পায়রা মাছ ঢাকায় সহসা মেলে না। তাছাড়া ঢাকাবাসীরা, যারা আসলে সারা দেশ থেকে এসেছেন, তাদের মধ্যে কতোজন পায়রা মাছ খেতে চাইবেন সেটা ভাবার বিষয়। আমি নিজে কাওরান বাজার, হাতিরপুল বাজার আর নিউ মার্কেট বাজার থেকে মাছ কিনে থাকি। এদের মধ্যে হাতিরপুল আর নিউ মার্কেটে কখনো পায়রা মাছ দেখিনি। কাওরান বাজারের মাছের আড়তে এক-আধদিন হয়তো দেখেছি। এককালে ঠাটারি বাজারে নিয়মিত যেতাম, সেখানেও কখনো দেখিনি। অনার্য সঙ্গীত দেশে থাকলে অনুরোধ করা যেতো ওর গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরার সময় পায়রা মাছ নিয়ে আসতে। অবশ্য ওকে অমন অনুরোধ করলে ‘আপনি বরং এদিকটা বেড়িয়ে যান আর পায়রা মাছ খেয়ে যান’ — এমন প্রস্তাব পাবার সম্ভাবনা আছে।
অনার্য সঙ্গীত কবে ফিরবে সে অপেক্ষায় তো থাকা যাবে না, তাই নিজেই উদ্যোগী হই। অবশেষে এক মাছ বিক্রেতার সন্ধান পেয়েছি যিনি সাতক্ষীরা থেকে মাছ নিয়ে আসেন। তিনি বললেন মাঝে মাঝে পায়রা মাছের চালান আসে বটে, তবে পরিমাণে তা খুবই অল্প। তাই আমার জন্য সে মাছ রাখতে পারবেন অমন কথা তিনি দিতে পারবেন না। আমি ঠিক করেছি সুযোগের অপেক্ষায় থাকবো। মাঝে মাঝে তার দোকানে ঢুঁ মারবো। হয়তো শীঘ্রই ঢাকাতেই পায়রা মাছের স্বাদ নিতে পারবো।
পায়রা মাছ খেতে না পাই, তার খোঁজখবর তো নেয়া যেতে পারে। বাবা গুগলানন্দ এই ব্যাপারে একেবারেই হতাশ করলেন। বইপত্রেও কিছু পেলাম না। পায়রা মাছের দৈহিক বিবরণ যা কিছু মনে আছে তা দিয়ে খোঁজ করতে এই তিনটা মাছ পেলাম।
১. Siamese Tigerfish (Coius quadrifasciatus): এই ডোরাদার বাঘমামা আর যাই হন, তিনি পায়রা মাছ নন্।
(ছবিসূত্রঃ এনিমেল ওয়ার্ল্ড)
২. Yellowfin Seabream (Acanthopagrus latus): এই হালকা ডোরার আঁশদার মহাজন পায়রা মাছ নন্।
(ছবিসূত্রঃ ফিশবেস)
৩. Spotted Scat(Scatophagus argus):এর চেহারা-সুরত বরং পায়রার সাথে অনেক মেলে। কিন্তু পেলভিক-অ্যানাল ফিন নিয়ে মনে একটু খুঁতখুঁত আছে।
(ছবিসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
তো কী দাঁড়ালো? না পায়রা মাছ খেতে পেলাম, না তাকে নিয়ে পড়তে পেলাম। এমনকি পাঠকের পাতে তার একটা ছবিও দিতে পারলাম না। ক্ষমা করবেন প্রিয় পাঠক। এরচেয়ে আপনার কাছে পায়রা মাছের কোন ছবি বা তথ্য থাকলে মন্তব্যে সেটা জুড়ে দিতে পারেন। এমনকি কারো পায়রা মাছের রেসিপি জানা থাকলে তাও দিতে পারেন।
পায়রা মাছের খোঁজ করতে করতে ভাবলাম দেশী মাছের একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলি। তো লিখতে লিখতে ২১৪টি নাম পেয়েছিলাম। আপনাদের সহায়তায় সেটা সংশোধন, সংযোজনের পর হলো ২৩০। আরেকটু সহযোগিতা পেলে লিস্টটা আরো লম্বা হবে। একটু চোখ বুলিয়ে দেখুন তো আর কোন নাম মনে পড়ে কিনা!
001. আইড়
002. আউলানি
003. আনজু
004. আফ্রিকান মাগুর
005. আমাদি গুড়া
006. আলঙ
007. আড়ওয়ারি
008. ইলিশ
009. ইলশা তয়রাল
010. উটি
011. এংরট
012. এক ঠুটা
013. এলং
014. ঘোড়ামুখো/ লংগু রুই
015. কুইচা
016. কাইক্কা/কাকিলা
017. কাওয়াইন
018. রায়েক/ লাচু
019. কাঁচকি
020. কাজলকি
021. কাজলি/বাঁশপাতা
022. কাঞ্চন পুঁটি
023. কাটাপাতাশী
024. কাঠাল পাতা
025. কাতা
026. কাতল
027. কানি টেংরা
028. কানি পাবদা
029. কালিবাউস
030. কুচিয়া
031. কেটি
032. কৈ
033. কৈতর
034. কৈভোলা
035. কৈরকা
036. কৈসুটি
037. কোক্শা
038. কুটকুটিয়া
039. কুটাকাঁটি
040. কুমিরের খিল
041. করাতি হাঙর
042. কুরসা
043. কুলি
044. খাকসা
045. খারু
046. খেটি
047. খরসুলা
048. খরুল্লে ভাঙন
049. খুলি
050. খল্লা
051. খলসে
052. গুইজ্জা আইড়
053. গুইতা
054. গুইল্লা
055. গাগলা
056. গাঙ টেংরা
057. গাঙ মাগুর
058. গিলি পুঁটি
059. গুচি
060. গেছুয়া
061. গোতি পোয়া
062. গোরা
063. গজার
064. গুতুম
065. গবি
066. গর কৈ
067. গ্রাস কার্প
068. গুলসা
069. গুলসা টেংরা
070. গুড়া টেংরা
071. ঘাউড়া
072. ঘোড়া চেলা
073. ঘোড়া মাছ
074. ঘনিয়া
075. ঘরপুইয়া
076. চাপিলা
077. চিংড়ি
078. চিতল
079. চিরিং
080. চেউয়া
081. চেনুয়া
082. চেবলি
083. চেলা
084. চট বাইলা
085. চ্যাগবেগা
086. চ্যাপ চেলা
087. চুনা
088. চুনোবেলে
089. চন্দনা/চন্দন ইলিশ
090. ছাগুনি
091. ছুরি
092. জইয়া
093. জুঙলা
094. টাকি
095. টাটকিনি
096. টিটারি
097. টিয়াশোল
098. টেংরা
099. টেকচান্দা
100. টেরি পুঁটি
101. ট্যাপা
102. ঠুইট্টা পুঁটি
103. ডারি
104. ডালি চেউয়া
105. ডাহুক
106. ঢাল মাগুর
107. ঢেলা
108. তারা বাইম
109. তাইলে ভাঙন
110. তিত পুঁটি
111. তেলাপিয়া
112. তেলিপাশা
113. তপসি
114. তুলার ডান্ডি
115. থাই পাঙ্গাস
116. দাতিনা
117. দাড়কিনা
118. দাড়ি
119. দেবারি
120. দেশী চান্দা
121. ধল মাগুর
122. নাইলোটিকা
123. নান্দিল
124. নাপতা কই
125. নিপাতি
126. নেফতানি
127. ন্যাদোশ
128. নদৈ
129. নুনা টেংরা
130. নুনা বেলে
131. পুইয়া
132. পঙ্গা
133. পাকাল
134. পাঁকাল বাইম
135. পাঙ্গাস
136. পাথর চাটা
137. পানিজুস
138. পান্না
139. পাবদা
140. পামা
141. পারশে
142. পায়রা
143. পোয়া
144. পটকা
145. পুঁটি
146. ফাইস্যা
147. ফেওয়া
148. ফোপা চান্দা
149. ফুটনি পুঁটি
150. ফলি
151. ফলিচান্দা
152. ফুলো
153. বাইম
154. বাইলা
155. বাগনা
156. বাঘাইর
157. বাচা
158. বাটা
159. বাতাসি
160. বাদি পুঁটি
161. বানেহারা
162. বামুশ
163. বারাইল
164. বারালি
165. বালিচুরা
166. বিলতুরি
167. বিষতারা
168. বেচি
169. বৈচা
170. বৈটকা
171. বোরালি
172. বোয়াল
173. বৌরাণী
174. বজরী
175. বরগুনি
176. ভাঙান
177. ভাদি পুঁটি
178. ভেটকী
179. ভেদা
180. ভেবদা
181. ভোল
182. ভুত বাইলা
183. মৃগেল
184. মুগলি
185. মাগুর
186. মিরর কার্প
187. মেনি
188. মুতকুরা
189. মধু পাবদা
190. মুরারি
191. মুরিবাচা
192. মলা
193. মলা পুঁটি
194. মুসন
195. মহাশির
196. মহাশোল
197. রুই
198. রাইখোড়
199. রাগা/ চ্যাং
200. রাঙ্গা চান্দা
201. রাজ পুঁটি
202. রাজা চেউয়া
203. রাতাবৌরা
204. রিঠা
205. রূপচান্দা
206. রয়না
207. লইট্টা
208. লাউবুচা
209. লাক্ষা
210. লাল খলসে
211. লম্বা চান্দা
212. শঙ্খচী
213. শানকাচি
214. শাপলাপাতা
215. শাল বাইম
216. শিং
217. শিলং
218. শিলঙ্গ
219. শোভন খরকা
220. শোল
221. শনকাচি
222. সঙ্কোশ
223. সাগরপোনা
224. সাজ
225. সাদা ঘনিয়া
226. সিলভার কার্প
227. সেরবাতি
228. সরপুঁটি
229. সুরমা
230. হাড়কাঁটা
231. পাঁচচোখা/ চুক্কানি বৈচা
232. পিয়ালী
233. বালিচাটা
মন্তব্য
অসাধারণ এই পোষ্টের জন্যে
কিন্তু আফ্রিকান মাগুর ও থাই পাঙ্গাস বা বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ কি দেশী ?
আমার জ্ঞান কম তাই জানতে চাচ্ছি ।
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
দুই প্রকারের মাছকে দেশী মাছের অন্তর্ভূক্ত বলে গন্য করা হয় - স্থানীয় (Local) এবং উপস্থাপিত (Introduced)। উপস্থাপিত মাছদের আদি উৎপত্তি ভিন্ন স্থানে হলেও এদেরকে উপস্থাপনের পর এরা স্থানীয় পরিবেশে অভিযোজিত হয় এবং স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে, নিবাস গড়তে ও বংশ বিস্তার করতে সক্ষম হয়। যে সব উপস্থাপিত মাছ এগুলো করতে সক্ষম হয় না সেগুলো দেশী মাছের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে না। বিভিন্ন প্রকার কার্প, আফ্রিকান মাগুর ও থাই পাঙ্গাস এভাবে উপস্থাপিত ও অভিযোজিত বলে দেশী মাছের দলে ঢুকতে পেরেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১। "খাইক্কা" মাছ। এটা কাইক্কা বা খাকসা-র আঞ্চলিক নাম কিনা নিশ্চিত না। সিলেটে হাকালুকি হাওরে এই মাছ ধরেছিলাম। স্থানীয়রা নাম বলেছিলেন - খাইক্কা।
২। "ফ্লাইং ফিশ"। সেন্ট মার্টিনে ফ্রাইড ফ্লাইং ফিশ খেয়েছি। 'উড়ুক্কু মাছ' বলা যায় হয়তো।
****************************************
১। খাইক্কা মাছের একটু বর্ণনা দিতে পারেন? তাহলে নিশ্চিত করা যেতো।
২। উড়ুক্কু মাছের স্থানীয় নাম খল্লা মাছ। নদী বা পুকুরেও মেলে। পদ্মার খল্লা মাছ খেয়েছি। আকারে বেশ বড় এবং সুস্বাদু। খল্লা মাছের নাম যোগ করে দিচ্ছি। ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সিলেট অঞ্চলের রাণী মাছ, ভাইগ্না মাছের নাম পেলাম না। ভাইগ্না পার্শের মত হলেও একই মাছ নয় সম্ভবত। আবার আপনার লিস্টে মেনি আর ভেদা মনে হয় একই মাছ। চট করে এদুটোই চোখে পড়ল।
দিফিও
১। আপনি যেটাকে রাণী বলছেন সেটাকে কোথাও বৌ মাছও বলে সেটা প্রমিত নাম হিসেবে লিস্টে বৌরাণী নামে আছে।
২। আপনি যেটাকে ভাইগ্না বলছেন লিস্টে সেটা বাগনা নামে আছে।
৩। ভেদা এবং মেনি এক নয়। ভেদা আকারে ছোট ও পাতলা। মেনি বড়, চওড়া ও পুরু।
মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মাছটির নাম এই প্রথম শুনলাম, হয়তো দেখেছি। কারণ, আমার বাবা বিশাল এক মাছপ্রেমী মানুষ, হরেক রকমের মাছ কোথা কোথা থেকে যেনো নিয়ে আসেন। একবার ছোট রুপচাঁদা টাইপ একগাদা মাছ নিয়ে এলেন, ওগুলোর লেজের অংশ অবশ্য রুপচাদার চেয়ে আরো চিকন, পিঠে কালচে-ধুসর ফুটি ফুটি আর শরীর মাংশল - হৃষ্টপুষ্ট। বললেন এগুলা 'টাকা মাছ'। এখন তো মনে হচ্ছে, পায়রা মাছই খেয়ে ফেললাম কি না !!
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
না, টাকা মাছ হচ্ছে ফলিচান্দা'র আরেক নাম। সুরমা, কুশিয়ারা আর মেঘনা নদীতে মেলে। ভৈরবের মাছের বাজারে বা ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জের হাওড় এলাকার বাজারে গেলে এদের দেখা পাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কম্পু থকিা মন্তব্যের ঘরে ছবি দেয় কেম্বায়? একটা মাছের ছবি দিতাম তাইলে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ঐটা আমারে জিগায়া লাভ আছে? জায়গা মতো জানান।
তবে আপনার কম্পুর ছবিটা http://imgur.com/-এ আপলোড করে এখানে লিঙ্ক পেস্ট করতে পারেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এটা দেশী চান্দা বা গোল চান্দা মাছ। কড়কড়ে করে ভাজবেন। সাথে পেঁয়াজ আর কাঁচালঙ্কাও শুকনা শুকনা করে তেলভাজা করবেন। তারপর গরম ভাতের সাথে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একটি মাছকে নিয়েও এত সুন্দর একটি পোস্ট দেয়া যায় পড়ার আগে কখনও ভাবতেই পারিনি। মাছটি বাস্তবে দেখার সুযোগ কখন হবে জানিনা। খুলনা এলাকার কোন সচল ভ্রাতা বা ভগ্নির সৌজন্যে শীগ্রই এর একটি ছবি দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। গাজীপুর এলাকায় বসবাসের সময় দেখা চারটি মাছের নাম উল্লেখ করছি। এগুলো বোধ হয় তালিকায় নেইঃ
আইলানি মাছঃ এটি লম্বায় দুই-আড়াই ইঞ্চির বেশী বড় হয়না। সর্বে্াচ্চ একটি সাধারণ আকারের বরবটির মত মোটা হয়। এর মাথায় একটি হলদে ডট আছে। সর্বদা এটি শরীরের কিছু অংশ পানির নীচে এবং মাথসহ শরীর সামান্য অংশ পানির উপরে রেখে ভেসে বেড়ায়। মানুষের আগমন টের পেলেই অন্য মাছের মত দূরে চলে যায় না। নিতান্ত কেউ এটিকে ধরার উপক্রম না করলে, এটি কাছেই থাকে। পিঠের রং সবুজাভ কালচে আর বুকের রং রূপালী। এটি মানুষ খায় না।
চ্যাগবেগা মাছঃ এটি কালছে বাদামী রঙের হয়। এটির টেংরা মাছের মত তিনটি কাটা থাকে। দেখতে অনেকটা ফুটকা (গাজীপুরে মানুষ পটকা ফুটকা মাছ বলে) মাছের মতো। এটি সর্বদা বেলে মাছের মত পানির নীচে মাটির সাথে মিশে থাকে। প্রচলিত ধারণা মতে এটি খুব বিষাক্ত। কাটা ফুটলে নাকি মানুষের শরীর পঁচে যায়। এটি মানুষ সচরাচর খায় না।
রাগা টাকি মাছঃ এটি অনেকটা টাকি মাছের মত তবে মাথা শরীর তুলনায় আরও একটু বড় হয়। টাকি মাছের মত এটির গায়ে কোন স্ট্রাইপ বা ডট থাকে না। এটির রং অনেকটা দেশী মাগুর মাছে পেটের দিকের রঙের মত। সব মানুষ এটি খায় না। বাজারে টাকি মাছের চেয়ে অর্ধেক দাম হয় তবু কেউ নিতে চায় না।
বুইচ্চা মাছঃ এটি তিন ধরণের হয়। একটি দেখতে খলসে মাছের মত তবে আকারে ছোট। তবে এটি খলসে মাছের ছোট বেলার সংস্করণ নয়। এটির গায়ের রং রূপালী। আর একটি আকারে মাঝারি আকারের চান্দা মাছের মত তবে চান্দার মত চ্যাপ্টা নয় এটি, আরও একটু পুরো। এটিরও গায়ের রং রূপালী। তৃতীয়টির আকার দ্বিতীয়টির মতই তবে উভয় পাশে ঠিক মধ্যখান দিয়ে মাথা থেকে লেজ পর্য ন্ত একটি দাগ থাকে। গায়ের রং কালছে ধূসর।
রাক্ষুসে মাছ পিরানহার নামটি বাদ পড়েছে। জানি এটি বিদেশী মাছ। পত্রিকার রিপোর্ট মারফত জেনেছি লোভ ব্যবসায়ীরা এটিকে দেশে নিয়ে আসছে। যেমনভাবে, মাছ চাষের পুকুরের বড় শত্রু তেলাপিয়া মাছকেও এদেশে আনা হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেনীতে অধ্যয়নকালে প্রথম এটিকে দেখি চট্টগ্রাম শতরের দামপাড়া এলাকার একটি পুকুরে। এটিকে ওখানে জাপানী মাছ বলা হতো। মনে হয় জাপনা থেকে এটি আমদানী করা হয়েছিল।
আইলানি মাছঃ আমাদের কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে এর নাম দারকিনা মাছ। এখনও বাড়িতে গেলে পুকুর পাড়ে অলস ভাবে বসে এদের আনা-গোনা দেখতে বেশ লাগে।
চ্যাগবেগা মাছঃ এটাকে আমরা কটকটি মাছ বলি, গুড়াগাড়া মাছের সাথে এরা একদম ফ্রি চলে আসতো আগে। তারপর বালতিতে রেখে দিতাম কাঠি দিয়ে গুতা, আর একটু রেগে মনেহয় বেচারা একটা 'কটকট' আওয়াজ দিতো।
রাগা টাকি মাছঃ আমাদের অঞ্চলে 'রাউজ্ঞা' নামে পরিচিত।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
আইলানি/আউলানি আর দারকিনা এক নয়। দারকিনা বড়, আরো লম্বা-চওড়া, এবং খাওয়ার যোগ্য। আউলানি ছোট, খাওয়ার অযোগ্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রথমেই বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু অতিথি, আপনার নাম কোথায়? কী করে বুঝবো ধন্যবাদটা কার প্রাপ্য?
১। আইলানি/আউলানি/লাউলানি মাছ মিস্ করে গিয়েছিলাম। লিস্টে যোগ করে দিচ্ছি।
২। চ্যাগবেগা লিস্টে চেকা নামে ছিল। তবে চ্যাগবেগা নামটাই বেশি প্রচলিত। লিস্ট সংশোধন করা হলো।
৩। রাগা মিস্ করে গিয়েছিলাম। লিস্টে যোগ করা হলো। রাগা মাছ পুড়িয়ে ভর্তা অসাধারণ।
৪। আপনি যেটাকে বুইচ্চা বলছেন সেটা লিস্টে প্রমিত নাম বৈচা হিসেবে আছে। এই মাছটা endangered পর্যায় ছাড়িয়ে গেছে, মোটামুটি extinct পর্যায়ে। আপনার বলা তিনটা ভ্যারাইটির মধ্যে কেবল তৃতীয়টি দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
পিরানহা বাংলাদেশে থাই রূপচান্দা নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার দুটো ইন্ট্রোডিউসড মাছকে উদ্যোগ নিয়ে নির্মূল করার চেষ্টা করছে। একটা হচ্ছে এই পিরানহা আর আরেকটা আফ্রিকান মাগুর। পিরানহা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। তাই একে লিস্টে রাখলাম না। আফ্রিকান মাগুর এখনো নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তাই লিস্টে থাকলো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বেশ বিস্তৃত একটা লিস্ট করেছেন, সংগ্রহে রাখা আবশ্যক। নতুন কিছু সংযোজনের খুব একটা সুযোগই দেখছি না, তারপরও কয়েকটা মাছের উল্লেখ করতে চাই।
১। চ্যাং-(উত্তরবঙ্গের সাধারন উচ্চারণে)- এই মাছটা প্রায় টাকি মাছের মতই দেখতে, পার্থক্য হল- এর মাথা টাকির তুলনায় একটু বেশী মোটা, মুখ এবং বুকের সংযোগ স্থলে গাঢ় নীলচে একটা আভা আছে এবং শুকনো স্থানে মাছটা তিড়িং বিড়িং করে লাফায়।
২। গর কৈ(পাবনা-সিরাজগঞ্জের উচ্চারণে)- কৈ মাছের সাথে এর কোন রকম সাদৃশ্য নাই, বরং গুচি মাছের সাথে কিছুটা সাদৃশ্য আছে। লম্বায় এটা দুই-আড়াই ইঞ্চির বেশী হয় না।
৩। ঘুটে ট্যাংরা-সাইজে এটা ইঞ্চি খানেকের বেশী হয় না। আপনি অবশ্য গুড়া ট্যাংরা সহ কয়েক ধরনের ট্যাংরার উল্লেখ করেছেন, জানি না এটা তার কোনটা কি না।
৪। সাজ- আকার আকৃতিতে অনেকটা মলা মাছের কাছাকাছি, কিন্তু আঁশহীন গায়ে লাল, হলুদ এবং ছাই রঙয়ের ডোরা কাটা।
৫। ভুল- মাছটা আমি কখনো দেখি নাই, কিন্তু নাম শুনেছি অনেকবার, হয়ত বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা বিলুপ্তির পথে। শুনেছি এর আকার আকৃতি বাচা এবং বাটা মাছের মিশ্রিত কিছু একটা।
মেনি, ভেদা এবং নদৈ সম্ভবত একই মাছের ভিন্ন ভিন্ন নাম, পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে মেনি মাছকেই ভেদা এবং নদৈ বলে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশে নামের এরকম ভিন্নতা হয়ত আরও কিছু মাছের ক্ষেত্রে আছে, যেমন- টাকি-গড়াই-ছাইতান, মলা-মৌরলি-মোয়া, খসল্লা-টাটকিনি, শিং-জিওল, মাগুর-মজগুর, রুই-ভুরুং ইত্যাদি।
আফ্রিকান মাগুরকে কি বাংলাদেশের জাতীয়তা দিয়ে দিচ্ছেন? তাহলে সে হিসাবে থাই সরপুঁটির ব্যাপারটাও বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
হা হা, আপনার মন্তব্যে "চ্যাং" মাছের নামটা দেখে, মাছ নিয়ে সিলেটি ভাষায় একটা 'পই' অর্থাৎ লোকবচন বা প্রবচন মনে পড়ে গেল আমার (সিলেটিতেও 'চ্যাং' নামে মাছ আছে মনে হচ্ছে) ---
অর্থাৎ (আমি যেমনটা বুঝেছি আরকি) - চ্যাঙ আর ব্যাঙের উজানমুখী মহাকাব্যিক যাত্রা দেখে তাদের ক্ষুদ্রতর-পিচ্চিতর অর্বাচীন চ্যালাচামুণ্ডা - খলিসা আর পুঁটি মাছও বেহুদা নাচানাচি-ফালাফালি শুরু করে দেয়। তড়পাতে থাকে।
ভাবার্থ বোধহয় এরকম - বড়দের দেখাদেখি ছোটরাও অনেকসময় না বুঝেই লাফালাফি শুরু করে দেয় বা অতি উৎসাহ প্রকাশ করে - তখন এই বচনটা প্রয়োগ করা হয়। অথবা যোগ্য বা শক্তিশালী লোকের সাথে তাল দিয়ে ও তাদের আড়াল নিয়ে - অযোগ্য বা দুর্বল লোকও যখন আষ্ফালন করে!
[শব্দার্থঃ খইয়া= খলিসা মাছ, তাইনও= তিনিও; উজাইন= উজানের দিকে যাওয়া]।
****************************************
টাকি মাছকে সিলেটে চ্যাং মাছ বলে। টাকি নামটাক শুদ্ধ? শোল মাছের মতো দেখতে যে মাছ সেটা। কোন কোন অঞ্চলে এরে লাঠি মাছও বলে। এর পোনা খেতে খুবি মজার। কালো রং এর পোনা একসাথে কিলবিল করে ভাসতে থাকে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
টাকি আর চ্যাং মাছ এক নয়। উপরের আলোচনাগুলো দেখলে বুঝতে পারবেন। শোল মাছের কিলবিল করা সোনালী-কালো পোনা খাবার অপরাধ আমিও করেছি। তবে স্বীকার করতে হবে পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা দিয়ে এর প্রিপারেশনটার তুলনা নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
উপরের প্রবাদে চ্যাং মাছ বলে যেটার কথা বলা হয়েছে সেটার কথা বলছি। দেখতে শোল মাছের মতো, সাইজে ছোট। সেইটার নাম কি তাহলে
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমার জানামতে টাকি মাছকেই সিলেটিতে চ্যাং মাছ বলে। আমি অবশ্য এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। তবে আমার মনে হয় ধ্বণিগতভাবে শুনতে একই রকম লাগে এমন শব্দের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় ভিন্ন ভিন্ন অর্থ থাকা মোটেই অসম্ভব নয়। সম্ভবত এমন অনেক উদাহরণ দেখানো যাবে। তাই সিলেটিতে যা চ্যাং মাছ, তা আসলে টাকি হতেও পারে।
****************************************
আমি সিলেটের কথা বলতে পারবো না। তবে অন্যত্র যা বলে তাতে,
শোল টাকি মানে হচ্ছে টাকি মাছ বা ল্যাটা মাছ
চ্যাং টাকি মানে হচ্ছে রাগা মাছ বা রাউজ্ঞা মাছ
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এইটা কি মাছ? উপর আর নীচের দুটোই কি একই মাছ, নাকি ভিন্ন দুটি মাছ? ভিন্ন হলে কোনটা কি?
****************************************
দুটো একই মাছ বলে মনে হচ্ছে। এটা টাকি মাছ। কোথাও কোথাও একে শোল টাকি বলা হয় চ্যাং টাকি বা রাগা মাছের থেকে আলাদা করার জন্য। চ্যাং টাকির মাথা আরো বড় ও ফোলা, শরীর আরো সরু, লেজে ফোঁটা আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মাছ নিয়ে প্রবচন, ছড়া আর গানের মনে হয় অন্ত নেই। আফসোস্! কেউ এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়ে এগুলোর সংকলন করছে না।
আমি দক্ষিণবঙ্গের একটা ছড়াগান দিলাম।
আইড় মাছে খাইড় কাটে
বাইম মাছে প্যাচাইয়া ধরে
পুঁটি মাছে ঢ্যান্ডেরা বাজায়
হায়রে প্রাণ উদায়
যারে আল্লায় বেদিশায় ফালায়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক মাছ নিয়ে না হলেও, আমি সিলেট অঞ্চলের ধিতান, 'পই' বা প্রবচন, ছড়া আর ধাঁধা-রূপী গ্রাম্য ছড়াগুলি সংগ্রহের চেষ্টায় আছি। বঙ্গানুবাদ, ইংরেজি অনুবাদ, শব্দার্থ, ভাবার্থ, প্রয়োগ, ও যথাসম্ভব সহী (প্রমিত / নাগরিক / ঢাকাইয়া বাংলার প্রভাবমুক্ত) উচ্চারনে অডিও রেকর্ডিং-সহ সংকলনের চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত মনে হয় ২০০-২৫০-র মত সংগ্রহ ও অনুবাদ করেছি। আরও কয়েক শ' হলে তারপর কোন না কোন ভাবে প্রকাশের আশা রাখি।
****************************************
দুর্দান্ত! টুপিখোলা অভিনন্দন!!
এনকার্টার মতো একটা জিনিস বানাতে পারেন। যেখানে টেক্সট, গ্রাফিক্স, অডিও, ভিডিও সবই থাকবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সিলেটি পই এর সঠিক অর্থই করেছেন মনে হয়, এই প্রবচনটি প্রায় একই অর্থে নিম্নরূপে আমাদের এলাকাতেও প্রচলিত ছিল-
কৈ উজায় চ্যাং উজায়
ব্যাঙ লাফায় চ্যাং লাফায়
পুটি কয়, দেখি, আমিও একটু উজাই
খইলসা কয়, দেখি, আমিও একটু লাফাই
এরশাদের আমলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং বাম দলগুলোর জোট প্রায়শই হরতাল আহ্বান করতো। একবার কি যেন অজুহাতে শফিউল আলম প্রধানের জাগপা ও হরতাল ডেকে বসলো। তখন আমাদের এলাকার এক প্রবীণ ব্যাক্তি উল্লিখিত প্রবচনটি আমায় শুনিয়েছিলেন।
আয়রনি হচ্ছে, মোহসীন হলের সেভেন মার্ডার আর বায়তুল মোকার্রমের গিনি জুয়েলার্সে ডাকাতির আসামী এই শফিউল আলম প্রধান মাঝখানে কিছুদিন জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছিল। এখন আবার বিএনপি'র সুরে বাঁশি বাজায়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১। চ্যাং বা চ্যাং টাকি আর রাগা একই মাছ।
২। গর কৈ-এর নাম জানতাম না। লিস্টে যোগ করে দিলাম।
৩। ঘুটে টেংরা মানে হচ্ছে কানি টেংরা। লিস্টে আছে।
৪। সাজ-এর নাম জানতাম না। লিস্টে যোগ করে দিলাম।
৫। 'ভুল' না। নামটা হবে 'ভোল'। লিস্টে আছে।
৬। মেনি আর ভেদা'র পার্থক্য উপরে ব্যাখ্যা করেছি।
৭। আফ্রিকান মাগুর আর থাই সরপুটি/থাই পাঙ্গাস ওরফে পিরানহা'র ব্যাপারে উপরে ব্যাখ্যা দিয়েছি।
একই মাছে অঞ্চলভেদে নামের পার্থক্যের ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক। এসব ক্ষেত্রে আমি প্রমিত বা মৎস্যবিজ্ঞানীরা যে নামটা ব্যবহার করেন সেটা লেখার চেষ্টা করেছি। বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আবদুল্লাহ্ ভাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আঃ কি দারুণ একটা লেখা।
ন্যাদোশ
ভোলা
কৈভোলা
৯৭ আর ৯৮ তো একই মনে হচ্ছে।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
আপনার দেশী ভাই অনুপম ত্রিবেদী'র টাকা মাছের গল্প শুনে আমার আপনার টাকা মাছের গল্প মনে পড়েছিল। আপনার সাজেশনের ভোলা সম্ভবত আমার লিস্টের ভোল। তাই ওটা যোগ করলাম না। বাকি দুটো যোগ করে দিলাম। ডাহুক ঠিক করে দিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আব্দুল্লাহ ভাই যেটিকে চ্যাং মাছ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, বর্ণনা শুনে মনে হয় সেটিই গাজীপুর এলাকায় রাগা টাকি হিসেবে পরিচিত। আর ডানকানা মাছকে (কবি জসীম উদ্দীনের ‘নিমন্ত্রণ’ কবিতায় যেটি উল্লেখ আছে) গাজীপুর এলাকায় দারকিনা মাছ বলে, যেটিকে অনুপম ভাই আইলানি মাছের কিশোরগঞ্জ এলাকার বিকল্প নাম হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
- পামাআলে
চ্যাং = রাগা সঠিক। ডানকানা = দাড়কিনা/ডঙ্কুনি সঠিক। দাড়কিনা = আউলানি ভুল। সংশোধনীর জন্য ধন্যবাদ।
রেল সড়কের ছোট খাদ ভরে
ডানকিনে মাছ কিলবিল করে;
কাদার বাঁধন গাঁথি মাঝামাঝি জল সেঁচে আগে ভাগে
সব মাছগুলো কুড়ায়ে আনিব কাহারো জানার আগে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুন লাগলো। পায়রা মাছ দেখতে একুয়ারিয়াম ফিশের মতন।
তোমার পর্যবেক্ষণ সঠিক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লাক্ষা বোধহয় আঞ্চলিক উচ্চারণে লাউক্ষা। 'প্রাচ্যের সন্ন্যাসে' নামে এক কবিতায় পেয়েছিলাম- "সঙ্গে লাই ভর্তি কোরাল কিংবা লাউক্ষা মাছ'॥ তালিকায় কোরাল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
লাক্ষা = লাউক্ষা হতে পারে। কোরাল মাছ তালিকায় প্রমিত নাম ভেটকি হিসেবে আছে। ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে দুর্দান্ত। পায়রা মাছের সন্ধানে আইসা অন্য কত মাছের একটা অ্যাান্থলজি’র মতো হয়ে গেলো। এখন সবক’টা মাছের অন্তত একটা করে ছবি যুক্ত হলে এটা বাংলাদেশের মাছের একটা দারুণ উইকি’র মতো হবে। একইভাবে, ফুল, গাছ, পাখি ইত্যাদিও করা গেলে একটা অসাধারণ কাজ হবে। প্রয়োজনে এতদ্বিষয়ের পণ্ডিত ব্যক্তিদের কারিগরি সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। আমাকেও কাজে লাগাতে পারেন। একটা দারুণ প্রজেক্ট হবে।
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
কাজটা নিজ উদ্যোগে করতে পারেন। এই ডাটাবেস সচলের পাঠকদের সহায়তায় তৈরি, সুতরাং ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত। কোন তথ্য প্রয়োজন হলে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমার জানা থাকলে অবশ্যই জানাবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহা, দেশী মাছের দারুণ একটা লিস্টি পাওয়া গেল!
এইটুক কইয়া ছাইড়া দিলে তো হইবো না বদ্দা! আগিলা দিনের দুয়েকটা মাছের নাম কন্।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আর নামের প্রয়োজন নাই। একযুগ পরে আপনার দেওয়া এই লিস্টিই একটা দলিল হিসাবে গণ্য হবে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
ধন্যবাদ!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পঃবঙ্গে এই মাছটির নাম পায়রাচাঁদা, দেখতে সুন্দর বলে এক্যুরিয়ামের জন্য বিক্রি হয়।
বোধহয় একটা টাইপো আছে,ট্রাঙ্কেটেড truncated
বুড়া
টাইপো ঠিক করা হলো, ধন্যবাদ। কলিকাতা ঢাকার তুলনায় সুন্দরবনের বা দক্ষিণবঙ্গের অনেক কাছে। সুতরাং সেখানে পায়রা মাছ পাওয়া যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু অ্যাকুয়ারিয়ামের জন্য মাছটা একটু বড় হয়ে যায় না?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
যমুনার এপার ওপার দুপাড়েই চাকরির সুবাদে অনেক মাছ খাচ্ছি, খাওয়াচ্ছি। কাল অতিথিদের জন্য রান্না করেছিলাম, বাঘা আইড়, পাবদা, কাজলী, বোয়াল। এক্কেবারে যমুনার মাছ। বেশি তেল-পেঁয়াজ, ধনেপাতা, টমেটো। খেয়ে, খাইয়ে সুখ। দারুণ পোস্ট।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আইড় বা বাঘা আইড় বা বোয়ালকে নতুন আলু-ফুলকপি/সীম-টমেটো-ধনেপাতা-কাঁচালঙ্কা দিয়ে পাতলা ঝোল করতে পারেন। পাবদা বা কাজলী'র ক্ষেত্রে আপনার রেসিপিতে পেঁয়াজকলি যোগ করতে পারেন। আমি মাছ নিয়ে পড়তে, মাছ কিনতে, মাছ রাঁধতে, মাছ খেতে এবং মাছ খাওয়াতে ভালোবাসি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুন একটা কাজ করেছো।
# অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। এর দুটি প্রকার আছে- তাইড়ে ভাঙ্গন (আঁশবিহীন) এবং খরুল্লে ভাঙ্গন (ভাটা বা খরুল্লে মাছের মতো দেখতে কিন্তু আকারে ওগুলো থেকে অনেক বড়ো)।
# তপসে বা তপস্বী মাছ বাগেরহাট ও বৃহত্তর বরিশাল এলাকায় রামচোছ নামে পরিচিত।
# তারা বাইন (ডটেড)।
# নুন্দি বেলে (ভোত বেলে থেকে ছোট, এরা আকারে বেশি বড় হয় না)।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ভাঙন মাছের নাম জানি, কিন্তু কখনো দেখা/খাওয়া হয়নি। তোমার সাজেশনের নাম দুটো লিস্টে যোগ করলাম।
নুন্দি বেলে লিস্টে নুনা বেলে নামে আছে। এই মাছটার একটা চচ্চড়ি প্রিপারেশন আছে। অনেকটা সাদা পোয়া বা নদীর পোয়া ছোট সাইজের হলে যে চচ্চড়িটা করা হয় অমন। যে খায়নি, তাকে এর স্বাদ বলে বোঝানো সম্ভব না। তবে রান্না করতে ও খেতে হবে টাট্কা টাট্কা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কালকেই পড়ছিলাম। অনেকদিন ধইরাই পায়রাচাঁদা মাছ কোনটা খুঁজতাছিলাম। আপনের কথায় বুঝলাম এইটাই।
মাছেদের লিস্টি তো হইলো, এখন ধীরে সুস্থে ঠিকুজী কুলুজী কইরালান
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
তুমি পায়রাচাঁদা মাছ যেখানে যেখানে খোঁজ করলে পেতে পারো সেগুলো হচ্ছে - (ক) সূত্রাপুর বাজার (খ) যাত্রাবাড়ির মাছের আড়ত (গ) সওয়ারীঘাট। তবে এই বাজারগুলোতে যেতে হবে সকাল সাতটার মধ্যে। অমন কাকডাকা ভোরে তুমি কি ঘুম থেকে উঠতে পারবে?
ঠিকুজী, কুলুজী করা আমার কর্ম না। ওটা করা যাদের কর্ম তারা করুক। আর এসব কাজে ফান্ডও নাকি মেলে। আমি ঐ রাস্তায় নাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমরা যখন ছোটো ছিলাম, বাবা মাঝে মাঝে সেই কাকডাকা ভোরে আরো ২/১জন মাছ-পাগলাকে সাথে নিয়ে সওয়ারীঘাট যেতেন (উনি অবশ্য উচ্চারণ করেন "শোয়ারীঘাট"), আর বিভিন্ন জাতের মাছ কিনে বাড়ি ফিরে আমাদের ঘুম থেকে তুলে বলতেন দেখ ব্যাটা মাছ! আমরা ঘুম ঘুম চোখে সেই মাছ দেখতাম, কিছুটা উৎসাহ নিয়ে , আর উৎসাহের অভিনয় নিয়ে
আজকাল অবশ্য মাছ সম্ভবত কিছুটা সহজলভ্যও হয়েছে (অনেক জায়গাতে পাওয়া যায়, এই অর্থে)। আগোরা টাইপ সুপারশপগুলোতেও প্রচুর মাছ দেখেছি, মহাশোল থেকে শুরু করে আরো অনেক কম-পরিচিত মাছও থাকে।
---দিফিও
সওয়ারীঘাট থেকে ঝাঁকা ধরে বা বেছে বেছে মাছ কেনার শৌখিন মানুষগুলো এখন মোটামুটি নাই হয়ে গেছেন। আমি মাঝে মাঝে খুব ভোরে কাওরান বাজারের মাছের আড়ত থেকে মাছ কিনি। বাবা বেঁচে থাকতে তাঁর সাথে রবিবার (তখন রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল) খুব সকালে বাজারে যেতাম। এই ভদ্রলোক ছিলেন আমার প্রকৃতি পাঠের দ্বিতীয় শিক্ষক। তিনি আমাকে মাছের অনেক ভ্যারাইটি চিনিয়েছেন। তবে আরো বেশি ভ্যারাইটি চিনিয়েছেন আমার প্রকৃতি পাঠের প্রথম শিক্ষক - আমার মা। এখনো কোন বীরুৎ বা গুল্ম চিনতে না পারলে তাঁর দ্বারস্থ হই।
আপনি মৎস্যরসিক হলে সুপারশপ্গুলো থেকে মাছ কিনবেন না। এখানে মাছ বিক্রির হার কম বলে এক মাছ সাত/আট দিন ধরে পড়ে থাকে। একবার আমি একটা সুপারশপে একটা বৃহদাকৃতি মহাশোল আর একটা সুরমা মাছকে প্রায় দশদিন পড়ে থাকতে দেখেছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি একটি অর্বাচীন শহুরে বালক, যার মাছ গাছ কিছুই চেনা নেই। আলোচনা প্রাণভরে উপভোগ করছি। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ পাণ্ডবদা।
তোমার কি ধারণা আমি নদীপ্রধান বা হাওড়প্রধান গ্রামে বড় হয়েছি? চোখ-কান খোলা রাখলে এমন অনেক কিছু তোমার চারপাশেই খুঁজে পাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমার অবর্গীয় সম্মানসূচক পদবীটা আপনার থাকলে আপনি আরেকটি অবর্গীয় ইয়ে হয়ে উঠতেন, ষষ্ঠ পাণ্ডব হতে পারতেন না
এইবার সত্যি সত্যি বাংলাদেশকে মাছের দেশ বলে মনে হচ্ছে
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
বাংলাদেশ সব সময়ই মাছের দেশ ছিল। এখন বরং অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই লেখাটা একটু দেরিতে পড়া হলো। ক'দিন আগেও দেশে ছিলাম! বললেই একটা ব্যবস্থা করা যেত পায়রা মাছের।
গুলে মাছ আর কুচে কি বাদ পড়েছে? দুটোই লম্বা, খানিকটা সাপের মতো দেখতে মাছ। 'কুচে' মাছের ভেতর পড়বে কিনা সেটা নিয়ে অবশ্য খানিক সন্দেহ আছে! গুলে মাছ অতি সুস্বাদু, ঢাকার দিকে কখনো চোখেও পড়েনি। তবে বাজারঘাটে আমার যাতায়াত শূনের কাছাকাছি, বাজারে থাকলেও আমার চোখে না পড়ারই কথা। কুচে খেয়ে দেখা হয়নি স্থানীয় সমাজে মুসলমান পরিবারে এই জিনিস খাওয়া হয়না!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পায়রা মাছ দূরে থাক, এই দফা তোমার সাথে তো দেখাটাই হলো না!
কুচে লিস্টে কুচিয়া নামে আছে, আর গুলে আছে গুইল্লা নামে। কুচে মাছ বাইম মাছের মতো সুস্বাদু। এই মাছ কামট ধরার টোপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন