বিশ্বকাপে কার কোন দল প্রিয় তা নিয়ে বস্নগে জোর কচলাকচলি চলছে। তো আমার টিমের নাম আসে না। তাই নিজেই আওয়াজ দিলাম। নিজের চুলায় ধুঁয়া দেয়ার মত অবস্থা। তবে এই কাপে ধূমায়িত চা ঢেলে তো আর ঝড় তোলা যাবে না সেজন্য পিজি-টিপসই ভরসা। পিজি-টিপস হচ্ছে চা পাতা কোম্পানি। তাদের টি-ব্যাগের বাঙ্ কিনলে তারা দিচ্ছে সাদা-কালো ফুটবল আকারের চায়ের বড় একটা কাপ। সেটি কিনেই এবার বিশ্বকাপে ধুঁয়া ধরার ইচ্ছা আমার। আমার প্রিয় দলের নাম এখনও দেখছি না। জার্সিটাও নিশ্চিত না। মিডিয়া আসল ব্যাপারে খোঁজখবর রাখে না, তারা শুধু নাচের তালে তাল দিয়ে যাচ্ছে। সে যাক। মিডিয়ার বিকল্প ব্লগ। আমার তাই ভরসা। তো যা এতক্ষণ ধরে বলতে পারলাম না তা হলো আমার প্রিয় দল কোনটি। অবশ্যই এমন দল আমার প্রিয় যারা কখনও হারে না। এবারের বিশ্বকাপেও তারা আছে। তারা হচ্ছে টিম নম্বর 33।
কথাটা আমার না সেপ বস্নাটার। ও ব্যাটা নাকি বিশ্বকাপের সর্দার। দল খেলছে বিশ্বকাপে 32 টাই। তবে আরো 21 জনের একটা টিম আছে যারা কোনো নির্দিষ্ট দেশের জার্সিতে মাঠে নামে না। মাঠে তারা নামে ঠিকই তবে খেলতে নয় খেলা চালাতে। মিডিয়ায় আবার শ্রমিকদের মানে যারা খেলে তাদের নিয়েই বেশি আলোচনা চলে যারা শ্রমিকদের মারামরি, স্ট্রাইক, ফাউল, বদমাইশি, ফাজলামি, গোয়াতর্ুমি নিয়ন্ত্রণ করে তাদের নিয়ে বেশি একটা আওয়াজ দেয় না। এই যে 33 নম্বর দলটা এরা হচ্ছে রেফারি। এবার রেফারিরা অবশ্য তিনজনের দল বেঁধে তবেই এসেছে বিশ্বকাপে। এক দেশ থেকে একজন রেফারি আর তার দুই এ্যাসিসটেন্ট। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ফুটবল দল যে শুধু আসরে আসতে পারেনি তা নয়। কোনো রেফারি বা লাইন্সম্যানও আসতে পারেনি। ঘটনা কী? আপনারাই মাথা ঘামান।
জাতভাই বলতে সিংগাপুরের শামসুল। পেশায় তিনি স্পোর্টস এঙ্িিকউটিভ। আগেও বাঁশিতে ফুঁ দিয়েছেন। তো শামসুলকে দেখেই আমার দেশি ভাইদের কথা ভুলে থাকবো। তবে আমার এই 33 নম্বর দলে কোন পেশার লোক নাই। সব আছে। রেফারি পেশার আছে মাত্র দুইজন। ইংল্যান্ডের গ্রাহাম আর জাপানের তরু। বাকীসব নানা পেশার। সাংবাদিক থেকে কেরানী, উকিল থেকে পাইলট সব পাবেন এই 33 নম্বর দলে। মিশরের এসাম উড়োজাহাজ ভালোই চালান। উরুগুয়ের জর্জি কেরানী হলেও মাছিমারা নন। 2004 সালে ব্রাজিল বনাম উরুগুয়ের খেলায় বল গোললাইনের দেড় ফুট ভিতরে ঢুকলেও ব্রাজিলের গোল তিনি দেননি। ব্রাজিলের সাংবাদিক কার্লোস রেফারি অবশ্য রীতিমত সাসপেন্ড হয়েছিলেন। কলাম্বিয়ার অস্কার পেশায় উকিল ঠিকই কিন্তু মাঠ ছাড়তে তাকে প্রায়ই পুলিশের সাহায্য নিতে হয়। মক্কেলরা নিশ্চয়ই বেশি পছন্দ করে না তাকে। তো এরাই যখন আপনাদের জয়-পরাজয়ের ভাগ্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকবে তখন এদেরকে আগে চিনে নিন।
33 নম্বর দলের এই সদস্যদের বয়স 32 থেকে 44 এর মধ্যে। সবচে কমবয়সী 32 বছরের মার্কো হচ্ছেন মেঙ্েিকার শরীর চর্চার শিক্ষক। কিন্তু লাল কার্ড দেখাতে তার জুড়ি নেই। 2005 এর মেক্সিকান গ্র্যান্ড ফাইনালে তিনখানা লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন তিনি। আর্জেন্টিনার হোরাশিয়াও শরীর চর্চার শিক্ষক। তবে 44 বছরের রাশিয়ার ভ্যালেন্টিন ইভানভ হচ্ছেন সত্যিকার শিক্ষক। ভিডিও দেখে গোল বাতিল করাতে তাকেও ব্যান করা হয়েছিল একবার। তার সমবয়সী জার্মানির মার্কাস অবশ্য দাঁতের ডাক্তার। খেলোয়াড়দের বা দর্শকদের অশালীন বা মারমুখি আচরণের দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য তার সুনাম রয়েছে।
বাকীদের পেশার তালিকা দিয়ে বিরক্তি বাড়াবো না। সংক্ষেপে মাথায় রাখুন যে প্যারাগুয়ের কার্লোস হচ্ছেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ব্লগে এরকম পেশার অনেকে আছেন। তাদের মতই আচরণ করবেন তিনি। ফ্রান্সের এরিক হচ্ছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। আমাদের ব্লগে একটু বেশিই ছিল এই প্রজাতি। এদের স্বভাব চরিত্র জানেন। তবে এই মাঝমাঠের কার্ডধারীদের কাকে নিয়ে সাবধান থাকবেন তা শোনে যান। বেনিতো নামে যে উকিল ও অর্থনীতিবিদ রেফারি আছেন মেঙ্েিকার তার বিষয়ে কিছুই বলা যায় না। আমি বদনাম করছি মনে করবেন না। আমার প্রিয় কোচ রাফায়েল বেনিটেজ বলেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
কি বলেছেন রাফায়েল বেনিতে সম্পর্কে তা শুনবেন? রাফায়েল বলেছেন, "বেনিতো সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধানত্দেই ভুল করে"। কি মারাত্মক। এরকম লোকও আছে তালিকায়? বাংলাদেশের যেকোনো থানার ও.সি হলেই তো এই দায়িত্ব পালন করতে পারতো। 'সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধানত্দে ভুল করা'-যোগ্যতা হিসেবে খারাপ না। কিন্তু বাকী 32 টিমের কার ভাগ্য যে ছেড়াবেড়া হয়ে যায় কে জানে? সেজন্য আপনাদের সাবধান করে দিলাম। যাতে নাদিয়ার মত দোয়া ইউনুস মুখস্থ করে নেন।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন