পাঠ-প্রতিক্রিয়া ‍: শেখ জলিলের গল্প 'ঘুড্ডি-লাটাই'

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ২৫/০১/২০০৮ - ৯:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(ঘুড্ডি-লাটাই নামে ব্লগার শেখ জলিলের একটা গল্প সচলে পড়লাম আজ। আমার পাঠ-প্রতিক্রিয়া নিচে।)

শেখ জলিলের এই গল্প ১৯৮৬ সালে লেখা। আমি গল্প লেখা শুরু করেছি এই সেদিন। সুতরাং গল্প লেখা নিয়ে আমার মনে অনেক প্রশ্ন। একটা মাত্র গল্প লিখেছি এ পর্যন্ত। সচলে দিয়েছিলাম। কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনা কেউ করেননি। মানে যেরকম সমালোচনা করলে গল্পটা আরো ভালো হয়ে উঠতে পারে তেমন সমালোচনা -কেউ করেননি। সম্পাদকের কাছে গল্পের যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে তা লেখকের গোচরে আনলে আগে-ভাগেই লেখক সম্পাদনাটা করতে পারেন। সে রকম পরিবেশ কি ব্লগে একটু কম? চোখের দেখার পরিচয় নাই বলে কি পাঠকরা সমালোচনা করতে সংকোচ করেন? হয়তো বা। আরেকটা কারণ থাকতে পারে যে কী সমালোচনা করতে হবে তা জানা না থাকা।

সমালোচনার ব্যাকরণ আমিও জানি না। কিন্তু পাঠক হিসেবে আমি আমার পছন্দ-অপছন্দ বা সমস্যার কথা বলতে পারি নিশ্চই। লেখক তো পাঠকের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছেন, সুতরাং তিনি নিশ্চই যোগাযোগের অন্তরায়গুলোকে দূর করতে চাইবেন।

পাঠক হিসেবে আমার সমালোচনাটা শুরু করি। ভূমিকাটুকু এজন্য দিলাম যাতে শেখ জলিল এটাকে এ্যাকাডেমিক হিসেবে নেন - আক্রমণ মনে না করেন এবং অন্যান্য ব্লগাররাও একটু সাহস করে সমালোচনায় এগিয়ে আসেন।

××××××××××

গল্পটা শুরু হয়েছে 'আজ ওর দু:খের দিন' এই বাক্য দিয়ে। কিন্তু প্রথম দুটো প্যারা পড়ার পরও আমি ধরতে পারিনি এই ও-টা কে? এবং গল্পের কথক কে - কে আমাকে গল্পটা বলছেন। সুতরাং আমি স্ক্রল ডাউন করে নিচে গিয়ে এই রহস্যের সমাধান করতে চেষ্টা করেছি, সফল হইনি।

নয় নয়টা চরিত্র ও তাদের সম্পর্কে এক-দু লাইন বর্ণনা দেয়ার পর ৫নং প্যারায় (পুরো গল্পটা ১২ প্যারার) এসে লেখক বলেন, আজ রতনের দাদী মারা গেছেন। তখন পাঠক হিসেবে আমার একটা অনুমান তৈরি হয় যে হাড্ডিসার মহিলার কথা বলা হচ্ছে তিনি হয়তো দাদী এবং গল্পের শুরুতে যার দু:খের কথা বলা হয়েছে সে হয়তো রতন। এই সাথে আমার এও মনে হয় গল্পটা এখান থেকেই শুরু হতে পারতো, হয়তো শুরু হলে আমার বুঝতে সুবিধা হতো - আজ রতনের দাদী মারা গেছেন। শুরু হিসেবে খারাপ না।

এরপর গল্পটা পড়তে আমার অসুবিধা হয় না। দাদীর সত্কার হয়ে যায় এবং রতন অনেকদিন পর ঘুড়ি ওড়ানো শুরু করে। তার ঘুড়ি ছিঁড়ে গেছে এবং সে ঘুঁড়ির পেছনে ছুটছে। এবং ঘুড়িটাকে পাওয়ার জন্য তার এই সংগ্রাম ও চেষ্টার বিপরীতে বিপক্ষ বা বিরুদ্ধ শক্তির একটা আভাস দেন লেখক। অর্থাত্ বুঝা যায় জীবন সংগ্রাম-মুখর, অতিপ্রিয়ের মৃত্যুতেও জীবনের স্বাভাবিক কর্মকান্ড থেমে থাকে না। গল্পের মাঝেই বোধহয় লেখক তার মূল ভাবনাটা পাঠকদের মনে গলিয়ে দিয়েছেন, ‌'... না ওসব মিথ্যে মায়া!'

তবে গল্পের শেষে এসেও আমরা একটা বাণী-মত বাক্য পাই। '‌‌যুদ্ধক্ষেত্রে ও-ই একমাত্র অস্ত্রহীন, সঙ্গীহীন- যে না পাবে ঘুড্ডি, না পাবে লাটাই! ' একেও গল্পের মূলভাবনা হিসেবে ভ্রম হয়। আসলে কোনটা লেখকের মূলভাবনা? এই গল্পের মূল মেসেজটা কী? কী কারণে বা কোন ভাবনাটা পাঠককে পৌঁছে দিতে লেখক এই গল্প ফেঁদেছেন। ...জীবন, মৃত্যু ...মিথ্যে মায়া ....নাকি অস্ত্র ও সঙ্গীহীনরা ঘুড়ি নাটাই কিছুই পায় না...এই কথা?

আমার মনে হয় গল্পের প্রিমাইসটা শেখ জলিল ঠিক করে নেন নি আগে-ভাগে। অথবা শেষ করতে এসে আবার নতুন একটা ভাবনায় ঢুকে গিয়ে গল্পটাকে সেখানে শেষ করাটাই ভালো হবে ভেবেছেন। লেখকের ভাবনার উপর কথা নাই। কিন্তু আমার মনে হয় শেষে এসে নতুন যে দর্শন-চিন্তা দিয়ে লেখক গল্পটা মুড়িয়ে ফেলেন সেটি গল্পের মূল-ভাবনা নয়।

বিচার-বিবেচনার পর আমার মনে হয়, রতন ও দাদীই এই গল্পের মূল চরিত্র। ২, ৩, ৪, ও ৫ প্যারায় আনা এতোগুলো চরিত্র এই ছোট গল্পের জন্য অপ্রয়োজনীয়। ভিড়ের জনতা নামহীন থাকলেও চলে। বরং রতন ও দাদীর চরিত্রকে আরো কিছু মাল-মশলা যোগান দিয়ে আরো বাস্তব করে তোলা যেত। রতন কেমন চরিত্রের, মন ও মানসিকতার এবং রতনের দাদী কি আর পাঁচটা দাদীর মতই নাকি তার অন্যরকম বৈশিষ্ট্য ছিল সেসব গল্পে আসলেই গল্প গভীরতা পেতো।

রতন ও দাদীর সম্পর্ক এবং মৃত্যু-মাত্র দাদীকে রতনের ভুলে যাওয়াটাই এই গল্পের মূল উপজীব্য। এই ঘটনা দিয়েই লেখক মানব-জীবন সম্পর্কে একটা গূঢ় সত্য আমাদের জানাতে চান। এই বিবেচনায় রতন ও দাদীর সম্পর্ক নিয়ে আরো কিছু চিত্র আমাদের লেখক দিতে পারতেন। কীভাবে?

উদাহরণ হিসেবে বাংলা ভাষার বিখ্যাত এক গল্পের কথা বলা যায় যেটির মূল একটি চরিত্রের নামও এই গল্পের মতই রতন। পোস্টমাস্টার গল্পে রবীন্দ্রনাথ পোস্টমাস্টারের কাহিনীটা শুনিয়েছেন আমাদের। আর এই গল্পে শেখ জলিল রতনের গল্প শুনিয়েছেন আমাদের, দাদী এখানে গৌণ। কিন্তু দু'টি গল্পেই দুই মানুষের নির্ভরশীলতা, একত্র-সময়ের পর বিচ্ছেদ দিয়ে লেখকরা আসলে একই সত্য তুলে ধরতে চেয়েছেন - জীবন থেমে থাকে না।

এখন পোস্টমাস্টার গল্পে (আমার হাতের কাছে গল্পটি নাই- নতুবা কিছু উদাহরণ দেয়া যেত) রবীন্দ্রনাথ তার বলবার গূঢ় সত্যটি গল্পের শেষে এসে বলেন। যখন নৌকার পালে হাওয়া লেগেছ এবং ফিরবার কোনো উপায় নাই। ফিরিয়াই বা কী? আমাদের মন আর্দ্র হয়, রতনের জন্য। কিন্তু পোস্টমাস্টারের প্রতি তেমন কোনো বিদ্বেষও জন্মে না। কেন জন্মে না? কারণ গল্পের প্রথমেই রবীবাবু কৌশলে পোস্টমাস্টারের প্রতি পাঠকদের এক রকম ভালবাসা তৈরি করেছেন। তার চরিত্র চিত্রন করেছেন 'ডাঙায় তোলা মাছ' হিসেবে। পোস্টমাস্টারের প্রতি পাঠকদের একটা দুর্বলতা মনে ছিলোই।

তারপর রবীন্দ্রনাথ রতনের সাথে পাঠকের পরিচয় করান, রতনের সাথে পোস্টমাস্টারের সম্পর্ক, তাদের ভাব-ভালবাসার বিভিন্ন ঘটনার বিশদ বর্ণনা দেন। রতন বিষয়ে পোস্টমাস্টারের মনে ধ্বনিত হতে থাকা বিভিন্ন চিন্তা ও দোটানার কথাও রবীবাবু আমাদের জানান। তবু শেষমেষ বাক্স-পেঁটরা গুছিয়ে ডাকবাবু রওয়ানা দেন। অত:পর পালে হাওয়া লাগার পর রবীবাবু আমাদেরকে দীর্ঘ বাক্যে শোনান মধ্যবিত্ত বাঙালির আদর্শ প্রতিবিম্ব-চরিত্র পোস্টামাস্টারের দর্শন-চিন্তা, ফিরিয়া লাভ কী?

শেখ জলিল প্রায় একইরকম একটা বিষয় হাতে নিয়েছেন এই গল্পে। এখানে রতন হচ্ছে মূল চরিত্র এবং চরিত্র দুটো আত্মীয়। দাদীই মা-বাবার অনুপস্থিতিতে রতনকে লালন-পালন করে বড় করছেন। সেই দাদীর চিরপ্রস্থানে শিশু রতনের প্রতিক্রিয়া কত দ্রুত পাল্টে যেতে পারে তার গল্পই লেখক বলতে চেয়েছেন। পোস্টমাস্টার গল্পের দিকে তাকালে এখন আশা করি শেখ জলিল দেখতে পাবেন কীভাবে চরিত্র-দুটোর গল্প বললে তার মূল-কথাটা পাঠকের কাছে আরো বেশি মর্মস্পর্শী হয়ে উঠতো।

অনেক গল্পই লেখকেরা বার বার লেখেন। শেখ জলিল যদি আমার এই বিশ্লেষণের দুয়েকটা বিষয়েও একমত হন তবুও হাত দিতে পারেন গল্পটির দ্বিতীয় খসড়ায়। এই গল্পের এক বিশাল সম্ভাবনা আছে। দুই প্রজন্মের দুই চরিত্রের নির্ভরতা, স্বার্থহীন ভালবাসা ও স্মৃতি অকাতরতার একটা মর্মস্পর্শী গল্প হতে পারে এটি।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

মাঝে মাঝে মূল লেখাকে তার আলোচনা অনেক পেছনে ফেলে আসে। এর আগেও মনে হয় শোহেইল ভাইকে বলেছি এই কথাটা। আমার নিজেরই কোন একটা লেখায় তার প্রাঞ্জল আলোচনার প্রেক্ষিতে। আজ আবার মনে হল সেই কথাটা।

সকালে জলিল ভাইয়ের গল্পটা পড়েছি। অফলাইনে ছিলাম। যেটা ইদানিং অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এখন আবারও অফলাইনেই ছিলাম। তবু অনলাই হয়ে গেলাম কোন ফাকে। এই লেখাটা পড়তে পড়তেই মনে হয়...

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

শেখ জলিল এর ছবি

সচলায়তনে আমার পোস্টকৃত গল্প 'ঘুড্ডি-লাটাই' পড়ে পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় শোহেইল মতাহির চৌধুরী যে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছেন তার জন্য প্রথমেই তাঁকে সাধুবাদ জানাই। সেই সাথে তাঁর বিনীত কথন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে-(শোহেইল মতাহির চৌধুরীর কথায়...... পাঠক হিসেবে আমার সমালোচনাটা শুরু করি। ভূমিকাটুকু এজন্য দিলাম যাতে শেখ জলিল এটাকে এ্যাকাডেমিক হিসেবে নেন - আক্রমণ মনে না করেন এবং অন্যান্য ব্লগাররাও একটু সাহস করে সমালোচনায় এগিয়ে আসেন। )

শোহেইল মতাহির চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ার উত্তরে প্রায় ২২ বছর আগের গল্পটার রচনার ইতিহাস একটু বলতে হচ্ছে-
গল্পের নাম- ঘুড্ডি-লাটাই; গল্প রচনার স্থান- ২৪, মেইন বিল্ডিং, বাগমারা মেডিকেল হোস্টেল, ময়মনসিংহ; রচনাকালীন লেখকের বয়স- ২০ বছর ০৯ মাস ২৯ দিন; গল্পের ঘটনা- হোস্টেলের পাশের বস্তি; গল্পের মুল চরিত্র- রতন(বাস্তব নাম, পরিবর্তন করা হয়নি। রতনের কাজ সম্পর্কে গল্পে বলা আছে। দাদী মারা যাবার ঘটনা সত্যি আর বাদবাকী সব লেখকের কল্পনা)

ঠিক যে সময় আমার গল্পটা লেখা হয়েছিলো সে সময় আমি ঐ গল্পটাকে জনগণের সামনে আনিনি। কারণ তখন আমার লেখা গল্প পড়ার উপযোগী হতে পারে বলে বিশ্বাস করিনি। সে সময় আমার কবিতা জাতীয় পত্র-পত্রিকাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশ পেতো। কবিতার পুরনো পাণ্ডুলিপি ঘাঁটতে যেয়ে প্রায় ২১ বছর পর গল্পটি খুঁজে পাই এবং প্রথম 'সামহোয়্যারইনব্লগ'-এ পোস্ট করি। শুভসহ কিছু পাঠকের প্রশংসা পায় লেখাটি। তারপর ২০০৭ সালের বইমেলায় 'অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা' নামক আমার গল্পগ্রন্থে গল্পটি স্থান পায়।

এজন্য গল্পের শুরুটার ব্যাপারে সমালোচনাকে গ্রহণ করতেই হয়। প্রথমে যে স্টাইলে 'ও' শব্দ ব্যবহার করে গল্পের মূল চরিত্রকে বোঝাতে চেয়েছি ওটাকেই আমার ঐ বয়সে গল্প লেখার স্টাইল মনে করেছি। এটাকে আর পরিবর্তনও করা হয়নি। আসলে পাঠককে একটু ধন্দের মধ্যে রাখার প্রবণতা হয়তো তখন মনে কাজ করছিলো আমার।

কবিতাপাগল মানুষ আমি। গদ্যের প্রতি একরকম অবহেলা আমার সবসময় রয়ে গেছে। 'ঘুড্ডি-লাটাই' গল্পটিরও আর পরিমার্জনা করা হয়নি। এ অভ্যাসটি কী কবিতা, কী গল্প আমার সব লেখার ক্ষেত্রেই ঘটেছে। যে বয়সে যেভাবে লিখেছি সেভাবেই রেখে দেয়া আমার একরকম বাতিক হয়ে গেছে। আর সেজন্যই প্রতিটি লেখায় তাই আমি সন, তারিখ উল্লেখ করে পোস্ট দেই ব্লগে।

কোনো লেখা হয়ে গেলে আর আমি এর প্রেক্ষাপট নিয়ে খুব একটা ভাবি না । তবুও শোহেইল মতাহির চৌধুরীর আলোচনায় খুঁটিনাটি জানার পর গল্পটি আমি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। যদিও সে সময়টায় আমার নিজের গল্প লেখার মানসিক অবস্থা ও মূলবার্তাটা কী ছিলো বোঝা মুশকিল! গল্পের আলোচনায় বলতে হয়- হা, রতনই আমার গল্পের মূল চরিত্র। আর দাদীর মৃত্যুটা একটা পরিস্থিতির অবতারণা করেছিলো মাত্র। তৎকালীন বস্তিজীবনের খণ্ডচিত্র হিসেবে বাকি চরিত্রগুলো গল্পে এসেছে। আর দাদীর জীবন ও বর্ণনাও আসেনি তাই। আমি রতনের প্রতি অত্যাচার, তার সংগ্রামী জীবন আর অনাদরে বেড়ে ওঠার প্রেক্ষাপটটা বলতে চেয়েছি বেশি। সবশেষে রতনের জীবনের জীবন আরও অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে মানে একজন টোকাই-এর মতোন ছন্নছাড়া জীবনের দিকে যাচ্ছে- এটাও বলতে চেয়েছি গল্পে। এখানে লাটাইকে মাটির পৃথিবীর, সমাজের অবলম্বন আর ঘুড্ডিটাকে রতনের স্বপ্ন বোঝাতে চেয়েছি। বস্তুত রতনের স্বপ্ন এবং আশ্রয় দুটোরই অনিশ্চয়তাই গল্পের মূলকথন।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী গল্পে যে দুর্বলতার কথা বলেছেন তা একজন সমালোচকের দৃষ্টিতে ঠিকই আছে। কারণ রতন এবং দাদীর বর্ণনাপর্ব বাড়িয়ে গল্পটি আরও উপভোগ্য করা যেতো। রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরের পোস্টমাস্টার গল্পটি ছোটবেলায় আমিও পড়েছি, তথাপি এর পূঙ্খানুপূঙ্খ বর্ণনা বা স্টাইল আমার মনে নেই। তাই ঐ গল্পের সাথে তুলনামূলক কোনো বিষয় এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।

শোহেইল মতাহির চৌধুরীর আলোচনা দেখে' ঘুড্ডি-লাটাই' গল্পটি বেশ ক'বার আবার পড়া হলো আমারও। এর পরিমার্জনা আপাতত মাথায় আসছে না। তাছাড়া আমার লেখা গদ্যের সংখ্যা এখনও ২৫ অতিক্রম করেনি। তাই কোনো সুহৃদয় গদ্যলেখক এগিয়ে এলে খুশি হবো এবং তাঁকে সাধুবাদ জানাবো।( শোহেইল মতাহির চৌধুরীর ভাষায়....অনেক গল্পই লেখকেরা বার বার লেখেন। শেখ জলিল যদি আমার এই বিশ্লেষণের দুয়েকটা বিষয়েও একমত হন তবুও হাত দিতে পারেন গল্পটির দ্বিতীয় খসড়ায়। এই গল্পের এক বিশাল সম্ভাবনা আছে। দুই প্রজন্মের দুই চরিত্রের নির্ভরতা, স্বার্থহীন ভালবাসা ও স্মৃতি অকাতরতার একটা মর্মস্পর্শী গল্প হতে পারে এটি।)

সবশেষে শোহেইল মতাহির চৌধুরী-কে 'ঘুড্ডি-লাটাই' গল্পটি পড়ে তাঁর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা দ্বারা আমাকে গদ্যলেখায় অনুপ্রাণিত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।