• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

প্রথম শ্রেণীর পাঠ্যবই (সাধারণ শিক্ষা) - নারীপ্রসংগ

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৭/০৫/২০১৫ - ৭:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এটি যতটা না লেখা তার চেয়ে বেশি হল শব্দ করে চিন্তা করা। আমার সমস্যা হল নারী, জেন্ডার ইস্যু, সমাজবিজ্ঞান এসব বিষয়ে আমার কোনো পেশাগত প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা নেই, তবে আমার সৌভাগ্য হল আমার মা, বোন, জীবনসংগী সবাই স্বাধীন স্বাবলম্বী নারী। কাজেই আমার সঙ্গগুণ আছে। আমি সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যবইটি উল্টে পাল্টে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম এটা পড়ে কি আমাদের সমাজে মেয়েদের প্রতি যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গী আছে তার পরিবর্তন হবে নাকি আগের মত থেকে যাবে। যদি পরিবর্তন হয় তাহলে কি ভালোর দিকে নাকি খারাপের দিকে? আমি আসলে আমার কি কি চিন্তা তা লিখে যাব। এখানে বেশিরভাগ সময়ই দেখা যাবে আমি কেবল প্রশ্ন করে যাচ্ছি, উত্তর খুব একটি দিচ্ছি না। উত্তর না দেয়ার কারণ হল সামর্থ্যের অভাব।

১. পৃষ্ঠা ২

এখানে ছেলে আর মেয়ের সংখ্যা মোটামুটি সমান দেখানো হয়েছে। এটি ভালো কাজ। তবে চেহারাতে যেসব ফিচার্স দেখানো হয়েছে সেটি একটু বেশি হোমোজেনাস। কোনো চেহারা নেই যেটা দেখে বোঝা যায় এটি কোনো ধরণের আদিবাসী মেয়ের (যেমন, সাঁওতাল, চাকমা বা মনিপুরী) চেহারা। আমি বলছি না এখনই আদিবাসী বলতে কি বোঝায় তার ধারণা দিতে হবে। কিন্তু ওই ধরণের নাম আর চেহারাতে প্রথম থেকে অভ্যস্ত হতে ক্ষতি কি? এই ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্যও একই কাজ করা যেতে পারে।

২. পৃষ্ঠা ৫

এটি পড়ানোর সময় কোনো বাচ্চা যদি জানতে চায় 'বউ কথা কয় না কেন?' আর তার জবাবে কোনো শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি বলে 'মেয়েরা তো নতুন বিয়ে হলে লজ্জা পায়' তাহলে তো বিপদ। ক্লাশের বাচ্চা ছেলেরা সবসময় মেয়েদের দুর্বল জেনে বড় হবে। আমার এই আশংকা কি সঠিক?

৩. পৃষ্ঠা ১২

আমরা নিশ্চয়ই চাইনা 'কেবল ছেলেরা ঈদের দিন মসজিদে যাচ্ছে আর মেয়েরা সকাল থেকে সেমাই বানাচ্ছে যাতে ছেলেরা বাসায় এসে খেতে পারে' এই দৃশ‌্য সারা জীবন বাংলাদেশে থেকে যাক। আমরা চাই এমন বাংলাদেশ যেখানে ছেলে মেয়ে দুজনেই এক সাথে খাবার বানাচ্ছে, এক সাথে মসজিদে যাচ্ছে (মানে যারা এই প্রথায় বিশ্বাস করে) আবার ফিরে এসে একসাথে খাচ্ছে। কিন্তু বইয়ের ঈদের ছবিতে মেয়েরা কই?

৪. পৃষ্ঠা ৩০

এই ছড়াটির আমি তেমন কোনো সমস্যা পাচ্ছি না কিন্তু কেন যেন খুব খুঁতখুঁত করছে। বউ সাজার জায়গায় যদি একটি ছড়া দেয়া যায় যেখানো একটি বাচ্চা মেয়ে স্বপ্ন দেখতে সে বড় হয়ে রকেটে করে চাঁদে যাচ্ছে তাহলেও কি ক্লাশের বাচ্চাদের মনস্তত্ত্বে একই প্রভাব পড়বে?

৫. পৃষ্ঠা ৪২

এই ছড়াটি পড়লে আমার কল্পনায় কি দৃশ্য ভাসে সেটি বলি। বিয়ের পরে একটি মেয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে গেছে। তার বাবার বাড়িতে এখন তার ভাইয়ের রাজত্ব। সেখান থেকে লোক এসেছে তার বাচ্চাদের নিয়ে যেতে। মজার ব্যাপার হলো আমার আম্মার কিন্তু সেরকম কোনো ব্যাপার ছিল না। যেহেতু বাবা-মা দুজনেই কাজ করতেন তারা নিজ নিজ বাবা-মার কাছ থেকে আলাদা থাকতেন। তারপরও কেন যেন এই ছড়া পড়লে আমার ওই দৃশ্যটি চোখে ভাসে। আরো অনেকের চোখে কি এটি ভাসে? যদি ভাসে তাহলে এখানে কি কিছু করার দরকার আছে? এমন কোনো ছড়া থাকলে কেমন হয় যেখানে কর্মজীবি পিতামাতার শিশুদের গরমের ছুটিতে যাওয়ার আনন্দের গল্প আছে?

আমি শুধু বইয়ের যেসব ব্যাপারে আমার প্রশ্ন আছে সেগুলো দিলাম। এর বাইরে কিন্তু আরো ভাল ব্যাপার আছে। যেমন: ২০ নম্বর পৃষ্ঠায় একজন কর্মজীবি নারীর ছবি, ২৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বেশিরভাগ চরিত্র নারী ইত্যাদি।


মন্তব্য

স্বপ্নহারা এর ছবি

খুব ভাল অব্জারভেশন। (Y)

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নোলক এর ছবি

আমার সীমিত জ্ঞানে আপনার সাথে কিছু বক্তব্য যোগ করি।

১। আমি যতদূর জানি, ওরকমই ভাবা হয়েছিল- চেহারা বা মুখের ছবিতে বৈচিত্র্য থাকবে। কিন্তু শিল্পীর কারণে সম্ভবত তা আর হয়ে উঠেনি। শিল্পীকে দোষ দিয়েও লাভ নেই, কারণ দেখা যায়, দুদিন সময় দিয়ে বললো এর মধ্যে ৩০টি ছবি এঁকে দিতে হবে।

২। এটার ভিন্নতর ব্যাখ্যা আছে। বউ রাগ করে, অভিমান করে ইত্যাদি নানা কারণে কথা না বলতে পারে। আপনার আশঙ্কা সঠিক নয় এ কারণে যে, বইয়ের সাথে যে শিক্ষক সহায়িকা দেয়ার কথা প্রতিটি শিক্ষককে, সেখানে এসব বিষয় ব্যাখ্যা করে বলা আছে। এটাও বলা আছে, শিক্ষক শিশুদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন যে, তোমার কখন কখন কথা বলতে ইচ্ছে হয় না? শিশুরা তখন যা উত্তর দেবে, সেটার ভিত্তিতেও শিক্ষক উদাহরণ সাজাতে পারবেন।

৩। সব ছবিতে ছেলেদের ও মেয়েদের আলাদা করে ছবি দেয়া যাবে না। পাঠ্যবইয়ের কলবর ও উপস্থাপনার কারণেই এটা সম্ভব হবে না। এক অধ্যায়ে ছেলেদের ছবি থাকলে আরেক অধ্যায়ে মেয়েদের থাকবে- মোটামুটি এরকম একটা নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করা হয়েছে ২০১৫ সালের প্রবর্তিত বইগুলোতে। বি, দ্র, আপনি এটা কোন সালের বই দেখেছেন?

৪। এই বয়সী শিশুদের চাঁদে যাবার মতো কন্টেন্ট দেয়া শিক্ষা-মনস্তত্ব সমর্থন করে না। বরং পায়রা-টায়রা, কাল কি-পালকি, এরকম ছড়া বেশি করে দেয়ার কথা বলা হয়। এমনকি দ্বিরুক্ত শব্দ শেখানোর জন্য চলে হনহন, ছোটে পনপন, মাছি ভনভন ধরনের ছড়াও এই বয়সের জন্য উপযোগী। একটু বড় হলে অবশ্য এগুলো বাদ যাবে।

৫। আপনার পরামর্শটা আরও উপরের শ্রেণির জন্য ভাবা যেতে পারে। কিংবা পড়ার বইয়ের বাইরে যেসব সহায়ক বইয়ের কথা রেফার করা হয়, সেগুলোতেও এ ধরনের ছড়া থাকতে পারে।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আপনার মন্তব্য বেশ ভাল লাগলো। এই লেখাটির প্রয়োজনীয়তা এই মন্তব্যেই দৃশ্যমান। যা আমাদের ভাবায়, ভাবতে সাহায্য করে।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

শেহাব এর ছবি

১. এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানতাম না।
২. তাহলে তো মনে হয় ঠিকই আছে।
৩. এই ভারসাম্যের ব্যাপারটিও জানতাম না। আমি ইবুক.গভ থেকে নিয়েছি।
৪. তাহলে তো মনে হয় ঠিকই আছে।
৫. আচ্ছা ঠিক আছে।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। কাজের জিনিস।

নোলক এর ছবি

পাঠ্যপুস্তক রচনার সাথে যারা জড়িত, তারা এখন জেন্ডার-সেনসিটিভিটি নিয়ে অনেক সচেতন। তারপরও এ ধরনের লেখার প্রয়োজন আছে, তাতে প্রতিটি অধ্যায়ই ভিন্নভাবে দেখার অবকাশ মেলে। লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার অবজারভেশন। বাকি ক্লাসের গবেষণা একে একে আসলে ভালো হতো। তবে সেইসাথে ভালো দিকগুলো পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করে এনকারেজ করা প্রয়োজন।

Adnan এর ছবি

অসাধারন। কিছুদিন ধরে চিন্তা করছিলাম বাংলাদেশের টিভি কমার্শিয়ালগুলোতে প্রদর্শিত বিষয়গুলোকে নিয়ে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ত্বক ফর্সা করার ক্রিমের বিজ্ঞাপনগুলোতে বেশিরভাগই নারীদেরকেই দেখানো হয়। কিংবা, রান্নার তেল, রান্নাঘরের তৈজসপত্র, চা, নুডলস, ইত্যাদি ঘরকন্নার সকল কাজেই শুধুমাত্র মহিলাদেরকেই দেখানো হয়। রান্না বিষয়ে আমার আপত্তি দুটি বিষয়ে, ক) শুধু মহিলাদেরকেই কেন রান্নার দায়িত্ব দিয়ে দেয়া হল? খ) যেসব পুরুষ রান্না করতে পছন্দ করেন, এই ধরনে মিডিয়া স্টেরিওটাইপ কিন্তু প্রকারান্তরে ওনাদের প্রতি একধরনের অপমান। এই ধরনের আরো বিষয়গুলোকে নিয়ে একটি ডকুমেন্ট করতে পারলে খুব ভাল হয়।
সময় করে কোন প্রফেশনাল কাজ গুলো করলে অবশ্য খুব ভাল হত।

এক লহমা এর ছবি

বাঃ! লেখা এবং তাতে নোলক-এর উত্তর মনটা আশ্বস্ত করল - কাজ হচ্ছে, ভাল কাজ হচ্ছে। (Y)

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

শশধর এর ছবি

ভালো লাগলো। কিছু শিক্ষার্থী আছেন যারা প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজি, গণিত বই নিয়ে এ ধরনের কাজ করেছেন। তাদের নিজেদের পড়ালেখার অংশ হিসেবে করলেও কাজগুলো তথ্যবহুল। সেগুলো সচলায়তনে প্রকাশ করবার মত কিনা জানি না। তবে সবারগুলো একসাথে নিয়ে সম্পাদনা করতে পারলে গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিবেদন হতে পারে।

শেহাব এর ছবি

প্রকাশ করে ফেলেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কদিন ধরে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটা কাজ করার কথা ভাবছি। কিন্তু তার জন্য পুরনো পাঠ্যপুস্তকগুলো লাগবে। আমি কোথায় পাবো তারে?
চলতি পাঠ্য বইগুলো তো অনলাইনে পাওয়া যায়। প্রতিটি বই ধরে ধরে বইগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারলে ভালো হতো।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পুরনো মানে কত পুরনো? আর কোন বিষয়ের?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আয়নামতি এর ছবি

আপনার পর্যবেক্ষণগুলো ভালো লাগলো।
১ নং এর ক্ষেত্রে মনস্তত্ত্বাত্তিক একটা ব্যাপার আছে বলে মনে হচ্ছে।
বিশেষ করে চেহারা রেসভেদে ভিন্নতা বোঝানোর বিষয়ে এতো ছোটোক্লাসের বাচ্চাদের জন্য সেভাবে না করাই বোধহয় ভালো।
যদিও আমি এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ কেউ নই, তবে ডল এক্সপেরিমেন্টের চিন্তাটা মাথায় নিয়েই কথাটা বললাম। এভাবে চেহারা, গায়ের রং এর ভিন্নতা স্পষ্ট করা হলে শিশুদের মনে একটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, অন্তত ডল এক্সপেরিমেন্টের ক্ষেত্রে সেরকম ঘটে ছিলো। এখন আমাদের পাঠ্য পুস্তকে চেহারায় সেভাবে ভিন্নতা না আনাটা কী মনস্তত্ত্বের দিকটা বিবেচনা প্রসূত নাকি শিল্পীর তাড়াহুড়ো জনিত সঠিক জানিনা। তবে কারণ যেটাই হোক মন্দের ভালোই বলা যায়।

এই বয়সী শিশুদের চাঁদে যাবার মতো কন্টেন্ট দেয়া শিক্ষা-মনস্তত্ব সমর্থন করে না। বরং পায়রা-টায়রা, কাল কি-পালকি, এরকম ছড়া বেশি করে দেয়ার কথা বলা হয়। এমনকি দ্বিরুক্ত শব্দ শেখানোর জন্য চলে হনহন, ছোটে পনপন, মাছি ভনভন ধরনের ছড়াও এই বয়সের জন্য উপযোগী। একটু বড় হলে অবশ্য এগুলো বাদ যাবে।

নোলকের কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাই চাঁদে যাবার মত কন্টেন্ট শিক্ষা মনস্তত্ত্ব কেন সমর্থন করে না? এ ব্যাপারে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন। জানার কৌতুহল থেকেই প্রশ্নটা করছি। কারণ আমার তো উল্টোটাই মনে হচ্ছে যে স্বপ্ন দেখবার আকাশটা শিশুদের জন্য আরো বেশি করে খুলে দেয়া দরকার ছিল।

রানা মেহের এর ছবি

খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়।
আপনার বাই কাজগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম :-)

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।