সূর্য এখন ডোবে রাত ন'টায়। বিলেতে পূর্ণিমার জ্যোৎস্না তাই ঠিক বাংলার মত নয়। আকাশ সূর্যের আলোয় ভরা। শুধু পশ্চিম কোণে সাদাটে চাঁদ বিরস বদনে বসে আছে। কখন ডাক পড়বে তার মঞ্চে। তারপর সি্নগ্ধ আলোয় সে ভরিয়ে দেবে পৃথিবীর অবারিত অঞ্চল। গ্রিনউইচ পার্কে আমরাও হাজির পূর্ণিমার জ্যোৎস্না গায়ে মাখবো বলে। বিসত্দীর্ণ সবুজ প্রানত্দর গ্রিনউইচ পার্কের। নানা জাতের বক্ষ আর ফুল। এঁকে বেঁকে আছে হাঁটবার পথ। পূর্ব লন্ডনের প্রানত্দ থেকে টেমস্ নদী পার হলেই গ্রিনউইচ। পার্কের মধ্যেই সবচে উঁচু টিলাটায় গ্রিনউইচ মানমন্দির। আমি বলি 'সময় যেখানে শূন্য'। হেঁটে হেঁটে মানমন্দিরটা পার হয়ে আসি। আমাদের সাথে হেঁটে হেঁটে আসে চাঁদ। দূরে গাছের শাখা-প্রশাখার ফাঁক থেকে উঁকি দেয় আর বলে, সূর্যটাকে ডুবতে দাও, জ্যোৎস্না দেবো জ্যোৎস্না। রূপালী জ্যোৎস্না।
বাঙালি এক দম্পতি বসে আছে পার্কে। তারাও কি জ্যোৎস্না দেখবে বলে? সাদা শাড়ি আর সাদা পাঞ্জাবি। রোমান্টিকতা বাসা বেঁধেছে নিশ্চয়ই তাদের মনে। প্রেমের জোয়ারে ডুবেই তো মানুষ কাতর হয়ে তাকায় চাঁদের দিকে। কতদিন সিঁদুর পরা বাঙালি নারী দেখিনা। বৈশাখের এই পূর্ণিমা সে সুযোগও করে দিলো। বাঙালি নারীরা কি চাঁদের মতই সি্নগ্ধ। আমার ক্যামেরায় তাঁদের ছবি তুলে রাখি। তারা কিছু মনে করে না। খুশি হয়। নিশ্চয়ই ইমেইল ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া যাবে। সূর্যের আলোটা আরো কমে এসেছে। টইলদার গাড়ি থেকে পার্ক ছাড়ার আহ্বান শোনা যায়। পূর্ণিমার চাঁদটা নিজস্ব অবয়বে উদ্ভাসিত হয়েছে। কিন্তু দম্পতিটিকে কোথাও দেখিনা। তারা কি বেছে নিয়েছে আরো নির্জনতা? নাকি হারিয়ে গেছে এই ভরা পূর্ণিমায়?
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন