বানপ্রস্থে যাবো.....

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: বুধ, ০২/০৩/২০১১ - ১২:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা সময় ছিল যখন ভারতবর্ষের রাজাদের কেউ কেউ বৃদ্ধ বয়সে বানপ্রস্থ অবলম্বন করতেন। লিখিত ইতিহাসের প্রায় সবটাই রাজা-রাজড়াদের কাহিনী বলে সাধারণ মানুষদের কেউ তখন বানপ্রস্থ অবলম্বন করতেন কিনা সেটা সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনা। বানপ্রস্থ অবলম্বন যেহেতু একটা ধর্মীয় বিধান তাই ধারণা করা যায় সাধারণদের কেউ কেউও নিশ্চয়ই বানপ্রস্থ অবলম্বন করতেন। রাজারা যে সব কারণে বানপ্রস্থ অবলম্বন করতেন তার প্রথম কারণ হচ্ছে ধর্মীয়, দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে ভোগে বিতৃষ্ণা, তৃতীয় এবং সবচে’ বড় কারণ হচ্ছে পুত্রসহ ক্ষমতার সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীদের হাত থেকে নিজের জীবন রক্ষা করে সসম্মানে ক্ষমতাত্যাগ করা। পৌরাণিক রাজাদের মধ্যে অযোধ্যার রাজা দশরথকে বানপ্রস্থ অবলম্বনের চেষ্টা করতে দেখা যায়, কিন্তু তিনি সে সুযোগ পাননি। পুত্র রামের বনবাসজনীত কারণে সৃষ্ট বিয়োগব্যথায় তিনি বানপ্রস্থ অবলম্বনের আগেই দেহত্যাগ করেন। মধ্যযুগের বাংলার রাজাদের মধ্যে কুলীন ব্যবস্থার প্রবর্তক রাজা বল্লাল সেনকে (রাজত্বকাল ১১৬০-১১৭৮) আঠারো বছরের সফল রাজত্ব ছেড়ে বানপ্রস্থ অবলম্বন করতে দেখা যায়। দশরথ আর বল্লাস সেন কোন্‌ কোন্‌ কারণে বানপ্রস্থ নিয়েছিলেন (বা নিতে চেয়েছিলেন) তা আমরা নিশ্চিত নই, তবে সেগুলো উপরোক্ত তিন কারণের কোন একটাতে হবার কথা। ইতিহাসে তাঁদের মর্যাদা বিবেচনায় আমরা বরং বলি তাঁরা ধর্মীয় কারণেই বানপ্রস্থ অবলম্বন করেছিলেন।

সাধারণ মানুষদের মধ্যে যারা বানপ্রস্থ অবলম্বন করতেন তাদের এই পথ নেবার ক্ষেত্রে ধর্মীয় কারণটি প্রধান। সাধারণের ভোগের সুবিধা সীমিত বলে তাদের ক্ষেত্রে ভোগে বিতৃষ্ণা আসার সম্ভাবনা কম, তবে সে সম্ভাবনা শূন্য নয়। সম্পত্তির লোভে উত্তরাধিকারদের হাতে খুন হবার সম্ভাবনা সাধারণের মধ্যেও আছে, তবে তা সীমিত। সাধারণের মধ্যে এই পথ নেবার একটা বড় কারণ আছে যেটা রাজা-রাজড়াদের ছিলনা তা হচ্ছে সংসারজীবনের অশান্তি ও ব্যক্তিগত ব্যর্থতা থেকে পলায়ন। এক কালে আমার মা প্রায়ই আমাদের ভাই-বোনদের যন্ত্রণায় “সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে জঙ্গলে চলে যাবার” বাসনা ব্যক্ত করতেন। তাঁর গর্ভজাত অকাল কুষ্মাণ্ডের দল বানপ্রস্থ ব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল, তারা ভাবতো মা খুব ক্ষেপেছেন তাই কিছুটা সময় সুশীল হয়ে থাকতে হবে। মা’ও যে আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন বলে ভাবতেন অমনটা নয়, তাই এক্ষেত্রে আমাদের ধারণাটাই সঠিক ছিল। কিন্তু আত্মহত্যায় অনাগ্রহী অথবা আত্মহত্যার সাহস বা দুর্বুদ্ধি নেই এমন কেউ কেউ নিশ্চয়ই সংসারজীবনের অশান্তি ও ব্যক্তিগত ব্যর্থতা থেকে পলায়ন করার জন্য এই পথ অবলম্বন করার কথা ভাবেন। রমাপদ চৌধুরীর “একদিন হঠাৎ”-এর কিছু না বলে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া অধ্যাপক মশাইয়ের (পরে মৃণাল সেনের বানানো ছবি “এক দিন অচানক”) কথা আপনাদের মনে থাকার কথা।

ব্যক্তিগত জীবনে আমি ধার্মিক নই, তাই ধর্মীয় কারণে আমার বানপ্রস্থ বা অনুরূপ সন্ন্যাসীর জীবন নেবার কোন সম্ভাবনা নেই। জীবনে ভোগের সুযোগও এমন কিছু পাইনি যে তাতে বিতৃষ্ণ হয়ে ভগবান তথাগতের মতো পূর্ণিমা রাতে সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে চলে যাব। আমার অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর মোট সম্পদের পরিমাণ শূন্য, তাই সম্পত্তির লোভে আমাকে কেউ খুন করতে পারে অমন সম্ভাবনা নেই - তাই সেই ভয়ে আমার সন্ন্যাসী হবার দরকার নেই। সংসার জীবনে আমার ভূমিকা অতিথী শিল্পীর মতো তাই সংসারে অশান্তির ঘটনা আমার জীবনে নেই। জীবনের শুরু থেকে ‘সফলতা আর আমি’ ব্যাপরাটা গণিতের ভাষায় mutually exclusive, তাই ব্যক্তিগত ব্যর্থতার প্রশ্ন বহু আগে মিটে গেছে। তারপরও আমি বানপ্রস্থ অবলম্বন করতে চাই। কিন্তু কেন?

জীবনের অধিকাংশ সময় পার করার পর দেখতে পাই এই জীবনে অর্জন কিছুতো নেই-ই বরং স্বীয় অযোগ্যতার জন্য অন্যের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছি বেশি। এমন জীবন আরো চললে আমার কাছাকাছি থাকা মানুষগুলোর দুর্ভোগ বাড়বে বই কমবেনা। কিন্তু এর জন্য আত্মহত্যা করার দরকার নেই। আমাদের জীবন একটাই, সেটাকে খামাখা নষ্ট করার কোন মানে নেই। যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ পৃথিবীর রঙ-রস-রূপ দেখে নেয়াই ভালো। তবে তার জন্য কারো গলগ্রহ হওয়া বা কারো কষ্টের কারণ হওয়াটা গৌরবের নয়। এক্ষেত্রে তাই বানপ্রস্থ অবলম্বন করাই শ্রেয়। এই বানপ্রস্থে ধর্মীয় আচার পালনের রক্তচক্ষু নেই, দেহকে শুকিয়ে কাঠ বানানোর দরকার নেই, পৃথিবীর রূপ-রস থেকে দূরে থাকার ব্যাপার নেই। এখানে সংসারে সফল হবার ব্যাপার নেই, ধনী-জ্ঞানী-মানী হবার ব্যাপার নেই, কর্পোরেট ইঁদুরদৌড় নেই। এখানে যে কেবল শান্তি আর শান্তি এমনতা নয়, তবে প্রতিদিনকার অশান্তিগুলো থেকে পরিত্রাণ আছে।

কিন্তু চাইলেইতো কেউ বানপ্রস্থ অবলম্বন করতে পারেন না। বানপ্রস্থের জন্য অত্যাবশকীয় সন্ন্যাসীর ন্যায় বাসোপযোগী বন কোথায়? কোথায় সেই বন যেখানে যথেষ্ট ফল-মূল-বুনো শস্য মেলে? কোথায় সেই বন যা শ্বাপদসঙ্কুল বা দুর্বৃত্তসঙ্কুল নয় অথচ নিবিড়। অমন বন দুনিয়ার আর কোথাও আছে কিনা জানি না, তবে বাংলাদেশে নেই এটা বলতে পারি। ভারতে যদি অমন বন থেকেও থাকে সেই বনে গিয়ে বানপ্রস্থ অবলম্বন করতে চাইলে (তা তিনি বাংলাদেশী হোন আর ভারতীয়ই হোন) বনপ্রহরী বা নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে উত্তম-মধ্যম খাওয়া, কারাবাস বা প্রাণ হারানোর সমূহ আশঙ্কা আছে। এই বানপ্রস্থে বন থাকাটা যেহেতু আবশ্যক নয় তাই বন ছাড়া কী হতে পারে তা ভাবা যাক।

“ভোজনং যত্রতত্র, শয়নং হট্টমন্দিরে” কথাটা কোন কালে সম্ভব ছিল কিনা জানি না, তবে এখনকার সময়ে তা অসম্ভবের কাছাকাছি। এখনকার কোন ধর্মের উপাসনালয়ে ঘুমানোর কোন জায়গা নেই। সেখান থেকে উটকো মানুষকে তাড়ানোর জন্য দারোয়ান, পূজারী, পুলিশ, র‍্যাব সবই আছে। কোন কোন মাজারে ঘুমানো যেতে পারে হয়তো, তবে তার জন্য “লাল সালু”র মজিদের ভূমিকায় নামতে হতে পারে। সেটা করলে তো আর বানপ্রস্থ হলোনা। শয়নের জন্য তাই লোকালয়ের একটু বাইরে, একটু জংলা ধরনের জায়গা বেছে নেয়া যাক যেখানে একটা কুটির বাঁধা যাবে। একটু খোঁজ খবর নিলে দেশের কোন না কোন জেলায় এমন জায়গা পাওয়া যাবার কথা। থাকার জন্য প্রথমে চর অঞ্চলের কথা ভেবেছিলাম কিন্তু খাওয়ার কথা ভেবে ও’চিন্তা মাথা থেকে দূর করছি। মাঝে মধ্যে থাকার জায়গাটার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী কারো বা পুলিশের হুড়কো খেতে হতে পারে, তবে সেটাকে Natural hazard বলে মেনে নিতে হবে। খাওয়ার যোগাড়ের জন্য কোন পেশা নেয়াটা ঠিক হবেনা। করলে সেটাতো বর্তমান জীবনের মতো কিছু হয়ে যাবে। আমাদের এক ব্যবসায়ী বন্ধু বলেন, “শেষ জীবনে নিজের হাতে করতে হয় এমন কিছু করে জীবিকা নির্বাহ করতে চাই”। তাকে সমূদ্র সৈকতের কাছে (সৈকতে নয়) ডাব-কলা বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি অমন কিছু করতে চাই না। তাতে ব্যবসায়ের ঝামেলাগুলো কাঁধে চলে আসবে। একটা উপায় আছে, যাকে সাহিত্যের ভাষায় “মাধুকরী” বলে - অর্থাৎ ভিক্ষাবৃত্তি। কিন্তু সেটারও কিছু সমস্যা আছে।

ভিক্ষাবৃত্তির প্রথম সমস্যা ভিক্ষুক হতে পারা। ছাত্রজীবনে চরম বামপন্থী সংগঠন করা এক বন্ধুকে তার পার্টি শ্রেণীবিচ্যুতি ঘটানোর জন্য বিশ্বকর্মার পাঠশালা ছেড়ে দূরের কোন জেলায় গিয়ে রিকশা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই বন্ধুটি এখন একটা বহুজাতিক কোম্পানীর প্রধান নির্বাহী। আমি অমন কিছু না হলেও ভিক্ষুক হবার জন্য যে শ্রেণীবিচ্যুতি দরকার সেটা আমাকে আগে চর্চা করতে হবে। ব্যাপারটা সহজ নয়, তবে অসম্ভব নয় হয়তো। প্রতিদিনের অভ্যস্ততা ও সুবিধা থেকে বের হওয়া কঠিন। শেখ ফরিদ উদ্দিন আত্তার বা ইব্রাহিম বিন আদহামের মত সাধু পুরুষদের এই শ্রেণীবিচ্যুতি ঘটানোর জন্য বারো থেকে ছত্রিশ বছর সাধনা করতে হয়েছে। আমার লক্ষ্য অত উঁচুতে না, তাই কয়েক মাস একটু কষ্ট করলেই চলবে মনে হয়।

শহরাঞ্চলে ভিক্ষাবৃত্তি সুসংহত নেটওয়ার্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেই নেটওয়ার্কে ঢোকা আর কোন পেশা নেয়া সমান কথা। তাই শহরাঞ্চলে ভিক্ষাবৃত্তির পরিকল্পনা বাদ। গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে, হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করার চেষ্টা করা যেতে পারে তবে তাও সহজ নয়। একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে ভিক্ষা করলে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু এই দেশে একতারা বাজানো শেখার স্কুল নেই, গিটার শেখার স্কুল আছে। আর বাংলাদেশে গিটার বাজিয়ে ভিক্ষা করা সম্ভব না। লেগে থাকলে বছর খানেক সময়ের মধ্যে নিজে নিজে একতারাতে টুংটাং করে একটা কিছু বাজানো শেখা যাবে আশা করি। কিন্তু আমার যে গানের গলা নেই! যাকগে, ভিখেরীর আবার গানের গলা! সেতো আর খুরশীদ আলম বা এন্ড্রু কিশোর নয়, কোন মতে খান পাঁচেক গানের দুই-তিন লাইন গাইতে পারলেই চলবে। লম্বা চুল রাখতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু সে’উপায় নেই। বছর পনের আগেই চুল পড়ে মাথা ঝাঁ চকচকে হয়ে গেছে। টাক মাথার বাউল হয় না, তবে গামছা মাথায় বাঁধা বাউল হতে পারে। তাই একটা রঙিন গামছা লাগবে। পরনে লুঙ্গী-ফতুয়া মানানসই হবে। এরমধ্যে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে লুঙ্গী সামলানোটাও শিখতে হবে। এমন আরো অনেক কিছুই শিখতে হবে - তাতে পরোয়া নেই যদি কাম্য জীবনটা পাওয়া যায়। দেখা গেল চেষ্টা-টেষ্টা সবই করলাম কিন্তু ভিক্ষুক জীবনে অভিযোজিত হতে পারলাম না; অথবা দিশা পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে গেল - তাহলে তো মুশকিল।

এর চেয়ে একটা কাজ খুঁজি যেটার কর্মক্ষেত্র আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার গহীন জঙ্গলে। সেখানে আয় আমার দিন চলার মতো হলেই চলবে। নাগরিক সুবিধা ও যন্ত্রণা থেকে দূরে গভীর অরণ্যে আমি ভোরের আলোয় উঠে সূর্যোদয় দেখবো, নদীতে স্নান করবো, অরণ্যের রঙে আমার চোখ জুড়াবো, পাখির কাকলীতে আমার কান জুড়াবো, সারা দিন কাজ করবো শরীরটাকে খাটিয়ে, আবীর মাখা সন্ধ্যায় প্রাণ খুলে গান গাইতে গাইতে আমার কুটিরে ফিরবো, অন্ধকার গাঢ় হলে পেটপুরে খেয়ে পাখিদের মতো নিশ্চিন্তে সারা রাত ঘুমাবো।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

শেষের পন্থাটাই সর্বোত্তম বলে মনে হচ্ছে। পেশাও হলো আর নেশাও হলো। শুধু মাত্র নেশার টানে বানপ্রস্থ পালন করতে গেলে যা যা শিখতে হবে বলে যেই লম্বা ফিরিস্তি দিলেন, তাতেই জীবন পার হয়ে যাবে, বানপ্রস্থ হবে না!

কিন্তু আপনার লেখায় বানপ্রস্থের ৪র্থ কারন একখানা পাওয়া গেল।

তবে বছর দুয়েক আগে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে(পূজার্থে নয়, মন্দির দেখার টানে... তবে ছবি তুলতে পারিনি, সম্ভব না বলে) গিয়ে দেখেছিলাম কিছু লোক আছে যারা 'গমনং যত্রতত্র, ভোজনং মন্দিরে" করে দিব্বি বেঁচে আছে। পুরীর সর্বত্র তাদের বিচরন, শুধু মন্দিরে জগন্নাথদেবের ভোগ লাগার আগে এসে এক খানা হাঁড়ি দখল করতে পারলেই দিনের খানার নিশ্চয়তা হয়ে যায়।

আমার সখ হলো পৃথিবীর সব ভাঙ্গাচোড়া পুরোন ধ্বসে পড়া বা প্রায় ধ্বসে পরা দালানকোঠা দেখে বেড়ানো ও তাদের যে যেই অবস্থায় আছে, সেই অবস্থাতেই যেন থাকতে পারে সেটা সম্ভব হলে নিশ্চিত করা; একে 'দালানপ্রস্থ বলা যায় নশ্চই'! তাই ভাবছি আর্কিটেকচারাল কনজার্ভেশনিস্ট হয়ে যাই... তবে এইখানেও আবার ৫ থেকে ১০ বছরের েকটা বিদ্যাশিক্ষার একটা ধাক্কা আছে... ভাবছি নেশাটা ছেড়ে দেব নাকি পেশাটাই বদলে ১০ বছরের ধাক্কাটা সামলে নেব!!!

--- থাবা বাবা!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি আপনার মগজের কথা শুনবেন নাকি আপনার হৃদয়ের কথা শুনবেন। তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন আপনি বর্তমান পেশায় থাকবেন নাকি নতুন পেশায় যাবেন। সচলের যূথচারী আর্কিটেকচারাল কনজারভেশনের কাজ করেন বলে জানি। উনার সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব আমার পোস্ট সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, আমি প্রাচীন সম্মানীয় সচলদের সচলকেরিয়ারকে রুগ্ন কিছু লাইনের সঙ্গে তুলনা করতে চেয়ে ওই গ্রাফের মাধ্যমে তাঁদের প্রকাশ্যে অপমান করেছি। আর ষষ্ঠ পাণ্ডব দেখি অভিমানাহত হয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেবার কথা ভাবছেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই বুঝলেন শেষে! আমার দুঃখ-কষ্ট কিছুই আপনার চোখে পড়লোনা? অবশ্য আপনি বুঝবেন কীভাবে, আপনার তো আর দারা-পুত্র-পরিবার নাই! একবার ওসব হোক তখন এই পোস্ট আবার পড়বেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুপ্রিয় দেব শান্ত (অতিথি) এর ছবি

চমৎকার চমৎকার চমৎকার

আমারও মাঝে মাঝে এইরকম বানপ্রস্থে যাওয়ার ঝোক চাপে। কারণ ওই আপনার মতোই।

খুবই ভালো লাগলো লেখাটা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

এর চেয়ে একটা কাজ খুঁজি যেটার কর্মক্ষেত্র আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার গহীন জঙ্গলে। সেখানে আয় আমার দিন চলার মতো হলেই চলবে।

সত্যই আগ্রহী হলে আমার সাথে যোগাযোগ করুন, বুদ্ধি বাতলে দেব। আর যদি এটা আপনার 'সুখের অসুখ' হয় তবেও বুদ্ধি আছে একটা.........!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌, আপনার সাথে পরবর্তী সাক্ষাতে বা ফোনালাপে উভয় তরিকাই বিস্তারিত জানাবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুপ্রিয় দেব শান্ত (অতিথি) এর ছবি

চমৎকার চমৎকার চমৎকার

আমারও মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে বানপ্রস্থ অবলম্বন করি। কারন ওই আপনার মতোই।

লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ সুপ্রিয়। কুষ্টিয়ার সন্তান, আমার এক সহপাঠী বলতেন, "কুষ্টিয়ার সব সন্তানের রক্তের মধ্যেই লালন ভাব আছে, তারা একটু বাউল"। আমি বলতাম, "হ্যাঁ, এমনই বাউল যারা বিজনেস স্কুলে পড়ে, বড় কর্পোরেটের হর্তা-কর্তা হয়"। যাকগে, সত্যটা হচ্ছে সবার রক্তেই একটু করে বাউলভাব আছে। সুতরাং আপনারও অমন ভাবতে ভালো লাগবে সে আর বিচিত্র কি!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

এর চেয়ে একটা কাজ খুঁজি যেটার কর্মক্ষেত্র আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার গহীন জঙ্গলে। সেখানে আয় আমার দিন চলার মতো হলেই চলবে। নাগরিক সুবিধা ও যন্ত্রণা থেকে দূরে গভীর অরণ্যে আমি ভোরের আলোয় উঠে সূর্যোদয় দেখবো, নদীতে স্নান করবো, অরণ্যের রঙে আমার চোখ জুড়াবো, পাখির কাকলীতে আমার কান জুড়াবো, সারা দিন কাজ করবো শরীরটাকে খাটিয়ে, আবীর মাখা সন্ধ্যায় প্রাণ খুলে গান গাইতে গাইতে আমার কুটিরে ফিরবো, অন্ধকার গাঢ় হলে পেটপুরে খেয়ে পাখিদের মতো নিশ্চিন্তে সারা রাত ঘুমাবো।

আপনি তো লোক সুবিধার নারে ভাই, নেশা ধরায় দিচ্ছেন.........

--
কালো ও সাদা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি কোনকালেই সুবিধার লোক ছিলাম না। বিশ্বাস না হয় ধর্ম্মপুত্রকে জিজ্ঞেস করেন। উনিতো আর মিথ্যা বলবেন না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

গৃহস্থতো, গৃহস্থই। তার কি আর বাণপ্রস্থ হয়? হয়না।
আগে তো নিজের থেকে মুক্তি, তারপর দুনিয়াদারী থেকে।
জঙ্গলে গিয়ে পাকাপোক্ত থাকতে নিজের ভেতরের গৃহস্থকে মেরে ফলতে হবে।
পারবেন?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পদত্যাগ করা যায়, কিন্তু দায়িত্ব অস্বীকার করা যায় না - এই সত্য আমি জানি। বানপ্রস্থে যাবার আগে একটা পর্যায় পর্যন্ত দায় শোধতো করতেই হবে। আর নিজের শ্রেণীবিচ্যুতি ঘটানোর কথা যেটা বললেন সেটার প্রতিবন্ধকতাগুলো জানি। আমি দুর্বল চরিত্রের আর দুর্বল চিত্তের মানুষ। তবু চেষ্টা করতে দোষ কি?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

একজন তো ইতোমধ্যেই সুন্দরবনকে সাকিন করে ফেলেছেন ! আর এখন দেখছি পাণ্ডব দা পাণ্ডবত্ব অর্জনের মওকা খুঁজছেন !! চালশের ধাক্কা পেরিয়ে অনেকেরই নাকি এরকম বানপ্রস্থের ভাব জাগে। কেউ কেউ তখন ইয়া লম্বা দাড়ি-টুপি পরিবেষ্টিত হয়ে আল্লা-বিল্লায় লেগে যান। এটাও একপ্রকার বাণপ্রস্থই। কেউ কেউ আবার নতুন দার পরিগ্রহ করে বাণপ্রস্থ উপভোগ করেন। কেননা তিনি তো আগের জীবন ফেলেই এসেছেন ! এটাও তো বাণপ্রস্থ !

কিন্তু পাণ্ডব দা'র এই বাণপ্রস্থ থিমে দক্ষিণ আফ্রিকার টিকিট সংগ্রহের ধারণাটা নতুন সংযোজন বৈ কি ! তবে এই তো সপ্তা দুয়েক আগে ঘটনাক্রমে আমার মালিকানের কাছে তাদের জীবনধারণের একটা সন্তোষজনক হিল্লা করে আমারও পরিব্রাজী-বাণপ্রস্থি হয়ে যাবার বাসনাটা জানানোর পরই হঠাৎ করে আদর-আপ্যায়নের মাত্রাটা কেন জানি উল্লেখযোগ্য রকমের বেড়ে গেলো ! তাই পাণ্ডব দা'র বাণপ্রস্থযোগের রাশি-প্রভাবটা না-জানালে নিজে নিজেই কল্পনা করে নিতে হবে আর কি !!

আপনার প্রাক-বাণপ্রস্থকাল সুখের হোক, আপাতত এই কামনা.....

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রথমে "বানপ্রস্থ" আর "বাণপ্রস্থ"র মধ্যকার পার্থক্য বুঝুন। ঈশ্বরের পথে আত্মসমর্পনের চেষ্টা বানপ্রস্থ, দ্বিতীয় দারপরিগ্রহ করা বাণপ্রস্থ। প্রথমটি পার্থিব লাভ ত্যাগের উদ্দেশ্যে, পরেরটি পার্থিব লাভে সাফল্যের উদ্দেশ্যে। আমার বানপ্রস্থ এ'দুটোর একটাও না।

আমি আপনার মতো সাহসী না দাদা। তাই আমি কিছু বলিনি আর আমার রাশি-যোগও কিছু ঘটেনি।

বনবাস, অজ্ঞাতবাস পাণ্ডবত্ব অর্জনের জন্য আবশ্যকীয় বিষয়। সেগুলো না হলে পাণ্ডবত্ব আর থাকে কী করে বলুন!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

এই পোস্টটা ইউনূস ডাগদরকে পড়ানো যায় না?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এর কিছু উনি বুঝবেন বলে মনে হয় না। এটা আমার মতো সাধারণ মানুষদের জন্য। উনি সাধারণ মানুষ নন্‌।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

এই ইচ্ছে মাঝে মাঝে আমারও হয় ভাই।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একমাত্র দুঃখীজনই দুঃখীজনের দুঃখ বোঝে, বাকিরা তা নিয়ে পরিহাস করে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

সুখী মানুষের জামা গায়ে দিলেই হবে পাণ্ডব'দা!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যখন নিজ গৃহে থাকি তখন সুখী মানুষের জামা গায়ে দিয়েই থাকি, বিশেষতঃ ঘোরতর গ্রীষ্মে। কিন্তু তবুও কি তাতে কাজ হয়? কবি বলেছিলেন, "রক্তের মধ্যে যার সন্ন্যাসের বীজ ঘোরে, সহস্র গোপা কি তাকে সঙ্গ দিতে পারে"?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

এত অস্থির হইসেন ক্যান! দেইখেন বাংলাদেশ ঠিকই ওয়েস্ট ইণ্ডিজরে হারায়ে দিবে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রতীচ্য জম্বুদ্বীপের কন্দুক খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি চিন্তিত নই ধর্ম্মপুত্র! আমি নিজেই নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। আরেকটি জন্ম নেবার সময় হয়ে এসেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

খেকশিয়াল এর ছবি

হাহা পাণ্ডবদা, জানেন তো?.. "এভাবে হয়না..এভাবে হয়না.." দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাহলে কীভাবে হয় রে দাদা! বলে ফ্যালেন, বেলা বয়ে যায়!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

বানপ্রস্থে গেলে আপনাকে আমরা ইন্টারপোল দিয়ে খুঁজে বার করব শয়তানী হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এমন শয়তানী চিন্তা যে কারো কারো থাকবে সে আশংকা আমি আগেই করেছিলাম। দ্বাপর না হয়ে বর্তমান যুগ হলে মহাভারতের পাণ্ডবদের আর অজ্ঞাতবাস করা সম্ভব হতোনা। ইন্টারপোল লাগিয়ে খুঁজে বের করে বলতো, "তুমাগো অজ্ঞাতবাস হয় নাই, তুমরা চুক্তিভঙ্গ করসো"!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নহে হাসি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমিতো প্রস্থানের কথা বলিনি, আমি বানপ্রস্থে যেতে চাই। আমি আরেকটি জীবন চাই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মহা. জাতক এর ছবি

আমিও, কিন্তু সেই ইরেজারটা কোথায় বলতে পারেন? আমাকেও একটা দেবেন কি সন্ধান পেলে?

একটা রুশ ছোটগল্প পড়েছিলাম ছোটদের। লেখা বা লেখকের নাম কোনটাই মনে নেই। ছেলেটার এলাকায় একটা পাথর আছে। ওটায় হাত রেখে ইচ্ছে পোষণ করলেই আবার ছোটবেলায় ফিরে যাওয়া যায়। কিন্তু, কেউ যায় না সে-কাজটা করতে। কেন? ছেলেটার একবার নিজেরই ইচ্ছে হলো যায়। কিন্তু, শেষমেষ গেলো না, এই নিয়েই গল্পটা।

আমি কিন্তু যেতে চাই ফিরে সত্যিই আমার ভালোবাসার, মানবীয় ছোটবেলায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কী মুছে ফেলতে চান মহা জাতক? জানেন না, সব চিহ্ন মুছে ফেললেও মোছার চিহ্ন থেকে যায়!

অমন কোন রুশ গল্প পড়েছি বলে মনে পড়ে না। আপনার কি মনে আছে গল্পটার নাম অথবা লেখকের নাম?

আমি কিন্তু আমার বালকবেলায় ফিরে যেতে চাই না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

জীবনে বড়োই সাধ ছিল সন্যাসী হবো কিন্তু পারলাম না। আর একটা কথা আছে, জঙ্গলে যদি বিড়ি না পাওয়া যায়, তাহলে আমি নাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হ, জঙ্গলে বিড়ি চাইবেন, পানি চাইবেন আরো কত কী!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

এই লেখা পড়ে দিশা'পা বলে নাই, "সুখে থাকলে ভূতে কিলায়" ! চোখ টিপি
লেখা খুবই উপাদেয় হয়েছে। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পাগল! দিশা আজকাল রেগুলার সচল পড়ার সুযোগ পায়না। সেই ফাঁকে লেখা পোস্ট করে দিয়েছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আমারও মাঝে মাঝে এইরকম বানপ্রস্থে যাবার ইচ্ছা হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সবুজ পাহাড়ে বন নাই?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

ক্যাম্রা নিয়া কি বানপ্রস্থে যাওয়া যায়????

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

খালি ক্যাম্রা ক্যান? লগে খাট-পালঙ-টিভি-ফ্রিজ-বউ-শালী-সাদা পানি-লাল পানি এগুলা লাগবো না!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

সহস্র গোপাওয়ালা একটা বানপ্রস্থ চাই

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সহস্র গোপাওয়ালা বন হচ্ছে বৃন্দাবন - বানপ্রস্থ নয়। বানপ্রস্থের প্রথম পাঁচ বছর সাথে বড় জোর নিজের স্ত্রীকে রাখা যায়, পরবর্তীতে তাও না - নো স্বস্ত্রী, পরস্ত্রী, শ্যালিকা, বালিকা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ইন্টারনেট না থাকলে বানপ্রস্থে যামু না। দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ইন্টারনেট থাকা মানে ভার্চুয়ালি এই গিয়ানজামের দুনিয়ায় থাকা। তাহলে কি আর বানপ্রস্থ হয়?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

শুরুতেই একটা সংজ্ঞা জুড়ে দেওয়ার দরকার ছিলো পাণ্ডব'দা। পোস্টে বানপ্রস্থের সংজ্ঞা নাই দেখে দিক্কার।

একটা উপায় আছে, যাকে সাহিত্যের ভাষায় “মাধুকরী” বলে - অর্থাৎ ভিক্ষাবৃত্তি। কিন্তু সেটারও কিছু সমস্যা আছে।

এর চেয়ে দারুণ একটা আইডিয়া হতে পারে চান্দাবাজী। আপনি কুটিরের উঠানে ক্যাশবাক্স সামনে রেখে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী'র মতো জিলাপীর ন্যায় আড়াই প্যাঁচে বসে থাকবেন আর জনগণ সেই বাক্সে আপনার জন্য 'যে যা পারেন' নীতিতে চান্দা ফেলে যাবে। আপনি খালি ওখান থেকে নিয়ে খরচ করবেন, আলাদা কোনো টেনশন নেই।

অমন বন দুনিয়ার আর কোথাও আছে কিনা জানি না, তবে বাংলাদেশে নেই এটা বলতে পারি।

শোকর আল হামদুলিল্লাহ। বানপ্রস্থের দিকে তাইলে এক ধাপ এগিয়েই আছি আমি। অন্তত ভেন্যু নিয়ে কোনো সমস্যা নাই।

কিন্তু আমার যে গানের গলা নেই! যাকগে, ভিখেরীর আবার গানের গলা!

এইটা একটা সিরিয়াস ইস্যু। ভিক্ষা পেশায় গলা এবং আয়ের সম্পর্ক দুষ্টাদুষ্টিভাবে জড়িত। ভোকাল খারাপ হলে এই সম্পর্ক কেবল যে ব্যস্তানুপাতিক হবে এমন না, বরং উত্তম-সুচিত্রা খাওয়ারও সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না! এর চেয়ে কি বাঁচোয়া নাই‌? আছে জনাব, অবশ্যই আছে। আপনার আমার মতো যারা ফ্র্যাকচার্ড ব্যাম্বো সদৃশ ভোকালের অধিকারী তারা "ছালা আমার, থালা তুমার" চুক্তিতে যৌথমালিকানায় এই পেশায় নামতে পারেন। তবে যৌথ অংশীদারিত্বে হাদুমপাদুমের সম্ভাবনা থাকলে প্রি-বানপ্রস্থ কর্মশালার সময় যষ্ঠী মধুর উপরেই নির্ভর করা শ্রেয়!

অথবা দিশা পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে গেল - তাহলে তো মুশকিল।

মুশকিল খালি? বলেন মহা-মুশকিল! তবে পরিবার নিয়ে এইখানে এই অধম মুখ না খোলার পণ করিয়াছে। পাছে কে কোথায় কী সব টুকে রাখে, কে জানে! পরে রিমান্ডে যাই আরকি!

যাইহোক, হ্যাপি বানপ্রস্থিং...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. বানপ্রস্থের এক প্রকার সংজ্ঞা শাস্ত্রে দেয়া আছে। আমার মতো যাদের শাস্ত্রে আনুগত্য নেই তারা নিজেরাই নিজেদের সংজ্ঞা বানিয়ে নেবেন।

২. চাঁদাবাজি একটা প্রতিষ্ঠিত পেশা এবং এটা কোন মতেই টেনশনমুক্ত নয়। এই ব্যাপারে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনাকে বঙ্গদেশ ভ্রমণ করতে হবে।

৩. ম্লেচ্ছদেশের বনে বানপ্রস্থ অবলম্বন শাস্ত্রসম্মত নয়। নিজের জাত-ধর্ম্ম-ঈমান-আকিদা ঠিক রাখেন।

৪. বানপ্রস্থে জয়েন্ট-ভেঞ্চারের অবকাশ নাই। কারণ, এই সুযোগে দুষ্টলোকজন পার্টনার হিসাবে বৈষ্ণবী যোগাড়ের ধান্ধা করবে। এই ব্যাপারে আপনার নিয়্যতও তো বিশেষ নেক্ব বলে মনে হচ্ছে না।

৫. আহারে বিয়া করার জন্য পুলাটা মুখ-চোখ-কান বন্ধ কৈরা রইছে, য্যান কেউ তার চরিত্র নিয়া কেউ সন্দো করতে না পারে। তবুও কিছু হৈতাছেনা। কারো "দিল কি দয়া হয় না"?!?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আগে তো ভাবতাম এই আমাদের মত ঘরের খেয়ে রাজ্যের বাক্যিবাগীশ লোকদেরই কেবল অলসতায় গা ভাসাতে চাঁদের পাহাড়ের কি আমাজনে ভ্যাগাবন্ড হতে ইচ্ছে হয়। ...

সুশীলের বাপ সুবলের কেসটার মতোই ঘোরালো ঠেকছে ব্যাপারটা। হুম, রীতিমত পুঁদিচ্চেরি ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এটা সুবল-সুশীল কেস নয়, সুহান! অ্যাডভেঞ্চারে যাওয়া আর বানপ্রস্থ এক নয়। বানপ্রস্থে যাবার আগে সংসারে বিদ্যমান ভোগের সুযোগগুলোর ব্যাপারে এক ধরনের বিতৃষ্ণা আবশ্যক। সেটা তোমার অবস্থান-বয়স থেকে সম্ভব না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনার নাহয় এখন যেতে ইচ্ছা করছে, আমার তো সেই কবে থেকেই মঞ্চায়। উপায় নাই। উপায় নাই?? মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। চেষ্টা অব্যাহত রাখুন, তাহলে একদিন সত্যি সত্যি যেতে পারবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নাশতারান এর ছবি

আমি পুনর্জন্ম চাই

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শুধু পুনর্জন্ম চাইলেই হবে না। পুনর্জন্মে কী হয়ে জন্মাতে চাই সেটা আগে ভাগেই ঠিক করে কর্তৃপক্ষ বরাবর পিটিশন দিয়ে রাখতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নাশতারান এর ছবি

পুনর্জন্মে আমি হয়েই জন্মাতে চাই। খানিকটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।