সেনাশাসনের বিরোধিতা মানে সেনাবাহিনীর বিরোধিতা নয়

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ৩১/০৮/২০০৭ - ২:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

sena o jonogonsena o jonogon

বর্তমান পৃথিবীতে সেনাশাসিত দেশ মানে অন্ধকারে থাকা দেশ। একথা বাংলাদেশের সেনাপ্রধানও মানবেন। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন যখন বর্তমান সরকারকে সেনাসমর্থিত সরকার বলেন তখন সেনাপ্রধানই সবার আগে ব্যাখ্যা দেন যে এই সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর বিশেষ কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অর্থাত্ সেনাপ্রধানও বুঝেন সেনাসংশ্লিষ্ট সরকার বর্তমান বিশ্বে একটা নিন্দনীয় ধারণা। কিন্তু এই কথা বলার মাধ্যমে সেনাপ্রধান সেনাবাহিনীকে ছোট বা ক্ষমতাহীন করে দেখানোর চেষ্টা নিশ্চয়ই করেননি। সেনাবাহিনী তার নিজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি একটি শক্তি। কিন্তু সেনাবাহিনীর যোগসূত্রে কোনো কোনো লোভী সেনাসদস্যের দেশের ক্ষমতা দখল করে সেনাশাসন জারি করা একটি নিন্দনীয় কাজ।

protibad
গণতন্ত্রের জন্য মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ। গণতন্ত্র ও নির্বাচনপদ্ধতিকে ত্রুটিমুক্ত রাখতে অনেক সংকটময় সময় পার করছে দেশ। এই পরিস্থিতিতে দেশে সেনা শাসন আসুক, এটা কেউ চায় না। সেনাপ্রধান নিজেও বলেছেন যে,তারা ক্ষমতা নিতে চান না। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর এই শুভচিন্তা, শুভবুদ্ধি অবশ্যই প্রশংসার।

dhildhil
কিন্তু সেনাশাসনকে ঘৃণা প্রদর্শন করার স্বাধীনতাকে খাটো করে দেখার কিছূ নেই। জনগণের এই দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সমান তালে একাত্মতা ঘোষণা করতে পারেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। ছাত্ররা ক্যাম্পাসে সেনাক্যাম্পকে একই দৃষ্টি থেকেই সরিয়ে নেয়ার দাবী তুলেছিল। কিন্তু এসব দাবী ও প্রতিবাদের মানে এই নয় যে ছাত্ররা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছে, বা তারা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ধ্বংস চায়।
এরকম ব্যাখ্যা যারা দেন তারা নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে ষড়যন্ত্রের গল্প ফাঁদেন। বিভেদ সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার তালে থাকেন।

সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো মানে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা নয়। সরকার ও রাষ্ট্র দুটি ভিন্ন জিনিস। একইভাবে সেনাশাসনকে প্রতিরোধ করার চেষ্টার মানে দেশের সেনাবাহিনীর অমঙ্গল আকাঙ্খা নয়। সেনাবাহিনী একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার জরুরি উপাদান। সেনাশাসন, একটি দেশের বিকাশ ও উন্নয়নের পথে বিষফোঁড়া।


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

খুবই অবাক লাগে যখন দেখি অনেক সীল-ছাপ্পরঅলা ভদ্রলোক সরকার আর রাষ্ট্রের পার্থক্য বুঝেন না। অথচ এই শিখানো হয় ক্লাস সিক্সে...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সরকারে যারা থাকেন তারা না বুঝার ভান করেন দরকারমত।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অমিত আহমেদ এর ছবি

হুম! পার্থক্য বুঝেও না বোঝার ভান করা ভদ্রলোকের সংখ্যাও কম না।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

অমিত এর ছবি

সেটাই
______ ____________________
suspended animation...

দ্রোহী এর ছবি

কেন জানিনা সবকিছু নিয়ে হতাশা বোধ করছি।


কি মাঝি? ডরাইলা?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমি মনে করি এই লেখাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি লেখা এবং ধারনা করছি এই লেখার সূত্র ধরে লেখকের কাছ থেকে আরো লেখা আসবে।

...........
যত বড় হোক সে ইন্দ্রধনু দূর আকাশে আঁকা
আমি ভালবাসি মোর ধরনীর প্রজাপতির পাখা

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আমার এই লেখাতো আর যাদের কাছে পৌঁছানো দরকার সেই পর্যন্ত পৌঁছাবে না। তবু যদি কিছু পাঠকের মাধ্যমে এই ধারণাটা বাতাসে স্পষ্ট হয়, তবে হয়তো নিজেদের অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবে পালিয়ে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা।
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

কনফুসিয়াস এর ছবি

সময়োপযোগী তো বটেই। এইটার একটা প্রিন্টাউট নিয়ে মাথামোটাদের কাছে বিলানো উচিৎ।

-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা নতুন অস্ট্রেলিয়া গঠনের সময় হইছে মনে হয়।
গ্রাম্য মোড়ল টাইপের বুদ্ধির ঢেঁকি গুলারে অনাবিষ্কৃত কোন দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া উচিত। হালারা সব কিছুতেই খালি লিংক লিস্ট দেখে। দ্বীপে গিয়া সার্ভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট প্রমাণ করুক গিয়া।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

হাসান এর ছবি

সবাই চাইছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে। বিক্ষোভ তো ছিল ক্যাম্প সরানোর জন্য, তাইলে সেখানেই পরিসমাপ্তি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দিনমজুন, হকারদের বিক্ষোভের মধ্য দিয়েই শেষ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু শিক্ষা উপদেষ্টা বাসায় কেন বারে বারে হামলা হল? ভাঙ্গচুরের সাথে সাথে কেন লুটপাট হল?

অন্যদিকে সেনা ভাইয়েরা কেন এত উত্তেজিত হয়ে আজিজ মার্কেট থেকে দলে দলে বের করে বেধড়ক পেটাল কিংবা কারফিউয়েরই বা কি প্রয়োজন ছিল?

অনেকদিন কিছু লিখি নাই, তাই পুরান কথা আবার লিখলাম।

--------------------------
My Workspace - Business Promotion Directory

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সুমন চৌধুরীর সাথে একমত,
রাস্ট্র আর সরকারের পার্থক্য বুঝাটা জরুরী

তবে যারা 'এই আন্দোলন দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে' বইলা চালাইছে তারা মনে হয় ব্যাপারটা বুঝে; কিন্তু তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে এই ভাইবা যে পাবলিক হয়ত রাস্ট্র আর সরকারের ফারাক বুঝবনা ,,, মজার কথা হইল অনেকে আসলেই বুঝেনাই

তবে মুদ্রার অন্যপিঠেও ভ্যাজাল আছে ,,, আমি খালি ভাবি আমগোর মাথামোটা ছাত্ররা কবে বুঝব যে সরকারী স্থাপনা, বিশৃঃবিদ্যালয়ের জিম, রাস্তায় গাড়ী এসব ভাংলে সরকারের না, রাস্ট্রেরই ক্ষতি হয়।

পোস্টটা ভাল হৈছে হাসি

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ছাত্ররা এসব বুঝে। বুঝে না তা নয়।
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ভাস্কর এর ছবি

একদম ঠিক জায়গায় আঙুলটা দিছেন...কিন্তু মাঝে মাঝে আমার মনে হয় বাজার দখলের যুদ্ধ থামাইতে সেনাবাহিনী আসলে কি করতে পারে? বসাইয়া বসাইয়া কমদামে ভালো চাইল খাওয়ানের চাইতে এগো দিয়া অন্য কিছু করান যায়না? সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধ হইলে তো দেশের সব সচেতন মানুষই সমরক্ষেত্রে থাকবো, তাইলে সেনাবাহিনী ক্যান বাড়তি সুবিধা পাইবো?


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ভাস্কর, আপনার এই চিন্তা/মন্তব্যটাও জরুরি। এটা পরের ধাপেই আছে। আমাদের মতো দেশে আমরা সেনাবাহিনী সাজিয়ে রাখি ঠিক বর্হিশত্রু ঠেকানোর জন্য নয়, সেই ক্ষমতা আমাদের সেনাবাহিনীর থাকা সম্ভব নয়, আর্থিক দৈন্যতার জন্যই। তিনপাশ ঘিরে থাকা একটিমাত্র রাষ্ট্রের বিপরীতে আমাদের আয়োজন খূব কম।
যুদ্ধ যদি লাগে তখন ফ্রন্ট লাইনে যেতে হবে এইসব ছাত্রদেরই।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সৌরভ এর ছবি

বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে, শুনি।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ঘন্টাটা এনে দিন, আমিই বেঁধে দিচ্ছি। যা দিন পড়েছে, এখন তো ঘন্টাওয়ালাদেরই নির্বাসন দেওয়া হচ্ছে সবার আগে!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

যারা ঘন্টা বাজায় বা যারা হুইসিল বাজায় তাদের পুরষ্কৃত করারই কথা। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও...
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

বিপ্লব রহমান এর ছবি

আমি মনে করি এই লেখাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি লেখা এবং ধারনা করছি এই লেখার সূত্র ধরে লেখকের কাছ থেকে আরো লেখা আসবে।

প্রকৃতিপ্রেমিকের সঙ্গে একমত। লেখকের দৃষ্টিভঙ্গীও বেশ পরিস্কার।

লেখা ও ছবির জন্য শোমচৌ'কে অনেক ধন্যবাদ।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ বিপ্লব রহমান।
ছবিগুলোর ধন্যবাদ ফটোগ্রাফারদের। এই ছবিগুলো নানা পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। ইন্টারনেটেও আছে। সময়ের অভাবে সবার নাম জোগাড় করতে পারিনি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

রাসেল এর ছবি

অনেক মজার ঘটনা ঘটতেছে বাংলাদেশে- একদল মানুষ প্রমাণের চেষ্টা করতেছে বুধবারের ঘটনাটা রাজনৈতিক উস্কানিতে ঘটেছে এবং এখানে কোনো শ্রমজীবি মানুষ যুক্ত নেই- বরং ছাত্ররাই এই কাজ করেছে- তারা মানে সব ছাত্র না কতিপয় নষ্ট ছাত্র এই কাজের সাথে যুক্ত-

ছাত্র রাজনীতি নিয়ে একটা এলার্জি অনেক দিন থেকেই এই বিজ্ঞাপনদাতা গোষ্ঠি আর সুশীল পত্রিকার ভেতরে আছে- একই সুর উন্নয়নের স্রোতে ডুবিয়ে মারবার পরিকল্পনাকারী আইএম এফের আছে- আর
ব্যবসায়ীরা চমৎকার বলেছে আই এম এফের প্রেসক্রিপশন মফিক চলে আমাদের জিডিপি ডাবল ডিজিট না হলেও আমাদের ইনফ্লেশন ডাবল ডিজিট ছুয়েছে- এটাও একটা সাফল্য-

এশিয়ান এনার্জি নিয়ে আবারও সামনে আসছে কিছু মানুষ- মূলত আমলা শ্রেনীর- তারা কেনো ১ বছর পরে আবারও এশিয়া এনার্জির ভুত আর এর বাতিল চুক্তিতে অবৈধ ঘোষণার চেষ্টা করছে- কেনো এই অবৈধ চুক্তিকে বাতিল না করে এটাকে সমর্থনের চেষ্টা করতেছে- আর কেনো জরুরী অবস্থা উঠছে না-
অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা এই তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের নেওয়া উচিত হয় নি নিয়েছে- এখন আরও কিছু কাজ করবে যা রাজনীতি উন্মুক্ত থাকলে প্রতিরোধ হবে- একবার সাক্ষর হয়ে গেলে এই নির্বোধেরা কোনো কারণ যাচাই না করেই চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা করবে-

আশ্চর্য লাগলো ডেইলি স্টারের সম্পাদক কিংবা উচ্চ পদের কোনো সহকারী সম্পাদক এশিয়ান এনার্জির উন্মুক্ত খননকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে

শালার দুই পয়সার ধান্দায় এরা কাকে কাকে কোথায় বেচে দিতে পারে আমি বুঝি না।

------------------------------------

আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।