গল্প প্রচেষ্টা-০৯

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: সোম, ০৪/০৪/২০১১ - ৯:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

অনূঢ়কালঃ
সকালের নাস্তা বাস স্টপেজের পাশের ময়রার দোকানে পরোটা-ভাজি। দুপুরের খাবার অফিস পাড়ার উঁচু ভবনগুলোর পেছনে নিরাপদে গড়ে ওঠা চট-পলিথিন-টিন-বাঁশের বেড়া-কাঠের টেবিল-বেঞ্চের রেস্তোরাঁতে পরোটা-ডালভাজি-ডিম ওমলেট। রাতের খাবারের জন্য পরোটা-ভাজি পাওয়া একটু মুশকিল। বেশির ভাগ রেস্তোরাঁতে ঐ সময় নানরুটি-শিককাবাব-মুরগীর গ্রিল বেচে। ওসব একদিন খেলে তিন দিনের নাস্তার বাজেট খরচ হয়ে যায়। তাছাড়া তাতে পেট ভরলেও মন ভরে না। তাই তেহারী অথবা ডিম কারি-লাউয়ের ঘন্ট-ভাতই ভরসা। হোটেলে ঢোকার মুখে দেখা যায় বিরাট বিরাট অগভীর অ্যালুমিনিয়ামের ডিশে তেলে ভেজে, একটু ঝোল ঝোল দোপেঁয়াজা করা মাছের সারি। রুই - নলা - সরপুটি - তেলাপিয়া - কই - বোয়াল - বাইলা - চাপিলা। কোথাও সাথে কাঁচামরিচ-পেঁয়াজ-টমেটো দিয়ে রান্না করা কাঁচকি বা মৌরলা বা ট্যাংরা মাছের ঝোলও দেখা যায়। হ্যাঁ, শুধু দেখাই যায়, খাওয়া আর যায় না। এক প্লেট কাঁচকি মাছের দাম দিয়ে দুই দিন নাস্তা করা যায়। সুতরাং দিনের তিন বেলা খাবারের দুই বেলাতেই “রুটি-ভাজিতে বাঙালী”।

নবোঢ়কালঃ
রাতের বেলা বউ রুটি গড়িয়ে রাখে, সকালে বাসী তরকারী বা ডাল দিয়ে সেটা নাস্তা হয়। দুপুরের খাবার হিসাবে দু’জনের জন্যই প্লাস্টিকের বক্সে রাতে বানানো সেই রুটি সাথে আলু ভাজি আর ডিম ওমলেট। অন্য কোনো তরকারী নেবার উপায় নেই - গরমে টক গন্ধ হয়ে যায়। নিজের ক্ষেত্রে কালেভদ্রে বেড়ার হোটেলে ভাত খাবার সুযোগ হলেও বউয়ের সে সুযোগ নেই। ওসব দোকানে মেয়েরা ঢুকলে সবাই অবাক করা চোখে তাকায়। কেউ কেউ খুচরো মন্তব্যও করে। মেয়েরাও যে পুরুষদের মতো টাকা-পয়সায় গরিব হতে পারে সে’কথা কারো মনে থাকেনা। রাতের বেলা বউয়ের শরীর-মন ভালো থাকলে ভাতের সাথে কোনোদিন ফার্মের মুরগীর ঝোল, কোনোদিন মৌরলা মাছের ঝোল। বউয়ের শরীর-মন খারাপ থাকলে ভাতের সাথে আলু ভর্তা, ডিম ওমলেট। পুনশ্চ তিন বেলা খাবারের দুই বেলাতেই “রুটি-ভাজিতে বাঙালী”।

পুনর্মুষিককালঃ
বাচ্চা জন্মাবার আগে ভর গর্ভাবস্থায় বউকে চাকুরী ছাড়তে হয়েছে। তিন মাস না চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হবে বলে যে কথাটা জানা ছিলো, সেটা যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সত্য না সেটা জানা ছিলো না। তাছাড়া জন্মানোর পর বাচ্চাকে কোথায় রেখে বউ অফিসে যাবে সেটাও বিরাট প্রশ্ন ছিলো। সম্ভাব্য বেবি সিটারদের মধ্যে মা পিত্রালয়ে - বড় ভাইয়ের দখলে, আর শাশুড়ি দেশের বাইরে - সম্বন্ধীর দখলে। রাতভর বাচ্চাটা এতো যন্ত্রণা করে যে বউয়ের পক্ষে সব দিন রাতে বা সকালে উঠে আলাদা করে রুটি বানানো সম্ভব হয় না। তাই একটু আগেভাগে বের হয়ে ময়রার দোকান থেকে পরোটা-ভাজি বাসায় এনে দু’জনে মিলে খাওয়া হয়। দুপুরে বেড়ার হোটেলে পরোটা-ডালভাজি-ডিম ওমলেট। বউ দুপুরে ভাত, মাছ বা মাংস রান্না করে - কখনো সখনো একটা শাকভাজি বা ভর্তা। সেটা তার একার জন্য দুপুরের খাবার আর দু’জনের জন্য রাতের খাবার। আজকাল সংসার খরচ দ্বিগুণ আর আয় অর্ধেক হওয়াতে মাছ-মাংস কেনার হার কমেছে, শাক-সব্জি কেনার হার বেড়েছে। চালের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় বউ যেদিন রাতে রুটি বানায়, সেদিন রাতেও রুটি চলে। অবশেষে তিন বেলা খাবারের কমপক্ষে দুই বেলাতেই “রুটি-ভাজিতে বাঙালী”।

২.

টেলিভিশনে বা এফএম রেডিওতে সারা দিন ধরে ঘন্টায় পাঁচ থেকে দশ বার কানে মন্ত্র ঢালা হয়, “তৈরি নিমিষে, ঝটপট সহজে” বা “মাত্র দু’মিনিটে তৈরি”। মন্ত্রে মুগ্ধ হয়ে ইনসট্যান্ট নুড্‌লস কিনে তার প্যাকেটের গায়ে লেখা রন্ধনপ্রণালী পড়ি।

আড্ডায়-পার্টিতে-অফিসে, বাসে-ট্রেনে-চায়ের দোকানের আলাপের গরম বিষয়, “আজকাল ভাড়ায় মেয়েমানুষ পাওয়া খুব সহজ”। চারদিকে কতো সোর্স! হোটেল, গেস্ট হাউস, গোপন ফ্ল্যাট, সন্ধ্যের পর পার্কগুলো বা একটু নির্জন চীনে রেস্তোরাঁগুলো আরো কতো কী! খুব এলেমদার হলে পটিয়ে-টটিয়েই সম্ভব, ভাড়ার দরকার হয় না। অবশ্য সবার সেই এলেম থাকে না। তাই লাইন জানা থাকতে হবে। লাইন জানা থাকলে ব্যাপারটা নাকি ইন্‌সট্যান্ট নুড্‌লসের মতো সহজ ব্যাপার। নামেও দুটোর কতো মিল! একটা ম্যাগি, আরেকটা মাগী।

এক মগ (২২৫ মিলি) ফুটন্ত জলে এক প্যাকেট নুড্‌লসের পুরোটা ঢেলে দিন। নুড্‌লসের প্যাকেটের ভেতরে ছোট ফয়েল প্যাকের মশলার পুরোটাই ঢেলে দিয়ে দুই মিনিট রান্না করুন। বাড়তি জলটা ফেলবেন না। ব্যাস দুই মিনিটে তৈরি হয়ে গেল মজাদার ইন্‌সট্যান্ট নুড্‌লস্‌।

খাবার বা কাজ না পেয়ে গ্রাম থেকে; আর গৃহকর্ত্রীর বেদম প্রহার বা গৃহকর্তার ধর্ষনের হাত থেকে বাঁচার জন্য শহরে গৃহকর্মীর পরিচয় থেকে শিক্ষাবঞ্চিত মেয়েরা যেদিন গার্মেন্টস শ্রমিকের পরিচয় পেলো সেদিন থেকে যৌনকর্মীদের একটা নতুন শাখার নামকরণ করা হলো “গার্মেন্টস গার্ল”। এরা দামে সস্তা, দেখতে ভালো না, স্বাস্থ্য খারাপ। এদের কেউ জীবনে কখনো কোনো গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেছে কিনা সে খোঁজ কেউ নেয়না। তার দরকারও নেই, দেখতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মতোই লাগে যে। ফ্যাশন শো, মডেলিং আর নতুন নতুন গজিয়ে ওঠা স্যাটেলাইট টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোতে শিক্ষিত মেয়েগুলো যেদিন থেকে কাজ করা শুরু করলো সেদিন থেকে যৌনকর্মীদের যে শাখাটা আগে “কলেজ গার্ল” নামে পরিচিত ছিলো তার নতুন নামকরণ করা হলো “মিডিয়া গার্ল” বা “মডেল গার্ল”। এরা দামে বেশি, দেখতে সুন্দর, স্বাস্থ্য ভালো। এদের কেউও কখনো মিডিয়াতে কাজ করেছিলো কিনা সেই খবর কেউ রাখে না। এভাবে মেয়েরা যতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে পুরুষকে ছাপিয়ে এগিয়ে যাবে, যৌনকর্মীদের ততো নতুন নতুন শাখা আবিষ্কৃত হবে। শিক্ষিত হোক আর অশিক্ষিত হোক মেয়েমানুষই তো! তাকে মাগী হিসাবে ঘোষণা করতে দুই মিনিটও লাগেনা।

কতোটা জল চুলোয় চাপালে ফোটার সময় ঠিক এক মগ (২২৫ মিলি) হয়? এক বান্ধবী বলেছিলেন আঁচ কমিয়ে জল ফোটালে জল ঠিক মতো ফোটে। এক আত্মীয়া জানালেন, আঁচ ব্যাপার না, পাত্র ঢেকে রাখলেই চলে। তা জল ফুটতে কয় মিনিট লাগবে - আঁচ কম থাকলে অথবা পাত্র ঢাকা থাকলে? নুড্‌লস্‌ কি অল্প আঁচে, নাকি বেশি আঁচে দুই মিনিট রান্না করতে হবে -কাকে জিজ্ঞেস করবো?

ঠিক লাইন না জেনে মেয়েমানুষের জন্য ভুল জায়গায় গেলে ট্যাঁকের যাবতীয় কড়িতো যাবেই, সাথে জান নিয়েও টানাটানি পড়তে পারে। মাঝখান থেকে ভোগে কিছুই যাবে না। আর পুলিশি উৎপাত তো আছেই। কিন্তু কে জানে সেই লাইনের ঠিকানা? বন্ধুদেরকে ফিস্‌ফিসিয়ে আর সহকর্মীদের আকারে ইঙ্গিতে জিজ্ঞেস করি, কিন্তু তার হদিস পাই না। অথচ গল্প করার সময় এক একজন বিরাট ঝুলি মেলে বসে। ব্যাপারটা ঠিক ইনস্‌ট্যান্ট নুড্‌লসের মতো সহজ মনে হচ্ছে না। দেশে আদিমবৃত্তি যে নেই তা নয়, তবে সেটা সমাজের সব স্তরে যতোটা ব্যাপক-বিস্তৃত বলা হয় ততোটা নয় নিশ্চয়ই।

মাঝারী আঁচে জল ফুটতে দিলাম, সময় লাগলো চার মিনিটের বেশি। ফুটন্ত জলে নুড্‌লস্‌ পুরোপুরি সেদ্ধ হতে সময় নিলো পাক্কা ছয় মিনিট। আঁচ হেরফের হলে সেদ্ধ হতে সময়ের যে হেরফের সেটা এক মিনিটের বেশি না। তাহলে দুই মিনিটের ইনস্‌ট্যান্ট নুড্‌লস্‌, আসলে কয় মিনিটে তৈরি হলো?

চুলা থেকে নুড্‌লস্‌ নামাতে নামাতে চন্দ্রিল ভট্টাচার্যের “Y2K বা সেক্স ক্রমে আসিতেছে”-তে অনুব্রত আর চঞ্চলের সংলাপ মনে পড়লো, “ম্যাগি করতে দু’মিনিট, মাগী তুলতে তিন মিনিট”। চন্দ্রিল ব্যাটা একটা বাকোয়াজ! দুইটাই আরবান মীথ।


মন্তব্য

বইখাতা এর ছবি

১ বেশ ভাল লেগেছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। আর ২ কেমন লাগলো বললেন না যে!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

তবে "সববয়সী" ট্যাগটা কি ঠিক আছে অন্তত ২ এর জন্যে? নাকি আমার বোঝার ভুল?

অতীত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। ২-পড়ে যে বুঝবে সে প্রাপ্তবয়স্ক, না বুঝলে অপ্রাপ্তবয়স্ক। তবু আপনার পরামর্শ বিবেচনা করে "সববয়সী" কে "যুবা (১৮ বছর বা তদুর্দ্ধ)" করে দিলাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দুটোই চমৎকার লেগেছে। আদর্শ ছোটগল্প।

গল্পদুটো বাংলাদেশের যে আটপৌরে ভাষাতে লেখা হয়েছে, তাতে ট্যাঁক-কড়ি-বাকোয়াজ এই শব্দগুলো কেমন বেমানান লাগে, পকেট-পয়সা-চাপাবাজ এরকম কিছু বোধহয় বাকি গল্পের ভাষার সাথে ভালো যেত। অন্তত: আমার দেখা দেশের স্মৃতির সাথে মেলে না। তাই কেমন একটু কলকাতার প্রভাব মনে হয়। নাকি এগুলোই এখন দেশের সহজাত শব্দ?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধর্ম্মপুত্র, এক বারে আদর্শ ছোটগল্পের সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেন! ছোটগল্পের ব্যকরণে ফেললে এই গল্প প্রচেষ্টা পাশ নম্বর পাবে কিনা তাই তো সন্দেহ হয়।

বাংলাদেশের বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে এক বৈঠকেই দশ জন মানুষ হয়তো দশ রকম প্রতিশব্দ ব্যবহার করেন। কেউ বলেন "সব", কেউ বলেন "বেবাক", কেউ বলেন "ব্যাকটি", কেউ বলেন "হগ্‌গল", কেউ বলেন "হাবুইট্টা" - অর্থ বুঝতে আমাদের অসুবিধা হয় না। তাই আটপৌরে বাংলা ভাষায় লেখা গল্প প্রচেষ্টায় এমন মিশ্র প্রতিশব্দ চলে আসতে পারে। সেটা হয়তো লেখকের সহজাত ভাষা, অথবা লেখক যে সাবজেক্টকে অনুসরণ করছেন তার ভাষা। ভাষা তো প্রবহমান নদীর মতো। আজ তার বুকে যা জমে দ্বীপ হয়েছে, কাল সেটাই কোন গর্ভে হারিয়ে যাবে কে জানে!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বেবাক শব্দটা চমৎকার লাগে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এক নম্বরটা পুরাই এক নম্বুরী হয়েছে (প্রচ্ছন্ন হিউমারটা বেশ লাগলো)। দুই নম্বরটাও খাসা!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ভাগ্যিস ২ নম্বরটা আপনার কাছে দুইনম্বুরী কিছু বলে মনে হয় নাই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ আফসার এর ছবি

চমৎকার দুটি ছোটগল্প পড়লাম।
তবে দ্বিতীয়টা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মনে হলো আমার।
ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন।

__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ কবি। আপনাদের ভালো লাগলেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফকির লালন এর ছবি

ভালো লাগলো, খা্সা এবং নাগরিক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ বস্‌! এই নাগরিক জীবনের বাইরের জীবন তো অনেক দিন হয় পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাচ্ছি না, তাই হাতের কাছে যা পাওয়া গেলো তাই দিয়ে প্রচেষ্টা চালালাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দ্বিতীয় গল্পটা প্রথমটার চেয়ে ভালো লাগলো। বর্ণনায় প্রথমটাতে নতুনত্ব কিছু কমই ছিলো মনে হলো, বরং দুই নাম্বারটাতে বেশ চলে আসছে। পাঠককে একটু ভাবতে হবে বেশি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দুইটা প্রচেষ্টাতে আসলে দুইটা ভিন্ন ফরমাট চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রথমটাতে নিত্য বর্তমান জীবনের এমন তিনটি পর্যায়কে সমান্তরালে দেখানোর জন্য এমন সংজ্ঞার্থের মতো করে লেখা। ব্লগে টেবিল বানাতে পারিনা, নয়তো এটাকে টেবুলার ফর্মে দেখানোর ইচ্ছে ছিলো। আর বর্ণনাতে বিশিষ্টতা আনতে না পারা লেখকের সীমাবদ্ধতা, সেটা কাটানোর চেষ্টা জারী আছে।

দ্বিতীয়টাতে দু'টি পারস্পরিক সম্পর্কবিহীন বিষয়কে তুলনীয় করে দেখানোর জন্য পর পর অনুচ্ছেদে তুলনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটাকে অবশ্য টেবুলার ফর্মে আনা যেতো না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

টিউলিপ এর ছবি

এক পড়ে নিজের সাথে মিল খুঁজে পেলাম, খালি রুটি ভাজির জায়গায় টরটিয়া, পপ টার্ট, সিরিয়াল এগুলো। তবে থীমটা একই, খাওয়া এখন খালি গ্রাসাচ্ছাদন।

দুই নাড়া দিল।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এক-এর চেহারা সমাজের নির্দিষ্ট শ্রেণীর জন্য সব দেশে একই প্রকার থাকে। দেশভেদে সেখানে শুধু খাবারের নাম, চেহারা পাল্টায়। কিন্তু পুনরাবৃত্তির একঘেঁয়েমী পাল্টায় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

১ তো জীবনের গল্প/ আটপৌড়ে হওয়াটাই স্বাভাবিক।

২ পড়ে বুঝলামনা চাল্লু

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. কার যেনো একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখেছিলাম - অনেকটা এমন, "সকালে টঙের দোকানে নাস্তা, দুপুরে র‍্যাডিসনে লাঞ্চ - কর্পোরেট জীবন"! দুপুরে অফিসের পয়সায় পাঁচতারা হোটেলে লাঞ্চ না হলে সেটাও সকালের মতো পরোটা-ডালভাজি-ডিম ওমলেট হতো হয়তো। না, এটা গল্প নয় - এটাই জীবন।

২. বয়স আরেকটু বাড়ুক, তখন না বোঝা জিনিসগুলো ঠিকই বুঝে যাবে। আপাতত ইনসট্যান্ট নুড্‌লস্‌ খাও। ওটাও এক প্রকার রুটি-ভাজি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
দ্বিতীয়টা ভাবালো। আচ্ছা 'গার্মেন্টস-কর্মী' শব্দটাওতো আমাদের সমাজে গালি বা শ্লেষমূলক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চেনাজানা পরিসরে উঁচুশিক্ষিত অনেককেই দেখেছি এমনটা ব্যবহার করতে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি সংস্কৃতিতে যৌনতা এবং যৌনকর্মীকেন্দ্রিক এক্সপ্লেটিভগুলো গড়ে ওঠার কারণ আসলে কী?

অ.ট- পাণ্ডব কিন্তু ছজনই, কর্ণ শুদ্ধ ধরে- তাই নয়কি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লেখা নিয়ে আলোচনা করলেন অথচ নিজের নামটা দিলেন না, ব্যাপারটা কেমন হলো?

সব ভাষাতেই যৌনতা কেন্দ্রিক এক্সপ্লেটিভগুলো গড়ে ওঠার পেছনে বক্তার নিজ শ্রেণীর ব্যাপারে উন্নাসিকতা, যৌনকর্মীদের প্রতি অবজ্ঞা ও ঘৃনা, যৌন ব্যবসাটিকে লোভনীয় ভাবে দেখানোর প্রচেষ্টা আছে। "গার্মেন্টস কর্মী" শব্দটা এখনো অমন এক্সপ্লেটিভ পর্যায়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে না; তবে খুব শ্রদ্ধার সাথেও উচ্চারণ করা হয় না।

অটঃ দ্বাপর যুগের ইতিহাস আর কলি যুগের ইতিহাস এক প্রকার নয়। দ্বাপর যুগে মার্তণ্ডকুমার কর্ণ কি আদি পাণ্ডব নাকি শুধুই কৌন্তেয় সেসব হিসেব থাকলেও কলির হিসেব কিন্তু ভিন্ন। কলি যুগের পাণ্ডবদের ইতিহাস বুঝতে হলে আপনাকে অহেতুক কিছু খাটাখাটনি করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পাগল মন এর ছবি

২ নম্বরটা অন্যরকম, ভাবায়। আর ১, চমৎকার তবে সেটাও ভাবালো। চিন্তিত

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনি গল্প লেখা অব্যাহত রেখেছেন দেখে খুব খুশি।

নুডলস্‌ বা স্প্যাগেটি নিয়ে মুরাকামির একটা খুব ভালো গল্প আছে। দা ইয়ার অব স্প্যাগেটি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রচেষ্টা তো চালিয়েই যেতে চাই, শুধু পেরে উঠি না।

মুরাকামি'র গল্পটা পড়িনি। এমনিতেই রিডিং ম্যাটেরিয়াল জমে পাহাড় প্রমাণ হয়ে আছে। কবে যে নতুন কিছু পড়তে পারবো!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার কাছে দুইটাই ভাল্লাগলো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনি কি গল্প-উপন্যাস লেখা ছেড়ে দিয়েছেন? নাকি চিত্রনাট্য লিখতে গেলে এসব সাহিত্যকর্ম বন্ধ রাখতে হয়?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নৈষাদ এর ছবি

দুটোই ভাল লেগেছে। তবে দু'নম্বরটা (লেখার স্টাইল সহ) বেশি ভাল লেগেছে। চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ বস্‌! যারা মূল গল্পে সুবিধা করতে পারে না তারাই স্টাইল নিয়ে নানা কারিকুরি করার চেষ্টা করে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ ২ নম্বর হ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আর ১ নম্বর কি? না?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

১ নম্বরটা জীবনযাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দুইটাই জীবনযাপন। অক্ষম গল্পকারেরা গল্প লিখতে না পেরে জীবনের কথা কপি-পেস্ট করে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সবকিছু সবার জন্য সহজলভ্য না ...

গল্প ভালৈছে


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সব কিছু কে চেয়েছে? মানবিকভাবে বাঁচতে চাওয়াটা অধিকার, সেটা সুযোগ নয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

শুকনো ইন্স্টেন্ট নুডল্সের ওপর দেয়া তেলমশলা ছড়িয়ে তার ওপর ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে ৩-৪ মিনিট ঢেকে রাখলে সেটা উপাদেয় সুপে ভেজা তরতাজা নুডল্স হয়। জাল দেওয়া ইন্স্টান্ট নুডলস একটা প্যাতপেতে জিনিস, খেয়ে সুখ পাইনা।
---
১। মাছেভাতে থেকে রুটিভাজি। মাঝখানে একবার আলু-ডালে বাঙালী হবার উপক্রম হয়েছিল, সেটার কি হল?

২। "খুব এলেমদার হলে পটিয়ে-টটিয়েই সম্ভব, ভাড়ার দরকার হয় না।" এই লাইনটাই মনে হয় গল্পটাকে পাল্টে দিল। গার্মেন্ট্স/মিডিয়া গার্লদের আবির্ভাব ও রুপান্তর সমাজের পুরুষশাসনের ক্রমাগত উত্থানের চিহ্ন, এগুলো সুশীল পুরুষদের আড্ডায় ভদকার গেলাস হাতে মুখ চুকচুক করে আক্ষেপের করার অবলম্বন - আবার সেই একই পুরুষদের নিভৃতসন্ধ্যার একাকীত্ব নিবারনের উপয়ও বটে। কিন্তু দেশের শহরগুলোতে অনেক স্বাবলম্বী নারীই যে মন ও দেহের টানে (পেটের টানে নয়) খুঁজে বেছে তাঁর পছন্দমত 'সম্ভব' হন ও নিয়মিত প্রেম-বিয়ে'র গন্ডীর বাইরে 'সম্ভব' হতে পারেন, এটাকে আমার প্রজন্মের মানুষকেই অস্বীকার করতে দেখে এলাম। বাংলাদেশের পুরুষদের আলাদা করে দোষ নেই। আমরা ২৬-৪০ বছরের পুরুষরা যতটুকু প্রগতির কথা বলতে ভালবাসি, ঠিক ততটাই নারীর পূর্ণ স্বাধীনতাকে ভয় পাই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কাপ নুড্‌লস এভাবে খাওয়া হয়, আমার কাছে ভালো লাগেনা।
-----------

১। মাছ থেকে আলু, সেখান থেকে ডাল। আপাতত অমন কিছু শুনছিনা। তবে সামনে "শাক-ভাতে বাঙালী" বা "নুন-ভাতে বাঙালী" আসতে পারে।

২। "গল্পটাকে পালটে দিল" মানে কী? গল্প কি ঠিক রাস্তায় গেলো, নাকি ভুল রাস্তায়?

পুরুষতান্ত্রিকতার ভণ্ডামী সম্পর্কে আমরা অবগত। এগুলো নিয়ে কথা হয়, এতে আমাদের behaviour কিছুটা পালটায় কিন্তু আমাদের attitude পাল্টায়না। স্বাধীন নারীর কনসেপ্টটাতেই আমাদের বদহজম হয়। নারী যে বৈবাহিক বন্ধনকে অস্বীকার করে স্বাধীন ভাবে নিজের সঙ্গী নির্বাচন ও গ্রহন করতে পারে এটা আমাদের মানাতে একটা রেনেসাঁ দরকার হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

২। "গল্পটাকে পালটে দিল" মানে কী? গল্প কি ঠিক রাস্তায় গেলো, নাকি ভুল রাস্তায়?

ভুল, ঠিক - এগুলো বলা বিচারকের কাজ। আমি দর্শক। গল্পের এই একটি বাক্যে বলছে যে সব নারী ভোগের বস্তু নয়, কিছু নারী ভোক্তাও দেশে আছে। এই বক্তব্যটি গল্পে নারী ও ইন্স্টান্ট নুডলসের যে তুলনামূলক বয়ান তার থেকে বৈসাদৃশ, একটি ধারনাকে সামনে এনেছে। এটা না থাকলে গল্পটা সহজলভ্য ভোগ্যপণ্য হিসেবে নারী ও নুডল্সের সাদৃশবিচার থেকে যেত।

নারী যে বৈবাহিক বন্ধনকে অস্বীকার করে স্বাধীন ভাবে নিজের সঙ্গী নির্বাচন ও গ্রহন করতে পারে এটা আমাদের মানাতে একটা রেনেসাঁ দরকার হবে।

যা ঘটছে, সেটা চোখের সামনে দেখেও আমরা ঘটনার অস্তিত্বকে অস্বীকার করি। এটা আমাদের পুরাতন অভ্যাস। কিন্তু এতে ঘটনা থেমে থাকেনা।

সবজান্তা এর ছবি

মারাত্মক... দুইটাই। দ্বিতীয়টার বিষয়বস্তুর চেয়েও বেশি টানলো প্রকাশভঙ্গী, কয়েকটা বাক্য হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দুইটার ক্ষেত্রেই বিষয়বস্তু জোলো। সফল গল্পকার না হলে উপস্থাপনা, ফর্ম এইসব কারিগরী দিকে কারিকুরি করেই চলতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

দারুণ লাগলো, বিশেষত দ্বিতীয় গল্পটা।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। অনেকদিন হয় আপনার লেখা পাচ্ছি না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দুইটাই মারাত্মক লাগছে। ২ নং বেশি ভালো।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম গল্পটা অনেকেরই চেনা গল্প। কিন্তু আপনি দারুণভাবে বর্ণনা করায় নতুন ঠেকেছে। আর দ্বিতীয় গল্পের এতসব জানা ছিলোনা আগে! কিন্তু এতো কিছু থাকতে 'ম্যাগী'র সাথেই তুলনা এলো!!! খাদ্য আর খাদকের স্তর থেকে মুক্তি মেলেনা কেন পোড়ারমুখ মেয়েগুলোর??? আসলেই কী মেয়েগুলো এতটাই সহজ লোভ্য, নাকি 'চাহিবা মাত্রই বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে' দস্তখতের বল প্রয়োগের দম্ভে অন্ধ কিছু পুরুষ? গভীর বোধের কথা বলে যায় আপনার এই গল্প প্রচেষ্টা। অব্যহত থাকুক ধারাটি.....শুভকামনা।
- আয়নামতি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

(ক) বলেন কী! ১ বা ২ কোনটারই কোনকিছু পাঠকের অজানা থাকার কথা না।

(খ) ম্যাগীর নামটা এসেছে নামের মিল থেকে, অন্য কিছু না।

(গ) না, মেয়েরা সহজলভ্য নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মেয়েদের জন্য কৌশলে এমন পথ ও স্থান নির্মাণ করেছে। বলপ্রয়োগটা যতোটা শারিরীক, তারচেয়ে অনেক বেশি মানসিক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

অথচ গল্প করার সময় এক একজন বিরাট ঝুলি মেলে বসে। ব্যাপারটা ঠিক ইনস্‌ট্যান্ট নুড্‌লসের মতো সহজ মনে হচ্ছে না। দেশে আদিমবৃত্তি যে নেই তা নয়, তবে সেটা সমাজের সব স্তরে যতোটা ব্যাপক-বিস্তৃত বলা হয় ততোটা নয় নিশ্চয়ই।

এই 'গল্পের ঝুলির' মুখে আমাকেও প্রচুর পড়তে হয়েছে। হাসি

তবে গল্পগুলি কতটা মিথ আর কতটা ট্রুথ আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। ছেলেদের কথা বাদই দিলাম, এই গল্প আমি মিডিয়া জগত সংশ্লিষ্ট মেয়েদের কাছ থেকেও শুনেছি। ফলে পুরোপুরি অবিশ্বাস করার জোর পাই না। এমনকি ঘুরে ফিরে স্পেসিফিক অনেকগুলি নামও চলে আসে। ক্ষেত্রবিশেষে স্পেসিফিক কিছু অঙ্ক পর্যন্ত। আগুনের আঁচটা বাড়িয়ে দিলে ইন্সট্যান্ট নুডুলস ২ মিনিটেও সম্ভবত হবে। গল্প শুনে মনে হয় অন্যান্য ক্ষেত্রেও একই কথা কমবেশী সত্য।

মনমাঝি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সবচে' জটিল মিথ্যা হচ্ছে সেটা যেখানে সত্য মেশানো থাকে। গল্পের ঝুলিতে একটা সত্যর সাথে দশটা মিথ্যা মেশানো হয়। তাই আমরা বিভ্রান্ত হই, আর সরলমনারা সবই বিশ্বাস করে বসে থাকেন। এই ঝুলিওয়ালাদের মুখ বন্ধ করার কায়দা এখন শিখে গেছি, সেটি বললাম না, নিজে নিজেই শিখে নিন।

আঁচ বাড়িয়ে দিলে জল দ্রুত শুকিয়ে যাবে, নুড্‌লস্‌ কাঁচা বা শক্ত রয়ে যাবে। এভাবে সময় কমালে অন্য অনেক কিছুতে খামতিটা মেনে নিতে হবে। নুড্‌লস্‌ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কথাটা সত্যি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

প্রথম গল্পটা একটা বিবর্তনের ধারা বর্ননা কররো। অম্লমধুর।
দ্বিতীয় গল্পটা জীবনের সস্তা হয়ে যাওয়ার কাহিনী শোনালো। তিক্ত।

লেখন ভঙ্গী। চমৎকার।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অম্লমধুর আর তিক্ত - এই দুই স্বাদ দিলাম! দুঃখিত মিষ্টি কিছু দিতে পারলাম না। আমার কাছে মনে হয়েছে দুটোতেই জীবন ক্রমাগত সস্তা হয়ে গেছে।

ধন্যবাদ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

তবে দু'টি গল্পই দুর্দান্ত হয়েছে ! নীড় সন্ধানীর মন্তব্যটা খুবই লাগসই।

মনমাঝি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। এইচএসসি পরীক্ষা চলিতেছে, সুতরাং অন্যের লেখা কপি করা থেকে বিরত থাকুন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

দ্বিতীয় গল্পটি বেশি ভাল লেগেছে। ইনস্ট্যান্ট সুখ তো এখন সবকিছুতেই চাই আমরা, বিজ্ঞাপনের প্রোডাক্ট ট্যাগ লাইনগুলির বিশ্লেষণ করলে আমাদের নাগরিক বাসনার হদিশ পাওয়া যায় খুব সহজেই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিজ্ঞাপন নির্মাতারা আমাদের জীবনকে ঘেঁটে দেখেই পে-অফ লাইনগুলো অথবা ভাষাগুলো ঠিক করেন। সম্ভাব্য ক্রেতার মনকে যদি ছোঁয়া না যায় তাহলে তাকে নিষ্ঠাবান ক্রেতা বানানো যাবে কী করে?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।