• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ডাইরি থেকে ব্লগঃ ১

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ১৪/০৭/২০০৬ - ৬:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


(ভূমিকাঃ ব্লগ/ওয়েবলগ লেখাটা ডাইরি লেখারই একটা রূপ। বস্নগের সংজ্ঞা ও ব্যাকরণ অনত্দত: তাই বলে। ডাইরি বলতে আমার চোখে প্রায়ই ভাসে গোলাপী রংয়ের সুন্দর বাঁধানো কিশোরীরে ব্যক্তিগত রোজনামচার বই। যার সাথে ছোট্ট তালা-চাবি থাকে। লেখাগুলো যাতে অন্যে পড়তে না পারে। ব্লগের ক্ষেত্রে তো আর তালাচাবির প্রশ্ন ওঠে না। সারা পৃথিবীর সবার জন্য উন্মুক্ত। তবে আসল মানুষটিকে আমরা হয়তো চিনি না। একটা নিক দেয়া আছে। সেটাই হয়তো তালাচাবির কাজ করে। কিন্তু রোজনামচা লেখার মত ঘটনাবহুল জীবন অনেকেরই হয় না। বিশেষত: একঘেঁয়ে জীবন যারা কাটাই তাদের আর আলাদা করে বলবার মত তেমন বিশিষ্ট কোনো ঘটনা থাকে না। ইরাক থেকে পাঠানো কোনো বাঙালি সেনাকর্মকর্তার ডাইরি হয়তো অনেক অজানা বিষয় প্রকাশ করতে পারে, যা সাধারণভাবে আমরা জানতে পাই না। কোনো এক অভিযাত্রী, তা দুর্গম পাহাড়ের দেশের হোক বা উত্তাল সাগরের হোক হয়তো আমাদের জানাতে পারে নতুন কিছু। অর্থাৎ যার জীবন যাপনের মধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য অনেক অজানা তথ্য আছে তার রোজনামচা হয়তো অনেককে টানবে। কিন্তু লেখার মান খুব ভালো না হলে, বিষয়ে বৈচিত্র না থাকলে সাধারণের ডাইরি/ মনের কথা খুব কম মানুষই পড়তে চাইবে। কিন্তু ডাইরির কথা হলেই জোহাভাই'র কথা আমার মনে আসে। আমাদের ডাইরি লেখার অনুপ্রেরণা ছিলেন এই জোহাভাই। )

জোহাভাই'র সাথে এক রুমেই থাকতাম আমরা স্যার এ এফ রহমান হলে। চার বেডের রুমে আমরা তখন আটজন থাকি। রুমের দরজার কাছাকাছি দুই বিছানায় আমরা চার বন্ধু তখন ফার্স্ট ইয়ারের। এক বিছানায় দুজনের এই থাকাকে সহবাস বলে না, ইংরেজিতে বলে ডাবলিং আর বাংলা একটা চালু ছিলো, দ্বৈতাবাস। জোহাভাই রাজশাহীর ছেলে, খুবই সরল সহজ, অনত্দত: আমাদের তুলনায়। ম্যানেজমেন্টে এসে ভর্তি হয়েছেন প্রিলিমিনারির ছাত্র হিসেবে। তাদেরকে 'পিলু' বলে খেপানো হতো। আমরাও তার সাথে সে রসিকতা করতে পিছ পা হতাম না। যদিও আমরা তখন মাত্র ফার্স্ট ইয়ারে। একদিন রাতে জোহাভাই আমাদেরকে উপদেশ দিলেন, "দেখো বাচ্ছারা তোমাদেরকে একটা কথা বলি"। (তিনি আমাদেরকে বাচ্ছা বলতেন আর নিজেকে অনেক অভিজ্ঞ সমঝদার ভাবতেন। তবে এও বুঝতেন তার মেধা ও বুদ্ধির উপর আমাদের কোনো আস্থা ছিল না।)।

যাক তিনি বললেন, "একটা উপদেশ শুনো আমার। জীবনে কাজে লাগবে। এই যে সারারাত আড্ডা মারো। এটা কোনো কাজে আসবে না। প্রতিদিন ডাইরি লিখবে। একসময় দেখবে অনেককিছু লেখা হয়ে গেছে। আমাকে দেখো না, আমি প্রতিদিন ডাইরি লিখি। তারপর ঘুমাই"। জোহাভাই ঘুমাতে চলে গেলেন, তার ডাইরি লেখা আগেই হয়ে গেছে। আমরা প্রায়ই গোপনে যে জোহাভাইকে নিয়ে নানা হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠতাম, সেই জোহাভাই'র এরকম একটা উচ্চাঙ্গের অভ্যাস আছে শুনে আমরা ভীষণ ধাক্কা খাই। জোহাভাই'র মেধার উপর আমাদের আস্থা ফিরে আসে। আমরা পরের দিন নীলক্ষেত থেকে ডাইরি কিনে আনলাম। রাতের বেলা সিনিয়র ভাইরা ঘুমিয়ে গেলে একটি বেডে আমরা চারবন্ধু এক হলাম। ডাইরি তো কেনা হলো। কিন্তু কী লেখা যায়? কীভাবে লিখতে হবে? মুহিত, সাথে সাথে পরামর্শ দিলো, উদাহরণ বুঝার জন্য জোহাভাই'র ডাইরি এনে পড়া হোক। জোহাভাই'র তখন নাক ডাকছে। টেবিল থেকে তার ডাইরি এনে আমরা চোরের মত খুললাম। এক পৃষ্ঠা, দুই পৃষ্ঠা করে তিন পৃষ্ঠা পড়ার পরই আমরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছি একজন আরেকজনের। প্রতি পৃষ্ঠাতেই একই কথা লেখা। কোনো কোনো পৃষ্ঠায় দুয়েকটা বাক্য বা শব্দ নতুন যুক্ত হয়েছে। তবে জোহাভাইর সৃষ্টিশীলতার জন্য তা হয়েছে এমন মনে হলো না। বরং মনে হলো আগের পৃষ্ঠায় কি লিখেছিলেন তা হুবহু মনে রাখতে না পারার জন্যই এই সমস্যা। কয়েকবার পড়ার পরই মুহিতের মুখস্থ হয়ে গেলো ডাইরির বাক্যগুলো:

"অদ্য সকালে ঘুম হইতে উঠিয়া প্রাতঃক্রিয়া সম্পাদন করিয়া মুখহাত ধুইয়া ক্যান্টিনে আসিয়া প্রাতঃরাশ করিলাম। তারপর যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। ক্লাস শেষ হইলে হলে ফিরিয়া দুপুরের খাবার খাইয়া একটু নিদ্রা গেলাম। বিকালে ঘুম হইতে উঠিয়া শার্ট-প্যান্ট পড়িয়া নিউমার্কেটে বেড়াইতে গেলাম। সন্ধ্যায় রুমে ফিরিয়া আসিয়া অধ্যয়নে রত হইলাম। তারপর রাতের খাবার খাইয়া ডাইরি লিখিতে বসিলাম। ডাইরি লেখা শেষ হইলে লাইট নিভাইয়া ঘুমাইয়া পড়িব।"

পাতার পর পাতা ভর্তি করে জোহাভাই'র এই ডাইরি লেখার উদাহরণ পড়া ও বুঝার পর ডাইরি লেখা সম্পর্কে আমাদের আর কোনো অস্পষ্টতা রইলো না। দিব্যি জলের মতো পরিষ্কার। আমরাও ডাইরি লেখা শুরু করলাম।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।