ব্যক্তি পর্যায় বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পর্যায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও উৎপাদন বৃদ্ধি, দক্ষতা বৃদ্ধি, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ইত্যাদির কথা বলে কর্মক্ষেত্র থেকে কম দক্ষ, অপটু, গতির সাথে তাল মেলাতে অক্ষমদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়। পিছিয়ে পড়া মানুষ এভাবে ছিটকে পড়া মানুষে পরিণত হন। সেই সাথে কিছু দক্ষ মানুষও ছিটকে পড়েন প্রযুক্তিগত বা কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে। আরও ছিটকে পড়েন যারা কখনো কোন আনুষ্ঠানিক কাজ বা উপযুক্ত কাজ পাননি। কল্যানমূলক রাষ্ট্রে ছিটকে পড়া মানুষদেরকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুরক্ষা দেয়া হয় বটে কিন্তু তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে সমন্বয়ের অর্থনীতির কথা বিশেষ ভাবা হয় না। রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কর্মসূচীগুলোর অল্প কিছুতে ছিটকে পড়া মানুষদের জন্য বিশেষ কাজের ব্যবস্থা থাকে। উৎপাদন বা ব্যবস্থাগত দক্ষতার দোহাই দিয়ে এমন কোন অর্থনৈতিক কর্মসূচী নেয়া হয় না যেখানে অন্য সবার সাথে ছিটকে পড়াদেরকেও কাজে নিয়োগ দেয়া হয়। অর্থনৈতিক অসাম্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে ছিটকে পড়াদের সংখ্যা বৃদ্ধি।
কর্মক্ষেত্রে যারা প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন না, যারা প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের ভাবতে পারেন না তারাও একসময় ছিটকে পড়তে পারেন। কর্মীর পক্ষে প্রতিষ্ঠানকে নিজের বলে ভাবতে না পারার দায়ের একাংশ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের ওপরে বর্তায়। কর্মক্ষেত্রে কর্মীর অধিকারবোধ মানে তাঁর সাথে প্রতিষ্ঠানের অর্থপূর্ণ সম্পর্ক, তাঁর ওপর আস্থা রাখা এবং তাঁর নির্ভয়ে মন খুলে কথা বলার সুযোগ থাকা। এই অধিকারবোধ তাঁকে এমন অনুভূতি দেয় যে প্রতিষ্ঠানে তাঁর অবদান প্রয়োজনীয়, তিনি যথাযথভাবে গৃহীত ও মূল্যায়িত, এবং তাঁর প্রতি ন্যায় ও অপক্ষপাতপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। এর ফলে তিনি বেশি কাজ করতে আনন্দ পান, তাঁর মধ্যে আগের চেয়ে বেশি সুখ, স্বচ্ছন্দ্য ও অনুপ্রাণিত বোধ হয়। ফলে কর্মক্ষেত্রে অধিকারবোধ কর্মীর অধিকতর ব্যক্তিগত কল্যান বয়ে আনে, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং সামগ্রিক কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে। আখেরে ছিটকে পড়া মানুষের সংখ্যা হ্রাস পায়।
পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ যার যার মতো করে সমর্থ। এখানে কারো সামর্থ্যকে উপেক্ষা করা সম্পদের অপচয় এবং মানবতার অবমাননার শামিল। এই ব্যাপারে রাষ্ট্রীয়, স্বাধীন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে ছিটকে পড়া মানুষদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাঁদের দক্ষতা বাড়ানো বা তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের গতিবিধি লক্ষ করে আশু পরিবর্তন অনুযায়ী বিদ্যমান কর্মীকূলকে প্রশিক্ষণ দিলে ছিটকে পড়ার হার কমানো সম্ভব। কিন্তু সবার আগে দরকার ছিটকে পড়া মানুষদের স্বীকৃতি। রাষ্ট্র এবং সমাজ যদি ছিটকে পড়া মানুষদের অস্তিত্ত্ব স্বীকার না করে তাহলে তাদের সমস্যা নিয়ে ভাবার বা সমাধানের উদ্যোগের উপায় থাকে না। জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) লিঙ্গভেদ, জাতিপরিচয়, বয়স, যৌন ঝোঁক, প্রতিবন্ধিত্ব ও দারিদ্র্যের কারণে বাদ পড়া বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য সমন্বিত উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু এখানে ছিটকে পড়া মানুষদের নিয়ে সমন্বিত অর্থনৈতিক কর্মসূচীর রূপরেখা নেই। তাছাড়া একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণে ইউএনডিপি’র মত প্রতিষ্ঠানের কিছু করার নেই। তাই প্রয়োজনীয় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগটা নিজেদেরকেই নিতে হবে।
স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী উভয় প্রকার উদ্যোগের কথা ভাবা যেতে পারে। স্বল্পমেয়াদী উদ্যোগে যারা রোজগার থেকে ছিটকে পড়লেন তাঁদের আয়সংস্থানের জন্য সাময়িক কাজের ব্যবস্থা করা যায় যা তাঁর যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। কিন্তু এতে তাঁকে ঋণ করা বা পরমুখাপেক্ষী হওয়া থেকে রক্ষা করে। এই ধরনের কর্মসংস্থানের জন্য একটি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কর্মীবাহিনী গঠনের কথা ভাবা যেতে পারে যাঁরা বৃহৎ উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোর বিভিন্ন প্রকল্পে সাময়িকভাবে নিযুক্ত হবেন। দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রকল্প নেয়া যেতে পারে। যথা, প্রযুক্তিগত বা কৌশলগত পরিবর্তনের ফলে কর্মক্ষেত্রে আসন্ন পরিবর্তনে বিদ্যমান কর্মীকূলকে অভিযোজিত করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অদূর ভবিষ্যতে যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানীর পরিবর্তে বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানী নির্ভর যানবাহন নির্মাণ, রক্ষনাবেক্ষণ ও মেরামতের সাথে নিযুক্ত বিদ্যমান কর্মীকূলকে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাপারে আগেই প্রশিক্ষিত করা গেলে তাঁরা ভবিষ্যতে বেকার হয়ে পড়বেন না। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেই এমন কিছু কাজ থাকে যেখানে ভিন্নভাবে সক্ষমদেরকে নিয়োগ করা যায়। এই ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা গেলে এই মানুষগুলো ছিটকে পড়বেন না।
রাষ্ট্রীয় বা ব্যবসায়িক উদ্যোগে মুনাফার পরিবর্তে মানবিক উন্নয়নকে যদি মূল লক্ষ্য হিসাবে ধার্য করা হয় তাহলে কর্মীর দক্ষতা বৃদ্ধি, কাজ ও প্রতিষ্ঠানের সাথে একাত্মতাবোধ বৃদ্ধি, পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন - এর সবই সম্ভব হয়। একটি দক্ষ, সর্বজনীন ও মানবিক পৃথিবী গড়ার জন্য সমন্বয়ের অর্থনীতির উদ্যোগ নেয়াটা জরুরী।
ঢাকা, ১২ মার্চ ২০২০
(এই লেখায় ‘সমন্বয়ের অর্থনীতি’ পদটি ‘Inclusive economy’ পদটির বাংলা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু বাংলা শব্দটিকে যথাযথ মনে হচ্ছে না। পাঠকদের কেউ উপযুক্ত প্রতিশব্দ জানালে পদটি পরিবর্তন করে দেয়া হবে।)
মন্তব্য
বাংলা একাডেমি ইনক্লুসিভের বিপরীতে অভিধানে ভুক্তি রেখেছে "সামুদয়িক"।
"সামুদায়িক অর্থনীতি" মাথার মধ্যে কোন ছবি তৈরি করছে না। এর চেয়ে
"সমন্বয়ের অর্থনীতি" অনেক বেশি অর্থময়। যদিও ইন্টিগ্রেশন আর ইনক্লুসিভ সবসময় একই অর্থ বহন করে না। এই ভাবনা থেকে মনে হলে "যুক্ততা" বা যুক্ত" শব্দটি আসতে পারে কি না তবে "সমন্বয়ের অর্থনীতি" শব্দটি অর্থময়।।।
একদম সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন কর্ণজয়! অনিন্দ্য রহমান সাজেস্ট করলেন 'তামামি অর্থনীতি'। এটার যথার্থতা ভেবে দেখতে পারেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ রকিব। সামুদয়িক = total, এটা যথার্থ অর্থ প্রকাশ করে না। নিচে কর্ণজয়ও সেকথা বলেছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সামুদয়িক ক্যাথোলিকের যুৎসই বাংলা হতে পারে। কিন্তু ক্যাথোলিক বলতে যদি "বিভিন্ন ধারাকে ধারণ করে, এমন" বোঝায়, তাহলে ইনক্লুসিভও বোঝাতে পারে। তামামি আবার তামাম (যেটার মানে আবার ঘুরেফিরে সেই সমুদয়) -এর বিশেষণ নয়, তামামি মানে সমাপ্তি।
একটা আটপৌরে "বাংলা" মাথায় এলো, বেবাকি। "বাংলা" বলছি কারণ বেবাক আরবি আর ফারসির ঘুটায় গজানো শব্দ।
যে অর্থে ইনক্লুসিভ বলছি সেটা তামামিও বটে। বেবাকি শব্দটা বরং বেশ জুতসই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছিটকে পড়ারা সমন্বিত হলে সমাজতন্ত্রবিদায়পরবর্তীকালের (১৯৮৯-২৩।০৫।২০২০ সকাল দশটা বাইশ) পবিত্র উপলব্ধিগুলির কী হবে? স্লো, লুজার, লাউজি, ঠেক্নিখ্যালি চেলেন্সট, পরে আসছো তাই আর পাবানা, ঘ্রোআপ, আনইছমাট, আনফিট লুকরে সমন্বয়-অভিযোজন করাইলে অর্থনীতি পূর্ব ইউরোপের মত অদক্ষ হৈয়া যাবেনে, তখন কী হবেনে এইসব কথা লক ডাউনের পৌনে তিনমাস পার কইরাও বহুৎ পোটেনফক্স মাইনসের মনে গিজ গিজ করতেছে। হাওয়া বাতাস লাইনে আসলেই তারা নিজমূর্তি ধারণ করবেন। আপনার পোস্টে দেরিতে কমেন্টানোর কারণ ঐটাই। অপেক্ষা করতেছিলাম রসময় ভিন্নমতগুলির জন্য
অজ্ঞাতবাস
পবিত্র উপলব্ধিগুলোর উৎপত্তি ১৯৮৯ সালেরও আগে। এই কারণে ১৯৮৯-৯০ সাল ঘটাতে বেশি কষ্ট করতে হয় নাই। পরবর্তীকালে এর বিকাশ ঘটেছে। লক ডাউন পরবর্তী অবস্থায় একটা Hobbesian war শুরু হবার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। তাতে ইনক্লুসিভ অর্থনীতির মতো ফালতু ধারণাগুলো পাত্তা পাবে না। খেয়োখেয়ি পর্ব শেষ হলে যারা অবশিষ্ট থাকবেন তারা তখন নিজেদের বাঁচার স্বার্থে সীমিত পরিসরে কিছু symbiotic ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। সীমিত পরিসরে বললাম এই জন্য, কারণ পরিসর ব্যাপক হলে যে প্রতিবেশীদের উন্নতি হওয়া শুরু হবে; সেটা আমি সহ্য করবো কী করে!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
খেয়োখেয়িতে কার কার লাশ পড়বে তার হিসাব সম্ভব না। কিন্তু অন্তত অনুমান করতে পারা দরকার। তাতে যদি কয়টা লাশ কম পড়ে
অজ্ঞাতবাস
'অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি'- এই প্রতিশব্দটি অনেক আগে থেকে দেশের সরকারী-বেসরকারি প্রকাশনায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
অন্তর্ভুক্তি কথাটার মধ্যে একটা hegemony কাজ করে। মানে, আমিই তো সব তোমাকেও সাথে নিলাম যদিও তুমি আমার সমতুল নও - এই রকম আর কি।
আপনি বলছেন,
- এর দুয়েকটা উদাহরণ দিতে পারেন? তাহলে পড়ে দেখতাম তাঁরা ইনক্লুসিভ অর্থনীতি বলতে কী বোঝাচ্ছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
inclusive বা inclusive economy এর পরিভাষা (প্রতিশব্দ?) হিসেবে অন্তর্ভুক্তিমূলক / অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি যথার্থ কি না, আমার জানা নেই। আর্থিক এবং উন্নয়ন খাতের প্রকাশনায় inclusive এর পরিভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তিমূলক চোখে পড়েছে অনেক আগে থেকেই। বাংলাদেশ ব্যাংক, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, এডিবি, আইএলও এবং প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে (এখানে এবং এখানে) অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবহার হতে দেখেছি।
ধন্যবাদ। আপনার দেয়া উদাহরণগুলো দেখলাম। বেশিরভাগ জায়গায় আমি যে hegemony'র কথা বলেছি সেটা খুব প্রবলভাবে বিদ্যমান। আমি inclusive economy বলতে এটা বোঝাতে চাইনি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এককালে "পেনসিল আর সর্বকর্মা" পাঠকেরা জুবোভস্কি বুলভারের ঠিকানায় চিঠি লিখত- 'জাদু ইশকুলের ঠিকানাটা জানতে চাই' এই মর্মে। আমি 'জাদু অফিসের ঠিকানাটা জানতে চাই' এই চিঠি কোথায় পাঠাব?
পুনশ্চঃ অনেকেই বলে ফেলেছেন, তবু দু'পয়সা যোগ করি। জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ অনুসারে "Inclusive Education" অর্থে "সমন্বিত শিক্ষা" পদযুগল ব্যবহৃত হয়েছিল। শিক্ষা সংক্রান্ত আলাপে দাপ্তরিক পরিভাষা হিসেবে এটিই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
জাদু ইশকুলের ঠিকানা তো ইউরি দ্রুজকভ দিয়েই রেখেছেন
জাদু অফিসটা তো তার আশে পাশেই থাকার কথা। পেনসিল, সর্বকর্মা, প্রুতিক, তিমা, গালাইকর, ভেনিয়া কাশকিন, গোয়েন্দা সিঁধেল, ক্যাপ্টেন টগবগ এদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে ঠিক ঠিক দেখিয়ে দিতে পারবে।
Inclusive নিয়ে আমি সত্যি সত্যি বিপদে পড়ে গেলাম দেখছি। আপনি বলছেন সরকার বাহাদুরের দপ্তর একে 'সমন্বিত' বলেন, উপরে কিবরিয়া বলছেন তাঁরা নাকি 'অন্তর্ভূক্তিমূলক' বলে আসছেন। তাহলে কোনটা সঠিক?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহা শৈশব! কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে! তাক থেকে দু-চারটে রুশী বই নামাব কি না ভাবছি।
পাণ্ডবদা, এই আশংকা থেকেই আমি বিচ্ছিন্নভাবে "Inclusive" নিয়ে কিছু বলি নি। এমন হওয়া খুবই সম্ভব, দপ্তরভেদে একই শব্দের ভিন্ন পরিভাষা প্রচলিত। অর্থনীতির "Inclusive" আর শিক্ষার "Inclusive" হুবহু একই অর্থ বোঝায় কি না, এটি আসলে আমার জানা নেই। আপনার এই লেখাটি পড়ে যে ধারণা পেয়েছি, তাতে অবশ্য একই মনে হচ্ছে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পরিভাষা ব্যবহারে সরকারের দপ্তর ভেদে ভিন্নতা আছে। যেমন, FAO এর integrated chicken-fish farming এর বাংলা পরিভাষা সমন্বিত মাছ ও মুরগী চাষ।
হ্যাঁ, ভিন্নতা আছে বলেই মনে হয়। উদাহরণ দেখে মনে পড়ল, কৃষি বিভাগে এককালে "সমন্বিত বালাই দমন পদ্ধতি" বেশ আলোচিত হয়েছিল। এটি কিসের অনুবাদ মনে নেই।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এটা ইন্টিগ্রেটেডের বাংলা। দপ্তরভেদে এই হেরফেরের জন্য মানুষ বাধ্য হয়ে ইংলিশের ওপর নির্ভর করে। এই বিষয়গুলো সম্ভবত এখনো ভাবনার গুরুত্ব পায়নি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছিটকে পড়া আর ছিটকে দেওয়ারা - উভয়েরই বেঁচে থাকতে এবং আরো ভালোভাবে বেঁচে থাকবার জন্য একই দর্শনের শরীক হবে এবং সেই দর্শন-কে বাস্তবায়িত করার কাজে সমন্বিত হবে - আদৌ সম্ভব কি? বিপরীতে উভয়েই সেই দর্শন সম্ভব, এমনকি এই সম্ভাবনাকে পর্যন্ত অবিশ্বাস এবং দূরে-রাখা-শ্রেয় মনে করবে? - উত্তরগুলো আমার জানা নেই। তবে আর কারো হয়ত জানা থাকতে পারে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
খেয়োখেয়ি আরও বাড়বে দাদা! মানুষ আরও স্বার্থপর, আরও আত্মকেন্দ্রিক, আরও শয়তান হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুদ্ধদেব বসুর অনুবাদ করা ই. ই. কামিংসের 'হে সুন্দরী স্বতঃস্ফুট পৃথিবী' কবিতাটা মনে করতে পারো
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন