‘শিকারী বেড়াল নাকি গোঁফে চেনা যায়’। যায় নাকি? কীভাবে?
চেনা যায় এইটুকু অমূল্যবচন উগরে দিয়ে টেকস্টবুক বোর্ডের ব্যাকরণবিদরা (নির্দিষ্ট করে বললে, বাংলা দ্বিতীয় পত্রের বাগধারা অংশের লেখকরা) হাওয়া। বেড়ালের গোঁফ হয়তো জীববিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। কিন্তু কোন ধরনের গোঁফ থাকলে বেড়ালটা সপ্তায় কয়টা ইঁদুর মারবে এসব তথ্য নিয়ে জীববিজ্ঞানীদের আগ্রহ আছে এমন প্রমাণ টেক্সটবুকে মিললো না। তাদের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি কেঁচো, ব্যাঙ, তেলাপোকা নিয়ে নানান সবক।
তবে ব্যাকরণবিদদের অসমাপ্ত কাজে জীববিজ্ঞানের শিক্ষকরাই বা হাত লাগাবেন কেন? এই যে দীর্ঘ ক্যাঁচাল এর প্যাঁচে পড়ে বাঙালি ছাত্রের আর শিকারী বেড়াল চেনা হয় না।
একমাত্র ব্যতিক্রম জানি খসরু চৌধুরী। নামেই শুধু তিনি বাঘ বিশেষজ্ঞ নয়, বাংলার জলা-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো তাগড়াই বেড়ালদের ছবি খিচেঁ তিনি এসব প্রায় নমসূদ্র হয়ে যাওয়া প্রাণীদের ব্রাহ্মণ বাঘের বংশলতিকায় ঠাঁই দিচ্ছেন। সুন্দরবনের বাঘ যদি সত্য সত্যই খসরু চৌধুরীকে পায় তখনই শুধু নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, বেড়াল থেকে বাঘ – নাকি বাঘ থেকে বেড়াল – কী থেকে কী। বন-জঙ্গল ছেড়ে পোস্টে ফিরে আসি।
প্রথমেই বলি, টেক্সটবুক বোর্ডের রচনাকারদের মত আমি আপনাদের ঠকাবো না। আমার এই দীর্ঘ পোস্ট যারা মনোযোগ দিয়ে পাঠ করবেন তারা দোকান দেখলেই ক্রেতা চেনার বোধিসত্ত্ব অর্জন করবেন। সে বিবেচনায় পোস্টের নাম হতে পারতো ‘দোকান দেখে ক্রেতা চেনা’। এমন শিরোনাম যে একেবারে হয় না তা বলছি না, হয়। তবে সরাসরি রাজধানীতে আক্রমণে অসুবিধা আছে। একটু বিমূর্তকরণ না করলে ক্যাম্নে কী। শিল্প-সৃষ্টির কিন্তু কামের চেয়ে ভাবটাই আসল – এটা মাথায় রেখে আগানোই সুবিধাজনক।
পোস্টের বর্তমান নামকরণের অবশ্য গভীর মাজেজা আছে। পাঠকদের মধ্যে প্রজন্মের ফারাক – সব বুলি সব দশকের ভূমিষ্ট সন্তানদের হয়তো শোনার সুযোগ হয় নাই। অথবা পরিচিত পরিবেশে এই দূষণ থাকলেও ব্লগারের কান পর্যন্ত হয়তো এই আওয়াজ পৌঁছায় নাই। আবার অনেকের কানে পৌঁছালেও মস্তিষ্কের কোষ হয়তো তা বিশ্লেষণ করে বিশেষ কোনো ইঙ্গিত আবিষ্কার করতে পারে নাই।
‘কোন দোকানের চাল খাও বাবা’ –এই কথাটা জনপ্রিয় কোন এক বাংলা ছায়াছবির। ছবির নামটা স্মরণে আসছে না তবে ধারণা করছি তখনকার ভিলেন-সম্রাট এটিএম শামসুজ্জামানেরই ঠোঁটেই সংলাপটা ছিল। ছবিতে নিশ্চই ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে সংলাপটা উদগীরণ করেছিলেন তিনি। তবে লোকপ্রিয় হয়েছিল একটু তাজামোটা লোকদের ক্ষ্যাপানোর বুলি হিসেবে। মোটা-তাগড়া মনুষ্য-গোছের কাউকে দেখলেই আমরা চোখ বড় বড় করে আওয়াজ তুলতাম, ‘কোন দোকানের চাল খাও বাবা’। শুধু বাবা নয় আমাদের কটু মন্তব্যে বিরক্ত হতেন সম্ভাব্য মা-রাও। সেক্ষেত্রে প্রেমের সম্ভাবনার শেকড়ে কুড়াল মেরে আমরা গলা খাঁকাড়ি দিয়ে উচ্চারণ করতাম, ‘কোন দোকানের চাল খাও মা’।
সংসার কর্মে নাদানরা প্রশ্ন তুলতে পারেন, চালের দোকান তো সবার জন্য সমান। চাষী-শ্রমিক থেকে শুরু করে ম্যাডাম শাবনুরের ড্রাইভার পর্যন্ত ঐ একই দোকান থেকে চাল কেনে। চালে চালে পার্থক্য আছে – মোটা চাল, সরু চাল, আতপ চাল, সেদ্ধ চাল – এর সাথে দোকানের বিভাজন কেন?
আছে, বিভাজন যে আছে সে কথা কার্লমার্কসের একার প্যাটেন্ট না – রাশেদ খান মেননও হরদম বলে থাকেন। চালের দাম বাড়ায় সরকার বিডিআর দিয়ে চালের দোকান বসালো রাস্তায়। অগ্রসর পাঠকের পত্রিকায় তখন সংবাদ দেখেননি, মধ্যবিত্তরাও ন্যায্য মূল্যের দোকানের সামনে লাইন দিচ্ছে। এই শিরোনামের আর্থনীতিক অভিজ্ঞান কী? – অর্থাৎ অর্থনীতির কী পাঠ পেলেন এই শিরোনাম থেকে। লাইনে দাঁড়ানোটা বিত্তের নিম্নতার পরিচায়ক।
আশা করি এখন আপনি দ্বিধাহীন যে নিউমার্কেটের মাছবাজার আর ফকিরাপুলের মাছ বাজারের মধ্যেও পার্থক্য আছে, কলমীলতা মিউনিসিপ্যাল মার্কেট আর মাদারটেক ঝিল পাড় বাজারের মধ্যে ফারাক বিস্তর। কাওরান বাজার পাইকারি মার্কেট আর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটও এক না। বলবেন, ক্যাম্নে। নিজেরে দিয়াই উদাহরণ দেই।
আমি চাল কিনি আসডা থেকে। আমেরিকার ওয়ালমার্টের চেইন, বাংলাদেশে ওদের বায়িং অফিস আছে। তো দোকানের নাম দেখে কি ঠাহর করা যায় আমি কোন শ্রেণিতে পড়ি? যায়। কিছু তথ্য দিলেই পরিষ্কার হবে। আসডার শ্লোগান হলো – লোয়েস্ট প্রাইস গ্যারান্টিড। প্রায় ন্যায্য মূল্যের দোকান আর কি। বাংলাদেশি ক্যাশ এ্যান্ড ক্যারির মালিকরাও এতো সস্তায় দেশি জিনিস বেচতে পারে না। এই দোকানের ক্রেতারা মোটামুটি আমার শ্রেণিতে আর আয়ের গ্রুপে পড়েন। ওদের লোগো/সাইনবোর্ড/ব্যাগ দেখুন কচুয়া রংয়ের। সস্তা কিন্তু ভদ্রসদ্র একটা ভাব আছে রঙে।
এর চাইতেও গরীবি রঙ হলো কড়া নীল, ক্যাট ক্যাটে হলুদ আর টক টকে লাল। এসব রঙ পাবেন লিডল, বা আলডি সুপারমার্কেটের লোগোতে। (আলডির লোগোর রঙটা ততো গরিবী না তবে দামের দিক থেকে তারা গরীবেরই বন্ধু)। মানের দিক থেকে একটু খারাপ, পূর্ব ইউরোপের জিনিস সস্তায় ঝাড়ছে তারা। বাজেট নিয়ে আমার চেয়ে যাদের টানাটানি বেশি, বা সংসারের সদস্যসংখ্যা অনেক, তারা ঐসব দোকানে ঢুঁ মারেন। ঠেলায় পড়ে – লাইনে দাঁড়ানো মধ্যবিত্তের মতো – অনেকে যারা টানাটানিতে পড়ে শরমের সাথে এসব দোকানে যেতে বাধ্য হন, তারা শ্রেণী অবনমনের লজ্জা কমাতে অন্য দোকানের ব্যাগ ভাঁজ করে নিয়ে যান। সওদা-পাতি কেনা-কাটা হয়ে গেলে ঐ সুপারমার্কেটের ব্যাগ না নিয়ে ঘর থেকে আনা ভিন্ন রংয়ের ব্যাগে জিনিস ভরেন। যাতে পাবলিক বাসে সস্তা সস্তা রঙের ব্যাগ দেখে, সস্তা সুপারমার্কেটের নাম পড়ে লোকে তাদের শ্রেণী চিনতে ভুল না করে।
আসডার প্রায় সমশ্রেণীরই হচ্ছে টেসকো বা সেনসবারি সুপারমার্কেট। টেসকো একটু ভদ্র ভদ্র নীল আর লাল রঙের। শ্লোগানটাও লোক টানার তবে একেবারে কমদামের গ্যারান্টি দেয় না তারা শ্লোগানে, বরং বলে – এভরি লিটল হেল্প।
অন্যদিকে, সেনসবারি হালকা অভিজাত কমলার ওপর ধোপ-দুরস্ত সাদা অক্ষরের ছাপ। মধ্যবিত্ততার মধ্যেও একটু হাত খুলে সওদা-পাতি করার সঙ্গতি যাদের আছে তাদের টানে বেশি। তাদের শ্লোগান - ট্রাই সামথিং নিউ। একই গোত্রে আছে মরিসন – কালো হলুদ লোগা নিয়ে।
টেসকো বা সেনসবারি থেকে সানন্দেই সওদা-পাতি কিনি আমি। কিন্তু ভুলেও যে সুপারমার্কেটে ঢুকি না তার নাম ওয়েটরোজ। এও সুপারমার্কেট। আমার এলাকায় হাতের কাছেই আছে। চাল-ডাল-তরি-তরকারি সবই আছে। কিন্তু আমার জিহ্বার নাগালের বাইরে। সুতরাং ট্রাম-বাস-রেলে কারো হাতে ওয়েটরোজের সওদাভর্তি ব্যাগ দেখলেই আমি বুঝি, হারামজাদার অনেক কাঁচা পয়সা।
সুতরাং আপনারা যারা লন্ডনে আছেন, বা বেড়াতে আসবেন তারা এসব চালের দোকান দেখেই ক্রেতার হেশেঁলের হাড়ির খবর বলে দিতে পারবেন। ঢাকা বা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টা কেমন হবে। নিজেরাই একটা হিসাব বের করুন। কতদিন দেশে যাই না। হিসাবটা এখানে জানায়া দিয়া গেলে দেশের নয়া তরিকাও বুঝতে পারবো।
মন্তব্য
আমার লিডলে পোষায় না। আমি আরেক্টু নিচে.....
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
জার্মানিতে লিডল অবশ্য একটু উপরের লোকদের কাছেই বেচাবিকি করে।
তা আরেক্টু নিচের দোকানের নাম কী? লোগোর রং কি গরীবি না সুশীল?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আলদি।
শাস্ত্রীয় প্রোলেতারিয়েত।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
- প্লুস (plus)
এদের রং হৈলো খাউদামাউদাহইলদা। আজব একটা রং। ব্যাগের দিকে তাকালে মাথা আউলাইয়া যায়। একটা সেন্টিমিটার জায়গাও খালি নাই। পুরাটাই হাবিজাবি-হিচিংমিচিং লেখা।
প্লুসের কথা মনে হইলেই আমার চোখে ভাসে চূড়ান্ত রকমের ময়লা জ্যাকেট পরা পাঁড়মাতাল একজন প্লুসের ব্যাগে কমদামী প্লাস্টিকের বীয়ার নিয়ে খিস্তি করতে করতে যাচ্ছে। কোয়ালিটি ঊনিশ-বিশ হলেও দাম প্রায় আলডির সমপর্যায়ের।
রেভে (rewe) বা হিট'র ব্যাগ হাতে কাউকে দেখলে আমরাও বুঝি 'এই হারামজাদার অনেক কাঁচা পয়সা'।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমার আয়ের যে হাল তাতে কেজি দরে খোলা বস্তা থেকে চাল কেনাই স্বস্তিকর। কিন্তু খোলা চাল কিনলে আমার বউয়ের প্রতিবার রান্নার আগে মরাদানা, ময়লা ইত্যাদি বাছাবাছিতে ৩০ মিনিটের কাজ বাড়ে। গৃহকর্মের দীর্ঘ তালিকায় আরো একটা কাজ যুক্ত করে ৩০ মিনিটের পরিশ্রম বাড়াবার ইচ্ছা হয় না বলে কেজিতে ৭-৮ টাকা আমাকে হামেশাই বেশি গুণতে হয়। তাই অনেকটা অপারগ হয়েও কিনি ৫ কেজির প্যাকেট, একসঙ্গে দুইটা, তিনটা।
ঢাকায় বড়োলোকেরা এখন প্যাকেট চালেই স্বাচ্ছন্দ্য বেশি পান দেখি। তা একজন পাইজাম, মিনিকেট, নাইজারশাইল, বাসমতি যে চালই কিনুন না কেন। প্যাকেটের আরেক সুবিধা সেটা আগোরা, নন্দন, মিনাবাজার, ইটিসি কিংবা পাড়ার দোকান যেখান থেকেই নেয়া যাক, প্রায় একই দাম। তবে প্যাকার-কোম্পানির লোগোভেদে এর দাম ওঠানামা করে। যেমন বেশিদাম হয় 'প্রাণ' ইত্যাদি লোগোতে, কম দাম 'কৃষাণ', 'মিনাবাজার' ইত্যাদিতে। ময়লাবাছা এই প্যাকেট চালের রেওয়াজ ঢাকা শহরে খুব বেশিদিনের নয়। বছর কয়েকের মধ্যেই কম করেও দশটা বিভিন্ন লোগেতে প্যাকেট চাল মিলছে এখন। লোগোর সংখ্যা বাড়াটাও বুঝাচ্ছে যে, এ প্রোডাক্টের ক্রেতা আছে, অর্থাৎ ব্যবসা ভালো হচ্ছে।
................................................................
জেতা মৎস্য গিলে বকে মনুষ্য খায় বাঘ-ভালুকে
রহস্য বোঝে না লোকে কেবল বলে জয়।
(দীন দ্বিজদাস)
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আচ্ছা একটা তথ্য দিতে ভুলে গেছি। এখানকার চালের প্যাকেটগুলো স্বচ্ছ মোটা পলিথিনের, বহুরঙে ছাপা। আর অভিজাত শপগুলোর ব্যাগ অধিকাংশই শাদাকাপড়ের, উপরে এক রঙে শপের নাম লেখা।
প্যাকেট চাল বাদ দিলে সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাইরের দোকানগুলো থেকে এসব শপে অল্পপরিমাণ বেশি।
আমার বলাবলি ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকার অভিজ্ঞতা থেকে। অন্য এলাকার খবর একদমই জানি না।
................................................................
জেতা মৎস্য গিলে বকে মনুষ্য খায় বাঘ-ভালুকে
রহস্য বোঝে না লোকে কেবল বলে জয়।
(দীন দ্বিজদাস)
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
অনেক নতুন জিনিস জানা গেল।
তা মীনাবাজার আর আগোরার ক্রেতা নিশ্চই একই শ্রেণির?
নাকি খানিকটা তফাৎ আছে?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
২০০৩ সাল নাগাদ আগোরাতে কিছু কিছু উৎসাহী নিম্নমধ্যবিত্তও যেতেন আমার মতো......পরবর্তী চারবছরের কাহিনি জানিনা।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
এগুলো অনেকটা যার যার রুচির ব্যাপার। আমি লিডল থেকে অনেক বাজার করি। তেল, ময়দা, দুধ, চিনি, সব্জি, ফল, মুরগী, কিমা এগুলোতো আর পয়সার উপর নির্ভর করে স্বাদ হয় না। আলবার্টাইনের কলারতো উপলব্ধি করা সম্ভব না যে আমায় বেশী দামে বেচবে তাই আমি একটু বেশী স্বাদ হই। আর এ নিয়ে আমি কোন রকম হীনমন্যতায়ও ভুগি না। কম পয়সায় পেলে বেকুবের মতো বেশী পয়সা দিয়ে কিনব কেনো? আমাকে কি পয়সা কামড়ায়???
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
রুচির প্রসংগ মনে হয় একটা বেশ কঠিন চক্র।
ওয়েটরোজের সব জিনিসই আমার পছন্দ হয়। কিন্তু বুঝতে পারি বাজেটে পোষাবে না।
তবে দামী দোকান মানে কম দামের জিনিস বেশি দামে বেচে তা নয় কিন্তু। ওদের প্রোডাকশন লাইন আলাদা।
ধরা যাক তেল।
সাধারণ ভেজিটেবল ওয়েল। আর ওমেগা থ্রি যুক্ত সানফ্লাওয়ার তেলের দাম তো এক হবে না।
আবার যদি আরেকটু উন্নতমানের অলিভ অয়েলের দিকে যাওয়া হয় তবে দাম বাড়বে।
সেই অলিভ যদি অর্গানিক হয় তবে দাম আরো বাড়লো।
সেই অর্গানিক অলিভ অয়েল যদি অতিরিক্ত রিফাইন করা হয় বা রসুনসহ জারিত করে রাখা হয় তাহলে দাম বাড়াটাই স্বাভাবিক।
এখন এসবের সাথে সাধারণ দোকানের সস্তার পাম অয়েলের তুলনা করুন।
তবে হীনমন্যতায় ভোগার কিছু নাই। মৌলিক চাহিদা পূরণের মাত্রা অতিক্রম করা বাকী সব হচ্ছে বিলাসিতা। অন্যের বিলাসিতা দেখে তাকে ঈর্ষা না করে করুণাও করা যায়।
তবে আমি আসলে কথা বলছিলাম দোকান দেখে ক্রেতাদের অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝা যায় এই নিয়ে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আমি ভাইয়া আবার বিশ্বাসে চলি। ইউরোপের সুপার মার্কেটে খাইয়া মইরা যাবো এমন তেল না রাখার সম্ভাবনাটাকেই মনে স্থান দেই। তাই যতোদূর সস্তা সম্ভব তেল পানি কিনি কারন রান্নার মজা আসে রান্নার কৌশল থেকে। কতোক্ষন ভাজব, কষাবো কিংবা মেরিনেটেড করে রাখবো ইত্যাদির উপর থেকে আমার ধারনা। ধারনা অবশ্যই ভুল হইতে পারে।
ইটালীয়ান হোটেলের মবিল দিয়ে ভাজা ডালপুরী খেয়ে কিংবা ফরমালিন দেয়া মাছ খেয়ে যখনও কিছু হয় নাই, তখন বজ্রপাত ছাড়া মৃত্যুর সম্ভাবনা নাই ভেবেই চলি।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আমি ভাইয়া আবার বিশ্বাসে চলি। ইউরোপের সুপার মার্কেটে খাইয়া মইরা যাবো এমন তেল না রাখার সম্ভাবনাটাকেই মনে স্থান দেই। তাই যতোদূর সস্তা সম্ভব তেল পানি কিনি কারন রান্নার মজা আসে রান্নার কৌশল থেকে। কতোক্ষন ভাজব, কষাবো কিংবা মেরিনেটেড করে রাখবো ইত্যাদির উপর থেকে আমার ধারনা। ধারনা অবশ্যই ভুল হইতে পারে।
ইটালীয়ান হোটেলের মবিল দিয়ে ভাজা ডালপুরী খেয়ে কিংবা ফরমালিন দেয়া মাছ খেয়ে যখনও কিছু হয় নাই, তখন বজ্রপাত ছাড়া মৃত্যুর সম্ভাবনা নাই ভেবেই চলি।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের মাংস কিনি তুর্কি দোকান থেকে। ধর্ম না পকেট থাকে নির্ধারক ভুমিকায়.....
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
যদি সাধারণ মুরগির দাম ২ ইউরো আর হালাল মুরগির দাম ২০ ইউরো হতো তাহলে ঈমানের জোর বুঝা যেত।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
হে হে...মুরগীর ফার্মে কামলা দিছি একদা....হালাল হারাম সবই এক ফার্ম থিকা আসে....
মুরগীতে তেমন না...পার্থক্য হয় গরুতে। এক জায়গায় সাড়ে সাত পৌনে সাত ইউরো কেজি আরেক জায়গায় সাড়ে তিন ....পার্থক্য অবশ্যই কোয়ালিটিতে...অর্থাৎ বেহেশতে যাওয়া থিকা প্রসেস করার সময়ের গড় পার্থক্য.....
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
প্রথমদিকে নিউ ইয়র্কে আমি এক বাঙালী পরিবারের সাথে সাবলেট থাকতাম। গৃহস্বামী পেশায় মুরগী বিক্রেতা, দোকানের নাম "বায়তুল হালাল"।
হালাল মাংসের সাপ্লায়ার তারা। কিন্তু দোকানে কোন বাঙালি/মুসলিম কর্মচারী নেই। সবগুলোই স্প্যানিশ! তারা স্প্যানিশ পদ্ধতিতে মুরগী জবাই করেই হালাল করতো। ছাগলের ক্ষেত্রে ক্যাসেট প্লেয়ারে দোয়া চালিয়ে দিয়ে কাজ সারা হত।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
এর সাথে হাড্ডি গুড্ডির ব্যাপারটাও আছে। ইউরোপীয়ান গুলোতো ওইগুলোকে কুত্তার জন্য ব্যবহার করে।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আমরা এখানে চাল কিনি বাংলাদেশী দোকান থেকে, সঙ্গে যাবতীয় মশলাপাতি ও অন্যান্য দেশীয় জিনিসপত্র এবং ছাগমাংস (স্থানীয় দোকানে এই জিনিস লভ্য নয়)।
মাছ দেশী দোকান ছাড়াও সুবিধামতো চৈনিক/ভিয়েতনামী/থাই দোকানেও কেনা হয়। আর সব সওদাপাতি ওয়ালমার্ট বা ক্রোগার নামের চেইন থেকে। দোকানের নামধাম কোনো গুরুত্ব বহন করে না। তবে জনমভর বকাবকি শুনেও দাম যাচাই করে সওদা করা শেখা হয়নি। যা দরকার, তুলে নিয়ে আসি। ফলে কোনটা কী দামে কিনেছি, মনে রাখাও সম্ভব হয় না।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আটলান্টিকের এইপারে, অন্তত: লন্ডন শহরে আমরা দক্ষিণ এশিয়রা সংখ্যায় এত বেড়েছি যে এখন সব বড় সুপারমার্কেটে হলুদ, মরিচের গুড়া থেকে শুরু করে প্যাকেট-ভর্তি ভাতও বিক্রি করে।
সবচে মজার বিষয় হলো, প্রায় প্রতিটি জিনিসের দাম বাঙালি ভাইদের দোকানের চেয়ে সুপারমার্কেটে কম। ব্রিটিশদের ইনডিভিজ্যুয়াল কর্নার শপগুলো প্রতিযোগিতায় গেছে এখন চেইন সুপারমার্কেটরা নতুন নতুন সব নিশ মার্কেটের দিকে হাত বাড়াচ্ছে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আমাদের এইখানে যে চালই কিনি, বহন করি বিখ্যাত মোস্তফা সেন্টারের পলি ব্যাগে। শ্রেণিভেদে সবাই একি ব্র্যান্ডের থলে......
তবে মাছ-মাংস, তরি-তরকারির ক্ষেত্রে বাংলা দোকান বা টেক্কা মার্কেটের লাল বা লাল-সাদা লোগোহীন পলি ব্যাগ, NTUC Fair Price এর ব্র্যান্ডেড ব্যাগের চেয়ে দৈন্যদশার হলেও দামে কিন্তু বাংলা বা টেক্কা মার্কেট এগিয়ে...।
দেশে থাকতে ভরসা ছিল বাড়ির কাছে কাওরান বাজার আর চালের জন্য মোহাম্মদপুরের পাইকারি চালের আড়ত।
আমার মতো বিত্তহীনেরাও আগোরা-মীনাবাজারে ঢু মারে ক্রেডিট কার্ড চালানোর সুযোগ পেতে।
চালের জন্য পুরনো মীনাবাজার দামে ও মানে অনেক গ্রহনযোগ্য ছিল আমার কাছে।নতুন মীনাবাজার চেহারাছুরতে অনেক স্মার্ট হলেও চাল ও অন্যান্য পণ্যের মান আমার কাছে আগোরার চেয়ে অনেক নিম্ন মনে হয়েছে।
সবার উপরে পাড়ার মুদি দোকানটির কোন বিকল্প নাই।ঠেকা-বেঠেকায় ঐখানে যা পাওয়া যায় তা-ই সই।
---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
রঙ দিয়ে শ্রেণী বিণ্যাস?
বাহ্...
এই আকালের মধ্যেও আমি চালায়া যাইতেছি যতোটা সম্ভব অর্গ্যানিক ফুড খাওয়ার অভ্যাস। উত্তরায় একটাই দোকান আছে সেখানে পাওয়া যায় সার কীটনাশক ছাড়া পণ্য... দাম আগোরা টাগোরার চেয়ে কিঞ্চিত বেশি... তারপরও যতোটা সম্ভব চালাইতেছি... রোজা আসলে যে মূল্যবৃদ্ধি হবে তাতে টিকুম কি না বুঝতেছি না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রতিষ্ঠান যদি জানে তার টার্গেট বা পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট কারা তবে তাদের কথা মাথায় রেখেই প্রতিষ্ঠানের কালার-প্যালেট ঠিক করে নেয়।
বয়স, শ্রেণি, জাতি, ধর্ম ইত্যাদি নানা মাপকাঠিতেই রং বদলে যায়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
নজু ভাই, কোন দোকান ঐটা?
আগে এরকম মনে হয় দেশে প্রচলিত ছিল "কোন রেশনের চাল খাও বাবা?"। তবে প্রেক্ষিতটা আমার জানা নেই।
আলডি আর লিডল না থাকলে আমাদের দেশে বাবার কাছে হাত পাততে হত। লিডলের বিরুদ্ধে তো প্রায়ই চাষীরা প্রতিবাদ করে কম দামে পণ্য বিক্রি করে বাজার দর কমানোর জন্যে। ওদের একটাই সুবিধা চাষীদের কাছ থেকে কৃষি ও দুগ্ধজাতীয় পণ্য ইত্যাদি পাইকারী হারে কিনে নিয়ে নিজেরাই প্যাকেজিং করে নিজেদের বিপুল পরিমাণ শাখার চ্যানেল দিয়ে বিক্রি করে।
আমাদের এখানে ধণী বোঝা যায় - যারা বায়ো (বা অর্গানিক) পণ্য কিনে ৩-৪গুণ দামে। কায়জার বা এডেকা'র রাজকীয় লোগোও বোঝায় তারা একটু এলিট গোত্রের ভোক্তাদের সার্ভ করে।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
হুমম....
কোন দোকানের রেশন খাও...এরকম কথা শুনেছি তো। ধন্যবাদ, মনে করিয়ে দিলেন।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
অমিতের ভাষায় বলি..(টোনটা ধরা যাবে না)
ভালুইতো এক্সপিরিমেন্ট হইয়েছে ,ইবার ই' সব বুদ্দি টুদ্দি একসাতে কইরে এট্টা দুকান দি ফেল দেকি ! বাঙালিরা 'শামচৌ ' আড়ত্ থেইকে মালপত্তর কিনুক । খবদ্দার বাকি দিউনা যেন........
বিষয়হীন বিষয় নিয়ে যে এরকম টান টান স্ট্রাকচার খাঁড়া করে দেওয়া যায় , সেটার মুন্সিয়ানা পুরোটাই আপনার।
ধন্যবাদ ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
শোহেইল ভাই, আমি শুরু থেকেই টেসকো 'য় আছি । কোন শ্রেণীতে যে পড়ি !! তবে ওয়েটরোজ এ এক সপ্তাহের শপিং করেই মেনে নিয়েছি, ওখানে আর যাওয়া লাগবে না ! সে ও বছর ৩ আগের কথা । সো, শুরু থেকেই টেসকো ! আমার শ্রেণী ?
---------------------------------------------------------
আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
আমার বাস চরম দারিদ্রসীমার নিচে - ওয়াল মার্ট সই!
তবে চালের ক্ষেত্রে ভারতীয় "স্বাদ ব্র্যান্ডের" বাসমতিই খাই। লং গ্রেইন গলা দিয়ে নামানো দুঃসাধ্য ব্যাপার।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন