২০০৯: ৪,২১৯ জন
২০১০: ৩,৯৮৮ জন
২০১১: ৩,৯৭০ জন
২০১২: ৪,৪১২ জন
২০১৩: ৪,৪০৬ জন
এই খুনের হিসেব দেখে মনে একটা প্রশ্নের উদয় হয়, বছরে গড়ে ৪,২০০ টি করে খুনের ঘটনার কতগুলিতে মামলা করা হয়? ধরা যাক, মোট খুনের ৫০% ঘটনায় মামলা হয়। এই মামলাগুলোর যদি ফয়সালা হতো তাতে বছরে ২,১০০ টি খুনের ঘটনায় খুনীর সাজা হবার কথা। এতে বছরের প্রতিদিন অন্তত একজন করে অপরাধী ফাঁসিতে ঝোলার কথা। আর বিচারে কেউ ফাঁসিতে ঝুললে সেই খবর পত্রিকাতে আসতো। যেহেতু অমন ফাঁসির খবর প্রতিদিন আমরা পড়তে পাই না, তাতে বোধ হয় যে, বাংলাদেশে অধিকাংশ খুনের মামলার কোন সুরাহা হয় না।
একটি মামলা মাননীয় বিচারকের বিবেচনার এখতিয়ারে আসার আগে তদন্ত করা, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া, সাক্ষ্য নেয়া, উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা, সাক্ষ্য ও ভাষ্য যাচাই ইত্যাদি অনেকগুলো ধাপ থাকে। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে দিতে মোট মামলার সংখ্যা সমান্তর প্রগমনের পদগুলোর মতো মানে কেবল বাড়তেই থাকে। ফলে সীমিত সময়-লোকবল-বাজেট ইত্যাদি নিয়ে মাননীয় বিচারকগণের পক্ষে রাতারাতি একটি মামলার নিষ্পত্তি করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। পাওনা টাকা আদায় করার জন্য মামলা করেছিলাম। নিম্ন আদালতের রায় পেতে ৭ বছর সময় লেগেছিল। তারপর আরো ৬ বছর কেটে গেছে — পাওনা টাকা আজো পাইনি। তবু আমি বলতে পারি, আমি বিচার পেয়েছি। সময় লাগলেও আমার আদালতে যাবার ও ন্যায়বিচার চাইবার পথ রুদ্ধ ছিলনা। কিন্তু আমার এই অধিকারটা যদি কেড়ে নেয়া হতো তাহলে অবস্থাটা কেমন হতো?
ধরা যাক অসাবধানে আপনার হাত থেকে ধারালো বা তীক্ষ্ম বা ভারি কিছু ছুটে গিয়ে অথবা আপনার হাতের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুটে গিয়ে কেউ নিহত হলেন। অথবা আপনি আত্মরক্ষার্থে কাউকে খুন করতে বাধ্য হলেন। যদি ঐ ঘটনার একশ’জন প্রত্যক্ষদর্শীও এই সাক্ষ্য দেন যে — আপনি নির্দোষ, তবু আপনার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা করা যাবে। এই ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আপনার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড তৎসহ অর্থদণ্ড হতে পারে। বিচারে আপনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন নাকি দোষী সাব্যস্ত হবেন সেটা তদন্তে কী পাওয়া গেলো, সাক্ষীরা কী বললেন, বাদী-বিবাদী কী বললেন, সর্বোপরি মাননীয় বিচারক সব কিছু বিবেচনার পর যা যথাযথ ও আইনানুগ বলে মনে করবেন তার ওপর নির্ভর করে। এখানে লক্ষণীয় বিষয়টা হচ্ছে, আপনি যত নামী-দামী বা ক্ষমতাবান মানুষ হন না কেন নিহতের আত্মীয়স্বজনের অধিকার আছে আপনার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা করার।
তবে নিহতের আত্মীয়স্বজনের হত্যা মামলা করার অধিকারের এই আইনটা সব ধরনের ঘটনার জন্য প্রযোজ্য নয়। অন্তত এক ধরনের ঘটনার কথা আমরা জানি যে ক্ষেত্রে ৩০২ ধারায় মামলা করার কোন সুযোগ নেই। সেখানে মামলা করতে হবে ৩০৪ (খ) ধারায়। তা এই ৩০৪ (খ) ধারাটি কী?
ধারা ৩০৪ (খ): বেপরোয়া যান বা অশ্বচালনার দ্বারা মৃত্যু ঘটানযে ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা তাচ্ছিল্যের সহিত জনপথে যান বা অশ্ব চালাইয়া দণ্ডার্হ নরহত্যা নহে এমন মৃত্যু ঘটায়, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদণ্ডে যাহার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
অর্থাৎ,গাড়ির চালক বেপরোয়াভাবে বা তাচ্ছিল্যের সাথে গাড়ি চালানোতে ৫ জন বা ৫০ জন মানুষ নিহত হলেও যেহেতু সেটা নরহত্যা বলে বিবেচিত হবে না, তাই তার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা প্রযোজ্য নয়। এ’জন্য ২০১১ সালের ১১ই জুলাই মীরের সরাইয়ের আবুতোরাবে খাদে ট্রাক পড়ে ৪৮টি শিশুর নির্মম মৃত্যু ঘটলেও ট্রাকের চালকের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা করা যায় না।
সন্দেহভাজন অপরাধীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যে কোন ধারায় মামলা করার অধিকার বিচারপ্রার্থীর থাকে। মামলা ঐ ধারায় গ্রহনযোগ্য হবে কিনা সেটা নির্ধারণের এখতিয়ার আদালতের। কিন্তু আদালতের বিবেচনার কোন সুযোগ না রেখেই যদি কোন প্রাণহানির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হয় যে সেটি নরহত্যা বলে বিবেচিত হবে না, তাহলে সেখানে ন্যায়বিচারের সুযোগ কি সীমিত হয়ে যায় না?
এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর একজন আইন বিশেষজ্ঞ বা আইনের শিক্ষার্থী দিতে পারবেন। তবে সাধারণ বিবেচনায় প্রতিভাত হয়, সেখানে ন্যায়বিচার পাবার সুযোগ সীমিত হয়ে গেল। কারণ,কেউ যদি প্রতিহিংসাবশত কাউকে গাড়িচাপা দিয়ে কাউকে খুন করে থাকে,তাহলেও বোধকরি তার বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ আনা যাচ্ছে না। আরো একটি প্রশ্ন মাথায় জাগে, জনপথে যান বা অশ্বচালনা ব্যতীত অন্য কোথাও কারো বেপরোয়া বা তাচ্ছিল্যের জন্য কোন প্রাণহানি ঘটলে সেখানেও কি ধারা ৩০৪ (খ) প্রযোজ্য হবে? যদি না হয়, তাহলে কী কারণে ‘জনপথে যান বা অশ্বচালনা’ এই ইনডেমনিটি পায়?
৩০৪ (খ) ধারার যথার্থতা নিয়ে আইনপ্রণেতারা ভাববেন কিনা জানিনা। বুকে পাথর নিয়ে আমরা বরং ভাবি ৩০৪ (খ) ধারাতেও অপরাধীর বিচার এবং শাস্তি হয় কিনা। ২০১১ সালের ১৩ই অগাস্টের পর তিনটা বছর কেটে গেল। ঘিওরের জোকা বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাসের ধাক্কায় তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর, ওয়াসীম, জামাল আর মোস্তাফিজুর রহমানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর আমাদের ভাগ্যনিয়ন্তাদের অনেকেই অনেক কিছু বলেছিলেন। আমরা শুধু দেখেছি এখনো বিচার সম্পন্ন হয়নি। এখনো আমরা বিচার পাইনি।
মন্তব্য
আপনার মতো সদা হাস্যময়, প্রাণোচ্ছল একজন মানুষকে নিয়ে ভেবে লিখতে গিয়ে কী করে যেন হতাশার কথাই কেবল বলা হলো। মিশুক আঙ্কেল, আমার অক্ষমতাকে ক্ষমা করবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এ আইনে তো তাহলে ড্রাইভারদের কে মানুষ হত্যা করার (একজন নয় বরং অসংখ্য) মোটমুটি একটা বৈধতা দিয়ে দিলো। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যায় প্রতিদিন তা বোধহয় পৃথিবীর আর অন্য কোন প্রান্ত ঘটে না।
মিশুক মনির, তারেক মাসুদ ১৩ই আগষ্টে নিহত প্রত্যেকের প্রতি শ্রদ্ধা
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
তথ্যগুলোর জন্য ধন্যবাদ।
ধারা ধারা করে লাভ কি ভাই? আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে পরে না ধারা। যেখানে মন্ত্রী তারেক মাসুদের স্ত্রীর সামনে বলে যে, "দোষ আপনার গাড়ির ড্রাইভারের ছিলো"(ঘটনা না জাইনাই,তদন্তের আগেই ) সেখানে আপনি ন্যায়বিচার ত দূর,বিচারই বা ক্যামনে আশা করেন? আগে বাস ড্রাইভারদের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরাইলে পরে না বাস ড্রাইভারদের শাস্তি দেয়া যেতে পারে,তাই না?
------------------------------
আশফাক(অধম)
আইনের ধারা নিয়ে কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিচার চাইবার অধিকার অবারিত কিনা সেটা জানার জন্য। বিচার চাইবার অধিকার অবারিত না হলে আইনের প্রয়োগ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে না।
১৩ই অগাস্টের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন কি জমা হয়েছে? এবং সেই তদন্ত প্রতিবেদনে যোগাযোগ মন্ত্রীকে কোট করে কি কোন সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কোন দেশে যে আমাদের বসবাস!
তারেক মাসুদ আর মিশুক মনির এর জন্য শ্রদ্ধা।
--------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আইনের এই ফাঁকগুলো থাকে বলেই তো আইন নামে একটা ব্যবসাও প্রচলিত, যাকে বলা হয় আইন-ব্যবসা বা ওকালতি-ব্যাবসা। আইন-দর্শন কী বলে জানি না, তবে আমার ধারণা আইনগুলিকে তৈরিই করা হয় ফাঁক রেখে।
আর ৩০৪ ধারার আইনটা মনে হয় ব্রিটিশ আমলের তৈরি। নইলে অশ্ব চালাইয়া ধরনের বাক্য ব্যবহার করা হতো না। তার মানে, যে আমলে এটা তৈরি সে আমলে অশ্বযানের প্রচলনই ব্যাপক ছিলো। যন্ত্রযান তখনো রাস্তায় নামেনি বা দাপট তৈরি করতে পারেনি। আর অশ্বযান ঘটিত দুর্ঘটনার বিপদ অবশ্যই এখনকার মতো ভয়াবহ ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতো না। তার চাইতেও বড় কথা, সেকালের এই অশ্বযান বা প্রাথমিক যুগের যন্ত্রযানগুলির চালক বা ব্যবহারকারী ছিলেন সেকালের দাপুটে ইংরেজ কর্মচারী বা নেটিভ জমিদার শ্রেণীর লোকেরাই। পাবলিক পরিবহনের অবস্থা কল্পনা করা যেতে পারে। অতএব, যারা আইন তৈরি করে তারা নিজের মৃত্যুদণ্ডাদেশে নিজেই স্বাক্ষর করবে এমনটা ভাবার কারণ আছে কি ? অতএব ফলাফল কী দাঁড়ালো ? ফলাফল আমড়া ! হা হা হা !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সেটাই, আইনে অশ্বচালনা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। স্পট অন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গোটা আইনের কাঠামোটাই দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের বানানো আইনের ওপর। দণ্ডবিধি বা পেনাল কোডের অবস্থাও তাই। এটা ভুল কিছু নয়। তবে আইনগুলোকে কালোপযোগী করে তোলার দায়িত্বটা বিদ্যমান আইনসভার। তাঁরা নিয়মিতই নতুন আইন প্রনয়ণ, পুরাতন আইন সংস্কার করে থাকেন। তারপরও কিছু কিছু আইন অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। এগুলোর ব্যাপারে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর দায়িত্ব নাগরিকদের।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আইনের এই ফাঁক ফোকরগুলো শুধু বাংলাদেশেই না সারা পৃথিবীতে আছে।
২০১১র এফবিআইয়ের এক জরিপে দেখানো হয় যে অ্যামেরিকাতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ জন মানুষ খুন হয়(সড়ক দুর্ঘটনা, নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে বা আত্নহত্যা ছাড়াই)। সেইসব খুনিদের কি সবার বিচার হয়?
জার্মানিতে যখন ছিলাম তখন আমাদের বলা হয়েছিল সন্ধ্যার পর যেন একা একা হোস্টেলের বাইরে না যাই কারণ এখন নাকি ধর্ষণের হার বেড়ে গেছে।
ইংল্যান্ডে প্রতিদিন গড়ে প্রায় একজন করে ছুরিকাঘাতে মারা যাচ্ছে। তবে একটা ব্যাপার এসব দেশে আছে আর তা হল প্রতিটা রাস্তার মোরে মোরে এখানে ক্যামেরা লাগানো তাই কেউ ইচ্ছে করলেই বেপরোয়া গাড়ী চালাতে পারে না।
যাই হোক হয়ত একদিন বাংলাদেশেও আইন ব্যবস্থা জোরদার হবে সেই অপেক্ষায় আছি।
ফাহিমা দিলশাদ
আমেরিকায় কী হয় বা হয় না সেটা দিয়ে তো কোনটা নৈতিক আর কোনটা নৈতিক নয় সেটা নির্ধারিত হবে না তাই না?
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার ধাপ আসলে দুইটা (১) আইন ঠিকঠাক থাকা (২) সেটার ঠিকঠাক প্রয়োগ।
পাণ্ডবদা এখানে অন্তত প্রথমটা যাতে ঠিক হয় সেটা নিয়ে কথা বলেছেন। কারন প্রথমটার ওপর দ্বিতীয়টা নির্ভরশীল।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
প্রথমত আমি কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক তা নির্ধারণের চেষ্টা করিনি।
দ্বিতীয়ত পাণ্ডবদা এখানে কি নিয়ে কথা বলেছেন তা নিয়েও কোন প্রশ্ন করিনি। হয়ত আমার মন্তব্যটা আর একটু উপরে কামরুজ্জামান পলাশের মন্তব্যের নীচে দেয়া উচিৎ ছিল। উনি বলেছেন "কোন দেশে যে আমাদের বসবাস!" আমি শুধু এটাই বলতে চেয়েছি যে সবদেশেই আইনের ফাঁক ফোকর আছে।
পাণ্ডবদার লেখার আমি একজন একনিষ্ঠ ভক্ত। তাই কখনোই কারোই এটা ভাবার কোনই কারণ নাই যে আমি ওনার কোন লেখার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। আশা করি আমি বোঝাতে পেরেছি।
ফাহিমা দিলশাদ
ঠিক আছে
পাণ্ডবদার লেখার একনিষ্ঠ ভক্ত হলেই যে ওনার কোন লেখার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন না এমন ভাবনা কিন্তু আদতে ক্ষতিকর। পছন্দের মানুষ পছন্দের লেখকের সাথেও আমাদের নিশ্চয়ই দ্বিমত হতে পারে। আর দ্বিমত হওয়া মানেই কিন্তু পছন্দের কাতার থেকে ফেলে দেয়া নয়। ভাল থাকবেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ঠিক আছে আমার কোন প্রিয় লেখকের সাথে যদি দ্বিমত হয় তো দ্বিমত পোষণ করব। আপনিও ভালো থাকবেন।
ফাহিমা দিলশাদ
প্রিয় ফাহিমা দিলশাদ, আপনি যদি আমার লেখা পছন্দ করে থাকেন তাহলে কখনো আমার কোন লেখায় কোন অসঙ্গতি, ভ্রান্তি বা প্রমাদ পেলে অথবা কোন লেখা আপনার পছন্দ না হলে সেটা সাথে সাথে নির্দ্বিধায় জানিয়ে দেবেন। এতে আখেরে সকল পক্ষ লাভবান হবেন। ভিন্ন মত পোষণ করাটা পাঠকের মৌলিক অধিকার। ব্লগ তাকে সেই ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে।
আপনার প্রথম উত্তরটি কামরুজ্জামান পলাশের মন্তব্যের নিচে হলে এই সামান্য ভুল বোঝাবুঝিটি হতো না। যাকগে, তাতে ক্ষতি নেই। এখন আপনার অবস্থানটা যেমন পরিষ্কার হলো তেমন ত্রিমাত্রিক কবিও মূল পোস্টের মূল কথাটি প্রাঞ্জল ভাষায় বুঝিয়ে দিতে পারলেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনি আমাকে প্রিয় ফাহিমা দিলশাদ বলে সম্বোধন করেছেন, আমার খুব ভালো লাগছে। আমার স্কুলের একজন টিচার ছিলেন সামাদ স্যার। উনি আমাকে মামনি বলে ডাকতেন। স্কুলের নোটবুকে মাঝে মাঝে নোট লিখতেন এভাবে-"প্রিয় মামনি ফাহিমা দিলশাদ, আজ তোমার হোমওয়ার্কটা খুব বেশী ভালো হয়নি। আগামী কালের হোমওয়ার্কটা আরও বেশী যত্ন নিয়ে কোর, ঠিক আছে।" আপনার প্রিয় ফাহিমা দিলশাদ লেখা দেখে ওনার কথা মনে পড়ে গেল। স্কুল জীবনের অনেক স্মৃতিই মনের পর্দা থেকে মুছে গেছে কিন্তু এই অসাধারণ মানুষটার অসামান্য স্নেহের ছবিগুলো অনেক যত্ন করে তুলে রেখেছি।
জী পাণ্ডবদা আপনার কোন লেখা যদি আমার পছন্দ না হয় তবে অবশ্যই জানাব। ভালো থাকবেন
ফাহিমা দিলশাদ
ঠিক বুঝলাম না, পান্ডবদা! 'দণ্ডার্হ নরহত্যা নহে এমন মৃত্যু ঘটায়'- এই অংশটি কি করে দৃষ্টি এড়িয়ে গেল আপনার?
এমনিতে ভীষন সময়োপযোগী পোস্ট এবং সেজন্য পাঁচতারা!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
facebook
আইনব্যবসার নীতিকথায় বলা হয়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারককে সহায়তা করাই একজন আইনবিদের কাজ। আসলে সত্যিই এটা কি কোথাও হয়?
লেখাটার জন্য এবং তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরকে স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
এই 'একুশে আইন' এর কথা জানতাম না...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
রণদীপম বসু সাথে সম্পুর্ন একমত।
যারা এখনও বৃটিশ নীতি অনুসরন করে বছরে একমাস আদালত বন্ধ রাখেন, তাঁরা অশ্ব নীতিই অনুসরন করবেন সেটাই কি স্বাভাবিক নয়।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
আপাতদৃষ্টিতে দেখা আদালতের দীর্ঘ ছুটি মাননীয় বিচারকদেরকে কতটুকু বিশ্রামের সুযোগ দেয় সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এই সময়ে তাঁদেরকে প্রচুর পেপারওয়ার্ক করতে হয়। আমরা হরহামেশা শুনতে পাই, অমুক মামলার রায় ৮০০ পৃষ্ঠা। এই বিশাল রায় লেখার জন্য যে বিপুল সময়ের প্রয়োজন সেটা বোধগম্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
"ডিজিটাল বাংলাদেশের" যুগে এসেও আমরা 'অশ্বচালনায়" পড়ে আছি?
আরো হতাশার কথা হলো যানযালকদের তো তাহলে ডাবল ও সেভেন লাইসেন্স দিয়ে দেয়া হলো। তাই কি রাস্তাঘাটে এতো "লাইসেন্স টু কিল" এর দৌরাত্ম?
____________________________
"এক টাকার জন্য" কি ওয়ার্ড সার্চ করে খুব কস্ট লাগল। আমাদের চোখের সামনেই বিপদসংকেতের মত এগুলো হচ্ছে। আমরা আমলে নেই না।
বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে অ্যাডমিন ক্যাডারের একজনের কাছে শুনেছিলাম। মফস্বলের আদালতে সকাল নয়টা থেকে উপচে পরা ভিড় - বাদি-বিবাদি-আসামি-উকিল-সাক্ষি-পুলিশ সব দাঁড়িয়ে। ওদিকে ম্যাজিস্ট্রেট ৯ঃ৩০ থেকে তার বসের রুমে বাধ্যতামূলক হাজিরা দিচ্ছে। বস বলছেন গতকাল রাত্রে কি করেছেন - প্রটোকল হচ্ছে জি হুজুর করা - স্তুতি গাওয়া। মাঝে ফোনে তাগিদ এলো - আজকে গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি - দ্রুত যেতে হবে। কিন্তু বসকে বলা যাবে না রাগ করবেন। এভাবে চলে ১১ঃ৩০ পর্যন্ত - এরপর ১২টার সময় বিচারে বসা। দুই তিনটা শুনানি হতে না হতেই ১টায় মধ্যাহ্ন বিরতি। বাসায় ফিরে লাঞ্চ করে আবার বিচারে বসতে বসতে বেলা ৪টা। আবারো দুই তিনটা শুনানির পরেই বাজে বেলা পৌনে পাঁচটা। বিশাল তালিকার মাত্র ২০% অগ্রগতি হয়েছে। এরপর আবার বাকিগুলোর জন্যে পুনরায় তারিখ ফেলা। বাদি-বিবাদি-আসামি-উকিল-সাক্ষি-পুলিশের সারাদিন নষ্ট এবং এভাবেই চলতে থাকে। ওখানে পরিবর্তন না হলে ন্যায় বিচারের আশা দুরাশা মাত্র।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
এই মাত্র কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুলের মত ফুটফুটে একটি মেয়ে রাস্তার পাশে খুব নিরাপদ একটি স্থানে দাঁড়িয়ে ছিল। আমার চোখের সামনেই একটি অতি দ্রুতগামী পিকাআপ ভ্যান মেয়েটাকে রাস্তার সাথে পিষে দিয়ে চলে গিয়েছিল নিমেষেই।
তারপর মিছিল, মিটিং, মানব বন্ধন হল, দাবী জানানো হল বিচারের।
বিচার তো দূরের কথা চালককে গ্রেফতার করাই সম্ভব হয়নি।
আগেও দেখেছি রোড অ্যাকসিডেন্টের মামলায় পুলিশের একটা গা ছাড়া ভাব থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাই আইনে উল্লিখিত ওই মিনিমাম শাস্তিটাও পায়না অপরাধী।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
নতুন মন্তব্য করুন