আমরা ছোটবেলা একে লোফ-ই বলতাম। পরে জেনেছি এটি আমেরিকান ইংলিশ শব্দ। ব্রিটিশরা ব্রেড-ই বলে একে। বাংলায় শব্দটা পাউরুটি। (খাওয়ার জিনিসে পা)। তা পাউরুটি যখন আছে হাতারুটিও আছে। কিন্তু হেজেমনির কারণে রুটি শব্দটি দখল করে নিয়েছে হাতারুটি। সুতরাং হাত দিয়ে বানানো হাতারুটি মানেই রুটি। চাপাতিও বলা হয়। কিন্তু তাহলে পাউরুটি মানে কি পা দিয়ে বানানো রুটি। বেকারি মালিকরা প্রতিবাদ করতে পারেন আমার কথায় কিন্তু আমি নিজেই পা দিয়ে বানাতে দেখেছি পাউরুটি। যখন বড় মেশিন ছিলো না ময়দা ও রুটির অন্যান্য উপকরণ মেশানোর। তখন পা ধুয়ে বা পায়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ পেঁচিয়ে বড় পাত্রের মধ্যে রাখা ময়দার খামিতে নেমে যেতো কারিগররা। তারপর পাড়িয়ে পাড়িয়ে ময়দাকে ভালো করে মেশাতো। পা-কে আমরা হাতের তুলনায় কম মর্যাদা দেই। পায়ের লাথি আর হাতের ঘুষির মধ্যে মর্যাদার অনেক ফারাক। (যদিও ভারত উপমহাদেশে পদধূলি নেয়ার একটি সংস্কৃতি আছে, তবে তা গুরুজনদের। কারখানার কারিগরদের পা কোনো শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য নয় কোনো বিবেচনাতেই)। তো পা দিয়ে পাউরুটি তৈরির এই কায়দা আজো বাংলাদেশের অনেক উপশহর ও গঞ্জে চালু আছে নিশ্চয়ই। সে আমার সমস্যা নয়।
আমার সমস্যা হচ্ছে পাউরুটির শেষ দু. মাথায় শক্ত হয়ে যাওয়া স্লাইস দুটি। একেবারে প্রান্তে থাকে বলে রুটি পোড়ানোর (বেকড) সময় পাশগুলো বেশ শক্ত হয়ে বিস্কুটের মত হয়ে যায়। বেশিরভাগ মানুষ এই বিস্কুট বিস্কুট অংশ খেতে তেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। আমি সেই বেশিরভাগের দলে। কিন্তু কেউ কেউ আবার এই দুই প্রান্তের প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখান। যেমন অনেকে হাড়িতে লেগে যাওয়া শক্ত ও একটু পোড়া পোড়া ভাত খান বেশ মজা করে। একটু পিঠা মত হয়ে যায়। তো এখানে কি কেউ আছেন সেই দলের, পাউরুটির শেষ প্রান্তের স্বাদও যারা ছাড়তে রাজি নন?
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন