না শব্দটা নানাবাড়ির নাড়ুর মত ফেলনা না মোটেও। বরং না-টা যে কতটা নাটা নাটের গুরু তা না-এর হাতে নাজেহাল না হওয়া পর্যন্ত নানা মানুষই ধরতে পারে না। তাই না-এর প্রতি নানান মানুষের নাক সিঁটকানোয় নাড়া খাবেন না। না-শুনেই আঁতকালেন অ্যাঁ, নাকি আ। তো এই ‘আ’ এর জায়গায় ‘না’ বললেই আপনার নাক কাটা যাবে নির্ঘাত। না মানলে, শুধু আস্তিকের আ বাদ দিয়ে বলুন আমি নাস্তিক, নাভিশ্বাস নেমে যাবে। আর ‘হ্যাঁ’ এর জায়গায় যদি ‘না’ বলেন তবে নাড়ি-ভুড়ি নামিয়ে দিতে পারে কোনো না-মরদ। পরিস্থিতি যদি এতটা নাজুক না হয় অর্থাৎ নাঙা নানচাকুর নীচে যদি জানটা ধরা না থাকে তবে না-এর নামকীর্তনটা শুনতে পারেন।
আ- বা হ্যা, এসবের চেয়ে ‘না’ কম জরুরি এমন ভাবনাটা মাথা থেকে নামিয়ে দিন। বিশ্বভ্রমণে বেরুচ্ছে এরকম এক কুমারী মেয়েকে বিদায় জানাতে এসে না-হক নারাজ হয়ে পড়লেন পাড়ার বয়স্কা মহিলারা। নিজের নাক কেটে অন্যের নাচ ভঙ্গের মত ঘটনা। নিকা না হওয়া নাবালিকা নাম-না-জানা দেশে যাবে নাগর ছাড়া? মেয়ের মাকে তারা নানা কায়দায় নাস্তানাবুদ করলেন। কিন্তু নানা নালিশেও নাকাল হন না মেয়ের মা। নিশ্চিন্ত করতে তিনি জানালেন, মেয়েকে নানান ভাষায় 'না' বলা শিখিয়ে দিয়েছেন তার নানা। 'না'-এর বর্ণনা শুনে বয়স্কারা নাকি কান্না থামালেন। ভাবলেন, না, 'না' বলতে পারলে কোনো মুশকিলই নাগাল পাবে না। বিনা ঝঞ্চাটে দুনিয়া ঘুরতে ঝামেলা হবে না।
নারীজাতিরই 'না' শব্দের ওপর আস্থা বেশি, কোনো নাদান এই তত্ত্ব দিলে আমি নাকচ করতে পারবো না। তবে নারীর ‘না’-এর নেপথ্যে হ্যাঁ লুকিয়ে আছে এমন না-হক কথা আমি মানতে নারাজ। আইনি মানা আছে। না-কে হ্যা মনে হয়েছিল বলে আদালতে বেঁচে যেতে চায় অনেক নাছোড়বান্দা, যারা নিজেকে নায়ক ভেবে নির্জনে চেপে ধরে নাজুক নারীকে। পশ্চিমা বিশ্বে তাই নারীর 'না' যে আসলেই 'না' তা বুঝাতে চলে নানা রকম প্রচারণা।“রিড মাই লিপ্স, নো মিন্স নো”। অর্থাৎ ঠোঁটে যদি 'না' বলে নারী তবে সেটা না-ই, মনে মনে 'না' এর নেপথ্যে 'হ্যাঁ' নুকানো ভেবে নারীকে নাজেহাল করবেন না। নতুবা হাজতের হাঙামায় হান্দায়া যাবেন।
নারীর না বলাটা পুরুষকে বুঝাতে গিয়েই লাখটাকার ব্যবসা চালু। যদিও এসব চালায় না-নাফা* বা নন-জিও প্রতিষ্ঠানরা। এখন বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলো নাটিকা করে নানা বিষয়ে 'না' বলতে শেখায়। এইডসকে 'না' বলুন, মাদককে 'না' বলুন, ধূমপানকে 'না' বলুন, সন্ত্রাসকে 'না' বলুন। নাগরিককে 'না' শেখাতেই নানা প্রতিষ্ঠান এই বিপুল টাকা নামিয়ে দিচ্ছে। নির্বাচনে নাকি এখন যোগ দিচ্ছে 'না' ভোট (এ অবশ্য সামরিক শাসকদের হ্যা-না ভোট না। সেক্ষেত্রে না-এর বাক্সে ভোট দেয়াই মানা)। না-ভোটে সিল মেরে এক ভোটেই সব প্রার্থীকে 'না' বলে দেবে ভোটাররা। ভোট দিলে জিতবে একজন। আর 'না' দিলে নামবে সবাই। বুঝেন, 'না' এর নাশকতাময় শক্তি। 'না'-এর ভূমিকা তাই মোটেই নামমাত্র না।
নাড়িটেপে ডাক্তার না বলে দিলে কিন্তু জীবনটাই নাকচ হয়ে যাবে। সুতরাং না-য়ের নাকানাচুবানিতে নাকাল হবার আগে মেনে নেয়া ভালো 'না' খুব খারাপ না। না-এর পরে 'না' যোগ করলে তা সংখ্যায় বাড়ে, 'নানা' হয় 'নানান' হয়। ('না' না বলে লোকের কথায় হু হা চালিয়ে গেলে লোকে ভাববে আপনি আদতে রাজি না। নাটক করছেন।) নানাত্ব মানে ডাইভার্সিটি। আর নানার্থক সমবায় সমিতি বলতে কিন্তু মালটি-পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি বুঝায়।
যাক নানাপ্রকারে না-এর নামগান করে যে ন্যায্য কথাটা বলতে চাইলাম, তা হলো না শুনলেই নাদা মনে করবেন না। না-এর স্থান যত বলেছি তারও উদ্র্ধে। ‘না’ পাবেন ধর্মশ্লোকে। যে শ্লোক পাঠ করে মানুষ ধর্ম গ্রহণ করে। যে শ্লোক পাঠ করায়ে না-নামাজিরে নাদান-মাসুম করে নামানো হয় কবরে। সব এই না-এর ঘোষণা দিয়েই। আল্লাহ স্বয়ং মানুষকে শেখান এই না-এর ঘোষণা। প্রথমেই বলো 'না'। অস্বীকার করো। বলো কোনো ঈশ্বর নাই। শুধু সে ছাড়া। লা ইলাহা...মানে আল্লাহ নাই (আরবের লোকজন নাদান বাচ্চার মত আদুরে গলায় না বলে। শক্ত করে না বলতে পারে না, বলে লা। তাই কি বুঝতে এত ঝামেলা? লা এর জায়গায় না বললে কত সহজ হতো!)
এই যে 'না' বা লা-ইলাহা এইখানেই রয়েছে না-এর আসল নাড়া*।
অন্য নায়কদেরকে না বলতে না পারলে নিজেই (খত)না (খলনায়ক) হয়ে যাবেন।
*(এখানে নাড়া মানে হচ্ছে পাঠ। শাস্ত্র নাড়া মানে শাস্ত্র পাঠ।)
*নাফা মানে লাভ।
মন্তব্য
এরকম নাটকীয় ঢংয়ের লেখা শেষ পর্যন্ত পড়ে যাওয়া এক বিশাল যন্ত্রনা । তারচেয়ে বড় যন্ত্রনা, এই সব যন্ত্রনা এড়িয়ে যাওয়া যায়না । না না করতে করতে শেষে গিয়ে ডুবতে হয়,ফেরা যায়না ।
শোমচৌ কে ইর্ষা না করে পারিনা এই জায়গায়, ছোট ছোট ব্যাপার নিয়ে বিশাল বিশাল অসাধারন লেখা তৈরী করে। 'ছোট ঘরে বড় শব্দ'। শব্দ না করে পারা ও যায়না ।
----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
না টুকে, না ঠুকে এমন নাটুকে লেখা আসলেই প্রশংসনীয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মাথা চক্কর দিল খানিক! জটিলস!
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
- নাকের কোণায় নোনাজলের আনাগোনা না স্বীকার করেও না-পাঠ হতে দূরে রাখতে পারলাম না। না না করতে করতে একেবারে শেষ পর্যন্ত না শেষ করে ওঠাই হলো না।
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পাঠককে ধন্যবাদ না দিয়ে পারা যায় না। তারা যে সেধে এসে এসব যন্ত্রণা শেষ পর্যন্ত বয়ে যায়।
অলৌকিক হাসান, হিমু, হাসান মোরশেদ, কনফু ও ধুসর ধন্যবাদ।
কিছু জায়গায় সম্পাদনা না করে পারলাম না। এখন পড়তে মনে হয় একটু সহজ হবে।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
তাড়াতাড়ি মন্তব্য করার কারণে আলাদা করে মন্তব্যের জবাব দিতে পারি নাই।
প্রথমে অ. হাসান। যাক জটিল হয়েছে। এখন অলৌকিক হওয়ার সাধনা করতে হবে।
হাসান মোরশেদ, ঈর্ষার কথা আমারে কইলাইন। আপ্নে যে বড় বড় বিষয় নিয়া ছুডু বাক্যে অসাধারণ লেখেন হেই কথা কইয়া আমি আক্ষেপ করছি না! নেন শব্দ করেন। ছুটিতে আছেন। বেশি বেশি লেখেন।
হিমু, যাক প্রশংসা মন্তব্যে করছেন, সমালোচনাটা মেইলে কইরেন।
ধুসর, বেশি ওঠাওঠি করা ভালো না। ঝিম মাইরা পইড়া থাকেন।
------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
নাহ! কিছু না বলে পার্লাম না!
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
অরূপ না বলতে না পারলে কেউ পারবে না।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
না! না! কাকে না কাকে নানা কথা বলা-না-বলা নিয়ে এই না বললাম "না" বলতে চাই না..
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
না না করতে করতেই আজকের দিনটা ব্লগিং-এই শেষ হলো অরূপ। এটা পোস্ট করতে গেলাম সামহোয়ার ইনে গিয়ে দেখি ক্যাঁচাল তারপর দিলাম পোস্ট। তারপর নানা প্রশ্ন।
দুইটা ব্লগ হয়ে এখন ডাবল টাইম নষ্ট।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
যাক সামহোয়ারের চেয়ে এখানে লেখাটা বেশি 'পঠিত হয়েছে' দেখাচ্ছে। যদিও আমি নিজেই অনেকবার এসেছি দেখতে কারো মন্তব্য পড়লো কিনা দেখতে। নতুন মন্তব্য নিজের ব্লগের প্রথম পাতায় দেখা গেলে এ কষ্ট হতো না।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ইক্কেরে নানা সাহেব।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
নতুন মন্তব্য করুন