জরিনা বেগম। ষাটোর্ধ্ব বয়সে এসে হঠাৎই অনুভব করলেন এক বিচিত্র অনুভূতি। এখনো কানে বাজে জন্মমাত্র সুতীব্র চিৎকার- সবক'টি সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের প্রথম ওঙ্কার ধ্বনি। কিন্তু আজ এমন হলো কেন? দশ-দশটি বাচ্চা রেখেছে পেটে; প্রতিবারই স্ফীত পেটে গোপনে রেখেছে হাত- যেখানে প্রতিপালিত হয়েছে তারই রক্তে গড়া প্রিয় সন্তান। তবু এমন তো হয়নি কোনোদিন।
প্রিয় সন্তানদের একজনকে বানিয়েছে ডাক্তার। সেই পঞ্চাশেই কী এক রোগে জরিনা বেগমের জরাযূ অপারেশন করিয়ে এনেছে তারই ভ্রণ-উত্থিত ডাক্তার সন্তান। তবুও এই ষাটোর্ধ্ব বয়সে এসে কেন এমন হলো! নাড়ি-ছেঁড়া প্রিয় সন্তানের সুখের ছায়ায় থাকতে এসে আজ তাকেই বিদায় নিতে হচ্ছে আপন রক্তের অধিকার ছেড়ে।
জরিনা বেগমের বুকের ভেতরটা কঁকিয়ে ওঠে। গুণবতী-সোমত্ত-উর্বরা এক সুন্দরী মেয়েকে করে এনেছে ডাক্তার ছেলে বউ। অনাগত ভবিষ্যতে তার পেটের ভ্রণও হবে ফলবতী, হবে সে মা তারই মতো। কিন্তু কী নিষ্ঠুর এ বিদায়! আপন সংসারে সে-ই হয়ে গেছে আজ অপাংক্তেয়। জরিনা ভাবে, হা সে নিয়তি। সুন্দরী বউয়ের ছায়ায় জরিনা দেখতে পায় নিজেরই প্রতিচ্ছায়া- যেখানে প্রত্যেক বউ-ই হয়ে যাচ্ছে একজন শ্বাশুড়ী।
মন্তব্য
শক্ত গাথুনির টান টান গল্প... মন খারাপ হয়
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
সত্য।
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
চিরায়ত সত্য।
হ্যাঁ, আজ যে মেয়েশিশু, কাল সে বউ, পরশু মা, তরশু শাশুড়ি। এটাই তো গতিমুখ।
..................................................................................
অপরিপক্কতা সবসময় একরোখা হয়, আর পরিপক্কতা হচ্ছে সর্বগ্রাহী
-সেলিম আল দীন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আজ যারা দেয় হামাগুড়ি, কালকে তারাই বুড়ো বুড়ি।
আফসোস - জীবনটাকে মাত্র একবারই যাপন করা যায়।
কি মাঝি? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন