বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার উত্থান ঠেকানোর উপায়

শিক্ষানবিস এর ছবি
লিখেছেন শিক্ষানবিস (তারিখ: বুধ, ০৩/১২/২০০৮ - ১:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মূল রচনা: Stemming the Rise of Islamic Extremism in Bangladesh
লেখক: Sajeeb Wazed, Carl Ciovacco
প্রকাশক: Harvard International Review

১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। সে সময় থেকেই দেশটি সেক্যুলার মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় সামরিক অভ্যুত্থানের বেড়াজালে আটকে পড়লেও এই দেশ বারবার তার মূল গণতান্ত্রিক সেক্যুলার ব্যবস্থায় ফিরে এসেছে। কিন্তু, সম্প্রতি এই দেশটিতে ইসলামবাদের প্রতি নতুন ঝোঁক সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যা এর দীর্ঘদিনের সেক্যুলারিজমের সংস্কৃতি ভেঙে দিতে পারে। গত দুই বছর ধরে চলমান জরুরি অবস্থার সামরিক শাসনের কারণে এমনিতেই দেশের সরকার ব্য্যবস্থা রাজনৈতিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ইসলামবাদ দেশটির সংবিধান ও সেক্যুলার ভাবমূর্তির জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হয়ে দেখা দিতে পারে। আগামী ১৮ই ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রাক্কালে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে। কোন দল কিভাবে ইসলাম ও সরকারের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করার স্বপ্ন দেখছে তা এই খেলার একটি মুখ্য বিষয়। রহমানের আওয়ামী লীগ অনেক আগে থেকেই সেক্যুলারিজমের আদর্শ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে এবং এই দল নির্বাচিত হলে আশা করা যায়, বাংলাদেশে ইসলামবাদের পুনরুত্থান বাধাগ্রস্ত হবে। কিন্তু একই সাথে আওয়ামী লীগকেও তাদের কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে এবং কিছু নতুন বিষয়ের প্রয়োগ ঘটাতে হবে। নইলে তারা সেক্যুলারিজম ও গণতন্ত্রের ধারা ফিরিয়ে আনতে সফল হবে না। সফল হলে এই আওয়ামী লীগ শাসিত বাংলাদেশই কোন মুসলিম দেশে সেক্যুলার সরকারের একটি বৈশ্বিক উদাহরণ হয়ে দেখা দিতে পারে।

দেশের বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশী রাজনীতিতে গত দুই বছরের গোলযোগপূর্ণ অবস্থার মধ্যেই দেশের সামরিক সরকার দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে আটক করেছিল। তাদেরকে আটক করার কারণ হিসেবে কিছু ঘোলাটে দুর্নীতি মামলা দেখানো হয়েছিল। তারপরও আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশী ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) খালেদা জিয়া নিজ নিজ দলের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পেয়েছেন। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন এবং বর্তমানে চিকিৎসার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। অবশ্য খালেদা জিয়া এখনও মুক্তি পাননি। যদিও সামরিক সরকারের উদ্দেশ্য ছিল ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই দেশের সমস্ত জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের আটক করা, তথাপি এখন বোঝা যাচ্ছে, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা দুজনকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হবে।

বাংলাদেশীরা আরও একবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুটি দলের যেকোন একটিকে বেছে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগকে তারা ভালোরকম সেক্যুলার হিসেবে পাবে। বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর (এই দল ইসলাম ঘেঁষা সরকারকে সমর্থন করে) জন সমর্থন পাবে। গত জুলাইয়ের স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৩টি মিউনিসিপ্যাল আসনের ১২ টিতেই জয়লাভ করেছে। জাতীয় নির্বাচনের অবস্থা এরকম হলে বলা যায়, আসছে নির্বাচনে আওয়ামী লীগই ফেভারিট। নির্বাচনের এই ফলাফল জাতির জনক রহমানের কন্যা হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রীত্বের পদে আসীন করবে। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এরপরও যদি ইসলাম-ঘেঁষা দলের সমর্থন মিলিয়ে বিএনপি জিতে যায় তাহলে জিয়া আবারও প্রধানমন্ত্রীর পদে বহাল হবেন। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

বিএনপি-র পাঁচ বছরের শাসন এবং সামরিক সরকারের দুই বছরের শাসনামলে এই দেশে ইসলামী চরমপন্থা উৎসাহিত হয়েছে। নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগ এই চরমপন্থার বিরুদ্ধে নির্বাচনের আগে ও পড়ে সমান হারে আন্দোলন চালিয়ে যাবে, এই চরমপন্থী আন্দোলনকে থামিয়ে দেয়ার জন্য তারা সবসময়ই সোচ্চার থাকবে। দেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের (মৌলবাদী) প্রবেশের অন্যতম কারণ ছিল জিয়া ও বিএনপি-র ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের কাঠামো। তারা এই প্রচারাভিযানে ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীকে (জেআই) অন্তর্ভুক্ত করেছিল। বিএনপি যখন জামায়াতের সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে তখনই সরকারী দলের উপর জামায়াত কিছুটা প্রভাব ফেলতে শুরু করে। কোয়ালিশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে সরকারে জামায়াতের তেমন কোন প্রভাবই ছিল না। ২০০১ সালের আগে জামায়াত কোন নির্বাচনেই ৩ টির বেশী আসনে জয়লাভ করতে পারেনি। কিন্তু জামায়াতের সাথে বিএনপি জোট করার পরই সরকারী কাঠামোতে এই দলের প্রভাব বেড়ে যায়।

বিএনপি জামায়াতের উচ্চ মাত্রার ইসলামী মৌলবাদী ভিত্তির উপর খুব বেশী আস্থা রাখতে শুরু করেছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে পুনরায় একীভূত হওয়ার ব্যাপারে ইসলামবাদীদের ঝোঁক আছে। ১৯৭০-এর দশকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রহমানের নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে তার প্রতি আওয়ামী লীগ খুবই অনুরক্ত, ইসলামবাদীদের মধ্যে এ ধরণের কোন অনুরাগ নেই। এছাড়াও স্বাধীনতা-বিরোধী, জামায়াত ও বিএনপি-র ঐক্যজোটের সাথে দেশের ইসলামী মৌলবাদী গ্রুপগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পর্ক আছে। এই মৌলবাদী গ্রুপগুলোই ২০০৫ সালে সমগ্র বাংলাদেশে ৫০০ টির মতো সুপরিকল্পিত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এই ভয় প্রদর্শনের মাধ্যমে তারা নিজেদের ক্রমবর্ধমান শক্তির পরিচয় দিতে চেয়েছিল। এই ছায়া সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে জামাত-উল মুজাহিদ বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) এবং হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। এই গ্রুপগুলো জামায়াতেরই সামরিক শাখা। এরা দৃঢ়ভাবে সংবিধানের বিরোধিতা করে এবং শরীয়া নীতির ভিত্তিতে তৈরী সংবিধান দিয়ে গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমকে প্রতিস্থাপন করতে চায়।

বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থা বৃদ্ধি পাওয়ার আরেকটি কারণ সামরিক বাহিনীতে ইসলামবাদীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। ইসলামবাদীরা নিঃসন্দেহে মাদ্রাসাগুলোতে "আর্মি প্রবেশিকা পরীক্ষার" প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে সামরিক বাহিনীতে এই পন্থী লোকের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। আর্মির প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশের আপেক্ষিক জটিলতার কারণেই মাদ্রাসার এই প্রশিক্ষণটা খুব প্রয়োজনীয় ছিল। বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার শতকরা ২০-৩০ ভাগ, এজন্যই এদেশে সামরিক বাহিনীর চাকুরী খুব আকর্ষণীয় বলে বিবেচিত হয়। এতো উচ্চ চাহিদার কারণে এখানকার সামরিক বাহিনীতে রিক্রুটের সংখ্যা সীমিত। মাদ্রাসা প্রবেশিকা ক্যাম্পেইনের আগে ২০০১ সালে আর্মির মোট রিক্রুটের মাত্র ৫% মাদ্রাসা থেকে যেতো। কিন্তু ২০০৬ সালে বিএনপি শাসনামলের শেষদিকে এই হার বেড়ে ৩৫% এ পৌঁছেছে। যে দেশের মাত্র ৩৭ বছরের ইতিহাসে চার চারটি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে সে দেশের আর্মিতে এই হারে ইসলামবাদীদের প্রবেশ সত্যিই খুব বিপজ্জনক।

নতুনত্বের পথেঃ একটি সেক্যুলার পরিকল্পনা

দেশের সরকার পদ্ধতি যেহেতু সেক্যুলারিজমের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল, সেহেতু এর বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাকে খুব অরক্ষিত বলা যেতে পারে। যে দেশে গত পাঁচ বছরে বোরকা বিক্রির হার প্রায় ৫০০% বেড়ে গেছে আওয়ামী লীগ কি সেদেশে ইসলামবাদের প্রসার ঠেকাতে পারবে? উত্তর হলো হ্যা, যদি সে এখানে উল্লেখিত নবায়ন পরিকল্পনাগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে পারে। প্রথমত, মাদ্রাসার শিক্ষাক্রমকে আধুনিকায়িত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণ মানসম্পন্ন সেক্যুলার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাসপাতাল তৈরী করতে হবে। তৃতীয়ত, সামরিক বাহিনীতে অবশ্যই সেক্যুলার ক্যাডেট একাডেমি থেকে পাশ করা সেক্যুলার মনোভাবসম্পন্ন ছাত্রদের রিক্রুটমেন্ট বাড়াতে হবে। চতুর্থত, পরিচিত চরমপন্থী ধর্মীয় নেতাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সবশেষে, বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা দূর করতে হবে। বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা খুব বেশী, এদিক দিয়ে দেশটি পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা দেশগুলোর মধ্যেই আছে। তাই এ কাজটি করাই সবচেয়ে কষ্টকর হবে। শেষ পরিকল্পনাকে তাই সবচেয়ে বিমূর্ত বলা যায়। এই পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন ইসলামী আন্দোলনের জন্য দেশকে প্রতিকূল করে তুলতে পারে। আর এর মাধ্যমেই বাংলাদেশ পুনরায় তার সেক্যুলার মূলে ফিরে যেতে পারে।

মাদ্রাসা শিক্ষাক্রমের আধুনিকায়ন

মাদ্রাসাগুলো যেহেতু দেশেরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেহেতু এগুলো দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতার মধ্যে আছে। এর অধিকাংশই সৌদি আরবের দাতাদের কাছ থেকে আসা অর্থে চললেও, এগুলোতে দেশীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ম-কানুন প্রয়োগ করা যাবে না বলে কোন সংবিধি নেই। উপরন্তু, ইসলাম বা কোরআনের কোথাও বলা নেই যে, ধর্মের পাশাপাশি বিজ্ঞান, গণিত ও ইতিহাস পড়ানো যাবে না। মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থায় এই পরিবর্তন আনলে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে যে, পৃথিবীতে ধর্ম ছাড়াও অনেক কিছু আছে এবং ধর্মীয় পেশা ছাড়াও আরও অনেক পেশা আছে।

কার্যকরী, সেক্যুলার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাসপাতাল নির্মাণ

বাংলাদেশ গরীব দেশ, এই কথা বলে অনেকেই এদেশে মানসম্পন্ন সেক্যুলার বিদ্যালয় নির্মাণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। প্রকৃতপক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশীয় কর ও রাজস্বের মাধ্যমে এ ধরণের স্কুল তৈরী করা সম্ভব, এর জন্য প্রয়োজন কেবল বিষয়টির উপর যথাযোগ্য গুরত্বারোপ। এই স্কুলগুলোর প্রতিটি শিক্ষার্থীকে গণিত ও বিজ্ঞানের মৌলিক নীতিগুলো বুঝতে হবে এবং সেগুলো পড়তে ও লিখতে পারতে হবে। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলো শিক্ষার একটি ক্ষেত্রে যে একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করে আসছে এর মাধ্যমে তাকে প্রতিহত করা যাবে। যে জাতি উন্নয়ন, উৎপাদন এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে তার জন্য সৌদি আরব ও কুয়েতের অর্থে চলা মাদ্রাসাগুলোর মুখস্থ জ্ঞান (কোরআন মুখস্থকরণ) নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই অনুপযোগী। আর এর মাধ্যমে এমনিতেই জনগোষ্ঠীর স্কিল-সেট সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলো সুবিধা পায়। কারণ তারা অনেক সন্তান বিশিষ্ট দরিদ্র পরিবার থেকে রিক্রুট করে এবং তাদের এক বা দুটি সন্তানকে কোনরকম খাইয়ে-পরিয়ে শিক্ষিত করে তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়। যে দুই-এক সন্তানের হালচাষ না করলেও চলবে তার ভাগ্য তাই মাদ্রাসায় গড়ায়। সেক্যুলার স্কুলগুলো দরিদ্র পরিবারের জন্য এদিক দিয়ে মাদ্রাসার বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। জাতীয় সরকারের যথেষ্ট সহায়তায় এই সেক্যুলার স্কুলগুলো গড়ে উঠতে পারে এবং এগুলোতে দরিদ্র পরিবার থেকে রিক্রুট করা যেতে পারে। এর শিক্ষার্থীদের স্টাইপেন্ড হতে হবে খুব কম যাতে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের দিয়ে হালচাষ না করানোর ক্ষতিটা কাটিয়ে উঠতে পারে।

ইসলাম-ঘেঁষা প্রতিষ্ঠানের এ ধরণের বিকল্প গড়ে তোলার প্রক্রিয়া হাসপাতালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মানুষ যখন অসুস্থ হয় বা মুমূর্ষূ অবস্থা পড়ে তখন সে ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে। ইসলামী হাসপাতালগুলো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাধারণ বাঙালিদেরকে আরও চরমপন্থী জীবনাচারে আকৃষ্ট করে তোলে। এই ইসলামী হাসপাতালগুলোতে যে ইসলামবাদ ছড়িয়ে পড়েছে সেক্যুলার হাসপাতাল তার একটি এন্টিডোট হিসেবে কাজ করবে।

সেক্যুলার স্কুল থেকে সামরিক বাহিনীতে রিক্রুটমেন্ট বৃদ্ধি

মাদ্রাসা থেকে সামরিক বাহিনীতে রিক্রুটমেন্ট কমানোর জন্য তরুণদেরকে বিশেষ করে সেক্যুলার মনোভাবসম্পন্ন শিক্ষার্থীদেরকেও সামরিক প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতেই যে আর্মিতে সেক্যুলার শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণের সংখ্যা বেড়ে যাবে তা না, কিন্তু এর মাধ্যমে অন্তত মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে প্রতিযোগিতা করার মতো অবস্থা তৈরী হবে। মাদ্রাসাগুলোর আর্মি প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশিক্ষণকে বাঁধা না দিয়ে বরং সেক্যুলার স্কুলে এ ধরণের প্রশিক্ষণ শুরু করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমেই জামায়াতের সামরিক বাহিনী ও জাতিকে ইসলামবাদী করে তোলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করা সম্ভব। সামরিক বাহিনীতে এ ধরণের বিকল্প রিক্রুটিং ব্যবস্থা এই প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় সেক্যুলার ভিত্তির উপর গড়ে উঠা আদর্শিক ভারসাম্যে ফিরিয়ে আনতে পারে।

চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদের পুনর্বাসন

বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে মডারেট মুসলিম ধর্মবেত্তাদের এমন সব ফতোয়া ইস্যু করতে বলা যা দিয়ে জিহাদী আন্দোলনে লিপ্ত চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদের ফতোয়ার বিরোধিতা করা যাবে। বাংলাদেশে ফতোয়া নিষিদ্ধ হলেও এগুলো প্রতিনিয়ত ইস্যু করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে অনেক ক্ষেত্রেই এই ফতোয়া মেনে চলতে হচ্ছে। তাই বিরোধী ফতোয়া প্রণয়ন চরমপন্থী অগ্রযাত্রাকে দমিয়ে দিতে কিছুটা হলেও সক্ষম হবে। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন মডারেট ধর্মবেত্তা চিহ্নিতকরণ।

এই পুনর্বাসন ক্যাম্পেইনে চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদেরও টার্গেট করতে হবে। তাদেরকে চাপ দিতে হবে, যেন তারা তাদের পূর্বের উস্কানিমূলক মনোভাব ও কথাবার্তা অমূলক বলে প্রত্যাহার করে নেয়। ইসলামী চরমপন্থার মূলোৎপাটন করার ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী প্রভাব ফেলতে পারে। কাউন্টারটেররিজম বিশেষজ্ঞ পিটার বার্গেন ধর্মীয় নেতাদের উপর এ ধরণের হস্তক্ষেপকে কেমোথেরাপির সাথে তুলনা করেছেন যা চরমপন্থার মূলোৎপাটন করে। খুব স্বল্প সংখ্যক ধর্মবেত্তা যেহেতু পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক জিহাদীর জন্ম দেয়ে সেহেতু এই ধর্মবেত্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করাটা খুবই ফলপ্রসূ হবে। এই কেমোথেরাপি সহিংসতার উস্কানিদাতাকেই সরিয়ে ফেলবে। এমনকি বার্গেন উল্লেখ করেছেন, ব্রিটেনে বসবাসকারী তিনজন ধর্মবেত্তা (শাইখ উমার বাকরি মুহাম্মাদ, আবু হামজা আল মাসরিআবু কাতাদা) বিশ্ব সন্ত্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাই গুটিকয়েক মৌলবাদী ধর্মবেত্তাদের অপসারণ ও প্রগতিবাদী ধর্মবেত্তাদের উন্নয়ন পৃথিবী থেকে ইসলামবাদ নির্মূলে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

সৌদি আরব ও মিশর সম্প্রতি বেশ ক'জন চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদেরকে তাদের পুরনো উস্কানিমূলক কথাবার্তা প্রত্যাহার করে নিয়ে জিহাদীদের বিপক্ষে কথা বলাতে পেরেছে। বাংলাদেশ এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে। এমনকি এই দেশগুলোতে কারাগারে বন্দী জিহাদীদেরকে মডারেট ও সংস্কারবাদী ধর্মবেত্তাদের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে। তারা বন্দীদেরকে কোরআনের মডারেট ব্যাখ্যা বুঝিয়ে যাচ্ছেন। সৌদি আরবে প্রাক্তন-চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদের তালিকায় প্রথমেই থাকবেন শাইখ আল উদাহ্‌। জিহাদী আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি ১৯৮০-র দশকে ইসলামী জাগরণ আন্দোলন শুরু করেছিলেন যার নাম শাহ্‌ওয়া। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ওসামা বিন লাদেনের সমালোচনা করা শুরু করেন। তিনি বলেন, "ওসামা বিন লাদেন ইসলামকে অপহরণ করেছে।" তিনি যখন বুঝতে পারলেন তার পক্ষে স্বয়ং বিন লাদেনকে বোঝানো সম্ভব না তখন তিনি বিন লাদেনের অনুসারীদেরকে আল-কায়েদার সমস্যার কথা বোঝাতে লাগলেন। ভবিষ্যতের জিহাদী আন্দোলন এবং আল কায়েদার অনুসারীদের মোহমুক্তির ক্ষেত্রে উদাহ্‌র প্রভাব অনেক। তার সম্বন্ধে যত বলা হবে ততই জিহাদী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের আহত করা হবে।

সাইয়্যিদ ইমাম আল শরিফ (অন্য নাম "ডঃ ফাদ্‌ল") আরেকজন বিখ্যাত ধর্মবেত্তা যিনি জিহাদ ও চরমপন্থার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছেন। ডঃ ফাদ্‌ল ছিলেন আল-কায়েদের আদর্শিক গডফাদার এবং আইমান আল-জাওয়াহিরির পরামর্শদাতা। তিনি আধুনিক জিহাদের বাইবেল খ্যাত "The Basic Principles in Making Preparation for Jihad" বইটির রচয়িতা। এছাড়াও এ ধরণের জিহাদে অশংগ্রহণ করে শহীদ হওয়া যে কেউ সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে, এই ধারণার ভিত্তিও তিনি সরবরাহ করেছিলেন। অবশেষে ২০০৭ সালের নভেম্বরে ফাদ্‌ল আল-কায়েদার প্রতি তার সমর্থন উঠিয়ে নেন এবং এ নিয়ে "Rationalization of Jihad" নামে একটি বই লিখেন। পরবর্তীতে ফাদ্‌ল বিন লাদেন ও জাওয়াহিরিকে "চরম নীতিহিন" বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং মুসলিম তরুণদেরকে তাদের দ্বারা "seduced" হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। বাংলাদেশে একই ধরণের প্রভাবশালী ধর্মবেত্তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারকেও এই কাজটি করতে হবে। দেশের জনগণ যাতে বুঝতে পারে, দেশের মধ্যকার ইসলামী দলগুলোও একইভাবে ইসলামকে অপহরণ করে তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে।

উদাহ্‌ ও ফাদ্‌লের ফিরে আসার মূল্য অনেক। এরা রিপ্রোগ্রামিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এমন হয়েছেন তা বলা যায় না, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়াতে চরমপন্থী ধর্মবেত্তাদের এ ধরণের পুনর্বাসন খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশেও চরমপন্থী ধর্মবেত্তা ও আটক হওয়া জঙ্গীদের মধ্যে এ ধরণের প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন। সৌদি আরব ও আফগানিস্তানে বর্তমানে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া খুব কার্যকরভাবে চলছে। সেখানে পুনর্বাসিত জিহাদীদেরকে পরবর্তীতে কোন রকম জিহাদী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করার চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়। এই জিহাদীদের পরিবারের সদস্য বা তাদের স্থানীয় ধর্মবেত্তারাও প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা তাকে কোনরকম জিহাদী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখবে। সৌদি আরবে এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় "রি-ড়্যাডিক্যালাইজেশন" আর আফগানিস্তানে একে বলা হয় "অ্যামনেস্টি"। ইয়েমেন, ইন্দোনেশিয়া, মিশর এবং সিঙ্গাপুরেও ভিন্ন নামে অনুরূপ কার্যক্রম চলছে।

২০০৫ সালে বাংলাদেশে যে ৫০০ পৃথক পৃথক বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল তার দায়ে বন্দী হওয়া জিহাদীদের মধ্যে ৮২ জন এখনও কারাগারে আছে। এদেরকে নিয়ে এ ধরণের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। কারাগারে কর্মরত মডারেট ধর্মবেত্তাদের ক্ষমতা এবং কোরআনের সহিংস ব্যাখ্যার বাইরে অন্য ধরণের ব্যাখ্যা দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের পারঙ্গমতা এক্ষেত্রে খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এর মাধ্যমে অনেক জিহাদীও মডারেট পথে ফিরে এসেছে। বাংলাদেশেও এই নীতি কাজ করবে বলে আশা করা যায়।

দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা দূরীকরণ

ইসলামবাদীরা সম্প্রতি বাংলাদেশের দারিদ্র্যতাড়িত মানুষকে পুঁজি করেছে। তারা অতি পরিচিত কৌশল খাটাচ্ছে: মানুষকে বোঝাচ্ছে যে তারা সবরকম নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়াদি থেকে বঞ্চিত এবং একটি পরিপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতি পূর্ণ সমর্থনই তাদের এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে। অনেক গরীব বাংলাদেশীই এই ফাঁদে পা দিয়েছে এবং পরিপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্রে একটি অপেক্ষাকৃত উন্নত জীবনের আশায় চরমপন্থী হয়েছে। দারিদ্র্য যদি দূর করা যায় এবং দেশের মানুষ যদি বুঝতে পারে যে, প্রগতির অন্য পথ আছে তখন তারা আর র‌্যাডিক্যাল ইসলামের পথে যাবে না। সহজ কথায় বললে বলতে হয়, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে জামায়াত ও ইসলামবাদীরা দুর্বল হয়ে পড়বে।

সেক্যুলার আওয়ামী লীগের সর্বশেষ টার্মের শাসনের কয়েকটি সংখ্যার দিকে নজর দিলেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। শেখ হাসিনার পাঁচ বছরের সেক্যুলার শাসনের সাথে বিএনপি-র শাসনের তুলনা করলে এদেশে সেক্যুলারিজমের প্রভাব বোঝা যায়। ১৯৯৬ থেকে শুরু করে ২০০১ পর্যন্ত হাসিনার শাসনামলে দেশের দরিদ্রতার হার ৫৮% থেকে কমে ৪০% হয়েছে, স্বাক্ষরতার হার ৪৫% থেকে বেড়ে ৬৬% হয়েছে, গড় আয়ুষ্কাল ৫৭ থেকে বেড়ে ৬৪ বছর হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈদেশিক বিনিয়োগ ২০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি ৬.৪% থেকে কমে ১.৫৯% হয়েছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৪% থেকে বেড়ে ৬% হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে অফিস গ্রহণের শুরুতে বাৎসরিক ৪.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি থেকে অফিস ত্যাগের প্রাক্কালে ২.৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত হওয়া। উপরন্তু, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, খাদ্য উৎপাদন এবং সেক্যুলার সরকার ব্যবস্থা দেশে ইসলামবাদীদের সংখ্যা সীমার মধ্যে রেখেছে, সরকারে জামায়াতের ক্ষমতা নিম্ন পর্যায়ে রেখেছে।

২০০১ সালে বিতর্কিত প্রশাসন যন্ত্রের মাধ্যমে হওয়া নির্বাচনে শেখ হাসিনার অর্জনকে খাটো করে দেখা হয়েছে। অবশ্য আওয়ামী লীগের পরাজয় বিএনপি ও জামায়াতের শাসনে দেশের উপর কেমন প্রভাব পড়ে তা বুঝতে আমাদের সাহায্য করেছে। ২০০৬ সালে বিএনপি ও জামায়াতের শাসন শেষে দেশের দরিদ্রতার হার ৪০% থেকে বেড়ে আবার ৪৮% হয়েছে এবং স্বাক্ষরতার হার ৬৬% থেকে কমে ৬৩% হয়েছে। সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই নিম্নমুখী মারণজালে আরও অবদান রেখেছে। তাদের শাসনামলে দেশে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে, শিক্ষিতের হার কমেছে এবং ইসলামবাদ বেড়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে দেশের সামরিক একনায়কেরা যে দুর্নীতির ভিত স্থাপন করেছেন তার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে সেক্যুলারিজম ও ইতিবাচক শাসনের সাথে বিপরীত শাসন ব্যবস্থার তুলনা করাটাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।

আসছে নির্বাচনে যদি শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে তাহলে দরিদ্রতা, স্বাক্ষরতা এবং ইসলামবাদের এই গতিরেখার দিক পরিবর্তিত হবে। এই ডি-ড়্যাডিক্যালাইজেশন পরিকল্পনার সফলতার সম্ভাবনাও খুব বেশী। বাংলাদেশের মানুষ সেক্যুলারিজম ও বাংলাদেশের সফলতার মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে শুরু করেছে। এখনই সময় এই উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার। একটি মুসলিম দেশে ইসলাম ও সরকারের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে পাল্লা সেক্যুলারিজমের দিকেই ঝুঁকে পড়ছে। আওয়ামী লীগকে অবশ্যই এই সম্ভাবনার উপর ভর করে ভবিষ্যৎ নির্মাণের দিকে নজর দিতে হবে, এর মাধ্যমেই তার দীর্ঘমেয়াদী সফলতা আসবে।

*****

মূল লেখার লিংক: Stemming the Rise of Islamic Extremism in Bangladesh - Harvard International Review


মন্তব্য

অবনীল এর ছবি

সমস্যা একটাই। বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে? এই নীতিমালাগুলো প্রয়োগ করতে গেলেই ত তথাকথিত ইসলামের ধবজাধারীরা লাঠি-সোটা হাতে পথে নেমে পড়বেন আর আমাদের নীতিনির্ধারকগন যথারীতি তাদের কাছে নতি স্বীকার করবেন। এই অন্ধকার ঘুচবে কবে?

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

শিক্ষানবিস এর ছবি

অন্ধবকার ঘোচার কোন সম্ভাবনা তো দেখা যাচ্ছে না। প্রয়োগ তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত ভালো নীতিই তো তৈরী হলো না। অবশ্য ভালো নীতিমাত্রই প্রয়োগযোগ্য।

দিগন্ত এর ছবি

আপনি বড় বেশী আওয়ামী লিগ ঘেঁষা লেখা দিলেন।

"স্বাক্ষরতার হার ৪৫% থেকে বেড়ে ৬৬% হয়েছে"

এটা স্বাক্ষরতা না সাক্ষরতা? বাংলাদেশে কি স্বাক্ষর মাপা হয় না সাক্ষর মাপা হয়? সাক্ষর (literacy) মাপাই তো আধুনিক স্ট্যান্ডার্ড জানি। বাংলাদেশে সাক্ষরতা আমার ধারণামতে ৫০% এর কাছাকাছি।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শিক্ষানবিস এর ছবি

আমি আসলে আওয়ামী লীগ ঘেঁষা লেখা দিতে চাইনি। কিন্তু হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ববর্তী অবস্থায় এমন একটা লেখার অনুবাদ হলে মন্দ হয় না। এই ভেবেই দিয়ে দিলাম। এই লেখার অনেক দুর্বলতা এবং তথ্যগত ত্রুটি আছে। সেগুলোর কিছু এখানের মন্তব্যেই উঠে আসবে বলে মানি। আসলে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরীর জন্যই এই অনুবাদটা দেয়া।
এই লেখাটা পড়েই মনে হয় পুরা প্রোপাগান্ডা। তারপরও এখানে কয়েকটা ভালো প্রস্তাব আছে। সেগুলোই আমাদের পাওয়া।

স্নিগ্ধা এর ছবি

প্রিয় শিক্ষানবিশ - সাজিদ ওয়াজেদের প্রবন্ধটি অনুবাদ করার জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু প্রবন্ধটির প্রশংসা করতে পারলাম না, দুঃখিত! লেখাটার টোনটা একটু বেশী মাত্রায় naive মনে হয়েছে। বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও অশিক্ষা (এবং 'কু'শিক্ষা) দূর করলে ইসলামাবাদকে ঠেকানো যাবে, খুব ভালো কথা, কিন্তু বাংলাদেশের মত একটা দেশে এই 'দূর করা'টাই তো সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ!! সেটার মুখোমুখি হবার উপায় বাৎলালে বরং বুঝতাম।

মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করতে হবে - অর্থাৎ মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা থাকুক কিংবা বাড়ুক, কিন্তু তার আধুনিকীকরণ হওয়াটা কাম্য?

'সেক্যুলার' স্কুল বা হাসপাতাল বলতে এখানে লেখক কি বুঝিয়েছেন? সরকারী বা বেসরকারী যে কোন 'অ-ধর্মভিত্তিক স্কুল বা হাসপাতালই তো তাই?? সেগুলোর সংখ্যা বাড়াতে হবে? সেটা তো ইসলামবাদ ছাড়াও আরো বহু কারণেই বাড়ানো দরকার, ভীষণভাবে দরকার, কিন্তু কিভাবে......?

সৌদি আরবে বা মিশরে যেভাবে মডারেট মুসলিমবেত্তা দিয়ে পালটা ফতোয়া দেয়ানো হচ্ছে তাতে কদ্দূর কি লাভ হচ্ছে আমি ঠিক জানি না, কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তা একেবারেই অনুকরনীয় নয় বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশে ইসলামের আগ্রাসন কোন স্পিরিচ্যুয়াল গ্রাউন্ড থেকে হয় নি, হয়েছে 'পলিটিক্যাল ইসলাম' হিসেবে রাজনৈতিক গ্রাউন্ড থেকে। চরমপন্থী ফতোয়া বন্ধ করতে হলে মধ্যপন্থী, অপেক্ষাকৃত নরম ফতোয়া দিয়ে পালটা ব্যবস্থা না নিয়ে এটাকে একেবারে বন্ধ করেই দিতে হবে। ধর্মকে এক্ষেত্রে যদি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে এটাকে অনৈসলামিক বলে প্রচার করলেই তো হয়?

মন্তব্যটা একটু বেশীই লম্বা হয়ে গেলো বোধহয়। আসলে হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ তে এরকম দূর্বল প্রবন্ধ দেখে মনে হয় আমার বিস্ময়ের মাত্রাটাও একটু বেশীই হয়ে গেছিলো হাসি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ঠিক আমার কথাগুলোই বলে দিলেন। ফতোয়া ও কাউন্টার-ফতোয়ার ঝামেলায় যাওয়ার কোন মানে নেই। ফতোয়া জিনিসটাই বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত।

আমিও সেক্যুলার হাসপাতাল কথাটার তেমন অর্থ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এ'কথা সত্যি যে দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় জামাত মোটামুটি এক চেটিয়া ব্যবসা খুলেছে। ব্যাংকিং, ওকালতি, ইত্যাদিতেও এই কথা সত্য। এই ট্রেন্ড-কে রহিত করার কথা বলে থাকলে ঠিক আছে, তবে তা আরো স্পষ্টভাবে আসতে পারতো।

আমিও অবাক হলাম হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ-এ এরকম প্রোপাগান্ডা ও দুর্বল লেখা স্থান পাওয়ায়। হয়তো মূল লেখকের রাজনৈতিক পরিচয় এর পেছনে কাজ করেছে।

সেনাবাহিনীতে রিক্রুটিং-এর তথ্যটি অবাক এবং আশংকিত করার মত।

ইদানিং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ মডারেশনের নামে উগ্রবাদীদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এই লেখাটি মনে হল সেই প্রয়াসকে থিওরেটিক্যালি ভ্যালিডেট করার চেষ্টার অংশ।

আমি মনে করি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার এই কার্যক্রম বিশাল ভুল। নিজের ভোট ব্যাংকও দূরে সরে যাবে, ঐ উল্লুক গুলোও কাছে আসবে না।

বোমা ফাটানোর দায়ে আটকে থাকা জঙ্গীদের রিহ্যাবিলিটেশন... নাহ, আপু এক কথায়ই যা বলার বলেছেন -- naive.

স্নিগ্ধা এর ছবি

হয়তো মূল লেখকের রাজনৈতিক পরিচয় এর পেছনে কাজ করেছে।

এ কি হাসিনাতনয় নাকি?? আমি কিন্তু প্রথমে খেয়াল করি নি, ধন্যবাদ ইশতিয়াক !

শিক্ষানবিস এর ছবি

কোনই সন্দেহ নাই। লেখকের রাজনৈতিক পরিচয়ই এর পেছনে বেশী কাজ করেছে।

শিক্ষানবিস এর ছবি

প্রবন্ধটির প্রশংসা আমিও করতে পারিনি। কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার মনে করে অনুবাদটা দিয়ে দিলাম। আগেই অনুবাদটা করে রেখেছিলাম।
বাংলাদেশে যে চরমপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এতে সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। সজীব ওয়াজেদের লেখাটা পুরো প্রোপাগান্ডাধর্মী, এতে বেশ কিছু ভুল ও সরলীকৃত তথ্যও আছে। এসব নিয়ে এখানে আলোচনা হোক।
আলোচনা হোক চাচ্ছি এই কারণে যে, বাংলাদেশের এই নির্বাচনে আবার যদি চারদলীয় জোট আসে তাহলে ইসলামী চরমপন্থার অবস্থা আরও খারাপ হবে। আওয়ামী লীগের সম্ভাবনাই বেশী। মৌলবাদীদের পতনের জন্য এখন আওয়ামী শাসনের ভাল বিকল্পও তো নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে কি দেবে এবং সেটাকে আমরা কিভাবে গ্রহণ করবো সেটা নিয়েও এখানে আলোচনা হতে পারে।
মোট কথা এর পর অনুবাদ বাদ দিয়ে মৌলিক "বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার উত্থান ঠেকানোর উপায়" লেখা যাবে।
দুর্বল দিকগুলো ভালো করে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

দিগন্ত এর ছবি

বাংলাদেশে যে চরমপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এতে সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

- আমার মনে হয় আপনি অনেক বাংলাদেশী মানবাধিকার সংগঠনের লেখায় ভাল সুচিন্তিত মতামত পেয়ে যাবেন। এই লেখাটা অনেকটা আমেরিকা সরকারের কাছে গিয়ে আওয়ামী লিগের হয়ে দেওয়া প্রেসেন্টেশন মনে হল।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অনুবাদটা কিন্তু বেশ ঝরঝরে হয়েছে। আওয়ামী লীগ বেটার-ইভিল তত্ত্বে এগিয়ে থাকবে। অনেক সংশোধন দরকার এদের মধ্যেও। আপাতত এটা নিয়েই বাঁচতে হবে...

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হাসিনার পোলার লেখা - আওয়ামী লীগের সাফাই তো গাইবোই। তয় ওর মা যে জামাতের লগে মিলা 'আন্দোলন' করছিলো, গোলাম আজমের লগে মিটিং করছিলো, সেই কাহিনী গেল কই?!

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

আলমগীর এর ছবি

আগাগোড়া মিথ্যা কথায় ভরপুর।
১. বাংলাদেশ কখনই সে অর্থে সেক্যুলার রাষ্ট্র ছিলো না। ওআইসিতে যোগ দিয়েছে শেখ মুজিব কালেই। মিনিউসিপ্যালিটির নির্বাচন দলীয় পরিচয়ে হয় না (বলতে হলে বলতে হয়, সেটা করা বরং অসাংবিধানিক)। নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা কেবল নিজ দল থেকে পদত্যাগ করে। আলীগ সেক্যুলার দল না। বিশেষত '৯৬ এ যখন "আল্লাহ সর্বশক্তিমান" কে তাদের দলীয় শ্লোগান বানিয়েছে।

২. আর্মিতে মাদ্রাসার ছাত্রদের চাকরি ৫% থেকে ৩৫% হয়েছে - এ তথ্যের সঠিক উৎস জানা জরুরী। তবে শিবির যে আর্মিতে ব্যাপক সংখ্যায় ঢুকেছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। হাই কমান্ডের নির্দেশ মেনে অনেকে জামাত নেতাই তাদের ছেলেদের আর্মিতে দেয়। (এরা পড়াশোনাতেও নেহাৎ মন্দ হয় না।)

৩. বোরকা বিক্রির পরিসংখ্যানটার উৎস জানা প্রয়োজন। চরমপন্থী ধর্মীয় নেতাদের পুনর্বাসন? খাইসে আমারে।

৪. দারিদ্র্য দূরীকরণ করতে হবে। ঠিকাছে করেন। আলীগের সময় মুদ্রাস্ফীতি ১.৫৯% ছিল?

এক কথায়, বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা উন্থান বন্ধ করার উপায় কী? চোখ-কান বন্ধ কইরা আলীগকে ভোট দেও। আলীগকে যেভাবেই হোক ক্ষমতায় আসতে হবে। সজীবই কবছর আগে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে বাংলাদেশ তালেবান হটবেড হয়ে গেছে। আফগানিস্তান আর পাকিস্তানে গুতা খেয়ে সব তালিবান বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

আরেকটা প্রশ্ন, ইংরেজী লেখাটা আসলে কে লেখতে পারে?

-----------------------------------------

দুঃখিত, 'মাদ্রাসা = বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জামাত বা ওরকম কোন একটা ইসলামী রাজনৈতিক দল' এই সরলীকরণ থেকে বের হওয়া এই মুহূর্তে আমার পক্ষে সম্ভব না।

স্নিগ্ধাদি
বাংলাদেশে তিন ধরনের মাদ্রাসা আছে। ১. সরকারি (যেগুলো আলিয়া নামে পরিচিত), ২. বেসরকারি (কওমি নামে পরিচিত), ৩. ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান মালিকানাধীন। সরকারি মাদ্রাসাগুলোর অধিকাংশ উগ্র মতের, জামাতের নিয়ন্ত্রানাধীণ। বেসরকারিগুলো নীতির দিক থেকে জামাত বিরোধী। তারা আলীগকে ভোট দেয়, এরশাদকে দেয়, বিএনপিকে দেয় (পরিস্থিতি বুঝে হয়ত জামাতকেও দেয়)। এসব মাদ্রাসা সাধারণত উগ্র চেতনা ধারণ বা প্রচার করে না। ব্যক্তি মালিকানার মাদ্রাসাগুলো পুরো মালিক/প্রতিষ্ঠাতার মর্জি মত চলে। কিছু কিছু পীর এধরনের মাদ্রাসা চালনা করে। আবার জামাতও এ ধরনের কিছু করেছে। এরাও সামষ্টিক হিসাবে উগ্র না। সবকিছুর মূলে আছে মাদ্রাসা ছাত্রদের আর্থিক দৈন্য। মাদ্রাসায় যারা যায় তারা দারিদ্র্য সীমার বহু নীচে বাস করে। (ধনীর ছেলেপেলেরা আবার মাদ্রাসা ক্যাডেট স্কুল/কলেজে বলে কিছু একটাতে যায়।) কওমি মাদ্রাসাগুলো পুরো সাধারণ মানুষের দাক্ষিণ্যে (জাকাত/ফেতরা অনুদান) চলে। এ কারণেই তারা সাধারণ জনগণের মতকে মূল্য দেয়।

মাদ্রাসা বন্ধ করতে পারবেন না, উচিৎও হবে না। গণতন্ত্র মানলে যে কারও যে কোন শিক্ষা গ্রহণ করার অধিকার আছে। অস্ট্রেলিয়াতে ক্যাথলিক স্কুল, জিউ স্কুল, ইসলামিক স্কুল এসব মাদ্রাসা-কনসেপ্টের স্কুল। আমেরিকাতে শুনেছি হোম-টট কনসেপ্ট, কারণ তারা স্কুলের কারিকুলাম পছন্দ করে না।

দিগন্ত এর ছবি

বাংলাদেশ কখনই সে অর্থে সেক্যুলার রাষ্ট্র ছিলো না।

ঠিক কিভাবে আপনি সেক্যুলার দেশ সংজ্ঞায়িত করেন সেটা বোঝা গেল না। ওআইসি তে এমনও দেশ আছে যাতে মুসলিমেরা সংখ্যালঘু। তাছাড়া কোন আন্তর্জাতিক সংস্থায়
যোগদানের সাথে কি সম্পর্ক এর?


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আলমগীর এর ছবি

আপনি লেখাটির দ্বিতীয় লাইন পড়ুন। জয় বলেছেন "সেক্যুলার মুসলিম"। সেক্যুলার আবার মুসলিম কীভাবে হয়? আমি "সে অর্থে" বলতে তাই বুঝিয়েছি।

সেক্যুলারের অর্থ আপনি যা জানেন আমিও তাই জানি।

কাগজে কলমে থাকলেই হয় না। রাষ্ট্র যারা চালান, যারা নিজেদের সেক্যুলার দাবী করেন তাদের চিন্তা-চেতনায়-আচরণে সেটার প্রকাশ থাকা জরুরী। আলীগ সেক্যুলার নয়। এর নেত্রী নিজেকে ইসলামি প্রমাণ করার জন্য হজ্ব করেছেন, মাথায় পট্টি বেঁধেছেন। শপথ নেয়ার সময় হাতে তসবী রেখেছেন। ধর্ম-কর্ম করলে কারো কোন আপত্তি নেই, কিন্তু ভোট বাড়ানোর জন্য সেটা প্রদর্শন করাতে আপত্তি আছে।

ওআইসি তে এমনও দেশ আছে যাতে মুসলিমেরা সংখ্যালঘু।

আমার জানা নেই, নাম বলুন।

ওআইসি ইসলামিক দেশসমূহের সংগঠন। ইসলামিক কাজ-কারবার প্রমোট করাই এর উদ্দেশ্য। এতে যোগ দেয়া নিয়ে শেখ মুজিবের উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন গান্ধী। বাংলাদেশের আইইউটি (অনেক সচল সেখানে পড়েন, এ লেখার অনুবাদক শিক্ষানবিস নিজেও) ওআইসি প্রতিষ্ঠিত, ওআইসির টাকায় চলে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি কেবলমাত্র ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের মুসলিম ছাত্রদের জন্য।

৯/১১ এর পর সন্ত্রাসের সংগা নির্ধারণে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ওআইসির খুব সমালোচনা হয়েছে। ইসলামি সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না ওআইসি।

দিগন্ত এর ছবি

ওআইসি তে আছে বেনিন, আলবেনিয়া, উগান্ডা ... তিনটে মনে পড়ছে। বাকি উত্তর পড়ে দিচ্ছি ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শিক্ষানবিস এর ছবি

ওআইসিতে যোগ দিয়েও সেক্যুলার থাকা যায়। কিন্তু নিজেদের রাজনীতির মটো হিসেবে "আল্লাহ - সর্বশক্তিমান" রেখে অবশ্যই সেক্যুলার থাকা যায় না। সেদিক দিয়ে আওয়ামী লীগ আসলেই এখন সেক্যুলার নেই। কিন্তু ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত এই দল সেক্যুলার ছিল। তাদের সংবিধানে তো সেক্যুলারিজম আর সোশ্যালিজমের কথা সরাসরিই ছিল। পুরোপুরি মানা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের মতো দেশে পুরোপুরি মানা সম্ভবও না। তাই শেখ মুজিবের ওআইসি-তে যোগদানকে সেক্যুলার বিরোধী বলাটা যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে না। বাংলাদেশের উপযোগী সবগুলো জোটেই যোগ দেয়া প্রয়োজন ছিল।

এটা ঠিক, ওআইসি-তে মুসলিম সংখালঘু দেশও আছে। আর ওআইসি-র মধ্যে সে অর্থে কট্টর মনোভাব নেই। একসময় বাদশাহ ফাহ্‌দ এমনটি করতে চেয়েছিলেন। তিনি মসজীদে নববীর বারান্দায় বসে পুরো মুহাম্মাদী কায়দায় ওআইসি গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। সে বারান্দায় এদেশের জিয়াউর রহমানও ছিলেন। কিন্তু ভাগ্য ভালো সেরকম ভাবে হয়নি।

আর আইইউটি সেদিক দিয়ে আসলেই ধর্মবাদী। আইইউটি-র প্রশাসন ধর্মবাদী হয়ে পড়েছে ওআইসি-র জন্য নয়। হয়েছে বাংলাদেশের হুজুর সম্প্রদায়ের কারণে। আমাদের শিক্ষকের মধ্যে অনেকেই হুজুর। এর আগের ভিসি-ও দাড়ি-টুপি পরতেন। বর্তমানের ভিসি তাও কিছুটা সাইজে আছেন। আমি মনে করি আইইউটি-র সর্বজনীনতা বাড়াতে হলে
- এতে সব ধর্মের শিক্ষার্থী নিতে হবে (আপাতত শুধু ওআইসি দেশ থেকে)
- ছাত্রীদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
কিন্তু এটা হওয়ার আপাতত কোনই সম্ভাবনা নেই। ভার্সিটিটা তাবলীগে ছেয়ে যাচ্ছে।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সবাই প্রায় সবকিছু বলে ফেলেছেন, আমি খালি একটা কথা বলি,
সজীব জয়ের আর্টিকেলে তিনি যেসব জায়গায় Islamism শব্দটা ব্যবহার করেছেন, আমি মনে করি আপনি সচেতনভাবেই তার অনুবাদে "ইসলামবাদ" শব্দটা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সেগুলোকে কোন চারজোটপন্থী বুদ্ধিজীবি যদি কায়দা করে "ইসলাম" অথবা "ইসলামিক ভাবধারা" হিসেবে অনুবাদ করে -- তাইলেই আওয়ামী লীগ গেছে! বিএনপি'র হাতে আর কি একটা গোলা তুলে দেয়া হলো!

কোরাণ থেকে যেমন টুকরা টুকরা আয়াত কোট করে পাবলিক নানারকম ব্যাখ্যা দাঁড় করায়, একইভাবে এই লেখা থেকে টুকরা বাক্যরে সজীব ওয়াজেদের উক্তি হিসাবে ব্যবহার করে চারজোট ভালোই মাস্তি করতে পারবে।

যেমন একটা উদাহরণ দেই, ১ম প্যারার ১০ম বাক্যের শেষাংশ

এই দল (আওয়ামী লীগ) নির্বাচিত হলে আশা করা যায়, বাংলাদেশে ইসলামবাদের পুনরুত্থান বাধাগ্রস্ত হবে

এটাকে যদি এভাবে লিখে কেউ পোস্টার ছাপে (হার্ভার্ডের আর্টিকেলটার ইমেজসহ),

আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হলে আশা করা যায়, বাংলাদেশে ইসলামের পুনর্জাগরণ বাধাগ্রস্ত হবে -- সজীব জয়

বারোটা বেজে যাবে, এটা ভারত জুজুর চেয়ে কম ইফেকটিভ হবে বলে মনে হয়না

কে জানে, এই কমেন্ট যখন লিখতেছি তখন হয়ত প্রেসে এইটা ছাপা হইতেছে মন খারাপ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শিক্ষানবিস এর ছবি

নাহ্‌, চারজোটপন্থী কারও ইসলামবাদের পরিবর্তে ইসলামী পুনর্জাগরণ লেখার সম্ভাবনা নেই। কারণটা খুব ইন্টারেস্টিং। আসলে আমি এই যে অনুবাদটা করলাম এটাই চারজোটপন্থীদের হাতে যাচ্ছে। আমার বাবা-মা জামাতপন্থী। আমার বাবাই আমাকে এই লেখার হার্ড কপি দিয়ে অনুবাদ করে দিতে বলেছেন। অন্য কিছু হলে এটা ওটা বলে এড়িয়ে যেতাম। কিন্তু এটা পাওয়ার পর মনে হলো সচলেও দেয়া যাবে। অনুবাদটা তাই করলাম। নইলে কার ঠেকা পড়েছে এমন আর্টিকেলের অনুবাদে হাত দেবার দেঁতো হাসি

তবে আপনি ঠিকই বলেছেন। জয়ের বেশ কিছু শব্দ ও বাক্যকে একেবারে সামাজিক ট্যাবু হিসেবে ব্যবহার করার অবকাশ আছে। আওয়ামী লীগ বোধহয় এরকম অসম্পূর্ণ ও অবাস্তব পরিকল্পনার কথা বলে নিজেদেরই ক্ষতি করলো। অবশ্য এতে আরেকটা বিষয়ও প্রমাণিত হচ্ছে, দেশীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে কারও সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে এগোনোর চিন্তাভাবনা নেই। এ কারণেই হার্ভার্ড রিভিউয়ে জয় পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য দিয়ে নিজের মন মতো একটি লেখা লিখে দিতে পারলেন।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"আমার বাবা-মা জামাতপন্থী। আমার বাবাই আমাকে এই লেখার হার্ড কপি দিয়ে অনুবাদ করে দিতে বলেছেন। "

তারমানে এটা নিয়ে চারজোট অলরেডী কাজ করা শুরু করে দিয়েছে!
আপনি কি নিশ্চিত এটার মডিফিকেশন হবেনা? জোটে চতুর-ধুরন্ধর মাথার লোক বেশ ভালোই আছে বলে মনে হয়

"অবশ্য এতে আরেকটা বিষয়ও প্রমাণিত হচ্ছে, দেশীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে কারও সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে এগোনোর চিন্তাভাবনা নেই। "

এই কথাটাই বলে আসছি। আমাদের রাজনীতিবিদেরা যতই গনতন্ত্রের বাহক, জনগনের কাছাকাছি -- এসব হোননা কে, এই "সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে এগোনোর" এ্যাবিলিটিই এদের নেই, বিশেষ করে রাষ্ট্রের নির্বাহী কাজে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

লেখাটা পড়ে শুধু একটি কথাই বলার আছে। কস কী মোমিন?

তবে শিক্ষানবিসকে সাধুবাদ এই দীর্ঘ বিরক্তিকর লেখাটা ধৈর্য ধরে বসে একটি ঝরঝরে অনুবাদের মাধ্যমে আলোচনায় নিয়ে আসার জন্যে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমিও বলি, কস কী মোমিন?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শিক্ষানবিস এর ছবি

আমিও বলি। কস কী মোমিন?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

অনুবাদ কর্ম ভালো হয়েছে ।

Masudur Rahman এর ছবি

I am really surprised to read the comments made by different contributors. I do not have any objection about the contributors views about the article. But I am very surprised about the contributors lack of knoeledge about the Islamization of Bangladeshi politics and economy and its impacts in our life. The whole power system has been captured by the fundamentalists people. It is very difficult to find secular mind people in the higher position of civil and military buracray and in the judicary. Even the media has been dominated by the fundamenatlist people now. I think theinability of our Chief Advisor and Army Chief to start a judicary process against war criminls in Bangladesh shows how much the Islamic fundamentalist are powerful in this country. Both CA and Army Chief condem the war criminal s but can not do anything. What a Irony the CA had to met with Mojaheed while he was wanted by the police. Will the contributors of Sachalayton suggest the way to beat these funadmentalist and their politics in Bnagladesh. Rtaher blaimng AL for their wrong doing and ignoring BNP their allies activities and dishonest politics.

Masud

হিমু এর ছবি

আপনি কন্ট্রোল + অল্ট + পি চাপ দিলে ফোনেটিক কীবোর্ডে বাংলা লিখতে পারবেন। সবাই যখন কষ্টেসৃষ্টে বাংলা লিখে যাচ্ছেন, তখন কাউকে ইংরেজিতে লিখতে দেখলে একটু বিরক্ত লাগে।

মাসুদ ভাই একটু চিন্তা করে বলুন তো, মৌলবাদীদের দমনের এজেন্ডা আসলেই আওয়ামী লীগের আছে কি না? আর ফট করে যে বলে দিলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদের বিস্তার সম্পর্কে সচলের লেখকদের জ্ঞানের অভাব আছে, এটা কী দেখে বললেন? জয়ের একটা অগোছালো লেখার সমালোচনা করলেই বাংলাদেশে মৌলবাদ সম্পর্কে মূর্খ বলবেন কাউকে? এটা কি ঠিক? আমার তো মনে হয় বাংলাদেশে মৌলবাদ সম্পর্কে যদি কারো কুসুমগরম ধারণা থাকে তো সেই ব্যক্তি জয় নিজেই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

লেখাটির চেয়ে প্রায় সবাই দেখছি লেখকের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। হতে পারে সমালোচকদের চেয়ে মূল লেখেকর জানার পরিধি কম। আশা করি হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে এ ইস্যুতেই আপনাদের মূল্যবান জ্ঞানগর্ভ এবং সঠিক তথ্য নির্ভর লেখা পড়েত পারবো শীগিগরই।

তবে আমার ব্যক্তিগত ধারনা প্রবন্ধটিতে বাংলাদেশের ইসলামবাদ ও জঙ্গীবাদ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে মূল সমস্যা তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি প্রকট। অন্তত গত ৬ বছরে কর্মসূত্রে জঙ্গীপ্রবণ এলাকা ঘুরে এবং সংশ্লিস্ট (প্রশাসন..রাজনৈতিক দল... অরাজনৈতিক সংগঠন... স্থানীয় সাধারন মানুষ...মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক (সাধারন ও জঙ্গী উভয় ধরনের) দের সঙ্গে কথা বলার যা সুযোগ পেয়েছি তার ভিত্তিতে আমার এই ধারণা হয়েছে।

আর সামরিক বাহিনী !! মাত্র ৩৫ % !!! দু:খিত আর কিছু এখন বলা যাচ্ছেনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

কমেন্টগুলা উপভোগ্য হয়েছে। সমালোচদের কেউই কিন্তু অল্টারনেটিভ কোন পথ দেখানোর প্রয়োজনিয়তা না দেখেই লেখককে তুলাধুনা করতে ব্যস্ত। আশা করি মৌলবাদ কিভাবে ঠেকানো যাবে সেই পথ গুলা কমেন্ট ওয়ালাদের কাছ থেকে খুব শীঘই পোস্ট আকারে পড়ার সুযোগ হবে।

জয়তু এন্টি-আওয়ামীজম।

হিমু এর ছবি

আপনার কথা পড়ে মনে হলো, জয়ের ভুল শুধরে দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিকল্প প্রবন্ধ লেখার দায় নিয়ে সবাই সমালোচনা করছেন। এমন ভাবার কারণ কী? আপনি যদি আজকে ভাত খেতে গিয়ে শার্টে ঝোল ভরান, তাহলে কি আপনার খাওয়ার ধরন নিয়ে কথা বললে আপনি পাল্টা ভাত খাইয়ে দেবার কথা বলবেন?

জয়ের লেখা পড়ে মনে হয়েছে মাদ্রাসা আর সেনাবাহিনীই বাংলাদেশে সবকিছু। এদিকে যে একটি শক্তিশালী বিকল্প অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করে নিয়েছে রাজাকাররা, সেদিকে কোন আলোকপাত করা হয়নি, সতর্কভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার বাইরে অন্যান্য শিক্ষামাধ্যমেও এরা ধীর কিন্তু নিশ্চিতভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। ধরি মাছ না ছুঁই পানি গোছের একটা লেখার সমালোচনার সমালোচকদের প্রতি আহ্বান, আপনারা আওয়ামী লীগকে মৌলবাদ উৎপাটনের এজেন্ডা দৃঢ়ভাবে নিতে বলুন এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে বলুন।

এই যে মাদ্রাসার ছাগুদের চিল্লাচিল্লিতে লালনের মূর্তি সরানো হলো, আওয়ামী লীগের হাইকম্যান্ড থেকে একটা টুঁ-শব্দও এলো না কেন? নাকি হার্ভার্ডে চোথা মারলেই কাজ হবে?


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মানুষের ব্যাক্তিগত এফিলিয়েশন বা পছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু ব্যাক্তিগত এফিলিয়েশনের বাইরে এসে র‌্যাশন্যাল (rationale) বা যুক্তির ভিত্তিতে কথা বলাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে লেখায় তথ্যের বিরাট বিরাট ফাঁক ফোকড় রয়েছে, যুক্তি গুলো ছাড়া ছাড়া, আওয়ামীজম দেখাতে তার বাহবা করতে হবে এমনটা ভাবছেন কেন। বরং সচলেরা যে পরিষ্কার ভাবে ভালোকে ভালো এবং মন্দকে মন্দ ভাবতে পারেন সেটা দেখে আমি আনন্দিত।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কবি এর ছবি

আমজনতার মাদ্রাসায় যাবার আরেকটি বড় সোজা সাপ্টা কারন হল সহজে পাশ করে ডিগ্রী পাওয়া। যখন স্কুলে ছিলাম তখন দেখেছি অনেক ছেলে মেয়ে ২-৩ বার চেষ্টা করেও স্কুল থেকে পাশ করতে না পেরে শেষে মাদ্রাসা থেকে দাখিল করে ফেলেছে।

এস এস সি আর দাখিল সমমান হবার কারনে কলেজে ভর্তি হতে পেরেছে। এ কারনে যেসব ছেলেমেয়ে পড়াশুনায় তেমন ভালো না তারা জামাত টামাত এসবের কারন ছাড়াই মাদ্রাসায় যায় স্রেফ পাশ করতে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

দীর্ঘ কমেন্ট করার কিছু নেই আসলে ।
জাস্ট ছোট্ট করে একটা উদাহরন দেই আপাতত।
জয়ের লেখার একজায়গায় আছে :

The greatest number of seats that JI had ever garnered in any election prior to 2001 was three.

আসল সত্যটি হচ্ছে ,৯১ সালে জামাত ১৮টি সিট পায় । তার মাঝে রাজশাহী বিভাগে ৭টি, খুলনা বিভাগে ৮টি , ঢাকায় ১টি আর চট্টগ্রামে ২টি । পরে বিএনপিকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে ২টি মহিলা আসন লাভ করে তাদের মোট আসন দাড়ায় ২০টি ।

আসেন আওয়ামীলীগ আর জামাত যে নির্বাচনে গিয়েছিল স্বৈরশাহী এরশাদের অধীনে , সেই ৮৬ সালের নির্বাচনে ।
সেখানে জামাত পেয়েছিল ১০টি আসন ।
-------
এখন যে কয়জন উষ্মা প্রকাশ করেছেন যে "এন্টি আওয়ামীজম'" প্রকাশ করে মূর্খ সচলরা পাপ করছেন , মূর্খ কমেন্টদাতা োেসচলদের একজন হিসেবে আমি জানতে চাই , এই যে বেসিক তথ্যই সঠিক নয় একটি লেখায় , এই লেখা নিয়ে সমালোচনা করারই বা কী আছে আর ? এই সামান্য তথ্যটি রাজনীতির খোঁজখবর রাখেন এমন যে কোন বাংলাদেশী কিশোরেরও জানা যে ৯৬ সালে জামাতের চরম ভরাডুবির আগে ও পরে তাদের সিট কখনোই ৩টির বেশি ছাড়া কম ছিল না ।
দূ:খের বিষয় হার্ভাড গবেষকদ্বয় এই কথাটিই জানেন না !!!

দেশে মৌলবাদীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনে জয় চিন্তিত দেখে আমি খুবই খুশী, উনার সতর্কতার প্রশংসা করি । আসলেই মৌলবাদীদের আগ্রাসন এখন চরম হয়ে যাচ্ছে । যে দেশে প্রকাশ্যে হাতুড়ি শাবল চালিয়ে খোদ রাজধানীতেই ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলে মৌলবাদীরা , সেই দেশে একদিন এই হাতুড়ি শাবল নিয়ে যদি তারা বঙ্গভবন আর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে হামলা করে বসে আর দেশকে বাংলানিস্তান হিসেবে ঘোষনা দেয় , আমি মোটেও আশ্চর্য হব না ।

এর দায় সবারই নিতে হবে । তসলিমা নাসরিনের মাথার মূল্য ঘোষনা করা বুলবুলি মওলানা যখন নৌকা মার্কায় ইলেকশন করতে পারে , তখন ভবিষ্যতের কোন হার্ভার্ড গবেষক হয়তো এই দায়টা বিএনপির সাথে আওয়ামীলীগের দিকেও ঠেলে দেবেন ।

শিক্ষানবিস এর ছবি

২০০১ সালের আগে জামায়াত কোন নির্বাচনেই ৩ টির বেশী আসনে জয়লাভ করতে পারেনি।

সত্যি, এটাই জয়ের লেখায় উপস্থিত ভুল তথ্যের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। আর পরিসংখ্যানের তথ্যগুলোর কোন সূত্রও পাওয়া যাচ্ছে না।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এজন্যই প্রথম কমেন্টে শুধু একলাইনে সারমর্ম বলে আর অনুবাদ কর্মের প্রশংসা করেই বিদায় নিয়েছিলাম । হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

Secular জবাই করছে জিয়া, তারপর এরশাদ এসে সংবিধানকে একটা বিশেষ Religionএর হাতে তুলে দিয়েছে। খালেদা কি করছে, সে তো সবাই জানে।
সেকুলার এখন সুধু এক ইতিহাস।
তাই তো এই দেশে সংখালঘুদের কেউ President বা PM হতে পারে না।

শামীম ইফতেখার এর ছবি

@ রাগিব হাসান [মন্তব্য নং ১৫ এবং ২২ প্রসঙ্গে]

ছাপার অক্ষরে কোন তথ্য বা উপাত্ত পাওয়ামাত্রই তা উদ্ধৃত করার লোভ সামলানো মনে হয় সব দিক থেকে ভালো। পৃথিবীতে এত সব বিষয়ে এত বেশী লেখালিখি হয়েছে যে খুঁজলে সব মতামতের পক্ষেই কিছু না কিছু পাওয়া যাবে বলে আমার ধারণা। অনেকেই হয়তো জানবেন যে অতীতে একদল বিজ্ঞানী প্রমাণ করে দেখিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন যে "দাস আর নারীদের মস্তিষ্ক আকারে ছোট হেতু কম ক্ষমতাসম্পন্ন"। নাজি আমলে হিটলারের বশংবদ বিজ্ঞানী আর চিন্তাবিদেরা প্রমাণ করে ছেড়েছিলেন যে "জার্মান জাতিই হল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানব specimen"।

রাগিব হাসান সাহেব [মন্তব্য নং ২২] যেভাবে নিয়াজ আসাদুল্লাহ সাহেবের প্রেজেন্টেশন থেকে উদ্ধৃত করলেন, দেখে অবাক হয়েছি; তার চেয়েও বেশী হতাশ হয়েছি। তিনি না বুঝে, পুরোটা না জেনেই একটা গবেষণাকে তার যুক্তির সপক্ষে পেশ করে বসেছেন। আসাদুল্লাহ সাহেবের কাজের সাথে আমি অপরিচিত নই। কোন্ তথ্যের ভিত্তিতে, কাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে, কোন্ সংজ্ঞাকে উপজীব্য করে তিনি (আসাদ সাহেব) তার উপসংহার টেনেছেন, তা নিয়ে আলোচনা এবং প্রশ্নের সুযোগ আছে, প্রশ্ন উঠেছেও। থাক সে কথা। মোটের ওপর কাজটিকে আমার Islamism rationalising প্রোজেক্টের অংশ মনে হয়েছে, এবং গবেষককে একজন apologist ছাড়া অন্য কিছু মনে হয়নি। রাগিব সাহেবের যুক্তিতেও সেই সুরই যেন দেখলাম (যদি ভুল না বুঝে থাকি)! একসময় শর্মিলা বসু'র '৭১ এর যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কাজকে খোদ আমেরিকার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি তো সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতাই দিয়েছে। এমন বস্তাপচা গবেষণার পরও শর্মিলা বোসের অক্সফোর্ডের রয়টার্স ইন্সটিটিউটের পরিচালকের পদ পেতে কিন্তু কোন সমস্যা হয়নি! (ভালো কথা, Reading বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটির উচ্চারণ হবে "রেডিং", "রিডিং" নয়। এটি একটি জায়গার নাম।)

বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে রিসার্চ এবং পলিসি অর্থায়নের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় হচ্ছে Islamist দের একাংশকে মডারেট হিসেবে দেখানোর লক্ষ্যে। এই নীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ differentiating and appeasing the factions ; সেই divide and manage নীতির অংশ - এই ক্ষেত্রে যার লক্ষ্য হল ইসলামী ক্যাম্পের একাংশকে পশ্চিমের মূলধারার কূটনৈতিক বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসা।
উল্লেখিত প্রোজেক্টটিও সেই কর্মযজ্ঞেরই অংশ বলে সন্দেহ হয়। বৃটেনের আর্চ বিশপ রোয়ান উইলিয়ামস যখন হুট করে শরিয়া আইন বলবত করার কথা বলে বসেন, সেটিও তারই অংশ; লেবার সরকার যখন মাল্টিকালচারালিজমের নামে এসবকে মদদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিও তারই অংশ; মওলানা মতিউর রহমান নিজামী যখন বৃটেনের বিশ্বখ্যাত পলিসি গ্রুপ Chatham House এর আমন্ত্রণে বক্তৃতা দিতে আসেন, আয়োজকদের ভাষায় "বাংলাদেশের মডারেট একটি ইসলামী দলের (যথা: জামায়াত ই ইসলামী) প্রতিনিধি" হিসেবে - সেটিও তারই অংশ। সুতরাং একটু সাবধানতা অবলম্বন মনে হয় জরুরী। রাগিব সাহেবের কাছে সেটুকু আমি আশা করি।

আরেক জায়গায় রাগিব সাহেব যুক্তি দেখিয়েছেন যে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় (কওমী'র বাইরে) ধর্মীয় বিষয়াদির পাশাপাশি বিজ্ঞানও পড়ানো হয় [মন্তব্য নং ১৫]। দু'টি প্রশ্ন। প্রথমত - পরীক্ষা পাশের জন্য কিংবা গবেষণার অর্থলাভের জন্য যারা বিজ্ঞান পড়েন, তারা কি সবসময় বিজ্ঞানমনষ্ক হন? বিজ্ঞান পড়লেই কি automatically মনজগতে বিপ্লব ঘটে যায়? আমার অভিজ্ঞতায় বিজ্ঞান পড়া গোঁড়া ধর্মান্ধ bigot তো কম দেখিনি! আর বিজ্ঞানমনষ্কতারহিত বিজ্ঞান চর্চা যে কি সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে, সে কথা নতুন করে মনে করিয়ে দেয়ার মনে হয় কোন প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয়ত, আমাদের প্রচলিত মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় গুটিকয় মৌলিক বিষয়ের (বিজ্ঞান, গণিত, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভাষা) সঠিক পাঠদানের মত প্রয়োজনীয় অবকাঠামোই এখনো গড়ে তুলতে পারিনি আমরা, যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের সার্বিক শিক্ষার মান। আর রাগিব সাহেবের যুক্তি অনুযায়ী যদি ধরে নিই মৌলিক বিষয়গুলোর বাইরে ধর্মীয় বিষয়গুলোও (ধরা যাক আরো অতিরিক্ত ৫ টি বিষয়) মাদ্রাসায় পড়াতে বা পড়তে হবে, সেই অতিরিক্ত burden এর লজিসটিক্স বা রিসোর্স কোথা থেকে আসবে? একদিকে মাদ্রাসা টিকিয়ে রাখার যুক্তি হিসেবে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার resource এর অভাব এবং বৈষম্যকে দেখানো হচ্ছে, অন্যদিকে মাদ্রাসা ব্যবস্থার উপর আরো অতিরিক্ত কয়েকটি পাঠ্যবিষয় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা কি খুব স্ববিরোধী এবং এবসার্ড যুক্তি হয়ে গেলনা? সেক্ষেত্রে অর্থনীতি কিংবা গণিতের সাধারণ হিসেব অনুযায়ী মাদ্রাসা শিক্ষায় সার্টিফিকেটধারীদের সার্বিক/গুণগত মান কি দাঁড়ানোর কথা? রাগিবের ভাষায় "জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশকে বাদ দিয়ে কোনো সার্ভিস চলবে এটা আশা করা কারোরই উচিৎ না"। সেনাবাহিনীতে মাদ্রাসা পাশদের রিক্রুট প্রসঙ্গে তিনি এই যুক্তি দেখিয়েছেন। বলেছেন, তা করলে সেটা নাকি "এলিটিজম" হয়ে যায়! দেশের সার্ভিসগুলোর সদস্যদের গড় মানকে আরো রসাতলে নামানোর এর চেয়ে সুন্দর কোন ফর্মূলা হালে শুনেছি বলে মনে পড়েনা।

হিমু এর ছবি

প্রিয় শামীম ইফতেখার, অতিথিদের মন্তব্য সচলায়তনে সাথে সাথে প্রকাশিত হয় না, মডারেশন স্তর পেরিয়ে আসে বলে কখনো কখনো সময় লাগে। বিলম্ব দেখলে একাধিকবার মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই।

আপনি যদি ইতোমধ্যে সচলায়তনে নিবন্ধন করে না থাকেন, নিবন্ধন করে নিতে পারেন। ধন্যবাদ আপনার সুলিখিত মন্তব্যের জন্যে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

শামীম ইফতেখার এর ছবি

ধন্যবাদ জানানোর জন্য। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম প্রথমটি যায়নি।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

@জনাব শামীম ইফতেখার
আপনার যুক্তির উপস্থাপনায় দ্বিমত পোষন করছি, সত্যি বলতে কি যুক্তির চেয়ে একমুখী ভাবধারার প্রকাশ বলেই প্রতিভাত হচ্ছে।

প্রথম কথা হলো, যখনই মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে কথা আসে, আমার সবাইকেই সেই অন্ধের হাতি দর্শনের ঘটনার একেকজন অন্ধ মনে হয় -- ইন ফ্যাক্ট এক্ষেত্রে সবার এ্যানলজিকাল অবস্থান আরো করুণই মনে হয়; কারণ অনেককেই দেখি মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে ভারী ভারী কথা বলে ফেলছেন, অথচ জীবনে কোনদিন একটা মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকে আধাটা ঘন্টাও কাটাননি।

সেখানে রাগিবের এই নেট খুঁড়ে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষার ওপর একটা স্টাডি খূঁজে বের করা আর সেটাকে রেফারেন্স হিসেবে কিছু "শকিং" তথ্য তুলে ধরাকে আমি যুগান্তকারী মনে করি, কারণ এ ব্যাপারটা অন্ততঃ নেট-এরিনাই বলুন আর নিউজ পেপার এরিনাই বলুন, কোন কুতুবকে কোনকালে করতে দেখিনি। কোনকিছুর মূল্যায়নে সেটার ওপর স্টাডির বিকল্প কিছু আছে? রাগিব তো অন্ততঃ সেটা করেছে।
কদিন আগে আমি নিজে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে বিতর্ক করছিলাম, উইদাউট এনি রিফারেন্স, যাস্ট নিজে যতটুকু দেখেছি, মাদ্রাসা ছাত্রদের কাছে যতটুকু শুনেছি সেটার ভিত্তিতে -- এবং আমি তো এখন এটা স্বীকার করি যে রাগিবের এই ওয়ে অভ ডুয়িং থেকে আমি শিখেছি। আমার ধারনা ছিলো এসব "বালছাল" মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে নিশ্চয়ই কোন ড্যাটা পাওয়া যাবেনা, কিন্তু সব কিছুতেই যে ড্যাটা/স্টাডি এগুলো থাকতে পারে, এবং সেটা এক্সপ্লোরের অনেস্ট প্রচেষ্টা থাকা উচিত -- রাগিব কিন্তু সেটাই করলো।

আপনার আসাদুল্লাহর প্রেজেন্টেশন দেখে বিরক্ত হবার দুটো কারণ থাকতে পারে -- প্রথমতঃ, মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে কিছু স্টাডি আপনার নিজের আছে বা অন্যদেরটা জানা আছে যেটার সাথে আসাদুল্লাহর স্টাডির ড্যাটা মিলছেনা, অথবা দ্বিতীয়তঃ আপনার যে ধারনা ছিলো মাদ্রাসা শিক্ষা সম্পর্কে সেটার সাথে আসাদুল্লাহর স্টাডির রেজাল্ট মিলছেনা।
প্রথমটা হলো আপনি আপনার সেই স্টাডিটা তুলে ধরুন, ল্যাঠা চুকে গেল!
দ্বিতীয়টা হলে, আমি বলবো, আপনিও পড়াশোনা করুন, জানার চেষ্টা করুন।

আসাদুল্লাহর এই স্টাডিটা আমার কাছে খুব শকিং, কারণ আমি জানতামইনা মাদ্রাসায় সহশিক্ষা আছে, অথচ ওনার প্রেজেন্টেশনে উপস্থাপিত ড্যাটার সাথে উনি বেশ কিছু কো-এড ক্লাশরুমের ছবি দিয়েছেন। সেখানে তাঁর দাবী এই সেক্টরে ফেমিনাইজেশনের গ্রাফ খুবই ঊর্ধ্বমুখী। এখন এগুলো ওনার "বানোয়াট" ছবি কিনা আমি জানিনা, কিন্তু এই মুহূর্তে এটাকে ডিফেন্ড করার মতো কি ড্যাটা বা স্টাডি আমার/আপনার হাতে আছে? থাকলে সেটা শেয়ার করার অনুরোধ জানাই।

দ্বিতীয়তঃ যে জিনিসটা আরো শকিং, সেটা হলো তাঁরা প্রায় সাড়ে তিনশ মাদ্রাসা/সাধারণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপর ম্যাথ এবং সামাজিক শিক্ষার পরীক্ষা নিয়েছেন, এবং যে শকিং তথ্যগুলো বেরিয়ে এসেছে সেটা হলো, এদের বুৎপত্তিতে তেমন একটা ডিফারেন্স নেই! ম্যাথে মাদ্রাসা ছাত্রদের এ্যাভারেজ স্কোর যেখানে ৩৫, স্কুল ছাত্রদের এ্যাভারেজ স্কোর সেখানে কত, দেখেছেন? ৩৮!!! অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষাতেও একই অবস্থা (যদিও তিনি ড্যাটা দেননি, মনে হয় চাইলে পাওয়া যাবে)। যে পার্থক্যটা তিনি পেয়েছেন, সেটা হলো মাদ্রাসা ছাত্রদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা এবং বিপরীতলিঙ্গের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, যেটাকে তাঁরা বলছেন খুবই একমুখী, এবং তাঁরা যে টেন্ডেন্সীটা খুঁজে পেয়েছেন সেটা হলো, মহিলা শিক্ষিকাদের সংখ্যাবৃদ্ধির সাথে সাথে এই একমুখীতাটা কমছে। সেখান থেকেই তারা মহিলা শিক্ষিকাবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করেছেন স্টাডিতে।

তাহলে, এই স্টাডির দোষটা কোথায়?

আপনার এতদিনকার ধারনাগুলোর সাথে কনট্রাডিক্ট করে বলে? সত্যি বলতে, আমার নিজের এতদিনকার ধারনাগুলোর সাথেও কনট্রাডিক্ট করে। তবে সেখানে ক্ষেপে না গিয়ে সবচেয়ে ভালো যেটা করা যেতে পারে তা হলো এ নিয়ে গবেষণা করা বা বিকল্প কোন স্টাডি পেলে ক্রসচেক করা -- তা নয়কি?
ক্ষেপে গেলে বা ব্যক্তির বিষোদগারে ড্যাটা বদলাবেনা, তাইনা?

এখন এবিষয়ে আমার পারসোনাল মতামত তুলে ধরি (আগের হিমুর পোস্টেও কিছুটা করেছিলাম) -- এই প্রসঙ্গে জেবতিক আরিফও তার কোন একটা পোস্টে লিখেছেন... শুধু মাদ্রাসা শিক্ষা না, ওভারঅল বাংলাদেশে সো কলড স্কুল শিক্ষার যে কি করুণ দশা সেটার দিকে চোখ না দিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের ওখানে আটকে দাও, সেখানে ফাটকে দাও -- এসব করে কিছু হবেনা। অবশ্যই মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন/আপগ্রেড দরকার, কিন্তু মনে রাখবেন একই লেভেলের আপগ্রেড সাধারণ শিক্ষাতেও দরকার। ঢাকায় বসে বাচ্চাকে সপ্তায় ছয়জন টিচারের কাছে পড়িয়ে এটা টের পাওয়া যাবেনা। আসাদুল্লাহরা যে পরীক্ষা নিয়েছেন ছাত্রদের, আমি বলতে পারি যে শহুরে (অন্ততঃ ঢাকায়) যে কোন ভালো স্কুলের মিডিয়াম লেভেলের ছাত্রছাত্রীরা এতে ৮০ এর উপরে পাবে। আলমগীর ভাইয়ের কমেন্টেও পয়েন্টটা এসেছে।

কিন্তু সারা দেশজুড়ে ভাবলে?
শিক্ষার মান আসলেই খুব খারাপ। এটার দিকে মনোযোগ না দিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার দিকেই শুধু মনোযোগ দিয়ে রাখাটা একটা রাজনীতিই -- এই রাজনীতির সাথে "ইসলাম" শব্দটা জড়িত, যেখান থেকে "ইসলামফোবিয়া"র সাথে আরব দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের নাম যুক্ত করে ফেলা যায়, এবং সেটার বদৌলতে পশ্চিমা বাবা-চাচাদের "সুনজর" কাড়ার একটা রাজনীতি করা যায়।
এবং এই কারণেই আমার ধারনা সচলের অধিকাংশ সদস্যই সজীব জয়ে লেখাটাকে মূল্যায়ন করছেননা (যদিও লেখাটার তথ্যগত ত্রুটি ছাড়া ফিলোসফির সাথে অধিকাংশই একমত হবেন)। কারণ মূল সমস্যার বদলে একটা টুকরো সমস্যা ফোকাস করে রাজনৈতিক ঝোল টানার উদ্দেশ্য আছে লেখাটায়, এবং তার চেয়েও কষ্টকর হলো আমেরিকাকে প্রভু হিসেবে স্বীকার করে নেয়ার একটা নগ্ন-প্রয়াস আছে এই লেখায়।

ভালো থাকবেন।

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আলমগীর এর ছবি

রাগিব সাহেবের যুক্তিতেও সেই সুরই যেন দেখলাম (যদি ভুল না বুঝে থাকি)!

আমার ধারণা আপনি ভুল বুঝেছেন। প্রথমত, রাগিব আমার বক্তব্য খণ্ডন করেনি। দ্বিতীয়ত বলেছে (#২৫):

রাগিব লিখেছেন:
শিক্ষানবিস, কথাটা কিন্তু "আমার" না। মাদ্রাসা শিক্ষক একটি প্রেজেন্টেশনে এই কথাটা দেয়া আছে দেখে ইন্টারেস্টিং লেগেছিলো।

দ্বিতীয় পয়েন্টের ব্যাখ্যা রাগিবই ভাল দিতে পারবে।

শামীম ইফতেখার এর ছবি

আলমগীর সাহেব [your comment no 52]

রাগিব সাহেব চিনিনা, তাকে চেনার চেষ্টা করেছি তার মন্তব্যে অন্তর্নিহিত মূল সুর থেকে। তাই তাকে apologist ভাবাটা হয়তো আমার ভুল হতেই পারে। আর আপনার যুক্তিটাও ঠিক বুঝতে পারলামনা। স্রেফ "ইন্টারেস্টিং" মনে হলো আর আপনি (রাগিব সাহেব) সেটা "quote" করে দেবেন বিতর্কের মধ্যখানে! তাঁর ২২ নম্বর মন্তব্যটি কিন্তু প্রথমে একটি নতুন যুক্তি উপস্থাপন আকারেই তিনি করেছিলেন। পরে প্রতি মন্তব্যের ধরণ দেখে কথা ঘুরিয়ে তিনি নিজেকে বিযুক্ত করতে চেয়েছেন বলেই মনে হল।

Stereotyping আমি নিজেও সমর্থন করিনা। তবে নিচে রাগিব সাহেবের করা এই উদ্ধৃতিগুলো দেখে কিছুটা বিভ্রান্ত তো হয়েছিই।

এখন ৩ ভাগের এক ভাগ শিক্ষার্থী যেখানে পড়ে, সেখান থেকে যদি ৩ ভাগের ১ ভাগ রিক্রুট আসে, তাতে সমস্যা কী? মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের এক বিশাল গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর শিক্ষার মাধ্যম এই মাদ্রাসাই।
. . .

জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশকে বাদ দিয়ে কোনো সার্ভিস চলবে এটা আশা করা কারোরই উচিৎ না। ৫% মাত্র রিক্রুট হতো, সেটাই বরং নিদারুণ বৈষম্যের উদাহরণ ছিলো।
. . .
মাদ্রাসাতে কী পড়ানো হয় তা কি আপনি জানেন? ব্যক্তিগত ভাবে আমি জানি না, কিন্তু আলীয়া মাদ্রাসাতে ধর্মীয় বিষয় ছাড়াও বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয় পড়ানো হয় বলেই বিভিন্ন স্থানে দেখেছি।
. . .
এটা অবশ্যই ঠিক যে জোট সরকারের ৫ বছরে মাদ্রাসা শিক্ষার উপরে সরকারী বরাদ্দ বেড়েছে বিপুল পরিমাণে। এক্ষেত্রে সম্ভবত বিদেশী (মধ্যপ্রাচ্যের) অনুদান অনেক খানি। কিন্তু এর বিকল্পটা কী হতে পারতো? গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে অনেক ক্ষেত্রেই দুটি মাত্র পথ খোলা - অশিক্ষিত/নিরক্ষর হয়ে থাকা, বনাম মাদ্রাসা শিক্ষা নেয়া। মধ্যপ্রাচ্য ঠেকাতে আমাদের কি উচিৎ আম-জনতাকে নিরক্ষর করে রেখে দেয়া?
. . .
কিছুটা হলেও যে শিক্ষা মাদ্রাসার মাধ্যমে আম-জনতা পাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য-ঠেকাও এই ছুতায় সেটা বন্ধ করে দেয়া কি দেশের জন্য খুব ভালো ফল আনবে?

আমার ৫০ নম্বর মন্তব্যে (শেষ অনুচ্ছেদে) রাগিব সাহেবের এই উক্তিগুলোকে খন্ডন করার চেষ্টা করেছি। আপনি কি তার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন?

আলমগীর এর ছবি

শামীম ইফতেখার সাহেব
একদুটো মন্তব্য পড়ে কারো চিন্তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা হয় না।
রাগিব ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়, আর্বানা শ্যাম্পেনে পিএইডি করে, উইকিপিডিয়ার একজন সক্রিয় এডমিন+বুরোক্র্যাট। যেহেতু উইকির সাথে জড়িত তাই পরিসংখ্যান আর সূত্র ছাড়া তিনি তর্ক করেন না। সেজন্য এত বেশী সংখ্যা দেখেছেন তার মন্তব্যে।

এবার আপনার দ্বিতীয় পয়েন্টে:
রাগিব যা বোঝাতে চেয়েছে বলে আমি বুঝেছি তা হলো,
-- মাদ্রাসা মানেই উগ্রপন্থীদের আখড়া না।
-- সে সব ছেলেপেলে সাধারণ স্কুলে/কলেজে যেতে পারে না আর্থিক সংগতির অভাবে তারাই মাদ্রাসায় যায়। (ক্যাডেটে চান্স না পেলে সরকারি স্কুল, তা না পেলে বেসরকারি স্কুল অনেকটা তেমন।) মাদ্রাসা বন্ধ করতে হলে জনসংখ্যার এ অংশটা শিক্ষাহীন থাকবে।

-- মাদ্রাসা শিক্ষার গুণগত মান স্বাভাবিকভাবেই কম, কারণ ভাল মেধার কেউ সেখানে যায় না। কিন্তু সেটাকে বাস্তবমূখী ও যুগোপগী করার প্রচেষ্টা আছে। বিজ্ঞান, অংক পড়ানো হয়, এসব কথা সে কারণেই এসেছে। আজ থেকে দশ বছর আগে মাদ্রাসা শিক্ষার যে মান ছিল, এখন তা ভিন্ন।

-- আপনি ঠিক বলেছেন। কেবল বিজ্ঞান শিক্ষাই কাউকে মৌলবাদি হতে বাধা দেয় না। শিবির কর্মীদের সংখ্যা (আলিয়া বাদে) কওমি মাদ্রাসায় যা হবে তার চে অনেক বেশী হবে স্কুল/কলেজে। বিদেশে এসেও কারো মৌলবাদ থেমে থাকে না। সে উদাহরণ আপনি নিজেই দিয়েছেন।

-- সমাধান হিসাবে আপনি কি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিবেন (এবং যারা সেখানে পড়ছিল তাদের পড়া বন্ধ করে দিবেন)? জনসংখ্যার এ বড় অংশটির জন্য কোন স্কুল/কলেজ কিন্তু নেই। তারা সাধারণ স্কুল/কলেজে যাবার সামর্থ্য রাখে না বলেই সস্তা মাদ্রাসায় যায়। নাকি, তাদের শিক্ষার মান বাড়াবেন? জোট সরকার তাদের পেছনে বাড়তি অর্থ ঢেলেছে ঠিক। ভোটের আশা তো ছিলই, মানোন্নয়নের বিষয়ও ছিল। আলীগ চালু করেছিল ভোকেশনাল।

-- আমাদের অনেকের বাবা/দাদারা কিন্তু মাদ্রাসায় পড়া। তারা কি সবাই মৌলবাদি হয়েছে?

-- মাদ্রাসায় বাড়তি বিষয়ের জন্য যে বাড়তি রিসোর্স লাগবে তা তাদের জন্য যে স্কুলের দরকার হতো তার একটা ক্ষুদ্র অংশ। অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চালানো বলতে পারেন। একটা জেলা সদরের সরকারী স্কুলে ৪জন বিএসসি থাকলে, সদরের বাইরের একটা স্কুলে ১জন পাবেন। সরকারী কলেজের কথা ধরুন। সদরের কলেজে যদি গণিতের জন্য ২জন শিক্ষক থাকে, সদরের বাইরে কোন কলেজে কোন শিক্ষকই পাবেন না। এটা বাস্তব অবস্থা।

-- আপনার যদি অনেক টাকা থাকে, রিসোর্সের অভাব না থাকে, প্রয়োজনীয় লোকবল থাকে, তাহলে সব স্কুল/কলেজ সরকারী করে দিন না কেন? সরকারী/বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষামানে বিপুল পার্থক্য।

-- মাদ্রাসা নামক "বাজেট শিক্ষা ব্যাবস্থা" থেকে যারা বের হবে তাদের কি চাকুরি দিবেন না? তারা কার সাথে প্রতিযোগিতা করবে? ক্যাডেট কলেজে যে পড়ে, যে ছেলেটা ঢাকায় পড়ে, তার সাথে মফস্বলের একটা ছেলের তুলনা হয়? সবাই কি সমান সুযোগ পায়? যে দুর্ভাগা মাদ্রাসায় পড়ল তাকে একেবারে অযোগ্য কেন বলবেন? তার স্বাভাবিক শিক্ষা তো রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি। চাকরিতে জেলা ভিত্তিক, আদিবাসী ভিত্তিক, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য কোটা কেন? সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়া উচিৎ নয় কি? রাজশাহি সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পোষ্যদের জন্য ভর্তি কোটা আছে। এসব কোটা বিক্রি পর্যন্ত হয়। কেন?

-- রাগিব মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার পক্ষে না। এটাই বলতে চেয়েছে।

পুনশ্চ: আগের মন্তব্যে হিমু যেমন বলেছে, দয়া করে আপনি একটা একাউন্ট খুলে নিন এখানে। সম্ভব হলে, আলাদা একটা পোস্ট দিন। আলোচনার ধারাটা ঠিক রাখা সহজ হবে। (এ লেখাটা ইতিমধ্যে বেশ বড় হয়ে গেছে, বাংলাদেশে যারা থাকেন তাদের নেটের অবস্থা খুব খারাপ; বড় পেইজ লোড হতে চায় না, তাদের বেশ কষ্ট হয়।)

শামীম ইফতেখার এর ছবি

@ আলমগীর @ রাগিব হাসান

আলমগীর সাহেবকে ধন্যবাদ আলোচনাটায় অন্তত কিছু যুক্তি তর্ক দিয়ে হলেও অংশগ্রহণ করার জন্য। চমৎকার একটা আলোচনা হতে পারতো; এখন আর সে আশা দেখিনা।

রাগিব সাহেবের ব্যক্তি আক্রমণমূলক outburst এর উত্তর দেয়ার আসলেই কোন প্রয়োজন অনুভব করছিলাম না। আর যে ভাষায় কিছু ইমোশনাল কথাবার্তা বলে (যেমন: 'আমি ভাই মুক্ষু মানুষ', 'আমি ভাই মিস্তিরি মানুষ', 'মারতে আসবেন') তিনি পুরো বিষয়টিকেই পাশ কাটাতে চাইলেন, তার আসলে কোন জবাব দেয়ারই মানে হয়না। তবুও কিছু বিষয়ে জবাব দিচ্ছি, বাকীদের কাছে আমার অবস্থান পরিষ্কার করার স্বার্থে।

রাগিব: রাজনৈতিক মতাদর্শে অন্ধদের সমস্যা এটাই, তাদের প্রিয় (আঃলীঃ বা বিএনপি) এর "মহান" নেতা নেত্রী বা তাদের ছানাপোনাদের অমৃতসম বাণীর বিপক্ষে কিছু সহ্য হয় না। কাজেই আপনার সর্ষের মধ্যে ভুত খোঁজা এবং আমার স্বরূপ উদঘাটনের মহাপ্রয়াসে অবাক হইনি।
রাগিব:
একচোখা মতাদর্শে বলীয়ান হয়ে জনাব ইফতেখার যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসেছেন, সেটার জবাব ব্যঙ্গে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথ খুঁজে পাইনি।

কি সব আবোল তাবোল প্রলাপ বকছেন রাগিব সাহেব! আমার আলোচনায় কোথায় পেলেন আঃলীঃ-বিএনপি আর কোথায় পেলেন নেতানেত্রী আর 'একচোখা মতাদর্শ'? আর সর্ষের মধ্যে ভুত এখন কে খোঁজার চেষ্টা করছে?

রাগিব: নাকি এরকম তথ্যকে ইন্টারেস্টিং লাগাতে মারতে আসবেন?

না না ভাই ছি ছি, মারতে আসবো কেন! কারা মারতে আসে, বোমা ফাটায়, রগ কাটে, নিরীহ কিশোর যুবকদের নিয়ে আসে জঙ্গিবাদের পথে শুধুমাত্র ধর্মকে পূঁজি করে, অজ্ঞানতাকে পুঁজি করে - সে কথা আপনিও জানেন, আমিও জানি। যাকগে। আমার ধারণা ছিল কোন বিতর্কের মধ্যখানে কেউ যখন কোন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন, তা তার নিজের বক্তব্যকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন দিতেই করেন। আসাদুল্লাহ সাহেবের প্রেজেন্টেশন নিয়ে আপনার "সংশয়" কোথাও মনে হয় "লুক্কায়িত" ছিল আপনার মন্তব্যে (থ্রেড ৬), সঠিক দেখতে পাইনি! সরি, ভুলই বুঝেছি মনে হয়। গুগল করেছেন, ভালো কথা। আরেকটু কষ্ট করে একটু বিস্তারিত পড়ে নেবেন। সেখানে দাবী করা হয়েছে: মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা যথেষ্ট gender sensitive, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার সাথে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার মানের খুব একটা পার্থক্য নেই ইত্যাদি।

রাগিব: দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে গণাতেই ধরা হবে না, তাদের শিক্ষা-ব্যবস্থার কারণে সাথে সাথে তাদের স্টেরিওটাইপে ফেলে দিতে হবে, এরকম মানসিকতা নিতান্তই racist, এবং ব্রিটিশ-পাকিস্তানীদের মতাদর্শের নামান্তর। বাংলাদেশের মানুষদের এলিটিজমের প্রয়োজন নেই। প্রাকৃতিক থেকে শুরু করে নানা দুর্যোগে দুর্ভাগ্যে তারা এমনিতেই অনেক কষ্টে আছে।

দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষকে বাদ দেয়ার প্রশ্ন আসছে কেন? বাদ না দিয়ে সবাইকে সার্বজনীন বৈজ্ঞানিক শিক্ষাব্যবস্থার আওতায় আনা যায়না? রাগিব সাহেব মনে হচ্ছে কিছু বায়বীয় ধারণা নিয়ে ঘুরে বেড়ান এবং সুযোগ পেলেই বাকিদের জ্ঞান দেন এবং নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের সবক দেয়ার চেষ্টা করেন।

এবার অন্তত মন দিয়ে শুনুন:
আমার প্রস্তাব ভিত্তি প্রস্তরের একভাগ উড়িয়ে দেয়া নয়; বরং ভিত্তি প্রস্তরটাকে দৃঢ় করা; প্রস্তাব দুর্বল ভিতের ওপর জোড়াতালি দিয়ে দেশের ভবিষ্যত না গড়ার। প্রস্তাব সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার; জোড়াতালি কিংবা বৈষম্যনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা নয়। আর তা করতে গিয়ে শুধু মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রকৃত সংস্কারই (উপরে উপরে কিছু লোকদেখানো নতুন পাঠ্যবিষয় সংযোজনই নয়) শুধু নয়, সেই সাথে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকেও ঢেলে সংস্কার করতে হবে, দু'টোকেই নিয়ে আসতে হবে বিশ্বমানের কাছাকাছি। কাউকে 'বাদ দেয়া' নিয়ে (চিলে কান নিয়েছে!) রাগিব সাহেব যে ইমোশনাল বক্তব্যটি দিলেন, তার কারণ মনে হয় মতিভ্রম। এই সংস্কারের কথা যতদিন আমরা জোরেশোরে না বলছি, ততদিন রাগিব সাহেবরা প্রচলিত ব্যবস্থাটিকেই বিভিন্ন "ইমোশনাল যুক্তি" দেখিয়ে টিকিয়ে রাখার ফর্মূলা দিয়ে যাবেন, আর সেখান থেকে পাশকৃতদের যেহেতু দেশের মূলধারার সার্ভিসগুলোতে অংশগ্রহণেও বাধা থাকছেনা (এদের ফর্মূলা অনুযায়ী), তাহলে আর সংস্কারের দরকার পড়বে কেন! শেষ বিচারে মাদ্রাসাকে সারাজীবন "মাদ্রাসা" হিসেবেই রেখে দিতে হবে এদের কথা শুনলে। এলিটিস্ট চক্রান্ত কোনটা? মাদ্রাসা শিক্ষার আমূল সংস্কার করা, নাকি মাদ্রাসাকে চিরকাল মাদ্রাসা বানিয়ে রাখা? মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিই চিন্তিত হবার মতই ব্যাপার। এমন শুভার্থী যাদের, তাদের আর শত্রুর দরকার হয়না। উপরে "ইমোশনাল যুক্তির" কথাটা তুললাম একারণেই যে, বেশীর ভাগ সময়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদেরই দেখেছি বেকায়দায় পড়লে হঠাত তারা জনগণের দারিদ্র, বৈষম্য আর অভাব বঞ্চনার দোহাই দিয়ে বাকি জনগণের sympathy'র সুযোগ নিতে চান। এসব অনেক দেখেছি তো, তাই কেউ যখন হঠাত ফলাও করে জনদরদী ডায়ালগ দিতে থাকেন তখন মনে সন্দেহ জাগে।

অনেক কিছু বলেছেন রাগিব সাহেব, কিন্তু আমার মূল যুক্তিগুলো তাকে খন্ডন করতে দেখলাম না। গলাবাজি আর ব্যক্তিগত আক্রমণের এই troll‌‌-সুলভ প্রবণতা-স্ট্র্যাটেজি আশা করি তিনি ভবিষ্যতে ত্যাগ করবেন; এ বিষয়ে (Trolling) স্পষ্টতই তিনি বাকী সবার চেয়ে অনেক বেশী জানেন (তার কথা অনুযায়ী)। তার আচরণ আমাকে অবাক এবং হতাশ করেছে।

===

রাগিব সাহেব,
সবশেষে শুধু এটুকুই বলবো। আপনার মুক্তিযুদ্ধ এবং WIKI বিষয়ক কাজগুলোর সাথে আমি কিছুটা পরিচিত। সে জন্য আমার এবং অনেকেরই সাধুবাদ থাকবে। সেজন্যই মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে এমন অদূরদর্শী তথ্য (আসাদুল্লাহ) এবং naive যুক্তি উপস্থাপন দেখে অবাক হয়েছিলাম। আপনার কাছ থেকে এমন মতামতের প্রচার আশা করিনি বলেই এত কথা। ব্যক্তিগত ক্ষোভ আর অহংবোধের উর্দ্ধে উঠে আসুন, দেখবেন আরো অনেক মানুষকে আপনার যুক্তি বোঝাতে সমর্থ হবেন। এই আলোচনায় আপনার মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে আপনার ওকালতির জন্য সাধুবাদ জানাতে পারছিনা বলে দুঃখিত।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

শামীম সাহেব,
মন্তব্য করার পরপর একটা মেসেজ পাবেন যেটা আপনাকে জানাবে যে আপনার মন্তব্য মডারেশন কিউতে জমা হয়েছে। একাধিকবার মন্তব্য করবার দরকার নেই। ধন্যবাদ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হিমু এর ছবি

প্রিয় শামীম ইফতেখার,

আমার মনে হয়, যদি ব্যক্তি-উদ্দিষ্ট সারকাজম কমানো যায়, তাহলে আলোচনা বেশ ভালোভাবেই এগোতে পারে। আপনি কোন বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন, সেটা এক জিনিস, আর আপত্তির পাশাপাশি কাউকে উদ্দেশ্য করে সারকাস্টিক মন্তব্য করছেন, সেটা অন্য জিনিস। ওতে তিক্ততা ক্রমশ বাড়ে, শেষ পর্যন্ত মূল আলোচনা থেকে সরে এসে কয়েকজন মানুষের ধস্তাধস্তিতে পরিণত হয়। সেটা সচলায়তনে কাম্য নয়। খুশি হবো যদি আপনার পরবর্তী মন্তব্যে এ ব্যাপারটা মনে রেখে আমাদের উপকৃত করেন। ধন্যবাদ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

দিগন্ত এর ছবি

ব্যাপারটা ভাল আলোচনা থেকে হাইজ্যাক হয়ে গেল মন খারাপ ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শামীম ইফতেখার [অতিথি] এর ছবি

(মতামতটি রিলিজ করলে কৃতজ্ঞ হব)

@ হিমু (২২.৩)

সারকাজম এবং ধস্তাধস্তি নিয়ে আপনার মতামতের সাথে সম্পূর্ণ একমত। মডারেটর হিসেবে পরিবেশ সংরক্ষণ তো আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তবে আপনার চোখে যে শুধু আমার মন্তব্যের সারকাজমই ধরা দিল সেটা একটু দুঃখজনক। নিজেদের (নিচের দু'টো মন্তব্যখন্ডনে ব্যাখ্যা দেয়া আছে, দেখুন) সম্মানিত সচল বন্ধুদের সারকাজম আর ব্যক্তিগত আক্রমণের বিরুদ্ধেও যদি আপনার সমান অবস্থান থাকতো, তাহলে নবাগত হিসেবে আমরা হয়তো কিছুটা স্বস্তি পেতাম এই পরিবেশে। সাহস করে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে নিরাপদ বোধ করতাম।

@ রাগিব (২২.২)

বিষয়টি ইমেইল এ লেখার হলে তাই করতাম। কিন্তু আপনি বুঝে বা না বুঝে আমার অবস্থান পাঠকদের কাছে misrepresent করছেন মনে হওয়াতে এখানেই comment দিতে বাধ্য হলাম।

আর আমার যে "যুক্তি" ও পরিসংখ্যাণে আপনার এতো আপত্তি এসেছিলো, ("ছাপার অক্ষরে কোন তথ্য বা উপাত্ত পাওয়ামাত্রই তা উদ্ধৃত করার লোভ সামলানো মনে হয় সব দিক থেকে ভালো।") - সেই পরিসংখ্যাণের মূল অংশ (ডেইলি স্টার থেকে উদ্ধৃত) ছিলো দেশের বিভিন্ন ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও তাদের ছাত্র সংখ্যার তথ্য। কোনো বিশ্লেষণ ছাড়া প্রদত্ত সেই raw data নিয়ে কি আপনার আপত্তি রয়েছে? বা তথ্যগুলোতে ত্রুটি রয়েছে কোনো? যদি সংখ্যাগুলো ঠিক হয়, তাহলে সেই সংখ্যাগুলো খুঁজে বের করাতে সমস্যা কোথায়?

দয়া করে আমার কথার অপব্যাখ্যা দিয়ে পাঠকদের বিভ্রান্ত করবেন না। "পরিসংখ্যানে" বা "যুক্তি" উপস্থাপনে ঠিক কোথায় আপনি আমার আপত্তি খুঁজে পেয়েছেন, বুঝতে পারছিনা। আপত্তি করেছি একটি discredit research (আসাদুল্লাহ) থেকে যখন আপনি উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন সেটি নিয়ে। সেটি তো মনে হয় করাই উচিত। আলমগীর সাহেব বলেছেন আপনি নাকি পিএইচডি করছেন বর্তমানে। তাই কোন্ পরিসংখ্যানটি গ্রহণযোগ্য আর কোনটি নয়, তা নিয়েই আমার মূল বক্তব্যটি ছিল। এসব আপনার হয়তো আমার চেয়েও ভালো বোঝার কথা। আর ডেইলি স্টার থেকে উদ্ধৃত আপনার কোন্ raw data'র কথা বলছেন যেটিকে আমি সমালোচনা/challenge করেছি বলে দাবী করেছেন? আপনি বলার পর আমার মন্তব্যগুলো আবারো পড়লাম। সেখানে তো আসাদুল্লাহ'র উপাত্ত ছাড়া আর কিছুকে সমালোচনা করিনি আমি! হ্যাঁ, মাদ্রাসা উপাত্তভিত্তিক আপনার Daily Star এর পরিসংখ্যানকে (মনে রাখবেন, পরিসংখ্যানটিকে কিন্তু আমি challenge করিনি কোনখানে) কেন্দ্র করে আপনার নীতিগত অবস্থান বা উপসংহারটি নিয়ে আমি দ্বিমত পোষণ করেছি মাত্র। আবারো বলছি, উপাত্ত নয়, সেটিকে কেন্দ্র করে যে যুক্তি পদ্ধতি (বা রাজনৈতিক অবস্থান যাই বলুন না কেন) সেটিকে সমালোচনা করেছি মাত্র। সেটি করার অধিকার মনে হয় আমার আছে।

দ্বিতীয়ত, একবার বলছেন "যুক্তি/পরিসংখ্যান দিইনি" (স্রেফ ইন্টারেস্টিং তথ্য উল্লেখ করেছি), আবার এখন বলছেন "যুক্তি/পরিসংখ্যান দিয়েছি"। দয়া করে মনস্থির করুন, কোনটা আপনার position। Discredited research এর পরিসংখ্যান উল্লেখের honest ভুল যে কারোই হতে পারে। সেটা আসলেই কোন বড় অপরাধ নয়। কিন্তু তাকে আপনার এমন ধনুর্ভাঙ্গা পণ নিয়ে defend কেন করতে হবে, তাই তো বুঝতে পারছিনা ভাই। এমনই আপনার defend করার তাগিদ যে সে জন্য যাবতীয় sarcasm আর ব্যক্তিগত আক্রমণ আর অবান্তর proposition (আমি নাকি এখানে আঃলী-বিএনপি মতাদর্শ ইত্যাদি ইত্যাদি!) করতেও পিছপা হচ্ছেন না। আপনি হয়তো আর কারো মন্তব্যের সাথে আমারগুলোকে গুলিয়ে ফেলছেন। আশা করি এবার অন্তত আমার অবস্থানটি কিছুটা হলেও পরিস্কার হবে আপনার কাছে। মন্তব্যটি বাংলাতেই লেখা।

[b]@ আলমগীর (২৩.১.১)[/b]

সংখ্যা দিয়েন না (দেঁতো হাসি)
যেমন, লাখ লাখ ছেলে পড়ে, অধিকাংশ এরকম, বেশীরভাগ ওরকম। প্রায় সবটাই সাদা, কিছু অংশ কালা। আশা করা যায়, এতে বিশিষ্টরা আমোদিত হবেন।

ধন্যবাদ আপনার সারকাজমের জন্য। আমিও আনন্দিত যে কিছুটা হলেও আপনাকে আনন্দের খোরাক যোগাতে পেরিছি। যাকগে, বিষয়টির একটা প্রত্যুত্তর রাগিবের মন্তব্যের জবাবে দেয়ার চেষ্টা করেছি উপরে। তাতেও যদি বোঝাতে না পারি, তাহলে অগত্যা নিজের ভাষা জ্ঞানকেই না হয় দুষবো! দেখে মনে হচ্ছে, স্পষ্টতই সচলায়তনের ঘরের মানুষেরা যখন সারকাজম (বা অন্যায়ভাবে অতিথি অভ্যাগতদের ব্যক্তিগত আক্রমণ) করেন তখন তা ১০০% জায়েজ।


@ দিগন্ত (২৩)

ব্যাপারটা ভাল আলোচনা থেকে হাইজ্যাক হয়ে গেল

একটি আলোচনার critical aspects উত্থাপন করলে বা বিভিন্ন যুক্তি পরিসংখ্যানের ত্রুটি তুলে ধরলে সেটি আলোচনাকে পন্ড/হাইজ্যাক করে - একথা কি ঠিক?

হিমু এর ছবি

আপনার নিবন্ধিত অ্যাকাউন্টটি অতিথি হিসেবে সচল, সেটি ব্যবহার করতে পারেন।

সারকাজমের উত্তরে সারকাজম বাড়ে বলেই আপনাকে মেসেজটি দেয়া। রাগিব হাসান আর আলমগীর তো দীর্ঘদিন ধরে সচল, তাঁদের তো সারকাস্টিক হতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না, "ফ্রেন্ডলি ফায়ার" এর আওতার বাইরে।

তবে যদি এই সারকাজমের বিস্তার চলতেই থাকে, মডারেটররা সম্ভবত কমেন্ট লক করে দেবেন। আপনি যেমন ভাবছেন, সচলায়তনের সদস্যদেরকেও অযথা সারকাজমের বিস্তারের সুযোগ দেয়া হয়, ব্যাপারটি তেমন নয়।

নতুন একজন অতিথি তিক্ত তর্কের সূত্রপাত দিয়ে সচলে যোগ দেবেন, এমনটা কাম্য নয়। আমি পাঠক হিসেবে আশা করছি, এই আউটবার্স্ট আবার চুপসে যাবে, তর্কের বাঘেরা নিজেদের থাবা চেটে ঠান্ডা মাথায় খানিকটা ভাববেন। মডারেটরের বক্তব্য "সচলায়তন" বা "সন্দেশ" নিকে আসে, কাজেই আমার বক্তব্য নেহায়েতই একজন সদস্য ও পাঠকের, এমনটি জানবেন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

হিমু এর ছবি

পোস্ট আর তার মন্তব্যে নানা তর্কে জড়িয়ে একটা চিন্তা ঢুকলো মাথায়। বাংলাদেশে চলমান মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ছবি আমাদের সামনে দাঁড় করাতে পারে, এমন একটি পোস্টের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। আমি ইতোমধ্যে মাদ্রাসার একজন ছাত্রের সাথে যোগাযোগ করেছি, যিনি আমাকে এ ব্যাপারে বিশদ ধারণা দেবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি সচলে এ ব্যাপারে অভিজ্ঞদের কাছে অনুরোধ রইলো এর ওপর যথাযথ আলোকপাতের।

তবে সাম্প্রতিকতম তর্কে যা চোখে পড়েছে, সেটি হচ্ছে মাদ্রাসাছাত্রদের আনুপাতিক হারে সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণের ব্যাপারটি। এখানে এসে একটি দ্বিধা আমার মনে ভর করেছে। আমাদের সেনাবাহিনীতে কি আনুপাতিক হারে সংখ্যালঘুদের রিক্রুট করা হয়? সেনাবাহিনীতে কি আনুপাতিক হারে নারী রিক্রুট করা হয়? তাহলে কী যুক্তিতে আমরা সেনাবাহিনীতে আনুপাতিক হারে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তি করতে চাই? সেনাবাহিনী তো সরকারী কর্মীবাহিনীর মতো সাধারণ কোন বাহিনী নয়। এই বাহিনী প্রযুক্ত হয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, এবং বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখি, সেনা অফিসাররা একজন প্রধানমন্ত্রীকে সপরিবারে হত্যা করে চেইন অব কমান্ড ভেঙে একজন অনুপ্রবেশকারী (Userper) স্বঘোষিত সরকারপ্রধান খন্দকার মুশতাককে সহায়তা করেছে, সেনাপ্রধান মার্শাল ল উসকে দিয়ে পরবর্তীতে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করেছে দুইবার, এবং সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক ডামাডোলে বিশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে সমর্থন দিয়েছে। এগুলো করার ক্ষমতা দেশের আর কোন বাহিনীর নেই। দেশে ডাক্তার শাসন, প্রকৌশলী শাসন, কাঠমিস্ত্রি শাসন বা ট্রাকড্রাইভার শাসন আসেনি, আসবেও না, কিন্তু সেনা শাসন এসেছে, এবং কে জানে হয়তো ভবিষ্যতেও আসবে। এমন একটি বাহিনী যদি সর্বস্তরের মানুষের আনুপাতিক হারেই গঠিত হতে হবে, তাহলে সর্বপ্রথম এতে নারী ও সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক।

দ্বিতীয়ত, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা কি আদৌ কোন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছে? মাদ্রাসায় কী পড়ানো হবে, তা কে ঠিক করে দেয়? কী পড়ানো হয়, তা কে খোঁজ নেয়? মাদ্রাসার ছাত্ররা দরিদ্র বলেই সহানুভূতির পাত্র, কিন্তু এই সহানুভূতির অপব্যবহার হচ্ছে কি না, তা কি আমরা ভাবি? আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সূত্রে জানি, অনেক মাদ্রাসায় গণিত বিষয়টি পর্যন্ত উর্দুতে পড়ানো হয়। উর্দুকে আমরা ১৯৫২ সালে পাছায় লাথি মেরে বের করেছি বলেই আমার ধারণা ছিলো, কিন্তু দেখছি বিষয়টি সত্য নয়।

মাদ্রাসার আশ্রয় নিচ্ছেন দরিদ্রতম জনগোষ্ঠী, কিন্তু মাদ্রাসায় তাঁদের কী শেখানো হচ্ছে, নরম মাটির তালকে কোন ছাঁচে গড়া হচ্ছে, তা না জেনে সহানুভূতি প্রকাশে আমি প্রস্তুত নই।

আমি মনে করি, প্রতিটি মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্যে সরকারি কাঠামো থাকা প্রয়োজন। যদি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরেই কোন কিছু গড়ে ওঠে, এবং তার প্রতি আমাদের সমর্থন যোগাতে হয়, তাহলে আমরা দেখতে চাইবো সেখানে কী হয় না হয়। কারণ এই দরিদ্র বেচারাদেরকে টেনে আনা হয় লালনের মূর্তি নামানোর জন্যে, বলাকার মূর্তি ভাঙার জন্যে। এসব কাজের জন্যে যে মাইন্ডসেট প্রয়োজন, সে মাইন্ডসেট তৈরির কারখানাকে কোন ধরনের লাই দেয়ার সপক্ষে আমি নেই। এতে যদি পক্ষপাতিত্ব হয় তো হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

স্নিগ্ধা এর ছবি

@ হিমু - অনেক ধন্যবাদ, কথাগুলো গুছিয়ে বলে দেয়ার জন্য! আমার প্রধান সমস্যা হলো আমি চট করে কোন ডেটা দিতে পারি না, আমার সম্বল হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়ে পাওয়া বিশ্লেষণ আর বাংলাদেশে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে এমন গবেষকদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু তথ্য। আলমগীর আর রাগিবের দেয়া সংখ্যার প্রত্যুত্তরে তাই দেয়ার মত পালটা কোন উপাত্ত আমার ছিলো না, যদিও অন্য কিছু কথা বলার ইচ্ছে ছিলো ঠিকই। দু'জনকেই ধন্যবাদ, তাদের নিজ নিজ যুক্তির জন্য।

রাগিবকে আমিই প্রথম উদ্ধৃত করে তার সাথে দ্বিমত পোষণ করি, পরে বিতর্কের সুর বা ধরণ অন্যদিকে চলে যাওয়াতে বরং খানিকটা অপরাধবোধেই ভুগছিলাম! সব মিলিয়ে তাই, আলোচনাটা চলুক এই ইচ্ছে পোষণ করলেও, নিজে তাতে অংশগ্রহন করতে ইতস্তত করছিলাম।

রাগিব, আলমগীর, দিগন্ত এবং ইফতেখার শামীমকে বলছি - আমার নিজের কাজের জন্যই মাদ্রাসা বা ইসলামবাদ এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অনুদান নিয়ে যথাযথ উপাত্ত, তথ্য, তত্ত্ব - যে কোন কিছু পেলে আমি বিশেষভাবে উপকৃত হবো! অতএব, প্লিজ আলোচনাটা বজায় রাখি চলুন হাসি

IFPRI (International Food Policy Research Institute) একটি রিসার্চ অরগ্যানাইযেশন, যার হেডকোয়ার্টার ওয়াশিংটন ডি সি তে আর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার অফিস এবং কার্যক্রম রয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এদের ভালো কিছু কাজ আছে। IFPRI'র একজন বাংলাদেশী গবেষক, যিঁনি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এখন আরেকটি কাজ করছেন বাংলাদেশে, আমাকে বলেছেন যে ডেটা কালেক্ট করতে তিঁনি এবং তাঁর সহকারী/রা বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় গেছেন। ঢাকার বাইরে - যদ্দূর মনে পড়ে। সেখানে অনেকগুলো মাদ্রাসায় গিয়ে ওনারা সরাসরি মাদ্রাসার ছাত্রদের ইন্টারভিউ নিতে পারেননি, কারণ ছাত্ররা কেউ বাংলা বলতে পারে না। তারা মাদ্রাসায় ভর্তি হয় খুব ছোটবেলায় এবং তখন থেকেই তাদের কে সব কিছু এমনকি অংকও পড়ানো হয় উর্দূতে। ফলে ওরা বাংলায় ঠিকমতো কথা বলতে পারে না।

এটা বাংলাদেশেরই ঘটনা, ২০০৮ সালের ঘটনা!

আমাদের বাড়িতে কাজ করতে আসা কয়েকজনের ছেলে মাদ্রাসায় যায় শোনার পরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম মাদ্রাসায় পড়ে কি তাদের কোন লাভ হচ্ছে? সরকারী স্কুলের চাইতে খরচ কি কম? উত্তরটা ছিলো এরকম - মাদ্রাসায় গেলে অনেক ক্ষেত্রে বাবামাদের কোন খরচ দিতে হয় না, এবং ভবিষ্যতে চাকরী পাওয়া যাবে এরকম আশ্বাস তারা পায়।

এবং এখানেই আমার প্রশ্ন - বাংলাদেশের মত একটা গরীব দেশে বিনা খরচে যারা শিক্ষাদান করছে তারা সেই আর্থিক সঙ্গতি কোত্থেকে পাচ্ছে? যারা সেই সামর্থ্যের যোগানদার তারা কি কারণে বা স্বার্থে এই ভার নিচ্ছে?
মাদ্রাসায় পড়ার সাথে কি আসলেই জামাত বা অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার কোন সম্পর্ক আছে না নেই? যদি বা যোগ নাও দেয়, মাদ্রাসায় পড়ার ফলে ধর্মীয় জ্ঞান বেশী পাওয়া ছাড়া, মানসিকতার দিক থেকে আর কি বদল ঘটছে, বা ঘটছে কি?

এই ব্যাপারে হয় আরো তথ্য/বিশ্লেষণ অথবা শিগগীরই তথ্যসমৃদ্ধ আলাদা একটি পোস্ট পাওয়া যাবে, সেই আশায় আছি - হাসি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সেনাবাহিনী সম্পর্কে কিছু এড করা যাক এই সুযোগে ।

বিষয় হচ্ছে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার যে মধ্যবিত্ত ক্রেজ আশির দশকে ছিল সেটি এখন আর নেই । দুটো কারন এখানে । প্রথম কারন হচ্ছে নব্বই দশকে দেশে গনতন্ত্র জাতীয় কিছু বিষয় চালু হওয়ায় সেনাবাহিনীর পাওয়ার দেখানোর সুযোগ সংকুচিত ছিল ১/১১ এর আগ পর্যন্ত । আরেকটি বড় কারন বেসরকারী খাতের বিকাশ । দেশে বেসরকারী খাত উন্মুক্ত হওয়ায় মেধাবী মধ্যবিত্তরা তাই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আর আগের মতো আগ্রহী নয় । বেসরকারী পর্যায়ে যখন একজন তরুণ ২০/৩০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারে সহজেই , তখন শুধু মাত্র বেতন আর রেশন নির্ভর , ঘুষের প্রকাশ্য সুযোগহীন অথচ কষ্টকর সেনা পেশায় মধ্যবিত্ত তরুনরা তেমন একটা আগের মতো যেতে চায় না ।

কিন্তু সেনা অফিসার নিয়োগ তো বন্ধ হবে না , সুতরাং সেখানে তুলনামুলক কম সুযোগ পাওয়া তরুণরা ট্রাই করছে এবং প্রতিযোগিতা কমে আসায় সুযোগও বেশি পাচ্ছে । তাদের মাঝে মাদ্রাসা কিংবা মফস্বলের ছোট কলেজের তরুনরা বেশি সংখ্যক থাকতে পারে বলেই মনে হচ্ছে ।

সেনাবাহিনীতে মাদ্রাসা ছাত্রদের যোগদানের ঘটনা সত্য মিথ্যা জানি না , কিন্তু এটি খুবই সত্যি কথা যে সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়ার পরীক্ষা পৃথিবীর সহজতম পরীক্ষাগুলোর একটি হিসেবেই আমি দেখেছি । নূন্যতম আইকিউ আর শারিরীক যোগ্যতার সাথে কিছুটা উদ্যম থাকলে যে কেউ সেখানে যোগ দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস । ঢাকা শহরে কোচিং সেন্টারগুলোতে মন দিয়ে কোচিং করলে ১০০ ভাগ প্রশ্ন কমন পড়ে , এটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ।

উল্লেখযোগ্য তথ্য হচ্ছে , শিবিরের একটি সেনা কোচিং সেন্টার আছে বলে শুনেছিলাম , সেটি নাকি গোপনে পরিচালিত হয় । ৩৫ লং এ আমাদের সাথে দুটি শিবিরের ছেলে চান্স পেয়েছিল , যারা ঢাকায় এসে কোচিং করেছিল , কিন্তু তাদের কোচিং সেন্টারের নাম কেউ জানত না । পরে একজনকে ভাটিয়ারি থেকে বের করে দেয়া হয় রাজনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অপরাধে , এটা মনে আছে ।

দিগন্ত এর ছবি

আমার একটা পয়েন্টও আলোচনা হয়নি। সেটা আমি তুলে দিচ্ছি আরেকবার।

রাগিবভাইয়ের দেওয়া ডেইলি স্টারের লিঙ্কে মাদ্রাসার সংখ্যাবৃদ্ধি তো দেখলাম বিএনপি আমলে বেশী করে হয়েছে -
সরকারী স্কুলের সংখ্যাবৃদ্ধি ১০% আর মাদ্রাসার সংখ্যাবৃদ্ধি ২২% বিএনপি আমলে।
সরকারী স্কুলের সংখ্যাবৃদ্ধি ২৮% আর মাদ্রাসার সংখ্যাবৃদ্ধি ১৭% আওয়ামী আমলে।

সুতরাং সরকারী খরচায় স্কুল বানানো আওয়ামী আমলে অনেক বেশী হারেই হয়েছে (২৮% বনাম ১০%)। কিন্তু একই সময়ে ছাত্র মাদ্রাসার বেশী হারে বেড়েছে। এর দুটো অর্থ হতে পারে -
১) মাদ্রাসাগুলো আগের তুলনায় অনেক বেশী সুযোগসুবিধা দেওয়া শুরু করেছে।
২) স্কুলের পঠনপাঠনের স্ট্যান্ডার্ড পড়ে গেছে।
৩) জনসাধারণের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার আগ্রহ বেড়েছে।

এদের মধ্যে কোনটা ঠিক?


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আলমগীর এর ছবি

দিগন্ত
ডেইলি স্টার লিখেছে:
"The number of general educational institutions, which receive government funds, has increased 9.74 percent against a 22.22 percent growth of madrasas from 2001 to 2005, Bangladesh Economic Review statistics show."

এর মানে না বিএনপি বা আলীগের চার বছরে অতগুলো নতুন মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে। আমার বিশ্বাস, পরিসংখ্যানটা বলছে, সে সময়টাতে কী সংখ্যক মাদ্রাসা (যেগুলো আগেই স্থাপিত) সরকারী অনুদানের আওতায় এসেছে। (অনুদানের লোভে হয়ত কিছু নতুন স্থাপিত হয়েছে।)

যুক্তির খাতিরে ধরি, সংখ্যাটা নতুন মাদ্রাসা স্থাপনের।
বিএনপির চার বছরে ২২% ভাগ বাড়লে তা, বছরে ৫.৫%, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের প্রায় দ্বিগুণ। বাকী পুরনো স্কুল/মাদ্রাসাগুলো তাহলে কোথা থেকে শিক্ষার্থী পেল?

দিগন্ত এর ছবি

আমার বিশ্বাস, পরিসংখ্যানটা বলছে, সে সময়টাতে কী সংখ্যক মাদ্রাসা (যেগুলো আগেই স্থাপিত) সরকারী অনুদানের আওতায় এসেছে।

আমার মনে হচ্ছে এটাই সঠিক ব্যাখ্যা। ধন্যবাদ ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শামীম ইফতেখার এর ছবি

বিরক্তির কারণ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করছি।
মঙ্গল হোক সবার।

শিক্ষানবিস এর ছবি

রাগিব হাসান (#৮০) ও আরিফ জেবতিক (#৮৭) সেনা অফিসার পদে মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়োগের বিষয়টি নজরে এনেছেন। রাগিব হাসানের মন্তব্য থেকে অফিসার ও নন-কমিশন পদে নিয়োগের বিষয়টিও নজরে এসেছে। আরিফ জেবতিক বলেছেন, ৩৫% মাদ্রাসার থাকতেও পারে বলেছেন।
আমি যতদূর জানি আর্মিতে অফিসার পদে ৩৫% মাদ্রাসার ছাত্র থাকার কোনই সম্ভাবনা নেই।
আমি আমাদের ব্যাচের খবর জানি।

২০০৫ সালে আর্মির ৫৭তম লং কোর্সে অনেককে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রায় ১৭০ জনের মতো। সাধারণত ১০০ জনের বেশী নেয়া হয় না। আমাদের বার ব্যতিক্রম। এই ১৭০ এর মধ্যে অন্তত ১১০-১২০ জনই ছিল ক্যাডেট কলেজের। যেমন, শুধু বরিশাল ক্যাডেট কলেজ থেকেই ২৩ জন (৫০ জনের মধ্যে) চান্স পেয়েছিল। মির্জাপুর থেকেও ১১ জন।
ধরে নেয়া যাক ১২০ জনই ছিল ক্যাডেট কলেজের। বাকি ৫০ জনের মধ্যে ৪০ জনই যে মাদ্রাসার নয় এ ব্যাপারে আমি মোটামুটি নিঃসন্দেহ। তাহলে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ১৭০ জনের একটি ব্যাচে মাদ্রাসার ছাত্র সর্বোচ্চ ১০ জন হতে পারে, আরও কম হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
২০০৫ সালের দিকে আমার সাথে শিবিরেরও সম্পর্ক ছিল। এই ১৭০ জনের মধ্যে মাত্র ৩ জন ছিল যাদের শিবির ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। এর মধ্যে ২ জন শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিল না, সমর্থক টাইপ ছিল। এই ব্যাপারেও কোন সন্দেহ নেই।
শিবিরের একটা আর্মি কোচিং সেন্টার আসলেই আছে। এই কোচিং থেকে প্রতি বছরই ২-১ জন চান্স পায়। এর বেশী না। তবে আর্মির যেটা সবচেয়ে জনপ্রিয় কোচিং (ডিফেন্স গাইড), শিবিরপন্থীরাও সেখানেই কোচিং করে। কারণ সেখানে করলেই চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

সুতরাং ৩৫% এর পরিসংখ্যানটা যদি সত্যি হয় তাহলে সেটা অবশ্যই নন-কমিশনের মধ্যে। আমার মতে, এটা সত্য হওয়ার সম্ভাবনা কম, কারণ জয় এছাড়াও বেশ কিছু ভুল তথ্য ঢুকিয়েছেন। আর নন-কমিশনের ব্যাপারে সত্যি হলেও কি যায় আসে। যদ্দূর মনে হয় নন-কমিশনের তো তেমন কিছুই করার ক্ষমতা নেই।

কিন্তু তাহলে আবার প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে, এবারের সামরিক সরকার ধর্মবাদীদের সাপোর্ট করলো কেন? মিলিটারির ভেতর জামাতের কতটুকু পাওয়ার আছে তা আবার খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আপনার বিশ্লেষনটি যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে ।

সবজান্তা এর ছবি

মিলিটারির ভেতর জামাতের কতটুকু পাওয়ার আছে তা আবার খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

সঠিক পরিসংখ্যান জানি না, তবে জামাতের নেতা, কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমের ছেলে সামরিক বাহিনীর বেশ উচ্চ পদে আসীন বলে জানি।

সেই সাথে আরো কানা-ঘুষা আর গুজবও কানে আসে, যার ১০% সত্যি হলেও বলতে হবে, সামরিক বাহিনীতে জামাতের হোল্ড সন্দেহাতীত।


অলমিতি বিস্তারেণ

অতিথি লেখক এর ছবি

জয়ের আরেকটি লেখা আজকের ফোরামে এসেছে। এটা বাংলা করলেও জমবে ভালো ।

হিমু এর ছবি

আপনি করুন, আমরা পড়ি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা ! রাগিব ভাই'র একটা লিংক-সূত্র ধরে প্রাপ্ত তথ্যের উপর বিস্ময় প্রকাশের সুরটা আমরা আম-পাবলিকরা শুরুতেই বুঝে গেলেও মাঝখানে হঠাৎ এটাই প্রজ্ঞায়িত হয়ে এতক্ষণ যা লঙ্কাকাণ্ড হলো, আমার তো ভাই মন্তব্য করতে ভয়ই ধরে গেছে, শেষে আবার কোন্ ফাঁসে ফেঁসে যাই !

তবে বিষয়টা যে বার্নিং ইস্যু তা বোধ করি অস্বীকার উপায় নেই। আশা করছি এর আগামীতে আরো অনেক কিছু জানতে পারবো যদি যোগ্য কোন সচল আমাদেরকে জানাতে উদ্যোগী হন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।