ভালোবেসে নাম দিয়েছিলো সে- আকাশ। নীলাম্বরী প্রেম বেঁধেছিলো বুকে বাসা। অনেক আকাশ, যোজন যোজন পথ পাড়ি দিয়ে শেষে শীতের কুয়াশা ছেড়ে চেয়েছিলো উষ্ণতার স্বাদ। মানে- একদিন পাখিটা উড়াল দিয়েছিলো মুগ্ধতার সুনীল দিগন্তে।
ততোটা উদার হতে পারেনি পাখির প্রেমিক, তার দেয়া নামের প্রতিও করতে পারেনি সুবিচার; বিশালতার চৌকাঠে খুলবে হৃদয় তার সে রকম সাধ ও সাধ্য অর্জন করেনি তখন। সঘুমে স্বরূপ নিমগ্নতায় কষ্টেরা তার গড়তে পারেনি অন্য মুক্তাকাশ; মৌসুমী হাওয়া, মেঘের বিদ্যুৎ, অবিরাম বর্ষণে বর্ষণে ঢেকেছিলো সকল পথই তার।
সাত-সমুদ্র তেরো নদী ডিঙিয়ে দিগন্তের ওপারে পাখিটা আকাশে খুঁজছিলো বাসা, ঝাঁপটেছিলো ডানা। আকাশ কী আর পায় বনের আশ্রয়- এনে দেবে খড়-কুটো বাঁধতে বাসাটা পাখিটার!?
রোজ রোজ পাখি তবু আকাশেই ওড়ে। দিনশেষে আকাশকে রাঙায় কষ্টের লাল লাল রঙে।
০৫.০৮.২০০৬
মন্তব্য
সবশেষে এটাই...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
হা। ঐটুকুই।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
হা আকাশ... আসমান...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হায় পাখি! ভাসমান...
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
"রোজ রোজ পাখি তবু আকাশেই ওড়ে। দিনশেষে আকাশকে রাঙায় কষ্টের লাল লাল রঙে।"
'রোজ রোজ' এবং 'লাল লাল'- শব্দ দুটো দু'বার ব্যবহার করায়, অসাধারণ একটা ঘটনা ঘটলো; কবিতা হ'লো শেষ কিন্তু তার দ্যোতনা ছড়িয়ে পড়লো সীমানা ছাড়িয়ে। সার্থকভাবে। ঠিক যেমন রাতের অন্ধকার নেমে এলেও গোধূলির মায়া মনকে আবিষ্ট করে রাখে অপার মুগ্ধতায়।
এতো গেলো মাত্র শেষের কথা। কবিতাটি বেশ কয়েকবার মনোনিবেশ করে পড়ার পর মনেহয়েছে এ যেন আদি-অন্ত আমার গল্প, আমাদের গল্প, মানুষের গল্প, সভ্যতার এগিয়ে চলার ইতিহাস। পাখি শুধু আমার প্রতিচ্ছবি মাত্র, এসবের রূপক।
"ভালোবেসে নাম দিয়েছিলো সে- আকাশ। নীলাম্বরী প্রেম বেঁধেছিলো বুকে বাসা। অনেক আকাশ, যোজন যোজন পথ পাড়ি দিয়ে শেষে শীতের কুয়াশা ছেড়ে চেয়েছিলো উষ্ণতার স্বাদ। মানে- একদিন পাখিটা উড়াল দিয়েছিলো মুগ্ধতার সুনীল দিগন্তে।"
জীবনের শুরুতো এমনই হয়, প্রেরণার কিংশুক এভাবেই অঙ্কুরিত হয়, প্রেম বাসা বাঁধে বুকে। সভ্যতাতো এভাবেই শুরু করে হাজার বছরের পথ। স্বপ্ন এভাবেই ডানা মেলে মুগ্ধতার সুনীল দিগন্তে।
তারপর? আমি মনেকরি করি - কবিতাটিতে এখান থেকেই তার পরিনত হওয়ার লক্ষণ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। ফুটে উঠেছে জীবনের অনিশ্চয়তা, সংগ্রাম, বাঁধা-বিপত্তি আর প্রতিকূলতা। অবিরাম বর্ষণে বর্ষণে দুর্গম হয়ে উঠেছে পথ।
"সাত-সমুদ্র তেরো নদী ডিঙিয়ে দিগন্তের ওপারে পাখিটা আকাশে খুঁজছিলো বাসা, ঝাঁপটেছিলো ডানা। আকাশ কী আর পায় বনের আশ্রয়- এনে দেবে খড়-কুটো বাঁধতে বাসাটা পাখিটার!?"
ঠিক যেমন জীবন প্রত্যাশায় আর স্বপ্নে বুক বেঁধে খুঁজতে শুরু করে সম্ভাবনার সকল বন্ধ দরোজা। আশা-নিরাশার আলো-ছায়া খেলা করে তার চোখে। পথ এগিয়ে চলে, স্বপ্ন অবিশ্রান্ত রঙিন হতে থাকে, বেদনার নীল রঙ মুছে মুছে।
সবকিছু মিলিয়ে এক কথায় বলা যায় - জীবনের এ এক সার্থক চিত্রকল্প। এ শুধু আকাশ ও পাখির গল্প নয় - জীবন, স্বপ্ন আর বেঁচে থাকার এক অদ্ভূত ও প্রাণবন্ত সমন্বয়।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
অসাধারণ মন্তব্য। বিশ্বাস করুন- আমি লেখার সময়ও এতো ভাবিনি।
এজন্য কবিতার ব্যাখ্যা কবির নয়, পাঠকেরটাই সবসময় উৎকৃষ্ট।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
ভাল লাগলো খুব!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ধন্যবাদ প্রিয় গল্পকার।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নিসর্গের নন্দিত উপাখ্যান।
শুভেচ্ছা কবি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
অসীম-স্বাধীন, পরম্পরা।
বিশ্লেষণটা ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন