'রামপাল বুকলেট সিনড্রোম': হারিয়ে যাওয়া পাটিগণিত

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: সোম, ০৯/১২/২০১৩ - ৬:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এসব বিষয় নিয়ে লেখার ক্ষেত্রে নিয়ম হল প্রথমে নিজে কোন পক্ষে সেটি পরিষ্কার করে দেয়া। না হলে ট্যাগিং শুরু করে দেযা হয়। আমার ট্যাগড হতে সমস্যা নেই। কিন্তু অর্ধেক লোক যদি আমাকে ট্যাগ করে 'ক', আর বাকি অর্ধেক লোক যদি আমাকে ট্যাগ করে দেয় '-ক' তাহলে তো কাটাকুটি হয়ে সবার সময়ই নষ্ট। ট্যাগবাজদের সময় বাঁচানোর জন্য তাই আমি কোন পক্ষে তা আগেই বলে দিচ্ছি। রামপালের ‌ব্যাপারে আমি এখনও বিপক্ষে কারণ যে তিনজন বিশেষজ্ঞ এটির পক্ষে লিখেছেন তাদের মধ্যে একজন নিজেই আবার ঠিক হওয়ার শর্ত হিসেবে তিনটি পর্যায়ে তিনটি মনিটরিং কমিটির প্রস্তাব করেছেন যাদের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে। যেহেতু এই কমিটিগুলো করার ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা আসেনি কাজেই আমি এটার পক্ষে না। যদি আসে বিবেচনা করব। আমি টিকফা চুক্তিরও বিপক্ষে। আমার কাছে চুক্তিটি অস্বাভাবিকরকমের ব্ল্যাংকেট মনে হয়েছে। আমার অপেশাদার ও অনভিজ্ঞ মস্তিষ্ক বলে আমাদের বৈদেশিক চুক্তিগুলো হওয়া উচিৎ পণ্যভিত্তিক বা সেক্টরভিত্তিক এবং স্বল্পমেয়াদী যাতে করে নিয়মিত রিভিউ করা যায়।

আমি এই ব্যাপারটির নাম দিয়েছি 'রামপাল বুকলেট সিনড্রোম'। জাতীয় কমিটি যে রামপাল বুকলেটটি প্রকাশ করেছে তার সবচেয়ে যন্ত্রনাদায়ক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর কোন তথ্যপুঞ্জি বা বিবলিওগ্রাফী নেই। এই কারণে অনেক দাবী যেগুলোর কোন ব্যাখ্যা নেই তা স্বাধীনভাবে যাচাই করার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু বুকলেটে তাদের বিশেষজ্ঞদের নাম উল্লেখ নেই আপনাকে বার বার প্রশ্নগুলো নিয়ে তাদের মুখপাত্র যেমন কল্লোল মুস্তফা বা আনু মুহম্মদদের কাছে যেতে হবে। যদি তারা আপনার কোন প্রশ্নের উত্তর না দেয় তাহলে কিছু করার নেই।

আপনি কোন কিছুর বিরোধিতা করবেন - আপনার বিরোধিতাতে নিশ্চয়ই অনেক ভাল ভাল বক্তব্য থাকবে যেগুলো যাচাই করা যাবে, যার তথ্যসূত্র থাকবে এবং যেগুলোকে স্বাধীন বিশ্লেষণ ও পরিসংখ্যান সমর্থন করবে। এগুলোই তো আপনার অবস্থানের পক্ষে যথেষ্ট হওয়ার কথা!

সেই বিরোধিতার মেনিফেস্টোতে এমন কোন বিষয় কেন ঢুকিয়ে দিবেন যেটির কোন তথ্যসূত্র থাকবে না? আপনাকে অনুরোধ করলেও দিতে পারবেন না। তার ফাঁকে ফাঁকে এমন কিছু কেন থাকবে যার কোন ব্যাখ্যা নেই? অথবা কেন প্রাসংগিক একটি ব্যাপার যেটি না থাকার কারণে আপনার বিরোধী অবস্থানটি অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে সেটি নেই? অথবা প্রশ্ন করার পরও কেন সেই ব্যাপারটির কোন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না?

কোন খারাপ জিনিসের কেবল বিরোধিতা করাই যথেষ্ট নয়। আপনার সেই বিরোধিতার দফাগুলো যদি নিখুঁত না হয়, যদি অস্পষ্ট হয় তাহলে সেটি আপনার অবস্থানকেই দুর্বল করে দেয়। তার উপর যারা সেই খারাপ কাজটি (অন্তত আপনার দৃষ্টিতে খারাপ) করতে চাচ্ছে তারা আপনার এই দুর্বলতাকে তাদের নিজেদের নৈতিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে।

দুইটি উদাহরণ দেই:

রামপাল বিরোধিতার পাটিগণিতে মংলা বন্দরের অনুপস্থিতি
আমি যখন রামপাল নিয়ে লেখা জাতীয় কমিটির বুকলেটটি পড়া শুরু করি তখন কল্লোল মুস্তফার সাথে আমার দীর্ঘ আলাপ হয় (কমেন্টে আমি স্ক্রিনশট দিয়ে দিলাম) যেটির সমাপ্তি ঘটে আমার কিছু প্রশ্ন উত্তরহীন থেকে যাওয়ার মাধ্যমে। প্রায় আড়াইশো কমেন্ট তার মধ্যে আবার বেশ কিছু হল আমার বন্ধুবান্ধব আমাকে আওয়ামী লীগের দালাল ধরে নিয়ে বোকার মত চিৎকার চেঁচামেচি। এর মধ্যে খুঁজে নিতে পারলে ভাল, না হলে আমি এখানে আবার বলে দেই। প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যখন বলা হয় সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে তখন আমরা আসলে কি ধরণের টাইমলাইন নিয়ে কথা বলছি? এটি কি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার ৫০ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে? নাকি ১০০ বছরের মধ্যে? নাকি ৫০০ বছর? নাকি ১০০০ বছর? ধ্বংস হওয়ার সংজ্ঞাটি কি? বুকলেটে বলা হয়েছে আমাদের সুন্দরবন বলে কিছু থাকবে না, থাকবে শুধু ভারতের অংশটুকু। জীববৈচিত্র্য ও দূষণের ব্যাপারে রামপাল ও মংলা বন্দরের মধ্যে কিছু ওভারল্যাপ আছে। তার উপর মংলা বন্দর আরও নিকটে। তাহলে মংলা বন্দরের ব্যাপারে জাতীয় কমিটির অবস্থান কি? মংলা বন্দরের কারণে তাহলে সুন্দরবন কতদিনে ধ্বংস হবে? আমরা যদি রামপাল ঠেকিয়ে দেই তাহলে আমরা এর বিনিময়ে কত বছর গেইন করলাম? এ ধরনের কথা বললে একটি সাধারণ প্রত্যুত্তর হল যদি এক দশকও বেশি গেইন করা যায় সেটি কি আমাদের জন্য ভাল নয়? সেক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হল নিশ্চয়ই ভাল কিন্তু আমি নিশ্চিত হতে চাচ্ছি এটি কি এক দশকই? সেই সংখ্যার পিছনের উৎস সেই গবেষণাটি কোথায়? পরিসংখ্যানটি কি? বিশ্লেষণ কি? বুকলেটের অল্প কয়েক ফর্মার মধ্যে না দেয়া গেলে তথ্যসূত্রটি তো দেয়া যেতে পারত। যদি তাও না পারেন তাহলে প্রশ্ন করার পর উত্তর তো দিতে পারতেন!

টিকফা চুক্তির বিরোধিতায় সফটওয়্যারশিল্পের ধ্বংস হওয়ার আশংকা
একই ভাবে প্রথম আলোতে আনু মুহাম্মদ যখন টিকফা চুক্তি নিয়ে লিখলেন তখন আমি আবিষ্কার করলাম সেই লেখায় টিকফা চুক্তির ধারাভিত্তিক কোন বিশ্লেষণ নেই। তো আমি অনুরোধ করলাম যদি এ নিয়ে কোন ধারাভিত্তিক বিশ্লেষণ থাকে যার বিবলিওগ্রাফী আছে তাহলে আমাকে যেন ওনারা কষ্ট করে দেন। কল্লোল মুস্তফা আমাকে তার নিজের একটি লেখা দিলেন যেটি যথারীতি 'রামপাল বুকলেট সিনড্রোমে' আক্রান্ত। একজায়গায় দাবী করা হয়েছে টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে 'সফটওয়্যার শিল্প দেউলিয়া হয়ে যাবে'। যথারীতি লেখায় কোন তথ্যসূত্র নেই। কোন উদাহরণ নেই টিকফা স্বাক্ষরের ফলে কোন কোন দেশে সফটওয়্যার শিল্প দেউলিয়া হয়ে গেছে। সফটওয়্যার শিল্পে প্রভাব পড়া এক জিনিস আর দেউলিয়া হওয়া অন্য জিনিস। দেউলিয়া হওয়া মানে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেয়ার সক্ষমতা আমাদের সফটওয়্যার শিল্পের এখনও হয় নি। এ ধরণের একটি সুনির্দিষ্ট দাবীর পিছনের যে গবেষণা, পরিসংখ্যান, বিশ্লেষণ থাকার কথা সেটি লেখাতে যথারীতি অনুপস্থিত। তারপর ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে অনুরোধ করার পরও সেই তথ্যসূত্র পাওয়া যায় নি।

একটি জিনিস আবারও স্মরণ করিয়ে দেই সুন্দরবনের উপর প্রভাব পড়বে কিনা আর সফটওয়্যার শিল্পের উপর প্রভাব পড়বে কিনা সেটি কমনসেন্স দিয়েই বলে দেয়া যায়। কিন্তু কতটুকু প্রভাব পড়বে, সেটি কি গ্রহণযোগ্য সময়ের উপর কাটিয়ে উঠার সক্ষমতা আছে কিনা নাকি ধ্বংস হওয়ার মত সেটি কিন্তু পরিমাপের বিষয়। এই পরিমাপ হল গবেষণা, পরিসংখ্যান আর বিশ্লেষণের ফলাফল। দাবী যদি করেন তাহলে সেটির পিছনের গবেষণার তথ্যসূত্রটি যোগ করতে অসুবিধা কোথায়? যে দাবীর তথ্যসূত্র বার বার অনুরোধ করলেও দিতে পারবেন না সেই দাবী করার দরকারটি কি?

একটি জিনিস বাংলাদেশের সব অ্যাকটিভিস্টের স্মরণ রাখা জরুরী। এটি ২০১৩ সাল। কোন দাবী করলেই প্রথমেই ঘন্টাতেই কয়েক হাজার গুগল সার্চ হয়ে যায় শুধুমাত্র আপনার দাবীটি সঠিক কিনা যাচাই করার জন্য। গুগল বন্ধ হয়ে গেলেও কিন্তু কোন সমস্যা নেই আমাদের কিন্তু পিপীলিকা আছে!

[লেখা শেষ। ট্যাগবাজরা ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন!]


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

টিকফা চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের একটা বড় কারণ বিশ্ব বানিজ্য সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের মতো করে একটি বানিজ্য বলয় তৈরী করা, যাতে করে সবকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটা ভোকাল প্রতিনিধি বাংলাদেশ, দায়িত্বও অনেক। বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় বিভিন্ন দেশের সম্মিলিত বিরোধিতায় যুক্তরাষ্ট্র অনেক সিদ্ধান্তই নিতে পারেনা, এর প্রতিকার হিসেবেই টিকফা চুক্তি। এজন্যই বেশিভাগ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ এ চুক্তিতে তেমন একটা সাড়া দেয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র চিপা দিয়ে টিকফা চুক্তি করে নিলো, কিন্তু আমাদের জিএসপি ঠিকই অনিশ্চয়তার সূতোয় ঝুলছে।

শব্দ পথিক

হিমু এর ছবি

হয়তো ওদের তথ্যসূত্রের পাতাগুলো ইঙ্গ-ইন্দো-ইসরায়েলী ষড়যন্ত্রে গায়েব হয়ে গেছে?

দীনহিন এর ছবি

অসাধারণ। লেখকের প্রতিটি যুক্তির সাথে সহমত পোষণ করছি।
বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক যে, যখন আপনি একটি বিষয়ের পেছনের যুক্তিগুলো খুঁজতে চাইছেন, তখন খুব সহজেই আপনাকে ট্যাগানো হবে, আপনি হয়ত বিষয়টির বিপক্ষেই অবস্থান করছেন, তবু আপনার অনুসন্ধিৎসু মন চাইছে আরও যুক্তি, আরও বিশ্লেষণ; কিন্তু না, আপনাকে থামিয়ে দেয়া হবে, এমনকি প্রশ্ন করার অধিকারটুকুও হারাবেন, যেন বা প্রশ্ন করাটাও একটা পাপ!
'রামপাল বুকলেট সিনড্রোম' প্রচুর দেখা যায় আমাদের মধ্যে। যেমন ধরুন, দেশের একটি বড় অংশই মনে করেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্ট করেছেন। তো এই অবস্থায় আপনার মনে প্রশ্ন জাগল, তাহলে জিয়া এত জনপ্রিয় কেন? বা জিয়ার দল কিভাবে দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে? এই প্রশ্নটির মানে কিন্তু এই নয় যে, আপনি জিয়া কর্তৃক স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু অনেকেই আপনার এই প্রশ্ন করাটাকেই একটি পাপ হিসেবে গণ্য করবে, আপনাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে, স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রে ঠেলে দেবে। উত্তর পাওয়া তো দূরের কথা।
'রামপাল বুকলেট সিনড্রোম' আমাদের মাঝে এতই প্রবল!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

ফাহিম হাসান এর ছবি

কল্লোল মুস্তফার টিমের প্রোফাইল তিনি জানাবেন না, কাজের তথ্যসূত্র সম্পর্কে কোন মন্তব্য করবেন না - এ ধরনের একগুঁয়েমি বিরক্তিকর এবং কাউন্টার প্রোডাক্টিভ। আপনার সাথে সহমত।

রামপালের পক্ষে-বিপক্ষে ফেইসবুকে অনেকেই আলোচনা করেছেন। আপনার ফেইসবুকের আলাপে ফোড়ন কেটে হয়ত কেউ কোন কথা বলেছে, কিন্তু আপনি একরকম ধরেই নিচ্ছেন আপনার লেখা, যুক্তি সম্পর্কে যারা ভিন্নমত পোষণ করবে তারাই ট্যাগবাজ। সচলে লেখা প্রকাশ পাওয়া মাত্র তারা হা-রে-রে করে ছুটে আসবে - লেখার শেষে এইরকম একটা স্টেইটমেন্ট থাকলে আলোচনা চালানো মুশকিল। ট্রোলদের পাত্তা দিয়েন না, ওরা ঠিক এই জিনিসটাই চায়।

মৃষৎ এর ছবি

ফাহিমদা, লেখক সম্ভবত ট্যাগবাজি (দালাল ফালাল) অপছন্দ করেন। কড়া-যুক্তিযুক্ত সমালোচনায় কোন সমস্যা বোধ হয় নাই উনার। আলোচনা চলতেই পারে (ট্যাগবাজি বাদ দিয়ে)।

শেহাব এর ছবি

আমাকে ব্যক্তিগত মেসেজে , আমার টাইমলাইনে আলাদা পোস্টে, বা ওনার নিজের টাইমলাইনে বা স্ট্যাটাসে দালাল ট্যাগ করলে আমার আপত্তি নাই। কিন্তু যেখানে আলোচনা চলছে ওখানে মেরিটবিহীন মন্তব্য করলে স্ক্রল করতে করতে জান শেষ হয়ে যায়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

একটি জিনিস বাংলাদেশের সব অ্যাকটিভিস্টের স্মরণ রাখা জরুরী। এটি ২০১৩ সাল। কোন দাবী করলেই প্রথমেই ঘন্টাতেই কয়েক হাজার গুগল সার্চ হয়ে যায় শুধুমাত্র আপনার দাবীটি সঠিক কিনা যাচাই করার জন্য। গুগল বন্ধ হয়ে গেলেও কিন্তু কোন সমস্যা নেই আমাদের কিন্তু পিপীলিকা আছে!

হাততালি হাততালি হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম এর ছবি

কোনকিছুই বিনা প্রশ্নে ছেড়ে দেয়া যাবেনা - প্রশ্ন জারী থাকুক। লেখাটি ছোট বা কিছুটা অসম্পুর্ণ মনে হয়েছিল তবে লেখকের দেয়া লিঙ্কগুলোতে করা আলোচনা সহ এ লেখাটি পড়তে পারলে সেই ঘাটতি আর থাকেনা। অনেক ধন্যবাদ শেহাব।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

শেহাব ভাই, আপনার কথার সাথে একমত। তবে ট্যাগ নিয়ে দুইটা কথা আছে। ট্যাগানোর কারণটা সম্ভবত আপনি বোঝেন। সবাই কিন্তু আপনার মত বোঝার জন্য বিরোধিতা করে না, বা বুঝে গেলে অবস্থান পাল্টাবেন এরকম মতামত ধারণ করেন না। কেউ শুধু বিরোধিতা করতে হবে বলেই বিরোধিতা করে। তাদেরকে অনেক সময় বুঝিয়েও লাভ হয় না। তাদের ট্যাগিং করে ফেলতে পারলে কিছুটা সুবিধা হয়। আবার উল্টাদিকেও কিন্তু সত্যি, ধরেন আপনি সত্যি সত্যি বোঝার জন্য খাটাখাটি করছেন, এখন আপনি বুঝে সবাইকে বুঝিয়ে ফেললে তো সমস্যা, তাই তখন আবার ট্যাগিং করলে সে পক্ষের সুবিধা, আপনাকে পার্টিজান প্রমাণ করে ফেলতে পারলে আপনার যুক্তি সহজে অগ্রাহ্য করা যাবে। সেই হিসাবে ট্যাগিং সম্ভবত তর্ক বিতর্কের একটা অবিচ্ছেদ্য পার্ট হিসেবে থাকবে, যদি বিতর্ক শুধু মাত্র বিতর্কে জয় পরাজয়ের জন্য হয়।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

দীনহিন এর ছবি

তাদের ট্যাগিং করে ফেলতে পারলে কিছুটা সুবিধা হয়।

এই 'কিছুটা সুবিধা' শব্দটিকে ব্যাখ্যা করবেন?
আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, আপনি আগে-ভাগেই বুঝে ফেলবেন ঐ লোকটি ''বোঝার জন্য বিরোধিতা করে না, বা বুঝে গেলে অবস্থান পাল্টাবেন এরকম মতামত ধারণ করেন না।'' বা, ''শুধু বিরোধিতা করতে হবে বলেই বিরোধিতা করে।"
মানে, যেহেতু আপনি দূরদৃষ্টির মাধ্যমে আগেই বুঝে ফেলতে সক্ষম হবেন, সেই হেতু লোকটিকে ট্যাগিয়ে দিতে পারলে আর খামোখা তর্ক-বিতর্ক-আলোচনা করে সময় নষ্ট করার দরকার হবে না?

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সবসময় দূরদৃষ্টি লাগে না। ধরেন একটা জামাতি, আপনি জানেন সে জামাতি, কিন্তু তর্ক করার সময় সে তো আর বলবে না সে জামাতি তাই না। হাজার যুক্তি নিয়ে আসবে। আপনি যতই বলেন সে বুঝবে না কারন তার ডিসিশান অ্যানালাইসিসের ফলাফল না, দলীয় আনুগত্যের ফলাফল। এই প্যাটার্নটা পার্টিজান বাম্পন্থীদের মধ্যেও লক্ষ্য করা যায়। যে ক্ষেত্রে তাদের মূলনীতিই হইল বিরোধিতা করা তখন ট্যাগিং করে ফেললে ঝামেলা কমে আরকি দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শেহাব এর ছবি
শেহাব এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।