ব্লগারদেরকে নারী বা পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করাটা যৌক্তিক নয়। আরিলের পোস্টে চোরের মন্তব্যের সাথে একমত।
নারী-পুরুষের সমানাধিকারের চেষ্টা ও নারীর প্রতি পুরুষের অবহেলা কমানোর বিশ্বব্যাপী উদ্যোগে এখন বেশ কিছু জটিলতা দেখা যাচ্ছে।
১. রাগইমন যেমন পরিষ্কার করেই বলেছে নারীত্ব লুকানোর বিষয় নয়। আমরা এটা স্বীকার করি, মানিও এটা অধিকারের পর্যায়ে পড়ে। কিন্তু পৌরুষ বলে যে বিষয়গুলো আমরা চিনি সেগুলোকে লুকাতেই বলা হয় বর্তমান বিশ্বে। এমন ধারণাই বিশ্বে চালু আছে যে পৌরুষত্বের প্রকাশটা অভব্য, অশ্লীল। বিষয়টা ভারসম নয়।
২. নারীত্ব বা পুরুষত্বের প্রকাশ হয়তো প্রাকৃতিক। সেটা গ্রহণযোগ্য সবার কাছে। কিন্তু নারীত্ব বা পুরুষত্ব ফলানোটা অভব্য। সমস্যা এই ফলানোয়। অনেক নারী এই লিঙ্গ-পরিচয়কে বড় করে দেখাতে গিয়ে গুবলেট পাকান। নিজেকে মানুষ ভাবতে হবে আগে। পরে লিঙ্গ পরিচয়।
৩. কোনটা ফলানো আর কোনটা স্বাভাবিক প্রকাশ এটা বুঝতে পারাটা খুব কঠিন নয়। একটু সুক্ষ্ম চেষ্টা থাকতে হবে।
৪. বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন নর্ম তৈরি হয়; সেটাও একটা জটিলতা। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন মেয়েদের একরকম বলা যেতে পারে ছাড় দিতাম। সামাজিক বাস্তবতার কারণে। সেটি হলো, আমাদের মেয়ে-বন্ধুরা কথা বলার সময় ছেলেদেরকে গায়ে ধাক্কা দিত, বা হাত দিয়ে ছুঁয়ে কথা বলতো, কখনো কিল-ঘুষি দিত, কিন্তু আমরা ছেলেরা মেয়েদের সাথে সেটা করতাম না। অঘোষিত একটা প্রথা ছিল। সমাজে এমন ধারণা ছিল যে ছেলেদের হাত দেয়ার অন্য অর্থ হতে পারে। এসব হচ্ছে সুক্ষ্ম বিষয়। চোখ-কান খুলে দেখতে হবে।
৫. এই ব্লগে মেয়ে ব্লগারদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার ধারণা আরিল সম্ভবত: রাগইমনের কাছ থেকে পেয়েছে। কিন্ত এই ব্লগে রাগইমন যে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছে তা মোটেও তার্ ব্লগিং বা নারী পরিচয়ের জন্য নয়।
অন্যান্য পুরুষ ব্লগারদের সাথে রাগইমনের ব্লগ বহির্ভূত সম্পর্কের জের এসেছে এই ব্লগে। দুই তার রাগইমন নিকের চরিত্র আর ব্যক্তি অনামিকার চরিত্রের ফারাক পাঠকরা অনেকসময় বুঝতে পারেননি আবার রাগইমন বুঝাতেও পারেননি। রাগইমন পরিষ্কার করে বলেছেন এটা একটা নিক আবার তিনি নিজেই অনামিকা হকের ফটোগ্রাফ দিয়েছেন পরিচিতি হিসেবে। সুতরাং রাগইমন তার নন-ভার্চুয়াল অস্তিত্ব ও তার সম্পর্কের জটিলতাকে ব্লগে পেয়ে গেছেন নেতিবাচক আক্রমণের শিকার হিসেবে। তার প্রতি আমার সমস্ত সমবেদনা। অন্যরা যথেষ্ঠ সমবেদনার সাথে তাকে দেখেননি, একধরণের নিষ্ঠুরতা প্রকাশ পেয়েছে তাদের আচরণে।
৬. একই সাথে সম্ভবত: এটা সত্য মেঘ, মাশীদ, প্রজাপতি, মৌসুম, আস্তমেয়ে (এই নিকের আড়ালে মেয়ে-পুরুষ বা একাধিক ব্যক্তি আছেন এই গুজব মেনে নিয়েও) এরা অন্যান্য ব্লগারদের মতই এখানে বিচরণ করতে পেরেছেন।
৭. শ্যাজাকে কেউ সম্ভবত: একবার নেট-পরকীয়ায় ডেকেছিলো। তা ছাড়া, মাসুদা ভাট্টি, আকিমুন রহমান, লুনা রুশদি নারী হিসেবে সমস্যায় পড়েছিলেন মনে হয়নি। নাসিমা নামে একজন নারী বিষয়ক লেখা লিখতেন, তাকেও কেউ লিঙ্গ-বৈষম্যমূলক কোনো আচরণ করেনি।
৮. তবে হ্যা মিথিলাকে তার মারা যাওয়ার জন্য অনেক কথা শুনতে হয়েছিলো। একে অবশ্য আমরা নারীর বিরুদ্ধে আচরণ হিসেবে দেখবো না কেউ। যদিও এরসাথে সারিয়া, মাশীদ ও রাগইমন রা জড়িয়ে গিয়েছিলো।
নাহ, নারীর বিরুদ্ধে এই সাইটের ব্লগারদের নেতিবাচক আচরণের কোনো উদাহরণ খুঁজে পেলাম না।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন