১.
অন্যরকম দুটো দিন গেল। আড্ডায় আড্ডায় লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে দিন গেল ভীষণ গতিতে। পরেরদিন রোববারকে মনে হচ্ছিল সোমবার।
সেলিম এসেছে বাংলাদেশ থেকে। সেলিম মানে সেলিম চৌধুরী। যেমন গান গাইতে ভালবাসে তেমন ভালবাসে আড্ডা। আড্ডার জন্যই বিয়ে-শাদির প্রস্তাবকে তোষক চাপা দিয়ে রাখে।
তুহিনের (মানে ফজলুল কবির তুহিন) বাসায় প্রথমে আড্ডায় বসলাম সেলিম, আমি আর মারুফ। তুহিন এখন বাংলাদেশে। মারুফের সাথে এই প্রথম পরিচয়। মারুফ রিজওয়ান। লেখালেখি করে। ভীষণ ভদ্র সংস্কৃতিমনা যুবক। তুহিনের সাথে মিলে লন্ডনে তৈরি করেছে মিডিয়া ফ্যাক্টরি। পূর্ব-পশ্চিম নামে অসম্ভব সুন্দর একটা ম্যাগাজিনও সম্পাদনা করতো। ওর সংগ্রহের কোরিয়ান ছবি দেখে, গান শুনে, আর সেসব নিয়ে গল্প করে কাটলো শুক্রবার দিনের বেলাটা। এই ফাঁকে সেলিম রান্না করে ফেললো অলিভ চিকেন, ভাত আর ডাল। মারুফের রাতে রান্না করা ঝোল ঝোল রুইমাছও ছিলো। লন্ডনের বিভিন্ন স্পটে একটা ডকুমেন্টারি শ্যুট করছিলো মৌরি আর মুনজির। লুটন থেকে সকালেই এসেছে ওরা। মোবাইলে খাওয়ার গন্ধ পেয়ে হাজির হয়ে গেলো তারা। মৌরির চেহারা নিয়ে মোবাইলে কি একটা খোঁচা মারা মন্তব্য করেছিল সেলিম। সামনে পেয়ে সেলিমকে সে ছাই দিয়ে ধরলো। কোনোরকমে আত্মরক্ষা করলো সেলিম। খাওয়া শেষ করেই মৌরি ও মুনজির আবার চলে গেল নতুন লোকেশনের উদ্দেশ্যে।
২.
সন্ধ্যায় এসে হাজির হলেন প্রযোজক কুদ্দুস ভাই। সাথে জনপ্রিয় নাট্যকার মাসুম রেজা। তাদের সাথে বাংলাদেশের টিভি-অনুষ্ঠান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেলিহোমের পরিচালক বশির। তারা ক্ষুধার্ত। খাওয়া শেষ করে রাত ১১টায় সবাই মিলে রওয়ানা দিলাম হ্যাম্পটন। বশিরভাইকে নামিয়ে দিয়ে আসতে হবে। কিন্তু কুদ্দুস ভাই রাস্তা চেনে না। শুরু হলো গভীর রাতে অভিযান। তবে বাঁচিয়ে দিলো মুনজির। ওর কাছ থেকে ন্যাভিগেটর পাওয়ায় রক্ষা হলো। সাড়ে বারোটায় আমরা পৌঁছে গেলাম বশিরভাইয়ের ঠিকানায়। তার স্ত্রী শামীমা শাম্মী জেগে আছেন। সুতরাং বিস্কুট আর চা দিয়ে রাত-দুপুরে আতিথেয়তা সারলেন। এতদূর আমরা গাড়ি করে পৌঁছে দিয়েছি সেই কৃতজ্ঞতা ছিলই। আবার মাসুম রেজা যেন ঈদের নাটক দেন সেই তদবিরও আছে। চা অবশ্য খারাপ ছিল না।
৩.
লন্ডনের পথে ফিরবো হঠাত্ কুদ্দুস ভাইর মনে পড়লো সাইফুলের কথা। সুতরাং কিংস্টোনের কাছাকাছি সাইফুলের রেস্টুরেন্টে রাতের খাওয়ার অর্ডার হয়ে গেলো। খাওয়াটা মূল উদ্দেশ্য নয়। আড্ডাই ছিল প্রধান। প্রদীপ দে নামের আসামের শিলচরের এক ভদ্রলোকের সাথেই চললো মূল আড্ডা। সেলিম শিলচরে গেছে অনেকবার অনুষ্ঠান করতে। আর আমার তো নানা-দাদার বাড়ি শিলচর। ভদ্রলোকের সাথে জমে গেল আমাদের।
৪.
লন্ডন ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে তিনটা। শাহেদ আলীকে উত্যক্ত করতে ওর বিল্ডিংয়ের নিচে গিয়ে থামলাম আমরা। ড্রয়িং রুমে আলো জ্বলছে। মোবাইল করে বুঝা গেল জেগে আছে ও। সেলিম বললো, কুদ্দুস ভাইতো রাস্তা হারিয়ে সারা লন্ডন ঘুরেছে, বশিরভাইকে নামাতে পারেনি, ভাবী টেনশন করছে, শাহেদ যেন এসে আমাদের নিয়ে যায়। শাহেদ জানতে চাইলো আমরা এখন কোথায়? সেলিম বললো, তোমার বাসার নিচে। ও ড্রইংরুমের পর্দার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিলো। সেলিমের হাতে তখন মোবাইল ধরা। ও বললো, "নামো তাড়াতাড়ি"। শাহেদ জবাব দিলো, "আমি তো বেডে।" "তাহলে উঁকি দিলো কে?"
"আমি না আরমান উঁকি দিছে"।
তখন পাল্টা প্রশ্ন, "তুমি যদি বেডরুমে থাকো, তাহলে আরমান ড্রইরুমে উঁকি দিলো দেখলা কি করে?"
শাহেদ ধরা। কিন্তু সে এই রাতে রওয়ানা দিতে রাজি না।
মন্তব্য
হুমমম।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এইটা কি রেজওয়ান মারুফ? বাবরিচুলা? এমসি কলেজিয়ান?
আজ নয় গুন গুন গুঞ্জন প্রেমের, চাঁদ ফুল জ্যোছনার গান আর নয়
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নজমুল আলবাব। আসলে মারুফের সাথে এই প্রথম পরিচয়। বাবরি এখন আর নেই। তবে ম্যাগাজিনে সম্ভবত: ওর নাম দেখেছিলাম রিজওয়ান মারুফ। আপনার চেনার কথা।
মারুফ ছড়া কবিতা লেখে। ওর একটা বইও বের হয়েছিল, ছড়ার।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
হে, চিনতে পারছি। ছড়াগ্রন্থে জনৈক বাঙলার বালিকারে পচাইছিলেন উনি। নামের বানানটাও আপনারটাই ঠিক। লাল মলাটের সেই বইটা কোন বিতলায় মাইরা দিছে। থাকলে পেস্ট করতাম। তাইলে সচলের লগে তার কেরামতির একটা পরিচয় হত। বড় জোশিলা মানুষ। আরিফ ভাই, মোরশেদ মামায়ওতো চেনার কথা।
অফটপিক: আপনে আমারে ইদানিং আপনে বলে সম্মান দেখানযে বড়! কাহানি কি বড় ভাই? এনি বিতঙ ডুইঙ বাই মি?
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
অফটপিক, মাথায় নোট কর্লাম। সিপিইউ ব্যাকরণ গুলায়া ফালায়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
রোজনামচা ভালো হয়েছে। সেই সাথে আড্ডা থেকে মজার বা গুরুত্বপূর্ণ কিছু তুলে দিতেন যদি!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এসএম৩, এতো ঘটনা ঘটেছে যে ঘটনার কথা বলতে গিয়েই পোস্ট এক্কেবারে হাঁটু পর্যন্ত নামছে।
বিষয় বলতে গেলে লোকে গাল দিতে পারে। তবে আমি বুঝতে পারছি কেন একথা বলছেন আপনি। তাই খসড়া লেখার পরও ফেলে রেখেছিলাম অনেকদিন। আজ ভাবলাম এভাবেই দেই।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
মেঘ
মজা তো!
মেঘ
শোমচৌ এর দেখাদেখি আমিও শুরু করুম!
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
আপনের চাইরপাশের প্রায় সবমানুষরেই তো চিনি মনে হইতাছে...সারা পৃথিবীময়ই কি আমরা আর মামারা?
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
ফেসবুকে গেলে বেশি করে এই কথাটাই মনে হয়। সবই কি আমরা আর মামারা?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
নতুন মন্তব্য করুন