গণহত্যা শেষে একটি জাতির উত্থান
শ্লোগান দিয়ে বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে কোন লাভ হয়েছে কি-না জানি না। শুধু জানি, পৃথিবীর ১৪৭তম স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ঠিকই নিজের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এদেশের মানুষ যেন নতুনভাবে জীবন সংগ্রাম শুরু করেছে। ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কথা চিন্তা করলে একে সত্যিই অলৌকিক বলে ভুল হয়।
বাংলাদেশীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রভাব সুস্পষ্ট। শহর বলি আর গ্রামই বলি, সর্বত্র একই অবস্থা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আর দেশের প্রতিটি স্থানেই পুনর্গঠনের কাজ চলছে। কিন্তু আরোগ্য লাভের এই প্রচেষ্টাও বোধ করি খুব কষ্টকর।
শেখ মুজিবের সরকার বলছে, দেশে ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০ লক্ষ বাঙালি নিহত হয়েছে। সংখ্যাটি হয়তো অতিরঞ্জিত, কিন্তু সে সময় ঢাকাসহ এই বিস্তীর্ণ নদীমাতৃক দেশের প্রতিটি প্রান্তে যে হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে গণহত্যার খুব কাছাকাছি।
যতদিনে যুদ্ধ শেষ হয়েছে, ততদিনে পঁচে যাওয়া লাশের মাংস খেয়ে খেয়ে শকুনেরা আরও মোটাতাজা হয়ে উঠেছে। এতোই মোটা হয়েছে যে, তারা আর আগের মতো স্বচ্ছন্দে উড়তে পারে না। যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের যেন কোন প্রাণশক্তিই অবশিষ্ট নেই। থাকবে কি করে, জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রাণশক্তির পুরোটাই যে বাঙালিরা যুদ্ধের ময়দানে ঢেলে দিয়ে এসেছে। সরকার ভিক্ষুকে পরিণত হতে বাধ্য হয়েছে। প্রয়োজনের খাতিরে তাকে বিশ্বব্যাপী ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়াতে হয়েছে। আর এভাবেই ইতিহাসের বৃহত্তম ত্রাণ কর্মসূচীর সূচনা ঘটেছে।
স্ক্যান্ডিনেভীয় এক দেশ থেকে ত্রাণ হিসেবে আসা একটি চালান এক্ষেত্রে উল্লেখ করার মত। তারা ভাল বুঝেই গরম কাপড় পাঠিয়েছে। ইউরোপে এই কাপড়গুলো স্কি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। নাতিশীতোষ্ণ এক দেশে কি-না এলো স্কি-ক্লোদিং। ঢাকার এক ত্রাণকর্মী আমাকে বললেন, "অনেকেরই বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারণা নেই। অনেকে মনে করে, হিমালয়ের কাছেপিঠে কোথাও হবে। আবার অনেকে ভাবে, দক্ষিণ দিকে থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী হবে হয়তো।"
এক নদীবিধৌত উর্বর সমভূমি
রাজধানী ঢাকা থেকে পূর্ব দিকে যাওয়ার পথেই বাংলাদেশের রূপ দেখলাম। ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক স্থানেই বিশাল এলাকা জুড়ে সরষের চাষ লক্ষ্য করা যায়। এবারের যাত্রাপথে সেই দিগন্ত বিস্তৃত সরষের ক্ষেত আবারও নজর কাড়লো। এই অঞ্চল এক সময় ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্ভুক্ত বঙ্গ প্রদেশের এক বিরাট অংশ গঠন করে ছিল। প্রায় পুরো অঞ্চলটাই সমতল এবং উর্বর, মোট আয়তন ৫৫,০০০ বর্গমাইল। মৌসুম এলে বন্যার নোংরা পানিতে এর অনেকটাই ডুবে যায়। পাঁচটি বড় বড় নদী ও তাদের শাখাপ্রশাখার কারণেই এখানে প্রায় নিয়মিত বন্যা হয়।
ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে মেঘনার তীরে পৌঁছলাম। এখানে ফেরী পার হতে হবে। এর আগেও দুটি ফেরী পার হতে হয়েছে। এই মেঘনা বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যে অনন্য, আশপাশের মানুষের উপর এর প্রভাবও লক্ষ্য করার মতো। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলিত স্রোত মেঘনা নামে পরিচিত। মেঘনার মাধ্যমেই ঐ দুই নদী বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে।
নদী তীরে বিভিন্ন রকমের কাজ চলছে। এক মহিলা হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে তার বাচ্চাকে গোসল করাচ্ছে, ঠাণ্ডা পানির প্রভাবে নাকি বাচ্চার কালা জ্বর কেটে যাবে। এক ধারে জেলেরা তাদের জাল গুটিয়ে আনার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে। এত ঝক্কি-ঝামেলার মধ্যেও মুখে গান লেগে আছে। আরেকটু গভীর পানিতে কেউ একজন নিজের ষাঁড়টিকে ঘষে-মেজে গোসল করাচ্ছে। ষাঁড়ের মধ্যে কোন অবাধ্যতা নেই, নিজেকে সঁপে দিয়েছে যেন।
বাংলাদেশে নদীপথের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫,০০০ মাইল। এই সুদীর্ঘ পথ নির্মাণকারী নদীগুলোতে নৌকারও অভাব নেই। এর মধ্যে মেঘনাকে আবার ব্যস্ততম নদীগুলোর কাতারে ফেলা যায়। আমার সামনে দিয়েই শয়ে শয়ে সাম্পান আকৃতির নৌকা আর বজরা চলে গেল। এই নৌকা আর বজরাগুলোতে আবার বাঁশের বেড়া দেয়া আছে। সকালের মৃদু আলোর ছটায় বাঁশগুলোকে সোনালী দেখাচ্ছিল।
একসময় ঐ পার থেকে ফেরী এসে পৌঁছুল। থেমে যাওয়ার আগে এপারের মাটিতে ধাক্কা খেল। ফেরী থেকে নামার জন্য একটা কাঠের তক্তা বসানো হচ্ছিল। এর মধ্যেই এপারের লোকগুলো- যারা পার হওয়ার জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল- হুড়মুড় করে ফেরীর কাছে চলে এল। ফেরী থেকে সব যানবাহন নামানো হচ্ছে এমন সময় এক ট্রাক চালক ঝামেলা বাঁধিয়ে বসলেন। তিনি পথ আটকে ফেরীঘাটের এক ডাবওয়ালার কাছ থেকে ডাব কেনা শুরু করে দিলেন। পেছনের হর্ন আর চিৎকার-চেঁচামেচি অগ্রাহ্য করেই তিনি ধীরে-সুস্থে ডাবের পানিটুকু শেষ করলেন। তারপর পেছনে তাকিয়ে এমন একটা ভাব ধরলেন যেন তিনি এই মাত্র সবার কথা শুনতে পেয়েছেন। তার মাথা নিচু করার ভঙ্গি দেখে অন্তত তাই মনে হল। অবশেষে ট্রাকে উঠে আবার চালাতে শুরু করলেন।
আমি ছিলাম শেষ ব্যক্তি। এরই মধ্যে ফেরীতে তার সাধ্যের অতিরিক্ত যানবাহন উঠে গেছে। আমার গাড়ি রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা আছে বলে মনে হলো না। কিন্তু ফেরীঘাটের এক লোক এই বলে আস্বস্ত করলো যে, গত কয়েক বছরের মধ্যে এই ফেরী থেকে কোন গাড়ি হারায়নি। অগত্যা যাত্রা শুরু করলাম। খুব পুরনো ইঞ্জিন আমাদের ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে চললো। এই ধাক্কাতেও নদীতে কম ঢেউ উঠেনি।
পার হওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম, এখানকার অধিকাংশ ছোট আকারের নৌকাতেই কর্মচারী দুইজন। একজন বৃদ্ধ লোক আর একটি ছোট ছেলে। বৃদ্ধ লোকটি সাধারণত ছাতার নিচে বসে থেকে সবকিছু পরিচালনা করে। পরবর্তীতে আমি এমনই এক বৃদ্ধের সাথে কথা বলি। তিনি বললেন,
"আমি এতোই বৃদ্ধ যে, বৈঠা চালাতে পারি না, দাঁড় বাইতে পারি না, এমনকি পালও লাগাতে পারি না। কিন্তু এই ছেলে- আমার বড় ছেলের ছেলে- এখনও শক্ত-সমর্থ আছে। যুদ্ধে পাক সেনারা তার বাবাকে মেরে ফেলেছে। সে আমার সাথে থেকে কাজ শিখে। একদিন এই নৌকা তার হবে। তাই আমি তাকে কাজ শেখাই আর নিজে কিছুটা বিশ্রাম করি।"
বাঙালি পুরুষেরা সাধারণত একটু খাটো হয়, চামড়ার রং খানিকটা কালো। আকারে ছোট হলে কি হবে, একেকজন দেও-দানোর সমান কাজ করতে পারে। এদের কায়িক শ্রম দেখে বিস্মিতই হতে হয়। একজন রিকশাওয়ালা সর্বোচ্চ চারজনকে নিয়ে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রিকশা চালিয়ে যেতে পারে। ঘামে তাদের পুরো শরীর ভিজে যায়, তারপরও পা থামে না। শ্রমিকেরা দিনে ১২ ঘণ্টা একটানা কাজ করে যেতে পারে। দালান শ্রমিকেরা মাথায় করে ইট ও অন্যান্য সামগ্রী বয়ে বেড়ায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়, তাদের কাজ আর শেষ হয় না। পাটকলে স্বয়ংক্রিয় তাঁতগুলো একটানা শব্দ করে যায়। এই শব্দে পাটকলের সব শ্রমিকেরই কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকে কানের এই ক্ষতি স্বীকার করেও এসব পাটকলে সারা জীবন কাজ করে যায়।
এদেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষক। কৃষকেরাও কম পরীশ্রম করে না। সারাদিন উবু হয়ে ফসল বুনে। হাল দেয়ার পর ক্ষেত ভেজা থাকে। এই ভেজা ক্ষেতেই তাদের সারাদিন কেটে যায়। এত পরীশ্রম করেও তারা সর্বোচ্চ নিজের ও নিজ পরিবারের অন্যান্যদের জন্য আহারের সংস্থান করতে পারে।
এমনকি সবচেয়ে অনুকূল সময়েও বাঙালিদের জীবন কষ্টে কাটে। মানুষের মাথাপিছু আয় বছরে মাত্র ৮০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে অবস্থা তো আরও খারাপ। তবে অবস্থা খারাপ হলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার পর বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে তার পথ বেছে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। আর এখন তাদের জন্য বেছে নেয়ার মত পথ একটিই আছে, সে পথ উত্থানের পথ।
[চলবে...]
মন্তব্য
''হলোকস্ট শেষে'' এটা শুনতে জুইত লাগতেছে না... একটা বিকল্প করা যায়? আর ছবি এবং ক্যাপসনটাকে আলাদা করে দিতে পারলে ভালো দেখা যেত মনে হয়।
এ দুটো স্রেফ চোখে পড়লো... আর সত্যি বলতে লেখা এবারো পড়িনি... দৌড় ঝাঁপ শেষ করে একবারে পড়বো... তবু (বিপ্লব)
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
কিন্তু আমি হলোকস্টের কোন বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজে পাচ্ছি না। "গণহত্যা" করা যায় না। কারণ হলোকস্ট বলতে শুধু গণহত্যাই বোঝায় না। এর সাথে ধ্বংসযজ্ঞ আর বিশৃঙ্খলা সবই থাকে। আর "গণহত্যা শেষে, উদয়ের পথে"- এই লাইনে কাব্যিক ভাবটাও আসে না। তারপরও দেখি, কেউ যদি কোন ভাল প্রতিশব্দ প্রস্তাব করতে পারেন তাহলে বদলে দেব।
ছবির ক্যাপশন আসলেই একটু বেখাপ্পা লাগছে। ভাল হতো মাঝখানে কোন এক জায়গায় ডান পাশে ছবি, আর ছবির ডানে ক্যাপশন দিতে পারলে। ছবি এবং ক্যাপশনের উপরে-নিচে অন্যান্য লেখা থাকতো। কিন্তু এমন করার সিস্টেমটা জানি না। মডারেটর কেউ এগিয়ে আসলে ভাল হয়। দুই অধ্যায়ের মাঝখানে ছবিটা দিয়ে ছবির ডানে ক্যাপশন বসিয়ে দেয়া দরকার। কেউ উপায় জানলে জানান।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
আমি অনেকক্ষন ভাবলাম... কিন্তু জুত্সই কোনো শব্দ পাইলাম না... মাথায় আইলে দিমুনে...
আর ছবি এবং ক্যাপসন বিষয়ে ঠিক আপনি যেভাবে চাইতেছিলেন করতে... আমি ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছিলাম। মডারেটরদের কেউ একটু সহযোগিতা করলে ভালো হয়...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আবারো দুর্দান্ত লাগলো !
সত্যি বলতে কি, আপনার সাবলীল অনুবাদের ঈর্ষণীয় দক্ষতাকেও সম্মান জানাচ্ছি।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
জয় হোক!
----
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
হলোকস্ট শব্দের আক্ষরিক অর্থ পূর্ণদগ্ধ, গ্রীক মূল থেকে উদ্ভূত। আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অগ্নির মাধ্যমে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, আর ব্যবহারিক অর্থ দাঁড়ায় বিপুল পরিমাণে গণহত্যা। জেনোসাইড বা গণহত্যার সাথে এর অর্থগত কোন পার্থক্য নেই।
অনুবাদ চমৎকার হচ্ছে শিক্ষানবিস। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হলোকস্ট সরিয়ে কি দেয়া যায় ভাবছি। শীঘ্রই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে। এটার বাংলা আসলেই করা প্রয়োজন। অনুচ্ছেদের মধ্যে গণহত্যাই করছি। কিন্তু শিরোনামে গণহত্যা ঠিক যাচ্ছে না। দেখি কি করা যায়।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
বাংলা পড়তে ভালই লাগছে। তবে ইংরেজীর সাথে মিলিয়ে দেখি নি। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে ঐতিহাসিক দলিল অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাবানুবাদের চেয়ে আক্ষরিক অনুবাদই ভাল। এটা তো আর সাহিত্য নয়। শিরোনামের ক্ষেত্রে যেমন বলা যায়- 'হলোকাস্ট শেষে, উদয়ের পথে'- ভাবানুবাদের ক্ষেত্রে এটা ঠিক আছে, একটু সাহিত্যভাবও আছে। কিন্তু "After the holocaust a Nation Rises"- এর অনুবাদ 'মৃত্যু/গণহত্যা শেষে একটি জাতির জন্ম/উত্থান'- এমন কিছুই মূল ইংরেজীর কাছাকাছি শোনায়।
প্রথমেই বলে নিই, শিরোনামের ব্যাপারে আপনার কথা মনে ধরেছে। তাই শিরোনাম পরিবর্তন করে "গণহত্যার শেষে একটি জাতির উত্থান" রেখে দিয়েছি। আসলে অনেক ক্ষণ ধরেই "হলোকস্ট" শব্দটা বাদ দেয়ার চেষ্টা করছিলাম।
ঐতিহাসিক দলিল আসলেই আক্ষরিক অনুবাদ করা উচিত। আরও ঠিক করে বললে বলতে হয়, ঐতিহাসিক দলিলের আসলে ভাবানুবাদ করার মত কিছু নেই। আমার দৃষ্টিতে ভাবানুবাদ লাগে তখনই যখন আক্ষরিক করলে মূল ভাবটা বজায় থাকে না। ঐতিহাসিক দলিলে সাধারণত এমন কিছু থাকে না যার আক্ষরিক অনুবাদ করলে ভাব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই লেখাটা ইংরেজির সাথে মিলিয়ে দেখলে দেখবেন, তেমন কোন পরিবর্তন আমি করিনি।
তবে এই লেখার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, ঐতিহাসিক দলিলের থেকে আলাদা। এর মধ্যে অনেক স্থানেই উপমার ব্যবহার আছে। যেমন, গত পর্বে শেখ মুজিবের প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়ার ভঙ্গি তুলে ধরতে গিয়ে লেখক বলেছেন:
"And then, as dark clouds ran like tumbleweed before a wind gusting out of the northwest, Bangabandhu posed a question,"
এখানে কিন্তু আর আক্ষরিক করা চলে না। এখানেই এনজিএম এর এই লেখাটা ঐতিহাসিক দলিলের থেকে ভিন্ন। এজন্যই অনুবাদে মাঝেমধ্যে একটু বেশী আবেগ ও কাব্যময়তা দেখবেন। তবে অবশ্যই, মূল ভাব যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছি।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
একমত@ শিক্ষানবিস।
আমিও যান্ত্রিক অনুবাদের বদলে ভাবানুবাদের পক্ষে। চমৎকার হচ্ছে।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
খুবই সুখপাঠ্য অনুবাদ।
দূর্দান্ত...
শিক্ষানবিস,
এতো চমৎকার অনুবাদ সত্যি অনেকদিন পড়িনি...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
যথারীতি চমতকার ও দুর্দান্ত ।
প্রশংসা খাতিরে প্রশংসা নয়, অনুবাদ সত্যিই দারুণ হচ্ছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ব্যাস্ততার কারণে একসাথেই দুই পর্ব পড়লাম। দারুণ হচ্ছে। যত্ন ও মেধার ছাপ সুস্পষ্ট। বাকি পর্বগুলোও যেন এমনই হয়।
লেখাটি বৃহত্তর পরিসরে প্রকাশ/প্রচার দরকার, তবে তার আগে পুরোটা মনোযোগ দিয়ে অনুবাদ করে সারুন। শেষ হলে জালাল ভাইকে তাঁর সংগ্রহে রাখার জন্য অখণ্ড সংস্করণ হিসেবে পাঠাতে পারেন।
রেস্ট্রিক্টেড
[
]
হ্যা, আগে অনুবাদ শেষ করি। তারপর পুরো অনুবাদটা কেমন হল তার উপর ভিত্তি করেই বৃহত্তর পরিসরে প্রকাশের চিন্তাভাবনা করা যাবে। তবে এনজিএম এর কপিরাইট নিয়ে বেশ ঝামেলা আছে।
পরামর্শের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। "ভ্রম" এবং "কার" শব্দ দুটি পরিবর্তনের ব্যাপারে একমত। পরিবর্তন করে "ভুল" এবং "গাড়ি" করে দিচ্ছি।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
অনুবাদ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই।
শেষ থেকে দ্বিতীয় প্যারায় "পরিশ্রম" হবে বোধহয়...
A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?
চমত্ কার !
একটানে পড়ে যাচ্ছি।
নতুন মন্তব্য করুন