নিজের চেহারাটা নিজের চোখে অনেক সময় ঠিক-ঠাক মত ধরা পড়ে না। তখন আমরা বন্ধুকে বলি এই দেখতো এই কাপড়টা আমাকে মানিয়েছে কি না। আবার যে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একসাথে থাকে তার চোখেও অনেক ভুলত্রুটি ধরা পড়ে না। অভ্যাস হয়ে যায়। অথবা চর্বি বেড়েছে কিনা তা জানার জন্য অনেক দিন পর দেখা হওয়া পরিচিতজনের মতামতই ভালো। তারা পরিবর্তনটা চট করে ধরতে পারে। একেবারে অপরিচিত কারো চোখে আবার সবকিছুই বিস্ময় ঠেকে। তার বিচার হয় একেবারে নতুন কিছু। নিজেকে আয়নায় দেখে সেসব বিষয় সহজে ধরা যায় না। তো এই পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালি জাতির কিছু আচার-আচরণ সম্পর্কে দুয়েক জন বিদেশির মতামত তুলে ধরি। দেখুন আমাদের চারিত্র তাদের কাছে কিভাবে ধরা পড়েছে।
পরিবার নির্ভরতা আমাদের দেশে একটি অত্যন্ত বড় বিষয়। পৃথিবীর অনেক দেশেই এই উপাদান একেবারে অনুপস্থিত। তো একজন বিদেশি গবেষক লিখেছেন,
' বাংলাদেশে একজন ব্যক্তি যখন ক্রমশ বৃহত্তর সমাজে প্রবেশ করে তখন পদে পদে তার পথটি মসৃণ করে দেবার জন্য প্রয়োজন পড়ে আত্মীয়স্বজন, চেনাজানা লোকের। একটা চাকরি পেতে, বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি রতে,অফিসের একটা ফাইল সই করিয়ে নিতে সহজ হয় যদি সঠিক লোকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ থাকে। আত্মীয়স্বজন, চেনাজানা লোকের পৃষ্ঠপোষকতার জালে ঢুকতে না পারলে এখানে অস্তিত্বই বিপন্ন।"
মনে হয় না ব্যাটা জানিলো কেমনে? তো আরেক জনের মন্তব্য পড়ি চলুন, মানুষের ভেদাভেদ জ্ঞান সম্পর্কে। তিনি বলেছেন,
"বাংলাদেশের মানুষ যখন নতুন কারো সঙ্গে পরিচিত হয় তখন সে দ্রুত মেপে নেবার চেষ্টা করে নতুন মানুষটি সামাজিক মর্যাদায় তার উপরে না নিচে? সাধারণ কথাবার্তা বা কোনো আনুষ্ঠানিক আদান প্রদান সবক্ষেত্রেই এই উঁচু নিচু বোধটি থাকে খুব টনটনে। কে উঁচু, কে নিচু তা নির্ধারণ হতে পারে উপার্জনের অংক দিয়ে, পড়াশোনার ডিগ্রি দিয়ে, বয়স দিয়ে এমনকি গায়ের রং দিয়েও।"
সত্যিই কি তাই। কতটা সত্যি?
মন্তব্য
দুটো মন্তব্যই ঠিক আছে।
কি মাঝি? ডরাইলা?
দ্বিতীয় মন্তব্যটি শতভাগ সত্যি। প্রথমটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠিক।
স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত লোকজন কি কোন কাজে আসে ? সেরকম ব্যাপক মাত্রায় হয়ত না।আর কাজের ক্ষেত্রে তো সবখানেই চেনাজানা থাকা প্লাসপয়েন্ট। এই আমেরিকাতেই নেটওয়ার্কিং জিনিসটা বিশাল ব্যাপার।
আর ২য় টার ক্ষেত্রে বলি, এটাকি খালি আমাদেরই আচরণ ? কম, বেশি সবার মধ্যেই কিন্তু এগুলা আছে। এখানে প্রাইভেট ক্লাবে যাওয়া লোকজনদের কিন্তু হাজার টাকা দিলেও ম্যাকডোনাল্ডস-এ যাবে না।
তাই এই ব্যাপারগুলাকে খালি বাঙালীর আচরণ বলতে আমি নারাজ।
______ ____________________
suspended animation...
স্কুলে ভর্তি করতে চেনাজানা লাগে?
-লাগে...
খারাপ স্কুলে তো আর মা-বাবা ভর্তি করাতে চায় না। করাতে চায় ভালো স্কুলে। চেনাজানা লাগে, তারপর ডোনেশনও লাগে।
এযে শুধু বাংলা মিডিয়াম স্কুলে লাগে তা না, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলতো মা-বাবার ইন্টারভিউ নেয়। তারা তখন দ্বিতীয় মন্তব্যের মত মা-বাবার অর্থ, ডিগ্রি, গায়ের রং এগুলো দেখে।
নেটওয়ার্কিংটা অন্য জিনিস। এটা শুধু এ্যাকসেস। যেমন ডেইলি স্টারে লেখা দিতে গেলে আমি পরিচিত কারো কাছে যাবো। কিন্তু সেই লোক আমার লেখা ছাপানোর বিষয়ে ক্ষমতাপ্রয়োগ করবে না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
প্রথম মন্তব্যের সাথে পুরো একমত নই, তবে দ্বিতীয়টি আমার নিজেরও উপলব্ধি। বিশেষ করে ঘুরে বেড়ানোর সময় এই তফাৎগুলো চোখে পড়েছে বেশি করে।
প্রথম মন্তব্যটি যে করেছে সে আসলেই বাংলাদেশে থেকেছে বা এদেশকে কাছে থেকে দেখেছে
২য়টি মনে হয় জাতিভেদে না বরং সবমানুষই একরকম ,,, আমাদের দেশে ধনী-গরীবে ব্যবধান খুব বেশী বলে ব্যাপারটা খুব স্থুলভাবে চোখে পড়ে ,,,এই যা
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
দুই মন্তব্যকারীই (এগুলো তাদের গবেষণাপত্রের মন্তব্য) বাংলাদেশে থেকে তাদের গবেষণা করেছেন।
দু'জনের দুই ধরনের মন্তব্য তুলে ধরেছি। দ্বিতীয়জন নিশ্চয়ই প্রথমজনের বিষয়েও প্রায় কাছাকাছি মন্তব্য করেছিলেন।
এদের মন্তব্যগুলো আমার কাছে বিস্ময়কর লেগেছে। কারণ আমি বিদেশে থেকে তাদের সম্পর্কে এত সহজে এত ডিটেইলসে মন্তব্য করতে যাবো না। একটু দ্বিধা থাকবে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
এই পোস্টে কতগুলো কমেন্ট পড়েছে তা প্রথম পাতা থেকে দেখা যাচ্ছে না। টেকনিকাল কোন সমস্যা?
আমিও ভাবলাম কেউ মন্তব্য করেনি।
তার মানে টেকনিক্যাল প্যাঁচে আছে এই লেখা।
এইটার মনে হয় কমেন্ট কাউন্টিং বন্ধ করা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
চমৎকার অবজারভেশন !!
..হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দার জলে...
কিন্তু বেটা পারিল কেমন জানতে?
বইটা হাতের কাছে নাই। কেন যে পোস্টটা লেখার সময় গবেষকদের নাম ও প্রকাশনার নাম লিখে রাখি নাই। ভেবেছিলাম এমনি এমনি ভালো লাগবে পড়তে।
এখন মনে হচ্ছে অনেকে ভাবতে পারে আমিই বাক্যগুলো সাজিয়েছি। কিন্তু আসলেই আমার চেনা বাংলাদেশ এমন না। বাংলাদেশে স্কুল থেকে শুরু করে চাকুরি কোনোকিছুই আমি মামা-চাচা ছাড়া করেছি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
সে তো অ--নে--ক অনেক কাল আগের কথা।
সেই রামও নাই,সেই অযোধ্যাও নাই।
এখন নাকি প্রিস্কুলে ভর্তি হতেও কোচিং লাগে।
আজিব দেশে আছি।
কথা ভুল কয় নাই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
একমত। বিদেশী গবেষকের নাম জানতে ইচ্ছে করছে।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আচ্ছা দুজনের নামই জোগাড় করবো কালকে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
নতুন মন্তব্য করুন