আপনার হার্ট ও ফুসফুসের অবস্থা ঠিক রাখতে, হাড় ও মাসল শক্ত করতে, টেনশন কমাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হাঁটা খুব কাজে দেয়। সাধারণভাবে এর ফলে আপনার ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। হাঁটা সহজ, কম খরচের, নিরাপদ এবং সহজেই করা যায়। আপনি নিজে নিজে বা কাউকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে পারেন এবং যেখানেই যান না কেন সেখানেও আপনি এই ব্যায়াম করতে পারেন। জগিং বা দেঁৗড়ানোর চেয়ে হাঁটা নিরাপদ এবং শরীরের উপর কম চাপ ফেলে। আপনি যদি বয়স্ক, বেশিরভাগ সময় ঘরে বসে কাটান বা আপনার শরীরের জোড়ার সমস্যা থেকে থাকে তবে হাঁটা আপনার জন্য বিশেষভাবে ভালো।
পুরনো অসুখ আছে এমন বেশিরভাগ লোক ফিটনেসের ব্যায়াম হিসেবে হাঁটতে পারেন। যদি আপনি কেনাকাটা করতে, বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বা ঘরের কাজকর্ম করতে হাঁটেন তবে সম্ভবত: ব্যায়ামের জন্যও আপনি হাঁটতে পারবেন। লাঠি বা কোন কিছুর সাহায্য নিয়ে হাঁটার জন্য আপনার হাঁটার ব্যায়াম শুরু করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যদি আপনি হুইলচেয়ার বা ক্রাচ ব্যবহার করেন বা একটু হাঁটলেই আপনার অসুবিধা হয়, তবে অন্যধরণের এ্যারোবিক ব্যায়ামের কথা আপনি ভাবতে পারেন বা একজন ডাক্তার বা ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
হাঁটার প্রথম দুই সপ্তাহ সাবধান থাকবেন। যদি বেশ কিছুদিন ধরে আপনি কোনকিছু না করে থাকেন তবে 10 মিনিটের হাঁটাই আপনার জন্য যথেষ্ট। ধীরে সুস্থে হাঁটার বিরতি দিয়ে দিয়ে আপনার সময় বাড়ান। প্রতি সপ্তাহে দ্রুত হাঁটার বিরতি বেশি হলে 5 মিনিট করে বাড়ান যতক্ষণ না আপনার হাঁটা 20 থেকে 30 মিনিট হয়। কতবার, কতসময় ও কতটুকুর গাইডলাইন মেনে চলুন এবং শুরু করার আগে হাঁটার উপর নীচের পরামর্শগুলো পড়ুন।
হাঁটার বিষয়ে পরামর্শ
জায়গা ঠিক করুন। হাঁটার জন্য সমান একটা জায়গা বেছে নিন। পাহাড়, অসমান জায়গা, নরম মাটি, বালি বা নুড়িপাথরের উপর হাঁটা কঠিন এবং প্রায়ই এ থেকে হিপ, হাঁটু বা পায়ে ব্যথা হয়। ফিটনেসের জন্য তৈরি করা ট্রেইল, শপিং মল, স্কুলের ট্র্যাক, ফুটপাথসহ রাস্তা এবং নীরব লোকালয় হচ্ছে হাঁটা শুরু করার জন্য ভালো জায়গা।
সবসময় হালকা হেঁটে শরীর গরম ও ঠান্ডা করবেন। দ্রুত হাঁটার জন্য মাসল ও সার্কুলেশন প্রস্তুত করতে 3 থেকে 5 মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটা জরুরি। একইভাবে ধীরে ধীরে হেঁটে শেষ করতে হয় যাতে শরীর ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়। হাঁটায় অভিজ্ঞ লোকজন জানেন কিভাবে শুরুতে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরা বা অসুবিধা এড়াতে হয় এবং ধীরে ধীরে হেঁটে হাঁটার ব্যায়াম শেষ করতে হয়।
আপনার নিজস্ব গতি ঠিক করুন। হাঁটার ঠিক গতি খুঁজে পাওয়ার জন্য চর্চা করতে হয়। আপনার গতি বুঝার জন্য, কয়েক মিনিট আস্তে আস্তে হাঁটা শুরু করুন, তারপর আপনার স্বাভাবিক হাঁটার চেয়ে গতি একটু দ্রুত করুন। 5 মিনিট পরে, আপনার পালস্ পরীক্ষা করে, বা পরিশ্রমের ধারণা বা কথা পরীক্ষা দিয়ে আপনার ব্যায়ামের তদারকি (মনিটর) করুন। যদি আপনি রেঞ্জের উপরে থাকেন বা আপনার শ্বাসকষ্ট হয় তবে গতি কমান। যদি আপনি রেঞ্জের নীচে থাকেন তবে আরেকটু দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করুন। আরো 5 মিনিট হাঁটুন এবং আবার ব্যায়ামের এর মাত্রা পরীক্ষা করুন। তারপরও যদি আপনি আপনার ব্যায়ামের রেঞ্জের নীচে থাকেন তবে আরামের সাথে হাঁটা যায় এমন একটা গতিতে হাঁটতে থাকুন এবং প্রত্যেকবার হাঁটার মাঝে ও শেষে আপনার ব্যায়ামের মাত্রা পরিমাপ করুন।
আপনার হাতের ব্যায়াম বাড়ান। হাতের ব্যায়াম বাড়িয়ে আপনি আপনার হার্টের রেইটকে "আদর্শ" বা ব্যায়ামের টার্গেট রেঞ্জে নিয়ে যেতে পারেন। (মনে রাখবেন, ফুসফুসের অসুখ আছে এমন অনেক লোক হাতের ব্যায়াম করতে চান না। কারণ এধরণের ব্যায়াম থেকে অন্য ব্যায়ামের চেয়ে বেশি শ্বাসকষ্ট হয়।) আপনার কনুই একটু বাঁকা করুন এবং আপনার হাত জোরে জোরে ঘোরান।) অথবা প্রত্যেক হাতে এক বা দুই-পাউন্ড (.75 কেজি) করে ওজন নিন। হাঁটার সময় ব্যবহারের জন্য আপনি হাতে নেয়ার ওজন কিনতে পারেন। প্রত্যেক হাতে একটা করে খাবারের টিন নিতে পারেন বা ছোট প্লাস্টিকের বোতল বা মোজার ভেতর বালি, শুকনো বীজ, বা পয়সা ভরে নিতে পারেন। হাত দিয়ে বাড়তি কাজ করলে আপনার ব্যায়ামের মাত্রা বেড়ে যাবে। এজন্য আপনাকে কষ্ট করে হাঁটার গতি বাড়াতে হবে না।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন