ছন্দ আছে দেহে, ছন্দ আছে মনে। দেহ ও মন তাই বাঁচে ছন্দে। একটুখানি ছন্দহীনতায় দেহে নামে অসুস্থতা। তাল পুরোপুরি কেটে গেলে নির্ঘাত মৃত্যু। দেহের মতোন মনের ছন্দহীনতায়ও আসে বিরহ, চিরবিচ্ছেদ। ছন্দের শুরু যেন সেই সৃষ্টির প্রারম্ভে, একেবারে ভাষার আদিতে।
এই যে আজন্ম সাথী ছন্দলয়তাল আমাদের সকলের মাঝে বিরাজমান- তার বিকাশ কথার বোলে, ছড়া কাটায়, কবিতা পাঠে কিংবা গানের সুরে। আমাদের মায়েরা ছড়া কেটে শিশুদের ঘুম পাড়ান। দাদী-নানীরা রসের কথা ছড়িয়ে দেন ছড়ায় ছড়ায়। আমাদের শৈশব জেগে ওঠে, কৈশোর স্বপ্ন দেখায় ছড়ার ছন্দে, সুরেলা বাণীতে।
যৌবনে ছড়া আবার প্রতিবাদেরও ভাষা হয়। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় ছড়ার ধ্বনি। কেউ কেউ ছড়ার চাবুক মারেন কথার মারপাঁচে, রম্য তালসুরে। কেউ আবার সময় আঁকেন ছড়ার ছন্দতুলিতে। কখনও কখনও রাজনীতির ভাষাও ফুটে ওঠে ছড়ার অক্ষরে, শ্বাসাঘাতে।
এক এগারোর দুই বছরের শূন্যতাকে ছান্দসিক পূর্ণতায় বেঁধেছেন প্রিয় ছড়াকার আকতার আহমেদ। সচলায়তনে যাঁর আবির্ভাব বেক্কল ছড়াকার হিসেবে সেই কিনা বছর শেষে পরিপূর্ণ ছাড়ার ভাণ্ডার দিয়ে জানান দিলেন তাঁর উপস্থিতি। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাঁর আলোড়ন তোলা বইয়ের নাম 'ছড়াজনৈতিক'।
আকতার আহমেদের ছড়ার সাথে আমার পরিচয় দেড় বছর ধরে। মূলত ইন্টারনেট ব্লগিংয়ের মাধ্যমে জানতে পারি তাঁর ছড়ার ক্ষুরধার ছন্দবাণী। সামরিক শাসন, ধর্মীয় গোঁড়ামি, মৌলবাদ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার তাঁর লেখনী। ছড়া লিখতে গিয়ে কখনও তিনি তথাকথিত রাজনৈতিক নোংরামির কাছে নিজের লেখক সত্ত্বাকে বিলিয়ে দেননি। সমস্বরে, সোচ্চারে লিখে গেছেন তাঁর বিবেকবান কাব্যিক প্রজ্ঞার ভাবধারাকে।
আলোচ্য গ্রন্থ 'ছাড়জনৈতিক'-এর ২৮টি ছড়ার মধ্যে প্রায় সবগুলোই সুখপাঠ্য। ছড়াগুলো লেখা হয়েছে মার্চ, ২০০৮ থেকে ডিসেম্বর, ২০০৮ পর্যন্ত। সবগুলো ছড়াই রাজনৈতিক ঘরানার। সেদিক থেকে গ্রন্থের নাম 'ছড়াজনৈতিক' সার্থক। আমার অনুভবে ভালোলাগা ছড়াগুলো হলো- উল্টে দেবো গণেশটি, আইকন, মামা-ভাগ্নে, ব্লাডি সিভিলিয়ান, চলছে এখন আর্মি শাসন, বিচার বিভাগ স্বাধীন এখন, আপনি কি স্যার ভয় পেয়েছেন?, আকালের নামতা, খোকার ছড়া, আর্কাইভ ৭১ ও 'রং মিস্তিরি' আলী আমান, আস্তে কন, আসেন সুখের বাদ্য বাজাই, দু'মুখো এ'নীতি কতো আর, কন তো এ'সব ক্যান করেছেন, সিক্রেট ও মূর্তি।
আমাদের ছড়াকাররা সাধারণত স্বরবৃত্ত বা লৌকিক ছন্দে লিখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। এদিক থেকে আকতার আহমেদ ব্যতিক্রম। তাঁর ছান্দিক মুন্সিয়ানায় বেশ কয়েকটি ছড়া লিখেছেন মাত্রাবৃত্ত ছন্দে। এর মধ্যে আইকন, মামা-ভাগ্নে, মোল্লার হাত, এইদেশে সব হয়, কল্পনা চাকমা, বড়ো সাহেবের মাথা, রাজার পোলারা বেঁচে থাক, দু'মুখো এ'নীতি কতো আর, নায়েবে আমীর হরিদাশ পাল উল্লেখযোগ্য।
আকতার আহমেদের ছড়ার বইটি পড়ে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছি লেখাগুলোর অন্তর্নিহিত ছন্দ, অন্তমিলে কোনো ভুলভাল পাই কিনা! দক্ষ ছড়াকার আমাকে সে সুযোগ দেননি। এজন্য তাঁকে হিংসে করতে ইচ্ছে হচ্ছে বারবার। মূলত এটি তাঁর প্রথম বই হলেও মনে হয়েছে আকতার আহমেদ ছড়া লিখেন অনেককাল ধরে। প্রথম বই বের করার ক্ষেত্রে তিনি যে সময় ক্ষেপণ ও সংযমের পরিচয় দিয়েছেন তা ধন্যবাদার্হ।
তবে নিন্দুকের ভাষায় দু'একটি কথা না বললেই নয়! লেখার তারিখ ও সময়ানুসারে শেষ পর্যন্ত ছড়া সাজানোর কারণে প্রথম দর্শন, প্রথম ছড়া 'একটা ছোট প্রশ্ন ছিল' এই ভালোলাগা বইয়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। সুমনের করা বইটির প্রচ্ছদ মোটামুটি, তবে ভিতরের সাজ-সজ্জা, বাঁধাই ভালো। কিছু বানানরীতিতে পুরনো ধাঁচ রয়েই গেছে- ভিনদেশী, ইদানীং। সুকুমার রায় অনুপ্রাণিত 'হাঁসজারু' নামের অবলম্বনে বইয়ের নামকরণ অতোটা চৌকষ শব্দযোগ বা সমন্বিত মনে হয়নি আমার কাছে। এ ভালো না লাগা অন্য পাঠকের কাছে ভিন্নতরও হতে পারে!
সবশেষে আকতার আহমেদ-এর 'ছড়াজনৈতিক' পড়তে পড়তে আমার চোখে ভেসে উঠেছে আশির শেষ ও নব্বই দশকের প্রাক্কালে প্রখ্যাত ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের স্বৈরাচার বিরোধী ছড়া শোনার দিনগুলোর ছবি। আকতার বইটি উৎসর্গও করছেন তাঁর নামে। আগামীদিনে আকতার আহমেদের মাঝে আমরা একজন সফল ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটনকে খুঁজে পাবো বলেই বিশ্বাস।
।।ছড়াজনৈতিক।।আকতার আহমেদ।। প্রকাশক- শুদ্ধস্বর।।প্রচ্ছদ ও অলংকরণ- সুমন।। পৃষ্ঠা- ৩২।। মূল্য- ৪০ টাকা।।
১১.০৩.২০০৯
মন্তব্য
আকতারের বইটার জন্য যে কি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি .........
এতো প্রতিভাবান একজন ছড়াকার, এতো অনায়াস ছড়াগুলো, যে মনে হয় বিনা চেষ্টাতেই, আপনা থেকেই ওগুলো লেখা হয়ে যায়
আকতার, তুমি কোন চুলায় গা ঢাকা দিয়ে আছো, শুনি??!! শিগগীর, শিগগীর লগ ইন করো তো তাড়াতাড়ি - নাইলে জানোই তো আমি কেমন খ্যাকখ্যাকে ......
আখতার ভাই বেক্কল, আমি তার ফ্যান
ইদানিং সে অচল, সচলে নাই ক্যান?
প্রিয় "জনৈক বেক্কল ছড়াকার" ওরফে "ছড়াকার" ওরফে আকতার আহমেদ, ভাই আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, অতি সত্ত্বর সচলায়তনে ফিরে আসুন। আপনার উপস্থিতি আমরা সবাই অনেক মিস করছি।
ছড়াগুলো নিয়ে তো বলার কিছুই নেই। দুর্ধর্ষ, বরাবরের মতোই। আকতার ভাইয়ের তুলনা তিনি নিজেই। তবে এটা বলতে চাই, বইয়ের নামটাও আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে।
এইটা লক্ষ্যনীয়... আকতার আহমেদ আর মৃদুল আহমেদ... দুই ব্যাটাই কিন্তু লাপাত্তা হইছে... গেলো কই?
ভাবতেছি এই চান্স... এই সুযোগে সচলের ছড়ার রাজ্য দখল করুম নাকি? স্বপ্নাহত নাই। অবশ্য সন্ন্যাসীদা ঘাপলা করবো।
আকতার নাই মৃদুলো নাই
ছড়া লিখবে কে?
ঘরে আছে নজু চোট্টা
কোমর বেঁধেছে
স্বপ্নাহত স্বপ্ন দেখে
সন্ন্যাসীদা পরী
নজু মিয়া ছড়া লেখে
আহা মরি মরি...
বাহ্ বাহ্ বাহ্... বহুত খুব বহুত খুব
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নইজ্যাআআআআআ - "বাহ্ বাহ্ বাহ্... বহুত খুব বহুত খুব" !!!
আকতার-মৃদুল নাই তো কি হয়েছে?
নজু ভাইয়ের ছড়া চমত্ কার!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
বাহ বাহ নজু ভাই
কেয়া বাত হ্যায়...কেয়া বাত হ্যায়...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ শিমুল।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
আহ, কী উত্তেজনা নিয়ে পড়েছি আকতার ভাইয়ের কবিতাগুলো। শুভেচ্ছা রইলো। শীত শেষে বসন্ত চলে এল, বেক্কল ছড়াকারের ঘুম ভাঙে না। ধুর!
রিভিউয়ে
কিন্তু, আকতার ভাই কই?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
অনেক ধন্যবাদ।
আকতারকে আমিও খুঁজছি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
দুর্দান্ত রিভিউ !
আকতারের 'ছাড়জনৈতিক' জরুরী অবস্থাকালীন সময়ের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সাহিত্যিক দলিল ।
আকতারের লেখার সাথে আমার পরিচয় ছোটদের কাগজ থেকে ।
এদেশের প্রথিতযশা ও প্রতিশ্রুতিশীল ছড়াকার আর তাদের ছড়ার সাথে পরিচয় সুত্রে , আমি মনে করি
আকতারের তুলনা কেবল আকতারই ।
ছড়াকার আকতারের ছড়ায় যে রাজনৈতিক চিন্তা ও সচেতনতা প্রকাশিত তার সাথে ব্যক্তি আকতারের রাজনৈতিক চিন্তা ও সচেতনতার খুব একটা পার্থ্ক্য নেই ।
আকতারের সাহিত্যচর্চা অব্যাহত থাকুক এই কামনা করি ।
বি দ্রঃ আমার ছেলে হাসিবও আকতারের ছড়ার ভক্ত হয়ে গেছে । প্রতিদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে আমাকে বাধ্যমুলক ভাবে আকতারের ছড়া পাঠ করতে হয় ছেলের সাথে ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
কিনেও এখনও পড়া হয়নাই, প'ড়ে বলতে পারবো। তবে, জলিল ভাই, আপনার লেখা ভালো লেগেছে। ছড়া'র ময়নাতদন্ত ভালোই করলেন!
তবে, একজন সৃষ্টিশীলের মধ্যে অন্য আরেকজন সৃষ্টিশীলকে খুঁজে পাওয়া কি জরুরি? না হ'লে হয় না?
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ সাইফুল আকবর খান।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
জ্বি, তা-ও ঠিক। বিদগ্ধেরা ক'রে আসছেন এরকম। তবে কি, আকতার ভাইয়েরটা জানি না, অন্য কারোটাই বলতে পারবো না, কিন্তু কখনও আমার লেখা দেখে কেউ যদি অন্য প্রসিদ্ধ (তা-ও আবার যিনি কি না এখনও লিখছেন) কারো সঙ্গে এমন তুলনা করে, যাতে আমার হঠাত্ মনে হয়ে উঠতে পারে যে সেই লেখককে আমার মধ্যে খুঁজে পেলে বা সে লেখকের মতো হতে পারলে কেবল পুরোপুরি সার্থক হবে আমার লেখা, তবে আমার নিজের অস্বস্তি লাগবে। আশা করি পরিষ্কার করতে পেরেছি পয়েন্ট-টা। অসুবিধা নাই।
ভালো থাকেন জলিল ভাই।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
Lina Fardows
বই মেলাতে কিনেছি এ বই
ছাড়জনৈতিক পড়ে ভক্ত যে হই
যার বই নিয়ে ব্লগে হৈ চৈ
সুপার ডুপার লেখকটা কই?
Lina Fardows
মন্তব্য ছড়াটি মজার।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
বই কিনে অটোগ্রাফ নিয়ে সেদিনই পড়ে শেষ করেছি বইখানা। সুযোগ পেয়ে আজ জানিয়ে গেলাম অসম্ভব ভালো লেগেছে।
আখতার এখন হয়তো ছড়ার বিষয় বদলাচ্ছে। তবে সচলরা সপ্তাহে একটা ছড়া পাবেনা-তা হবেনা ,তা হবেনা।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
নতুন বিষয়ে নতুন আঙ্গিকে আকতারের ছড়ার অপেক্ষায় আমিও আছি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
চমৎকার রিভিউ ...
=============================
ধন্যবাদ রায়হান আবীর।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
প্রিভিউ চমৎকার
আকতার ভাই জলদি সচলে হাজির হন। নইলে কিন্তু আপনার আইপি সহ ব্যাঞ্চামু
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
কীর্তিনাশাকে ধন্যবাদ।
...আমিও আকতারকে খুঁজছি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
এই বইমেলায় সবচেয়ে খুশি মনে কিনেছি ছড়ার বই দুইটা, এতো ছোট সাইজে আর এতো সস্তা... বই কেনার প্ল্যান না থাকার পরও সেইদিন বইটা কিনে ফেলতে পেরেছিলাম।
ওইদিন রাতেই সব পড়া শেষ, অধিকাংশ ছড়াই এর আগে সচলায়তনে চাখা হয়ে গিয়েছে।
মৃদুলদার সাথে যোগাযোগ হয়েছিলো মাঝে, উনি একটু ব্যস্ত। কিন্তু ছড়াজনীতিকার আকতার ভাই কই ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
আমার হিসেবে বাংলা ছড়ায় একেবারে নতুন ধারা যোগ করার ক্ষমতা আকতারের আছে
অথবা এর মধ্যেই সে তা যোগ করে ফেলেছে
না ছেলে ভোলানো
না সুকুমার
না পরিচিত রাজনৈতিক ঢং
একেবারে আলাদা একটা গতি আর দুর্দান্ত ভাষার দখল আছে আকতারের হাতে
কিন্তু মাঝে মাছে বিষয় নির্বাচন আর লিখে ফেলার পরে লেখাটার দিকে দ্বিতীয়বার তাকানোর ক্ষেত্রে বেশ অবহেলা করে আকতার
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
আকতার আহমেদের ছড়া নিয়ে আমার মুগ্ধতা তাঁর অতিথি-যুগ থেকে। তবে একটাই অভিযোগ আমার তাঁর প্রতি: অসহ্য রকমের বিনয়ী তিনি। প্রতিভার একটু-আধটু ঔদ্ধত্য থাকাটা, মনে হয়, আবশ্যক
"ভিনদেশী" নিয়ে আপত্তি নেই। তবে "ইদানীং" কি সত্যিই পুরনো ঘরানার বানান?
চার-চারটে ডিকশনারির একটিতেও "ইদানিং" পেলাম না। আনন্দ পাবলিশার্সের "কী লিখবেন কেন লিখবেন" নামের বইতেও "ইদানিং" না লেখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমীর সাম্প্রতিকতম অভিধানেও "ইদানিং" অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে জানলাম আজ দেশ থেকে। সব অভিধানেই "ইদানীং" এককভাবে বিচরণ করছে সদর্পে। তাই এটিকে পুরনো ধাঁচের বানান বলাটা, বোধ হয়, যৌক্তিক হয়নি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
আক্তারাহ্মেদ এর ছড়া নিয়া নয়া আর কি কমু, কড়ড়া ছড়ড়াবাজ!
কিন্তু এই বিনয়ী লোক্টা কই, দেখি না কেন ?
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
কিন্তু, সত্যিই তো! আকতার ভাই কই?!
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন