ছড়া লিখা আমার কাজ না। চেষ্টা করলেও খুব একটা পারি না। মুক্তিযুদ্ধের উপর বেশ কিছু ছড়া পড়েছিলাম কিছুদিন আগে। এ বিষয়টার প্রতি আমার বেশ দুর্বলতা এসে গেছে। সচলায়তনে অনেকে খুব সুন্দর ছড়া লেখে। ইচ্ছে করছে সবাই মিলে একটা মুক্তিযুদ্ধের ছড়া সংকলন বের করি! ৫২ থেকে ৭১ পর্যন্ত খন্ডবিখন্ড জানা-অজানা বিভিন্ন ঘটনা- ভাবনা নিয়ে লিখলে সমৃদ্ধ হতে পারে মুক্তিযুদ্ধের উপর ছড়ার ভান্ডার। চলুন না লিখে ফেলি সবাই মিলে!
১. গল্প শুনি
নদীর কাছে গল্প শুনি ঢেউ-এর
বলতে পারো জন্ম কোথায় কেউ এর?
মায়ের কাছে গল্প শুনি দেশের
তুমুল যুদ্ধ একাত্তরের শেষের।
নদীর ঢেউয়ে জোয়ার ওঠে জোরে
স্বাধীনতার সূর্য হাসে ভোরে।
ডিসেম্বরে মুক্ত হলো দেশটা
মুক্তিসেনা পরলো বিজয় বেশটা!
০৪.০৪.২০০৭
২. শহীদ সালাম
গাঁয়ের স্কুলের সেরা ছেলে নামটি তাঁর সালাম
যুদ্ধে গিয়ে কুড়ালো সে বীর সেনানীর নাম।
শত্রু মারে বুলেট ছুড়ে নেইকো কোনো ভয়
সিঙ্গুরিয়ার যুদ্ধে সে যে সবার আগে রয়।
হঠাৎ এসে বুলেট বেঁধে বুকের মাঝে তাঁর
দামাল ছেলের প্রাণ কেড়ে নেয় শত্র“ হানাদার!
স্বাধীন দেশে তাঁর নামেরই শহীদ সালাম স্কুল
হাজার ছেলের চোখের তারায় স্মৃতির ফোটা ফুল।
০৪.০৪.২০০৭
৩. বায়ান্নর রক্তশপথ
দেশ বিভাগে প্রভাব ছিলো
জাতিভেদের ধর্ম
বুকটা সবার জড়ায়ে ছিলো
বাঙ্গালিত্বের বর্ম।
মায়ের মুখের যে ভাষাতে
সবাই করি কর্ম
সেই ভাষাকে থামিয়ে দিতে
শাসক গলদঘর্ম!
আন্দোলনে গুলি চালায়
মারে আমার ভাইকে
তবু মিছিল গর্জে ওঠে
রাষ্ট্রভাষা চাইতে।
ভাই হারিয়ে পেলাম সবাই
মাতৃভাষা বঙ্গে
বায়ান্নর সেই রক্তশপথ
মাখছি চোখের অঙ্গে।
পেলাম ভাষা, পেলাম স্বদেশ
আমার সোনার বাংলা
হটে গেলো পাক-হানাদার
উর্দুভাষী জংলা।
তাইতো সবাই এই ভাষাতে
গাইছি দেশের গানটি
দুঃখ-সুখে মনের কথায়
ভরছি হৃদয়-প্রাণটি।
০৩.০৩.২০০৭
৪. ধলেশ্বরী পাড়ের মুক্তি সেনা
ঝুপঝুপাঝুপ দু’পাড় ভাঙে
ধলেশ্বরী নদীর
ওঁত পেতে রয় মুক্তি সেনা
রক্তচক্ষু অধীর
পাক-হানাদার আসছে ধেয়ে
স্টীমার ছোটে জলে
করবে দখল গঞ্জ-শহর
নিঠুর পায়ে দলে!
দেয় বাঁধা সব দামাল ছেলে
গর্জে ওঠে গুলি
ধলেশ্বরীর জলে ডোবে
পাক-সেনাদের খুলি।
শত্রুমুক্ত করতে যাঁরা
সেদিন দিলো প্রাণ
বাংলা মায়ের সেই শহীদের
কেমনে ভুলি নাম!
শৈশবের সেই বীর সেনারা
দেয় প্রেরণা প্রাণে
গড়বো এবার এ দেশটাকে
সবার অবদানে।
১৫.০২.২০০৭
মন্তব্য
ভালোই হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনি উদ্যোগ নিয়ে ছড়াকারদের বিষয় বেঁধে দিন। তারপর একটা করে গুঁতো দেন প্রতিদিন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
জলিল ভাই, ভালো লাগলো। ভাবনাটা বেশ ভালো।
চলুক তবে ছড়া লিখা..
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন