আপনার শরীরের নিজে নিজে সুস্থ হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যদি ঠিক হওয়ার জন্য সময় দেয়া হয় তবে বেশিরভাগ সাধারণ অসুখগুলো সহজেই ভালো হয়ে যায়। শরীরের ভেতরের ফার্মেসি যে প্রেসক্রিপশন দেয় তা সবচে নিরাপদ ও কাজের। সুতরাং, ধৈর্য ধরা, যত্নের সাথে নিজে নিজের খেয়াল করা, তদারকি করাটাই হচ্ছে আপনার বা আপনার ডাক্তারের জন্য চিকিৎসার চমৎকার একটা উপায়।
এটাও সত্যি যে, পুরনো অসুখের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে ওষুধ একটা জরুরি অংশ। এসব ওষুধে অসুখ ভালো হয়ে যায় না। সাধারণত: নীচের উদ্দেশ্যগুলোর একটা বা দুটো কাজে এগুলো লাগে।
1. রাসায়নিক ব্রিক্রিয়ার মাধ্যমে অসুখ কমাতে সাহায্য করে। যেমন ব্রনকোডায়ালেটর ইনহেলার থেকে যে ওষুধ পাওয়া যায় তা শ্বাসের রাস্তাকে চওড়া করে। এতে শ্বাস নিতে সুবিধা হয়, বা একটি জিটিএন ট্যাবলেট রক্তের কনিকাকে চওড়া করে হার্টে বেশি রক্ত পাঠায়, এতে এনজিনার উপশম হয়।
2. অন্যান্য ওষুধগুলো অসুবিধা বাড়তে বাধা দেয়। যেমন, যে ওষুধ রক্ত পাতলা করে সেটা রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। এতে স্ট্রোক বা হার্টের সমস্যা দেখা দেয়।
3. তৃতীয় আরেক ধরনের ওষুধ আছে যা অসুখের লক্ষণগুলো ভালো করে এবং অসুখের গতিকে ধীর করে দেয়। যেমন, নন-স্টেরয়ডাল এনটি-ইনফ্লেমেটরি মেডিসিন (এনএসএইডস) ব্যথা-বেদনা কমিয়ে আর্থরাইটিসের ক্ষেত্রে সাহায্য করে। একইরকম ভাবে, ডিজিটালিস নামের ওষুধ হার্টবিট শক্তিশালী করতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
4. সবশেষে, এমন ওষুধ আছে যা শরীর যেসব উপাদান আর যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি করছে না সেগুলোর যোগান দেয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা এই কারণে ইনসুলিন ব্যবহার করে।
সবক্ষেত্রেই, ওষুধের উদ্দেশ্য হচ্ছে রোগের প্রভাবটাকে কমানো, বা এর গতিকে ধীর করে দেয়া বা অসুখ হতে বাধা দেয়া। ওষুধ কোনো কাজ করছে কিনা এটা হয়তো আপনি টের না পেতে পারেন। যেমন, একটা ওষুধ হয়তো অসুখের গতিকে কমিয়ে দিচ্ছে কিন্তু আপনি হয়তো কোনকিছু টের পাচ্ছেন না। এতে আপনার মনে হতে পারে অসুখে কোন কাজ হচ্ছে না (যেমন, হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার ওষুধ)।
এজন্য আপনি যদি বুঝতে নাও পারেন কিভাবে কাজ হচ্ছে তবু আপনার ওষুধ বন্ধ না করাটা জরুরি। যদি এতে আপনার চিন্তা হয় তবে আপনার ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টকে বলুন। এজন্য আমাদেরকে অনেক মূল্য দিতে হয়। কাজে লাগলেও সব ওষুধেরই সাইড এফেক্ট বা পাশর্্ব-প্রতিক্রিয়া আছে, যা আমরা চাই না। কিছু কিছু সাইড এফেক্ট আছে বুঝা যায় এবং ছোট ধরনের, এবং কিছু আছে অপ্রত্যাশিত ও জীবনের জন্য হুমকি। হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি হয় তার 5% থেকে 10% হচ্ছে ওষুধের সাইড এফেক্ট বা রিএ্যাকশন (খারাপ প্রতিক্রিয়া)-এর জন্য।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন