সাইফুরের কথা আপনাদের মনে আছে বলে মনে হয় না।
কোন সাইফুর?
ঐ যে বায়তুল মোকাররমের সামনে দাঁড়িয়ে আঙুর ছিঁড়ে ছিঁড়ে মুখে পুরছিলো আর ভাবছিলো চাঁদপুরের রফিক হুজুরের কথা। যিনি বলেছেন বেহেশতের আঙুরের স্বাদ হবে যুবতী মেয়ের স্তনের বোঁটার মতো।
হুমম এটুকুতে যাদের স্মৃতিতে ভেসে উঠলো, তারা মনে করতে পারবেন সাইফুর হচ্ছে মাসুদা ভাট্টির একটি উপন্যাসের চরিত্র। উপন্যাসটির নাম তরবারির ছায়াতলে। এই ব্লগসাইটটির শুরুর দিকে উপন্যাসটির দুই অধ্যায় মাসুদা তুলে দিয়েছিলেন এখানে তার ব্লগে।
ব্লগের কর্ণধাররা সেই উপন্যাসের অধ্যায়গুলো 'ডিলিট' করে দিলেন অশ্লীলতার অভিযোগে। কিছু ব্লগাররা অবশ্য আপত্তি তুলেছিলেন লেখাটি নিয়ে। অন্যপক্ষে মুছে দেয়ার পর এর প্রতিবাদে দুইদিন এই ব্লগে লেখা বন্ধ রেখে প্রতীকি প্রতিবাদ করেওছিলেন বেশ কিছু ব্লগার।
এই প্রসঙ্গে এই প্রশ্নটি উঠতে পারে, ব্লগে লেখকরা কতটা স্বাধীন? এই প্রশ্ন আমাদেরকে আরো বিব্রত করে যখন আমরা জানতে পাই যে, ব্লগ কতর্ৃপক্ষ অপ্রকাশযোগ্য মনে করলেও খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা আগামী প্রকাশনী উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে নিদ্্বর্িধায়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে, তথ্যপ্রযুক্তির এই উদার আকাশ আর আন্তর্জাল আমাদের কতটা মুক্তচিন্তা চর্চার সুযোগ দিলো? সরাসরি বললে দাঁড়ায় সামহোয়ারইনের আরলিড ক্লকারহেডের চেয়ে আমাদের আগামীর ওসমান গণিই তো নমস্য!
বিদেশি বাণিজ্যিক গা-বাঁচানো প্রযুক্তি-আলাদের চেয়ে দেশি সাহিত্যসেবীদের পেশি অনেক টান টান!
প্রযুক্তির সুবিধা তৃতীয় বিশ্ব পর্যন্ত পেঁৗছায় ঠিকই কিন্তু ব্যবহার হয় সেই মান্ধাতা চিন্তার মোড়লদে হাতেই গিয়ে পড়ে। তাতে গরুরগাড়িতে হেডলাইট লাগানোর অগ্রগতি অর্জিত হয়। ওয়েবসাইটে 'আল্লার আইন' প্রতিষ্ঠার বোমা বানানোর রেসিপি পাওয়া যায়।
'তরবারির ছায়াতলে' উপন্যাসটি কতটা অশ্লীল তা নিয়ে কেউ কেউ এই ব্লগে পোস্ট আর মন্তব্য দিয়েছেন। আর ব্লগ কতর্ৃপক্ষের কাঁচির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। কিন্তু আগামী প্রকাশনী বইটি প্রকাশের অযোগ্য মনে করেনি। বইটি প্রকাশের পর কেউ লেখকের কূশপুত্তলিকা দাহ করেনি। প্রকাশকের চালায় আগুন দেয়নি। তাতে শেষ পর্যন্ত ব্লগ কর্তৃপক্ষের সাহিত্য বিচারের অনভিজ্ঞতাই ধরা পড়ে। বাণিজ্য বাঁচাতে তাদের আপোষকামিতা ও মেরুদন্ডহীনতা স্পষ্ট হয়।
সেই সাথে লেখক মাসুদা ভাট্টির কাছে ব্লগ কতর্ৃপক্ষের একটা ভুলস্বীকারও পাওনা হয়।
পুরনো সেই তর্কের ছোঁয়া পাবেন এই লিংকে:
http://www.somewhereinblog.net/durerjanala/post/3696
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন