সেই ঘরটা

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি
লিখেছেন সুলতানা পারভীন শিমুল (তারিখ: রবি, ০৯/১২/২০১২ - ১০:৪৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

০১

"সত্যি বলছি, আমাকে ভয় দেখানোর জন্য যেমন তেমন ভুত হলে চলবে না। একটু শক্তপোক্ত আর সাহসী ভুত দরকার।" গলায় একটা হালকাভাব ধরে রাখার চেষ্টা করলাম, কতোটুকু ফুটলো, জানি না। অচেনা, অস্বস্তিকর একটা জায়গায় বসে হালকা মেজাজে কথা বলাটা একটু কষ্টকর। যে ঘরটাতে বসে আছি, বহু প্রাচীন আমলের একটা বাড়ির অংশ। লোকে বলে ভুতুড়ে বাড়ি। বাড়িটা ভুতুড়ে কিনা এখনো জানি না। তবে, এই ঘরটা যে মোটেও স্বস্তিদায়ক না, সেটা অনুভব করতে পারছি। ঘরের একপাশে ফায়ারপ্লেস এ আগুন জ্বলছে। আসবাবপত্র সবই এতো প্রাচীন, যেন পুরোনো গন্ধ নাকে এসে লাগে। আমি ছাড়াও আরো দুজন আছে ঘরে। একজন পুরুষ। পুরুষ না বলে বৃদ্ধ বলাটাই উপযুক্ত। জীর্ণশীর্ণ এক দেহের মালিক। বয়সের ভারে সামনের দিকে নুয়ে পড়া। দেখে মনে হয় বয়স একশো পেরিয়ে গেছে সেই কবে। শুধু চোখ দুটোতে কি যেন একটা দ্যুতি। অসুস্থ চাহনি।

ঘড়ঘড়ে গলায় লোকটা বললো, "এটা কিন্তু তোমার নিজের সিদ্ধান্ত।"
"অবশ্যই।" একটু হাসলাম। "আঠাশ এ পা দিলাম, এখন পর্যন্ত একটা ভুতও তো চোখে পড়েনি!"
"হ্যাঁ। আমি নিশ্চিত, এরকম বাড়িও দেখোনি এর আগে।" ফায়ারপ্লেসের সামনে বসে থাকা নিশ্চল বৃদ্ধা মুখ খুললো এবার। "কারো বয়স যখন মাত্র এক কুড়ি আট, ধরেই নিতে হয়, এখনো তার অনেক কিছু দেখা বাকি, জানা বাকি, অনেক কিছু নিয়ে আফসোস করা বাকি।" কেমন ধীর, নিস্তেজ কিন্তু নিশ্চিতভঙ্গিতে বলে গেলো সে। শিরশিরে একটা অনুভূতি বয়ে গেলো সারাটা শরীর জুড়ে। কেন যেন মনে হলো, সাবধান নয়, এরা বোধহয় ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। এই বাড়িটা নিয়ে যে ভয়ংকর সব জনশ্রুতি আছে, যা আমাকে টেনে এনেছে এই বাড়িতে, সেটাকেই ওরা ঘনীভুত করার চেষ্টা করছে।

হাত থেকে ওয়াইনের গ্লাসটা টেবিলের ওপর রাখলাম আমি। সেইসাথে নামিয়ে রাখলো ওপাশের আয়নার ভেতরে তিনজন যুবক, আমার মতোই দেখতে, কিন্তু আমার চেয়ে অনেক বেশি কিম্ভুত রকমের স্থুল, লম্বা আর কেমন যেন অচেনা। প্রতিবিম্ব অমন কেন, কে জানে। আমার দিক থেকে চোখ সরিয়ে বললাম, "হুম। সেক্ষেত্রে কিছু যদি আজ দেখে ফেলার সৌভাগ্য হয়েই যায়, সেটা নির্ঘাত আমার জানার গন্ডিটাকেই বাড়াবে।" "মনে রেখো, সিদ্ধান্তটা তুমিই বেছে নিয়েছো", শীণর্কায় লোকটা আবারো বলে উঠলো।
কান খাড়া করলো সে হঠাৎ। দেখাদেখি আমিও শোনার চেষ্টা করলাম। প্রথমে কিছুই শুনতে পেলাম না। একটু পরে স্পষ্ট হলো শব্দটা। দরজার ওপাশে করিডোরে। ঠুকঠুক শব্দ, সেইসাথে পা ঘষে ঘষে কারো এগিয়ে আসার শব্দ।

ক্যাঁচ - শব্দ করে দরজাটা একটু ফাঁক হলো। প্রথমে দেখা গেলো একটা ক্রাচ, তার পেছনে ঢুকলো যে লোকটা, সে আরো অনেক বেশি নুয়ে পড়া, আরো অনেক বেশি বয়েসি, অনেক বেশি কোঁচকানো চামড়ার অধিকারি। অদ্ভুত রকমের একটা টুপি মাথায়। চোখের বেশিরভাগ অংশই ঢাকা পড়া তাতে। নিচের ঝুলে পড়া ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে তার হলদেটে কয়েকটা দাঁত। ক্রাচে ভর দিয়ে সোজা সামনের দিকে এগিয়ে আগুনের পাশে রাখা টেবিলটার ওপাশে আরামকেদারায় বসে পড়লো লোকটা। বসেই কাশতে শুরু করলো। প্রথম বৃদ্ধ তার দিকে তাকালো একবার। দৃষ্টিতে বিদ্বেষ স্পষ্ট। আর বৃদ্ধা আগুনের দিকে গভীর মনোযোগে তাকিয়ে আছে তো আছেই। ঘরে আর কারো আসাটা যেন টেরই পায়নি সে। কাশির দমক কিছুটা কমলে প্রথম বৃদ্ধ আমার দিকে তাকিয়ে বললো আবার, "যা বলছিলাম, এটা কিন্তু একেবারেই তোমার নিজের সিদ্ধান্ত"।
"হ্যাঁ। এটা একেবারেই আমার নিজের সিদ্ধান্ত।" আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে আমার কন্ঠে।

আমার অস্তিত্ব সম্পর্কে যেন এই প্রথম সচেতন হলো দ্বিতীয় লোকটা। টুপিটা একটু পেছনে সরিয়ে, চিবুক উঁচু করে মাথাটা একটু কাত করে আমার দিকে তাকালো সে। কোটরে বসানো ছোটছোট চোখ, যেন জ্বলছে। এক মূহুর্ত মাত্র। আবারো তীব্রভাবে কাশতে শুরু করলো সে। প্রথম বৃদ্ধ তার দিকে একটা খালি গ্লাস এগিয়ে দিলো। বোতলটাও ঠেলে দিলো সামনে। "এক ঢোক অন্তত খাও।" কাঁপাকাঁপা হাতে গ্লাসে পানীয় ঢাললো লোকটা। যতোটা না ঢাললো, তারচেয়ে বেশি ছলকে ফেলে দিলো টেবিলের ওপর। কাঁপা হাতেই মুখের ভেতর ঢেলে দিলো। প্রায় নিশ্চল ঘরটাতে এইটুকু নড়াচড়ার ছায়াটুকুও দেয়ালে জীবন্ত হয়ে উঠলো।

অভিশপ্ত এই বাড়ি, ঠিক বাড়ি নয়, অভিশপ্ত একটা ঘরের কথা শুনে এখানে এসেছি আমি। দোতলার একটা ঘর, যেখানে এ পর্যন্ত অপঘাতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের, বেঁচে ফিরতে পেরেছে দু'জন, কিন্তু অপ্রকৃতস্থ, সেই ঘরটার টানে এখানে আসা। ভুত প্রেত নিয়ে যারা লাফালাফি করে, তাদের সাথে আমার আজীবনের তর্কাতর্কি। নিজের চোখে না দেখে কোনোকিছু বিশ্বাস করাটা আমার ধাতে নেই। চ্যালেন্জ করেছে তাদেরই মধ্যে একজন, এই ঘরে যদি এক রাত কাটাতে পারি, তাহলে নাকি... কিন্তু এতোকিছু ভাবিনি আমি। প্রাচীন আসবাবপত্রের ভেতর এই তিনজন অশীতিপর বৃদ্ধ, কংকালের মতো মানুষ, যেন আদিম সময় থেকে নেমে আসা, সময় যেন সমস্ত মানবিক নম্রতা, স্বতস্ফুর্ততা শেষবিন্দু পর্যন্ত শুষে নিয়েছে, ঘড়ঘড়ে স্বর, বৈরি মনোভাব, সবকিছু মিলে কেমন যেন একটা চাপ তৈরি করছে স্নায়ুর ওপর। এটাকে আর বাড়তে দেয়া ঠিক হবে না। উঠে দাঁড়ালাম।
"যদি" অবশেষে বললাম আমি, "অভিশপ্ত ঘরটা আমাকে দেখিয়ে দেন, আমি বরং ওখানেই চলে যেতে পারি, আমাকে নিয়ে আপনাদের ব্যস্ত থাকতে হয় না তাহলে।" প্রত্যাশা নিয়ে এক এক করে তিনটা মুখের দিকেই তাকাই আমি। কাশতে থাকা বৃদ্ধ কাশি ভুলে ঝট করে আমার দিকে তাকালো একবার। বৃদ্ধা আগুনের দিক থেকে এবারো চোখ সরালো না। শুধু যেন কেঁপে উঠলো একবার। চোখের ভুলও হতে পারে। প্রথম বৃদ্ধ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তাকেই বলি আমি, "যেতে পারি এখন?" লোকটার দৃষ্টি এবার নেমে এসে আমার পায়ে স্থির হয়। "দরজা দিয়ে বেরিয়েই স্ট্যান্ডে রাখা মোমবাতি দেখতে পাবে। তুলে নিও। আর.." একটু দ্ধিধা করলো। পা থেকে দৃষ্টি স্থির হলো আমার চোখে, "যদি অভিশপ্ত ঘরটাতে যেতেই চাও, তোমাকে যেতে হবে একা।"
"গুড" স্বস্তির নিশ্বাস ফেলি। এদের মধ্যে থাকতে আর ভালো লাগছে না। "ঘরটা কোথায়, যদি বলে দিতেন..."
প্রথম বৃদ্ধ দরজার দিকে চোখ ফেরায়। "দরজা দিয়ে বেরিয়ে ডানদিকের প্যাসেজ ধরে যেতে থাকবে, যতোক্ষণ না একটা সর্পিলাকার সিঁড়ি পাবে। সিঁড়ি বেয়ে উঠে গিয়ে দ্বিতীয় ল্যান্ডিংটাতে একটা সবুজ দরজা আছে। ওটা খুলে সামনের প্যাসেজটা ধরে এগিয়ে যাবে। একেবারে শেষ মাথায় বামদিকের ঘরটাই সেই ঘর।" আমি আরো একবার পুনরাবৃত্তি করলাম, ঠিকঠাকমতো বুঝেছি কিনা এটা জানতে। দ্বিতীয় বৃদ্ধ মুখ তুলে তাকালো তৃতীয়বারের মতো। মুখ খুললো এই প্রথমবার, "তুমি সত্যিই ওই ঘরে যাচ্ছো?" ফ্যাঁসফেঁসে গলার স্বরে সতর্কতা স্পষ্ট। একটু হাসলাম আমি, "সেইজন্যই এসেছি আমি।" দরজার দিকে এগোলাম। দরজা বন্ধ করে দেবার আগে শেষবার ওদের দিকে তাকালাম। জায়গা থেকে উঠে কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে তিনটে প্রাচীন শরীর। আগুনের বিপরীতে ওদের সমবেত ছায়া ঘন দেখাচ্ছে। ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তিনটে অতি প্রাচীন মুখ। "শুভরাত্রি"। দরজার ওপাশে মোমবাতির অবস্থান দেখে নিয়ে বললাম আমি। প্রথম বৃদ্ধ ফিসফিস করে বললো, "সিদ্ধান্তটা কিন্তু তোমার।" মনে মনে বললাম, "ধুর ব্যাটা!" তারপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে মোমবাতিটা তুলে নিলাম হাতে।

০২

পা রাখলাম করিডোরে। মৃতপুরীর মতো ঠান্ডা, নিশ্চল, ধুলোর গন্ধমাখা একটা লম্বা গলি। হাঁটতে গেলে চমকে উঠতে হচ্ছে নিজের পায়ের শব্দেই। মোমবাতির আলোয় অন্ধকার আরো গাঢ় লাগছে।
একটু কি ভয় পাচ্ছি আমি? ধুর! জোর করে চিন্তাগুলোকে সরিয়ে দিলাম মাথা থেকে। পৌঁছে গেলাম প্যাঁচানো সিড়িতে। ওঠার সময় থপ থপ শব্দ শুনে মনে হলো, যেন এমন কোনো পোষাক পরে আছি, যেটার ঝুল মাটিতে ছেঁচড়ে যাচ্ছে। অদ্ভুত। দোতলার ল্যান্ডিং এ সবুজ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নবের দিকে হাত বাড়াবো। মনে হলো যেন জোর বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ, আমার ঠিক পেছনে। ঝট করে ঘুরলাম। বদ্ধ জায়গায় বাতাস কোথ্থেকে আসবে। কান পেতে শোনার চেষ্টা করলাম। কোনো শব্দ নেই। সন্তুষ্ট মনে হাত বাড়ালাম আবার। অনিচ্ছুক দরজা। জোর চেষ্টায় খুলতে হলো। এই প্যাসেজটাতে অতোটা অন্ধকার নেই। বাইরের চাঁদের আলো ভেন্টিলেটরের কল্যাণে মৃদু আলো ছড়িয়ে রেখেছে। পা বাড়ালাম আবার। একটু সামনে এগোতেই প্রায় লাফিয়ে উঠলাম আত্মরক্ষার ভঙ্গিতে। একটা কালো ছায়া, যেন আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে এক্ষুনি। পকেটে হাত দিয়ে রিভলভারটায় হাত রাখলাম। ওহ! ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা মূর্তির ছায়া ওটা। দেয়ালের একটা প্রান্ত আড়াল করে রেখেছে ওটাকে। কিন্তু ওপাশ থেকে আলো ঠিকই টের পেয়েছে ওটার অবস্থান। একটু থেমে শ্বাস টানলাম। আরেকটু এগিয়ে বামদিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম, ওটাই গন্তব্য।

দরজার সামনে দাঁড়াতেই বন্ধুদের থেকে শোনা ইতিহাস স্মৃতিপটে খেলে গেলো। মনে হলো, আমার আগের জনের লাশ পড়ে ছিলো হয়তো ঠিক এখানেই। শুনেছি, তার অর্ধেক শরীর ছিলো দরজার ভেতরে, অর্ধেকটা বাইরে। হয়তো শেষ মূহুর্তে বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করেছিলো লোকটা। গায়ে কাঁটা দিলো। অহেতুক। আরো একটা লম্বা শ্বাস টেনে দ্রুত ঢুকে পড়লাম ঘরটাতে। দরজা বন্ধ করে দিলাম ভেতর থেকে। বিশাল রুমটা। দুর্বোধ্য একধরনের ভয় যেন চেপে ধরলো আমাকে হঠাৎ করেই। পেয়ে বসার আগেই ওটা কাটানো দরকার। হাতের একটা মাত্র মোমবাতি নিয়ে আমি সারা ঘরে হাঁটতে শুরু করলাম। প্রত্যেকটা আসবাবপত্রের এপাশ ওপাশ, বিছানার নিচে উঁকি দিলাম, পর্দাগুলো সরিয়ে জানালাগুলো ঠিকঠাকমতো লাগানো আছে কি না, এবং দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় টোকা দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম কোথাও ফাঁপা আছে কি না, বা কোনো গোপন দরজা। সামনে ঝুঁকে প্রশস্ত চিমনির ভেতরটাও এক ঝলক দেখে নিলাম। দেয়ালের ভেতরের দিকের একটা ফাঁকা জায়গা, একটা খাঁজ, ওখান থেকে খুব সম্তবত আলমিরা জাতীয় কিছু সরানো হয়েছে। ওখানে পৌঁছানোর আগেই আয়নায় চোখ পড়লো। মোমবাতি হাতে একটা সাদা মূর্তি। চমকে উঠতে গিয়েও নিজেকে চিনে নিলাম। আয়নার দুপাশে মোমবাতিদানি। তাতে মোমবাতি রাখা। জ্বালিয়ে দিলাম ওগুলো। দুটো আয়না এ ঘরে।

ম্যান্টলশেলফের ওপরে পেলাম দুটো মোমবাতি। জ্বালালাম ওগুলোও। একটা চেয়ার টেনে বিছানার পাশে আনলাম। একটা ছোট টেবিলও নিয়ে আসলাম। রাখলাম চেয়ারের পাশে। একটা আড়াল তৈরি করা আর কি। রিভলভারটা বের করে রাখলাম চেয়ারের ওপর। যেন হাত বাড়ালেই পাই। দেয়ালের ভেতরের দিকের অংশটাতে অন্ধকার ঘন। যে কেউ সহজেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। কথাটা মনে হতেই আয়নার ওখান থেকে একটা মোমবাতি সরিয়ে ওটা সেই অন্ধকারে বসিয়ে দিলাম। এইসব করার পর একটু স্বস্তি পেলাম। বসে পড়লাম বিছানায়। শুধুমাত্র আগুনে কাঠ পোড়ার শব্দ। এ ছাড়া বিশ্বচরাচর নিস্তব্ধ। এই নিস্তব্ধতা যেন কারো অপেক্ষায় স্থির। সাত সাতটা মোমবাতির আলোতেও ঘরে এখনো য়থেষ্ট অন্ধকার। মাথার ভেতর নানাধরনের খেলা চলছে। আমি সেগুলো দূর করার জন্য জোরে জোরে গাইতে শুরু করলাম, "ব্রাউন গার্ল ইন দ্য রিং, ট্রা লা লা লা লা..." একটু পরে থেমে গেলাম। প্রতিধ্বনির ব্যাপারটা পছন্দ হচ্ছে না। নিচের তিনটা অদ্ভুত মানুষের কথা ভাবার চেষ্টা করলাম। ওদের আচরণ, হালকা আলোকিত করিডোর। হঠাৎই মনে হলো, করিডোরের একটা মোমবাতিদানের কাছে এক প্যাকেট মোমবাতি দেখেছি। খুশিমনে উঠলাম। দরজা খোলা রেখেই মোমবাতিগুলো নিয়ে এলাম আমি। দশটা। সবকটাই জ্বালিয়ে দিয়ে ঘরের আনাচে কানাচে, যে জায়গাগুলো বেশি অন্ধকারে, সেগুলোকে বসিয়ে দিলাম। মোট সতেরটা মোমবাতি জ্বলছে এখন এ ঘরে। যথেষ্টই আলো মনে হচ্ছে। আলোগুলোর শব্দহীন নাচানাচি শরীর-মনে একধরনের স্বস্তি ছড়িয়ে দিলো। একটু হেসে মনে মনে বললাম, “হে ভুত বাবাজি। আসার সময় একটু দেখেশুনে এসো, কোনো মোমবাতির সাথে তোমার পা না বেঁধে যায়! অবশ্যই যদি পা থাকে আর কি!”

সবকিছুর পরেও কী যেন একটা অনুভুতি ভারি হয়ে ঝুলে থাকলো। মোমবাতির আকৃতি অনেকটাই ছোট ছোট হয়ে এসেছে। হাত তুলে ঘড়ি দেখলাম। প্রায় দেড়টা। যাক বাবা। অনেকটা সময় পার হয়েছে এর মধ্যেই। ঘড়ি থেকে চোখ তুলতে কি যেন একটা অন্যরকম লাগলো। দেয়ালের ভেতরের দিকের ফাঁকা জায়গাটা আবারো অন্ধকার। ইয়াল্লা! নিভলো কখন? টেবিল থেকে হাত বাড়িয়ে দেশলাইটা নিলাম। আস্তে আস্তে হেঁটে গিয়ে বসে পড়ে জ্বালিয়ে দিলাম আবার। ওটা জ্বালাতে না জ্বালাতেই চোখের কোণে বিসদৃশ লাগলো আরো কিছু। তাকিয়ে দেখলাম, ফায়ারপ্লেসের পাশের ছোট টেবিলটার মোমবাতি একটা নিভে গেছে। সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালাম। আসার সময় নিভিয়ে দিয়েছি নাকি কোনোভাবে! এগিয়ে গেলাম টেবিলটার কাছে। একটা যখন জ্বালিয়েছি কেবল, দেখলাম ডানপাশের আয়নার পাশে রাখা মোমবাতি দুটোর একটা নিভে গেলো। সেই সাথে দেখাদেখি যেন অন্যটাও। এবং নিভে যাবার ধরনটাও অদ্ভুত। যেন কেউ তর্জনী আর বুড়ো আংগুলে চেপে ধরে নিভিয়ে দিচ্ছে। নিভে যাবার পরে কোনো ধোঁয়া বা গন্ধ, কিচ্ছু নেই।

"বাতাস ছাড়া তো নিভে যাবার কথা না!" দেশলাই নিয়ে আয়নার দিকে এগোলাম আমি। ঠিক তক্ষুনি নিভলো ওয়ারড্রোবের মাথায় রাখা একটা মোমবাতি। সেইসাথে তার পাশে রাখা আরেকটা। "হচ্ছেটা কী!" গলা চড়ে এবং কেঁপে গেলো। ওয়ারড্রোবের মাথার একটা জ্বালাতে বারবার ঠুকতে হলো দেশলাই। হাত একটু একটু কাঁপছে। একটা জ্বালিয়ে ঘুরতেই দেখলাম বিনা শব্দে নিভে গেলো আরো চারটা মোমবাতি। কী করতে হবে বুঝতে পারছি না। এরই মধ্যে অদৃশ্য হাত নিভিয়ে দিয়েছে আরো দুটো। আমি চিৎকার করে ছুটে গেলাম একদিকে। তারপর আরেকদিকে। দ্রুত হাতে মোমবাতি জ্বালাচ্ছি একদিকে, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে নিভে যাচ্ছে সেগুলো। অন্ধকার গুটিগুটি পায়ে গ্রাস করে নিচ্ছে পুরো ঘরটাকে। যে ছায়াগুলোকে মাথা থেকে সরিয়ে রেখেছিলাম, সেগুলো যেন ফিরে এসে প্রবল পরাক্রমে আমার আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে শুরু করলো। এই ডানে ফিরি তো ঝট করে চলে যায় বামে। আবার পরমূহুর্তে পেছনে।

তীব্র ভয়ে আতংকিত আমি পাগলের মতো ছুটে ছুটে মোমবাতিগুলো জ্বালাতে চেষ্টা করি। টেবিলের কোনায় লেগে উরুতে ব্যথা পেলাম। পায়ের সাথে লেগে একটা চেয়ার ছিটকে সরে গেলো। হোঁচট খেয়ে পড়ার সময় টেবিলক্লথের কোনা ধরে কোনোমতে পতন ঠেকালাম। কিন্তু হাতের মোমবাতিটা ততক্ষণে নিভে গেছে। সেই সাথে নিভে গেলো ঘরের অবশিষ্ট বাকি দুটোও। দেশলাইটা কোথায় ছিটকে পড়লো কে জানে! অন্ধকার। না। পুরোপুরি অন্ধকার না। একটা লালচে আভা ছড়িয়ে আছে সারাটা ঘর জুড়ে। ফায়ারপ্লেস! ওখান থেকে তো জ্বালাতে পারি মোমবাতি! ছুটলাম ফায়ারপ্লেসের দিকে। মোমবাতি বাড়িয়ে দিতেই গনগনে কয়লা যেন স্রেফ চোখ বুজলো। কোন আগুন নেই। তাপ নেই। মোমবাতি হাত থেকে পড়ে গেলো। নিকষ কালো অন্ধকারের চেয়েও অনেক বেশি তীব্র হয়ে উঠলো চেপে বসা আতংক। সমস্ত শক্তি দিযে আমি চিৎকার করে উঠলাম, একবার, দুইবার, তিনবার।
সাড়া দেবার মতো কেউ নেই।

হঠাৎ করেই আমার স্বল্পালোকিত করিডোরের কথা মনে পড়লো। লাফিয়ে উঠলাম। মাথা নিচু করে দৌড় দিলাম দরজা লক্ষ্য করে। বিছানার কোনার সাথে ভয়াবহ ধাক্কা খেয়ে বুঝলাম, দরজা কোনদিকে, সেটাই ভুলে গেছি। আশা ছাড়লাম না। বাঁচতে হলে এই ঘর থেকে বেরুতেই হবে। বারবার টেনে হিঁচড়ে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দরজার দিকে ছুটি, আর এটার সাথে ওটার সাথে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা খেতে থাকি। দরজাটা কোথায়? কিসের সাথে যেন পা বেঁধে দড়াম করে আছাড় খেলাম। চোখের সামনে এক আকাশ তারা ফুটলো। জ্ঞান হারালাম আমি।

০৩

চোখ যখন খুললাম, আলোয় চোখ ধাঁধিঁয়ে গেলো। সয়ে নিতে দেখলাম, এক বৃদ্ধ আমার ওপর গভীর মনোযোগে ঝুঁকে আছে। অস্বস্তি নিয়ে টের পেলাম, আমার মাথায় বিশাল ব্যান্ডেজ। কিন্তু কিছুই মনে করতে পারলাম না। চারপাশে দেখার চেষ্টা করলাম। একজন বৃদ্ধা একটা গ্লাসে ওষুধের মতো কিছু একটা ঢালছে। কোনার একটা চেয়ারে আরেকজন। ঝিমাচ্ছে। মুখগুলো চেনা। কিন্তু মনে করতে পারছি না কোথায় দেখেছি। "আমি...কোথায়?"
অল্প হাসি টেনে বৃদ্ধ দুই একটা কথা বলে। একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর সে মৃদু গলায় অভিশপ্ত ঘরটাতে তিনদিন আগের রাতে কী হয়েছে, বলে গেলো। একজন অচেনা লোকের মতো গল্পটা শুনে গেলাম আমি। "আমরা তোমাকে খুঁজে পেয়েছি সকালে। সারা মাথায় আর মুখে ছিলো রক্ত।"
আস্তে আস্তে আমার মনে পড়তে থাকে সব। আমি একে একে তিনটা মুখের দিকেই তাকাই। কি অদ্ভুত! এদেরকে আগের মতো ভয়ংকর লাগছে না তো আর। বরং অন্য যে কোন বয়ষ্ক মানুষদের মতোই লাগছে। "এখন বিশ্বাস হয়েছে তো তোমার, যে ঘরটা অভিশপ্ত?" নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো সে।
"হ্যাঁ। অভিশপ্ত।"
"আমরা জানি। যদিও নিজের চোখে কেউই দেখিনি আমরা। সে সাহসই করিনি কখনো।" একটু থেমে আবার বলে সে, "এখন বলো তো, আসলে সে কে ছিলো? টুপি মাথায় সেই লোকটা, যে..."
"না, সে নয়।"
"দেখেছো? আমি তো আগেই বলেছিলাম, এটা সেই মহিলার কান্ড!" বৃদ্ধা বলে ওঠে।
"না। সেও নয়। টুপি মাথায় লোকটা, কিংবা মহিলা, কেউ না, তারচেয়েও ভয়ংকর কিছু, যেটা দেখা যায় না, ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, বোঝা যায় না..."
ব্যান্ডেজে হাত বোলাতে বোলাতে ক্ষীণ কন্ঠে বলি আমি।
আগ্রহ নিয়ে দুটো গলা একসাথে জানতে চায়. "কী?"
"মানুষের জন্য যেটা সবচেয়ে খারাপ, যেটার জন্য কোনো শব্দ লাগে না, দৃশ্য লাগে না, যুক্তি যেখানে অচল, তীব্রতার যেখানে কোনো মাত্রা নেই... সেই ভয়...অযৌক্তিক আতংক...। করিডোর থেকেই আমার পিছু নিয়েছে সে, ঘরের ভেতর আমার সাথে যুদ্ধ করেছে।..”
একটু থামলাম আমি। ব্যান্ডেজ বাঁধা মাথা হাত দিয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করলাম।
“মোমবাতিগুলো একের পর এক নিভে যেতে থাকলো...ফায়ারপ্লেসের আগুনটাও...আমি পালাতে চাইলাম...”
এবার ঝিমন্ত লোকটা কথা বলে উঠলো, “এই তো! আমি জানতাম ব্যাপারটা এরকমই! অন্ধকারের একটা নিজস্ব ক্ষমতা আছে। সেটা যখন তোমাকে পেয়ে বসে, যে কোনো জায়গাতেই তখন খুঁজে পাবে তাকে.. এই ঘরটাতেও তা-ই হয়েছে। সবখানেই সে। জানালার পাশে, পর্দার পেছনে, করিডোরে, সবসময়েই তোমার পেছনে সে। শিরশিরে অনুভূতি নিয়ে যতোবারই ঘুরে তাকাও না কেন, ওটা আবারো তোমার পেছনেই। কখনোই সামনে নয়। ঘরটাকে দখল করে নিয়েছে নিখাদ, নিকষ কালো ভয়! এবং সেটা ততোদিন থাকবে, যতোদিন না...”

* * * * * * *

মূল গল্প : The Red Room
লেখক : H. G. Wells


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

ভয় পেয়েছি

...........................
Every Picture Tells a Story

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ইয়েয়েয়েয়ে!
সত্যি তো! দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তিথীডোর এর ছবি

টানটান ভাষান্তর! ভাল্লাগলো। চলুক

তোমার কাছ থেকে দুটো ছোটগল্পের পিডিএফ ধার করেছিলাম না অনুবাদ করার খায়েশে?
সে আর হলো কই! মন খারাপ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

পিডিএফ ধার করেছিলেন ! হাহ্ হাহ্ হা।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হুম।
পড়া হয়ে গেলে ফেরত দেবে। চোখ টিপি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সে আর হলো কই, মানে কী?
চাকরি ছেড়ে দিলে সামনে তো অফুরন্ত সময়, করে ফেলো!

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তিথীডোর এর ছবি

জ্বে, আমি স্মৃতি ছাড়া আর কিস্যু জমাই না।। সব ফেরত দিই! খাইছে

অনুবাদ/ বাদানুবাদের টার্গেট নিয়ে তো চাক্রি ছাড়ছি না আফামনি!
বুঝতে হবে, বুঝে ইজি থাকতে হবে। চোখ টিপি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

স্মৃতি জমাইতে হয় নাকি!
এমনিতেই তো চিপকু লেগে থাকে! মন খারাপ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

babunee এর ছবি

গল্পটা বেশ সুন্দর। শেষ প্যারা টা খুব ভাল লেগেছে। লেখা -গুড়- হয়েছে
তবে ভয় পেয়েছি। এখন তো মনে হয় কারেন্ট চলে গেলে ভয়ে মরে যাব রে ভাই (সরি আপু)।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

থ্যাংকিউ!
গল্পের বই পড়ে বা মুভি দেখে যে ভয় পাওয়া, সেটার একটা নেশা আছে। ভয়ও লাগে, আবার ছাড়াও যায় না। আমার বেলায় তো এরকমই হয়। খাইছে

আপনার নামটা তো বেশ! একটা আদর আদর নাম। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ভয়ের গল্প আমার খুব ভালো লাগে। অনুবাদ ফাটাফাটি হয়েছে।
কালকেই পড়েছিলাম, আজ জানিয়ে গেলাম। আরও আরও আরও চাই। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

শুকরিয়া। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

থ্যাংকস। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ভয় পেতে শুরু করেছিলাম, কি বর্ণনা বাপরে বাপ। কিন্তু পরিমাণে অল্প বলে সেটা চেপে বসার আগেই চলে গেছে। অনুবাদ বরাবরের মত, চমৎকার হাততালি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

থেংকু। দেঁতো হাসি
কিন্তু অল্প মনে হইলো নাকি!
আমার তো মনে হচ্ছিলো জনম জনম ধরে লিখতেইসি তো লিখতেইসি! ইয়ে, মানে...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

খেকশিয়াল এর ছবি

অনুবাদ বেশ হয়েছে, গল্পটা বেশ গা ছমছমে হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কন্কি পন্ডিতজী!
জনপ্রিয় ভুতের গল্প লেখকেরও গা ছমছম করে নাকি! অ্যাঁ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

রেড রুম গল্পটা পড়েছিলাম বহু আগে। সেই অনুবাদে নাম ছিলো মনে হয়- লাল কুঠুরী। এরপরে সেবা থেকে বেরোনো একটা ছোটগল্প সংকলনে আবার এটার অনুবাদ পড়েছিলাম। শরীফুল ইসলাম ভুঁইয়া করেছিলেন সেটা।

...যাক, এটা কমন পড়েছে। তাই আরেকটা ভূতুড়ে গল্প চাই।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

এইরকম বারবার কেন হয়, সুহান?
যেটাই করি, সেটাই আগে কেউ না কেউ করে ফেলেছে!
আমি একটু আনকোরা গল্প শোনাতে চাই... মন খারাপ

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

আশালতা এর ছবি

দারুণ ঝরঝরে অনুবাদ। চলুক

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

থেংকু। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

মনে হয়নি অনুবাদ পড়ছি, খুবই সাবলীল লেখা আপনার। প্রথম দিকে খুব ভয় পেয়ে গেলেও শেষে এসে অতটা আর লাগেনি, তাই আজকে রাতেও অন্ধকারে একা ঘুমুতে পারবো। আরো ভয় লাগানোর চেষ্টা করুন (মানে আরেকটা অনুবাদ অথবা গল্প আসুক)। দেঁতো হাসি

ফারাসাত

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

এহ হে!
আগে জানলে তো শেষেরটুকু বাদ দিয়ে লিখতাম! চোখ টিপি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।