ্গবন্ধু দ্বায়িত্ব দিয়েছিলেন। যেহেতু ২৫ মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর সাথে আর কোন যোগযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি, প্রত্যেকেই যার যার দাবী দিয়ে আসছিলেন।
এমতাবস্থায়, ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা থেকে ২৭শে মার্চ পর্যন্ত যে ঘোষণাগুলি এসেছে, তা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অনুপ্রাণিতই শুধু করেনি, ১০ এপ্রিলের ঘোষণাকেও সহজতর (এমনকি সম্ভবপর) করেছে।
৩. সত্তরের দশককে যারা দেখেছেন, তাদের বয়স হয়ে যাচ্ছে। অনেককেই দেখছি জীবনের সায়াহ্নে এসে অন্যের ভুল প্রমান আর নিজের কল্পকাহিনী লিখে রেখে যাবার প্রানান্ত চেষ্টায় বিরতিহীন। এদের জীবদ্দশাতেই এদের জানিয়ে দিতে হবে যে, তাদের আগডুম-বাগডুম আমরা গিলছি না। এইটুকু অতৃপ্তি তাদের প্রাপ্য। ষষ্ঠ পান্ডবকে অনেক ধন্যবাদ।
----------- চর্যাপদ
মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম কিন্তু তাঁর "লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে" বইটিতে জিয়া সম্পর্কে অন্যরকমই লিখেছেন। তিনি লিখেছিলেন, তিনি নিজে গোপনে জিয়া [৮ম ইস্ট বেঙ্গলের সবচে সিনিয়র বাঙালি অফিসার] এবং একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে [ইবিআরসির সবচে সিনিয়র বাঙালি অফিসার] গোপনে আক্রান্ত হবার আগে আক্রমণ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। এরা রাজি হননি। পরিণামে ২৫শে মার্চ রাতে ইবিআরসিতে প্রায় এক হাজারের মতো বাঙালি সেনা-অফিসার ও তাদের পরিজনেরা ২০ বালুচ রেজিমেন্টের হামলায় নিহত হন। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ৮ম ইস্ট বেঙ্গলের সেনা-অফিসাররা বিদ্রোহ করে ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, ইবিআরসিতে কোনো প্রতিরোধ গড়ে না তুলে। মেজর রফিক আক্ষেপের সাথে বলেছেন, সেদিন যদি ২০ বালুচ রেজিমেন্টকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে প্রতিহত করা হতো, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই ভিন্ন হতো।
জিয়া আরো কিছু পেজোমি করেছিলেন, সেগুলোর বর্ণনা বইটিতে বেশ বিশদভাবেই আছে।
১. ২৫শে মার্চের আগে আক্রমণ করা সম্ভব হতো কিনা, তা নিয়ে সামরিক বাহিনীতে যে বিভাজন ছিল, তা কিছুটা বোধগম্য। রাজনৈতিক আলোচনা যেখানে চলছে, সেখানে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে ভুমিকা পালন একাধিক কারনে কঠিন-- যে কোন রাজনৈতিক নেতা আজ সরকারের বিরোধীতা করে কাল আবার আলোচনায় বসতে পারে। কিন্তু সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে একবার সরকারের বিরোধীতা করার পর দেশ স্বাধীন, দেশ ত্যাগ অথবা কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প থাকে না। একারনে তখনকার অনেক সেনা সদস্যই কিন্তু অনেক পরে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।
২. ২৫শে মার্চের গনহত্যাই মুলত: তাদের বিদ্রহে উদ্বুদ্ধ করে এবং এর আগ পর্যন্ত সকলেই বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যেমন, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের ভাষ্যমতে, ২৪শে মার্চ শমশেরনগর যাবার পথে জনৈক বাঙালি শুয়ে পড়ে তার গাড়ীর গতি রোধ করলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, বঙ্গবন্ধু বললেই তারা যুদ্ধে যোগ দিবেন। আপনি হয়তো ভাবছেন ২৫শে মার্চের একতরফা আক্রমণ প্রতিহত করা যেত কিনা। এই প্রশ্নটা আমারও।
জিয়াউর রহমানের লেখায় জানা যায়, বিংশতিতম বালুচ রেজিমেন্টের জওয়ানদের প্রতি রাতে গোপন গনহত্যার অভিযানের খবর তিনি মার্চের শুরুতেই জানতেন। তাছাড়া, ২৪শে মার্চ সোয়াত জাহাজের অস্ত্র খালাসের জন্য বাঙালিদের ব্যারিকেড তোলার সময় প্রচুর বাঙালিকে হত্যা করা হয়। তবে তিনি ২৫শে মার্চ রাত পর্যন্ত ব্যারিকেড অপসারনের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। এসবই তার নিজের কথা। ২৪শে মার্চে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে বিভিন্ন দিকে পাঠিয়ে যে এর শক্তি কমিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং এমনই কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে তা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন বলছেন। কেন ২৪শে মার্চ রাতে বা ২৫শে মার্চ দিনে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ধারনা বঙ্গবন্ধুর কাছ পর্যন্ত পৌছুল না, তা বোধগম্য নয়।
৩. জিয়ার কথ্যমতে, তিনি মেজর রফিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পারেননি। আমি জিয়াকে কোট করছি বাঙালি সৈনিকদের মনোভাব বুঝতে। তবে জিয়াউর রহমানের লেখায় সবসময়ই একটু ইতিহাস বদলের ছোয়া থাকে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে তার লেখার এই অংশটা দেখুন-
সে সময়ে আমি ছিলাম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যার নামে গর্বো বোধ করতো তেমন একটি ব্যাটেলিয়ানের কোম্পানী কমান্ডার। ...... এই কোম্পানীর
জওয়ানরা একক ভাবে এবং সম্মিলত ভাবে বীরত্বের সাথে যৃদ্ধ করেছে, ঘায়েল করেছে প্রতিপক্ষকে। বহু সংখ্যক প্রতিপক্ষকে হতাহত করে, যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করে এই কোম্পানী অর্জন করেছিল সৈনিক সুলভ মর্যাদা, প্রশংসা করেছিল তাদেরও প্রীতি।
যুদ্ধবিরতির সময় বিভিন্ন সুযোগে আমি দেখা করেছিলাম বেশ কিছু সংখ্যক ভারতীয় অফিসার ও সৈনিকের সাথে। আমি তখন তাদের সাথে কোলাকুলি করেছি, হাত মিলিয়েছি। আমার ভালে লাগতো তাদের সাথে হাত মেলাতে। কেননা আমি তখন দেখেছিলাম তারাও অত্যন্ত উচুঁ মানের সৈনিক। আমরা তখন মত বিনিময় করেছিলাম। সৈনিক হিসেবেই আমাদের মাঝে একটা হৃদ্যতাও গড়ে উঠেছিল, আমরা বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলাম। এই প্রীতিই দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে পাশাপাশি ভাই-এর মত দাড়িয়ে সংগ্রাম করতে উদ্ধুদ্ধ করেছে আমাদের।
একটা মরণপণ যুদ্ধে শত্রুপক্ষকে সৈনিকসুলভ শ্রদ্ধা হয়তো দেখানো যায়, কিন্তু তাই বলে যুদ্ধের সময়েই শত্রুপক্ষের সাথে "হৃদ্যতা", "বন্ধুতে পরিণত" হওয়া? নিশ্চিত ভাবেই তিনি ১৯৭২-এর অনুভুতিকে ১৯৬৫-র অনুভুতি বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।
----------- চর্যাপদ
৪৬ | লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৮/০৮/২০১০ - ৭:০৯অপরাহ্ন)
অসাধারণ লেখা। পাঁচ তারা দেয়ার ক্ষমতা থাকলে দিতাম। এইসব গাঁজাখুরী প্রলাপতাড়িত বুদ্ধিজীবিদের পাগলা গারদের বিশেষ প্রকোষ্ঠে যাবজ্জীবন প্রবিষ্ট করে রাখা দরকার। এদের মুখে দুর্গন্ধ, মগজে পোকা, মননে অমানিশা। পাণ্ডবদা'কে ধন্যবাদ।
৪৭ | লিখেছেন অতিথি লেখক [অতিথি] (যাচাই করা হয়নি) (তারিখ: শনি, ২৮/০৮/২০১০ - ৯:৫৪অপরাহ্ন)
নিচের সংবাদটি গতকালের 'কালের কণ্ঠ' থেকে নেয়া। আসিফ নজরুল ও ফরহাদ মজহারের নাম এখানে জামায়াতের বুদ্ধিজীবী হিসাবে উল্লেখ করা আছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে জামায়াতের
১১ কৌশল!
তিন দিনের রিমান্ডে রফিকুল মাসুদ কার্জন
যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম ব্যাহত করতে বিশেষ গোপন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত ইসলামী। এ লক্ষ্যে 'বেসরকারি পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধান কমিটি' ব্যানারে একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি ১১ দফার কর্মপরিকল্পনা সাজিয়ে কাজও শুরু করেছে তারা। মুুক্তিযুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন কিন্তু এখন মহাজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়, এরকম কয়েকজন ডাকসাইটে রাজনৈতিক নেতাকে ব্যানারে ভেড়ানোর চেষ্টা তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এসব নেতার একটি তালিকা তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার গ্রেপ্তার অভিযানের সময় জামায়াত মহানগর আমির রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করেছে পুলিশ। জামায়াতের এই নেতা নেপথ্যে থেকে কথিত এই কমিটির সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিলেন বলেও পুলিশ দাবি করেছে। রফিকুল ইসলামকে রমনা থানায় দায়েরকৃত ফারুক হত্যা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানোর পরিকল্পনা সংবলিত কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১১ দফা কী কী : উদ্ধারকৃত কাগজপত্র অনুসারে ১১ দফা কর্মপরিল্পনার মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে, জামায়াত তাদের নিজের মতো করে তথ্য-প্রমাণসহ ৭৭ যুদ্ধাপরাধীর একটি তালিকা তৈরি করবে। আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরিক কোনো দল বা বামপন্থী দলগুলোর মধ্য থেকে নেতাদের খুঁজে বের করে এ তালিকা করা হবে। এসব নেতার মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা গণমাধ্যমে প্রকাশের পাশাপাশি প্রচারপত্র তৈরি করে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করা হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ওপর ভিডিও রিপোর্ট তৈরি করে তা প্রচার করা হবে।
এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যু নিয়ে ঘন ঘন সেমিনার করা হবে। যারা সরাসরি জামায়াতের রাজনীতি করেন না এরকম বিশিষ্টজনদের এসব সেমিনার বা আলোচনায় হাজির করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিলেও কোনো কারণে এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়_এরকম ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে সেমিনারে টানতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াতের লক্ষ্য হচ্ছে_বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও শাহাজাহান সিরাজ। উদ্ধার করা নথি অনুসারে জামায়াতের 'নিজস্ব' বিশিষ্টজনদের তালিকায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, কমরেড সাইফুল হক ও ফরহাদ মজহার। সেমিনারে দেওয়া তাঁদের বক্তব্য ধারণ করে বুকলেট ও ভিসিডি তৈরি করে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়।
জামায়াতের গোপন পরিকল্পনায় বলা হয়, বর্তমানে যাঁদের যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অনেকের ছবি আছে_ যেগুলো বিভিন্ন সভা-সেমিনার থেকে ধারণা করা। এসব ছবির মধ্যে আছে স্বাধীনতার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গোলাম আযম, বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজামী, মুজাহিদের সঙ্গে রাশেদ খান মেনন, জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ভিডিও বা স্থিরচিত্র, ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) চেয়ারম্যান মিজবাউর রহমানের সঙ্গে নিজামীর ছবি। এসব ছবি বা ভিডিও সংগ্রহ করে তা প্রচারপত্র ও ভিডিও আকারে তৈরি করে তা বিলি করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়। রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া নথিতে আরো বলা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগের যেসব নেতা যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে 'অতিউৎসাহ' দেখাচ্ছেন, তাঁদের তালিকা ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রচার করতে হবে।
রিমান্ডে রফিকুল : আমাদের আদালত প্রতিবেদক জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামকে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে ফারুক হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক জিয়া উজ জামান। শুনানি শেষে ঢাকার তিন নম্বর অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আলী হোসাইন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। এ ছাড়া উত্তরা থানায় ১৯ এপ্রিল দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
২৭ জুন বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন দেওয়া হলে পথচারী ফারুক গুরুতর অগি্নদগ্ধ হয়ে পড়ে মারা যান। এ ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
সৈয়দ আবুল মকসুদকে আমি যতটুকু চিনি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার একটি বিরাগ রয়েছে। এই বিরাগ মাওলানা ভাসানীর সব অনুসারীদেরই কমবেশি আছে। আওয়ামী বিরোধী রাজনীতি আসলে এই পক্ষের হাতেই বিকশিত হয়েছে। এই বিরাগ আছে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সমাজতান্ত্রিক আরেকটি ধারার ভেতরেও। তারা মনে করেন, বঙ্গবন্ধু আসলে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক নন। সময়ের দাবীতে ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে অসাম্প্রদায়িক অবস্থান নিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের ৮ জন অর্গানাইজিং সেক্রেটারী আছেন। তাদের অন্তত দুজনকে চিনি যারা মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে দেশের মূলনীতির মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্থাপন করে তাজউদ্দীন আহমেদ বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই লেখার আলোচনায় এটা হয়তো অপ্রাসঙ্গক, তাও লিখে ফেললাম। ৫* অসাধারন বিশ্লেষনের জন্য। একটি বিষয়ের পেছনের দৃষ্টিভঙ্গীর যে অনেকরকম মাত্রা থাকে তা তুলে আনার জন্য।।।
মন্তব্য
পোস্টের শুরুতে আর কতগুলি অনুচ্ছেদের শেষে কিছু বাড়তি স্পেস চলে এসেছে। এটা কীভাবে দূর করতে পারি?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এইসব শান্তিকামি নিয়মতান্ত্রিক ালছাল লোকজনের কথায় কান দেয়নি বলেই বাংলাদেশ আজ স্বাধীন রাস্ট্র।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এইসব জ্ঞানীগুণীরা 'মুক্তিযুদ্ধ' কনসেপ্টটাই বুঝতে অক্ষম। সাধারণ মানুষ কখন, কীভাবে, কেন জেগে ওঠে, কেন নিজের জীবনসহ সর্বস্ব বাজি রেখে অসম প্রতিপক্ষের বিরূদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা এদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেও বুঝবেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অদ্ভূত সব কথাবার্তা এইসব লোকজনের।
নিয়মতন্ত্রের বড় ভক্ত দেখা যাচ্ছে এই গান্ধীকাফন গায়ে জড়ানো বুদ্ধিজীবিকে। নিয়মতন্ত্র কায়েম করতে গিয়ে গান্ধী সুভাষ বসুকে বের করে দিয়েছিলেন কংগ্রেস থেকে। নিয়মতন্ত্রের নিয়মে ভারত পাকিস্তান ভাগ হয়েছে কুটকৌশলে, পর্দার আড়ালে।
নিয়মতন্ত্রকে অস্বীকার করা হয়েছিলো বলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ন্যুনত্ম কোন হীনমন্যতার সুযোগ নেই,আমাদের স্বাধীনতায় কোন কুটকৌশল নেই, অনেক দাম দিয়ে স্ট্রেটফরোয়ার্ড আদায় করা স্বাধীনতা আমাদের।
একাত্তুরে এই ভদ্রলোকের ভূমিকা কি?
সকল 'বিদগ্ধ' জনের একাত্তুরের ভূমিকা আর্কাইভ করা দরকার।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
গান্ধীকাফনের পরিকল্পনা-উৎপত্তি কিন্তু সুপ্রাচীন এবং সুপরিকল্পিত। এর বিকাশ ও বিবর্তন ধারাবাহিক ও বিস্তৃত। প্রতি আমলে এদের চিনতে পারাটাই দরকারী ব্যাপার। কয়েকটা হয়তো ধরা পড়ে, তবে বেশির ভাগ পার পেয়ে যায়।
'বিদগ্ধ' জনদের একাত্তরের ভূমিকা খুব সক্রিয় হবার কথা না। কারণ, এদের সাহস কম। এরা সরাসরি কোন পক্ষ নিতে পারেনা, খালি বিভ্রান্তি ছড়ায়। এরা আসলে যে পক্ষের লোক তাদের দুঃসময়ে এরা গা ঢাকা দেয়। তাদের পক্ষের সুদিন আসলে মাঝে মাঝে ঘি-ননীর জন্য কান্নাকাটি করে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১
জ্ঞানের সর্তক ও দায়িত্বশীল প্রয়োগ না ঘটার আগ পর্যন্ত তা জ্ঞান নয়।
২
আর প্রথম আলোর পলিটিকাল লাইনটিই এমন। কলামিস্ট এর সাথে কম্প্লাই করেন কেবল। গোড়া থেকে আরো শক্তভাবে টান দেয়া উচিৎ।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
১. তাহলে জনমানসের জন্য ক্ষতিকর বা মানবতার জন্য ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমগুলো যে ধারণাসমষ্টির উপর দাঁড়ানো তাকে আমরা কী বলব?
২. কলামিস্টের সাথে কম্প্লাই করা সম্পাদকের পত্রিকার সামস্টিক নীতিটা কী হয় তাহলে? যে পত্রিকায় সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনিসুল হক, আবুল মোমেন, আলতাফ হোসেন, আবুল হায়াত, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বিচারপতি গোলাম রব্বানী, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, মঈনুস্ সুলতান, মামুন রশীদ, গোলাম মুরশিদ, ফজলুর রহমান, এ এফ এম আব্দুল আলী আর আনিসুজ্জামান কলাম লেখেন সেখানে সম্পাদক কোন কলামিস্টের সাথে কী কম্প্লাই করেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ব্যাপারটা উল্টা দিক থেকে হয়। মানে, কলামিস্টরা যাই লেখেন না কেন মোটের ওপর তা প্রথম আলোর মৌলিক এজেন্ডার পরিধির বাইরে খুব বেশি হয়ত যেতে পারে না।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এইবার তো আমাকে বিপদে ফেলে দিলেন দেখছি! আপনার কথাটা সত্য হলে প্রথম আলোর মৌলিক এজেন্ডার পরিধি কতদূর? অথবা তার মৌলিক এজেন্ডা কত কিছুকে (পড়ুন কত পারস্পরিক বিপরীতধর্মী ধারণাকে) একসাথে ধারণ করতে পারে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মকসুদ সাহেব বাংলাদেশ বেতারে কিছু ইংরেজী পান্ডুলিপি লিখতেন। আমি ডিপলোম্যাটিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামস আর ওয়ার্ল্ডমিউজিক দেখতাম শুরুতে। তার এক পাকিস্তানপন্থী বন্ধু রেডিওর আধিকারিক ছিলেন আলফাজ সাহেব,ঢাবি থেকে ইংরেজীতে থার্ড ক্লাস পাওয়া লোক, কিন্তু বাংলা প্রায় বলেন না,পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে জিতলে মিরপুর বিহারীক্যাম্প সন্নিবর্তী কাবাব হাউজ থেকে বিফ চাপ নিয়ে সরকারী গাড়ীতে বাড়ি ফিরতেন। উনি রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজানোর বিপক্ষে। নজরুলপন্থী। আমি তেল না দিয়ে উনার নিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গে দিয়েছিলাম। তবে মকসুদ সাহেব আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে অদৃশ্য মাছি তাড়াতেন। উনি আমার ডেস্কে আসেননি আলফাজ সাহেবকে দিয়ে সালাম দেয়াতেন,মেনে নিতে পারেন নি বিসিএস নেটিভ,পরনে জিন্স,আলফাজ সাহেব বলতেন ইউ আর নো মোর আ ভ্যাগাবন্ড,ইউ আর আ সিভিল সার্ভেন্ট,বিহেব ইওরসেলফ।সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারিনা এই তথ্য আমার শিবিরীয় ব্যাচমেটদের কাছ থেকে জেনে যাওয়ায় ভোর চারটায় আমাকে আফিসার ইন চার্জ করে ডিউটি রুমে বসিয়ে রাখতেন। ফজরের নামাজ পড়ে নুরজাহানের গান শুনতে শুনতে সরকারী ফোন ঘুরাতেন, খুব শীত পড়েছে, তাই লেপ মুড়ি দিয়ে বেড টি, আপনারো সময় আসবে বছর পাঁচেক পরে। আর হ্যাঁ রবীন্দ্র সঙ্গীত এতো বাজছে কেন, কিউশিট কে করেছে, কোন মালাউনের ---।আমি উনাদের স্যাডিজমের গিনিপিগ ছিলাম। তবে লড়াইটা জমপেশ ছিল। আমার মৃত্যুর শহর উপন্যাস পড়ে সাজাহান ফারুকের সামনে ইংরেজীর ঐ পেডাগগ কেঁদেছেন,আমাকে রাঙ্গামাটি স্টেশনে বদলী করতে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুকেরা আমাকে লেখা পড়েই বুকে টেনে নিয়েছেন। অগত্যা রাজাকার বন্ধুর টেবিলে বসে সুড়ুত সুড়ুত করে চা খেতে খেতে মকসুদ সাহেব আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে সিএসপিদের প্রশংসা করতেন, জগতের কিছু কিছু উন্নাসিকের চোখে আই এম নট স্মার্টার দ্যান এইটথ গ্রেড।ফলে এই স্পষ্ট পাকিস্তানপন্থী আড্ডায় বোকার মতো ঢুকে পড়ে জায়গা টাকে মুশতাকের বার্ড ষড়যন্ত্রের অকুস্থল মনে হয়েছে। সুতরাং ষষ্ঠপান্ডবকে ধন্যবাদ কুরুক্ষেত্রের লড়াইএ জ্ঞানপাপসমকসুদের ওপরে আলোক সম্পাতের জন্য। এগুলো ভিত্তিহীন ডিফেমেশন নয়, তার ব্যাচমেট আবদুল্লাহ আল ফারুক যে বয়েসে কালুরঘাট বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র গড়েছেন,বা একি ব্যাচের সাজাহান ফারুক কলকাতায় সাধীন বাংলা বেতারে যোগ দিয়েছেন, আলফাজ সাহেব তখন রাওয়ালপিন্ডির মুখপাত্র হয়ে রাজশাহীতে ইয়াহিয়ার পক্ষে মাইকিং করেছেন, সিএসপি মারগুব মোর্শেদ ঐ সময় রাজশাহীতে। আর মকসুদ সাহেব তখন পিকিং পিকিং (ভেতরে পাকি পাকি) বলে অনেক ডেকেছেন,পিকিং আসেনি।এখনো তার আশা পিকিং আসবে। পাকি তো আসবে না, পুড়ে যাচ্ছে-ডুবে যাচ্ছে। এখন পিকিং ই ভরসা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
দারুন। এইসব প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বহু গড়ে উঠা মিথ্যে মিথ আর ছদ্ম আইকনদের ভেঙ্গে দেবে।
চিন্তা করুন কবছর আগেও প্রথম আলোতে সৈয়দ সাহেবের জ্ঞানীবচন পাঠ করে মফস্বলের এক উঠতি তরুন তাকে প্রণম্য ধরে নিতো। আহা কি দার্শনিক। খেলকা ছাড়া কিছু পরিধান করেননা।
এখন এই যে বিকল্প পাঠের অবারিত সুযোগ। সবদিক জেনেবুঝে নিজেরটা বেছে নেয়া।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এখানেতো কেবল গল্পের হাইলাইটস্ বললেন। মূল গল্প বিস্তারিতভাবে পড়তে পাওয়াটা কিন্তু আমাদের পাওনা রয়ে গেল।
১৯৬২ সালের পরবর্তী গণচীনের বৈদেশিক নীতি খেয়াল করলে দেখা যায়, গণচীনের নিরাপত্তা ও অর্থনীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও প্রবল যোগাযোগ না থাকলে তারা বাইরের কোন ব্যাপারে বল-ভরসা যোগায় না। বড় জোর মুখে মুখে কিছু সান্ত্বনা বা পিঠ চাপড়ানি দেয়। "পিকিং-ই ভরসা" বলা বেকুব কি এখনকার দুনিয়ায় এখনো আছে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এইসব ধরি মাছ না ছুই পানি বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে আশঙ্কাটা হল, এরা তাদের নিরীহ "নিয়মতান্ত্রিক" শস্তা কথার চটকে জনগণের মগজ ধোলাইয়ের কাজে বেশ পারঙ্গম। স্বীকার করতে কুন্ঠা নেই, এইসব মিঠেকড়া কথার ইন্দ্রজালে আমিও জড়িয়েছিলাম, যদিও সে ঘোর কাটতে বেশি সময় নেয়নি। মাসকাওয়াথ ভাইয়ের মন্তব্যটা পড়ে তাই খুব একটা অবাক হলামনা।তবে একটা প্রশ্ন, এই পিকিংপন্থী ছুপা রুস্তমদের আখেরী খায়েশটা কী? কোন উদ্দেশ্যে এসব বুলি তারা আউড়াচ্ছেন?
অদ্রোহ।
পিকিং বা পিকিংপন্থী কোন রাজনৈতিক দলের সাথে মকসুদ সাহেবের কোনো যোগাযোগ আছে বলে আমার জানা নেই। মকসুদ সাহেবের কার্যক্রমের সাথে আজকের পিকিং-এর কোনো যোগাযোগ আছে বলে মনে হয়না। সুতরাং তার বা তাদের মত ব্যক্তিদের খায়েশ অতীতে নিজেদের ব্যর্থতার শোধ তুলে নিজেদের মনোমত ভবিষ্যত গড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সত্যি কথা বলতে আমি অনেকটাই রাজনীতি বিমুখ। ... তবে ইতিহাস বিমুখ নই, জন্মের প্রায় দেড়যুগ এই দেশে কী ঘটে গিয়েছিলো, তা অল্পবিস্তর জানি, নানা মুনির মুখ থেকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীতে ইতিহাস পর্যালোচনা শুনেছি- কখনো অবাক হয়েছি বিকৃত তথ্য পেয়ে এবং অন্যান্য পক্ষ হতে সেই বক্তার অবস্থান বিবেচনা করে তার তথ্য বিকৃতকরণের পেছনের যুক্তিটি খুঁজে পেয়েছি। ...
আগামীতে যারা এই দেশে জন্ম নেবেন, তারা প্রকৃত ইতিহাস জানবার পর এই সব কলামিস্টের কলাম পড়ে কলামিস্টদের সম্পর্কে কী অদ্ভূত ধারণা নিয়ে বড় হবেন- তা জানার বড় কৌতূহল হয়...
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান, রাজনীতিবিহীন ইতিহাস সোনার পাথরবাটির মত অবাস্তব জিনিষ। ইতিহাসের প্রতিটি ব্যক্তির কার্যক্রম, বক্তব্য, ভূমিকা রাজনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইতিহাসে এমন কোন দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নেই যার কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নেই।
আজকে যারা বক্তব্য রাখছেন, কলাম লিখছেন তারা আগামীদিনের ইতিহাসের অংশ। তাদের রাজনৈতিক অবস্থানই আগামীকাল ইতিহাসে তাদের স্থান নির্ধারণ করে দেবে। তবে এর ব্যতিক্রম যে হয় না তা নয়, ডেকামেরনের Ser Ciappelletto-রা সব সময়ই ছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সরাসরি পাঁচ দাগালাম।
এইসব ভণ্ড, নালায়েক বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ উন্মোচনে সবসময় স্পষ্ট সমর্থন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ। এই কাজে শুধু সমর্থন দিলে চলে না, নিজেকেও একটু হাত লাগাতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ব্রাভো পান্ডবদা। ফেইসবুকে শেয়ার করলাম।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ রিপন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসাধারণ পোস্ট।
মক্সুদ ১৯৭১ সালে কোথায় কী করছিলো, এ সম্পর্কে জানা দরকার।
বিশেষ কিছু জানতে পারবেন বলে মনে হয় না। কেন মনে হয় না সেটা হাসান মোরশেদের মন্তব্যের জবাবে বলেছি। তবু খোঁজ রাখা দরকার। কে জানে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হতেই পারে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসাধারণ লাগলো! পুরো লেখাটাই।
১৯৭১ সালের যুদ্ধটা যে আর দশটা যুদ্ধের মত দুটা দেশের যুদ্ধ না, গৃহযুদ্ধ না - এটা যে মুক্তিযুদ্ধ - এই কথাটাই কিছু মানুষ বুঝতে চায় না। মুক্তিযুদ্ধ ব্যাপারটা আসলে কী, অন্য প্রকার যুদ্ধের সাথে এর পার্থক্যটা কোথায় সেটা বোঝানোটা জরুরী হয়ে পড়েছে। তাহলে ১৯৭১-এ কে কী করল, কেন করল ইত্যাদি নিয়ে বেহুদা তর্ক এড়ানো যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
"শব্দসৈনিকদের নাম ভাঙিয়ে বই বিক্রি করে সেই বইয়ে মকসুদ সাহেব তাঁদেরকে হেয় করে, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাকে ব্ল্যাকআউট করে, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ব্যর্থ বলে নানা কূটকচালের ধোঁয়াশা পাঠকদের মনে ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন।"--ভয়াবহ।
মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ক যেসব বই বাজারে মেলে তার বড় অংশ পড়লেই তথ্য বিকৃতির দরুন "ভয়াবহ" বলবেন। এই দেশে আবর্জনা ছাপানো আর প্রকাশ করা খুব সোজা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এক কথায় অসাধারণ। টানটান উত্তেজনায় পড়লাম। মাসকাওয়াথ ভাই-এর মন্তব্যটাও এই প্রসঙ্গে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আমি আশাবাদী আগামী প্রজন্ম বিকল্প মাধ্যমের সুযোগ নিয়ে সব জেনে-শুনে এবং সঠিকটা বুঝেই এগিয়ে যাবে।
এধরণের লেখা আরো আশা করবো।
টুইটার
এই উদ্যোগটা আসলে ব্যক্তি পর্যায়ে হলে হবেনা। যখন যেখানে যার চোখেই এমন অসঙ্গতি বা কূটচাল চোখে পড়বে তখনই সেটা বাকিদের নজরে আনতে হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সচলে এই লেখাটা আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
সবাই এই লেখাটা শেয়ার করতে থাকেন। এই পোস্ট স্টিকি করার মতো।
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
বদরুদ্দীন উমর আর ফরহাদ মজহারের উপর বিশ্লেষণের অপেক্ষায় আছি। কুলদা রায় আরো একজনের কথা বলেছিলেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অন্যজনের নাম উল্লেখ করতে পারতেন। সলিমুল্লাহ খান। তাঁর বিষয়ে কথাবার্তা কুলদা রায়ের সাথে ফেসবুকে করা হয়েছে। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন।
না জেনে ট্যাগিং করার লোভ সামলানো এখন অনেকের জন্য কষ্টের হয়ে গেছে। বাই দা ওয়ে, আজ সলিমুল্লাহ খানের জন্মদিন।
--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
১. অনলাইনের মাল-মশলা দিয়ে যদি ফরহাদ মজহার নামানো যায় তাহলে দেরী না করাই উত্তম। বদরুদ্দীন উমরের ব্যাপারে অপেক্ষায় আছি।
২. ফেসবুকের সূত্র ধরেই কথাটা বলা। ব্যাপারটা প্রমাণিত না বলে এখানে নামটা বলিনি। এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তে আমরা এখনই না আসি। কুলদা রায় যেহেতু কথাটা বলেছেন তাই সেটা প্রমাণের দায় তার উপরেই বর্তায়। আমরা কিছু সময় বরং অপেক্ষা করি, দেখি কুলদা রায় কী বলেন। তাতেই প্রমাণিত হবে তিনি কি ঠিক কথা বলেছিলেন নাকি অহেতুক ভুল ট্যাগিং করেছিলেন। আশা করি ব্যাপারটা ফের্মার শেষ উপপাদ্য প্রমাণের মত কিছু হবে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এতো লোকজন দৈনিক মরে ... এইসব হুদাই বাইচা আছে ক্যা???
===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
তেলাপোকা নাকি নিউক্লিয়ার যুদ্ধের পরও টিকে থাকবে এমন মীথ প্রচলিত আছে, আর এরা বেঁচে থাকবে না!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
....এইসব দেবতাবেশী ভন্ডের দল দেবতার ঢঙ্গে চলেন, বলেন, লেখেন আর ভেতর থেকে গভীরভাবে বিশ্বাস করেন এ দেশের কিছু হবে না, যেখানে যতটুকু সর-মাখন পান ছেকে তুলে খান-জমান। এদের অতীত-বর্তমান কর্মকান্ড নিয়ে আরো বেশী অনুসন্ধান হওয়া দরকার।
..তবে পিকিংপন্থী হলেই কেউ সৈআম'দের মতন দর্শনধারী ভন্ডসাধু হয়না।
লেখককে অভিনন্দন।
পিকিংপন্থী বলতে আজকের দিনে আসলে কী বোঝায়? মাওবাদী বললেও না হয় কিছু বুঝতাম। তা যাকগে, মাওবাদী বলুন আর পিকিংপন্থীই বলুন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে গণচীনের আর চেয়ারম্যান মাওয়ের ভুমিকা এরা কীভাবে মূল্যায়ণ করেন? যদি তারা গণচীনের আর চেয়ারম্যান মাওয়ের তখনকার ভূমিকা সমর্থন করেন তাহলে তাদের সাথে জামাতীদের পার্থক্যটা কোথায়? এমনকি ১৯৭৫ সালের পরেও তারা কোনদিন কি পিকিং-এর কাছে এই ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা চেয়েছেন? ভণ্ডসাধু কাকে বলে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই মকসুদ্যারে দেখলেই কেন জানি বিরক্ত লাগে। এর লেখা কোনোদিন পড়ি নি, তাই জানি না কী লেখেন উনি। উনার গান্ধী হওয়ার লেবাস থেকে ঝুর ঝুর করে ভন্ডামি ঝরে পড়ে।
১০ এপ্রিলের স্বাধীনতা দিবস তো হুদা ভাইয়ের তেলের ড্রামের স্বাধীনতা দিবসের চাইতেও উপাদেয়।
প্রথম আলোয় একবার বিচারপতি হাবিবুর রহমান নিরপেক্ষ স্বাধীনতার ইতিহাস লেখার একটা নমুনা হাজির করেছিলেন। সেখানে লিখেছিলেন, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী বাহিনী একটু 'পিটুনি' দিয়েছিল !!!
একটু কারেক্শন আছে, তেলের ড্রামের অরিজিনাল আবিষ্কারক জেনারেল মীর শওকত আলী।
বিচারপতি হাবিবুর রহমানের "হাল্কা পিটুনী" দেবার গল্প শুনেছি - পড়িনি। লেখাটা একটু যোগাড় করে দিতে পারেন? আশ্চর্য লাগে এই লোকই "গঙ্গাঋদ্ধি থেকে বাংলাদেশ" লিখেছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১. তেলের ড্রাম আসলে সবার।:) যে যতো ঢালতে পারে। কারেকশনের জন্য ধন্যবাদ। আমি ভাবছিলাম হুদাই যখন বেশি বেহুদা কথা কয়, তাহলে এটা বোধহয় উনারই বাণী।
২. পিটুনি নিয়া রিটন ভাইয়ের একটা প্রতিক্রিয়া সচলেই আছে। প্রথম আলোর পুরানা সংখ্যা ঘাটলে মূল লেখাটা পাইতে পারেন।
লিঙ্কটা দেবার জন্য ধন্যবাদ। এমন কিছু ক্ষেত্রে নিজে একেবারেই বোকা হয়ে যাই। কাকে বিশ্বাস করবো?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কয়েক সপ্তাহ আগে অনেক আগ্রহ নিয়ে "ওরা আসবে" শিরোনামে একটা বই পড়েছিলাম। বইটা কী করে আমাদের ঘরে এলো, তা আমরা কেউ জানি না। কিন্তু ভূমিকাটা পড়ে মনে হলো মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা। মেলা খাটনী খাইট্যা প্রায় আটশ পৃষ্ঠার বইটা শেষ করে মনে হলো লেখক আবুল চৌধুরী আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন একটা বিকৃত বই লেখার জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত।
একবার ভাবলাম একটা রিভিউ লিখি, পরে মনে হলো বইটা পড়ে অনেক সময় নষ্ট করেছি, রিভিউ লিখে বাকী সময়টা নষ্ট না করি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মাকসুদ ঘরানার লেখকদের থেকে লোকজনকে সাবধান করার জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত।
যদিও আমি আপনার মতো এতো ভাল লিখতে পারব না। ধিক্কার জানাই এই সব তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের, ঘৃণা প্রথম আলোরও কিছু প্রাপ্য, এই ধরনের লেখকদের জায়গা দেয়ার জন্য।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
লিখে ফেলেন বস্। যাতে ভবিষ্যতে ঐ আবর্জনার জন্য আপনার মত কারো পকেটের পয়সা আর অমূল্য সময় ব্যয় করতে না হয় সেজন্যই রিভিউ লিখে ফেলেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১.
ছয় দফা অবশ্যই কোন স্বাধীনতার দাবীনামা নয়। স্বাধীনতার কথা সত্তর কেন, একাত্তরের শুরুতেও বলা হয়নি। স্বাধীনতার ইচ্ছা আর ঘোষণা দুটোই এসেছিল ধীরে, ঘটনাক্রমে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছিলেন--
২৫ মার্চের ঘটনাপ্রবাহ (গনহত্যা থেকে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার) ৭ই মার্চের ঘোষণাকে নতুন মাত্রা দেয়। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের একটি লেখা থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি। (এই লেখাতে ) তিনি একাত্তরের পটভুমি ব্যাখ্যা করার পর লিখলেন-
অর্থাৎ, বাঙালী সামরিক অফিসারদের কাছেও ৭ই মার্চের নির্দেশ স্বাধীনতার প্রস্তুতিরই ইশারা ছিল। ফলে ২৫শে মার্চের গনহত্যার পর (যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নেই যে অধিকাংশই বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তারপূর্ব স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে পাননি, তথাপি) বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে কী হবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশ সবার কাছেই ছিল। ফলে, এম এ হান্নান, মেজর জিয়াউর রহমান, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ বা বেলাল মোহাম্মদ প্রমূখদের ঘোষণাকে অনধিকার চর্চা বলার সুযোগ নেই।
২.
২৬শে মার্চ থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত সময়টাতে যুদ্ধের কর্তৃত্ব নিয়ে বেশ জটিলতা ছিল। মাওলানা ভাসানী চাচ্ছিলেন একটি সর্বদলীয় কমিটি করতে। কিন্তু তাজউদ্দীনসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য ছিল- সত্তরের নির্বাচনের ফলাফল এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুসারে তাদের দলেরই অস্থায়ী সরকার গঠন করা উচিত। অন্যদিকে তোফায়েল আহমদসহ কয়েকজন নেতা এমন দাবীও করছিলেন যে, তাজউদ্দীন আহমদ নয়, বরং তাদেরকেই বঙ্গবন্ধু দ্বায়িত্ব দিয়েছিলেন। যেহেতু ২৫ মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর সাথে আর কোন যোগযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি, প্রত্যেকেই যার যার দাবী দিয়ে আসছিলেন।
এমতাবস্থায়, ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা থেকে ২৭শে মার্চ পর্যন্ত যে ঘোষণাগুলি এসেছে, তা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অনুপ্রাণিতই শুধু করেনি, ১০ এপ্রিলের ঘোষণাকেও সহজতর (এমনকি সম্ভবপর) করেছে।
৩. সত্তরের দশককে যারা দেখেছেন, তাদের বয়স হয়ে যাচ্ছে। অনেককেই দেখছি জীবনের সায়াহ্নে এসে অন্যের ভুল প্রমান আর নিজের কল্পকাহিনী লিখে রেখে যাবার প্রানান্ত চেষ্টায় বিরতিহীন। এদের জীবদ্দশাতেই এদের জানিয়ে দিতে হবে যে, তাদের আগডুম-বাগডুম আমরা গিলছি না। এইটুকু অতৃপ্তি তাদের প্রাপ্য। ষষ্ঠ পান্ডবকে অনেক ধন্যবাদ।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম কিন্তু তাঁর "লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে" বইটিতে জিয়া সম্পর্কে অন্যরকমই লিখেছেন। তিনি লিখেছিলেন, তিনি নিজে গোপনে জিয়া [৮ম ইস্ট বেঙ্গলের সবচে সিনিয়র বাঙালি অফিসার] এবং একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে [ইবিআরসির সবচে সিনিয়র বাঙালি অফিসার] গোপনে আক্রান্ত হবার আগে আক্রমণ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। এরা রাজি হননি। পরিণামে ২৫শে মার্চ রাতে ইবিআরসিতে প্রায় এক হাজারের মতো বাঙালি সেনা-অফিসার ও তাদের পরিজনেরা ২০ বালুচ রেজিমেন্টের হামলায় নিহত হন। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ৮ম ইস্ট বেঙ্গলের সেনা-অফিসাররা বিদ্রোহ করে ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, ইবিআরসিতে কোনো প্রতিরোধ গড়ে না তুলে। মেজর রফিক আক্ষেপের সাথে বলেছেন, সেদিন যদি ২০ বালুচ রেজিমেন্টকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে প্রতিহত করা হতো, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই ভিন্ন হতো।
জিয়া আরো কিছু পেজোমি করেছিলেন, সেগুলোর বর্ণনা বইটিতে বেশ বিশদভাবেই আছে।
১. ২৫শে মার্চের আগে আক্রমণ করা সম্ভব হতো কিনা, তা নিয়ে সামরিক বাহিনীতে যে বিভাজন ছিল, তা কিছুটা বোধগম্য। রাজনৈতিক আলোচনা যেখানে চলছে, সেখানে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে ভুমিকা পালন একাধিক কারনে কঠিন-- যে কোন রাজনৈতিক নেতা আজ সরকারের বিরোধীতা করে কাল আবার আলোচনায় বসতে পারে। কিন্তু সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে একবার সরকারের বিরোধীতা করার পর দেশ স্বাধীন, দেশ ত্যাগ অথবা কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প থাকে না। একারনে তখনকার অনেক সেনা সদস্যই কিন্তু অনেক পরে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।
২. ২৫শে মার্চের গনহত্যাই মুলত: তাদের বিদ্রহে উদ্বুদ্ধ করে এবং এর আগ পর্যন্ত সকলেই বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যেমন, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের ভাষ্যমতে, ২৪শে মার্চ শমশেরনগর যাবার পথে জনৈক বাঙালি শুয়ে পড়ে তার গাড়ীর গতি রোধ করলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, বঙ্গবন্ধু বললেই তারা যুদ্ধে যোগ দিবেন। আপনি হয়তো ভাবছেন ২৫শে মার্চের একতরফা আক্রমণ প্রতিহত করা যেত কিনা। এই প্রশ্নটা আমারও।
জিয়াউর রহমানের লেখায় জানা যায়, বিংশতিতম বালুচ রেজিমেন্টের জওয়ানদের প্রতি রাতে গোপন গনহত্যার অভিযানের খবর তিনি মার্চের শুরুতেই জানতেন। তাছাড়া, ২৪শে মার্চ সোয়াত জাহাজের অস্ত্র খালাসের জন্য বাঙালিদের ব্যারিকেড তোলার সময় প্রচুর বাঙালিকে হত্যা করা হয়। তবে তিনি ২৫শে মার্চ রাত পর্যন্ত ব্যারিকেড অপসারনের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। এসবই তার নিজের কথা। ২৪শে মার্চে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে বিভিন্ন দিকে পাঠিয়ে যে এর শক্তি কমিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং এমনই কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে তা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন বলছেন। কেন ২৪শে মার্চ রাতে বা ২৫শে মার্চ দিনে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ধারনা বঙ্গবন্ধুর কাছ পর্যন্ত পৌছুল না, তা বোধগম্য নয়।
৩. জিয়ার কথ্যমতে, তিনি মেজর রফিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পারেননি। আমি জিয়াকে কোট করছি বাঙালি সৈনিকদের মনোভাব বুঝতে। তবে জিয়াউর রহমানের লেখায় সবসময়ই একটু ইতিহাস বদলের ছোয়া থাকে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে তার লেখার এই অংশটা দেখুন-
একটা মরণপণ যুদ্ধে শত্রুপক্ষকে সৈনিকসুলভ শ্রদ্ধা হয়তো দেখানো যায়, কিন্তু তাই বলে যুদ্ধের সময়েই শত্রুপক্ষের সাথে "হৃদ্যতা", "বন্ধুতে পরিণত" হওয়া? নিশ্চিত ভাবেই তিনি ১৯৭২-এর অনুভুতিকে ১৯৬৫-র অনুভুতি বলে চালিয়ে দিচ্ছেন।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
অসাধারণ লেখা। পাঁচ তারা দেয়ার ক্ষমতা থাকলে দিতাম। এইসব গাঁজাখুরী প্রলাপতাড়িত বুদ্ধিজীবিদের পাগলা গারদের বিশেষ প্রকোষ্ঠে যাবজ্জীবন প্রবিষ্ট করে রাখা দরকার। এদের মুখে দুর্গন্ধ, মগজে পোকা, মননে অমানিশা। পাণ্ডবদা'কে ধন্যবাদ।
নিচের সংবাদটি গতকালের 'কালের কণ্ঠ' থেকে নেয়া। আসিফ নজরুল ও ফরহাদ মজহারের নাম এখানে জামায়াতের বুদ্ধিজীবী হিসাবে উল্লেখ করা আছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে জামায়াতের
১১ কৌশল!
তিন দিনের রিমান্ডে রফিকুল মাসুদ কার্জন
যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম ব্যাহত করতে বিশেষ গোপন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত ইসলামী। এ লক্ষ্যে 'বেসরকারি পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধান কমিটি' ব্যানারে একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি ১১ দফার কর্মপরিকল্পনা সাজিয়ে কাজও শুরু করেছে তারা। মুুক্তিযুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন কিন্তু এখন মহাজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়, এরকম কয়েকজন ডাকসাইটে রাজনৈতিক নেতাকে ব্যানারে ভেড়ানোর চেষ্টা তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এসব নেতার একটি তালিকা তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার গ্রেপ্তার অভিযানের সময় জামায়াত মহানগর আমির রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করেছে পুলিশ। জামায়াতের এই নেতা নেপথ্যে থেকে কথিত এই কমিটির সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছিলেন বলেও পুলিশ দাবি করেছে। রফিকুল ইসলামকে রমনা থানায় দায়েরকৃত ফারুক হত্যা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানোর পরিকল্পনা সংবলিত কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১১ দফা কী কী : উদ্ধারকৃত কাগজপত্র অনুসারে ১১ দফা কর্মপরিল্পনার মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে, জামায়াত তাদের নিজের মতো করে তথ্য-প্রমাণসহ ৭৭ যুদ্ধাপরাধীর একটি তালিকা তৈরি করবে। আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরিক কোনো দল বা বামপন্থী দলগুলোর মধ্য থেকে নেতাদের খুঁজে বের করে এ তালিকা করা হবে। এসব নেতার মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা গণমাধ্যমে প্রকাশের পাশাপাশি প্রচারপত্র তৈরি করে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করা হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ওপর ভিডিও রিপোর্ট তৈরি করে তা প্রচার করা হবে।
এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যু নিয়ে ঘন ঘন সেমিনার করা হবে। যারা সরাসরি জামায়াতের রাজনীতি করেন না এরকম বিশিষ্টজনদের এসব সেমিনার বা আলোচনায় হাজির করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিলেও কোনো কারণে এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহজোট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়_এরকম ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে সেমিনারে টানতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াতের লক্ষ্য হচ্ছে_বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও শাহাজাহান সিরাজ। উদ্ধার করা নথি অনুসারে জামায়াতের 'নিজস্ব' বিশিষ্টজনদের তালিকায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, কমরেড সাইফুল হক ও ফরহাদ মজহার। সেমিনারে দেওয়া তাঁদের বক্তব্য ধারণ করে বুকলেট ও ভিসিডি তৈরি করে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়।
জামায়াতের গোপন পরিকল্পনায় বলা হয়, বর্তমানে যাঁদের যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অনেকের ছবি আছে_ যেগুলো বিভিন্ন সভা-সেমিনার থেকে ধারণা করা। এসব ছবির মধ্যে আছে স্বাধীনতার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গোলাম আযম, বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজামী, মুজাহিদের সঙ্গে রাশেদ খান মেনন, জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ভিডিও বা স্থিরচিত্র, ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) চেয়ারম্যান মিজবাউর রহমানের সঙ্গে নিজামীর ছবি। এসব ছবি বা ভিডিও সংগ্রহ করে তা প্রচারপত্র ও ভিডিও আকারে তৈরি করে তা বিলি করার কথা রয়েছে কর্মপরিকল্পনায়। রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া নথিতে আরো বলা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগের যেসব নেতা যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে 'অতিউৎসাহ' দেখাচ্ছেন, তাঁদের তালিকা ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রচার করতে হবে।
রিমান্ডে রফিকুল : আমাদের আদালত প্রতিবেদক জানান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলামকে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে ফারুক হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক জিয়া উজ জামান। শুনানি শেষে ঢাকার তিন নম্বর অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আলী হোসাইন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। এ ছাড়া উত্তরা থানায় ১৯ এপ্রিল দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
২৭ জুন বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন দেওয়া হলে পথচারী ফারুক গুরুতর অগি্নদগ্ধ হয়ে পড়ে মারা যান। এ ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে কামাল লোহানী মতি-মক্সুদের তীব্র সমালোচনা করে একটি লেখা লিখেছেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদকে আমি যতটুকু চিনি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার একটি বিরাগ রয়েছে। এই বিরাগ মাওলানা ভাসানীর সব অনুসারীদেরই কমবেশি আছে। আওয়ামী বিরোধী রাজনীতি আসলে এই পক্ষের হাতেই বিকশিত হয়েছে। এই বিরাগ আছে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সমাজতান্ত্রিক আরেকটি ধারার ভেতরেও। তারা মনে করেন, বঙ্গবন্ধু আসলে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক নন। সময়ের দাবীতে ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে অসাম্প্রদায়িক অবস্থান নিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের ৮ জন অর্গানাইজিং সেক্রেটারী আছেন। তাদের অন্তত দুজনকে চিনি যারা মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে দেশের মূলনীতির মধ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্থাপন করে তাজউদ্দীন আহমেদ বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই লেখার আলোচনায় এটা হয়তো অপ্রাসঙ্গক, তাও লিখে ফেললাম। ৫* অসাধারন বিশ্লেষনের জন্য। একটি বিষয়ের পেছনের দৃষ্টিভঙ্গীর যে অনেকরকম মাত্রা থাকে তা তুলে আনার জন্য।।।
নতুন মন্তব্য করুন