১.
কামলা খেটে দেশে ফেরার পথে দেশী উড়োজাহাজে উঠে বিদেশের মাটিতে থাকতেই মনে হয় দেশে পৌঁছে গেছি। স্কুল জীবনের এক সহপাঠিনীকে বিমানবালাদের একজন হিসাবে আবিষ্কার করে পূর্ব পরিচিতির জন্য যতোটা না, কথা বলা যাবে ভেবে তারচেয়েও বেশি আনন্দ হয়। প্রাথমিক কুশলাদির পর সহপাঠিনী বললেন,
- শুনেছিস, গত সপ্তাহে কামাল ভাই খুন হয়েছেন।
- কোন কামাল ভাই?
- আরে পুরনো বাজার মহল্লার লুনার বড় ভাই।
- ওহ্! তা কীভাবে খুন হলেন? কারা খুন করলো?
- কারা খুন করেছে সেটা জানা যায়নি, কেন খুন করেছে সেটাও জানা যায়নি। ছুরি মেরে কণ্ঠনালীটা ফাঁক করে ব্রিকফিল্ডের কয়লার গাদায় ফেলে রেখেছিল।
- কামাল ভাইতো কারো সাতে-পাঁচে থাকার মানুষ না, তারপরও এমন হলো!
- সেটাইতো কথা!
বাড়ি ফিরে ছোট ভাইয়ের কাছে শুনলাম সন্দেহভাজন খুনী এলাকারই এক বড় রাজনৈতিক নেতা। কামাল ভাইয়ের সম্ভাব্য অপরাধ ঐ নেতার মেয়ের সাথে প্রেম করা ও গোপনে বিয়ে করার চেষ্টা। সে’সময় যারা দেশের ক্ষমতায় ছিলো কামাল ভাইদের পরিবার ছিল তাদের অন্ধ সমর্থক। দেশে নির্বাচন হলে তার পরিবারের লোকজন ঐ দলের জন্য খুব খাটাখাটুনিও করতো। তবু কামাল ভাইয়ের পরিবার প্রথমে কোন মামলাই করতে পারলো না। পরে বিরোধী দলের এক প্রভাবশালী নেতাকে ধরে কোন রকমে একটা মামলা করা হলো যেখানে খুনী ও খুনের মদতদাতার নাম লেখা হলো ‘অজ্ঞাত’। কোনো সাক্ষীও পাওয়া গেলো না। যদিও কামাল ভাইকে সর্বশেষ একটা ক্যারম খেলার আড্ডা থেকে কাদের সাথে যেনো বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিলো।
অজ্ঞাত আততায়ীর হাতে নিহত কামাল হত্যা মামলার পরিণতি কী হলো সেটা বর্ণনা করা অহেতুক। যা হবার, তাই হলো - অর্থাৎ মামলাটা ধামাচাপা পড়ে গেলো। কামাল ভাইয়ের পরিবার বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজেদের কাজে মন দিলেন। একসময় কামাল ভাইয়ের কথা সবাই ভুলে গেলো।
কামাল ভাইয়ের খুনের ঘটনার সময় মনে পড়ে তার বছর পাঁচেক আগে কলেজে আমাদের সহপাঠী জামশেদউল্লাহ্কে এক শুক্রবার সকালে কারা যেনো হোস্টেলের ক্যান্টিন থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কলেজের মসজিদের সামনে গুলি করে মেরেছিলো। সেই খুনেরও খুনী কারা তা জানা যায়নি, খুনের মোটিভ জানা যায়নি, কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায়নি - যদিও ক্যান্টিনে তখন আরো অন্ততঃ পঞ্চাশ জন নাশ্তা করছিলো। পত্রিকাওয়ালারা “প্রেমঘটিত কারণে খুন” লিখে দায়িত্ব শেষ করে ফেলে। জামশেদউল্লাহ্কেও আর কেউ মনে রাখেনি। শুধু মাঝে মধ্যে, জামশেদউল্লাহ্ যেই দলটার মিছিলে যেতো, তারা জামশেদউল্লাহ্র মৃত্যুদিবসে তার স্মরণে এক আধটা বিবৃতি দিতো। তাদের দলে শহীদের সংখ্যা কম বলে, প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষ ছাড়া এমন ফাও ফাও নিহতকে শহীদের মর্যাদা দিয়ে বিবৃতি দিতো। নয়তো এটুকুও তারা মনে রাখতো না।
এর বহু বছর পরে একদিন বিছানায় আধশোয়া হয়ে মুড়ি-চানাচুর খেতে খেতে যখন রাজ কুমার গুপ্তা’র সিনেমা “নো ওয়ান কিল্ড জেসিকা” দেখছিলাম তখন আমার কামাল ভাই আর জামশেদউল্লাহ্র কথা মনে পড়ে। সিনেমাতে পাবলিকের চাপে পড়ে নিম্ন আদালতে নির্দোষ ঘোষিত জেসিকার খুনীদের উচ্চ আদালতে শাস্তি হবার আনন্দে আমি তৃপ্তি ঢেঁকুর তুলে পার্শ্ববর্তিনীর দিকে সাহসী হাত বাড়াই। কামাল ভাই আর জামশেদউল্লাহ্ আবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিস্মৃতিতে চলে যায়।
২.
খুব ভোর থেকে পারভীনের দৌড় শুরু হয়। প্রথমে আহসান সাহেবের বাসায় ঘর পরিষ্কার করে নাশ্তা বানানো, তারপর থালা-বাসন ধুয়ে রান্নার যোগাড়-যন্ত্র করে দেয়া, কাপড় ধোয়া। সাড়ে দশটা থেকে আউয়াল সাহেবের বাসায় একই রুটিন, শুধু নাশ্তা বানানোর বদলে দুপুরের রান্না করে দেয়া। সাড়ে পাঁচটা থেকে রায়হানা ম্যাডামের বাসায় - একই কাজ। সপ্তাহে সাত দিন, একই রুটিন - শীত-গ্রীষ্ম-বারো মাস। কখনো কখনো ক্যাটারার সেলিম মিয়ার অর্ডারের চাপ বেশি থাকলে কাটাকুটি করার জন্য রাতের বেলাতেও তার ডাক পড়ে।
পারভীনের কাজের খুঁত সচরাচর কেউ ধরতে পারেনা। সবাই জানে পারভীন খুব মনোযোগী। আসলে পারভীনের মন কখনোই কাজে থাকে না। সে শুধু জানে তাকে ভুল না করে কাজ করে যেতে হবে; যেন মাস শেষে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা হাতে আসে। দুই হাজার টাকায় ঘর ভাড়া, লাইট-পানির বিল, খাই-খরচা মিটতে চায় না। তবু বাসা-বাড়ির কাজ বলে প্রতি বেলায় খাবারের অভাবটা হয় না। সব বাসাতেই কিছু না কিছু খাবার মিলে যায়।
বস্তিতে একই ঘরে থাকা সেলিনা, দীনা আর রাবেয়া গার্মেন্টসে কাজ করে। ওরা অনেক বার ওকে বলেছে এই ঝিগিরির কাজ ছেড়ে ওদের মতো গার্মেন্টসে কাজ করতে। তাতে পয়সা কম, কিন্তু সম্মান আছে। কিন্তু পারভীনের সম্মানের তোয়াক্কা নেই, টাকাটা ওর দরকার - অনেক টাকা। গার্মেন্টসে সেলাইকল চালাতে চালাতে যেমন কোমর থেকে পা পর্যন্ত অবশ হয়ে আসে, চোখের জ্যোতি কমতে থাকে; বাসা-বাড়ির কাজেও তেমন মেঝে মুছতে মুছতে, কাপড় ধুতে ধুতে, হাঁড়ি মাজতে মাজতে কোমর ব্যথা হয়ে যায়, হাতের চামড়া ক্ষয়ে যায়। কাজ হিসাবে পারভীনের কাছে দুটোকে তাই একই রকম লাগে।
পারভীন কাজ করে যায়। গৃহকর্ত্রীদের অশ্রাব্য গালাগালি, গৃহকর্তাদের কুপ্রস্তাব, উঠতি বয়সী ছেলেদের অশ্লীল চাহনী, বাসে-ভীড়ে বাড়িয়ে দেয়া নোংরা হাত কোন কিছুই সে গায়ে মাখে না। ওসব কিছু যেন পিছনের পর্দায় ঘটতে থাকা আলো-ছায়ার খেলা। রাতের বেলা এক ঘরে থাকা বস্ত্রবালিকারা মোবাইলে পছন্দের মানুষের সাথে নিচু গলায় কথা বলে, রাগ করে, অভিমান করে, সোহাগ করে। পারভীন ওসব কিছুই করেনা। শুধু শরীর খুব খারাপ থাকলে গৃহকর্ত্রীদের ফোন করে বলে যে সে আসতে পারবে না। মাঝে মধ্যে দেশের বাড়িতে কাকে যেন ফোন করে নিজ পরিবারের খোঁজ নেয়, আরো কারো খোঁজ নেয়। সেলিনা-দীনারা যখন তাদের পছন্দের মানুষের সাথে ফোনে কথা বলে তখন তারও কাউকে ফোন করতে ইচ্ছে করে। তবে যার মোবাইল ফোন নেই তাকে তো ফোন করার কোনো উপায় নেই, তাই মনে মনে তার সাথে কথা বলে।
সেলিনা-দীনাদের মতো সাজগোজ করার কিছু বা নতুন জামা-কাপড় কেনে না বলে ওরা পারভীনকে কৃপন বলে জানে। এত টাকা জমিয়ে কী করবে তাকে মাঝে মাঝে সে প্রশ্নও করে। এমন সব প্রশ্নে পারভীন নিরব থাকে। পারভীন বলতে পারে না যে তার আসলে এইসব কাজ করার দরকার ছিলো না। তার পরিবার ধনী না হলেও সচ্ছল, খাওয়া-পরার জন্য ঝিগিরি করার তার দরকার নেই। দেশের বাড়িতে থাকলে এতদিনে তার মোটামুটি একটা বিয়েও হয়ে যেতো। কিন্তু পারভীন ওসব চায়নি, যেমন সে এই জীবনটাও বেশি দিনের জন্য চায় না। পারভীন জানে, এখনকার এই ঝিগিরিটা তার জীবন নয়। তার জীবন অন্য কোথাও আছে, সেটা অন্য রকম জীবন।
কয়েক বছর শহরে বিভিন্ন বাড়িতে ঝিগিরি করলে, বস্ত্রবালিকাদের সাথে বস্তির ঘরে থাকলে, নিজের পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলে অনার্স ক্লাশের সাবেক ছাত্রী শায়লা শারমীন ওরফে বর্তমানে পারভীন নামে পরিচিতের মগজ থেকে কি শ্রেণীচেতনা দূর হয় না? তার আগের শ্রেণীচরিত্র বদলে গিয়ে কি নতুন পরিচয় তৈরি হয় না? তখন ঝিগিরি করে জমানো টাকায় অনায়াসে কয়েক বছর আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে কৃষক আর ক্ষেতমজুরদের মধ্যে থেকে পার্টির কাজ করা যাবে, পার্টির ফান্ড থেকে বরাদ্দ লাগবে না। টাকা একটু বেশি জমলে পার্টির সশস্ত্র উইং-এর জন্য দু’একটা স্মলআর্মস্ও কিনে দেয়া যাবে। তখনো কি তাকে পার্টির সার্বক্ষণিক কর্মী করা হবে না? এত কিছু করার পরও কি বিষন্ন চোখের, পাথরের মতো হৃদয়ের মানুষটা শুধুমাত্র পার্টির কাজের অজুহাত দিয়ে তার কৌমার্য ভেঙে পারভীনকে বিয়ে করতে রাজী হবে না?
মন্তব্য
চমক লাগানো সমাপ্তি!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
প্রথমটার সমাপ্তিতে কোন চমক নেই বস্। এই পরিণতি হচ্ছে মেনে নেয়া কষ্টকর এমন একটা ব্যাপার। দ্বিতীয়টাতে যেমন মানুষের কথা বলা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এটা একটা সাধারণ ঘটনা। তবে এই ব্যাপারে আমরা একটু কম জানি, আমাদেরকে আরো কম জানানো হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
শেষটুকু চমকে দিলো...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
রোমেল ভাইকে কী বলেছি দেখো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটো গল্পই অসাধারণ .... রেশ থেকে যায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুণ গল্প পাণ্ডব'দা।
মজার ব্যাপার কী জানেন, এই একটু আগেই একজনের সাথে আমার স্কুল জীবনের প্রথম সহপাঠিনী'র গল্প করছিলাম। কোনো একটা লেখাতেও মনে হয় আছে!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ।
সহপাঠিনীকে নিয়ে কী গল্প হচ্ছিল? শুনতে চাই!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সত্যবাক গল্পগুলো, দুটোই। প্রথমটায় বসুন্ধরার ছেলেদের হাতে প্রিয় বন্ধু হুমায়ুন হত্যাকান্ডের কথা মনে পড়ে যায়। আগামী জুলাইতে পুরো পাঁচ বছর হবে। মামলার অগ্রগতি সীমিত।
দ্বিতীয়টা একসাথে মেডোনা আর ম ইউ আহমেদের কথা মনে করিয়ে দিল। মেডোনার ডাই এনাদার ডে গানটায় বলছে ক্রান্তিকারি বিল্পবের প্রক্রিয়ায় নিজেকে অস্বীকারে কিন্তু সেই প্রয়োজন গুলো একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়না। সেগুলো স্থগিত হয় মাত্র, এবং ঠিক সময়ে বিল্পবীর মানুষ হয় যাওয়া ঠেকানো যায়না। ম ইউ এখন কোথায়?
I'm gonna break the cycle
I'm gonna shake up the system
I'm gonna destroy my ego
I'm gonna close my body now
I'm gonna avoid the cliché
I'm gonna suspend my senses
I'm gonna delay my pleasure
I'm gonna close my body now
১. পাঁচ বছর কেনো, যদি পঁচিশ বছরেও এই ঘটনার ন্যায়বিচার হয় তাহলে সেটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয় হবে।
২. বিপ্লবী যদি বিপ্লবের পথ ছেড়ে যায় তাতে বিপ্লবের প্রয়োজনীয়তাটা নিরর্থক হয়ে যায় না। কিন্তু এই প্রসঙ্গে ম উ আহমেদ আসে কী করে?
আসলেই প্রশ্ন, ম উ আহমেদ এখন কোথায়?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঐ যে আপনি যেমনটা বললেন, বিপ্লবীর বিপ্লবের পথ থেকে সরে আসার কথা। ম ইউ নিজেকে বিল্পবীই ভেবেছিল, এটা সে কথায় কাজে প্রকাশ করেছে। ধারবাহিকতার পরিবর্তন ঘটাবে, দেশ নাকি নতুন যুগে প্রবেশ করবে। কিন্তু বাংলাদেশের জলপাই ধারাবাহিকতা থেকে বের হয়ে আসা তার হয়নি। পারভীন আর ম ইউ এই হিসাবে একই দলের। তারা বিল্পবী হয়ে ওঠার আগেই সে বিপ্লবের পথ থেকে বেরিয়ে যায়। তাতে অবশ্য বিল্পবের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়না।
পারভীন আদৌ বিপ্লবের পথে ছিলো কিনা আমার সন্দেহ আছে। ষাট-সত্তর-আশির দশকে এমন রোমান্টিক বিপ্লবীতে পার্টিগুলো পূর্ণ ছিলো। ভাগ্য ভালো যে নব্বইয়ের দশকে এদের লেজটা বের হয়ে পড়ে। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান একবার নিজেকে কৃষক বলে দাবী করেছিলেন। তা সাইফুর রহমান যদি কৃষক হয় তাহলে ম উ আহমেদের বিপ্লবী হতে বাধা কোথায়! এর পরও পারভীন আর ম উ আহমেদ তুলনীয় নয়। পারভীন ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য কষ্টের ভাগটা নিজে বয়েছে, আর ম উ আহমেদ ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য গোটা দেশ-জাতিকে ছিবড়ে বানিয়ে ছেড়েছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটোই ভাল লাগল... দুই নম্বরটা কিছু নিজস্ব চিন্তাভাবনার খোরাক যোগাল...।
অটঃ এই 'বিষন্ন চোখের, পাথরের মতো হৃদয়ের মানুষ'... মনে হয় বর্তমান কালে অনেকটা মিথ্...।।
অসাধারণ উপলব্ধি নৈষাদ'দা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ।
এই বর্ণনাটা ক্লিশে, কিন্তু যুতসই আর কিছু পাইনি। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে একসময়ের স্বাভাবিক অনেক কিছুই অবাস্তব-অসম্ভব-মিথিক্যাল হয়ে যায়। কিন্তু এই আলোচনাটা অফটপিক হয় কীভাবে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছোট মানুষ কী মন্তব্য করব! শুধু আপনাদের দেখে দেখে দেখতে শিখি, বুঝতে শিখি, লিখতে শিখি...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখার ক্ষেত্রে বয়সে ছোট-বড় কোন ব্যাপার না। বোধের, প্রজ্ঞার কিছুটা হয়তো বয়সের সাথে বাড়ে; বাকি পুরোটার সাথে বয়সের সম্পর্ক নেই। একটা উদাহরণ দেই, বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা বাংলা বই পড়ছি বহুকাল ধরে। সেখানে ষাটের দশকের শুরুর দিকের বই থেকে শুরু করে এখনকার বই পর্যন্ত। এই বিপুল প্রকাশনার মধ্যে অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে বাংলায় পাঠ্যবই কতগুলো আছে? পাঠ্যবইয়ের বাইরে সাধারণ পাঠকের উপযোগী কতগুলো বাংলা বই আছে? যতদূর মনে পড়ে তাতে উত্তর "একটা" হবার কথা। এই একটামাত্র হবার জন্য বয়স কোন বাধা হয়নি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনার্য সঙ্গীতের চেয়েও 'আমি আলো ছোতো' তাই কেবল অবাক হলাম, মুগ্ধতা জমা রেখে গেলাম। শেখার কত্ত সময় বাকি আছে আমাল
- আয়নামতি
যার শেখা শেষ হয়ে গেছে সে বিজ্ঞ বা প্রাজ্ঞ নয়, সে মৃত।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটো গল্পের প্লটই অন্যরকম। বেশ লাগলো।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
২ অনেক বেশি নাটকীয় মনে হলো।
১ টায় দীর্ঘশ্বাস। তিনমাসের মধ্যে আমার খুব পরিচিত একজন আর স্বল্প পরিচিত একজনের নৃশংস হত্যার কথা জানলাম। আরো জানলাম খুনি কখনোই ধরা পড়বেনা। তারা কখনোই ধরা পড়েনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
১-এর মতো গল্প আমাদের সবার ঝুলিতেই আছে। এটা গর্বের বিষয় নয়, চরম লজ্জার।
উপস্থাপনার জন্য ২-কে একটু নাটকীয় লাগতে পারে হয়তো, তবে মোটের উপর এমন ঘটনা আছে - একটা-দুটো নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভালো লাগলো...
তবে গল্পে শিরোনাম খুব গুরুত্বপূর্ণ... একটা করে নাম দিন গল্পগুলোর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ। শিরোনাম দেবার পরিকল্পনা আপাতত নেই। আপনাদের প্রতিক্রিয়া-পরামর্শের ভিত্তিতে গল্পগুলো যখন সম্পাদনা করার সুযোগ হবে তখন শিরোনাম নিয়ে ভাববো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসাধারন! বিশেষ করে দ্বিতীয়টা। ছোট্ট কয়েকটা কথার মধ্যে বিশাল এক প্লট।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ। দ্বিতীয়টার ধাঁচের ঘটনা আপনার ঝুলিতে থাকার কথা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমরা সবাই নিজেদের নিষ্ক্রিয়তার পেছনে এরকম কিছু একটা যুক্তি তৈরি করে নেই:
শেষটা একটু পুরান্তিসধাঁচের মনে হলো।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
"পুরান্তিস" মানে কী?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইয়ে..মানে একটু পুরনো আমলের আর কি!
মানিকের এক বড়লোকের মেয়ে কমিউনিস্ট পার্টি করতে গিয়ে কিছুটা ডিক্লাসড হবার ধান্দায় আর কিছুটা প্রদর্শনকামিতার তাড়নায় (বোধহয় কারুর কাছে প্রমাণও করতে চাইছিলো) বস্তিতে থাকতে যায় এবং ঠিক মানিয়ে নিতে পারে না। অসাধারণ বিবরণ ছিলো ওটা।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
১. প্রথম গল্প প্রচেষ্টার কাহিনী এতোই পুরনো (আবার এতই সমসাময়িক) যে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর সবই হজম করতে হয়, তবু কখনো কখনো নাড়িভুঁড়ি উলটে বমি আসতে চায়।
২. মানিকে গল্পটা পড়িনি, একটু নামটা বলুন। এই ভদ্রলোক যা কিছু দেখেছেন, যা কিছু লিখেছেন তা পড়ে শুধু হতভম্ব হয়ে থাকতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুটো গল্পেই মনে হয়েছে আরেকটু বিস্তারিত লেখা যায়, পড়ে মনে হয়েছে প্লটটা লিখে রাখলেন, পরে আরো বিস্তারিত লিখবেন।
একাত্তরেও এরকমই এক গায়েবী খুনপর্ব হয়েছিল, মনে হচ্ছে। খুব হতাশ লাগে।
এখন প্লট লিখে রাখলাম, পরে বিস্তারিত লিখবো - অমন হোমটাস্ক করা মানুষ আমি নই। এটুকু লিখে রাখলাম, নয়তো তাও লেখা হতো না।
গায়েবী খুনপর্ব শুধু একাত্তরে কেন, তার আগে পরেও হয়েছে, হচ্ছে। কোনটারই বিচার হয়নি। এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট খুনের সংখ্যা একশ'র অধিক। এর একটারও বিচার হয়নি। গাড়িচাপা দিয়ে কাউকে মেরে ফেললে ড্রাইভারের নামে ৩০২ ধারায় মামলা করা যাবে না। ডাক্তারের অবহেলায় বা ভুল চিকিৎসায় রোগী মরলে একই ঘটনা। এমন কত আর বলব!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন