যে বাড়িতে জন্ম
সাড়ে চারশ' বছর আগের বাড়িটাই হুবহু এখনও দাঁড়িয়ে আছে এমন ভাবা ঠিক হবে না। পরে একে নানাভাবে ঠিকঠাক করা হয়েছে। ভেতরে আসবাবপত্রগুলো পরে তৈরি করে নেয়া হয়েছে। দুয়েকটা কোথাও থেকে জোগাড় করা হয়েছে। এজন্য শেক্সপিয়ার নিজেও কিছুটা দায়ী। ব্যবসায়ী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর বাবার বাড়িটি ভাড়ায় দিয়ে দিয়েছিলেন। আর যেহেতু 1670-এ তার নাতনি এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর তার বংশের আর কেউ ছিলেন না সেহেতু বেহাতে পড়ে এসব বাড়ির দফারফা হয়ে গিয়েছিল অনেক আগে। মিসেস হর্নবি বলে এক ভদ্রমহিলা একসময় এই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি দর্শনীর বিনিময়ে বাড়িটি দেখার ব্যবস্থা যেমন করেন তেমনি শেঙ্পিয়ারের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস দর্শনার্থীদের কাছে বিক্রি করে দেন। অনেক পরে যখন কাউন্সিল এসব রক্ষায় এগিয়ে আসে তখন বাড়িটির ভগ্নদশা এবং জিনিসপত্র কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। ট্রাস্ট এখন বাড়িটিকে এমনভাবে সাজিয়েছে যাতে 10-11 বছরের শেক্সপিয়ার যে বাড়িতে থাকতেন তার আদল ফুটে ওঠে।
বেশ ছোটখাটো একটি বাড়ি। নীচতলাটার ছাদ একটু উঁচুই ছিল। এতো উঁচু নয় যে উচ্চবিত্তের বাড়ি মনে হবে। আবার এতো নীচু নয় যে দরিদ্র কারো ঘর এটি। মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী ছিলেন বাবা জন শেক্সপিয়ার। বাড়ির সামনেই শহরের ব্যসত্দ রাসত্দা হেনলি স্ট্রিট। সুতরাং সামনের ঘরেই ছিল জনের চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্যাদি এবং উল কেনাবেচার দোকান। তাছাড়া সুদের ব্যবসাও তার ছিল। জন অবশ্য ধীরে ধীরে সমাজে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। কাউন্সিলে দীর্ঘদিন কাজ করার পর 1568 তে স্ট্র্যাটফোর্ডের বেইলিফ বা মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু বাড়িটি তা বলে না। অতিথি বসার ঘরটিতে যে খাট রাখা আছে বা বসার যে আসবাবপত্র রাখা আছে তা বেশ সাধারণ মানের। দোতালায় উঠার সিঁড়ি না হয় সংকীর্ণ। কিন্তু দোতলার যে ঘরে উইলিয়ামের মা-বাবা ঘুমাতেন বা যে ঘরে তার জন্ম হয়েছে বলে অনুমান করা হয় সে ঘরও বেশ অাঁটোসাঁটো। মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু ঐ ঘরের উপস্থাপনার দায়িত্ব যার সেই মধ্যবয়স্কা গাইড জেইন যেসব তথ্য শোনালো তা আরো চমকে ওঠার মত।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন