১.
বিয়ের বয়স হবার আগেই সোমার রবীন্দ্রনাথের “শেষের কবিতা” পড়া ছিল। বিয়ের বয়স হতে সেখানে বলা ঘড়া আর দিঘির তুলনাটা তার মাথায় গাঁথলো। অনুগত প্রেমিক অলককে তখন সে দেখতে পেলো ভ্যাগাবন্ড, শুকনা, কায়ক্লেশে ডিগ্রী পাশ আর ভবিষ্যতে উন্নতির আশাবিহীন হিসাবে। ফলে অলক বেচারা দিঘি হয়ে গেল। ঘড়া খোঁজার জন্য সোমাকে হাপিত্যেশ করতে হয়নি, সুবীর লাইনেই দাঁড়ানো ছিল। লাইনের সামনে আরো কেউ ছিল কিনা সেটা সুবীর জানতো না - সে বোধ সুবীরদের থাকেনা। বোধহীন সুবীরের ঝক্ঝকে অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ার, মোটা মাইনের চাকুরী, ফক্ফকা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি আর আর শরীর-স্বাস্থ্য ভালো। এমন জিনিসই ঘড়া হবার জন্য উপযুক্ত। অতএব, সুবীর ঘড়া হয়ে গেল।
বছর সাতেক যেতে সোমার মাথায় রবিবুড়া ঘাই দিলে সে দেখতে পেল তার ঘর বাধ্যগত কিন্তু ক্যারিয়ারে অসফল স্বামী আর একটি অবোধ শিশুকন্যায় ভরাট হয়ে গেছে। তার মন সাঁতার কাটতে পারে এমন গভীরতা সেখানে নেই। তখন দিঘির সন্ধানে অলকের খোঁজ পড়লো। অলক ততদিনে তার বর্তমান-ভবিষ্যত বেশ ঘুছিয়ে নিয়েছে। ক্যারিয়ারে সুবীরকে ছাড়িয়ে গেছে, এবং নন্দিতাকে বিয়ে করে ফেলেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরনো সম্পর্ক ঝালাই করতে অলকের আপত্তি ছিলোনা ; সোমারও কোন দ্বিধা ছিলোনা। অলককে ঘড়া না বানানোয় সোমার মনে মাঝে-মধ্যে একটু আফসোস্ হলেও “রোটিকে লিয়ে লাল ঝান্ডা, চুনাবকে লিয়ে পাঞ্জা” নীতিতে বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যে থাকাটাকেই ঠিক বলে মনে করল।
ভেজাল বাধলো যখন বছর দুই পরে সুবীর ওদের এই ব্যবস্থাটা টের পেয়ে গেলো। সোমাকে ঘাঁটানোর মতো সাহস সুবীরের ছিলনা তবু ক্ষোভ চাপতে না পেরে হঠাৎ হঠাৎ ফেটে পড়তো। সোমা একটু ভয় খেলো এই ভেবে যে, সুবীরের মতো বোকারা ঝোঁকের মাথায় যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে। সুবীর যদি বিবাহবিচ্ছেদ করার কথা ভাবে তাহলে তার সমূহ বিপদ হবে। দিঘি ছাড়া প্রাণে বাঁচা যাবে কিন্তু ঘড়া ছাড়া দিন চলবেনা। বাস্তববাদী সোমা নিজের রাশ একটু টানলো। বোকা সুবীর ভাবলো তার রাগ দেখানোতে সোমার সুমতি হয়েছে - সে অলককে ছেড়েছে। অলক বুঝলো একটু কৌশলগত পশ্চাদপসরণ করতে হবে; কারণ, নন্দিতা সুবীরের মতো নির্বোধ না। অতএব দৃশ্যত দিঘি দৃশ্যপট থেকে সরে গেল।
সোমার আপাত সুমতির তিন মাসের মাথায় এক বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে রাহুলের সাথে দেখা। কলেজ জীবনের সহপাঠী রাহুলের ব্যাপারে সোমার কিঞ্চিত আগ্রহ থাকলেও সেটা ফিকে হয়ে গিয়েছিল কলেজ ছাড়তে না ছাড়তেই। কিন্তু এখন তাকে দেখে, তার সাথে কথা বলে মনে হলো - এমন বিশাল, গভীর, টলটলে দিঘি এত দিন কোথায় লুকিয়ে ছিল! অতএব, ফোনে তাদের আলাপ নিয়মিত হতে থাকল, সে আলাপ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকল। পরে সুযোগ বুঝে দেখা-সাক্ষাৎও চলতে থাকল। রাহুল অনায়াসে সোমার দিঘি হয়ে গেল।
বদের হাড্ডি রবিবুড়া যার মাথায় একবার বসেছে তাকে কি এত সহজে ছাড়ে!
****************************************************************************************
(ক) “কেতকীর সঙ্গে আমার সম্বন্ধ ভালোবাসারই, কিন্তু সে যেন ঘড়ায়-তোলা জল -প্রতিদিন তুলব, প্রতিদিন ব্যবহার করব। আর লাবণ্যর সঙ্গে আমার যে ভালোবাসা সে রইল দিঘি; সে ঘরে আনবার নয়, আমার মন তাতে সাঁতার দেবে”। - শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) “রোটিকে লিয়ে লাল ঝান্ডা, চুনাবকে লিয়ে পাঞ্জা” - অর্থাৎ দাবী আদায়ের সংগ্রামের জন্য কমিউনিস্টদের সাথে থাকো, আর ভোট দেবার কালে কংগ্রেসকে (ডানপন্থীদের) ভোট দাও। এক সময়ে ভারতে এমন কথা জনপ্রিয় ছিল বলে শুনেছি।
****************************************************************************************
২.
মহানায়কের সিনেমা দেখি, সেখানে নায়িকা হচ্ছেন মহানায়িকা। তাদের দু’জনের পাশে বাকিসব পাত্রপাত্রী চোখে দেখা যায়না এমন অনুজ্জ্বল। তাদের দু’জনের অভিনয় ম্যানারিজমে পূর্ণ, বাকিদের অভিনয় অনুল্লেখযোগ্য। কেউ কেউ হয়তো বেশ ভালো অভিনেতা কিন্তু তাদের হাঁড়িচাপা দিয়ে রাখা হয়। তাদের দু’জনের পোশাক-আশাক, সাজ-সজ্জা কালের ফ্যাশন শো। বাকিদের সাজ-পোশাক ভিখেরীদের মতো - হলোই বা সে তাদের পিতা-মাতা বা বন্ধু-বান্ধবী। মহানায়ক আর মহানায়িকা সিনেমায় নায়কোচিত সংলাপ দেয়, নায়কোচিত অভিব্যক্তি দেয়, নায়কোচিত রঙ-তামাশা, প্রেম-অভিমান বা ঝগড়া-ফ্যাসাদ করে। সিনেমা শেষে সচরাচর মহানায়ক-মহানায়িকার মিলন ঘটে, খুব অল্প ব্যতিক্রম ছাড়া। ব্যতিক্রম বাড়বে কী করে? সিনেমাগুলোর মূল গল্পই যে দেশের একমাত্র সমস্যা “প্রেম করে বিয়ে করা” নিয়ে! কতিপয় নির্বোধ গ্রামের দুর্ভিক্ষ, শহর জীবনের সংগ্রাম বা মানব মনের জটিলতা নিয়ে সিনেমা বানায় বটে, তবে তাদের সিনেমা দেখতে হল ভেঙে পড়ে না। নির্বোধেরা আর্ট হয়তো বোঝে, ব্যবসাটা বোঝে না। তাই তাদের জীবনে সাফল্য মানে কাঠের ফলকের পুরস্কার, কাঁধে শাল, গলায় ফুলের মালা - ভাঁড়ে মা ভবানী। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানায়, ফুঁসে ওঠা চা-বাগানে শ্রমিকের লাশ পড়ে; জলার ধারে, নির্জন পার্কে এনকাউন্টারে গুলি খাওয়া বিপ্লবীদের লাশ পড়ে থাকে - মহানায়ক আর মহানায়িকা নির্বিকার। তারা আর তাদের সিনেমা বানানেওয়ালারা ফালতু রাজনীতিতে যান না। লক্ষ্মী আর গণেশকে যুদ্ধের সাজ পরালে কি মানায়?
তবে দশক দশক ধরে চলা এমন পয়মন্ত ব্যাবসাটা মার খেয়ে যায় মহানায়িকা আচমকা মারা গেলে। বেচারা মহানায়ক তো আর অভিনেতা ছিলেন না কখনো, তাই অন্য অভিনেত্রীর সাথে পার্ট গাইতে পারলেন না বা চরিত্রাভিনেতা হতে পারলেন না। মুখে বলিরেখা আর মধ্যপ্রদেশে স্ফীতির আভাস দেখা দিতে মহানায়ক হিমালয়ের গুহায় আশ্রয় নিলেন। কেউ আর কোনদিন তার চেহারা দেখতে পায়নি। সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটাও জানা যায়নি।
সামনে কাচ লাগানো কাঠের শেলফটার ভেতরে তিন ভাগে কয়েকশ’ ডিভিডি সাজানো - আমার, গৃহলক্ষ্মীর আর সুকন্যার পছন্দ অনুযায়ী। তার সামনে দাঁড়িয়ে সিনেমা খুঁজতে খুঁজতে আমি মহানায়কের আমলের লোকদের কথা ভেবে অবাক হই। শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে সবাইকে মহানায়ক-মহানায়িকা মুগ্ধ করে রাখতেন কীভাবে? সুকন্যার পছন্দের সিনেমাগুলোর নাম পড়তে পড়তে প্রশ্নটার উত্তর মিলে গেল। সুকন্যার পছন্দের সিনেমাতে আছে ব্যাটম্যান, সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান, আয়রনম্যান, পাওয়ার রেঞ্জারদের মতো সুপারহিরোরা। মহানায়ক তো আসলে একজন সুপারহিরোই। অন্তত সুপারহিরো শব্দটার আক্ষরিক অনুবাদ করলে মহানায়কও তো হয়! তাহলে বুঝলাম, ব্যবসা করতে গেলে সুপারহিরো ছাড়া ভরসা নাই। কিন্তু আমার পছন্দের ম্যান্দামারা সিনেমাগুলোতে সুপারহিরো কে বা কোন বিষয়টা সেটা বুঝতে না পেরে মেজাজটা খিচড়ে গেলো। শালার সিনেমাওয়ালাগুলো এক একটা শয়তান! পাবলিকে ঘোল খাইয়ে তার পকেট থেকে পয়সা না খসিয়ে ছাড়বেনা দেখছি!
মন্তব্য
ধন্যবাদ। গল্প প্রচেষ্টা এমন কোন সুকৃতি নয় যে পরিণামে "উত্তম জাঝা" পাওয়া যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুইটা কাহিনীই উল্টা করে লিখলেন
প্রথমটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ!
দ্বিতীয়টা পড়ে দাত বের হয়ে গেল!
আপনাদের বিনয় দেখে একেবারে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়! আপনি লিখে বলেন লেখার চেষ্টা করলাম আর লীলেন্দা লিখে বলেন হাবিজাবি লিখলাম!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কোন কিছু সোজা-উল্টা করিনি। গুরুদেবের বিশ্লেষণ মানব মনকে নিয়ে। তাই সেটা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রযোজ্য হবার কথা। দ্বিতীয় গল্পটা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে একই প্রকার। সেটা গত শতাব্দীতে যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এই শতাব্দীতেও তা সত্যি হবে।
লীলেনের কৃতকর্মের দায়ভার তারই, আমি আমার কথা বলতে পারি। একটা কাহিনী বা একটা দৃশ্য লিখে ফেললেই তা গল্প হয়ে যায় না। প্রতি বছর হাজার হাজার টন কাগজ নষ্ট করে বই-পত্রিকা-সাময়িকীর আকারে যা বের হয় তার খুব কম অংশকেই গল্প বলা যাবে। ভাষায়, কাঠামোতে, অ্যাপ্রোচে, বিশ্লেষণে বিশিষ্টতা অর্জন না করলে, আর গদ্যের ব্যাকরণ মেনে তা রচনা করতে না পারলে লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা কোন কাহিনীই গল্প নয়। আমার এই কর্ম প্রচেষ্টাকে তাই "গল্প প্রচেষ্টা" বলাই সঙ্গত। এটি বিনয় নয়, এটি আমার উপলদ্ধি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গদ্যের ব্যাকরণ সম্পর্কে জানতে মন চায়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
গল্প প্রচেষ্টার শুরুর দিকে সচল শোহেইল ভাই বলেছিলেন এগুলো প্রচেষ্টা হিসাবে ঠিক আছে, তবে গল্প হয়ে উঠতে পারেনি এখনো। এরপর উনি মেইলে এই ব্যাপারে আমাকে কিছু নিয়ম-কানুন-ব্যাকরণের কথা জানিয়েছিলেন। বুঝতেই পারছেন এই বিষয়ে আমি অজ্ঞ। আপনি বরং শোহেইল ভাইকেই এই ব্যাপারে বলার জন্য অনুরোধ করুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমটা বেশি ভালো লেগেছে। ওইটা হাড়েমজ্জায় বুঝতে পেরেছি বলেই বোধ হয়।
বানান-
১.
হাপিত্যেস > হাপিত্যেশ, জিনিষ > জিনিস, রবীবুড়া > রবিবুড়া, ছিলনা > ছিলো, ঝাণ্ডা > ঝান্ডা, বাঁধলো > বাধলো, বিবাহ-বিচ্ছেদ > বিবাহবিচ্ছেদ, চলবেনা > চলবে না, দৃশ্যতঃ > দৃশ্যত, হল > হলো, দেখা-সাক্ষাত > দেখা-সাক্ষাৎ
২.
যায়না > যায় না, পুরষ্কার >পুরস্কার, মহানায়কতো > মহানায়ক তো, কাঁচ > কাচ, অন্ততঃ > অন্তত, খিঁচড়ে > খিচড়ে, ছাড়বেনা > ছাড়বে না
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
জীবনে পরীক্ষা দিয়ে খাতা রিভিশন করার আর কোন লেখা লিখে বানান সংশোধন করার ধৈর্য কখনো ছিলোনা। ফলাফল, পরীক্ষায় লাড্ডুগুড্ডু আর লেখাভর্তি ভুল বানান। অসংখ্য ধন্যবাদ ভুলগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য। 'চলবেনা' বা 'ছাড়বেনা' ঠিক করলাম না। এক্ষেত্রে আমার যুক্তি 'যাই নি' বা 'খাই নি' না লেখার অনুরূপ।
প্রথমটা মহাজনের বিশ্লেষণ থেকে নেয়া, তাই সবার বোধগম্য। দ্বিতীয়টা আমার উপলদ্ধি। এই উপলদ্ধিটা বিশেষ ভুল না মনে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমটা দারুণ। আমার মনে হয় এই ধারাটাও চিরন্তন, এই কারণে যে বিভিন্নভাবেই মেয়েদের শেখানো হয় যে জীবন একজনের ওপর নির্ভর করে কাটিয়ে দিতে হবে--প্রেম ধুয়ে জল খাওয়া ছাড়া কিছু হয়না ইত্যাদি( এখনকার কথা বলতে পারবনা)! এটা পাড়ি দিয়ে আসতে হত!
আপনি এটাকে গল্প প্রচেষ্টা বললে নিজের অল্প-স্বল্প-গল্প প্রচেষ্টা নিয়ে নিতান্তই লজ্জ্বায় পড়ে যাই!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
ঠিক, গুরুদেব যা দেখেছেন সেটা চিরন্তন ধারাই বটে। আমার অপচেষ্টার 'সোমা', 'অমিত'-এরই আরেকটি রূপ মাত্র। একনিষ্ঠতা আর একনির্ভরতা এক জিনিষ নয়। মানুষকে (নারী-পুরুষ নির্বিশেষে) প্রথমে স্বাবলম্বী হতে হবে - অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, মানসিকভাবে, সাংস্কৃতিকভাবে। এর পর সে একনিষ্ঠ থাকবে নাকি বহুগামী হবে সেটা তার অভিরুচি।
এই প্রকার লেখাকে "গল্প প্রচেষ্টা" কেন বলি সেটা উপরে অনার্য সঙ্গীতের মন্তব্যর উত্তরে বলেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার লেখা পড়ে 'শেষের কবিতা'র চরিত্রগুলোর নামকরণের গুহ্যত্ব নিয়ে ভাবছি আর ভাবছি। ওটার পর্ব বিন্যাস লক্ষ্য করেছেন? ইস, এ নিয়ে যদি ঘণ্টার পর ঘন্টা আলোচনা করার সময় থাকতো আমাদের।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আপনি ঠিক পয়েন্টগুলোই ধরেছেন বস্! "শেষের কবিতা"-র উপর অনায়াসে পিএইচডি থিসিস করা সম্ভব।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বোধকরি বোঝাতে পারিনি যা বলতে চেয়েছিলাম। যাকগে, আপনার সাথে আমি কিন্তু পুরোটাই একমত।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
তাহলে যা বোঝাতে চেয়েছিলেন সেটা নিয়ে একটা কবিতা লিখে ফেলেন। দেখি কবিতা পড়ে বুঝতে পারি কিনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটোই অসাধারণ!
এইটা গল্প প্রচেষ্টা !! লজ্জায় পড়লাম, লিখতেই তো আর ইচ্ছে করছে না...
ভালো থাকুন।
___________________________________
মেঘদুত
ধন্যবাদ মেঘদূত। কাউকে দেখে বা কারো আদেশে-অনুরোধে তো লেখা শুরু করেননি, তাই অন্যের কর্মকাণ্ডে আপনার লেখা থামবে কেন? লিখতে থাকুন - দু'হাত খুলে, মন ভরে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডবদা ১ পড়ে আমার আবার কালকে বিকালে আমার এক বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাসের মন্তব্যগুলো মনে পড়ে গেল -
২ বেশি ভালো লেগেছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ। তবে গুরুদেবকে বোঝার জন্য এই অভিজ্ঞতা জরুরী বলে মনে হয় না। মানসিকতায় matured না হলে গুরুদেবের শিশুতোষ লেখায় সীমাবদ্ধ থাকলেই চলে। হাজারোটা সম্পর্ক ভাঙার অভিজ্ঞতা থাকলেও একজন মানুষ মানসিকভাবে matured নাও হতে পারেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ওরা যে ম্যাচিউরড তা কে বললো! তবে ওদের আলাপচারিতা আমাকে বিনোদিত করেছে।
একটা কথা পাণ্ডবদা, হাজারোটা সম্পর্ক যারা ভাঙে, তারা আসলে ঠিক কতোটা ম্যাচিউরড?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমি কিন্তু এদের ম্যাচিউরড বলিনি, এরা অস্থির - নিজে যে কী চায় তা জানেনা, নিজে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেটাও জানেনা।
সম্পর্ক ভাঙা-গড়ার সাথে মানসিক পরিপক্কতা কতটুকু অন্তসম্পর্কিত?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
জানি না আসলে। তবে অস্থিরতাটা ঠিক। ইদানীং দেখি সবাই অনেক বেশি অস্থির। আর কোন সম্পর্কই শক্ত করে ধরে রাখার ব্যাপারটা তাই অনেক খেলো হয়তো!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
প্রথমটা দারুণ লাগলো!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথম গল্পটার বর্ণনার ধাঁচটা দারুণ লাগল, দ্বিতীয়টাতেও
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গল্প 'প্রচেষ্টা' ভাল লাগলো!
পুরোনো প্রশ্নটা আবারও করি, 'প্রচেষ্টা' ক্যানো?
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
ধন্যবাদ নর্সদেব।
এই প্রকার লেখাকে "গল্প প্রচেষ্টা" কেন বলি সেটা উপরে অনার্য সঙ্গীতের মন্তব্যর উত্তরে বলেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গল্প প্রচেষ্টা চমৎকার লাগলো! চালিয়ে যান, বড় হয়ে আপনি ভালো লেখিয়ে হবেন এটা 'শিউর'
ধন্যবাদ। আপনার নামটা জানা হলোনা। মনে হয় না আমি আর কোনদিন বড় হবো। আমি বুড়ো হয়ে একদিন মরে যাবো কেবল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
(গুড়)
আমি আর প্রচেষ্টা 'ক্যানো' প্রশ্নটা করলাম না, মহানদের বিনয় তো সর্বজন বিদীত।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এটি বিনয় নয় সিমন, কারণটা অনার্য সঙ্গীতের মন্তব্যর উত্তরে ব্যাখ্যা করেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটো গল্পই চমৎকার। খালি শিরোনামে প্রচেষ্টা শব্দটা বিদঘুটে লাগলো।
অতীত
ধন্যবাদ অতীত। এই প্রকার লেখাকে "গল্প প্রচেষ্টা" কেন বলি সেটা উপরে অনার্য সঙ্গীতের মন্তব্যর উত্তরে বলেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই যদি হয় প্রচেষ্টা তাহলে আসল জিনিস কেমন হবে দাদা!
প্রথমটায় বেশ পরোক্ষ আদিরসের গন্ধ পেলুম। স্বকীয়া এবং পরকীয়া। বেজায় ভালু পাইগো দাদা।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ।
আদিরস তো জীবনের বাইরের কিছুনা, তাই জীবনের কথা থাকলে ওটাও থাকতে পারে। এতে কোন দোষ হলে তা রবিবুড়ার, আমার না।
আর একটু সামলে দাদা!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দাদা, গল্পের ব্যাকরণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে লিখেছেন! তবুও মন বলছে এ তো গল্পই হবে। ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ পড়ুয়া। আপনাদের ভালো লাগলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এইরকম গল্প, থুড়ি, গল্পপ্রচেষ্টা পড়লে মনে বেশ আনন্দ হয়।
আমার প্রচেষ্টায় আপনি আনন্দিত হলে আমি ধন্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
"গল্প প্রচেষ্টা" ভালো হয়েছে
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথম থিমটা হাজারো গল্প-উপন্যাসের জন্ম দিয়েছে এরই মধ্যে, কিছু বিন্যাস-সমাবেশের মাধ্যমে।
দ্বিতীয়টা নিয়ে আরো আলোচনা হতে পারে, হয়েছেও কিছু এরই মধ্যেই।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
আরে ভাই, রবিবুড়ার ক্যাশ ভাঙিয়ে লাখ লাখ মানুষ আজো করে-কর্মে খাচ্ছে - আমি তো কোন ছাড়!
সুপারহিরো কনসেপ্ট বৈশ্যবুদ্ধিজাত। সমস্যা হচ্ছে, বাস্তব সমস্যার সমাধানের জন্যও আমরা কোন সুপারহিরোকে মাকনা করি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডব'দা, একটা কথা বলেন তো! আমি রবি'র চেয়ে ভালো না? ঐ ব্যাটা ছোটবেলায় আমার চেয়ে ঢের দুষ্টু ছিলো না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ছোটবেলা আর বড়বেলা, সব বেলাতেই রবি'র চেয়ে বদলোক পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। দেখেন না সেই সত্তর বছর আগে ব্যাটা ভেগেছে আর এখনো আমাদেরকে কেমন বাঁদর নাচ নাচিয়ে ছাড়ছে!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুইটা গল্প পুরা বুঝতে পারছি ভাই। তবে কয়েক বার পড়ার পর। আমার কেন বুঝতে এত দেরি হয়
ধন্যবাদ
অঃটঃ আপনি কি Norway -তে থাকেন
তিনি বিশ্বকর্মার পাঠশালা থেকে সামান্য কয়েক কিলো দূরে থাকেন
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এই বস্তু বুঝতে আপনার কয়েকবার পড়তে হয়েছে! আপনার সময় নষ্ট করার জন্য দুঃখিত। অবশ্য আমার লেখা দুর্বোধ্য ধরনের হয় - আমার এই এই সুনাম অনেক পুরনো।
অটঃ আমি নরওয়েতে কোনদিন যাইওনি, দেশেই থাকি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই 'গল্প-প্রচেষ্টা'দ্বয় অনেক ভালো লেগেছে, মজাদার।
এই 'প্রচেষ্টার' মাঝে একটা আলাদা সুর আছে এইবার, যেটা আপনার এই সিরিজের অন্যান্য লেখায় সাধারণতঃ থাকে না। এটার মাঝে একটু অনুবাদের সস ছড়িয়ে আছে বলে মনে হয়েছে, স্বাদ আরেকটু বাড়িয়েছে সেটা।
সেরেছে, মৌলিক লেখা অনুবাদগন্ধী হলে তো বিপদ! তাহলে অনুবাদকর্ম থেকে কিছুদিন দূরে থাকতে হবে দেখছি। প্রথম প্রচেষ্টাটা গুরুদেবের ঘাড়ে চড়া বলে সেখানে মৌলিকত্ব কম। গুরুদেবকে না টেনে লম্বা গল্প হয়তো বানানো যেতো, তবে সেটা করার কোন দরকার ছিল বলে মনে হয়না। দ্বিতীয়টা উপলদ্ধিপ্রসূত। সেখানে "শ্রী বাস্তব"-এর উপর নির্ভর করতে হয়েছে। তাই এখানে গল্প কম, ফালতু কথা বেশি। এজন্য এই প্রচেষ্টাদ্বয় অনুবাদের মতো লেগেছে হয়তো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমটা দুর্দান্ত লেগেছে। প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ এমিল ভাই। প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমটা অতুলনীয়! ভাবছি রবিঠাকুরে চোখে এই লেখা পড়লে আপনার মামলা খাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। ঘড়া আর দীঘি এই দুটোর কপিরাইটের মেয়াদ পেরিয়েছে?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কাকে আপনি মামলার ভয় দেখান, পাণ্ডবকে? জানেননা পাণ্ডবেরা সেই দ্বাপর যুগ থেকে ঘড়া-দিঘি'র চর্চা করে আসছে! ধরুন, ঘরে যাজ্ঞসেনী, বাইরে হিড়িম্বা। অথবা ঘরে কৃষ্ণা, বাইরে সুভদ্রা। কপিরাইট তাহলে কি পাণ্ডবদের হয় নাকি সেদিনের ছোকরা রবিঠাকুরের হয়?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রচেষ্ঠা সার্থক
ধন্যবাদ সাফি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দ্বিতীয়টা নিয়ে আরো কাজ করা যায়।
যেসব সিনেমা দেখি সেসব সিনেমার বেশির ভাগেরই "সুপারহিরো"টা কে বা কী সেটা ধরতে পারিনা। এটা বুঝতে পারলে সেটা নিয়ে কথা বাড়ানো যেতো। নিজের এই বোকামীর জন্য আসলেই রাগ হয়।
এর বাইরে মহানায়ক-মহানায়িকা নিয়ে কথা বাড়াতে ইচ্ছে করেনা। যখন বৈশ্যবুদ্ধির কাছে শুভবুদ্ধি, চিন্তাশীল মন বা সৃজনশীল মন মার খায় তখন প্রচণ্ড ক্রোধ হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন