এই বার দেশ থেকে আসার আগে বেশ কয়েকটা বই নিয়ে এসেছি। বইয়ের দোকানে ঘোরাঘুরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আর্কষণীয় শিরোনাম দেখে বই পছন্দ করা, একেকটা বই তাক থেকে নামানো, প্রচ্ছদ দেখা, কয়েক পাতা পড়ে দেখা, বই হাতে নেয়া, লেখকের জীবনী পড়া, বই ভালো না লাগলে ফেরত রেখে দেয়া। বইয়ের দোকানে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারি বেশ খুশি মনে।
ঢাকা ছাড়ার আগের দিন একটা বইয়ের দোকানে গেলাম, সময় প্রকাশনীর। এই বই, সেই বই দেখতে দেখতে অনেক সময় কেটে গেল। জেন্ডার ও উন্নয়ন কোষ (১ম ও ২য় খণ্ড) নামে ইয়া মোটা মোটা দুইটা বই কিনে ফেললাম। আম্মু মহা বিরক্ত -- এই ভারি বই কীভাবে নিবা, কোনোদিনও তোমার এই বই পড়া হবে না, ইত্যাদি, ইত্যাদি। দোকান থেকে বের হবার ঠিক আগ মুহূর্তে একটা নাম চোখে পড়লো, তসলিমা নাসরিন। ওই দোকানে তসলিমার দুইটা বই ছিলঃ 'অপরপক্ষ' ও 'প্রেমের কবিতা'। কিনে ফেললাম। আম্মু তো আরও বিরক্ত; কেন ওই মহিলার বই কিনবা?
বাসায় খুঁজে-পেতে তসলিমার আরও দুইটা বই পেলাম -- 'আমার মেয়েবেলা' ও 'খ' সবগুলো নিয়ে চলে এসেছি, এখনো পড়ার সময় হয়নি। টার্ম শেষে ছুটিতে পড়ার ইচ্ছা।
আজকে দুপুরে সেই ইচ্ছা নাকচ করলাম। ফ্রান্জ ফেননের 'দি রেচেড ওফ দি আর্থ' পড়ছিলাম, ক্লাসের জন্য। সেমিনারের আকারে ক্লাস, মোট ৬ জন ছাত্র। ভালোমতো পড়ে যেতে হয়, নয়তো প্রফেসর টের পেয়ে যাবে। সেই ফেনন পড়তে পড়তে এক সময় বই রেখে অন্য বইয়ের দিকে চোখ যায়। আসলেই স্কুলের পড়া করতে কারইবা ভাল লাগে।
তুলে নিলাম ‘খ’। অনেক অনেক ছোট লেখার সংকলন, বিভিন্ন পত্রিকার কলাম। বেশ কয়েকটা লেখা পড়ে ফেললাম সারা বিকাল জুড়ে। খুব ভাল লেখার হাত এই বিতর্কিত লেখিকার। আমার কিন্ত বেশ ভাল লেগেছে। তিনি মানুষের সম-অধিকার নিয়ে যে কথাগুলো বলেন, বেশ মনে দাগ কাটে। মনের কথা রাখ-ঢাক না করে বেশ অবলীলায় লেখে ফেলেন। আমার কয়েকটা প্রিয় লাইন তুলে দিচ্ছিঃ
“আমি সেই পুরুষদের ঘৃণা তো করিই যারা নারীকে ধর্ম আর রীতির ধুয়ো তুলে
নির্যাত্ন করে, পায়ে শেকল পরায়; কিন্তু সেই অথর্ব মেয়েদেরও ঘৃণা কম করি
না যারা পুরুষের এই বর্বরতা জীবনে মেনে নেয়, পায়ের শেকলকে কল্যাণ জ্ঞান
করে। সেই নারীই মনুষ্যত্বের অপমান সবচেয়ে বেশি করে যে তার নিজের সম্মানকে অন্যের কাছে বন্ধক রাখে, বিক্রি করে” (খ, ৫০)।
কথাটা বেশ শক্তিশালী। আমরা তো আসলেই নারীর স্বাধীনতা চাই, কিন্ত নারী কি ওই স্বাধীনতা চায়? স্বাধীনতার মানে কী? নারী ক্ষমতায়ন? মাইক্রোক্রেডিটের থেকে টাকা ধার করা? অনেক অনেক প্রশ্ন; উত্তর আছে? কোথায়? কার কাছে? ফেমিনিজমে এই গুলোর কোন উত্তর নেই (বেশ হতাশ কথা, এইটা নিয়ে আরেকদিন লিখবো)।
তসলিমার কথা সুন্দর। আমি নিজের সম্মান নিশ্চয়ই অন্যের কাছে বন্ধক রাখতে
চাই না, বিক্রি করতে চাই না, কিন্তু আমাকে তো সমাজে বাস করতে হবে, আমারও পরিবার আছে। তাই না? ফেমিনিস্ট বলেই সমাজ আর পরিবারকে অগ্রাহ্য করতে পারি না, জানালা দিয়ে ফেলে দিতে পারি না। তসলিমা মহিলাদের “লিভড রেয়ালিটি”র (বাংলায় এর সমতুল খুঁজে পাচ্ছি না) কথা চিন্তা করেননি। ঊমা নারায়ণ নামে এক ভারতীয় ঠিক এইটা নিয়েই বেশ লেখালেখি করেন। বাংলাদেশে ফেমিনিজমের কী রূপ হওয়া উচিত? উত্তর কি আছে?
মন্তব্য
এই লেখাটাও খুব ভালো লাগলো। প্রবাসিনীর লেখনীর জোর দেখা যাচ্ছে তার সাম্প্রতিক লেখাগুলোয়। নিয়মিত দিনলিপির খাতায় আরও একটা যোগ হলো। দারুণ! একেকটার আমেজ একেক রকম।
এই বিষয়টা নিয়ে কিছু জানার অপেক্ষা রইলো পোস্ট থেকে।
আমার ব্যক্তিগত মত হলো, তসলিমা freedom-এর চেয়ে fame চেয়েছেন বেশি। তাঁর লেখায় অনেক ভালো এবং ঠিক কথাই আছে, তবে তা প্রকাশের ভঙ্গিটা নারীমুক্তির cause-কে আহতই করেছে বেশি। বাস্তবজ্ঞানের অভাব মনে হয়েছে লেখাগুলোয়।
তবে, সে-কারণে তাঁর লেখার বা নিজের দেশে থাকার অধিকার হরণ ঠিক নয়। গোলাম আযম-নিজামীরা থাকতে পারলে তসলিমা কেন পারবেন না?
ঊমা নারায়ণ প্রসঙ্গে আরও আলোচনা পড়ার দাবি রেখে গেলাম।
লেখায়
কাছাকাছি মত আমার। তবে, ফেমই কেবল চেয়েছেন তাইবা কেমনে বলি। বাস্তবজ্ঞান ছাড়াও মৌলিক নৈতিকতার ধারণাতেও উনার ঘাটতি আছে, অন্তত লেখা থেকে তাই মনে হয়।
নৈতিকতা কিন্তু আপেক্ষিক।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ঠিক আছে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ফেমিনিজম নিয়ে আমার বেশ অস্বস্তিকর কিছু অনুভূতি আছে। আপনি সামনে একটি লেখা দেবেন বলেছেন- সেখানেই না হয় কথা হবে।
হুমম, তখনই কথা হবে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ঊমা নারায়ণ ছাড়া চন্দ্রা মোহান্তীও তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদ নিয়ে খুব ভালো লিখেছেন, পড়ে দেখতে পারেন। লতা মানি, অমৃতা বসু, লেইলা আহমেদ, স্যান্ড্রা হার্ডিং, সাবা মাহমুদ, শেলী ফেলডম্যান (বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করেন) - এনারাও আছেন।
আপনার রিসার্চ এরিয়া (মানে নারীবাদের মধ্যেই) কি ঠিক হয়ে গ্যাছে?
চন্দ্রা মোহান্তী আর স্যান্ড্রা হার্ডিং এর লেখা পড়েছি। বেশ ভাল লেগেছে।
রিসার্চ এরিয়া মোটামোটি ঠিক (আপাতত) ঃবাংলাদেশি মহিলাদের অভিবাসন আর পরিচয় নিয়ে।
_______________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
বিষয়টা নিয়ে আগ্রহ আছে আমার বেশ। তোমার গবেষণা/বিশ্লেষণের ফল জানিয়ো। আমার কিছু পর্যবেক্ষণ/ধারণা আছে, সেগুলো বলবো নে তখন।
ভালো লাগল লেখাটা পড়ে। নারী স্বাধীনতা সবাই চায়, তবে বুঝতে স্বাধীনতার মানে টা কী। অনেক নারী এই বিষয়টাই বোঝে না।
আর তসলিমার বেশ কয়েকটা বই আমি পড়েছি, আমার কাছে তার কথা গুলো ভালো লেগেছে এবং সত্য মনে হয়েছে কিন্তু ওনার প্রকাশ ভঙ্গি আমার কাছে ভালো লাগে নি।
ধন্যবাদ।
দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।
প্রকাশ ভংগি আমার মাঝে মাঝে ভাল লাগে না, বেশ ঠোঁট কাটা। তাই বুঝি কথাগুলো মনে দাগ কাটে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
চমৎকার একটা লেখা।
ধন্যবাদ।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ফেমিনিজম নারীদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারলেও তাদের সুখের বন্দোবস্ত করতে পারে কি না, সেটা নিয়ে ঘোর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমা বিশ্বে অনেকে। গেল সপ্তাহে মার্কিন দেশে এই নিয়ে সার্ভে রেজাল্ট বেরিয়েছে, বলছে যে নারীদের মনের অসুখ ক্রমাগত বাড়ছেই। এই নিয়ে টাইমস-এ ভালো একটা উপসম্পাদকীয় লিখেছেন মরীন ডাওড - Blue Is the New Black।
ইউকে-তেও নারীবাদের ভালো ও মন্দ দিক নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে, সেখানেও মন্দটাই বেশী আসছে। তবে আমার মনে হয় এরা কেউই প্রাচ্য দেশের নারীদের সাথে তাদের জায়গা অদল-বদল করতে চাইবেন না। একবার মুক্তির স্বাদ পেলে সেটা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয়া সম্ভব না। ডাওডের মতে - হয়তোবা "happiness is beside the point. We’re happy to have our newfound abundance of choices, even if those choices end up making us unhappier."
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
লিংকগুলোর জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
সেইরকম দ্বৈত কঠিন হইছে ...
[লেখাও কঠঠিন হইছে আর বিষয়বস্তু তো আমার আয়নমন্ডল এর উপর দিয়া গেছে]
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
সুন্দর লেখা প্রবাসিনী।
স্বাধীনতার প্রকৃত মানেটা অনেক নারীই সঠিক অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন। সেটাই তখন কাল হয়ে দাঁড়ায়। তসলিমা নাসরিন এর দু চারটে বই ভালো লাগে, কিন্তু মাঝে মাঝে বেশী 'এগ্রেসীভ' হওয়ার ব্যাপারটি ছাড়া।
লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
সময় প্রকাশনীর দোকান আছে আলাদা? কোথায়?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
৩৮/২ক, বাংলাবাজার
ঢাকা ১১০০
অন্য কোথাও আরও থাকতে পারে।
হয় এ আর প্লাজা কিংবা আর এ প্লাজা। ঠিক মনে নাই।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
মিরপুর রোডের উপরে, সোবাহানবাগের কাছে, প্লাজা এ আর এর তিনতলায় সম্ভবত...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
লেখাটা ভালো লাগলো।
প্রথম পড়েছিলাম তসলিমার নির্বাচিত কলাম। তখন খুব আলোড়িত হয়েছিলাম। তারপরে ক্রমশ ওনার আরো লেখা পড়ে লেখার মধ্যের পরস্পরবিরোধীতাগুলো দেখে কেমন বিস্বাদ লাগতে থাকে।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভালো লাগলো, তবে বড়ো সংক্ষিপ্ত লেখা। আরো বড়ো করে লিখুন না।
ঠিক আছে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
লেখা ভালো হইতেছে।
তসলিমার লেখার বিষয় নিয়ে তো সমস্যা নয়, ভেজাল লাগে প্রকাশভঙ্গিতে; অন্তত বাংলাদেশের মত জায়গার জন্যে।
"Life happens while we are busy planning it"
হুমম আসলেই
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
অনেকদিন দেশের বাইরে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তসলিমা নাসরীনের "ক" সম্পর্কে জানতাম। "খ" আসলো কবে? এইটার ঘটনাটা কি?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
আমিও ঠিক জানি না।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ভাল লেখা হচ্ছে... সামনে আরও বড় করে লিখ
জি না!
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
সত্যি বলছি, এই প্রথম আপনার লেখা ভালো লাগলো।
রেনেসাঁ
ধন্যবাদ
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
লেখা খুব ভাল লাগল
আসলেই আজকালকার দিনেও আমি নিজে দেখেছি আমার পরিচিত অনেক কে সিডনিতেই হাসবেন্ডের অত্যাচার মেনে নিয়ে সংসার করে যায়। একটাই আশা হয়ত সে বুঝতে পারবে, একটু সময় নিয়ে সয্য করলে এসব থেমে যাবে বা হয়ত বাচ্চা নিয়ে নিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এসবই সমাজের জন্য, ভাবে জানাজানি হলে লোকজন কি বলবে, বাবা-মা দুঃখ পাবে। খুব খুব দুঃখজনক। কিন্তু কিছুই বদলায় না। শেষে দেখা যায় সাংঘাতিক কিছু ঘটে। মেয়েরা এখনো অনেক ভাবে অসহায়। সমাজ একটা মেয়ের ভুল নিয়ে যতটা কথা বলে একটা ছেলেকি নিয়ে ততটা বলেনা।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
ভাল লাগলো লেখাটি । মন্তব্যগুলোও চিন্তাশীল।
নারীবাদ প্রসংগে Germaine Greer -এর অপেক্ষাকৃত নতুন বই The Whole Woman বইটি অসাধারণ লেগেছিল। নারীবাদ আন্দোলনের এই পুরোধা ব্যক্তিত্ব আন্দোলনের অনেক থিসিস নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলেছেন। দেখিয়াছেন কীভাবে নারীবাদ আন্দোলন নারীকে পুরুষের মত হবার মত একটি কষ্টকর প্রক্রিয়াতে পরিণত হয়েছে । গত তিরিশ বছরে উনি পশ্চিমের বাইরের বিভিন্ন সমাজে নারীর দৃশ্য ও অদৃশ্য শক্তি লক্ষ্য করেছেন, অবাকও হয়েছেন ।
এই বইটি ভাল লাগার কারণ, এই বইয়ের অনেক কথাই আমাদের মা-খালাদের বারবার বলতে শুনেছি, বিশেষতঃ তসলিমা নাসরিনের লেখা পড়ার পর । দুঃখজনক, তসলিমা বা অন্যান্য দেশি লেখক এই অবজারভেশনগুলো করতে পারেননি আমাদের সমাজের মানুষ হয়েও। হয়তোবা করতে চাননি, অথবা বিদেশি থিওরি পড়ে এত আপ্লুত হায়েছেন যে এর বাইরে কিছু থাকতে পারে ভাবেননি। যাক গে..
সাজিয়া, কামনা রইলো তুমি মৌলিক কিছু কর।
হুঁম।
সকালে উঠে আবার পড়া দিতে হবে। বেশ ভাল রকম হাই থট।
তুমি আমারে কও দিল্লীতে মেয়েরা মটরসাইকেল চালাইলে কলকাতায় মেয়েরা চালায় না ক্যান?!
আমি জানি না, আপনার কি মনে হয়?
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
তাসলিমার প্রকাশ ভঙ্গী খারাপ, কিন্তু কথা গুলো সত্য। ঠিকাছে । কে কিভাবে প্রকাশ করলো সেটা গৌণ হয়ে, সমস্যাটার সমাধানই না হোক মূখ্য হোক, কি বলেন?
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
তানবীরাদি'র এই মন্তব্যে একমত।
কিন্তু তসলিমার প্রকাশভঙ্গীর ওই রূঢ়তাকে আমি "খারাপ" বলতে একেবারেই রাজী নই, তসলিমা শুধু ভুল সময়ে ভুল দেশে জন্মেছেন -ব্যাস্ এটুকুই। খারাপ খুব সাব্জেকটিভ টার্ম। কুতসিত কাজকে কুতসিত ভাবে ছাড়া আঘাত করার উপায় নেই। আমার বরং তাঁর লেখার হাত খুবই শক্তিশালী বলে মনে হয়েছে, কবিতারও। আর সমসাময়িকদের মধ্যে অত অবলীলায় অতটা ধারালোভাবে কথা বলতে কাউকেই দেখিনি, আজও দেখিনা। মনে রাখতে হয়, যখন তসলিমা এই কথাগুলো বলছেন, বছর দশেক আগে, তখন মিডিয়া কিন্তু আজকের পর্যায়ে পৌঁছোয়নি। ব্লগ, এনজিও এরা এরকম হরে দরে যৌনতা নিয়ে কথা বলতে শুরুও করেনি। তসলিমা পরবর্তী সময়ে এটা অনেকটা আগল ভেঙেছে, তত্ত্বীয় আলোচনা থেকে নারী ইস্যুটাকে তিনিই প্রথম আমজনতার আলোচনার বিষয় করে তুলতে পেরেছেন। তখন চারপাশের ম্রিয়মান নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা একটু মিউ মিউ করছেন মাত্র, সেখানে তসলিমার কথাকে বাঘের হুঙ্কার মনে হতেই পারে। এই ধাক্কা না আসলে সেটা মুশকিল ছিলো হয়তো। হয়তো আরো দেরী হতো।
তারপরও তাঁর সংবেদনশীল মনটিকে কবিতাতে ঠিকই টের পাওয়া যায়।
গবেষক রেহনুমা আহমেদ একবার বলেছিলেন, যৌন হয়রানিকে যৌন হয়রানি নয় তো কি বলবো, গোলাপ ফুল? তসলিমার প্রসঙ্গ এলেই কেন যেন এই অ্যানালজি মনে পড়ে যায়।
সাজিয়া, লেখা ভালো হয়েছে, জারমেইন গ্রিয়ারের কিছু কাজ অনুবাদ করতে পারো চাইলে। ইন্টারেস্টিং আছে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
ঠিক।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
কোয়ালিটি আছে, কিন্তু কোয়ান্টিটি নিয়ে সমস্যা।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আসলেই
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
অনেক দেরীতে পড়লাম এই লেখাটা৷ বেশ ভাল লাগতে লাগতেই হুশ করে শেষ হয়ে গেল৷
আচ্ছা এই "জেন্ডার ও উন্নয়ন কোষ' বইটা কি সুমিত সরকার/তনিকা সরকারের বইটার বাংলা অনুবাদ?
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
না। এইটা সম্পদনা করেছে সেলিনা হোসেন।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
নতুন মন্তব্য করুন