আশির দশকে লী কুয়ান ইউ’র নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর যখন ধাঁই ধাঁই করে আগাচ্ছে, বিদেশে কাজ করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশীদের তালিকায় তখন সিঙ্গাপুর দেশটাও যোগ হলো। সেই সময়ে সিঙ্গাপুরগামী বাংলাদেশীদের তালিকায় আমাদের কয়েকজন প্রতিবেশি ছিলেন। বয়সে আমাদের বড় মামা’র কাছাকাছি এবং তার বন্ধু হওয়ায় আমরা ভাই-বোনেরা তাদেরকেও ‘মামা’ বলেই সম্বোধন করতাম। তাদের একজন মাহ্বুব মামা, আরেকজন নূর ইসলাম মামা। এই দুই মামা সিঙ্গাপুর যাবার পর বড় মামাকে তাদের সিঙ্গাপুর জীবনের গল্প ক্যাসেটে রেকর্ড করে পাঠান, মারলায়নের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে পাঠান, আকাশ ছোঁয়া ভবনের ছবি তুলে পাঠান। আমরা মুগ্ধ বিষ্ময়ে টেপ রেকর্ডারে তাদের মুখে সিঙ্গাপুরের জীবনের গল্প শুনি, ছবিতে সিমেন্টের বানানো সাদা রঙের সিংহের মুখ থেকে গলগল করে পানি পড়া আর সারঙপরা সুন্দরী সিঙ্গাপুরী বালাদের দেখি। জানতে পারি ঐ অতটুকু দেশে নাকি চারটা ভাষা প্রচলিত যার মধ্যে একটা কঠিন চাইনিজ (ক্যান্টোনিজ) আরেকটা দক্ষিণ ভারতের তামিল। ভারতের একটা ভাষা দূরের অন্য আরেকটা দেশে প্রচলিত শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। অমনই এক সময়ে সময়ে বাংলাদেশের চিত্রনির্মাতা আজিজুর রহমান বুলি ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’ নামে এক সিনেমা বানালেন। সিঙ্গাপুরের লোকেশনে ববিতা, মাহ্মুদ কলি, জসীমদের অভিনয় দেখতে লোকে সিনেমা হলে হামলে পড়ে।
সিঙ্গাপুরের চমকটা দেখতে দেখতে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে শেষ হয়ে গেল। একটা কারণ হচ্ছে সিঙ্গাপুরগামী বেশিরভাগ জনকে 3D’র কাজ করতে হতো। এই 3D’র মানে হচ্ছে Dirty, Dangerous, Disgusting। তাছাড়া সিঙ্গাপুরের জীবনযাত্রার ব্যয় এতো বেশি যে আয়ের বড় অংশ খরচ হয়ে যেতো। লী কুয়ান ইউ এভাবে ‘ডালের বরই ডালে শুকানো’র যে ব্যবস্থা করেছিলেন তাতে মাহ্বুব মামা বা নূর ইসলাম মামা মোটামুটি খালি হাতেই ফিরে এসেছিলেন। নতুন চক্চকে জামা-কাপড়, ঘরগেরস্থালীর কিছু যন্ত্রপাতি, টেলিভিশন-ক্যাসেট প্লেয়ারের মতো জিনিস ছাড়া নগদ বিশেষ কিছু আনতে পারেননি। সেই টুকটাক জিনিসেও আবার আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবদের কেউ কেউ ভাগ বসালেন। আমাদের বড় মামা ভাগে পেলেন কয়েকটা গানের ক্যাসেট।
সেই গানের ক্যাসেটগুলোর মধ্যে চারটা মালয়ান ভাষার গানের আর একটা তামিল গানের। মালয়ান গানগুলোর সবই এন এন হিক্মাহ্ নামের এক শিল্পীর গাওয়া। হিক্মাহ্’র গাওয়া গানগুলোর বেশির ভাগ মূলত জনপ্রিয় হিন্দী গানের মালয়ান সংস্করণ। আমাদের বড় মামা সেই গানগুলো থেকে বেছে একটা ৬০ মিনিটের সংকলন বানালেন। বাকি তিনটা ক্যাসেটে আগের মালয়ান গান মুছে চিত্রা সিং, হৈমন্তী শুক্লা আর আশা ভোঁসলের গান রেকর্ড করা হল। তখন সাধারণ মানের একটা ব্ল্যাঙ্ক ক্যাসেটের দাম ৩৫ টাকা (তখন ১ মার্কিন ডলার = ২৭ টাকা), তাই ফাও পাওয়া ক্যাসেটগুলোতে অচেনা মালয়ান গান রাখার চেয়ে নিজেদের পছন্দের গান রেকর্ড করাটাকেই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হয়েছিল। হিক্মাহ্’র গানের সংকলনটাতে কী করে যেন একটা মৌলিক মালয়ান গানের শেষাংশ রয়ে গিয়েছিল। রেকর্ডের সময় খেয়াল না করায় হয়তো অমনটা হয়েছে। ঐ ক্যাসেটটা শুনতে গেলে হঠাৎ করে সেটা চলে আসতো। মালয়ান গানের ত্রিশ সেকেন্ডের ঐ অংশটার জন্য খুব দুঃখ হতো। আহা! অমন সুন্দর একটা গানের পুরোটা আর শুনতে পাব না! গানের কথা মনে থাকার প্রশ্নই ওঠেনা, তবে সুরের রেশটা এখনো মাথায় রয়ে গেছে। হয়তো একদিন এমন ব্যবস্থা হবে যেদিন আমার এই কাংস্যকণ্ঠে সুরের রেশটা গাইলে গুগল জ্যাঠা বা তার মতো কারো মাধ্যমে ঐ গানটার পুরোটাই ফিরে পাওয়া যাবে।
আশির দশকের গোড়ার দিকে হঠাৎ করে বাংলাদেশী এক গায়ক জাম্বিয়াতে তাদের ভাষায় গান গেয়ে ওখানে বেশ হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। তার নাম মোহাম্মদ সারওয়ার সোবহান। তিনি ওখানেই থাকতেন। তার একটা ব্রেক ডান্সের দল আর একটা গানের দল ছিল। কেনেথ কাউন্ডা’র প্রশস্তিমূলক একটা অ্যালবাম ছাড়াও তার রোমান্টিক গানের একটা অ্যালবাম ছিল যার নাম সম্ভবত ‘জুডি নাপাপাতা ইসা ইনে’ (জুডি, দোহাই লাগে কাছে এসো)। বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় তার উপরে খবর বা ফিচার পড়ার আগেই রেডিও বাংলাদেশের (এখনকার বাংলাদেশ বেতার) ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক’-এ তার ‘হেই, জুডি!’ গানটা শুনে ফেলেছি। সেই গানটা বা তার অ্যালবাম বাংলাদেশের কোন বাজারে পাওয়া গেছে বলে শুনিনি। অমন খবর জানা থাকলে অন্তত ‘হেই, জুডি!’ গানটা সংগ্রহে রাখতাম। একটু লায়েক হবার পর ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক’-এ শুক্রবারে সাযিয়া আর তাইয়ানের উপস্থাপনায় ‘ইওর চয়েস’ আর সোমবারে শায়লার উপস্থাপনায় ‘ইট’স আ ডেট’ অনুষ্ঠানে অনেকবার গানটা রিকোয়েস্ট করেছি। কিন্তু প্রতিবারই তারা ‘ইওর চয়েস - আওয়ার চয়েস’ জাতীয় বোকা বানানো কথা বলে ঐ গানটা না শুনিয়ে অন্য গান শোনাতো। গুগল জ্যাঠাকে দিয়ে অনেকভাবে চেষ্টা করেও গানটা উদ্ধার করতে পারিনি। আশা আছে কোন একদিন ঐ গানটা বা গোটা অ্যালবামটা জ্যাঠার কাছ থেকে হোক বা তার কোন ভাস্তের কাছ থেকে হোক ফিরে পাবো।
১৯৮৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়া’র সোলে যখন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় তখন তার উদ্বোধনী আর সমাপণী অনুষ্ঠানে খুব মেলোডিয়াস একটা কোরীয় লোকগীতি শুনেছিলাম। সেটার সুরের রেশও মাথায় রয়ে গেছে। অন্তর্জালে কোরিয়ার জনপ্রিয় লোকগীতির ভাণ্ডারের কোথাও হয়তো গানটা এখনই লুকিয়ে আছে, কিন্তু আমার খোঁজার উপায় নেই। জীবনের কোন পর্যায়ে অফুরান সময় আর সুযোগ নিয়ে অবসর পেলে তখন অন্তর্জাল ঘেঁটে ঐ গানটা ফিরে পাবার আশা রাখি।
আবার সিঙ্গাপুরী মামাদের কথায় ফিরে যাই। তাদের কাছ থেকে আমাদের বড় মামা’র পাওয়া তামিল গানের ক্যাসেটটি কেন যেন অবিকৃত অবস্থায় রেখে দেয়া হয়েছিল। আমরা মাঝে মাঝে শুনতাম - চমৎকার সুরের গান। দক্ষিণ ভারতীয় সুরের জয়জয়কার তখনও শুরু হয়নি, এ আর রহমান তখন নিতান্তই স্কুলের বালক। আমার মাঝে তখন একটা বেকুবী খুব কাজ করতো, সেটা হচ্ছে নিজের কাছে যা ভালো লাগতো সেটা পরিচিত-অপরিচিত সবার সাথে সেটা শেয়ার করতে চাইতাম। আমি আমার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদেরকে জোর করে তামিল গানগুলো শোনাতে চাইতাম। সেগুলো শুনে ভদ্রলোকেরা বলতেন, “বাহ্! বেশ তো”, স্পষ্টভাষীরা বলতেন, “এই ইড়িকিড়িমিড়ি বন্ধ কর তো”। সবচে’ সৎ মন্তব্যটা করেছিল এক সহপাঠী। সে বলেছিলো, “আমার কানের পর্দা ফুটা হইয়া গেসে”। তাদের কথায় আমার মনে আঘাত লাগতো, তারপরও অন্যদের সাথে একই চেষ্টা করতাম। খুব অল্পদিন হয় নিজের ভালোলাগার জিনিস অন্যদের সাথে শেয়ার করার বদভ্যাস ত্যাগ করেছি। আমার ঘনিষ্টজনেরা অবশ্য বলবেন এই বয়সেও আমার অমন বেকুবী বিন্দুমাত্র কমেনি। আজকে আমি আবারও সেই বদভ্যাসের কিঞ্চিৎ চর্চা করবো। তবে তার আগে বাকি গল্পটুকু বলে নেই।
সেই তামিল গানের ক্যাসেটে প্রথম দুইটা গানের একটা ছিল ডুয়েট - বেশ তাল-ছন্দের গান। দ্বিতীয় গানটা ছিল করুণ সুরের। কী করে যেন এই করুণ সুরের গানটা আমার মনে ধরে গেল। আজ থেকে একুশ বছর আগে আমি আমার নিজের বাড়ি ছাড়ার পর পুরনো অডিও ক্যাসেটগুলো কী করে যেন হারিয়ে যেতে বা নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। এক সময় স্বাভাবিক নিয়মে তামিল গানের ক্যাসেটটাও হারিয়ে যায়, যেমন আমার জীবন থেকেও গান হারিয়ে যায়। ছাত্রাবাসে থাকার সময়ে বা পরবর্তীতে একা জীবনে গান বাজানোর কোন যন্ত্র কেনার মতো সঙ্গতি হয়নি। তাই এখানে সেখানে গান শুনে চলতাম। একটা গান শোনার জন্য তখন যে খাটুনীটা দিতে হতো তাতে গান শোনার আগ্রহটা আস্তে আস্তে মরতে থাকে। এখন গান শোনার কিছু সময় হয়তো আছে, শোনার উপায়ও অনেক অনায়াসলব্ধ হয়েছে তবু উদ্যোগ করে মিউজিক প্লেয়ারে গান শোনা আর হয় না। তবু কখনো সময়-সুযোগ হলে গুগল জ্যাঠার শরণাপন্ন হয়ে হারিয়ে যাওয়া গানগুলিকে ফিরে পাবার চেষ্টা করি। এভাবে ঐ করুণ তামিল গানটা খুঁজেছি সম্ভাব্য লিরিক দিয়ে। আমি তামিল ভাষার একটা বর্ণও জানি না, তাই আমার দেয়া লিরিক স্বাভাবিক ভাবেই ভুল হতো। একদিন মনে হল ঐ করুণ গানের আগের ডুয়েটটাতে একটা শব্দ স্পষ্ট বুঝেছিলাম - ‘সুন্দরী রাত’। ভাবলাম তাহলে ডুয়েটটাই খোঁজা যাক। এভাবে একদিন সত্যি সত্যি ডুয়েটটা আর তার সাথে ঐ করুণ গান দুইটাই পেয়ে গেলাম। বেকুব পাণ্ডব আরো একবার কাউকে জোর করে শোনানোর চেষ্টায় করুণ গানটার লিঙ্ক এখানে গুঁজে দিল।
গানের শিরোনামঃ ভাইগাই কারাই কাত্রে নিল্লু
চলচিত্রঃ উইরুল্লাভারাই ঊষা (১৯৮৩)
গীতিকারঃ টি. রাজেন্দর
সুরকারঃ টি. রাজেন্দর
কণ্ঠঃ কে. জে. ইয়েসুদাস
গানটার তামিল লিরিকও যোগাড় করেছি। তবে গুগল জ্যাঠা তার যে অনুবাদ করে দেয় সেটা পাঠযোগ্য বা অর্থবোধক নয়। বসুধা থাকলে এতো সমস্যা হতো না। না গানটা যোগাড় করায়, না তার অর্থ বোঝায়। কিন্তু আজ তো আর সেটা হবার কোন উপায় নেই। যাকগে, আপাতত যা পেয়েছি তা-ই যথেষ্ট।
আমি গানের একনিষ্ঠ শ্রোতা নই। যারা টিফিনের পয়সা জমিয়ে, পুরনো বই-খাতা বিক্রি করে, রিক্শা ভাড়া-বাসভাড়া বাঁচিয়ে গানের অ্যালবাম বানান; বাসার অন্য সবার বা প্রতিবেশিদের হুমকির মুখেও গান বাজিয়ে যান; পছন্দের শিল্পীর গান হচ্ছে শুনলে সব কাজ ফেলে ছুট লাগান - তারাই গানের একনিষ্ঠ শ্রোতা। গান শুনতে এরা তীব্র শীত বা প্রচণ্ড গরম বা অসম্ভব ভীড়বাট্টা সহ্য করতে পারেন - কোন কিছুই তাদের স্পর্শ করে না। এমন মানুষ আমাদের মধ্যেই আছেন। জীবনের কোন পর্যায়ে যদি তাদের পক্ষে এ’ভাবে গানে ডুবে থাকা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের জীবনে আনন্দ বলে আর কিছু থাকে না।
জোর করে গান শোনানোর এই পোস্টটা অমন মানুষের জন্য যিনি গানের একনিষ্ঠ শ্রোতা। গান শোনার বাইরে জীবনের প্রয়োজনে বইয়ের পাশাপাশি কখনো তিনি হয়তো হাতে গিটার তুলে নেন নিজেই সুর তোলার জন্য। কখনো গিটারকে পাশে রেখে মনের কথাকে অক্ষরে ফুটিয়ে তুলতে কম্পিউটারের কী-বোর্ড হাতে তুলে নেন। আবার কখনো সেই কী-বোর্ড ছুঁড়ে ফেলে চারপাশের আপাতসাধারণ অথচ চমৎকার মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে ক্যামেরা হাতে তুলে নেন। ওসব যা কিছুই তিনি করুন না কেন কামনা করি আমৃত্যু গান যেন তার জীবনের অচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকে। কখনো ক্ষণিকের জন্য তা হারিয়ে গেলেও অচিরেই সুরধারা ফিরে পান। আয়ুষ্মান ভবেহ্।
মন্তব্য
একটা কাজ করো পাণ্ডব, লিরিকটা আমাকে পাঠিয়ে দাও। শ্রীলংকায় আমার টিমের দুজন তামিল সদস্য আছে, ওদের দিয়ে অনুবাদটা করিয়ে নিতে পারা যেতে পারে। অথবা আরেকটা কাজ করা যেতে পারে, লিঙ্কটা ওদের পাঠিয়ে দিলেও হয়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ্যাঁ, মেইল পাঠিয়েছি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বলতে চেয়েছিলাম তামিল সহকর্মীর কথা। প্রয়োজন হল না দেখি
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তোমাকেও মেইল করে দেবো। দুইজনের কাছ থেকে অনুবাদ পেলে চেক করা সহজ হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে আপনিও দেখি কথা না বুঝেই গান শুনতে ভালোবাসেন আমার মাথায় কিছু একটা সমস্যা আছে যেকারনে সুর আর কথা দুইটাতে একসাথে মনোযোগ দিতে পারিনা। তাই সুরের জন্যই সবটুকু ভালোলাগা।
তবে আপনি যেরকম বললেন সুরের অংশটুকু দিয়ে গান খোজা যায় কিনা, সেরকম এপস আছে স্মার্ট ফোনের জন্য।
গানের কথা যতোই ভালো হোক সুর ঠিক না থাকলে তা আর গান হয় না। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ শামসুর রাহমানের 'স্বাধীনতা তুমি'। কবিতা হিসেবে এটি ফার্স্ট ক্লাসের উপরে কিছু থাকলে তাই, গান হিসেবে থার্ড ক্লাসেরও নিচে। কারণ, এর সুর জঘন্য - যদিও সাবিনা ইয়াসমিনকে দিয়ে গাওয়ানো হয়েছিল।
ছোটবেলাতে যে সব রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে শুনে ভালোবেসেছি সেগুলোর বানী'র অর্থ বুঝতে শিখে এই সেদিন। আর কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের অর্থ বুঝতে মনে হয় বাকী জীবন চলে যাবে।
আমার স্মার্টফোন নেই। ডেস্কটপের জন্য অমন কোন কিছুর খোঁজ পেলে জানাবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভাল লাগল ব্লগর ব্লগর পাণ্ডবদা।
আমি গান শোনার সমত কথা বেশিরভাগ সময়ই বুঝি না। অনেক সময় বাংলা ভাষার গান হলেও দেখা যায় কথাটা আসলে ঠিক ওভাবে ফলো করছি না। এত চিন্তা ভাবনা করে গান শুনতে ভাল লাগে না আসলে
সিঙ্গাপুরের অবস্থা এখন মনে হয় আরও খারাপ নাকি? আমার পরিচিত কয়েকজনকে দেখেছি, 'নাস-এ' মাস্টার্স পিএইচডি করতে গিয়ে খুব তাড়াতাড়ি শিফট করার চিন্তা শুরু করে দেয়, শিফট করেও ফেলে। সিঙ্গাপুরের লাইফ নাকি ভয়াবহ বোরিং।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বুড়ো আঙুলের মাথার সমান একটা দেশে লাইফ বোরিং হওয়া, চাকুরী বা ব্যবসার সুযোগ কম হওয়া, কমিউনিটি ছোট হওয়া এগুলো স্বাভাবিক।
যে দেশে অভিবাসী চীনারা অর্থনীতির চালিকাশক্তি সেদেশে অন্য অভিবাসীরা কোন সুবিধা করতে পারবে না সেটাও স্বাভাবিক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লাভ ইন সিঙ্গাপুর মনে হয় ১৯৮৩ সালের ছবি। ছায়াছন্দতে এই গানটা দেখাইতো তখন রেগুলার:
অজ্ঞাতবাস
হ, ১৯৮৩ সালেরই হবার কথা। কী গানের ইউটিউব লিঙ্ক দিলেন সেটা বাংলাদেশে বসে বোঝা সম্ভব না। আপাতত ঐ সিনেমার যে গানগুলির কথা মনে পড়ছেঃ
- লাভ ইন সিঙ্গাপোর, আয়াম লায়লা (মিস্) সিঙ্গাপোরে থাকি (রুনা লায়লার গাওয়া)
- ওগো সিঙ্গাপুরী মেম্, তুমি করবা নাকি প্রেম (সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া)
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডব দা, তামিল ভাষা বুঝিনা তবে ইংরেজি ডাবিং এ মুভি দেখা হয় প্রায়শই। আর গান বুঝিনা তবে সুর ছুঁয়ে যায় অবিরত।
ভালো থাকবেন। ভালো লাগলো লেখাটা।
অমি_বন্যা
ঢাকায় তামিল ভাষার সান টিভি দেখা যায়। মাঝে মাঝে ঐ চ্যানেলটা দেখি। ভাষা এক বর্ণও বুঝি না। এমনকি ওরা তামিলের মাঝে যে দু'চারটা ইংরেজী শব্দ বলে সেগুলো বুঝতেও সময় লাগে। তবে সেখানে কিছু ইন্টারেস্টিং বিষয় আছে, কিছু বিস্ময়কর বিষয় আছে। কখনো সম্ভব হলে সান টিভি আর দক্ষিণী মুভি নিয়ে পোস্ট লেখার ইচ্ছে আছে।
মনে করে দেখুন, কিছু ফ্রেঞ্চ, স্পেনিশ, জার্মান, আরবী গান কিন্তু সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে। সেগুলো কিন্তু আমরা না বুঝেই শুনেছি, না বুঝেই পছন্দ করেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গানে ডুবে থাকার অভ্যেস আছে আমার। এই পোস্ট সেজন্য খানিকটা আমার জন্যে
কোরিয়ার অলিম্পিকের পুরো অনুষ্ঠানটাই কিন্তু ইউটিউবে আছে। একবার দেখলেই গানটা হয়তো পেয়ে যাবেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তুমি জানো, আমি থাকি পিপলস রিপাবলিক অভ বাংলাদেশে আর কালেভদ্রে পেটের দায়ে যাই পিপলস রিপাবলিক অভ চায়নায়। এই দুই পিপলস রিপাবলিকে ইউটিউব নিষিদ্ধ। বড় হয়া জার্মানী অন্য কোন দেশে (যেগুলো পিপলস রিপাবলিক না) গেলে তখন দেখে নেবো'খন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ডাউনলোড দিয়েছি।
শুনে কেমন লাগলো বললেন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আসমা খান
ধন্যবাদ। আপনার শরীর ভালো আছে তো?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার হাতে দেখি বীণা,
বাজে কী নমুনা।
কারবা ঝিয়ারী তুমি কার বা দুলালী
তুমি কে গো।।
নারী/পুরুষ পাল্টা-পাল্টী বা পালা গানের আসরে যাইতাম, মাঘ মাসের শীতে লুঙ্গি মাথায় পাগড়ী বাইন্ধা গোমতি নদী সাতরে পার হয়ে শোলাকান্দি গ্রামে। সে সব গান বোধ হয় কোন ভাবেই খুঁজে পাও সম্ভব না। তাই খুঁজিও না। কামনা করি আপনার হারানো সুর যেন আপনি খুঁজে পান।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
বস্, ঐসব সুর আপনার মাথায় আছে না! সেগুলো হারমোনিয়াম বাজিয়ে আস্তে আস্তে তুলে রাখুন। সুকন্যাকে শিখিয়ে রাখুন। দেখবেন, সুরগুলো আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহ, পুরনো কথা মনে পড়ে গেলো।
আগে শোনা প্রায় সব গানই আজকাল নতুন করে আবিস্কার করি। নিজের মত করে একরকম করে যে গান বুঝেছি শুনেছি, অনেক বছর পরে দেখি সেটা আসলে অন্য মানে ছিলো - তাই সেটা নতুন করে ভালো লাগে আবার। প্রেমের গান ভেবে যে গান শুনে এসেছি, শুনিয়েছি অন্যদের, সেটা দেখি আসলে যুদ্ধের গান। যেটা যুদ্ধের ভেবেছি, সেটা আসলে পরিবেশ নিয়ে। এরকম কত কিছু!
ওয়ার্ল্ড মিউজিক এর ইয়োর চয়েসে নিজের গান শোনানোর একটা তরিকা আমি আর চতুর্থ পাণ্ডব মিলে বের করে ফেলেছিলাম। আমরা প্রতি সপ্তাহে শ'খানেক করে চিঠি পাঠাতাম। না শুনিয়ে যাবে কোথায়! আমাদের পাঠানো অনুরোধ না শোনানোটা স্ট্যাটিসটিক্যালিই তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না! প্রথম প্রথম হাতে লেখা হতো শ'য়ে শ'য়ে চিঠি। তারপর বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেণ্টের একটা "অত্যাধুনিক" প্রোগ্রামেবল টাইপরাইটার কব্জায় আসার পর হাতে লেখা নিয়ে আর ভাবতে হয় নি কখনো। গানের একটা তালিকা আর অনুরোধের তারিখটা জানিয়ে দিলেই সেটা সাঁটসাঁট করে শ'খানেক চিঠি নামিয়ে ফেলতো কয়েক মিনিটে। এই কাহিনী অবশ্য চতুর্থ পাণ্ডব জানে না - সে প্রায়ই ভাবতো কেন তার অনুরোধের গান আর পাত্তা পাচ্ছিলো না!
তামিল গান শুনে দেখি কেমন লাগে।
দেখ কাণ্ড! এই প্রোগ্রামেবল টাইপরাইটারের কথা মোটে আজকে জানতে পারলাম!! আপনার তুলনায় অশ্বিনীকুমারের একটা ভৌগলিক সুবিধা ছিলো। তিনি চিঠির তাড়া হাতে করে বাংলাদেশ বেতারের আগারগাঁওয়ের অফিসে গিয়ে সশরীরে জমা দিয়ে আসতেন। তাছাড়া দুরালাপনিক যোগাযোগের একটা ব্যাপারও তার ছিলো। সে'ব্যাপারটা না হয় চেপে যাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন