এবার সেই সব সাংবাদিকের পালা

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: শনি, ১৫/০৮/২০১৫ - ৯:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলার পরের দিন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকরা যেসব সম্পাদকীয় লিখেছিলেন সেগুলো হল বিশ্বাসঘাতকতার এক একটি অনুপম নিদর্শন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এর চেয়ে কলংকিত অধ্যায় মনে হয় নেই। আমি এই লেখায় কয়েকটি সম্পাদকীয় আর তার সম্পাদকদের নামগুলো দিয়ে দিচ্ছি।

যদি কেউ এখনও বেঁচে থাকে আমি মনে করি জাতির সাথে তাদের বোঝাপড়ার এটাই সময়।

দৈনিক ইত্তেফাক
সম্পাদক: নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী

দৈনিক বাংলা
সম্পাদক: এহতেশাম হায়দার চৌধুরী

বাংলাদেশ অবজারভার
সম্পাদক: ওবায়দুল হক

বাংলাদেশ টাইমস
সম্পাদক: আব্দুল গনি হাজারী


মন্তব্য

অদিতি কবির খেয়া এর ছবি

এরা কি কি পুরস্কার পেয়েছিল জানতে ইচ্ছা করছে।

Abdul Hadi এর ছবি

A very well thought out blog item. Its high time to know, why those editors were convinced themselves about selling their ethics with cheap ideology? Did they ever thought that someone might ask question about their intellectual and moral ability? 14th December, 1971 to 15th August, 1975, is not too far apart, but, what those editors and what the people of Bangladesh showed that time, was a clear indication of declination of moral justice and lack of sense of fairness.

মুস্তাফিজ এর ছবি

২রা জুন ’৭৫ বাকশালে যোগদানের জন্য যে ৯জন সম্পাদক আবেদন করেছিলেন তাদের ভেতর ওবায়েদুল হক, নূরুল ইসলাম পাটোয়ারীর নাম ছিল। এহতেশাম হায়দার চৌধুরী স্বাধীনতার পর জাতির পিতার আনুকুল্যে পূর্বদেশ পত্রিকার দায়িত্ব নেয়। আব্দুল গনি হাজারী '৭২এ বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সেই সাথে অব্জারভারের প্রসাসকের দায়িত্ব নেয়। পরে তাকে সংবাদপত্র ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব দেয়া হয়।

...........................
Every Picture Tells a Story

শেহাব এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই চারটা পত্রিকা হচ্ছে সেই চারটা পত্রিকা যেগুলো ছাড়া বাকি পত্রিকাগুলোকে ১৯৭৫ সালের জানুয়ারীতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এই পত্রিকা চারটার প্রিন্টার্স লাইনেও দেখা যাচ্ছে 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে' লেখা আছে। সুতরাং এই পত্রিকার সম্পাদকীয় ঠিক ঐ সময়ে বাংলাদেশ সরকারের ভাষ্যকে প্রতিফলিত করে। তাই ১৬ই অগাস্টে প্রকাশিত পত্রিকা খুনী মোশতাক সরকারের গুণগান গেয়েছে।

একথা ভাবার কোন কারণ নেই চারটি পত্রিকারই প্রধান সম্পাদক এক রাতের মধ্যে ডিগবাজি খেয়ে খুনী মোশতাকের দলে যোগ দিয়েছিলেন। আমরা জানি যে, সশস্ত্রবাহিনীর তৎকালীন তিন প্রধান খুনী মোশতাকের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন। সেই সময়ের বাস্তবতার নিরিখে সেটাকে যদি আমরা সঠিক বলে মানি তাহলে এই সম্পাদকদের টেবিল থেকে (কার লেখা সেটা আমরা জানি না) ১৬ই অগাস্ট এই রকম সম্পাদকীয় যাওয়াটাও একই প্রকার বাস্তবতা। আমাদের দেখতে হবে এই সম্পাদকদের পরবর্তী ভূমিকা কী প্রকার ছিল। তার আলোকেই তাদেরকে বিশ্লেষণ করা উচিত। নয়তো ঠিক একই প্রকার অপরাধে ১৫/০৮/১৯৭৫ - ০৩/১১/১৯৭৫-এ কর্মরত বাংলাদেশের সকল সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে জাতিকে বোঝাপড়া করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

শুধু সম্পাদক আর সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথেই জাতিকে বোঝাপড়া করতে হবে না, তারও আগে তার নিজের সাথেই নিজেকে 'বোঝাপড়া' করতে হবে! 'জাতি' নিজে কি করেছিল সে সময়? কোন বড়মাপের বা সাস্টেইন্‌ড বিদ্রোহ, বিপ্লব, প্রতিরোধ, প্রতিবাদ, আন্দোলন, সংগ্রাম কিছু করেছিল? আদৌ কি উল্লেখযোগ্য কিছু করেছিল? নাকি আসলে অভিযুক্তদের মতই খুনিদের কথা উঠবস করেছিল? আমার তো মনে হয় শেষেরটাই সত্য। চালুনির কি সূঁচকে তোর ফুটো কেন, বা পাতিলের কেতলিকে তুই এ্যাত্তা কালা ক্যান জিজ্ঞেস করা সাজে?

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

একশ ভাগ সহমত। বিশেষত যখন আমরা জানি, নিকট অতীতেই (ফখরুদ্দিন/মইনুদ্দিন) দৈনিকগুলোর সেন্সরের অবস্থা কী ছিল। আর এর তুলনায় ৭৫ এর অবস্থা যে সহস্রগুন ভয়াবহ ছিল, তাতে আর সন্দেহ কী।

স্বয়ম

Abdul Hadi এর ছবি

"আমাদের দেখতে হবে এই সম্পাদকদের পরবর্তী ভূমিকা কী প্রকার ছিল।"
When can we know that? There are millions of of fools like me wandering around the surface of the earth, who doesn't know what really happened at that time, who doesn't know the states of those (pseudo)-traitors. would it be possible to write up something about the status of those editors for the next 10-15-20-30-current time line?
thanks in advance.

নজমুল আলবাব এর ছবি

সহমত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

যেহেতু ১৫ আগস্ট 'ফেরাউন' শেখ মুজিবের পতন ঘটেছে, ঐদিন থেকে বাকশাল (চালু হবার আগেই) বিলুপ্ত হয়েছে, অতএব ঐদিন থেকেই দেশে গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার থৈ থৈ জোয়ার বওয়া শুরু হয়। সুশীলেরা বহুদিন আমাদের এই কথা শুনিয়ে আসছেন। আমি, সুশীলেদের বক্তব্যের প্রতি পুর্ণ শ্রদ্ধা রেখে জানাচ্ছি- তাহলে নিশ্চয় এই চারটি সম্পাদকীয় সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে লেখা ও প্রকাশিত, তাইনা? (উপ্রে পাণ্ডবদা কি কইছে ভুইলা যান, উনি সুশীল নহেন)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অনল হক  এর ছবি

হেই সম্পাদক গুলারে মাথায় সুপারি রাইখ্যা খড়ম পিটা কইরা পড়ব। হেইডা তো বুঝলাম। কিন্তু একটা কতা কয়েন তো দাদা, লেখা গুলা সম্পাদক লিখল, তারে প্যাদাইলামও; কিন্তু যেই মালিক (সংবাদ পত্রের মালিক) পৈসা লইয়া, সুবিধা লইয়া কাম টা করাইতেছিল, তার কতাটা কয়েন না ক্যান? সেই মালিক গুলা অহন আর কি কি ব্যাবসা ফাইদা বইসা আছে? কোতায় কোন লাভের গুড় খাইতে আছে? সেই কতাটা জিগান না ক্যান?

হক হক অনল হক ।।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

একটা বিষয়ে খানিকটা কনফিউশনে পড়ে গেলাম। পঁচাত্তরের যে পত্রিকাগুলো নিষেধাজ্ঞার বাইরে ছিল, বাংলার বানী তাদের মধ্যে একটি, এরকমই জানি। তা যদি হয়, তাহলে ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, টাইমস আর অবজারভার সহ চালু মোট পত্রিকার সংখ্যা হয় পাঁচটি। আসলে কয়টি পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি প্রাপ্ত ছিল?
একটি বিষয়ে পাণ্ডবদার মতের সাথেই একমত, ১৬ই আগস্টের সম্পাদকীয় দেখে সম্পাদকদের প্রকৃত মনোভাব বোঝা যাবে না।

মুস্তাফিজ এর ছবি

বাংলাদেশ সরকার সংবাদপত্র অর্ডিন্যান্স ১৯৭৫এ প্রথমে ‘বাংলাদেশ অবজারভার’ ও ‘দৈনিক বাংলা’ এবং ১২২টি সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা ছাড়া বাকিগুলার ডিক্লারেশন বাতিল করেন। অর্ডিন্যান্স জারির অব্যবহিত পরে দৈনিক ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ টাইমস এই দুই দৈনিক সংবাদপত্রও প্রকাশের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। একই সাথে চট্টগ্রাম ও খুলনা হইতে একটি করিয়া এবং উত্তরাঞ্চলীয় কোনো একটি জেলা হইতে অপর একটি সংবাদপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়।
নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী, ওবায়দুল হক, শেখ ফজুলল হক মনি ও এহতেশাম হায়দার চৌধুরী যথাক্রমে দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ অবজারভার, বাংলাদেশ টাইমস ও দৈনিক বাংলার সম্পাদক নিযুক্ত হন।
ডিক্লারেশন বাতিল ঘোষণা প্রকাশের সাথে বাতিল সংবাদপত্রসমূহের কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যবৃন্দ ছিলেন মিজানুর রহমান, অধ্যাপক এমএ খালেদ এমপি, তথ্য ও বেতার দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারী আনিসুজ্জামান খান, তথ্য ও বেতার দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারী সলিমুজ্জামান, গিয়াস কামাল চৌধুরী, আমানুল্লাহ খান এমপি (বগুড়া) এবং আবদুল গনি হাজারী। আনিসুজ্জামান খান কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন।
উপরের চারটি ছাড়া বাকি যেগুলো ডিক্লারেশন বাতিল হয়নি সেগুলো হলো
সাপ্তাহিক :
বাংলাদেশ সংবাদ, ঢাকা।
বাংলাদেশ সি আই গেজেট, ঢাকা।
বাংলাদেশ গেজেট, ঢাকা।
বাংলাদেশ পুলিশ গেজেট, ঢাকা।
ডিটেকটিভ, ঢাকা।
ডাকবার্তা, ঢাকা।
যুববার্তা, ঢাকা।
সোভিয়েত সমীক্ষা ঢাকা,
সোভিয়েত রিভিউ, ঢাকা।
আরাফাত, ঢাকা।
প্রতিবেশী, ঢাকা।
বিচিত্রা, ঢাকা।
চিত্রালী, ঢাকা।
সিনেমা, ঢাকা।
বেগম, ঢাকা।
ললনা, ঢাকা।
দি পালস, ঢাকা।
মাসিক পত্রিকা : ঢাকা থেকে প্রকাশিত : পূর্বাচল, নবারুণ, বাংলাদেশ বেতার (ইংরেজি), কৃষিকথা, অগ্রদূত, বীমাবার্তা, সুখী পরিবার, বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, বুলেটিন অব স্ট্যাটিসটিক্স, ধানশালিকের দেশ, উত্তরাধিকার, গণকেন্দ্র, পুরোগামী বিজ্ঞান, সমবায়, শাপলা শালুক, স্ট্যাটিসটিক্যাল বুলেটিন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার কেসেজ, ইকোনমিক ইন্ডিকেটর অব বাংলাদেশ, ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স, বাংলাদেশ ট্যাক্স ডিসিশন্স, দি জার্নাল অব ম্যানেজমেন্ট বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী, ঢাকা ল’ রিপোর্টস, কারিগর, আজকের সমবায়, মা (বাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা)। ঢাকা হইতে প্রকাশিত : বই, দীপক, উদয়ন, ভারত বিচিত্রা, আল মাহদী। আততাওহিদ, নবযুগ (চাঁদপুর, কুমিল্লা) নাদায়ে ইসলাম, তাহাজীব, ঢাকা, সন্দীপন, পাবনা, আল-আমীন ঢাকা, , হেফাজত-এ-ইসলাম, ঢাকা, ঋতুপত্র, ময়মনসিংহ, ছোটগল্প ঢাকা, চন্দ্রাকাশ, ময়মনশিংহ, . ঢাকা ডাইজেস্ট, ঢাকা, দীপ্ত বাংলা, ধলেশ্বরী, দিগন্ত, ঢাকা গণমন, ফরিদপুর ইস্পাত, কুষ্টিয়া, যুগরবি, চট্টগ্রাম, ঢাকা হইতে প্রকাশিত গণসাহিত্য কপোত, মুক্তবাংলা, সওগাত, শতদল, কিংশুক, আবাহন, খেলাঘর, টাপুর টুপুর (চট্টগ্রামের), বিদিশা, রূপম, রোমাঞ্চ শুভেচ্ছা, ঝিনুক, চিত্রকর, গোয়েন্দা পত্রিকা, জোনাকী, চিত্রবাণী, চলচ্চিত্র, নিপুণ, খেলাধুলা, চিকিত্সা সাময়িকী, পারিবারিক চিকিত্সা (নোয়াখালী), হাকিমী খবর (ময়মনসিংহ), স্বাস্থ্য সাময়িকী (ঢাকা), শাশ্বতী চট্টগ্রাম, বিজ্ঞান সাময়িকী (ঢাকা), দি নিউ ইকোনমিক টাইমস ঢাকা, ফিনান্সিয়াল টাইমস, ঢাকা, উর্বর ময়মনসিংহ, রংপুর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা রংপুর, মৈত্রী ঢাকা।
বাকি কয়েকটার নাম জানিনা, তবে ‘বাংলার বানী’র ডিক্লারেশনও বাতিল করা হয়েছিলো।

...........................
Every Picture Tells a Story

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

চলুক

শেহাব এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

বাচ্চাকাচ্চা এর ছবি

বিশাল পড়াশোনা। ধন্যবাদ কিছু পাকা সংবাদের জন্য চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।