১.
“বোন বা মেয়ের বাড়িতে ইফতারি পাঠানো কি ইসলামের কোনো নির্দেশ? নাকি বাংলাদেশের মানুষরা নিজেই এসব নির্দেশ বানিয়ে নিয়েছে?”
স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকে এমন এক প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন ব্রিটেনে ২য় প্রজন্মের এক বাঙালি কন্যা। প্রবাসে ২য়/৩য় প্রজন্ম সবকিছুর বৈধতা খুঁজে ধর্মগ্রন্থে। ধর্মগ্রন্থে যদি কোনো আচার বা প্রথার কথা না থাকে তবে সে প্রথার উপর তারা চালায় ধর্মের খড়গ। সে প্রথা হয় বিদআত, পরিত্যাজ্য। আমাদের মত বাঙালিত্ব ধরে রাখার সংকট তাদের নেই। তাদের সংকট আরো বেশি মুসলিম হয়ে ওঠা নিয়ে।
২.
সচলায়তনে আজ এক অন্যরকম ব্যানার দেখা গেছে। রমজানের মাস উপলক্ষে ব্যানার। রমজান অতি অবশ্যই একটি আরবি মাস ও মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও প্রথার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রশ্ন দেখা দিতেই পারে, সচলায়তনের সদস্যরা যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বড় করে দেখেন সেখানে এই ব্যানার কি বিভ্রান্তির?
ঠিক এই প্রশ্নের পাল্টা একটা জিজ্ঞাসা তৈরি হয় যে, সুদীর্ঘ সময়ের আচার-পালনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব ধর্মীয় অনুষঙ্গ কি আমাদের সংস্কৃতির একটা অংশও হয়ে যায়নি?
ধর্ম সভ্যতারই স্বাভাবিক অগ্রসরতার পথে একটি ধাপ। মুক্তমনা মানুষেরা সভ্যতার পরবর্তী এক ধাপে এসে ধর্মকে আলাদা একটা জায়গায় ছেড়ে দিয়ে এগিয়ে গেছেন আরো সামনের দিকে। সভ্যতাও এগিয়েছে তাদের হাত ধরে। কিন্তু পেছনে পড়ে থাকা মানুষ, সমাজ, দেশ ও জাতি খড়ের কুটোর মত শেষ সম্বল হিসেবে দখলদারিত্ব নিয়েছে ধর্মের। অযোগ্য সেসব মানুষের হাতে পড়ে ধর্ম আজ পৃথিবী জুড়ে আবির্ভূত হয়েছে এক আতংক হিসেবে ।
ধর্মকে হাড়-মাংস-চামড়াসহ একেবারে এভাবে পরিত্যাজ্য করে অগ্রসর মানুষেরা সরে না গেলে হয়তো পরিস্থিতি এমন দাঁড়াতো না।
৩.
একজন মোজাফফর আহমদ হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের ভোটের কথা ভেবে ক্ষমতার্জনের কৌশল হিসেবে সমাজতন্ত্রের আগে ধর্মকর্ম জুড়ে দিয়ে দলের মূলমন্ত্র তৈরি করেন। অন্যদিকে নয়া দিগন্তীয় ফরহাদ মজহার ভিড়ের মানুষের বাহবা কুড়াতে গিয়ে ধর্মের শিঙ্গা ফুঁকে শেষ পর্যন্ত তাদের গুঁটিতেই পরিণত হন। তারা রেফারেন্স হিসেবে পায় আল মাহমুদকে।
কিন্তু ভুলভাল জোড়াতালি বা পশ্চাদদ্পদদের হাততালির পথ বাদ দিলেও আরো পথ থাকে। পথ থাকে ধর্মের সামাজিক, সাংস্কৃতিক রূপকে সজ্জনসভায় জায়গা দেয়ার। এতে বোকা কাকের মত চোখ বুঁজে ধর্মের বাস্তব উপস্থিতিকে অস্তিত্বহীন ভাবার রামভুল থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ তৈরি হয়। এই ভুল আমাদের অগ্রসর মনের পূর্বসূরিরা করে এসেছেন। আদর্শের বিরোধে তারা ন্যায্য-অন্যায্যের পরিমাপ করেছেন কঠোর ভঙ্গিতে। তার ফলে সিংহভাগ মানুষ তাদের উদ্দেশ্যকে ধরতে পারেনি, আর তাদেরকে চিহ্নিত করেছে ধর্মের শত্রু হিসেবে, ধর্মহীনের দল হিসেবে। ধর্মের সবুজ ঝান্ডাকে অগ্রাহ্য করে, অবজ্ঞা করে একে অগুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায়নি। বরং নিজেরাই সবুজহীন হয়ে এখন অসহায় কুষ্ঠরোগীর মত আশ্রয় নিতে হয় ঘরের কোণায়।
৪.
ছাত্র ইউনিয়ন যদি ঈদের দিন পাড়ায় পাড়ায় ব্যান্ডসঙ্গীতের কনসার্ট করতো তাহলে এখনও দেশে কিছু কিশোর-কিশোরী থাকতো যারা লেনিন-মার্কসকে শ্রদ্ধা করতো। আর বিশাল জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের এতোটা দূরত্ব তৈরিও হতো না। আর ঈদের দিনে কনসার্ট আয়োজনের জন্য তাদের আদর্শকে তারা ভঙ্গুর করেও তুলতো এমন মনে হয় না। কারণ ঈদের দিনে ব্যান্ড কনসার্ট তো আর ধর্মীয় কোনো প্রথা উদযাপন নয়। বরং কমিউনিস্ট নেতার মৃত্যুর পর জানাজা আয়োজন অনেক বেশি ধর্মীয়।
৫.
চকবাজারে ইফতারির বিশাল বাজার বসে। ওখানে ভিড় করে যারা ইফতারি কিনতে যান তারা সবাই রোজদার বা সবাই মুসলিম এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। রোজা না রেখেও ইফতারের আয়োজনে অনেকেই অংশ নেন। ভিন্ন ধর্মের মানুষেরা বা অবিশ্বাসীরাও এই ভাজা-পোড়া খাওয়াকে ধর্মের কোনো অনুষঙ্গ হিসেবে দেখেন না। এমন অনেক মানুষকে দেখেছি আগ্রহ ভরে রমজান আর ইফতারের কথা বলতে। ঢাকায় ঈদ উপলক্ষে কাপড়ও কিনতে দেখেছি সব ধর্মের মানুষকে।
৬.
সচলায়তনের ব্যানার আমাদের বাঙালি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিন-ক্ষণের পাশাপাশি সাম্প্রতিক নানা ঘটনাকেই বিম্বিত করে। রমজান, ঈদ, দুর্গাপূজা, বৌদ্ধ পূর্ণিমা, বড়দিন এর কোনোগুলোই আমাদের সামগ্রিক অস্তিত্বের বাইরের কোনো বিষয় নয়। এসবের হয়তো ভিন্ন এক বড় পরিচয় আছে, সংযোগ রয়েছে নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের সাথে। কিন্তু সেই যোগসূত্রটাকে বড় করে দেখতে গিয়ে সমাজ-সংস্কৃতির মধ্যে বাড়তি অস্বস্তি তৈরি করে মুখ গোমড়া রাখার কি আছে? আমরা বরং আমাদের মত করে সবাইকে আলিঙ্গনে নিতে পারি, সবার উদযাপনে সমান আনন্দিত হতে পারি।
অন্যরা সংকীর্ণ হয়ে যায় বলে আমাদের উদার হতে অসুবিধা কী?
মন্তব্য
চমৎকার লেখা।
কি মাঝি? ডরাইলা?
ধন্যবাদ দ্রোহী।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ডঃ চৌধুরীর লেখা বরাবরের মতোই সুখপাঠ্য ।
তবে সুখপাঠ্য এ লেখার মুল কথার সাথে একমত হতে পারলাম না বলে দুঃখিত ।
ছোটবেলা বিকাল ৫টায় যখন টিভি প্রোগ্রাম শুরু হতো,মনে আছে প্রথমে কোরান(সপ্তাহে ৭ দিনই)তারপর কোনদিন গীতা,কোনদিন বাইবেল,কোনদিন ত্রিপিটক পাঠ হতো । বেশ ধর্মীয় সাম্যাবস্থা । সংখ্যাগুরুদের প্রাধান্য তো থাকবেই,সেই সাথে সংখ্যালঘুদের ও অস্বীকার করা হলোনা ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কোরান,বাইবেল,গীতা,ত্রিপিটক কোনটাতেই ভক্তি নেই যে নাগরিকের-রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারযন্ত্র কি তার প্রতিনিধিত্ব করেনা কিংবা এতে তার অধিকার নেই নাকি নাগরিক হতে হলে কোন একটাতে বিশ্বাসী হতেই হবে? এক্ষেত্রে প্রশন আরো এগিয়ে নেয়া যায়- একটা সম্প্রচার যন্ত্রের সুচনায় যে কোন ধর্মীয় বানী প্রচারের দরকারটাই বা কি?
যেমন রাষ্ট্র নামের একটা একেবারেই লৌকিক সংগঠনের সংবিধানের শুরুতে কেনো অলৌকিক বানী?(হোক সে বিসমিল্লাহ কিংবা অন্যকিছু)।এই অলৌকিক বানী কি কোনো শ্রীবৃদ্ধি করছে রাষ্ট্রের মুল দায়িত্ব পালনে?পরকালে কি রাষ্ট্রের নাগরিকবৃন্দ রাষ্ট্রীয় পরিচয় গলায় ঝুলিয়ে বেহেশ্ত দোযখে যাবেন?
ব্লগসাইটকে যদি ঠিক এরকম একটা প্লাটফর্ম হিসেবে দেখি তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে,রোজার ব্যানার টাংগিয়ে একটা ব্লগসাইট কি ম্যাসেজ দিতে চায় তার পাঠককে?
তাহলে সেই ব্যানারের সাথে সাথে রোজার মাহাত্ন্য বর্ননা করে পোষ্ট দেয়া হোক । একমাস ধরে এই পোষ্ট চলুক ।
তারপর বিটিভির মতো জন্মাষ্টমীর সময় শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,বৌদ্ধপুর্নিমায় গৌতম বৌদ্ধের পালা,বড় দিনে প্রভু যীশুর নাটিকা- আর নাস্তিকদের জন্য আলাদা করে আরো কোনো আয়োজন ।
এরকমই একটা সাম্যাবস্থা রচনা করা যেতেই পারে,তবে তখনো প্রশ্ন উঠবে,মানে উঠার সুযোগ থাকবে-এই সব কতোটুকু জরুরী 'সচলায়তন' এর জন্য- যারা উচচারন করতে দ্বিধা করেনা 'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য,উচচ যেথা শির'
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
সহমত, সচলটা অন্তত এসব ধর্ম-অধর্মের উর্ধ্বে থাকুক এই প্রত্যাশা। এইসব আনন্দে কেউ শরীক হতে চাইলে পোষ্ট দিক, কিন্তু ব্যানারের চেহারাটায় ধর্মীয় অনুভূতি দেয়ার কি প্রয়োজন ? তবে মোর্শেদ ভাই ("সচলায়তনে আজ এক অন্যরকম ব্যানার দেখা গেছে। রমজানের মাস উপলক্ষে ব্যানার।")ব্যানার কি ইতিমধ্যেই রমজান উপলক্ষে পরিবর্তন হয়েছিল নাকি !?
ধ্রুব হাসান। পোস্টেই আপনার প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেয়া আছে। ধর্মটা মানুষের অগ্রগতির একটা ধাপে ছিলো। এখন এটা বেদখলে পড়ে বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে।
ধর্মের মঙ্গলময় ধারণাগুলো পুন:প্রতিষ্ঠা করার জন্য এর সাথে সংযোগ স্থাপন দরকার। একে একটা নতুন পথের আলোক দেখানো দরকার।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ। ধর্ম, রাষ্ট্র ইত্যাদি আমার বোধ ও ধারণা আপনার বোধ ও ধারণার বিপরীত মেরুতে নয়, সেকথা আপনি ও আমি দুজনেই জানি। তবে প্রয়োগের কৌশলে পার্থক্যটা হতেই পারে। আমি মনে করি ভিন্ন একটা চমত্কার কৌশল আমরা প্রাচ্যে ব্যবহার করিনি। সেটা করার সময় হয়েছে। আর আপনার মন্তব্যে করা কথাগুলোর বিষয়ে আমার অনুভূতি বা মতামত তুলে দিলাম মূল লেখা থেকে:
কিন্তু ভুলভাল জোড়াতালি বা পশ্চাদদ্পদদের হাততালির পথ বাদ দিলেও আরো পথ থাকে। পথ থাকে ধর্মের সামাজিক, সাংস্কৃতিক রূপকে সজ্জনসভায় জায়গা দেয়ার। এতে বোকা কাকের মত চোখ বুঁজে ধর্মের বাস্তব উপস্থিতিকে অস্তিত্বহীন ভাবার রামভুল থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ তৈরি হয়। এই ভুল আমাদের অগ্রসর মনের পূর্বসূরিরা করে এসেছেন। আদর্শের বিরোধে তারা ন্যায্য-অন্যায্যের পরিমাপ করেছেন কঠোর ভঙ্গিতে। তার ফলে সিংহভাগ মানুষ তাদের উদ্দেশ্যকে ধরতে পারেনি, আর তাদেরকে চিহ্নিত করেছে ধর্মের শত্রু হিসেবে, ধর্মহীনের দল হিসেবে। ধর্মের সবুজ ঝান্ডাকে অগ্রাহ্য করে, অবজ্ঞা করে একে অগুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায়নি। বরং নিজেরাই সবুজহীন হয়ে এখন অসহায় কুষ্ঠরোগীর মত আশ্রয় নিতে হয় ঘরের কোণায়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
মুসলমানদের কথা বাদই দিলাম। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও মুসলমানদের এই একটা কর্মকান্ডকেই (অর্থাৎ রোজা পালন) বেশ ভাল চোখে দেখে। তারা এর মাহাত্ন হয়তো বোঝেনা বা বুঝলেও নিজের মত করে বোঝে। অন্তত পশ্চিমে এসে এটাই ধারণা হয়েছে।
রমজান উপলক্ষে সারা মাস নয়, এক-দুই দিনের জন্য হলেও ব্যানার পরিবর্তন করলে কারো অনুভূতিতে খুব আঘাত লাগবে বলে মনে হয় না। তবে হ্যাঁ, বিতর্কের সুযোগ থাকলে সেদিকে অবশ্যই না যাওয়া ভাল।
কথাটা অতি জেনারেলাইজ করা হল মনে হচ্ছে। প্রবাসের প্রজন্ম তো ধর্মীয় বিষয়ে ভুলভাল শিখে বড় হওয়ার কথা নয়। বরং বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশেই ধর্মের শাখা-প্রশাখার উৎপত্তি ও বিস্তার হয়েছে বেশী। (উদাহরণস্বরুপ বলা যায় মিলাদ এবং শবে বরাতের কথা)। ধর্মের পালন নয়, ধর্মানুভূতিই সেখানে মুখ্য। প্রবাসে দেখছি যার উল্টোটা।
প্রকৃতিপ্রেমিক, ধন্যবাদ। আপনার একটা কথা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করি। অনেক পাঠকের অনেক মন্তব্য রয়েছে।
আপনি লিখেছেন:
কথাটা অতি জেনারেলাইজ করা হল মনে হচ্ছে।
প্রবাসে নতুন প্রজন্ম সব বিষয়েই ফিরে তাকায় ধর্মগ্রন্থে। যেমন, ভোট দেয়া কি ইসলামিক? গণতন্ত্র কি ধর্মসম্মত?
আমার মন্তব্যে সে কথাটাই এসেছে। অতি জেনারালাইজ? না, তবে জেনারালাইজেশন তো বটেই। না হলে এক লাইনে এত বড় বিষয়টাকে ধরাবো কি করে?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
যাক সচলায়তনও সংযম ও আত্নশুদ্ধির পথে আসল! সবাই দ্বিনের পথে এসে গেছে। খালি আমিই রইলাম মুরতাদ হয়ে।
ছোটকাল থেকে শুনছি সময় যত যাবে মানুষ আল্লাকে ভুলে যাবে। এইভাবে দুনিয়ার সবাই যখন আল্লাকে ভুলে যাবে, তখন হাজার হাজার বছর শিঙ্গা নিয়ে বসে থাকা কেউ একজন শিঙ্গা ফু দিবে। সাথে সাথে শুরু হবে কেয়ামত। মোল্লারা বলত যে হারে মানুষ আল্লা খোদা ভুলে যাচ্ছে তাতে কেয়ামতের আর বেশি দেরী নাই।
তবে এখন যে হারে টুপি, হেজাব, বোরখা, নামাজ ও রোযার জোয়ার শুরু হয়েছে তাতে আমি নিশ্চিত কেয়ামতের এখন অনেক দেরী।
অনলাইন রাইটারস কমুনিটিও এখন 'মাহে রমযানের ডাক'র ব্যানার দেয়! খুব আহ্লাদ লাগতেছে।
আজিজে দেখতে হবে মাহে রমযান উপলক্ষে লিটল ম্যগাজিনগুলি কেমন বিশেষ সংখ্যা বের করল।
-------------------------------------------------
'অত্তাহি অত্তনো নাথো, কোহিনাথো পরোসিয়া'
নিজেই নিজের প্রভু, অন্য কোন প্রভুর প্রয়োজন নাই।
এমন একটা বিষয় দেখতে বা শুনতে খারাপ লাগতো না অচেনা।
কাটাবন মসজিদের মাইকে বলা হচ্ছে আপনারা রমজান মাসে আমাদের ইসলামী প্রকাশনার বই কেনেন, শাহবাগ থেকে লিটল ম্যাগাজিন কিনবেন না।
এই লেখাটি আপনি পড়েছেন সেজন্য ধন্যবাদ। কিন্তু পাঠক তার মতো করেই যেকেনো লেখার অর্থ তৈরি করে এটা এখনও আমার বিস্ময় জাগায়। এই পোস্টে কোথাও মাহে রমজানের ডাক দিতে বলা হয়নি বা এরকম কোনো ধারণাও দেয়া হয়নি।
পোস্টের ভেতরে দেখূন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে ঈদ উপলক্ষে ব্যান্ড কনসার্ট আয়োজনের কৌশলের কথা বলা হয়েছে।
এই কৌশলে কি সুফল বা কুফল হতে পারতো তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
একজন মডুরাম অলরেডি থ্রেট দিয়ে গেছেন এ বিষয়ে ত্যানা না প্যাচানোর জন্য। তারপরও রিস্ক নিয়ে দুইটা কথা বলি। কারণ, মনে হচ্ছে মন্তব্যে আমি যেটা বলতে চেয়েছি সেটা পরিস্কার হয় নাই।
আপনাকেও ধন্যবাদ বিগ সি।
"মাহে রমযানের ডাক'র ব্যানার" বলতে আমি মিন করেছি রমযানের ব্যানার। আর আপনার ২ নং পয়েন্ট পড়ে আমার মনে হল আপনিও সায় দিচ্ছেন ব্যাপারটিতে। সেটা আপনি করতেই পারেন আর আমিও এর বিপক্ষে মত দিতে পারি।
অমিতের সাথে আমি এই ব্যপারে একমত, রামযানের না দিয়ে ঈদের ব্যানার দিলে আরো সুন্দর হবে।
সাম্প্রদায়িকতায় কলুষিত আধা বর্বর সমাজের ধর্মীয় ভন্ডামীর হুজুগ। আর সেটা নিয়ে সকল ধরণের মিডিয়ার জিগিরে অতীষ্ট হয়ে সচলায়তনে এসে, এখানেও ব্যানার দেখে একটু তিক্ত মনে আপনার পোস্টে মন্তব্য করা। আশাকরি কষ্ট পান নি।
মাহে রমযানের ডাক নিয়ে গতকালের একটা তাজা ঘটনা বলি। যেটার পর মনটা আরো বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। অফিস শেষে বাসে করে বাসায় ফিরছি। এক মোড়ে মসজিদের জন্য মাইক বাজিয়ে চাঁদা তোলা হয়। একজন রাস্তায় দাড়িয়ে মাইকে ওয়াজ করছে - রোযা রাইখা তারাবি নামায না পড়া আর চাড়ালের উপাস এক জিনিস।
-------------------------------------------------
'অত্তাহি অত্তনো নাথো, কোহিনাথো পরোসিয়া'
নিজেই নিজের প্রভু, অন্য কোন প্রভুর প্রয়োজন নাই।
ভাল লেখছেন। ধর্ম-নিরপেক্ষতা কইতে দেশের আঁতেল সমাজ আর তাগো পাতি-ফলোয়ারেরা আসলে ধর্ম-বিদ্বেষ বা ধর্ম-অবজ্ঞাই বুঝায়। এই কনফিউশানটা কেমনে তৈরী হইছে, আমি সেইটাই বুইঝা পাইনা।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ধর্মের পক্ষে বিপক্ষে সাধারণত আমি কোন চরম অবস্থানে যাই না। ব্যক্তিগত জীবনে আমার ঈমানের বালতির তলা বলে কিছু নাই। তবে একজন ধার্মিকের ধর্মানূভুতিকে আমি সম্মান করি। তার ধর্মপালনে আমি কখনো কমপ্লেইন করার মত কিছু পাই না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাকে কনভিন্স করতে না আসছে।আমি যদি মনের আনন্দে ইফতার খেতে পারি, ঈদের দিনে আনন্দ করতে পারি, পত্রিকার ঈদ সংখ্যাগুলার জন্য অপেক্ষা করতে পারি, তাহলে একটা নির্দোষ ব্যানার আর এমন কি করল !! বরং পূজা, ক্রিসমাস, বৌদ্ধ পূর্নিমা উপলক্ষেও ব্যানার হোক, খারাপ কি। সচলায়তন কর্তৃপক্ষ ঐ ব্যানারের সংগে সহমত প্রকাশ করতে না বললেই হল। তবে আমার মনে হয় ঈদ উপলক্ষে ব্যানার আর মাহে রমজানের ডাক দিয়ে করা ব্যানারে সুস্পষ্ট চরিত্রগত পার্থক্য আছে। আনন্দ সবার জন্য, কিন্তু নিয়মনীতি কিন্তু তা না।
______ ____________________
suspended animation...
অমিতের এই মন্তব্যের সাথে একমত।
এর সাথে আরো একটা বিষয় যোগ করতে চেয়েছি এই পোস্টে। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমরা যে বৃহত্ জনগোষ্ঠীর সাথে সংযোগ হারালাম তা বোধহয় তাদের আচার-অনুষ্ঠানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেই।
ধর্ম কিন্তু সে তুলনায় অনেক কৌশলী। এলাকার সংস্কৃতিকে কিন্তু ধর্ম মেনে নিয়েছিলো প্রাথমিকভাবে। ইন্দোনেশিয়াতে দেখেছি লোকজন ঢোল বাজিয়ে রোজা রাখার আহ্বান জানায়। বাংলাদেশে সম্ভব নয়।
আরবের বেদুইনরা উলুধ্বনি দেয়।
এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। ধর্মের সাথে সঙ্গতি না থাকলেও এগুলো ধর্মে উদারভাবে দেখা হয়েছে। তাতে তাদের জয়ই হয়েছে শেষমেশ।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
হাসান মোরশেদের মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ধ্রুব হাসানকেও।
আসলে তিনি কি চাইছেন তর্ক শুরু করতে? তা না হলে তো তার কাছ থেকে এরকম মন্তব্য আশা করা যায় না।
ভিন্ন ফরমেট থেকে চিন্তা করুন।
বাংলাদেশ যখন ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশ গ্রহন করে তখন আমাদের দেশের টিভি, রেডিও বিশেষ চাঙ্ক বরাদ্দ করে, পত্রপত্রিকাগুলো বড় বড় ব্যানার হেডিং করে, খেলার পাতা জুড়ে ক্রিকেটারদের ছবি, ক্রিকেট নিয়ে বিশাল আয়োজন, রঙিন কড়চা। কিন্তু কেন?
বাংলাদেশের সব মানুষ কি ক্রিকেটকে ভালবাসে, ক্রিকেটর ভক্ত, না ক্রিকেট খেলে? সেখানে ফুটবল, হকি, হাডুডু, ধারিয়াবান্দা, দাবা, কেরাম, ব্যাডমিন্ট এমনকি লুডু খেলার প্রচুর ভক্ত ও খেলোয়াড় রয়েছে। তাদেরতো তখন প্রাধান্য দেয়া হয় না।
ক্রিকেটকে দেয়া হয় কেন?
আমার মনে হয় কারনটা হাসান ভাইও জানেন। ভাল করেই জানেন। শুধু মাত্র ভিন্ন মতের 'জোর' কেমন তা জানার জন্যই একটু খোঁচা দেয়া এই আর কি।
বিশাল এক ক্রিকেট ভক্তদের ডিমান্ডকে অস্বীকার করা যায় না। এই অংশের চাহিদা থেকেই এটা করা হয়।
সারা বছরের হিসাব থেকে দেখবেন বাংলাদেশের পত্রিকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্রিকেটের খবর ছেপেছে। তার কারনও কিন্তু এই চাহিদা। বৃহত্তর জনগোষ্ঠি। তাদের ভাললাগা ভালবাসার অনুভূতির ফলালফল এই সংখ্যাধিক্য।
এখানে পত্রিকা, টিভি, রেডিও বা যে কোন প্রচার মাধ্যমকে কিন্তু ধর্মের ভয় দেখানো হয়নি বা কোন পক্ষ থেকে জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয় নি যে ক্রিকেট নিয়েই তোমাদের বেশি সংবাদ ছাপতে হবে, রঙিন সংখ্যা বের করতে হবে। তার পরেও কর্তৃপক্ষ সে কাজটি করেছে। কি জন্য করেছে ? কারন বৃহত্তর সমর্থক গোষ্ঠি। বৃহত্তর অংশের চাহিদাকে অস্বীকার করার কোন যৌক্তিক কারন থাকতে পারে না। তা করলে নিজেদেরকই ঠকতে হবে।
ঠিক তেমনি একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠি যেখানে মুসলমান তো তাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তাদের অনুভূতিগুলোকে সম্মান দেখাতে হবে এটাই 'চাহিদা'। তাকে অস্বীকার করা যায় না।
সে প্লাটফরম থেকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির চাহিদা রক্ষায় 'সচলায়তন' ভূমিকা পালন করলে তা কোন ভাবেই মুক্ত চিন্তা, মুক্ত মত এর বিরুদ্ধে যায় না। বরং সহায়কই হয়।
মুক্ত চিন্তার নামে যদি বৃহত্তর জনগোষ্ঠির চাহিদাকে অস্বীকার করতে শিখায় তা হলে কিন্তু সে মুক্ত চিন্তা নিয়ে আরো মুক্তভাবে আলোচনা দরকার।
উদ্ধৃতি
............ কিন্তু প্রশ্ন হলো কোরান,বাইবেল,গীতা,ত্রিপিটক কোনটাতেই ভক্তি নেই যে নাগরিকের-রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারযন্ত্র কি তার প্রতিনিধিত্ব করেনা কিংবা এতে তার অধিকার নেই নাকি নাগরিক হতে হলে কোন একটাতে বিশ্বাসী হতেই হবে? এক্ষেত্রে প্রশন আরো এগিয়ে নেয়া যায়- একটা সম্প্রচার যন্ত্রের সুচনায় যে কোন ধর্মীয় বানী প্রচারের দরকারটাই বা কি?.............
প্রচার মাধ্যম চলে কিন্তু চাহিদার উপর, তাকে চাহিদা পূরন করে টিকে থাকতে হবে। এখন হাসান ভাই আপনিই বলেন কিছু সংখ্যক লোক যাদের ধর্মে বিশ্বাস নেই তাদের চাহিদাকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে, বৃহদাংশ যারা ধর্মে বিশ্বাসী তাদের চাহিদাকে অবমূল্যায়ন করা হয়, তাও কি যৌক্তিক বা নৈতিকভাবে ঠিক?
ঠিক সেখানে থেকেই, বহত্তর ধর্মে বিশ্বাষী মানুষদের অনুভূতিকে, চাহিদাকে সম্মান জানানোর জন্য প্রচার যন্ত্রের সূচনায় ধর্মীয় বানী শোনানো দরকার।
সচলায়তন একটি প্রচার মাধ্যম। আপনার মত, আমার মত প্রচার করে। তো সেও তার পাঠকের বিশ্বাস চাহিদাকে সম্মান জানাবে এটাই স্বাভাবিক।
লেখকে ধন্যবাদ না দিলেও চলবে।
- রেনেসা
ধর্মে বিশ্বাষী, অনুভূতি বাহ বহুত খুব।
সংবিধানে বিসমিল্লা লাগানের যুক্তি হিসাবে জিয়াউর রহমানের অনুসারিরা রেনেসা ছাবের মত এরকম কিছু একটা বলে।
তাইতো, রাষ্ট্রই যেখানে অনবরত শয়তানের থেকে পরিত্রান চেয়ে আল্লার কাছে আত্নসমর্পন করে, সেখানে পেপার, ব্লগ সবখানে শয়তান খেদানোর মন্ত্র জপা উচিত।
-------------------------------------------------
'অত্তাহি অত্তনো নাথো, কোহিনাথো পরোসিয়া'
নিজেই নিজের প্রভু, অন্য কোন প্রভুর প্রয়োজন নাই।
অচেনা, ঠিকাছে।
তবে এরপরও কথা থাকে। আমরা আসলে ধর্তব্যেই আনি না যে আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম ঢুকে গেছে। আমরা আসলে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নই।
কিন্তু কেউ কি এই ত্রিশংকু অবস্থা থেকে আর মুক্তি এনে দিতে পারবেন? -৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া একটা উপায় কিন্তু যখন দেখা যাবে ইসলাম নেই তখন দেশে একটা বিরাট গোলযোগ তো হবেই!
তাই নিজেরা আলাদা হয়ে কোণায় ঘাপটি মেরে না থেকে জাতিকে কি করে এই ঘেরাটোপ থেকে বের করা যায় তার কথা ভাবা দরকার।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
দীর্ঘ মন্তব্য করেছেন রেনেসা এবং তার মত করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকে আলো ফেলেছেন। তাকে ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ভালো লিখেছেন। অমিতের মন্তব্যের সাথে একমত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
শোমচৌকে ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে আলোকপাত করার জন্যে। ধর্ম আসলে আমাদের সংস্কৃতিরই অঙ হয়ে গেছে। এটি উন্নত, অনুন্নত সব বিশ্বের জন্যই প্রযোজ্য। এর পালন বা না পালন কাউকে বেশী ধার্মিক বা ধর্মবিদ্বেষী করে তোলে না। এর উদ্ধৃতিও তাই অন্য ধর্ম/ধর্মহীনকে ছোট করেনা।
একটু পশ্চিমা দেশগুলোর কথাই বলি। জার্মানীতে ঐতিহাসিকভাবে হাজার হাজার চার্চ রয়েছে। আমি যেহেতু তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানী অন্চলে থাকি দেখতে পাই এখানকার অধিকাংশ লোকই চার্চে যায়না (হয়ত জন্ম, মৃত্যু, বিয়ের সময় শুধু)। আমাদের দেশেও এমন লোক রয়েছে কাজেই তাদের ধর্মহীন বলা যায় কিনা সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু ঈস্টার, খ্রীস্টমাস প্রভৃতি আনুষ্ঠানিকতায় তারা কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। ঈস্টারের ডিম নিয়ে এত মাতামাতি - এর ঐতিহাসিক পটভূমি হচ্ছে লেন্টের চল্লিশ দিনের উপবাসের সময় ডিম খাওয়া নিশিদ্ধ ছিল। তাই কৃষকরা ডিমগুলোকে শ্ক্ত করে সিদ্ধ করে সংরক্ষন করত। এখনকার ঈস্টার উদযাপনকারী হয়ত ডিমের সাথে এই ধর্মের সংস্লিস্টতার কথা জানেনা কিন্তু তাদের পালনেও বাঁধা নেই।
শোমচৌ'র প্রথম প্যারাটি খুবই গুরুত্বপুর্ন। এটি বোঝায় পৃথিবীতে ধার্মিক মৌলবাদের উৎপত্তিটি কোথায়। যখন লোকজন এই সাংস্কৃতিক বিবর্তনগুলো উপেক্ষা করে শুধু ধর্মগ্রন্থ আঁকড়ে ধরতে চায় থাকে তখন শুরু হয় যতসব সমস্যা। হাজার বছরের আগের আচার/বাস্তবতা আক্ষরিক অর্থে প্রয়োগ করে তারা তাদের ইউটোপিয়া খোঁজে। এটি পুথিভিত্তিক ধর্মের অসারতা। তাই রসুল পশু (তৎকালীন আমলে পশুই ছিল মূল্যবান সম্পদ) কোরবানী করেছেন বলেই আমাদেরও খুব মূল্যবান একটি জিনিষ বিলিয়ে দেয়ার বদলে পশুই কোরবানী করতে হবে এমন ধারনা হয়। উৎসব করে গরু খাওয়া যে আমাদের সংস্কৃতির অংগ তা আমরা স্বীকার করি না। না বুঝেই আমরা অনেক কিছু করি তার পরে একটি ব্যখ্যা দেই।
আমিও একমত। কাজেই তাদের উদ্ধৃতি বা না উদ্ধৃতিতে তেমন কিছু আসে যায়না। সমাজের কথা বলতে গেলে ধর্ম আসবেই। সবাই তাদের প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীন। এবং অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটির কাছে আমার প্রত্যাশা ধর্ম/সংস্কৃতির ব্যাল্যান্স্ড প্রতিফলনের পাশাপাশি বিপ্লবী চিন্তাধারারও সহাবস্থান। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতাকে (সংঙায়ন দরকার) সমর্থন করি মানেই উন্নত কোন প্রজাতি হনুরে এবং ধর্মের উদ্ধৃতি হলেই নাকটা নীচু হয়ে গেল টাইপের চিন্তাধারাও কাম্য নয়।
***************************************
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
রেজওয়ান, আপনার মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার মতামত প্রকাশ করছে যে সমাজের বাকী সবার সাথে কতটা সংশ্লিষ্ট থেকে আপনি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে চান। আপনার ধারণা ও পন্থাটা আমার পছন্দের। আমার মনে হয় এভাবেই বেশি সফলতা সম্ভব।
সমাজকে মাড়িয়ে চলে গেলে আর কি সমাজের উপকারের উপায় খোলা থাকে?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
রোজার কারনে ব্যনারটা আমার মনে হয়েছে সিম্পলী রোজা নামক প্রথাটাকে একনলেজ করা। ধর্মপালন কিংবা অন্ধধর্মভীতি নয়। একইভাবে ঈদ, বড়দিন কিংবা পুজা উপলক্ষ্যে ব্যনার করাটাকেও আমি ভিন্ন হিসেবে দেখি না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
রেনেসাঁর বৃহদাংশতোষণ তত্ত্ব সচলায়তন সম্ভবত এনডোর্স করেনা। তিনি যেভাবে এটাকে গয়রহ প্রচার মাধ্যম বলে যুক্তি দিলেন, সেটাও খুব একটা বাস্তবতাসম্মত নয়।
সচলায়তনে রমজান উপলক্ষে ব্যানার এসেছে বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি উপকরণকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যেই। টানা একমাস ধরে ধর্মীয় বাতাবরণে সচলকে ঢেকে রাখার কোন কথা কোথাও বলা হয়নি। একইভাবে পরবর্তীতে ব্যানারে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসবকে পরিবেশন করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ধর্মীয় নয়, সাংস্কৃতিক উৎসব। আশা করি এই পার্থক্যটুকুর মূল্য দেবেন সবাই।
হাঁটুপানির জলদস্যু
অবশ্যই। টানা একমাস এক ব্যানার দেখতে হবে কেন? আমরা তো আর নিয়ম মেনে ধর্ম উদযাপন করছি না।
সাংস্কৃতিক উত্সব? হুম, ওরা বলুক না ধর্মীয় উত্সব। আমরা সংস্কৃতিই মনে করি একে। ধর্ম যে গায়ের জোরে কত ধর্ম-নিরপেক্ষ সাংস্কৃতিক উপাদানকে (হজ্জ্ব, ক্রিসমাস কোনটা না) ধর্ম-কর্মের ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়েছে তা কি আমরা জানি না?
আমাদের সমাজ-সংস্কৃতিকে যার চল আছে তার মালিকানা দাবী আমরা করবো। ধর্মের ব্যানার থেকে তাকে বের করে নিয়ে আসার কৌশলও করবো। হুম!
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
মাহবুব ভাইয়ের মতের সাথে একমত। এতবড়/(ছোট) একটি বিষয়কে অস্বীকার করার উপায় নেই। আর এই স্বীকার মানেই এই নয় যে আমি এই মত প্রচার করছি। বা অন্যকে বিশ্বাস করতে বলছি।
ধর্মের সকল আচারকেই আমরা কেন যে এখনো ধর্মীয় দৃস্টি কোন থেকে দেখি তা বুঝি না। এটাকে একটি সামাজিক বন্ধন হিসাবে দেখলে সমস্যা কিছু কেটে যায় বলেই আমার বিশ্বাস।
এরকম ভাবা যায় কিনা দেখুন।
রোজা বা ঈদের কী কোন সামাজিক মূল্য নেই আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়।
যদি থেকে থাকে তাহলে তাকে স্বীকার করা মানেই মুক্ত চিন্তার বিপরীত কিছু না।
সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায়
বিষয়টা নিয়ে ধর্ম নিরেপেক্ষতা আর প্রগতিশীলতা এনে জটিল না করে এভাবে বলা যায় কিনা দেখি -
রোজার মাস হলো বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ। এই বিষয়ে পুরো দেশের অংশগ্রহন আছে। যেমন আছে ধর্ম বিশ্বাসীদের কর্মকান্ড - তেমনি আছে ঈদসংখ্যায় লেখা ছাপানোর জন্যে ব্যস্ততা।
সাধারনের মাঝে থাকতে হলে - সাধারন ভাবেই সমাজটাকে দেখা ভাল।
কানাডায় এসে একটা কথা শিখেছি -
ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি। সকল মতপথকেই সচল এবং অবাধ ভাবে প্রবাহিত করার মধ্যেই সমাজের মহত্ব প্রকাশ পায়।
রোজার ব্যানার তাই সাধারনের সাথেই একাত্বতার অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?
বাংলাদেশের ৯৯.৯৯% মানুষ গভীর ধর্মভীরু হলেও সচলায়তনে ধর্ম/ধর্মাচার/ধর্ম-ব্যক্তিত্ব বিষয়ক প্রচার বা স্বীকৃতি বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত আপত্তি থাকবে। উৎসব হলে হয়তো কিঞ্চিত ছাড় দেওয়া যেতে পারে, তাও একাধিক ভাবনার পরে।
সচলায়নে পপুলার ডিমান্ড ক্যাটার করার প্রয়োজনীয়তা কি ছিল কখনও? হাজারটা মানুষ বিশ্বাস করে বলেই যদি ধর্মের স্বীকৃতি দিতে হয় তাহলে বিপদ। যে ধর্ম যুক্তি আর বিজ্ঞানকে সর্বাগ্রে নির্বাসিত করে তাকে মাথায় করে রাখার চেষ্টায় মত দেওয়া কঠিন।
এ বিষয়ে কেউ ত্যানা না প্যাঁচালেই মঙ্গল..
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
একমত। যুক্তি বিসর্জন দিয়ে হাজারটা অপবিশ্বাসের কাছে নতি স্বীকার করে “পপুলার” হওয়ার বাসনা থাকলে আমিও সচলায়তনে লিখতে চাইব না।
======================
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
ঝাঁকি খাওয়ার মত উক্তি। লেখাটা পড়লাম। সময় করে মন্তব্যগুলো দেখবো। খুব ভাল লাগলো।
পুরুজিতদা,
এরেকটু ডিটেলস নিয়ে লিখলে ভালো রিডিং মেটেরিয়াল হতো। লিখবেন কি?
দামী কথা বললা, পুরু। আমারো একমত। একটু বিষদে বলো।
রমজান,ঈদ,পূজা,ক্রিসমাস এগুলা তো সাংস্কৃতিক ঘটনাই। ধর্ম জিনিসটারে প্রতিষ্ঠাণ ইতিমধ্যেই এতবেশী আকামে ব্যাবহার কইরা ফালাইছে যে তার "প্রাতিষ্ঠাণিক চেহারা" রীতিমতো একটা আতঙ্কের বিষয় হইয়া দাড়াইছে। ব্যানার জিনিসটা কোন না কোনভাবে বিজ্ঞাপনের ভ্রুণ ধারণ করে। এইজন্য সেইখানে "ধর্ম" জিনিসটার প্রাতিষ্ঠানিক রেফারেন্স খুব বিপজ্জনক। সামাজিক মিলনোৎসব অর্থে ঈদ,পূজা, বড়দিন,পূর্ণিমা বা বিজুতে শুভেচ্ছা ঠিকাছে।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন