১. কে? ইভান নাকি?
আমি সিমন, একটা উঁচু বিল্ডিং-এর ছোট্ট একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকি। ঘরে বউ আছে; আছে আমাদের একটা বাচ্চা, একটা কুকুর আর একটা বেড়াল। এমন অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে থাকলে যা হয় আর কি, প্রতিবেশিদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। জীবনটা একেবারে একঘেঁয়ে আর পানসে। এমন পানসে ভাবেই আরো দিন যেতো যদি না মহল্লার বড় ডিপার্টমেন্ট স্টোরটাতে নতুন সেলস্ গার্লটা আসতো। তাকে যখন প্রথম দেখলাম তখনই আমার খবর হয়ে গেল। সে বিবাহিতা জেনেও আমি হতাশ না হয়ে লেগে থাকলাম। এভাবে সপ্তাহ দুই যাবার পর পাখি ধরা দিল।
শুরু থেকেই আমরা একমত ছিলাম যে আমাদের সম্পর্কটা হবে পুরোপুরি শারিরীক; আর কখনোই আমাদের বর্তমান সংসার ভেঙে বিয়ে করার প্রসঙ্গ তুলবোনা। দু’জন দু’জনের ফোন নাম্বার নিলাম আর ব্যাপারটা খুব সতর্কতার সাথে চালানোর প্রতিশ্রুতি দিলাম।
সত্যি বলতে কি আমি তাকে আমার অফিসের নাম্বার দিয়েছিলাম। আমি জানি আমার বউয়ের সন্দেহ বাতিক আছে, আর সে যথেষ্ট ঈর্ষাতুর। আমিও সাবধান ছিলাম যাতে বউ বিন্দুমাত্র সন্দেহ করতে না পারে। আমাদের পরবর্তী সাক্ষাতের দিন-ক্ষণ ঠিক করা হতো কখনো ফোনে, কখনো ওদের দোকানে গেলে - সাধারণতঃ সপ্তাহে একবার। তবে সুযোগ পেলে সপ্তাহে দু’তিন বারও সাক্ষাত করতাম।
একদিন তার বাসায় ফোন করলে তার স্বামী ফোন ধরে বললো, “হ্যালো”?
আমি ভদ্রলোককে বাসায় আশা করিনি, কারণ এই সময় তার অফিসে থাকার কথা। তার কণ্ঠ শুনে আমি একটু থমকে গেলেও পরক্ষণে স্বাভাবিক গলায় বললাম, “কে? ইভান নাকি”?
“আপনি রং নাম্বারে ফোন করেছেন” বলে ভদ্রলোক ফোন রেখে দিল।
আমাদের পরের সাক্ষাতে আমি ঘটনাটা তাকে বলতে সে হেসে কুটিপাটি। বললো, “তোমার আরো সতর্ক হওয়া উচিত”। তবে সেদিন থেকে “কে? ইভান নাকি?” এই কথাটা আমাদের পাসওয়ার্ড হয়ে গেল। এর পর থেকে যখনই তার স্বামী ফোন ধরতো তখনই আমি জিজ্ঞেস করতাম, “কে? ইভান নাকি”? আর ভদ্রলোকও আমাকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করতো ওখানে ইভান নামে কেউ থাকেনা, আমি রং নাম্বারে ফোন করেছি ইত্যাদি। এতে তার বউ বুঝতো যে আমি ফোন করেছিলাম -পরে সে আমাকে সুযোগমত ফোন করতো। ভদ্রলোক কিছুই বুঝতে পারেনি, আর তার বোকামীতে আমি মনে মনে হাসতাম।
এক শনিবারে আমার বন্ধুদের সাথে মাছ ধরতে যাবার কথা, কিন্তু আবহাওয়া এত খারাপ ছিল যে আমাদের মাছ ধরার প্ল্যান বাতিল করতে হয়। বাসায় বসে বিরক্ত হয়ে যখন ভাবছি কী করা যায় তখনই ফোন বেজে ওঠে। আমার বউ ফোনের শব্দ শুনে অন্য ঘর থেকে দৌড়ে আসছিল। কিন্তু আমি এরমধ্যেই ফোন হাতে নিয়ে ফেলায় সে দরজাতেই থেমে যায়।
“হ্যালো? .....হ্যালো”? মনে হলো কেউ যেন ফোনের অপর প্রান্তে নিজের নিঃশ্বাস আটকে রেখেছে।
মুহূর্তকাল ইতস্ততের পর ভারী গলায় একজন জিজ্ঞেস করলো, “কে” ইভান নাকি”?
২. সত্যাসত্য
সকাল দশটা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার সুন্দরী সেক্রেটারীর কাছ থেকে দিনের কার্য বিবরণী শুনছেন এমন সময় টেবিলের লাল ফোনটা বেরসিকের মতো বেজে উঠল। মন্ত্রী ভাবলেন, “সম্ভবত প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে ফোন করেছে। নিশ্চয়ই গর্দভটা শেষ পর্যন্ত আমাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রিয় সম্মানে ভূষিত করার জন্য নির্বাচন করেছে”। সেক্রেটারীকে ইশারায় চুপ করতে বলে ফোন তুলতেই প্রেসিডেন্টের গলা শোনা গেল।
“মাননীয় মন্ত্রী, আপনি কি জানেন কী হয়েছে”?
“আপনি কোন ব্যাপারে জানতে চাইছেন, ইয়োর এক্সেলেন্সি”?
“তার মানে আপনি জানেন না। এর জন্য আপনার পদত্যাগ করা উচিত, মাননীয় মন্ত্রী! স্রেফ পদত্যাগ! অথর্বের দল সব”!
“পেনশনাররা বুঝি পেনশন বাড়ানোর জন্য আপনার অফিসের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করছে”?
“আপনি কোনো খবরই রাখেন না দেখছি! আপনি কি জানেন না স্বাস্থ্যবিভাগ অবসরের বয়স সীমা বাড়িয়ে দেয়ায় এখন পেনশনারদের সংখ্যা কমে গেছে”?
“ও, তাহলে”?
“কাল রাতে এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে কে যেন খুন করেছে। আর তাতে সকাল থেকে শহরের সব ট্যাক্সিওয়ালা গাড়ি আড়াআড়ি করে রেখে রাস্তা বন্ধ করে আমার অফিসের সামনে হল্লা জুড়েছে। বড় সড় কিছু একটা না করলে এই বদমাশের দলকে থামানো যাবেনা। আমি চাই আপনি আর আপনার ভাই বিচারমন্ত্রী পদত্যাগ করুন”!
“মাননীয় বিচারমন্ত্রী আমার চাচাতো ভাই, ইয়োর এক্সেলেন্সি! আপন ভাই না”।
“সে যাই হোক, সবই আপনার আত্মীয়-স্বজন। আর বিশেষ করে আপনারা দুজনে সর্বক্ষণ নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। ঠিক আছে, আপনাদেরকে চব্বিশ ঘন্টা সময় দিলাম, এর মধ্যে যদি খুনীকে ধরতে না পারেন তাহলে দু’জনেই বিনা বাক্য ব্যয়ে পদত্যাগ করবেন”।
“এটা খুবই কম সময় হয়ে গেল, ইয়োর এক্সেলেন্সি! একটা খুনীকে ধরতে সাধারণতঃ কয়েক বছর লেগে যায়”।
“এসব কথা ওদেরকে বলে পার পাওয়া যাবেনা। যেভাবেই হোক এমন একজনকে খুঁজে বের করুন যে খুনের কথা স্বীকার করবে। আমি জানি, এই ব্যাপারে আপনাদের পরীক্ষীত পদ্ধতি আছে। রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা এখন হুমকির মুখে, সুতরাং চব্বিশ ঘন্টার চেয়ে বেশি সময় আপনাদের দেয়া যাবে না”।
“জনসমাবেশের ব্যাপারে কী করবো? ট্যাঙ্ক ডাকবো”?
“না! আপনারা নতুন কিছুই শিখবেন বলে মনে হয় না। আমাদের মুখপাত্র হিসাবে একজন সংসদ সদস্যকে পাঠান। যিনি ওদের সব কথা শুনে ওদের সব দাবী মানা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দেবেন, তাহলে ওরা চলে যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন, এতেই কাজ হবেনা। যতক্ষণ পর্যন্ত না খুনীকে গ্রেফতার করা যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত গোটা পরিস্থিতি শান্ত হবেনা”।
“এই বার আমার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়েছে, ইয়োর এক্সেলেন্সি! আপনি যা চান, তা-ই হবে”।
সুতরাং আমরা তাকে গ্রেফতার করলাম।
এক মাতাল যুবককে চৌরাস্তার ফোয়ারাতে জল বিয়োগ করার সময় গ্রেফতার করা হলো। পুলিশ তার অতীত অপরাধের সব খতিয়ান বের করে ফেললো। তার ঘর তল্লাশী করে মাদকদ্রব্য, বেআইনী আগ্নেয়াস্ত্র, জাল টাকা, নকল ষ্ট্যাম্প পেপার, চাইল্ড পর্নোগ্রাফি পেল। যে ছুরিটা দিয়ে ট্যাক্সি ড্রাইভারটাকে খুন করা হয়েছিল সেটাও পাওয়া গেল। বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করলেন যে, ছুরিতে লেগে থাকা রক্তের দাগ, ধৃতের জুতায় লেগে থাকা রক্তের দাগ আর নিহতের রক্ত একই। তিন জন চাক্ষুষ সাক্ষী পাওয়া গেল যারা ধৃত ব্যক্তিকে খুনটা করতে দেখেছে। পুলিশের গোপন ক্যামেরায় তোলা ঘটনাটার ফুটেজও পাওয়া গেল।
প্রথমেই ধৃত ব্যক্তিকে এক দফা রামধোলাই দিয়ে তার পরিচয় বের করার চেষ্টা করা হল। জিজ্ঞাসাবাদ কালে পুলিশের বড় কর্তা উপস্থিত থাকায় ছোট কর্তার জোশ বেড়ে গেল। পেটাতে পেটাতে বলল, “আমি জানি তুই কে! হারামজাদা! কুত্তার বাচ্চা......”! পুলিশের আবিষ্কৃত বিশেষ এক ধরনের ট্রিটমেন্ট দেবার পর খুনী পুরো স্বীকারোক্তি দিল। একটা বিশেষ আদালতে খুনীকে কোন প্রকার আপীলের সুযোগ না দিয়ে দ্রুত বিচারের করে তার এই নিষ্ঠুর, পাশবিক হত্যাকাণ্ডের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হল।
কিন্তু সেদিনই একটা লোক পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় এসে বললো যে খুনটা সে-ই করেছে। পুলিশ বিভাগ তিন দফা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে লোকটাকে পরীক্ষা করালো। বিশেষজ্ঞরা রায় দিলেন, “লোকটা একটা নিরীহ উন্মাদ। ঘটনা সম্পর্কে দেয়া তার বক্তব্যের কোন মূল্য নেই”।
দেরী করলে গোটা ব্যাপারটা কেঁচে যেতে পারে ভেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তড়িঘড়ি করে প্রেসিডেন্টকে ফোন করে তার এই অভাবনীয় সাফল্যের কথা জানালেন। সাথে সাথে এটাও জানিয়ে দিলেন এর জন্য প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।
“তিনশ’ কোটি! এত্ত টাকা”! প্রেসিডেন্টের গলায় সন্দেহের সুর।
“এর জন্য আমাদের আমদানীকৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়েছে, দামী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আর মতামত নিতে হয়েছে, সব পর্যায়ের সাক্ষীদের মুখ বন্ধ করতে হয়েছে, আরো দশ রকমের খরচ হয়েছে - আপনি জানেন সেসব কী। তবে এসব হল কাগজ-কলমের হিসাব, বাস্তবে এই ঘটনায় আমাদের ভাগে আড়াইশ’ কোটি টাকা পাওয়া যাবে”।
“চমৎকার! আপনি তাহলে মিডিয়াকে জানিয়ে দিন খুনীকে ধরা হয়েছে এবং তার বিচার করে শাস্তিও দেয়া হয়েছে”।
টেলিভিশনে যখন খুনীকে নিয়ে করা সাংবাদিক সম্মেলন দেখানো হচ্ছিল তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মোবাইল ফোন “গডফাদার” সিনেমার গানের সুরে বেজে উঠলো।
“কে আপনাকে মন্ত্রী বানিয়েছে আর কে আপনাকে পুলিশের দায়িত্ব দিয়েছে”? মোবাইলে রাগে ফেটে পড়া প্রেসিডেন্টের কণ্ঠ শোনা গেল।
“আমি নির্বাচনে জয়লাভ করে মন্ত্রী হয়েছি, ইয়োর এক্সেলেন্সি”।
“গাধাদের দলের মধ্যে নির্বাচন করে সেরা গাধা নির্বাচিত হয়েছেন! উল্লুক কাঁহিকা, খুনী হিসাবে যাকে ধরেছেন আর টেলিভিশনে দেখাচ্ছেন সে আমার ছেলে”!
মূল গল্পঃ স্ভেতোস্লাভ পেইচেভ
ঠ্যাঙনোটঃ
জীবনের এক সময়ে গাড়ির চালক, মেকানিক, নাবিক ইত্যাদি পরিচয়ের মানুষ [url=
http://bg.wikipedia.org/wiki/Светослав_Пейчев]স্ভেতোস্লাভ পেইচেভ[/url] এখন শুধুই সাহিত্যিক। সাহিত্য জগতে তাঁর পরিচয় গদ্যকার হলেও সাহিত্য জীবন কবিতা দিয়েই শুরু করেছিলেন। তাঁর বয়স ষাটের কাছাকাছি হলেও সিরিয়াসলি লেখালেখি শুরু করেছেন বছর বিশেক হয়। ১৯৮৯ সালে তোদোর ঝিভকভের শাসনামল শেষ হবার পর বুলগেরিয়া যখন বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি ইত্যাদি নতুন ব্যবস্থার যুগে প্রবেশ করে স্ভেতোস্লাভ তখন সাহিত্যে আরো বেশি মনোনিবেশ করেন। তোদোর ঝিভকভের আমলে সেন্সর বিভাগ আর সরকারী দপ্তরগুলোর হয়রানী থেকে বাঁচতে তিনি সাইমন মার্টিন ছদ্মনামেও লিখতেন। পরিবর্তিত বর্তমান ব্যবস্থায় শাসক গোষ্ঠীতে বর্ধমান দুর্নীতি, সাধারণ মানুষের মধ্যে নৈতিক অবক্ষয়, তাদের জীবন-স্বপ্ন-বাস্তবতা তাঁর লেখার প্রধান উপজীব্য।
মন্তব্য
অসাধারণ! দুটি গল্পই।
[অট. প্রথম গল্পটায় সিমন ভাইকে লেখক কিভাবে চেনেন! ]
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
অটঃ ঐটা লেখককে জিজ্ঞেস করো। তোমার পাশের দেশে থাকেন। ভাষা কোন সমস্যা না। তুমি বুলগেরিয় ভাষা না জানলেও উনি জার্মান ভাষা জানেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি জার্মান জানিনা
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তুমি জার্মান জানোনা তাতে অসুবিধা কী? ইংরেজী জানে এমন এক জন জার্মান বালিকা সাথে নিয়ে গেলেই তো হয়। আরো ভালো হয় ইংরেজী জানা কোন বুলগেরিয় বালিকাকে যদি সাথে নিতে পারো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হাহাহা! দারুণ! পড়ে কিন্তু অনুবাদ পড়ছি তেমন করে ম্অনে হলো না!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
ধন্যবাদ কবি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হা হা হাসলাম, অনুবাদ খাসা হয়েছে।
ধন্যবাদ বস্। এগুলো ঠিক অনুবাদ নয়, বাংলায় রূপান্তর বলতে পারেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটি গল্পই অসাধারণ!
---------------------------------
Sad Stories
Sad Songs
স্ভেতোস্লাভ পেইচেভ আসলেই শক্তিমান গদ্যকার। তাঁর আরো গল্প সম্ভব হলে রূপান্তর করার চেষ্টা করব।
অটঃ মন্তব্যের শেষে নিজের নামটা জুড়ে দিন। এতে সবার সুবিধা হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুণ হয়েছে।
গল্পগুলো অবশ্যই দারুণ। দুই হাত ফেরতের পর যা দেখা যাচ্ছে তাতে মূল গল্পের চেহারা কেমন দারুণ সেটাও আঁচ করা যাচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনুবাদ গুলো ঠিক মানসম্মত হয় নি বলেই মনে হচ্ছে,যদিও রাশান অনুবাদ হিসাবে যথেষ্ট ভালো।
১। ট্যাগে "অনুবাদ" দেয়া হয়েছে "রূপান্তর" নামে কোন ট্যাগ নেই বলে। এই গল্পগুলো অনুবাদ নয়, বাংলায় রূপান্তর বলা চলে।
২। আমার করা রূপান্তর স্ভেতোস্লাভ পেইচেভের লেখার মানের ধারে কাছেও যেতে পারবে এমন ভাবাটাই অনুচিত।
৩। ট্যাগ, ঠ্যাঙনোট ও লিঙ্ক খেয়াল করলে দেখবেন মূল গল্পগুলো বুলগেরিয় ভাষার, রুশ নয়। আর রুশ থেকে কিছু অনুবাদ করা হলে তার মান যে খুব একটা ভালো হবেনা এমন ভাবছেন কেন? ননী ভৌমিক, হায়াৎ মামুদ, অরুণ সোম, দ্বিজেন শর্মারা রুশ সাহিত্যের যে বিশাল ভাণ্ডার অনুবাদ করে আমাদের সামনে দিয়েছেন সেগুলোর মান নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার অবকাশই নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটি গল্পেরই অসাধারণ চমকে সমাপ্তি ঘটেছে! ঝরঝরে অনুবাদ সুখ নিয়ে পড়লাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অনুবাদ বা রূপান্তরকালে ভাষার পার্থক্যের জন্য অনেক ট্যুইস্টই মার খেয়ে যায়। এখানে এই ভয়টা প্রবল ছিল। ট্যুইস্টগুলোকে যদি আপনাদের কাছে ট্যুইস্ট বলেই মনে হয় তাহলে আমার চেষ্টা সার্থক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সুখপাঠ্য।
স্ভেতোস্লাভ পেইচেভের রচনা আসলেই সুখপাঠ্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হা হা হা... গল্প দুইটা দারুণ।
অলমিতি বিস্তারেণ
স্ভেতোস্লাভ পেইচেভের স্যাটায়ারগুলো আসলেই দারুণ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনুবাদ দারুণ হয়েছে!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এগুলো ঠিক অনুবাদ নয় দিদি, রূপান্তরের চেষ্টা বলা যায়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসাধারণ দুটো গল্প!
খাসা অনুবাদে ।
অফটপিক: আমার শালার ডাকনাম "ইভান"।
@সিমন: ছি! এসব কী শুনছি?
ধন্যবাদ।
অটঃ
১। মেম্বরের শালা বলে কথা!
২। বুঝলেন মেম্বর, সত্য কখনো চাপা থাকেনা। পাব্লিকের মুখ আর কতদিন বন্ধ করে রাখতে পারবে!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সিমন: ছি! এসব কী শুনছি?
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
অনুবাদ এককথায় চমৎকার হয়েছে।
গল্প দুইটাই মজার...পড়ে ভাল লেগেছে।
অসাধারণ গল্প।
রূপান্তর অসাধারণ হয়েছে কিনা বলতে পারবো না। কারণ মূল গল্প আমার পড়া নেই। তবে পড়তে আমার অসাধারণ লেগেছে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
মজা পাইলাম।
দুইটাই জটিল।
আচ্ছা, আচ্ছা, সিমনের ব্যাপার তাহলে এই!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
প্রথমটা পারফেক্টো ফ্ল্যাশ ফিকশন।
সিমন নামটা থাকায় আরো জমসে।
অসাধারণ অনেকে অনুবাদের কথা শুনলে নাক সিটকায়, কিন্তু ওরা বোঝে না অনুবাদের কল্যাণেই বিশ্ব সাহিত্যের রত্নভান্ডারের দ্বার আমাদের সামনে খুলে যায়।
ধন্যবাদ। সবার পক্ষে সব ভাষা শিক্ষা করা তো সম্ভব না, সেক্ষেত্রে অনুবাদ ছাড়া উপায় কী? অনুবাদ না হলে ইংরেজী সাহিত্য ছাড়া অন্য ভাষার সাহিত্য আমাদের কাছে অজানাই থেকে যেতো।
অটঃ পরের দফায় কারো পোস্টে কমেন্ট করলে, কমেন্টের শেষে নিজের নামটা দয়া করে দিয়ে দেবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
- কে? ইভান নাকি?
- না, আমি পিতর। ইভান চলে গেছে। আপনি কে বলছেন বাহে ?
মনমাঝি
পিতর কে? সিমন পিতর? ফোনটা তো করা হয়েছিল রুশো শহরের মধ্যেই, সেটা নাজারেথে চলে গেলো কী করে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বেশ ঝরঝর করে পড়া গেল। ভাল কাজ করেছিলে দুটোতেই।
দুটো গল্প-ই ভালো। প্রথমটা বেশী ভাল লেগেছে - এবং, ঘটতেই পারে! আর, ঘটেও সম্ভবতঃ। দ্বিতীয়টির পাত্রমিত্ররা বাস্তবে ভয়ানক, তারা কাঁচা কাজ তেমন একটা করেনা। তবে, লেখায় চাবুকের কাজটা লেখক ভাল ভাবেই করেছেন, তার মাশুল গোণার চাপ নিয়েই।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দ্বিতীয় গল্পটার কথা মনে হলে মন খারাপ হয়। দুনিয়ার অনেক দেশে এমন টাইপ ঘটনা ঘটে কিন্তু সেই দেশের সাংবাদিকেরা সেই খবর ছাপাতে পারেন না বা লেখকরা সেগুলো নিয়ে গল্প লিখতে পারেন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দ্বিতীয় গল্পটার শাস্তি দেওয়া পর্বটা পর্যন্ত যে অংশটা, সেটা ঘটে বল্যেই মনে হয়। তবে অবশিষ্ট অংশটায় যে বুমেরাং-এর কল্পনা করে হয়েছে, সেটা আনুপাতিকভাবে খুব কম ঘটে বল্যেই মনে হয়।
মন খারাপ হওয়া - সহমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন