নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রুখে দাঁড়ান!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/১১/২০১০ - ১১:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার এক বন্ধু একদিন রাতের বেলা নিজের বাসার বারান্দায় বসে আছেন, এমন সময় হঠাৎ নারীকণ্ঠের আর্তচিৎকার শুনতে পেলেন। চিৎকারের উৎস খোঁজ করতে দেখা গেল সেটা তার দুই তলা উপরের ফ্ল্যাট - যার মালিক একজন অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা। আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেল চিৎকারের কারণ ঐ সাবেক উচ্চপদস্থ তার স্ত্রীকে পিটাচ্ছিল বলে, এবং এই কাজটি সে নিয়মিতই করে থাকে। এই ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন বা একমাত্র কোনো ঘটনা নয়। স্ত্রীকে পিটানো বস্তিতে বা স্বল্প শিক্ষিত লোকেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ এই ধারনাটি একেবারেই ভুল। উচ্চবিত্ত বা উচ্চ শিক্ষিতদের পরিবারেও এটি একটি নিয়মিত ঘটনা। বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাদের মধ্য থেকে এই পাশবিকতাকে নির্মূল করতে পারেনি।

স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে পিটানো ছাড়াও আরো নানা প্রকার শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার চলে; কোথাও কোথাও স্বামীর সাথে শ্বশুর-শাশুড়ী-ননদ-দেবর-ভাসুর-জা এরাও হাত লাগায়। এই অত্যাচার পারিবারিকভাবে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার পর্যায়ে পড়ে। এই সহিংসতার ফলে নারী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন। কোথাও কোথাও নারীর অঙ্গহানি ঘটে বা প্রাণ হারান। এই অত্যাচার ও সহিংসতা যে কেবল যৌতুকের দাবীতে ঘটে এমনটা নয়। যৌতুকের দাবীর পাশাপাশি নারীর প্রতি অবজ্ঞাসূচক মনোভাব, নারীকে সমমর্যাদার মানুষ না ভাবা, নারীকে অত্যাচার করলে কিছুই হয় না এমন মনোভাব, নারীকে নির্যাতন করার ব্যাপারে ধর্মীয় সমর্থন ইত্যাদি দায়ী। খুব কমক্ষেত্রেই এধরনের সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ  বা মামলা দায়ের করা হয়। ফলে বধু নির্যাতনকারী বা হত্যাকারী অনায়াসে পার পেয়ে যায়। ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের কারণে নিহত বা আহত নারীর সংখ্যা নিরূপিত হবার কথা আমরা জানি না, কিন্তু এটা আঁচ করা যায় প্রকৃত সংখ্যা ভয়াবহ রকমের বড়।

নারীর প্রতি অবহেলা, বৈষম্যমূলক আচরণ, বঞ্চনা ও শোষণের কথা সবাই জানেন; আজ সেসব নিয়ে কথা বলব না। আজ এগুলোর চূড়ান্তরূপ সহিংসতার কথা বলব। কারণ, আজ ২৫শে নভেম্বর, আজ নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূলের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস (International Day for the Elimination of Violence against Women)পঞ্চাশ বছর আগে এই দিনে স্বৈরশাসক রাফায়েল ত্রুহিয়োর গুণ্ডারা মিরাবাল বোনদের নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। সে কথা গত বছর একটা লেখায় বলেছিলাম।

শারিরীকভাবে বিবেচনা না করে সামাজিক ভাবে নারীকে পুরুষের চেয়ে দুর্বল করা রাখা হয়েছে। এই বলে বলীয়ান হয়ে অনেক পুরুষ কারণে-অকারণে নারীর উপর সহিংস আচরণ করে। সহিংসতার প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর বাইরে স্থানীয়ভাবে আরো নৃশংস সব পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছে নারীকে আক্রমণ করার জন্য। এর মধ্যে বাংলাদেশের এসিড নিক্ষেপ, ভারতের ব্লেড ঘুড়ি, মধ্যপ্রাচ্যের অনার কিলিং অন্যতম।

ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের তালিকায় স্ত্রীদেরও উপরে আছেন নারী গৃহকর্মীরা। নারী গৃহকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও দায়ী। গৃহকর্তা বা তার পুত্রের প্রহার, ধর্ষনের বাইরে গৃহকর্ত্রী বা তাদের কন্যার প্রহারও নারী গৃহকর্মীর কপালে বরাদ্দ আছে। আর্থিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল বলে নারী গৃহকর্মীদের উপরে সহিংস আচরণের খুব কমই প্রকাশিত হয় বা ন্যায় বিচার পায়। হরহামেশাই নারী গৃহকর্মীরা খুন হন, কিন্তু তাঁদের হত্যার দায়ে আজ পর্যন্ত কারো শাস্তি হবার কথা পত্র-পত্রিকায় দেখিনি।

ইদানিং ইভ টিজিং-এর নামে নারীর বিরুদ্ধে করা যৌনসন্ত্রাসের কথা বেশ আলোচিত হচ্ছে। বস্তুতঃ এটি একটি প্রাচীন সমস্যা। সহিংসতার এই রূপটিকে কালে-ভদ্রে সামাজিক বিচারের নামে প্রশমিত করার চেষ্টা করা হলেও ফৌজদারী পর্যায়ের এই সহিংসতার শাস্তি হয়নি বলা চলে। শাস্তি না হওয়ায় এই ক্ষেত্রে আরো অনেকে নতুন নতুন সহিংসতার সাহস পেয়েছে।

কোন দেশে যুদ্ধ লাগলে সেখানকার মানুষের জন্য প্রতিপক্ষের সহিংস হামলা অবধারিত। এই হামলার শিকার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হলেও সেখানকার নারীদের কপালে বোনাস হিসাবে জোটে যৌন নিপীড়ন। যুদ্ধ ছাড়া সাম্প্রদায়িক বা গোত্রগত দাঙ্গা বা স্থানীয় পর্যায়ের সংঘর্ষেও নারীকে যৌন নিপীড়ন ভোগ করতে হয়। নারী যুদ্ধবন্দী হলে বা সাধারণ বন্দী হলেও সাধারণ নির্যাতনগুলোর সাথে তাকে যৌন নিপীড়নও ভোগ করতে হয়। এখানে এটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করা হয়, এবং এনিয়ে খুব কমই বলা হয়ে থাকে।

সামাজিক নিয়ম বা ধর্মের দোহাই দিয়ে করা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার পথ রুদ্ধ করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত না প্রতিটি পুরুষ একজন নারীকে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ ও তার সমকক্ষ ভাবতে শিখবে ততদিন পর্যন্ত নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ হবেনা - নারীর প্রতি সহিংসতার পথও বন্ধ হবেনা। নারীকে তাঁর প্রাপ্য মানবিক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সহিংসতার এই ঘৃন্য চর্চার পথ বন্ধ করতে পুরুষকেই এগিয়ে আসতে হবে - কথায়, কাজে, বিশ্বাসে ও চর্চায় তার প্রমাণ দিতে হবে।



মন্তব্য

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

লেখাটি ভালো হয়েছে।

স্কুলেও যে মেয়েদের উপর স্যারেরা যৌন নির্যাতন চালান সেটা সম্পর্কেও লিখতে পারতেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শান্ত, শুধু শিক্ষায়তন কেন, কর্মক্ষেত্র, রাস্তা-ঘাটে, নিজের ঘরের ভেতরে কোথায় নারীর দিকে বাড়ানো লোলুপ হাত নেই? কত লম্বা তালিকা করবো বলুন! নারী শিশুরা প্রথম যৌন হয়রানীর শিকার হয় নিকটাত্মীয়দের দ্বারা। তারপর থেকে এমন কোন জায়গা থাকেনা যেখানে সে নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ভাবতে পারে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

"সামাজিক নিয়ম বা ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার পথ রুদ্ধ করতে হবে।" - সেটাই মূল কথা...
মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই অনেক শিক্ষিত মেয়ে ধর্মের দোহাইটুকু অবলীলায় মেনে নিচ্ছে দেখে...
আমারতো মনে হয় মেয়েদের নিজেদেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন...
আত্মসম্মানবোধকে প্রাধান্য দিতে হবে...

-----------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আত্মজ্ঞান, আত্মসচেতনতা আবশ্যিক জিনিষ। নিজের অবস্থান, নিজের মর্যাদা, নিজের অবস্থান না বুঝলে নিজের প্রাপ্য অধিকারটা সে আদায় করবে কীভাবে? অন্যের জন্য লড়াইতেই বা অবদান রাখবে কীভাবে?

সামাজিক নিয়ম আর ধর্মের শিকড় এত গভীরে প্রোথিত থাকে যে শুধু অ্যাকাডেমিক শিক্ষা সেখানে থাকা আগাছার জড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলতে পারেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দময়ন্তী এর ছবি

হে মহামান্য পান্ডবপ্রবর, এই 'কী করিতে হইবে' সম্পর্কে আমি দুই চারিখানি কথা নিবেদন করিতে ইচ্ছা করি|

১) কেবলমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নহে, আমাদিগের দেশ এই ভারতেও সম্মানরক্ষার্থে হত্যা বহুলপ্রচলিত| এইত কয়দিবস পূর্বেই উহার মরশুম চলিতেছিল, প্রতিদিনই সংবাদপত্রে এই সম্পর্কিত এক দুইখানি সংবাদ দেখিতাম| চতুর্দিকে বহুলপরিমাণে হই হট্টগোল হওয়ায় বর্তমানে কথঞ্চিৎ শান্ত আছে, দেখিতেছি না তেমন|

২) আপনার ও সকল সচেতন নাগরিকের যে সকল আত্মীয়বন্ধুর শিশুকন্যা বর্তমান, তাহাদিগকে পরামর্শ দিন শিশুগুলিকে ক্যারাটে বা তাইকোয়ান্ডো বা অমনি কিছু একটা মার্শাল আর্ট শিখাইতে| ফলত শিশুগুলি দ্বিপদবিশিষ্ট ইতর প্রাণী হইতে আত্মরক্ষা করিতে সমর্থ হইবে| ইহার সহিত তাহাদের 'আত্মদীপো ভব' মন্ত্রও শিখাইতে হইবে|

আপনার আমার মত কয়েকজনও যদি আপন আপন বৃত্তে এইগুলি প্রচার করে, দেখিবেন অল্প অল্প করিয়া সচেতনতা বৃদ্ধি পাইতেছে| যদিচ গুরগাঁও বাসকালীন আপন সহকর্মীদের মধ্যে এইরূপ র্প্চারকার্য্যের ফলে আমি 'কারাটে-দমি' নাম প্রাপ্ত হইয়াছিলাম|, মন খারাপ তথাপি ছয়জন স্বীয় স্বীয় কন্যাকে শিখাইতে পাঠাইয়াছেও|

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। ভারতের অনার কিলিং সম্পর্কে একটু একটু জানি। এটা নিয়ে মুম্বাইতে মুভি হয়েছে বলেও জেনেছি। তবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে পাকিস্তান পর্যন্ত এর হার ব্যাপক বলে ভারতের কথা আর বলিনি।

২। এই পরামর্শ আপনি আগেও দিয়েছিলেন, এবং আমি তা আদ্যোপান্ত সমর্থন করি। মার্শাল আর্টের সাথে 'আত্মদীপো ভব' মন্ত্রের কথা বলে বিষয়টাকে যে পূর্ণাঙ্গরূপ দিয়েছেন সেটা কন্যার আগে কন্যার বাবা-মা-ভাইকে বুঝতে হবে।

এই শিক্ষা স্কুলগুলোতে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম (co-curricular activity) হিসাবে চালু করা দরকার। নয়তো স্বউদ্যোগে, ঠিক জায়গাতে মেয়েকে মার্শাল আর্ট শিখাতে অনেক বাবা-মা'ই পারবেন না। 'আত্মদীপো ভব' মন্ত্রের কথা বাড়ির বাইরে স্কুলেও বলতে হবে।

আপনার পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা, আর আপনার উদ্যোগের জন্য আভূমি প্রণাম।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দময়ন্তীদি, পাণ্ডব্দা, ২ নং পয়েন্টে সহমত। আসলেই প্রত্যেক মানুষেরই আত্মরক্ষার উপায় জানা উচিত, আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সেমিনার আলোচনা লেখালেখির চেয়েও জরুরি স্কুল এবং শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে এব্যাপারে সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম অবিলম্বে চালু করা। আর শুধু মার্শাল আর্ট নয়, যেহেতু স্কুল-কলেজের আশে পাশে মেয়েদেরকে উত্যক্ত করার ঘটনা বেশি ঘটে বলে নিজে দেখেছি, পড়ছি, জানছি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরো দায়িত্ব আছে বলে মনে করি। নিজেদের ভালো গার্ড সিস্টেম ডেভেলপ করা যেতে পারে, আশে পাশে উত্যক্তকারীদের দল দেখলেই ঠ্যাঙানো হবে আইন-রক্ষাকারী বাহিনির সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে এরকম কিছু কোন কোন ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে করা যায়।
তবে বেশি জরুরি সচেতনতা সৃষ্টি। আমাদের বড় সমস্যা আমরা পরস্পরকে শ্রদ্ধার বা সম্মানের চোখে দেখতে পারি না, মেয়েদেরকে সম্মানের চোখে দেখতে তো আরো কত দিন লাগবে তা কে জানে! অধিকাংশ মেয়েও তাই নিজেদেরকে ছোট করে দেখতে শিখেই বড় হয়। প্রতিবাদ যে কখন করতে হয়, কিভাবে কী করতে হয় সেই ধারণাটাও নাই বলে দেখেছি অনেকের!
এসব কারণেই মনে হয় খুব স্বাভাবিক এই বড় হবার প্রসেসেও আমাদের ছেলেরা, মেয়েদেরকে আরো বাজে ভাবে উত্যক্ত করে। এটা যে ভুল, সেটাও বুঝতে চায় না, উৎসাহিত হয় তাদের বড়দের দেখে, শেখার শুরু কিন্তু পরিবারে, আর তারপরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এব্যাপারেও প্রতিষ্ঠানগুলোর, শিক্ষকদের ভূমিকা জরুরি। আর পরিবারের ভূমিকাও অতি জরুরি কিন্তু! কিছুদিন আগেও ফারুক হাসান ভাইয়ের একটা পোস্টে বলেছিলাম, আবার বলছি, মেয়ে হিসেবে আমার দেখায়, নিজের অভিজ্ঞতায়, বন্ধুদের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে আমরা আমাদের মেয়েদেরকে ছোট থেকে খালি ভয় করতেই শেখাই। অমুকটা খারাপ, অমুক থেকে দূরে থাক, এটার বদলে, অমুকটা খারাপ তাই যাও প্রতিবাদ কর, রুখে দাঁড়াও, দলবদ্ধভাবে প্রতিবাদ কর, অন্যায়কে প্রতিহত কর, এটা শেখানো অনেক অনেক অনেক জরুরি!। কেউ একজনকে সমস্যায় দেখলে আমরা সবাই পালাই সেখান থেকে, অথচ নিজে দেখেছি, তেড়ে গিয়ে কয়েকজন মিলে ধরলে পালাবার পথ পায়না অন্যায়কারী, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেহেতু ইন রিয়ালিটি হেল্পফুল নয় এখনো, তাই নিজেকে বাঁচতে হলে, অন্যকে বাঁচাতে হলে কিন্তু দলবদ্ধ হওয়াটাও জরুরি।
কী জানি অনেক কথা বলে ফেললাম। খালি যা মনে হয় তাই বলছি, যা করেছি তাই বলছি। সমস্যা অনেক, বলাটাও সহজ। আলাপ কম করে বরং কাজে করে দেখানো দরকার। তাৎক্ষণিক বিচার দরকার কিছু ক্ষেত্রে, অমনটা হলেই অনেকে উড বি অপরাধীও অপরাধ করা থেকে বিরত থাকলেও থাকতে পারে। আর আমার সবসময়েই মনে হয় অপরাধীর চেয়ে বেশি ভীতু আসলে কেউ নয়!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

২০০২ বা ২০০৩ সালের নারীদিবসের স্লোগান ছিলো, নারীর অধিকার নয়, মানবাধিকার। মূলকথা, নারীকে একজন মানুষ হিসেবে তার অধিকার দেওয়া। কথাটা খুবই বাস্তব। নারীকে নারীর মর্যাদা দেওয়ার আগে প্রয়োজন তাকে মানুষের মর্যাদা দেওয়া, যা আমাদের সমাজে বড়ই অনুপস্থিত।

শহুরে বা শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে নারী নির্যাতন থাকলেও গ্রামে এবং অশিক্ষিত সমাজে নির্যাতনটা বেশি হয়। এক্ষেত্রে সরকার নারী ও শিশুনির্যাতন আইন বাস্তবায়নে তার দায় এড়াতে পারেনা। নির্যাতিতকে কেন থানা পর্যন্ত আসতে হবে? স্থানীয় ইউপি কেন বিষয়গুলো দেখবেনা? অনেক প্রশ্ন। আবার গ্রাম সালিসব্যবস্থায় দেখা যায় সালিস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীর বিপক্ষে যায় এবং পরিতাপের বিষয় মহিলা মেম্বার বা সমাজকর্মীরাই নারী ভিকটিমের প্রতি বিরূপ আচরণ দেখিয়ে থাকে।

নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেকেই গলাবাজী করে থাকে কিন্তু কাজের কাজ কি হয় তা আর মানুষের জানতে বাকি নেই। বর্তমান সরকারদলীয় একজন নেতার (বর্তমান বা সাবেক সাংসদ) বিরুদ্ধে তার স্ত্রী এবং পুত্রবধু নারী নির্যাতনের মামলা করেছিলো। তার ফল পরে আর কেউ জানতে পারেনি।

নাগরিক সচেতনতার সাথে সাথে আমার মনে হয় রাষ্ট্রের সবথেকে ক্ষমতাশালী প্রতিষ্ঠান সরকারকে জোরালোভাবে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারকে নারীসহ সবার প্রতি সুবিচার এবং সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিভেদ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নাশতারান এর ছবি

ব্লেড ঘুড়ির ব্যাপারটা জানি না। কী এটা?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা ভালো লেগেছে। ব্লেড ঘুড়ির ব্যাপারটি আমিও বুঝতে পারিনি। এ সমন্ধে নেটে সার্চ দিয়েও কিছু পেলাম না। ব্যাপারটি সমন্ধে বলবেন কি? (আপনার উপরের মন্তব্য দেখতে পাচ্ছি না।)

কমল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রিয় কমল, আমার মন্তব্যটি রেস্ট্রিক্ট করায় আপনি দেখতে পারছেন না। ব্লেড ঘুড়ির ব্যাপারটি আমি পাবলিকলি বলতে চাচ্ছিনা বলে মন্তব্যটি রেস্ট্রিক্ট করেছি। ব্যাপারটি সম্পর্কে জানতে আপনি ভারতে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলো একটু খুঁজে দেখতে পারেন। আমার অপারগতা ক্ষমা করবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

"সামাজিক নিয়ম বা ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার পথ রুদ্ধ করতে হবে"।

ধর্মের দোহাই দিয়ে!?

- মেঘলা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"সামাজিক নিয়ম বা ধর্মের দোহাই দিয়ে করা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার পথ রুদ্ধ করতে হবে" - বাক্যটা এমন হবে। ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রানা মেহের এর ছবি

সেদিন ইভা রহমানের চ্যানেলে দুজন সাংসদের একটা (না)টক শো দেখছিলাম।
বিএনপির সাংসদ বললেন ইভটিজিং নাকি আগে ছিলনা, আওয়ামীলীগের আমলে শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগের বোদ্ধা জানালেন এরজন্য মেয়েদের পোশাক আশাক অনেক বেশি দায়ী। শেখ হাসিনা যেভাবে ড্রেস আপ করেন, ওভাবে করলে নাকি ইভটিজিং এর সমস্যা থাকবেনা।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নাশতারান এর ছবি

রাগে হাত কামড়ানোর ইমো নাই?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ধুর মিয়া!
হাত কামড়াবেন ক্যান?
আমার তো গড়াগড়ি দিয়ে হাসি পাচ্ছে।
কি অদ্ভুত কথা! ইয়ে, মানে...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। বাংলাদেশে যে কোন কালে কোনো না কোনো ফর্মে ইভ টিজিং ছিল। একথা যারা অস্বীকার করে তারা জ্ঞানপাপী। এমন জ্ঞানপাপীদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করা নির্বুদ্ধিতা।
২। যে কোন কালের দশটা মূলধারার বাংলা সিনেমা নিলে তার আটটাতেই ইভ টিজিং-এর ঘটনা দেখা যাবে। আমাদের চলচিত্র থেকে এই নষ্ট ধারনা দূর করতে হবে।
৩। পুরুষের পোশাকও উত্তেজক হতে পারে। সে জন্য বাংলাদেশে কখনো কোনো পুরুষ কোনো নারীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এমন ঘটনা দেখানো যাবে না। তার মানে পুরুষ শিশুর সামাজিক শিক্ষাতে এই সংক্রান্ত একটা ত্রুটি রয়ে গেছে।
৪। অপরাধীকে শাস্তি দেবার ব্যবস্থা না করে ভিকটিম হতে পারে এমন সবাইকে বস্তায় পুরে রাখা সভ্যতার লক্ষণ নয়। মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী তাঁর বয়স, অবস্থান ও আনুষ্ঠানিকতা বিচারে কী পরবেন সেটা সবার জন্য সব সময়ে অনুকরণীয় হতে পারে না। এই বোধ যাদের নেই তারা নির্বোধ। আর নির্বোধদের যারা জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করে তারা কী?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অপছন্দনীয় [অতিথি] এর ছবি


এই অত্যাচার ও সহিংসতা যে কেবল যৌতুকের দাবীতে ঘটে এমনটা নয়। যৌতুকের দাবীর পাশাপাশি নারীর প্রতি অবজ্ঞাসূচক মনোভাব, নারীকে সমমর্যাদার মানুষ না ভাবা, নারীকে অত্যাচার করলে কিছুই হয় না এমন মনোভাব, নারীকে নির্যাতন করার ব্যাপারে ধর্মীয় সমর্থন ইত্যাদি দায়ী।

পুরোপুরি একমত। আমি আর অবাক হই না যখন দেখি রীতিমত পি এইচ ডি হোল্ডার নির্বিবাদে সব ধর্মীয় নোংরামি আর তার জাকির নায়েকীয় এক্সটেনশন সমর্থন করে যাচ্ছে। আমরা যদি সার্টিফিকেটের সাথে শিক্ষাটাও একটু নিতাম, তাহলে কি জাকির নায়েকের এত ভক্ত মুরীদ তৈরী হতে পারতো বাংলাদেশে? ধর্মীয় নোংরামির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ লোকজন কিন্তু না বুঝে নোংরামি করে না, বরং জেনে, বুঝে তারপরেই করে। দুর্ভাগ্যক্রমে এই জাতীয় কয়েকটা অশিক্ষিতের সাথে পরিচয় হয়েছে আমার। আমি অন্ততঃ একডজন রেফারেন্স দিতে পারবো যারা প্রত্যেকে উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেটধারী এবং যৌতুকলোভী নয়, কিন্তু তাদের ধারণা মেয়েরা এক ধরণের নিম্নশ্রেণীর প্রাণী এবং ভোগ্যপণ্যবিশেষ!

ধন্যবাদ আপনাকে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শুধুমাত্র অ্যাকাডেমিক শিক্ষা একজনকে শিক্ষিত বা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারেনা। এর জন্য পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ের শিক্ষাও জরুরী। এই বিষয়গুলো দুই/এক দিনে সমাধান হবেনা। তবে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, তবেই রেনেসাঁ আসবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার বিষয়! একটু সময় নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করবার আশা রাখি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অপেক্ষায় আছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলতে হবে আসলে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঘরে ঘরে শিক্ষিত, সভ্য মানুষ গড়ে তুলতে হবে আসলে ...



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

পান্ডবদা, বক্তব্য ও আলোচনার সথে সহমত।

আক্রান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে বা সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধেও সহিংসতা রুখতেই হবে। তবে রাষ্ট্রের উচিত সব দুর্বলকেই নিরাপত্তা দেয়া। যদি সারা দেশে দুর্বলের বিরুদ্ধে সবলের সহিংসতার একটা পরিসংখ্যান নেই, তাহলে তার কত শতাংশ নারীর ওপর পুরুষের সহিংসতার জন্য ঘটছে, সেটা আমি জানিনা। বলতে চাইছি, নারীর ওপর সহিংসতা নিজে একটি রোগ, নাকি সেটা দেশের নৈতিক ও আইনশৃঙ্খলাব্যাবস্থা চলমান রোগের একটি উপসর্গ, এটা আগে পরিস্কার করার দরকার আছে।

আপনি সঠিক বলেছেন পুরুষের সামাজিক শিক্ষার ত্রুটিই নারীর ওপর সহিংসতা ঘটায়। সুতরাং যেখানে সহিংসতা রোখা মত প্রতিকারমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে, এর পাশাপাশি ভবিষ্যতের পুরুষ শিশুদের সঠিক সামাজিক শিক্ষা নিশ্চিত করার মত প্রতিষেধক সহিংসতার বিরুদ্ধে আরো কার্যকার ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছি।

ছেলে শিশুর সামাজিক শিক্ষার শুরুটা তো তার বাড়ীতেই। এখনো বাংলাদেশের ঘরে ঘরে মেধাবী বোনের চাইতে বখাটে ভাইয়ের কদরই বেশী। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে এই মনভাবের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।

---

আপনি বলেছেন ইভটিজিং সমস্যা আগেও ছিল। আমি বলছি এর প্রতিকারের প্রয়োজনটাও আগে থেকেই ছিল। তাই প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশে এই বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকমাসে আলাদা করে কথা বলা হচ্ছে কেন?

যদি এর কারন হয় যে দেশের নারীদের মধ্যে সচেতনতার মাত্রা বেড়েছে এবং ইভটিজিং নিয়ে কথা বলার মত গলার জোর আমাদের মেয়েদের মধ্য এসেছে, এবং দেশের মিডিয়াতেও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গীতে একটি সরন এসেছে, তাহলে এতে আমি আশার আলো দেখি। যে সামাজিক পরিবর্তন একদিন আমাদের অভিষ্ট লক্ষে পৌছুবে, এগুলো সেদিকেই নেয়া প্রথম পদক্ষেপ।

কিন্তু যদি দুই তিন মাস পরে দেখি, রিপোর্ট করার মত ইস্যুর অভাব কাটাতেই আজকে এই ইভটিজিং ইস্যু মিডিয়ার একটি সাময়িক প্রয়োজন মিটিয়েছে, টেকসই সমাধানের আগেই ইভটিজিং নিয়ে আলোচনে থেমে গেছে, তখন মিডিয়ার এরকম প্রহসন দেখে কষ্ট পাবো।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। নারীর উপর সহিংসতা নিজেই একটা রোগ - ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। এটি কারো উপসর্গ নয়। নারীর উপর সহিংসতার ইতিহাস ঘাঁটলেই সেটা বোঝা যাবে।

২। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা নারীর আর্থিক স্বাবলম্বন গোটা পরিস্থিতির খুব সামান্যই পরিবর্তন করতে পারে। যেখানে এই উন্নয়নগুলো ঘটেছে সেখানেও কিন্তু ভিন্ন মাত্রায় নারীর উপর সহিংসতা বজায় আছে।

৩। ইভ টিজিং নিয়ে ইদানিংকার বাংলাদেশের মিডিয়ার উচ্চকণ্ঠ নারীর প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনের কারণে নয়। সব ধরনের মিডিয়া এখনো যথেচ্ছভাবে নারীকে পণ্য হিসাবেই উপস্থাপন করে চলেছে। তারা কিছু দিন পর পর এক একটা ইস্যুকে হাইলাইট করে মাঠ গরম করে। এই ইস্যুটাকেও তারা এক সময় ধীরে ধীরে মেরে ফেলবে। ভয়াবহ ইভ টিজিং যথারীতি আগের মতোই চলতে থাকবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

এমন পোস্ট দেখলে প্রথম যে অনুভূতি আসে আমার সেটা হল নিজেদের নিয়ে লজ্জা। উপরে বর্ণিত সমস্যাগুলোর পাশাপাশি আরো একটা সমস্যা আছে।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

'হাজার বছর ধরে'র আবুলেরা রয়ে গেছে। এটা তাদের কাছে পুরুষত্ব জাহিরের একখানা উপায় মাত্র।

শোনা কথা, ঠিক নিশ্চিত নই- আজকেও নাকি ঢাবির ভর্তিপরীক্ষায় বসায় একজন পরীক্ষার্থিনীকে 'টিজ' করেছেন একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক। লজ্জা লাগে এদের দেখে।

_________________________________________

সেরিওজা

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

খবরে দেখলাম। ইউ ল্যাবের টিচার
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ঈভ টিজারদের বাইড়াইতে হবে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই ক্ষেত্রে শুধু নারী নয় বরং শব্দটাকে প্রতিস্থাপিত করে অবলা শব্দটি ব্যবহার করলে বিষয়টির ব্যাপকতা বোঝা যাবে। অবলা শব্দ বলতে তাদের বোঝায় যারা নিপীড়িত হলে মুখ বুঝে সহ্য করে বা করতে বাধ্য হয়। এদের মধ্যে নারী, শিশু, সাব অর্ডিনেট পুরুষ সব ইনক্লুডেড। উপরন্তু অত্যাচারকারী পুরুষ নারী উভয়ই হতে পারে।

প্রথমে এই সমস্যাটিকে সোশ্যাল রিলেশন হিসেবে দেখি। তিন ধরণের সোশ্যাল রিলেশনে এই ঘটনা দেখা যায়। এক: আত্মীয় (স্বামী-স্ত্রী, শাশুড়ী-বউ, বউ-শাশুড়ী, ভাই-বোন ইত্যাদি)। দুই: অনাত্মীয় (পাড়ার মেয়ে, সহপাঠী, সহকর্মী)। তিন: সাবঅর্ডিনেট (কাজের মেয়ে, অধীনস্ত কর্মী ইত্যাদি)। এই তিন সর্ম্পকের ক্ষেত্রে সংহিসতা গুলো ভিন্ন রকম হতে পারে।

এক - আত্মীয়
১। নিয়ন্ত্রন লাভের প্রচেষ্টায় - স্বামী-স্ত্রী, শাশুড়ী-বউ, বউ-শাশুড়ী ইত্যাদি সর্ম্পকের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে সংসারের নিয়ন্ত্রন নিজের হাতে নিয়ে আসতে গিয়ে সহিংসতার আশ্রয় নেন।

২। সম্মান বিষয়ক - বাবা-মেয়ে, বাবা-ছেলে, ভাই-বোন ইত্যাদি সর্ম্পকের ক্ষেত্রে বিষয়টা ঘটে সাধারণতঃ। অধীনস্ত মানুষটি কিছু করেছে (যেমনঃ অপছন্দের কারো সাথে প্রেম, শারীরিক সর্ম্পক, মাদক সেবন) যা কর্তার পছন্দ নয়। সুতরাং শুরু হয় সংহিস আচরনের।

দুই - অনাত্মীয়
১। সামাজিক মেলামেশার অভাব প্রসুত

২। বিকৃত যৌনাকাঙ্খা প্রসুত

তিন - সাব অর্ডিনেট
১। অ্যবিউসিভ মনোভাব

২। বিকৃত মানসিকতা

এভাবে ভেঙ্গে দেখলে আমাদের সমাজে এর ব্যাপ্তি অনেক বলে অনুভূত হবে। আশার কথা হচ্ছে ধীরে হলেও আমাদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠছে।

এপ্রসঙ্গে ডোমেস্টিক ভায়েলেন্সের এই কুচক্রটি পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। আপনি যদি আপনাদের সর্ম্পকের মধ্য এই কুচক্রটি দেখতে পান তাহলে সাহায্যের জন্য অতিসত্ত্বর কারো সাথে যোগাযোগ করুন।

দুর্ব্যবহারের কুচক্র

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

নাম নাই এর ছবি

নারীকে নির্যাতন করার ব্যাপারে ধর্মীয় সমর্থন ইত্যাদি দায়ী"

এটা আপনার ভুল ধারনা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

'নাম নাই', আমার ভুল ধারনাটা ভাঙানোর জন্য আপনি প্রমাণ হাজির করুন। আমি অপেক্ষা করবো, তবে অবশ্যই অনন্তকাল না। প্রমাণ হাজির করতে না পারলে যে বিষয়ে জানেন না সে বিষয়ে ভবিষ্যতে অন্তত আমার পোস্টে মন্তব্য না করার জন্য অনুরোধ করছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।