আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কোনো রচনা যখন পড়ি, কোনো আলোচনা যখন পড়ি বা শুনি - তখন বার বার একটা কথা মনে হয় যে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়টা আসলে কী এটা অনেকের কাছে স্পষ্ট না। অথচ এই ব্যাপারটিতে আমাদের মধ্যে কোনো অস্পষ্টতা, কোনো মতদ্বৈধতা, কোনো বিতর্ক থাকা উচিত নয়। রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা না থাকায় ব্যক্তিপর্যায়ে অহেতুক বিতর্কের দরোজা খুলে গেছে। সংজ্ঞায়ণের ‘পাত্রাধার তৈল নাকি তৈলাধার পাত্র’ জাতীয় বিতর্ককে পাশে সরিয়ে রেখে দৈনন্দিন জীবনযাপন ও বোঝাপড়ার জন্য ব্যক্তি ও রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ধারণা (concept)-টিকে স্পষ্ট করার জন্য এই লেখার সূত্রপাত।
বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন বলে সচেতন ও প্রাজ্ঞ সকল পাঠকের কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ থাকবে এই আলোচনায় করা প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবুন এবং এগুলোর সঠিক উত্তরটি খোঁজার চেষ্টা করুন। এইখানে উত্তরের জায়গায় আমি আমার জানা ও উপলব্ধি থেকে আমার মতামত লিখেছি। আপনার উপলব্ধি আমার ব্যাখ্যার চেয়ে ভিন্নতর হলে নিঃসঙ্কোচে তা ব্যক্ত করুন। আশা করি, সবার আলোচনা থেকে আমরা সঠিক উত্তরগুলো খুঁজে নিতে পারবো। এই পোস্টে অপ্রাসঙ্গিক বা মূল আলোচনা ভিন্নখাতে বইয়ে দিতে পারে এমন ‘শাখা-প্রশাখা’ প্রসঙ্গে আলোচনা না করার জন্য অনুরোধ করা হল।
১. ‘মুক্তিযুদ্ধ’ কাকে বলে?
: উইকিপিডিয়াতে দেয়া সংজ্ঞা থেকে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে প্রাথমিকভাবে একটি জাতি বা গোষ্ঠীর মুক্তি বা স্বাধীনতা লাভের জন্য লড়াই। এই লড়াই একটি ঔপনিবেশিক শক্তিকে উৎখাত করার জন্য হতে পারে অথবা কোন স্বৈরশাসক বা একনায়ককে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য হতে পারে। এই যুদ্ধ দুটি বাহিনীর মধ্যকার নিয়মিত বা সাধারণ যুদ্ধের ন্যায় না, এর বিস্তৃতি ব্যাপক। মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞার জন্য ইংরেজী ও বাংলা অভিধান ঘাঁটলে আরো স্বল্প পরিসরে মোটামুটি এমন সংজ্ঞাই পাওয়া যায়। এই সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে ‘মুক্তি’ নামক একটি সাধারণ অনুমিতি আছে। বস্তুতঃ এই ‘মুক্তি’ ব্যাপারটি পরিষ্কার হলে তার জন্য যুদ্ধের ব্যাপারটিও পরিষ্কার হয়।
আমাকে কেউ ঘরের মধ্যে আটকে বা হাত-পা বেঁধে রাখলো; তারপর অন্য কেউ এসে আমাকে আটক অবস্থা থেকে ছাড়িয়ে আনলো। এভাবে আমি বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেলাম। আমরা ১৯০ বছর বৃটিশদের অধীনে ছিলাম তারপর দীর্ঘ বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে ১৯৪৭ সালের অগাস্টে বৃটিশ শাসনের অবসান হলে আমরা পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেলাম। পতিত স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক সরকার ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ থেকে দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল; তারপর ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর গণআন্দোলনের মাধ্যমে তার পতন হয়। এভাবে আমরা স্বৈরাচার থেকে মুক্তি পেলাম। মুক্তি পাবার এমন হাজারো উদাহরণ দেয়া যায় যা কখনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক, কখনো গোষ্ঠীকেন্দ্রিক আবার কখনো জাতিকেন্দ্রিক। বৃহত্তর পরিসরে শোষণ-বঞ্চনা-অবিচার-অসাম্য, অন্যায়-অমানবিক আচরণ, কাঙ্খিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক চর্চা সীমাবদ্ধকরণ, নৃতাত্ত্বিক-ধর্মীয়-ভাষা-জাতি-গোষ্ঠীগত বিচারে দলন-নিষ্পেষণ, চিন্তা-ভাষার স্বাধীন বিকাশের ও চর্চার পথরুদ্ধকরণ, সাধারণকে মানবিক-নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিতকরণ ইত্যাদি অন্যায় থেকে মুক্তি লাভের নিমিত্তে স্বতঃস্ফুর্ত, ব্যাপক ও সার্বিক যুদ্ধই মুক্তিযুদ্ধ। স্থান-কাল ভেদে এখানে উল্লেখিত নিয়ামকগুলোর এক বা একাধিক নিয়ামক অনুপস্থিত থাকতে পারে অথবা স্থানীয় কোনো নিয়ামক যুক্ত হতে পারে, কিন্তু তাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়না।
২. আমাদের যুদ্ধটি ‘মুক্তিযুদ্ধ’ কেন?
: ১৯৭১ সালে যে যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল তা একই সাথে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে এবং তাদের সহযোগী বাঙালীদের বিরুদ্ধে। পূর্ব বাংলার মানুষের উপর পাকিস্তানীদের দুই যুগের অর্থনৈতিক শোষণ, সামাজিক-রাজনৈতিক বঞ্চনা, অবিচার, প্রতি ক্ষেত্রে অসাম্য, নিয়মিতভাবে অন্যায়-অমানবিক আচরণ, বাঙালী সামাজিকতা ও সংস্কৃতির স্বাধীন চর্চার পথ রুদ্ধকরণ, বাঙালী নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বা অমুসলিম ধর্মীয় পরিচয় বিবেচনায় সাধারণের সাথে অন্যায় ও অমানবিক আচরণ করা, মুক্তবুদ্ধি চর্চার পথরুদ্ধকরণ, বাঙালীদের প্রাপ্য মানবিক-নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিতকরণ আমাদেরকে পাকিস্তানী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের সাথে একটি অবশ্যম্ভাবী সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়। ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই দুই পক্ষের মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, কোথাও কোথাও পাকিস্তানীদের পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ এই সংঘর্ষের সূচনা করে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী বাহিনী এদেশের মানুষের উপর সশস্ত্র আক্রমণ ও গণহত্যা শুরু করলে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। খুব স্বল্প সংখ্যক লোক ছাড়া পূর্ব বাংলার সকল জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে, পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে সার্বিক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের তরফ থেকে যুদ্ধটি উপরে আলোচিত মুক্তিযুদ্ধের সবগুলো শর্ত পালন করে বলেই সেটি ‘মুক্তিযুদ্ধ’।
৩. আমাদের যুদ্ধটি কি ‘স্বাধীনতার যুদ্ধ’ নয়?
: একথা সত্য যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি এবং কোনো কারণে মুক্তিযুদ্ধে আমরা পরাজিত হলে আমাদেরকে পরাধীন জাতির পরিনতি বহন করতে হতো, কিন্তু তারপরও আমাদের যুদ্ধটি নিছক স্বাধীনতার যুদ্ধ নয় - এটি মুক্তিযুদ্ধ। উত্তর আমেরিকায় ১৭৭৫ থেকে ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ও তার তেরোটি উপনিবেশের মধ্যকার যুদ্ধটি স্বাধীনতার যুদ্ধ। কারণ, মুক্তিযুদ্ধ হবার আবশ্যকীয় উপাদানগুলোর অনেকগুলোই সেখানে অনুপস্থিত। সেই যুদ্ধটি উত্তর আমেরিকার মাটি থেকে বৃটিশ শক্তিকে উৎখাতের উদ্দেশ্যে হলেও তা যুক্তরাজ্য রাষ্ট্রটি বা সেই রাষ্ট্রের চেতনার বিপক্ষে নয়। পক্ষান্তরে আমাদের যুদ্ধটি পাকিস্তান রাষ্ট্রটির ধারণা বা তার মূলসূত্র দ্বিজাতি তত্ত্বের বিপক্ষে, ধর্মীয় রাষ্ট্র গঠনের বিপক্ষে, প্রকৃত জাতিগত পরিচয় মুছে দিয়ে কাল্পনিক জাতিপরিচয় সৃষ্টির বিপক্ষে এবং একটি রাষ্ট্রের কাঠামোর মধ্যে জাতিগত শোষণের বিপক্ষে। এখানে পরিণামে পাকিস্তানীদের উৎখাত করে আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েম করা হলেও যুদ্ধটির মাত্রা কেবলমাত্র স্বাধীনতার যুদ্ধের চেয়ে গভীর মাত্রার। তাই আমাদের যুদ্ধটিকে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ না বলে ‘স্বাধীনতার যুদ্ধ’ বললে তার পরিসরটিকে খাটো করা হয়।
বর্তমানে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ‘স্বাধীনতার যুদ্ধ’ হিসাবে চালাতে চায় তারা এভাবে মুক্তিযুদ্ধকে শুধু খাটোই করতে চায়না বরং তার পিছনে আরো অসৎ উদ্দেশ্য ধারণ করে। মুক্তিযুদ্ধকে স্বাধীনতার যুদ্ধ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে দ্বিজাতি তত্ত্বকে অস্বীকার করা, ধর্মীয় রাষ্ট্র গঠনের বিরোধীতা করা, কাল্পনিক জাতি সৃষ্টির অপচেষ্টা রোধ করা ইত্যাদি বিষয়গুলোকে পাশ কাটানো যায়। ফলে বাংলাদেশকে একটি “বাঙালী পাকিস্তান” বানানোর চেষ্টা করা যায়। ১৯৭৫ পরবর্তীকালে সেই চেষ্টা দেখা গেছে এবং তখন থেকেই ‘মুক্তিযুদ্ধ’ বনাম ‘স্বাধীনতার যুদ্ধ’ নামক প্রহেলিকাটি তৈরি করা হয়েছে।
৪. আমাদের যুদ্ধটিকে কি ‘গৃহযুদ্ধ’ বলা যায়?
: গৃহযুদ্ধ হচ্ছে সেই যুদ্ধ যেখানে একটি জাতির একাধিক দল বা গোত্র বা গ্রুপের মধ্যে সংগঠিত হয়; যেমন ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ পর্যন্ত আমেরিকার উত্তর ও দক্ষিনের রাজ্যগুলোর মধ্যে সংগঠিত ‘আমেরিকার গৃহযুদ্ধ’। পূর্বে কখনো একদেশভূক্ত ছিল বর্তমানে আলাদা এমন জাতিরাষ্ট্রের মধ্যকার যুদ্ধকেও গৃহযুদ্ধ বলা হয়; যেমন ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত গ্রীক ও তুর্কী সাইপ্রিয়টদের মধ্যে চলা ‘সাইপ্রাসের গৃহযুদ্ধ’। গৃহযুদ্ধের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিপক্ষদের পরাজিত করে উক্ত দেশ বা অঞ্চলে নিজেদের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এর বাইরে স্থান-কাল ভেদে সরকারের নীতি পরিবর্তন বা স্বাধীনতা ঘোষণাও এই প্রচেষ্টায় যুক্ত হতে পারে। যেমন, আমেরিকার গৃহযুদ্ধে উত্তর আর দক্ষিণের সরকারের নীতিগত পার্থক্য ছিল এবং সাইপ্রাসের গৃহযুদ্ধে তুর্কী অধ্যুষিত উত্তর সাইপ্রাস স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল।
আমাদের যুদ্ধটিকে পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাই বাঙালী আর পাকিস্তানীরা কখনোই এক জাতিভূক্ত ছিলনা। বস্তুতঃ পাকিস্তানী জাতিটিই একটি কাল্পনিক, কৃত্রিম ও চাপিয়ে দেয়া ধারণা। সুতরাং এই যুদ্ধটি দলগত বা গোত্রগত লড়াই নয়। পূর্ব বাংলা অথবা বঙ্গ ঐতিহাসিকভাবে কখনোই পাঞ্জাব ও তৎসংলগ্ন অন্যান্য রাজ্যগুলির সাথে একদেশভূক্ত ছিলনা। বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল ছাড়া এরা এক শাসনাধীনও ছিলনা। নৃতাত্ত্বিক বা সাংস্কৃতিক পরিচয়ের তোয়াক্কা না করে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি রাজনৈতিক ভাবে সৃষ্ট বলে পাকিস্তানীদের সাথে পূর্ব বাংলার মানুষের যুদ্ধ তাই কোন বিবেচনাতেই গৃহযুদ্ধ হতে পারেনা।
বর্তমানে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করে তারা “আমরা ও পাকিস্তানীরা একই জাতি” এমন একটি ধারণা ও বিশ্বাস থেকে করে। এই ধারণাটির উদ্দেশ্য শুধু মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করে দেখানো নয়, বরং “যেহেতু আমরা ও পাকিস্তানীরা একই জাতি তাই আমাদের একীভূত হওয়া উচিত” এমন বদনিয়তেই করা। এরা কূটকৌশলী, ধুরন্ধর ও বর্ণচোরা রাজাকার।
৫. আমাদের যুদ্ধটি ‘তৃতীয় পাক-ভারত যুদ্ধ’ নয় কেন?
: একথা সত্য যে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ১৯৭১ সালে ‘তৃতীয় পাক-ভারত যুদ্ধ’ সংগঠিত হয়েছিল। তবে তা ডিসেম্বরের ৩ তারিখে শুরু হয়ে ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে শেষ হয়। পক্ষান্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ মার্চের শুরু থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং ২৫শে মার্চ রাতে পাকবাহিনী সারা দেশে একযোগে আক্রমন শুরু করলে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী শেষ হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পন করলেও অনেক স্থানেই বাঙালীদের সাথে পাকিস্তানীদের সহযোগীদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। তাছাড়া পাক-ভারত যুদ্ধ ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশেই হয়েছে। ভারতের পূর্ব অংশের সাথে বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানা থাকলেও ভারতের পশ্চিম অংশের সাথে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্কই নেই। তাই ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে সংগঠিত যুদ্ধের সাথে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে এক করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। তাছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা (সামরিক বাহিনী ও গণযোদ্ধারা) ভারতের অধীনস্থ কোনো বাহিনী ছিলেননা বা ভারতের কমান্ডে যুদ্ধ করেননি। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে উভয় বাহিনী কৌশলগত একীভূত কমান্ডের আওতায় থাকলেও মুক্তিযোদ্ধারা কখনোই ভারতীয় বাহিনীর অংশ ছিলেননা বা তাঁদের যুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও কখনো ভারতীয় বাহিনীর অনুরূপ ছিলনা। তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর তৃতীয় পাক-ভারত যুদ্ধ কোনোভাবেই অভিন্ন যুদ্ধ নয়।
৬. আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আসলে কখন শুরু হয়েছিল?
: মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়। পৃথিবীর কোনো মুক্তিযুদ্ধই একটি ঘোষণা বা একটি আক্রমণের মাধ্যমে সূচিত হয়নি। মুক্তি লাভের চেতনার বিকাশ, জনগণের মধ্যে মুক্তির ধারণা ও স্বরূপটি প্রতিষ্ঠা করা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অংশ। এই অংশটি দীর্ঘদিন ধরে একটু একটু করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের বক্তব্য, চিন্তার প্রকাশ, কর্মসূচী ও আন্দোলনের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। বস্তুতঃ পাকিস্তান সৃষ্টির পর পর তার চরিত্র ও কার্যকলাপ এদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার বিপরীত স্রোতে বইবার সাথে সাথে এই অংশের সূচনা হয়। চব্বিশ বছরে তা আস্তে আস্তে পরিপক্কতা অর্জন করে। তাই ‘৫২’র ভাষার লড়াই, ‘৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬’র ছয়দফার আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণঅভ্যূত্থান, ‘৭০-এর নির্বাচনের কোনোটাই বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় - বরং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র পর্বটির সূচনা হয় ১৯৭১-এর মার্চের শুরুতেই পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের বিচ্ছিন্ন আক্রমণের মাধ্যমে। এখানে স্মর্তব্য যে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও এই আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞের কথা বলা হয়েছে। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী বাহিনী ব্যাপক আক্রমণ শুরু করলে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক রূপটি প্রকাশিত হয় ও দেশবাসী সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
৭. আমাদের মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী ছিল?
: আগের আলোচনাগুলো থেকেই এটা স্পষ্ট যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিছক পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতা বা পাকিস্তানীদের হঠিয়ে নিজেদের সরকার গঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং পাকিস্তান রাষ্ট্রটির মৌলিক নীতি ও ধারণার বিপরীতে অসাম্প্রদায়িক, কল্যানমূখী, মানবিক ও প্রগতিশীল জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশের মানুষের মৌলিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ-বঞ্চনা-অন্যায়ের অবসান ঘটানো ও সাধারণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা ছিল এই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
৮. মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আসলে কী বোঝায়?
: ইতিমধ্যে বর্ণিত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞায়ণ, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা থেকে পূর্ববঙ্গের সাধারণ মানুষের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার (শুধুমাত্র রাষ্ট্র গঠন নয়) নিমিত্তে যে মূলনীতিগুলো প্রতিভাত হয় সেগুলোকে একত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বোঝায়। এর মাধ্যমে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাপারটি ১৯৭১ সালের সাথে সাথে শেষ হয়ে যায়না। বরং বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি যতদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে ততোদিন পর্যন্ত এর রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণের মধ্যে তার চর্চার ব্যাপারটি অব্যাহত রাখার আবশ্যিকতা আছে।
৯. আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কি শেষ হয়ে গেছে?
: একথা সবার কাছেই স্পষ্ট যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যর অনেক কিছুই এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। অনেক কিছু এক সময় থাকলেও পরবর্তীতে তার উলটো স্রোতেও হাঁটা হয়েছে। তাই বর্ণিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ সার্বিকভাবে শেষ হয়েছে বলা যায়না। পাকিস্তানী বা তাদের দোসরদের সাথে সশস্ত্র সংগ্রামের অংশটি ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী শেষ হলেও অসামরিক লড়াইটি এখনো চালাতে হচ্ছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি ভবিষ্যতে কখনো আক্রমণ করার সাহস করলে সশস্ত্র লড়াইটিও দরকার হতে পারে।
১০. তাহলে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ কি কোন সশস্ত্র যুদ্ধ নয়?
: সশস্ত্র যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তবে সেটাই সব নয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে, ব্যক্তি ও জাতির জীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও চর্চার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকে সার্বিকভাবে সফল করে তুলতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের ধারণা প্রতিষ্ঠা, প্রস্তুতিপর্ব, চেতনার বিকাশ এগুলোও মুক্তিযুদ্ধের অংশ। ইতিহাসে বর্ণনার সুবিধার্থে সশস্ত্র যুদ্ধের অংশটিকে শুধু মুক্তিযুদ্ধ বলে চিহ্নিত করা হলেও বাকি অংশগুলোতে আস্থা আনতে হবে ও গুরুত্ব দিতে হবে। ইতিহাসের বিস্তারিত আলোচনাতেও এই পর্বগুলো যথাযথভাবে আসতে হবে।
১১. আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কি তাহলে সফল বলা যায়?
: মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র পর্বটিতে আমরা জয়লাভ করেছি। এটি এক ধরণের সাফল্য। মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরোধীতা করেছিল বা করে তারা অনিচ্ছায় হলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে মানতে ও আনুষ্ঠানিকতায় মুক্তিযুদ্ধসংশ্লিষ্ট বিষয়াবলীতে সম্মান প্রদর্শণ করতে বাধ্য হয়। এটিও আরেক রকমের সাফল্য। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের সাথে ‘পাকিস্তান’ ধারণাটির অসারত্ব প্রমাণিত হয়েছে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মৌলনীতিকে সঠিক বলে প্রতিষ্ঠিত করে। পাকিস্তান দেশটি পশ্চিম পাকিস্তান নামক অবাস্তব আঞ্চলিক সত্ত্বা থেকে প্রদেশভিত্তিক আঞ্চলিক সত্ত্বায় ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি উপজাত। ইসরাইল ও তাইওয়ান ছাড়া দুনিয়ার আর সব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি (আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক) দিতে বাধ্য হয়েছে - এমনকি পাকিস্তান পর্যন্ত। এটিও মুক্তিযুদ্ধের সাফল্য। বিশ্ব দরবারে আমাদের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এগুলোও মুক্তিযুদ্ধের সাফল্য।
একথা সত্য যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সার্বিক বাস্তবায়ণ এখনো হয়নি। তবে তাতে মুক্তিযুদ্ধ ব্যর্থ হয়েছে তা বলা যাবেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সার্বিক বাস্তবায়ণের জন্য বেসামরিক লড়াইটা অব্যাহত রাখাটা মুক্তিযুদ্ধকে আরো সফলতার দিকে নিয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের সুফলটা তখন বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে কার্যকরভাবে পৌঁছাবে।
মন্তব্য
সরাসরি প্রিয় তে নিয়ে নিলাম---!
দারুণ গুরুত্বপূর্ণ একটা লেখা---!!
মোজেসের গল্পের বদলে এইটা পাঠ্য হওয়া উচিত।
দাদা, ঐ ভদ্রলোককে এখানে টানার দরকার নেই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোনো ব্যক্তিমানুষের কৃতিত্ব তুলনীয় হতে পারেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পোষ্টে হাজিরা, (গুড়) ও পাঁচ তারা দেয়ার জন্য লগিন করলাম । প্রিয়তেও নিলাম ।
পোষ্টের বিষয়বস্তু নিয়ে আপনার সাথে আগেই আলাপ হয়েছে ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আমার সাথে আপনার যা আলাপ হয়েছে তাতো হয়েছেই, এখানে সবার জন্য দরকারী প্রসঙ্গগুলো আলোচনা করুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
চমৎকার একটা লেখা, পাণ্ডবদা। এই বিষয় নিয়ে লেখার জন্য গত দুইদিন ধরে হাত নিশপিশ করছে, কিন্তু লকখলে কোনকালেই এত গুছিয়ে লিখতে পারবো না।
আমার প্রিয়তে নেবার অধিকার এখনও আসেনি, আসলে সে সময় এই লেখাটা অবশ্যই প্রিয়তে নিবো।
এই লেখাটা কিছু কিছু মানুষকে দেখানোর ইচ্ছা আছে। যদিও তেমন কোন লাভ হবে না। আফসোসের বিষয় তাদের কাছে গুরুত্ব বহন করে কার যবান থেকে কথাগুলো বের হচ্ছে। বিখ্যাত কেউ না হলে তারা পাত্তা দেয় না। আমাদের দেশে সবাই কতকগুলো বিষয়ে নিজেকে মাহের মনে করে, মনে করে তার এই বিষয়ে অশেষ জ্ঞান। এই তালিকায় প্রথমেই আসে ধর্ম, তারপর মুক্তিযুদ্ধ এরপর ট্রাফিক। যে যেভাবে খুশি এই তিন বিষয়ে ব্যাখ্যা দান করে। এই মানুষগুলোও সেই দলের।
"ভারতের প্রয়োজনে বা কারণে পাকিস্তান ভাগ হয়েছে।"; "পশ্চিম পাকিস্তানিরা ৭১ এর সময় সেনাবাহিনীতে বা পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত বাঙ্গালিদের কিছু করে নাই।"; "ইয়াহিয়ার জায়গায় অন্য যে কেউ থাকলে একই কাজ করতো।";"তখনও দুর্নীতি ছিল, এখন আরও বেশি আছে।" এরকম কিছু কথা বর্তমান সময়ে আমাকে শুনতে হয়েছে।
অনেকেই জানে না যে জানুয়ারি থেকেই এই গণহত্যার পরিকল্পনা শুরু হয়, ফেব্রুয়ারিতে (শেষের দিকে সম্ভবত) চট্টগ্রাম বন্দরে সোয়াত থেকে অস্ত্র নামানোর জন্য সেখানে বন্দর শ্রমিকদের হত্যা করা হয়।
তাদের কাছে ৭ই মার্চের ভাষণ ইস্কানিমূলক; ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবের প্রেমিকা-এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত কারণগুলো মুক্তিযুদ্ধ সঙ্গঘটিত হবার কারণ হিসেবে মুখ্য হয়ে ওঠে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট জানতে হবে সবার।সাথে সাথে ৮,৯ এবং ১১ নং অনুচ্ছেদ সবার পড়া এবং বোঝা উচিত।
ভারতের প্রয়োজনে নয় কিংবা কারও স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অর্থাৎ আমাদের কথা ভেবে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। সে কারণেই আমরা নয় মাসে জয় লাভ করতে পেরেছিলাম।
সম্পূর্ণরূপে একমত।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
পলাশ, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সবার। তাই এই ব্যাপারে সত্যভিত্তিক যে কোনো বিশ্লেষণ যে কেউ লিখতে পারেন। তাই তোমার ভাবনাগুলো মনে চেপে না রেখে লিখে ফেলো। বিশেষতঃ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে বাজারে যে বাজে কথাগুলো চালানোর চেষ্টা করা হয় (তুমি কিছু উল্লেখ করেছো) সেগুলো নিয়ে একটা পোস্ট দাও। সেখানে ওগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে ঐ প্রসঙ্গে কথা বলে মূল আলোচনার মোড় ঘোরাতে চাইনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রিয় পোষ্টে যোগ করলাম ও অনুমতি ছাড়াই খোমাখাতায় শেয়ার দিলাম।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
যে কোনো লেখায়/পোস্টে বা নেটওয়ার্কে আমার নাম উল্লেখপূর্বক আমার যে কোনো পোস্টের লিঙ্ক দিতে পূর্বানুমতি নেবার দরকার নেই। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডবদাকে কৃতজ্ঞতা লেখাটির জন্য।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
চমৎকার লেখা পাণ্ডবদা।
কাকস্য পরিবেদনা
প্রিয়তে নিলাম। গুরুত্বপূর্ন লেখা।
মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে আপনি বললেন,
"পাকিস্তান রাষ্ট্রটির মৌলিক নীতি ও ধারণার বিপরীতে অসাম্প্রদায়িক, কল্যানমূখী, মানবিক ও প্রগতিশীল জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশের মানুষের মৌলিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ-বঞ্চনা-অন্যায়ের অবসান ঘটানো ও সাধারণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা ছিল এই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।"
বাঙালী জাতি নিজস্ব গুনবলে এই লক্ষ অর্জনে সফল হয়েছে। আমরা মুক্ত হয়েছি, আমরা হয়েছি স্বাধীন। আমার মতে আমাদের মত এই একই লক্ষে অগ্রসর এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের মূল ধারনাকে সরাসরি অস্বীকার করে এমন অনেক বেলুচ, সিন্ধী, পাখতুন, কাশ্মিরী আছে। রাজনৈতিক ভাবে সংঘবদ্ধ হবার নেতৃত্ব বা সুযোগ তারা পায়নি নানান কারনে। আফগানিস্তান ও ভারত ইস্যুর উচ্চস্বর ছাপিয়ে তাদের স্বর শোনা যায়নি। তারা আমাদের মত ভৌগলিক বা সাংস্কৃতিক দুরত্বের সুবিধা পায়নি (দুরত্ব আমাদের সফলতার একমাত্র কারন মোটেও নয়), এবং প্রতিনিয়তই যারা তাদের নিজের গ্রাম/শহরের সামন্তশ্রেণী, ঠ্যাঙারেশ্রেনী আর উত্তর ভারত থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা উর্দু ভাষাভাষি বেনিয়া-আঁতেলদের শোষনের শিকার হয়েছে এবং হচ্ছে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। "১৯৭১ সালে যে যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল তা একই সাথে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে এবং তাদের সহযোগী বাঙালীদের বিরুদ্ধে।" এখানে পাকিস্তানী বলতে আমি বুঝতে পারছি 'পাকিস্তান নামক কৃত্রিম রাষ্ট্রের ধারনার সাথে সহমত পোষন কারি' দের। বাঙালীদের মতই যারা এই ধারনার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে সেই বালাওয়ারিস্তান, ওয়াজিরিস্তান, সিন্ধুদেশ, বেলোচ লিবারেশন ফ্রন্ট এর বিপরীতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল, এটা আমি ভাবতে নারাজ।
মুক্তিযুদ্ধের ছোটবড় যুদ্ধক্ষেত্রে বিক্রমের সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন। এসব যুদ্ধে বাঙালিরা আক্রমন করেছে প্রতিহতও করেছে। কিন্তু সামগ্রিক অর্থে বাঙালিদের অবস্থান কিন্তু আক্রমনাত্মক ছিলনা, আমাদের অবস্থান ছিল আত্মরক্ষাই। একটি অশুভ শক্তি আমাদের আক্রমন করেছে, আমরা তাদের আক্রমন থেকে আমাদের রক্ষা করেছি আত্মাভিমান ও শৌর্যের সাথে। এমন একদিন নিশ্চই আসবে যেদিন বাংলাদেশে সীমানার ভেতরে পাকিস্তান ধারনার প্রতি সহমর্মী কেউ সম্মানের জীবনযাপন করতে পারবে না।
তারপরেও পাকিস্তান ধারনাটি বেঁচে থাকবে।
আমরা এর কবল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়েছি। কিন্তু যারা এখনো এর হাত থেক নিস্তার পায়নি, তাদের প্রতি আমাদের কোন সহানুভুতি থাকা আদৌ উচিত? বেলুচিস্তান, সিন্ধ আর পাখতুনিয়া থেকে উর্দুভাষীরা যেদিন বিদেয় হবে, সেদিন কি আর পাকিস্তান বলে কোন রাষ্ট্র অবশিষ্ট থাকবে? আগামীকাল যদি এমন একটি পৃথিবীর সম্ভাবনা থাকে, যেখানে পাকিস্তান নামের কোন রাষ্ট্রই নেই, সেদিনই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়না? আমাদের দেশের, আমাদের, কি এমন সময় কোনদিন আসবে না যেদিন আমরা শুধু আমাদের দেশ থেকেই নয়, পুরো পৃথিবী থেকেই পাকিস্তান ধারনাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার কথা ভাবতে পারবো?
যে যুদ্ধ ছিল আত্মরক্ষার, তাকে আক্রমনে পরিনত করার সময় কবে আসবে?
বিশদ মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ। আপনার উত্থাপিত প্রসঙ্গগুলোর মধ্যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কয়েক ধাপে উত্তর দেবো। বাকি বিষয়ে মেইলে উত্তর দেবার চেষ্টা করবো। একটু ধৈর্য্য ধরুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসাধারণ!
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
মুক্তিযুদ্ধ এবং এর পরে শেখ মুজিবের শাসনকালের একটা নির্মোহ বিশ্লেষণ প্রয়োজন। ষষ্ঠ পাণ্ডবের কাছ থেকে এই বিশ্লেষণ আশা করা যায়।
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
সমস্যা হচ্ছে ঐসময়ের সংবাদপত্রগুলো পাওয়া কঠিন। একেবারেই পাওয়া যাবেনা তা নয়, তবে সেজন্য যে সময়টা দিতে হবে তা নেই। পরের মুখে ঝাল খেয়ে সঠিক বিশ্লেষণ করা যায়না। তবে ঐ সময়কালের একটা জরুরী বিষয় নিয়ে একটা লেখা পরিকল্পনাতে আছে। যথাসময়ে সেটা নিয়ে হাজির হবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অপেক্ষায় রইলাম
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এক কথায় প্রকাশ ভাঙলাম-মুক্তির জন্য যুদ্ধ
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
৫ নং অনুচ্ছেদঃ
এবং ৯ নং অনুচ্ছেদঃ
সশস্ত্র সংগ্রাম শেষ হবার অনানুষ্ঠানিক তারিখ ১০ই জানুয়ারি অথবা ১০ই জুলাই কেন, তা একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলে বুঝতে সুবিধা হতো।
রকিবুল ইসলাম কমল
এটা টাইপো - ১০ই জুলাই নয় ১০ই জানুয়ারী হবে। ঠিক করে দিয়েছি। ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মুক্তিযুদ্ধ সেই যুদ্ধ যার কথামালা থেকে যায় গানে, গল্পে, সিনেমায়, মানুষের মুখে মুখে, প্রাত্যহিকতায়। থেকে যায় নিরক্ষরের লেখা ইতিহাসে, আমাদের জ্ঞানী-গুণীদের অসৎ অক্ষরে পালটে ফেলা সংবিধান, পাঠ্যপুস্তকের পরোয়া না করে। থাকবে হাজার বছর অমোচনীয় কালিতে, নিউরনে, হৃদয়ে। মুক্তিযুদ্ধ সেই যুদ্ধ যে যুদ্ধ ১৯৭১ না-দেখা আমাকে দিয়ে, আমার প্রজন্মের আরও অনেককে দিয়ে তাকে নিয়ে লিখতে, তাকে নিয়ে কাঁদতে বাধ্য করে।
অসাধারণ পোস্ট, পাণ্ডবদা।
দরকারী পোস্ট ষষ্ঠপাণ্ডব।
ফারুক চৌধুরীর লেখায় (সম্ভবত "প্রিয় ফারজানা" এর একটা পর্বে, যায় যায় দিনে ধারাবাহিক বের হতো) ইসরাইল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম দেশগুলোর একটা। বাংলাদেশ "টেকনিক্যাল" কারণে সেই স্বীকৃতি গ্রহন করে নি।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বস্, আমি অবিশ্বাসী ধরণের মানুষ। তাই জনাব ফারুক চৌধুরীর দেয়া তথ্যে আমার আস্থা কম। অন্য কোন সোর্সের কথা আপনার বা অন্য কারো জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লিঙ্কটা সকলে ফেসবুকে শেয়ার করি আসুন।
দারুণ! ফেসবুকে শেয়ার করলাম।
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...
দরকারী লেখা।
তাই নেন একখান (গুড়) ।
দূরের তেপান্তর
প্রথমেই লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ পাণ্ডবদা । কিন্তু এই জায়গাটা যে ঠিকমত বুঝতে পারলাম না---
এটা টাইপো - ১০ই জুলাই নয় ১০ই জানুয়ারী হবে। ঠিক করে দিয়েছি। ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
খুবই দরকারি একটা লেখা। খোমাখাতায় শেয়ার করলাম।
অনন্ত
আবেগি হয়ে বছর সাতেক আগে একটা লেখা লিখে ফেলেছিলাম ডঃ জাফর ইকবালের একটা লেখার বিপরীতে। কোথাও ছাপা হয় নি তা। সেখান থেকে দুচারটা লাইন প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় একটু পাল্টে তুলে দিলাম।
স্বাধীনতার পর পর যে-কাঙ্ক্ষিত এবং বর্তমানে অবলুপ্ত ’৭২-এর সংবিধান রচিত হলো, তার প্রস্তাবনার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ বলছে (মানে, বলেছিলো): “আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে।”
১৯৭৮ সালে জারি হলো ‘দ্য সেকন্ড প্রোক্লমেশন (ফিফ্থ এমেন্ডমেন্ট) অর্ডার’।
পাল্টে গেলো ওপরের ’৭২-এর অনুচ্ছেদ।
‘জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম’ হলো ‘জাতীয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ’; ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা’ রূপ নিলো ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার’-এ।
‘মুক্তি’ আর ‘স্বাধীনতা’, কী-ই বা এমন পরিবর্তন? এ-সম্পর্কে একটি গভীর অনুভবী ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা আছে SIC-র (শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী-র, পত্রিকান্তরে প্রকাশিত তাঁর সাক্ষাৎকারে জ্ঞাত, এ-নামে পরিচিত হতেই তিনি আগ্রহী তাঁর ছাত্রদের কাছে)। তিনি শব্দের উপরিতল থেকে গহনতলে গেছেন নির্মোহ যুক্তি বিন্যাসে ও সুচারু দক্ষতায়, মনোবিকলন করেছেন শব্দপরিবর্তনকারীদের, আলোকসমক্ষে এনেছেন তাদের মূল হীন উদ্দেশ্য। মানুষের সর্বতলের, সর্বাংশের মুক্তির জন্যে প্রাণপণ, আকুল লড়াইকে কেটেছেঁটে, মাপে ছোট করে স্রেফ ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জনের উদ্দেশ্যে লড়া একটি দ্বন্দ্বের মিথ্যা লেবেলমারা বোতলে ঢোকানোর অপপ্রয়াস তিনি উন্মোচন করেছিলেন সেই প্রবন্ধটিতে।
অতএব, শ্রদ্ধেয় ষষ্ঠ পাণ্ডব, সংবিধান বলছে আপনারা, আমাদের পূর্বপুরুষেরা মুক্তির জন্যে জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করেন নি, করেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধ। আপনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্বপ্ন দেখে নিঃসন্দেহে অসাংবিধানিক কাজ করেছেন; দেখতে পারেন আপনি বড়জোড় স্বাধীনতা যুদ্ধ নামক অর্ধপরিচিত শব্দটি নিয়ে স্বপ্ন, কখনোই ‘মুক্তি’যুদ্ধ নিয়ে নয়।
সংবিধানের সেই হারিয়ে-ফেলা অংশটি এখানে তুলে দিলাম।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
মহাস্থবির জাতক, আপনার সেই লেখাটি নিঃসঙ্কোচে সচলে প্রকাশ করে ফেলুন। এটা নিয়ে আমি অল্প কথা বলেছি বলে আপনি বলতে পারবেন না তাতো নয়। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা, এই ব্যাপারে আমরা যতো বেশি কথা বলবো, যতো বেশি আলোচনা করবো ততোই লাভ। অপশক্তিদের ছড়ানো বিভ্রান্তিকর মিথ্যা রটনা ততোই হালে পানি পাবেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে কি ১০ জানুয়ারি শেষ? কী হিসেবে?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ পাকিস্তানী বাহিনী আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করেছে ঠিকই কিন্তু তাতে সশস্ত্র যুদ্ধ শেষ হয়নি। খোদ ঢাকা শহরের মীরপুর-মোহাম্মদপুরে যুদ্ধ চলেছে আরো অনেকদিন ধরে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়েছে ১০ই জানুয়ারী, ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার সাথে সাথে। অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধ শেষ হয়েছে আরো পরে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেকদিন আগে অনল রায়হানের (জহির রায়হানের ছেলে) একটা লেখা পড়েছিলাম ... 'বিচিত্রা' অথবা '২০০০ সালে', নাম ছিল - 'পিতার অস্থির সন্ধানে' - পিতার মৃত্যুর রহস্যের খোঁজে একটা অনুসন্ধানী টাইপ রিপোর্ট। বিজয়ের পরেও মিরপুরে কী হয়েছে অনেক কিছু উঠে এসেছিল। অসম্ভব ভাল লেগেছিল লেখাটা।
পাঠ্যবই প্রণেতাকে এই লেখাটা ধার দেয়া যেতে পারে।
প্রিয়তে এবং ফেসবুকে নিলাম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চমৎকার লেখা। (এবং গুরুত্বপূর্ণ)
দুর্দান্তের মন্তব্যর উত্তরে (এক ধাপেই দিলাম):
পাকিস্তান সৃষ্টির গোড়া থেকেই সেখানে পাকিস্তানের ধারণার বিপরীত ধারণার জনগোষ্ঠী ও তাদের দল ছিল। সেটা বেলুচিস্তান, সিন্ধু, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এমনকি পশ্চিম পাঞ্জাবেও। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ, সঠিক ও দৃঢ় নেতৃত্বের অভাব, জনগোষ্ঠীর মাঝে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ব্যর্থতায় সেগুলো মুক্তিসংগ্রামে পর্যবসিত হতে পারেনি। ১৯৫৪ সালে পূর্ববঙ্গে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ হওয়ায় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যে বিকাশ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে তাদের অংশগ্রহন সম্ভব হয়েছে সেটা জমিদারী টিকে যাওয়ায় পাকিস্তানে সম্ভব হয়নি। তাই বুর্জোয়াঁ শ্রেণীর বিকাশ ও জাতিয়তাবাদী রাজনীতির বিকাশও সেখানে হয়নি। ভৌগলিক অবস্থান একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, তবে সেটাই সব নয়। পাকিস্তানের রাজনীতিতে (এবং অবশ্যই সামরিকবাহিনীতে) এখনো রাজা-গজাদেরই দাপট। মুহাজিররা সেখানে দাবার ঘুঁটিমাত্র। তারা নিয়ামক নয়। আলতাফ হোসেনদের দীর্ঘ নির্বাসন জীবন, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত মুহাজিরদের বিরুদ্ধে চালানো ‘অপারেশন ক্লিনআপ’ আর মুহাজির কওমী মুভমেন্ট থেকে মুত্তাহিদা কওমী মুভমেন্টে পরিবর্তন থেকে সেসব বুঝতে পারবেন।
বেলুচিস্তান, কাশ্মীর আর উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চলেছে ষাটের দশকেই। বেলুচিস্তানের কালাত আর ফ্রন্টিয়ারের সোয়াতে গণহত্যা, বিমান হামলা পর্যন্ত হয়েছে। কসাই টিক্কা খান বাংলাদেশের আগে বেলুচিস্তানেই গণহত্যা করে হাত পাকিয়েছিল। কিন্তু পূর্বে উল্লেখিত কারণসমূহে সেখানে মুক্তিযুদ্ধ দানা বাঁধেনি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই যে, ১৯৭১ সালে বেলুচ রেজিমেন্ট, সিন্ধু রেজিমেন্ট বাংলাদেশে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে। সেসময় যদি তারা বাংলাদেশে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানাতো, তাদের জনগণ যদি পাক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করতো, তাদের মিথ্যা প্রচারণায় বিশ্বাস না করতো তাহলে ইতিহাস ভিন্ন রকমের হতো। ১৯৭১-এ ভুট্টো যখন বাংলাদেশে সামরিক অভিযান চালানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় যখন জনসভা করছিলো তখন কিন্তু সে তাদের সমর্থণই পেয়েছিলো। কিছু বিবেকবান শিক্ষিত মানুষ এর প্রতিবাদ করেছিল সত্য, তবে তারা সংখ্যায় এতো কম যে তা গণহত্যা বন্ধ করতে বা অদ্যাবধি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানোতে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ঐসব মুক্তিকামী মানুষদের বিরুদ্ধে ছিল সেকথা আমি বলিনি, আপনিও তা বোঝাতে চাননি। তবে ঐসব জাতির জনগণের একাংশ আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, গণহত্যায় পর্যন্ত অংশ নিয়েছে সেটাও সত্য।
খান আব্দুল গাফ্ফার খান (খুদাই খিদমাতগার/কংগ্রেস/ন্যাপ), ওয়ালী খান (ন্যাপ/এএনপি), ফিল্ড মার্শাল আসগর খান (তেহরিক-ই-ইশতেকলাল), জি এম সৈয়দ (জিয়ে সিন্ধ কওমী মাহাজ) -এরা সবাই পাকিস্তানের ভাবধারার বিপক্ষের মানুষ। এরা নেতা হিসাবেও বড় মাপের। তবু বেলুচিস্তান, কাশ্মীর, ফ্রন্টিয়ার আর সিন্ধুতে ক্রমাগত নেতৃত্বে ব্যর্থতা এসেছে সেটা ভিন্ন হিসাব। এখানে সেটা আলোচনা করার চেষ্টা করবোনা।
মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অবস্থান আক্রমণকারীর নয় একথা আংশিক সত্য। হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ নির্বিশেষে সবাইকে আক্রমণ করে ও পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে। পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধারা শুধুমাত্র হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের আক্রমণ করে - সাধারণ জনগণকে নয়। তারা যা কিছু স্থাপনা ধ্বংস করে সেটা কৌশলগত কারণে, প্রতিহিংসাবশত নয়। তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারাও আক্রমণ করেছেন - তবে সেটা শুধুমাত্র পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের। যুদ্ধের প্রথম গুলিটা পাকিস্তানীরাই করেছিল, গণহত্যা তারাই চালিয়েছে, লুটপাট-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ তারাই করেছে, বধ্যভূমি তারাই সৃষ্টি করেছে, বন্দীশিবির বানিয়ে অত্যাচার তারাই চালিয়েছে। তাই অপরাধের দায়ভার শুধুমাত্র তাদেরই (তাদের সহযোগীরাসহ)।
বর্তমান পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে যারা পাকিস্তান ধারণাটির বিপক্ষে আছেন পাকিস্তান নামক দায় থেকে মুক্ত হবার দায় তাদেরই। সেখানে আমাদের আগ বাড়িয়ে করার কিছু নেই, অমন ভাবারও দরকার নেই - সেটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশও নয়। মুক্তিযুদ্ধ করা জাতি অন্য জাতির ন্যায়সঙ্গত মুক্তির আন্দোলনে সমর্থণ করতে পারে। তবে সেটা সময় আসলেই বলা যাবে।
আপাতত আমাদের দায় দেশী-বিদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে তাদের প্রাপ্য শাস্তি কার্যকর করা, পাকিস্তানের কাছে থেকে আমাদের প্রাপ্য আদায়, পাকিস্তানের কাছ থেকে রাষ্ট্রিয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থণা আদায় এবং অতি অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রচার করা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই দুর্দান্ত কমেন্টটা একটা আলাদা লেখা হিসেবে আসার দাবি রাখে।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
মুক্তিযুদ্ধ করা জাতি অন্য জাতির ন্যায়সঙ্গত মুক্তির আন্দোলনে সমর্থণ করতে পারে। তবে সেটা সময় আসলেই বলা যাবে।
কাজের ক্রমের ব্যাপারে আপনার সাথে একমত। আগে আমাদের নিজের প্রাপ্য আদায়। তারপর অন্যদের দিকে দেখা যেতে পারে। কিছুটা অপ্রাসংগিক হলেও আপনি আগ্রহ নিয়ে আমার মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করেছেন, আমি কৃতজ্ঞ।
১৯৭১ সালে বেলুচ রেজিমেন্ট, সিন্ধু রেজিমেন্ট বাংলাদেশে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে।
যদি ঠিক বুঝে থাকি, আপনি আমার মতই বালুচ রেজিমেন্টের গণহত্যার দায় মুক্তিকামী বালুচিদের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন না। বালুচ রেজিমেন্টে আসলে কতজন বালুচি বংশোদ্ভত, সেটা অপরিস্কার। তুলনা করা যেতে পারে ইস্ট বেঙ্গলের ৫,৬,৭ ব্যাটালিয়ানগুলোর সাথে। নামে বেঙ্গল হলেও, এর তিনটির জন্যই সৈন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানে, এবং ১৯৭১ এ এগুলোর সবগুলোই পাকিস্তান ফ্রন্টে ভারতের বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিল। প্রাসঙ্গিক নয়, তবুও বলছি, সেসময়ে ইবে ৭ এর অধিনায়ক ছিল এরশাদ। অন্যদিকে কর্নেল তাহের এর মত আরো বেশকিছু বাঙালি সৈন্য-অফিসার বালুচ রেজিমেন্টে কর্মরত ছিল।
সেসময় যদি তারা বাংলাদেশে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানাতো, তাদের জনগণ যদি পাক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করতো, তাদের মিথ্যা প্রচারণায় বিশ্বাস না করতো তাহলে ইতিহাস ভিন্ন রকমের হতো।
এখানে এ নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে।
আলোচনা চলুক।
প্রিয়তে নিলাম এবং ফেইসবুকে শেয়ার করলাম। বিশেষ ধন্যবাদ পাণ্ডব'দাকে লেখাটির জন্য।
পান্ডবদাকে ধন্যবাদ এই তথ্যনির্ভর লেখাটির জন্য।লেখাটি ছড়িয়ে দেয়া দরকার সবার মাঝে।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
প্রিয়তে নিলাম
...........................
Every Picture Tells a Story
প্রিয়তে নিলাম
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
প্রিয়তে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখাটা জটিল হয়েছে। আশাকরি অনেকের বিভ্রান্তি দূর হবে।একটাই প্রশ্ন, 'বাঙালী' শব্দের স্থানে কি 'বাংলাদেশী' হওয়া উচিত?
জনাব খালেদ, বাঙালী নাকি বাংলাদেশী এই বিতর্কটা এখানে না তুলি। আমি কী বলতে চেয়েছি এবং কাদের কথা বলতে চেয়েছি সেটাতো আপনার কাছে স্পষ্ট হয়েছে - সেটাই যথেষ্ট।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ, শ্রমসাধ্য এবং সময়োপযোগী পোষ্টটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অসামান্য রকম ভালো ও প্রয়োজনীয় একটা লেখা। অনেক ধন্যবাদ এই কষ্টটুকু করবার জন্য।
দারুণ একটা কাজ করলেন!
২২শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ টেলিভিশনে দেখলাম দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর আইনজীবি মোটামুটি এরকম বলেছে যে, "আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ না। যুদ্ধতো হয়েছিল পাকিস্তান আর্মির সাথে ইন্ডিয়ার আর্মির - এদেশের মাটিতে। তাই জেনারেল নিয়াজী জেনারেল অরোরার কাছে সারেন্ডার করেছিল, কর্নেল ওসমানী সাহেবের কাছে না"।
খুব খিয়াল কৈরা।
খবরটার লিঙ্ক পেয়েছি। এখানে দেখুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেক দিন থেকে ভাবছিলাম আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছোটদের জন্য বিশেষ করে আমার মেয়ের জন্য একটা গল্প টাইপের কিছু লিখব। আপনার এই লেখাটাকে আমি সেই ধরণের একটা ফর্মে নিতে চেষ্টা করব। একটা কাঠামো তৈরী করতে পারলে আপনার কাছে পাঠাব। দারুণ একটা কাজ করেছেন পাণ্ডবদা।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
দাদা, আপনার গল্প লেখার ক্ষমতার ব্যাপারে আমার আস্থা আছে। আপনি চেষ্টা করুন, অবশ্যই পারবেন।
আরেকটা কথা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছোটদের জন্য লেখার যেমন দরকার আছে তারচেয়েও বেশি দরকার বড়দের জন্য মুক্তিযুদ্ধের দরকারী বিষয়গুলো নিয়ে বই লেখা, পত্রপত্রিকা-ব্লগে লেখা, নানা পর্যায়ে আলোচনা করা। দেশে এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চেষ্টা চলছে, এরমধ্যেই কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। সুতরাং এই বিভ্রান্তি নিরসনের কাজে আমাদের সবাইকে হাত লাগাতে হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সময়োপযোগী লেখা। লেখককে ধন্যবাদ।
কুটুমবাড়ি
অসাধারন পোষ্ট পান্ডবদা।
সরাসরি প্রিয়তে নিলাম।
দারুন কাজ! ধন্যবাদ।
আমি শুধু একটা বেপার যোগ করতে চাই "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" অংশে:
"কী সেই তাড়না যা একটা মানুষকে ঘরবাড়ি, আপনজন ফেলে বন্দুক হাতে তুলে নিতে উদ্বুদ্ধ করেছিলো? কোন তাড়না মানুষকে নিজের জীবন বাজি রাখে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উৎসাহ দিয়েছিল? সেই তাড়নাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, চিরন্তন চেতনা যার একটু হলেও বঁেচে আছে বলে দেশটা এখনো এগিয়ে যাচ্ছে।"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অসাধারণ একটা লেখা। অনেক ধন্যবাদ পাণ্ডবদা।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
কিছু লেখার আবেদন আর প্রয়োজন কোনকালেই হারায় না, এটি তেমন একটি লেখা। পান্ডব দার কাছে এমন তথ্য সমৃদ্ধ লেখা আরো চাই।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
অসাধারণ লেখা
নতুন মন্তব্য করুন