কেমন আছো, আকাশ? সুদীর্ঘ ষোলো বছর পর তোমাকে লিখছি। এর মাঝে নিশ্চয়ই বদলিয়েছো অজস্র আকাশ! দিন, মাস, বছর এবং যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে সময়ের আবর্তে। যে স্বপ্নীল আকাশ আমার আরাধ্য ছিলো সেখানে পূজারিণী বদল হয়েছে। সন্ধ্যাবেলা ধূপদানি হাতে তোমার দুয়ারে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য কেউ। যে তোমার যৌবনের আকাশে পাখি হয়ে উড়েছি অনেকদূর সেখানটায় কতোটুকু রক্তক্ষরণ ছিলো তোমার?
খাগডহরের রেলগেটে সে কী হট্টগোল! স্থানীয় বখাটে যুবকেরা কেড়ে নিতে চাইলো তোমার অস্তিত্বের আভরণ। আমি দাঁড়ালাম সামনে আগলে পথ। মাস্তান পাড়াতো ভাইয়েরা সব আমার চোখের দৃষ্টিতে সেদিন পুড়েছিলো। হার মানিনি আমি, হার মানেনি তোমার সহজ সরল বিনম্র ব্যবহার। পরে এসে তারা হাতজোড় করে মাফ চেয়ে গিয়েছিলো দুজনার কাছে।
অনেক পাগল হয়ে গিয়েছিলে শেষে আমাকে পাবার জন্য। এক নজর দেখার জন্য তোমার সে কী আকুতি! চাচারা দাঁড়ালো বাধা হয়ে, গুণ্ডাপাণ্ডাদের হুমকিও খেয়েছিলে। তবু দুর্দান্ত সাহসে প্রেমিক হৃদয় উন্নত করেছো তুমি। উচ্চস্বরে গেয়েছিলে অনন্ত প্রেমের জয়গান। তোমার অন্তরে আমি ছিলাম, আমার অন্তরেও তুমি।
তবে নিয়তির পরিহাস কী আর ফেলনা হয়! একদিন ভেঙে গেলো ধৈর্যটা তোমার। টুকটুকে সুন্দরী বউটা ঘরে আনলে যেদিন, খুব কেঁদেছিলাম সেদিন। কৈফিয়ত চাইতে যাইনি সেদিন তোমার কাছে । তুমি কেমন আছো সেটাই ছিলো জানবার। নতুন বউয়ের পাইনি দেখা। তুমি ছিলে খুব বিমর্ষ, বিধ্বস্ত, মনভাঙা। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলে আমাকে । একটি কথাও বের হয়নি তোমার মুখ থেকে।
রাজধানী শহরে বারবার তোমার ঠিকানা বদলানো পীড়া দেয়। প্রতিবার হাজার অনেক কষ্টে খুঁজে পাই তোমার আবাস। তুমিতো জানো আর কখনো মুখোমুখি হবো না তোমার। তবু তোমার কুশল আমাকে রাখতে হয়, আকাশের রং বদলানো দেখতে হয়ই। যে আমার অপরাধে তোমার মনে এতোটা ভাঙচুর তার খোঁজ না রেখে কি পারি? স্বপ্নের পাখিরা কি ওড়ে বাস্তবের আকাশে? আকাশ তো চিরকাল অসীম, অনন্ত। চোখ মেলে তাকে দেখবার ধ্যান শেষ হয় না কখনো!
ভালো থেকো আকাশ, অনেক বেশি ভালো।
৩০.০৩.২০০৮
মন্তব্য
ভাল-লাগলো চিঠির ভেতরের আকাশ ...
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
ধন্যবাদ কবি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
হুম...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।
ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
চমৎকার লাগলো.......
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
শুকরিয়া!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
চিঠিটা তো দেখছি নায়কের কাছে নায়িকার লেখা। কিন্তু এ কী নায়িকা দেখালেন গো, যে খাগডহরের মাস্তানদের হাত থেকে নায়ককে রক্ষা করে!
বিকল্পধারা (বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দল নয়)।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আমারও একই প্রশ্ন ।
হ। সেরহম নায়িকাই আছিলো!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
ভালো লাগল।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ধন্যবাদ।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
"যে আমার অপরাধে তোমার মনে এতোটা ভাঙচুর তার খোঁজ না রেখে কি পারি?"
কি এমন অপরাধ ছিল মেয়েটির? লেখা পড়ে মন খারাপের সাথে সাথে এই প্রশ্নটি থেকেই যায়।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
সংরক্ষিত প্রশ্ন। আপাতত থাক অজানার আঁধারে!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
- ভালো লাগলো, অনেক বেশি ভালো।
ভেবেছিলাম পড়া শেষে মন্তব্যে সারাহ-ফারাহ ভগ্নিদ্বয়ের কুশল জিজ্ঞেস করবো। সেটা আর করা হলো না শেষে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ।
সারাহ-ফারাহ বন্দনার কাজ চলছে।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন