ফিল কনার্স একজন আবহাওয়াবিদ, পিটসবার্গের চ্যানেল TV9 এর ওয়েদার ব্রডকাস্টার হিসাবে কাজ করে। নিজের কাজটা সে করে ভালোই, রাস্তায় লোকজন তাকে দেখে ফিরেও তাকায়। তবে টিভি চ্যানেলে কাজ করার জন্য, অথবা হতেও পারে তার ধরনটাই এমন – একটু বেশিই আত্মকেন্দ্রিক আর হামবড়া স্বভাবের ফিল। নিজের ভালোটা খেয়াল করে চলে, আশেপাশের লোকজনকে গোনায়ই ধরেনা। এমনকি নিজের ক্যামেরাম্যান ল্যারির সাথেও তার আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক, ঠিকভাবে খোঁজও নেয়না সে কেমন আছে। এই ফিল কনার্স হলো “গ্রাউন্ডহগ ডে” ছবির মূল চরিত্র।
ফেব্রুয়ারির এক ঠাণ্ডা সকালে দিনের খবরে নিজের আবহাওয়া বার্তাটুকু বলা শেষ করে ফিল। আজ তার মেজাজটা একটু বেশিই চড়া, কারণ কাল ফেব্রুয়ারির দুই তারিখ আর তাকে যেতে হবে পাশের শহর পাঙ্কশাটোনি-তে বাৎসরিক “গ্রাউন্ডহগ উৎসব” কাভার করতে। এই উৎসবটা মোটের উপর একটা লোকরীতির মতন – একটা বাক্স থেকে বের করে আনা হয় একটা গ্রাউন্ডহগকে (এক ধরনের স্কুইরেল বা বেজি), সে ইতিউতি জুলজুল করে তাকিয়ে উৎসবের উদ্যোক্তাদের কানে কানে বলে দেয় এইবারের শীত কি এখনই ফুরোচ্ছে নাকি সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে ঠাণ্ডা আরো ছয়টি সপ্তাহ, যার পরে আসবে বসন্ত। আঞ্চলিক ট্র্যাডিশান, আর কিছুই না। তবু পেনসিলভানিয়ার নানা প্রান্ত থেকে লোকেরা আসে এই গ্রাউন্ডহগের ওয়েদার ফোরকাস্ট দেখতে, আর দিনটাও সরকারি ছুটি। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই উৎসবে গ্রাউন্ডহগের পূর্বাভাস মিলে যায় প্রতিবারই।
গত তিন বছর ধরে এই উৎসব কাভার করছে ফিল, আর পুরো ব্যাপারটাই তার কাছে একটা ধাপ্পাবাজি মনে হয়– একটা গ্রাউন্ডহগ, সে আবার ওয়েদার কি বলবে! পাবলিক ডিমান্ড বলে কথা, ফিলকেও তাই টানা তিন বছর এই জিনিস কাভার করতে হচ্ছে, এই নিয়ে চার বছর হবে।
উৎসবের আগের দিন রওনা হয় ফিল। ফেব্রুয়ারির হাড় জমানো ঠাণ্ডায় নিস্তরঙ্গ ছোট শহর পাঙ্কশাটোনি তার একদমই পছন্দ নয়, তাই রাতটা হোটলে কাটিয়ে পরদিন রিপোর্টিং করে দিনে দিনেই পিটসবার্গ ফিরে আসার ইচ্ছা তার। ফিলের সঙ্গী ক্যামেরাম্যান ল্যারি আর ওদের প্রোডিউসার রিটা। রিটা নতুন প্রোডিউসার- সুন্দরী, মার্জিত, সবার খেয়াল রেখে চলে; ঠিক যেন ফিলের বিপরীত চরিত্র। শুরু থেকে তাই রিটার সাথে ঝগড়া লেগেই থাকে ফিলের।
গ্রাউন্ডহগ ডেতে হোটেলের বেডসাইড টেবিলে রাখা রেডিও-ঘড়ির ঠিক ছয়টায় ঘুম ভাঙ্গে ফিলের। রেডিওতে বেজে ওঠে গান, আর ঘোষকরা সবাইকে মনে করিয়ে দেন - “উঠে পড়ুন সবাই! ইটস গ্রাউন্ডহগ ডে!” ফিল যথারীতি তৈরি হয়ে হোটেল থেকে বের হয়, গ্রাউন্ডহগ ডের ওয়েদার ফোরকাস্ট নিয়ে লাইভ নিউজ করে, যেখানে গ্রাউন্ডহগ বলে দেয় যে শীত থাকবে আরো ছয় সপ্তাহ। ঝামেলা লাগে ফিরে যাবার সময়, বিকেলের তুষার ঝড়ে পাঙ্কশাটোনি থেকে পিটসবার্গ ফেরত যাবার সব রাস্তাই বন্ধ। ফিল, রিটা আর ল্যারিকেও তাই ফিরে আসতে হয় হোটেলে; ফিলের নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও।
পরদিন সকালে বেডসাইড টেবিলে রাখা রেডিও-ঘড়ির ঠিক ছয়টায় ঘুম ভাঙ্গে ফিলের। রেডিওতে বেজে ওঠে সেই একই গান, আর ঘোষকরা সবাইকে মনে করিয়ে দেন - “উঠে পড়ুন সবাই! ইটস গ্রাউন্ডহগ ডে!” ভাবছেন আমি ভুল করে আগের দিনের কথা আবার লিখলাম কেন? ফিল ঘুম থেকে উঠেও তাই মনে করে, ভাবে রেডিওতে ভুল করে আগের দিনের প্রোগ্রামটাই চলছে। কিন্তু বাইরে বের হয়ে ফিল দেখে ঠিক গতকাল, মানে গ্রাউন্ডহগ ডেই যেন আজকের দিনটা - সবাই দলে দলে গ্রাউন্ডহগের ফোরকাস্ট দেখতে যাচ্ছে, রেস্টুরেন্টের মালিক ঠিক গতকালের মতন জিজ্ঞেস করছে ঘুম কেমন হলো, বের হয়ে পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হচ্ছে, রাস্তার এক ভিক্ষুক শীতে কাঁপছে; অথচ এই সবগুলো ঘটনাই গতকাল ঘটেছিলো! সবার কাছেই আজ গ্রাউন্ডহগ ডে, শুধু ফিল জানে গতকালই সে পার করেছে দিনটা, আর সবকিছুই মনে আছে স্পষ্ট। এর পর থেকে প্রতিদিনই ফিল গ্রাউন্ডহগ ডেতেই জেগে ওঠে। “টাইম লুপ” এ পরে যাওয়া ফিল কনার্সের কাহিনী নিয়েই গ্রাউন্ডহগ ডে ছবির বাকি ঘটনা।
যেহেতু এটা বেশ আগের ছবি (১৯৯৩), ধরে নিচ্ছি অনেকেই দেখেছেন। ফ্যান্টাসি-রোমান্টিক-কমেডি আমার প্রিয় তিন ধরনের ছবি, আর এই ছবিটায় তার সবগুলোই আছে মিলেমিশে। যারা এধরনের ছবি পছন্দ করেন, দেখে ফেলতে পারেন চট করে। ফিল চরিত্রে 'লস্ট ইন ট্রান্সলেশান' খ্যাত বিল মারের চমৎকার অভিনয়, সংলাপের প্রখরতা আর রসবোধ - তৈরি করে অনবদ্য এক মিশেল। রিটার চরিত্রে অ্যান্ডি ম্যাকডয়েলও উৎরে গেছেন ভালোভাবেই, পার্শ্বচরিত্রে থাকা সবাইকেই মনে হয়েছে প্রাণবন্ত আর সহজাত। পরিচালক হ্যারল্ড রামিসের ক্যারিয়ারের সেরা ছবি এটি সন্দেহ নেই।
বক্স অফিস কাঁপিয়েছিলো এই ছবি, জিতে নিয়েছিলো বেশ কটি পুরস্কারও। উইকিপিডিয়া বলছে, সম্পতি এই ছবিটা আমেরিকার “ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রি”র তালিকায় যুক্ত হয়েছে যেখানে শুধুমাত্র “নান্দনিক, ঐতিহাসিক অথবা সাংস্কৃতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ” সিনেমাগুলোকে সংরক্ষিত রাখা হয়। আর কমবেশি সব “সেরা ১০ ফ্যান্টাসি ছবি” বা “সেরা ১০ কমেডি ছবি” ধরনের লিস্টে গ্রাউন্ডহগ ডে থাকবেই। আমার ব্যক্তিগত পছন্দের তালিকাও সেকথাই বলছে। এসব তথ্য আর তালিকা দিয়ে ছবিটার “অ্যাপিল” হয়তো বোঝানো যাবেনা, অন্য একটা প্রভাবের কথা বলা যেতে পারে। এই ছবি মুক্তির পর থেকে “গ্রাউন্ডহগ ডে” শব্দগুচ্ছটাই একটা idiom এর মত হয়ে যায়, একই ঘটনা বা বোরিং কোন অভিজ্ঞতা দিনের পর দিন ঘটলে লোকে তাকে বলে গ্রাউন্ডহগ ডে। সেদিনও ন্যাট-জিও চ্যানেলে দেখলাম এক মহিলা বিদেশে তার জেলজীবনের নিদারুণ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বললেন, “ইট ওয়াজ গ্রাউন্ডহগ ডে, ওভার অ্যান্ড ওভার এগেইন”।
যারা দেখেননি তাঁদের কথা চিন্তা করে বিশদ কাহিনীতে গেলাম না, যদিও হাত নিশপিশ করছে আর আফসোস হচ্ছে- আসল এবং মজার অংশটুকুই বলতে পারলামনা! যারা দেখেছেন তাদের সবার হয়তো আমার মত এতটা ভালো লাগেনি। তবে বেশি ভালোলাগার জিনিষগুলো সবার সাথে ভাগাভাগি না করলে ঠিক শান্তি পাওয়া যায়না, তাই এই লেখা।
সোল সার্চিং, নিজের ভেতরের ভালো আর মন্দের লড়াই, ভালোবাসা আর মোহের দ্বন্দ্ব, নিজেকে খুঁজে পাওয়ার আনন্দ আর বেদনা - কমেডি আর ফ্যান্টাসি ছাপিয়ে গ্রাউন্ডহগ ডে যেন এই ব্যাপারগুলোই চোখে আঙ্গুল না দিয়েই দেখিয়ে দেয়; স্পষ্টভাবে।
মন্তব্য
আমার কাছে কনসেপ্ট হিসাবে অসাধারন লেগেছে। আজকেই আমি আর এনকিদু কথা বলছিলাম এ মুভিটা নিয়ে।
রিভিউ কেমন হইছে তাতো কইলেন না !
"Life happens while we are busy planning it"
রিভিউ বেশ ভাল হয়েছে । আরো কিছু এরকম রিভিউ লিখবেন আশা করি ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আগে দেখিনি, এবং বলতে দ্বিধা নেই , প্রচুর ছবি দেখা সত্ত্বেও এই ছবির নাম শুনেছি না কী মনে করতে পারছি না
রেকমেন্ড তো করলেন, দেখি এবার যোগাড় করা যায় কি না।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
দ্রুত দেইখা ফালাও
যোগাড় করেন, দেখেন এবং জানান কেমন লাগলো।
"Life happens while we are busy planning it"
লেখার শুরুতে "**** স্পয়লার মুক্ত পোস্ট ****" ব্যানার লাগাইতে ভুলে গেছিলাম।
মডুদের মেইল করলাম, যদি লাগায় দেন ভালো হয় আর কি!
"Life happens while we are busy planning it"
দেখছি ছবিটা...অসাধারণ কাহিনী। এন্ডিংটাও দারু। প্রথমে তো এতো পুরানা মুভি দেখতেই ইচ্ছা হয় নাই। পরে দেখা শুরু করলাম...১৫ মিনিটের পরে আর চোখ নাড়াতে পারলাম না। হাসতে হাসতে হেচকি তুলছি বলতে গেলে!
শেষ ২৫ মিনিট বেশি ফাটাফাটি। বারবার দেখা যায়।
"Life happens while we are busy planning it"
স্ট্রিমিং সাইটের আড্রেস দে পারলে... নামাই ফেলি
গুগোল বলে একটা বস্তু আছে বৎস, জানো কি?!
"Life happens while we are busy planning it"
ধন্যবাদ। ডাউনলোড দিলাম! দেখে জানাবো!
---------------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
"Life happens while we are busy planning it"
সিটি সেন্টার থেকে আসতে আসতে চিন্তা করতেছিলাম রাতটা কিভাবে কাটাবো। উপায় বাতলে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
Welkom!
কেন, সুন্দরী প্রতিবেশীনিরা সব কোথায় গেলো?
জানায়েন কেমন লাগলো।
"Life happens while we are busy planning it"
আমার খুবই পছন্দের ছবি। একবার দেখে আশ মেটে নাই। পরপর দুইবার দেখার পর মাঝেমধ্যে আবার রিভিশন দিতে হয়েছে। চিত্রনাট্য ও অভিনয়ে কমেডি যেমন ফুটে উঠেছে, একজন মানুষকে একটা শহরের মধ্যে বন্দী করে ফেলে যে অভিনব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে তাতে থিমটাও অনেক গভীরতা পেয়েছে। পুরোদস্তুর ক্ল্যাসিক।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
আমার প্রিয় ছবিগুলোর একটি - ৩০ / ৪০ বার দেখেছি, আমার এক লেখার কমেন্টে আগেও উল্লেখ করেছি. ট্রেইলারটা এমবেড করলাম - স্পয়লার কিছু আছে
৩০/৪০ বার!! আমি পুরাটা দেখছি ৩ বার, আর মজার জায়গাগুলো ৮-১০ বার হবে
-- ডিড ইউ এভার হ্যাভ ডেজা ভু, মিসেস ল্যাঙ্কাস্টার?
-- আই ডোন্ট থিঙ্ক সো, বাট আই ক্যান চেক উইথ দ্যা কিচেন!
"Life happens while we are busy planning it"
পিটস্বার্গ শহরে থাকি বলে আগ্রহ নিয়ে লেখাটা শুরু করলাম। মজার লাগল পোস্টটা। ছবিটা দেখতে ইচ্ছে করছে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
লেখা খুব ভালো হয়েছে।
ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম
"Life happens while we are busy planning it"
জটিল রিভিউ।
এই সিনেমাটা দেখা হয়নি এখনো। খুব আগ্রহ হচ্ছে দেখার জন্য। কাহিনী চমৎকার লাগল পড়ে।
সিনেমা নিয়ে লেখা পড়তে সবসময়ই খুব ভাল লাগে। সিনেমা তো প্রচুর দেখ, সেগুলো নিয়ে নিয়মিত লিখো এখন থেকে
লিখতে চাই, কিন্তু পারিনা। লেখার হাত নাই
দেইখা ফালাও, অফিসে আর কত টাইম দিবা!
"Life happens while we are busy planning it"
এইটা একটা দুর্দান্ত সিনেমা। মজার তো বটেই, কিন্তু এর আজকের জীবনে খুব প্রাসঙ্গিক একটা দার্শনিক দিক আছে যে জন্য মনে থেকে যায়। জীবন একটা জটিল গোলকধাঁধা যার মধ্যে পাক খেতে খেতে হয়রান হয়ে যখন পাগল পাগল লাগে, তখন সেটাকে ভেঙে কী করে বেরোনো যায় এ ছবি তার একটা উপায়ের সন্ধান দেয়।
আমি সাধারণত চলচ্চিত্রের রিভিউতে এতো বিশদে কাহিনী থাকলে অপছন্দ করি, কিন্তু লেখার গুণে সুখপাঠ্য হয়েছে। ছবি দেখে আপনার যা অনুভূতি হয়েছে তার কথা আরেকটু বিস্তারে লিখলে আরো আনন্দ পেতাম। আরো লিখুন রিভিউ, পড়ার প্রতীক্ষায় রইলাম।
স্পয়লারের ভয়ে অনেক কিছুই লিখি লিখি করেও বাদ দিলাম। তবে শিক্ষানবিস আর আপনার বলা অনুভূতিগুলো আমারও ছিলো, বলাও উচিত ছিলো তবে আপনাদের মতন করে গুছিয়ে লিখতে পারিনা বলেই যা সমস্যা।
শুরুর কাহিনীটুকুই বিশদ করে বলতে হয়েছে কারণ বাকিটা কাহিনী তো আর বলা যাবেনা; নতুন দর্শকের খাতিরে।
অনেক ধন্যবাদ।
"Life happens while we are busy planning it"
দেখার আগ্রহ জাগলো
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
নতুন মন্তব্য করুন