নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্যও একটি। যথার্থ স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা থাকা হচ্ছে একটি উন্নত দেশের অন্যতম বড় পরিচয়। বাংলাদেশের মত অনুন্নত দেশগুলোতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মানে রোগের চিকিৎসার সুযোগ থাকা। হাসপাতাল আর ডাক্তারের ব্যবস্থা। অধিক জনসংখ্যা থাকায় পরিবার পরিকল্পনা বা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণও এসে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণকে জনপ্রিয় করতে কিছু স্বাস্থ্যতথ্য এখন বিতরণ করে বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু মূল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যতথ্যের কোনো প্রবেশাধিকার নেই। পুষ্টিবিদ বা ফুড নিউট্রশনাররা কাজ করেন শুধু রোগীর পথ্য বানাতে। তাও সংখ্যা খুবই অল্প। ফিজিক্যাল ফিটনেস নিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের কোনো মাথাব্যথা নেই। নিরোগ মানুষ কি করে স্বাস্থ্যরক্ষা করবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে হাসপাতাল/স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো জড়িত নয়। কারণ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটি সেরকম করে সাজানো হয়নি। কবির ভাষায়, তাদের কিতাবে 'শহীদ আছে গাজী নেই'। অর্থাৎ ক্যান্সার বা অন্যকোনো রোগ বাঁধিয়ে ঝুলে পড়লেই ডাক্তার/হাসপাতাল পাওয়া যাবে কিন্তু যারা এখনও হাঁটছেন, ঝুলে পড়েননি তারা কি করে স্বাস্থ্যটাকে নিরোগ রাখবেন সে বিষয়ে কোনো সেবা-সুবিধা নেই।
উন্নত দেশে এই দুটি দিকে অত্যন্ত সাম্যতা বজায় রেখেই সাজানো হয় স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা। সমপ্রতি ব্রিটেনে যে বিপুল প্রচারণা চলছে এর নাম Five A Day। WHO-র পরামর্শ অনুযায়ী সরকার এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বিপুল চেষ্টা করে যাচ্ছে নাগরিকদের খাদ্যাভাস ঠিক করতে। প্রতিদিন যাতে সবাই 5 অংশ ফল ও সব্জি খায়। কৃষক, ফুড ইন্ডাষ্ট্রি, খাদ্য প্রসত্তুতকারক, বিক্রেতার সাথে মিলে তারা তৈরি করেছে Five A Day লোগো। এই লোগো ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন খাদ্যের প্যাকেটে। কঠিন নিয়ম-কানুন অনুসরণ করার পরই এই লোগো ব্যবহার করা হয়। (বাংলাদেশের বিএসটিআই-এর লোগো ব্যবহারের মত চটজলদি নয়। জনগণের প্রাণ নিয়ে কোনো ফাজলামিও নয়। জনগণ এসব দেশে সংখ্যা নয় সম্পদ।) সুতরাং লোগো ব্যবহারের সাথে জড়িত কঠিন পুষ্টি সংক্্রান্ত বৈশিষ্ট্য। কতটুকু চর্বি, চিনি ও লবণ আছে তা ভালোভাবে বিবেচনায় আনা হয়। মার্কেটে ফল বা সব্জি কিনতে গেলেই এই লোগো দেখতে পারবেন। ঐ টুকু ফল খেলে দিনে পাঁচ অংশের কত অংশ পূরণ হবে তা বুঝতে পারবেন পাঁচটি ছোট বর্গের মধ্যে কয়টি রং দিয়ে ভরা আছে সে চিহ্ন দেখে।
লিফলেট, বিজ্ঞাপনসহ ব্যাপক প্রচারণা করে একে পৌঁছে দেয়া হয়েছে জনগণের মস্তিষ্কে। বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোকে সাথে নিয়েই কাজ করে সরকার। তারাও নিজস্ব বিজ্ঞাপনে জুড়ে দিচ্ছে এই লোগো আর নিজের পণ্য বিক্রির পাশাপাশি পৌঁছে দিচ্ছে এই তথ্য।
যারা বাংলাদেশে এই তথ্য বা সরকারী প্রচারণার সুবিধা পাচ্ছেন না তারাও স্বাস্থ্যের জন্য অনুসরণ করুন এই ফমর্ুলা। দিনে পাঁচটি ফল বা সব্জি। কতটুকুতে এক অংশ হবে তা বুঝার জন্য নীচের ছবিটিতে ক্লিক করম্নন। পাঁচটি ফল বা সব্জির উপকার ব্যাপক। ক্যান্সারসহ অনেক জটিল রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। বিশেষ করে দেশে যে বড়, সুন্দর ও ঝকঝকে বেসরকারী হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে সেগুলো থেকে শেষ বয়সে দূরে রাখতে খুবই সাহায্য করবে।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন