আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে আমাদের ওপর। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হাইতির রাজধানী পোর্ট আউ প্রিন্স ও আশপাশের এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ পর্যন্তও হতে পারে, নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ৩০ লক্ষাধিক মানুষ এখনও ডেঞ্জার জোনে দিনাতিপাত করছে।
এ জীবনে হাইতিকে কখনও হাসতে দেখি নি। অন্য সব অনুন্নত দেশগুলোর মতোই ঈশ্বরের (উন্নত দেশ) কৃপায় বেঁচে ছিল তারা। তাদের সেরা অর্জন ছিল একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন যা যুক্তরাষ্ট্রের কোপানলে পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্র হাইতিকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য (তথাকথিত) দানকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। সেই স্থান তার এখনও আছে। মার্কিন প্রশাসনকে ঘৃণা করি। কিন্তু এখন ঘৃণার সময় নয়...
কিছু সময়ের জন্য বিভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে একসাথে হাইতির পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা নয়, এখন কেবল তাদের বাঁচার অধিকারটুকু প্রতিষ্ঠা করার সময়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মানুষগুলো যেন নিজেদেরকে একা মনে না করে...
বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই হাইতিতে বস্ত্র এবং ওষুধ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমরা আশাকরি সরকার তার সাধ্যমত অবদান রাখবে।
আমরা প্রত্যেকে সামান্য হলেও অবদান রাখতে পারি। UNICEF এবং CARE এর হয়ে অর্থ সংগ্রহের জন্য গুগল একটা আলাদা ওয়েব পৃষ্ঠা খুলেছে:
(http://www.google.com/relief/haitiearthquake/)
যাদের ক্রেডিট কার্ড আছে তারা অনলাইনে ডোনেট করতে পারেন। এছাড়া এই সাইটে ডোনেশনের জন্য অনেকগুলো উপায় বলে দেয়া আছে, সেগুলো অনুসরণ করুন। তবে হাইতির এই ঘটনার পর বেশ কিছু ফেক ডোনেশন রিকোয়েস্ট ও ছড়িয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
এছাড়া সরাসরি ডোনেশনের কোন উপায় আছে কি না আমি এখনও জানি না। কেউ যদি বাংলাদেশে সরাসরি অর্থ দানের কোন উপায় জানেন তাহলে মন্তব্যে শেয়ার করুন। উপরের লিংক কেবল অনলাইনে লেনদেনে সক্ষমদের ক্ষেত্রেই কাজে দেবে। কিংবা কেউ চাইলে পরোক্ষভাবেও অন্য কারও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যার যার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এটা ঠিক, যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বড় ধরণের অর্থ সাহায্য না পেলে হাইতির বিপর্যয় কাটবে না। আমরা আশা রাখি সেটার অভাব হবে না। পাশাপাশি আমরাও অংশ নেই...
হাইতির ভূমিকম্প সম্পর্কে জানতে হলে:
মন্তব্য
শিক্ষানবিস ভাই,
আমার সালাম নিন এই পোস্টটির জন্য।
নিজেও দিতাম, একটা বই পেয়ে ক্যারিড এওয়ে হয়ে গেছি।
আমার ক্রেডিট কার্ড থাকলে আমি অবশ্যই সাহায্য করতাম। দেখি কি করতে পারি।
আবারও ধন্যবাদ।
হাইতির ইতিহাস অসাধারণ, ইন্সপায়ারিং। দুঃখ একটাই, স্বাধীনতার দু'শতক পরও দেশের অবস্থা।
সামনে হাইতি এবং এর ইতিহাস নিয়ে লেখার আশা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আবারও।
আমেরিকাকে আগের কাজের জন্য গালি দিলেন বুঝলাম, তবে এবার কিন্তু ওবামার আন্ডারে আমেরিকা ভয়াবহ সাহায্য করছে। ৩৫০০ সৈন্য প্লাস ২২০০ মেরিন, সঙ্গে সঙ্গে ১০ কোটি ডলার এবং আরো দেয়ার প্রমিস, এয়ারপোর্ট কার্যকর রাখা - সাবাশ না বলে পারছি না রে ভাই। আমার ফেসবুকে লিংকগুলি পাবেন।
আশা করি দ্রুত এই দুঃখি দেশটার বিপদ কাটবে।
আমাদের দেশও দুঃখি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিত্যই লেগে আছে...
তাই এদের দুঃখ টা হয়তো অনুমান করতে পারি।
মঙ্গল কামনা করি মন থেকে।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
তবে সবকিছুতে আমাদের আমেরিকাকে গালি দেবার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমেরিকা এখন নিজ দেশের মতো করেই হাইতিকে সাহায্য করছে। বিশাল অর্থ, মেডিকেল সাহায্য তো আছেই, আমেরিকান নেভির বিশাল হসপিটাল শিপ ইউ এস কমফোর্টও হাইতিতে যাচ্ছে। শুধু সরকার না, এখানকার জনগণও হাত খুলে সাহায্য করছে। এক টেক্সট মেসেজ দিয়েই রেকর্ড পরিমাণ সাহায্য আসছে। যারা আমেরিকায় আছেন, তারাও ‘YELE’ লিখে 501501 তে $5 ডোনেট করতে পারেন। আর কানাডা থেকে “HAITI” to 45678 লিখে স্যালভেশন আর্মিকে $5 ডোনেট করতে পারেন। শিক্ষানবিসের দেয়া গুগল লিংক থেকে ক্রেডিট কার্ডে ও অন্যান্য দেশ থেকে সাহায্য করার তথ্য পাবেন।
বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তিগতভাবে হাইতির জন্য অর্থ প্রদান একটু বাহুল্য মনে হয় (সরকারি সাহায্যটুকুই সহমর্মিতার নিদর্শনস্বরূপ যথেষ্ট)। দেশে শুনলাম এখন তীব্র শীত, অনেক গরীব মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। যে অর্থটুকু হাইতির জন্য দেবেন ঠিক করেছিলেন, তা দিয়ে দরিদ্রদের শীত নিবারণে সাহায্য করুন। হাইতি আর বাংলাদেশে এক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নাই।
তানভির ভাই, একমত হতে পারলাম না। বাংলাদেশে শীতে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, এটা ঠিক, তাদেরকে সাহায্য করাটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু হাইতিতে যেটা হয়েছে, সেটা অকল্পনীয় পর্যায়ের মানবিক বিপর্যয়। কারো যদি সামর্থ্য থাকে, সাহায্য করা উচিত।
আজকে সকালে অফিসের জন্য বের হবার আগে কি মনে করে সি.এন.এনে চ্যানেল ঘুরিয়েছিলাম। একটা ছোট বাচ্চা মেয়ে একটা কংক্রিটের চাইয়ের নিচে অর্ধেক চাপা পড়ে আছে, লোহার রড তার পা ফুড়ে মাটিতে গেথে গেছে, একজন লোক শুধু একটা হ্যাক-শ ব্লেড দিয়ে সেই রড কাটার চেষ্টা করছে ১২ ঘন্টা ধরে। একটা মেকানিক্যাল হ্যাক-শ হলে হয়তো দুই মিনিটেই মেয়েটাকে বের করা যেত। তার মা বাইরে পাগলের মতো কাঁদছে। দেখে বুকটা ভেঙ্গে গেছে।
আল্লাহর দুনিয়ায় এতো কষ্ট কেন?
=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
ধন্যবাদ সময়োপযোগী পোস্টের জন্য।
আমেরিকার জনগন আর সরকার কিন্তু এক না। সুনামির সময়েও
আমেরিকার সাহায্য ছিল উল্লেখযোগ্য। সাধারন মানুষের সহমর্মিতা
এদেশে অসাধারন।
আমার বস ছুটিতে একটা বিয়েতে যাবেন মায়ামীতে, কিন্তু হাইতির
এই দূর্গতিতে তারও খারাপ লাগছে আনন্দ করতে।
বুশ/চেনির আমারিকার সাধারন মানুষের প্রতিনিধি নন, যদিও আমজনতা তাদের ক্ষমতায় এনেছে।
--------------------------------------
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক ধন্যবাদ পোস্টটার জন্য। খুব কষ্ট পেয়েছি এই খবরটাতে। আশা করি তাড়াতাড়ি যেনো উঠে দাঁড়াতে পারে হাইতির মানুষরা।
নতুন মন্তব্য করুন