মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড নামে যে সব বাস ছাড়ে, সেগুলো, ময়মনসিংহ হয়ে-
সব শেরপুর জেলায় যায়, খড়মপুর বাসস্ট্যান্ডে থামে- এখানেই শেরপুর পৌরসভার শুরু।
খড়মপুর থেকে ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সায় শেয়ারে দশটাকা দিলে পৌছানো যায় খড়ারপার চৌরাস্তা।
যার, পশ্চিমে শ্রীবর্দী আর দক্ষিণ দিকে গেলে জামালপুর শহর।
উত্তরের সোজা রাস্তায় মাইল বিশেক গেলে একটি মোড়ে রাস্তা দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে-
বাম দিক ধরে এগোলেই ঝিনাইগাতি উপজেলা; বাংলাদেশ-ভারতের কয়েকটি সীমান্তবর্তী উপজেলার একটি।
চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য। আর, বন্য প্রাণির প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য।
ঝিনাইগাতি-শ্রীবর্দী উপজেলার বর্ডারের শেষ মাথায় গারো পাহাড়ের পাদদেশে একটি জায়গা- শয়তানের বাজার।
এলাকার এমন বীভতস নামকরণ নিয়ে বসবাসকারী, আদিবাসী গারো আর সহাবস্থানকারি অল্প কিছু বাঙালির কোন হিলদোল নেই।
তারা জানে এমন অদ্ভুত নামের পেছনের ইতিহাস।
এলাকাটা ছোট ছোট পাহাড় আর টিলার সমন্বয়ে তৈরি, বুনো রূক্ষ গাছপালার এলোমেলো উপস্থিতি- মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ী ঝোরা বন্যতা এনেছে।
মাঝে মাঝেই ভারত থেকে বণ্য হাতির পাল নেমে এসে এখানকার ক্ষেত-খামার তছনছ করে, পায়ের চাঁপে গুড়িয়ে দেয় সামনে যা পায়।
ছোট কয়েকটি পাহাড়ের নাম একত্রে মধুটিলা; বেশ ক'বছর হলো স্থাপন করা হয়েছে একটি ইকো পার্ক।
ইকোপার্কটি সরকারের অনেক চেষ্টাতেও জনপ্রিয় হতে পারেনি। পর্যটকরা এখানে আসতে চায় না।
হতে পারে- দুর্বল যাতায়াত ব্যবস্থা অন্যতম কারন কিংবা শয়তানের বাজারের রহস্য!!
শয়তানের বাজার এলাকার বিশাল একটা অংশ-জুড়ে বিশ ফুট উঁচু কংক্রীটের দেয়াল দিয়ে আয়তাকার কোন স্থানকে লোকচক্ষুর আড়াল করে রেখেছে।
সেখানে, একটা মাত্র গেটের সামনে সর্বক্ষন পাহারা দেয় সেনাবাহিনীর বিশেষ একটা ট্রুপ; তাদের হাবভাবে মনে হয়, ভেতরে খুবই গোপনীয় কাজ চলে।
আর একটা আধুনিক হাসপাতাল গেটটার ঠিক অপর পাশেই।
এলাকার ভুক্তভোগী মানুষজন প্রায়শই অবাক বিস্ময়ে ভাবে, ধারে কাছেই এমন সুসজ্জিত হাসপাতাল থাকতেও তাদের চিকিতসা এখানে হয় না কেন?
ছোটখাট অসুখ হলেও তাদের মাইল বিশেক পথ ঠেঙিয়ে সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এর কারণে- সরকারের প্রতি তাদের চাঁপা অসন্তোষ সবসময়।
কেউ কেউ বলে, এটা মিলিটারী হাসপাতাল- সিএমএইচ এর অনেকগুলো শাখার একটা।
কিন্তু, আশেপাশে ক্যান্টর্ণমেন্ট নেই তো!!
তবে, শয়তানের বাজার হাসপাতালে চিকিতসা কিন্তু সেনাসদস্যদেরও হয় না।
মাঝে মাঝেই কংক্রিটঘেরা একমাত্র গেটটার লোহার নিচ্ছিদ্র ভারী দরজা খুলে কড়াপাহারায় স্ট্রেচারে করে এক এক জন রুগীকে নিয়ে বেড়িয়ে আসে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাদের হাবভাবে বোঝা যায়, রোগী খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এলাকাবাসী কিংবা নতুন পোস্টিং হওয়া সোলজাররা লক্ষ্য করে, প্রত্যেক রুগির ভেতরে আশ্চর্য একটা মিল আছে।
সবার বাম হাত কনুই থেকে আর ডান পা হাটু থেকে কাটা, দেখলেই বোঝা যায়- কেউ যেন স্কেল দিয়ে মেঁপে প্রত্যকের হাতের কণুই আর পায়ের হাঁটুর বাঁটির ঠিক উপর থেকে সূক্ষ্নভাবে কেটে ফেলে দিয়েছে।
ভাল হাতের সাথে- সুস্থ পাটা একটা শিকল দিয়ে মুচড়ে বাঁধা থাকে সবার ক্ষেত্রেই-
মিলটা অদ্ভুত।
এ নিয়ে এলাকাতে ফিসফাস হলেও, গন্ডমূর্খ অধিবাসী- আদিবাসি-অভিবাসিরা সঠিক কারন বের করতে পারে না।
বয়স্কদের মধ্যে যারা জাতীয় খবরাখবর রাখে, তারা কারনটা জানে; কিন্তু কেউ কারো সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করে না।
কেউ তাদের বলে দেয়নি, কিন্তু তারা নিজেরাই যেন ঠিক করেছে গোপন রাখবে চারদেয়ালের ভেতরের রহস্য।
আর, প্রতি রাতেই এর আশে পাশের দু’এক ঘরে থাকা মানুষগুলোর ঘুম ভাঙে বুকফাঁটা চিতকারে।
দেয়ালের ওপাশ থেকে কেউ কলজে-চেড়া আর্তনাদ করে আকাশ বাতাস কাঁপায়; তাদের আর্তনাদে কারও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে না।
নিয়মিত ঘটনা বলে, এর মাঝেই ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে গেছে সবার।
কারো ভেতরে এই নিয়ে সমবেদনাও নেই।
বরং, দেয়ালের ওপাশ থেকে কান্না ভেসে এলে সবার চোখে-মুখে আনন্দের রেখা ফুটে ওঠে- আকাশের দিকে তাকিয়ে সবাই সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে বলে,
সুবহান আল্লাহ!!
এই দুনিয়াতে আল্লাহ উচিত বিচারের ব্যবস্থাই করে; যার যা প্রাপ্য তা বুঝিয়ে দেয়।
পাশাপাশি, এই ঘটনায় গর্বে তাদের বুক ভরে ওঠে শেরপুরের শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্যও।
চিতকার তাই শুধু বিচলিত করে ধানক্ষেত মাড়ানো হাতির পাল- কিংবা ঝোরায় জল খেতে থাকা কোন শেয়ালকে।
০০০০০০০০
হায়রে ব্যামানডা ব্যামাইতাছে পাঁঠাডা, মাগগো মা!
খালি ফাল ফারে, আর তাগত কি শইল্যে- জাইত্যা ধইরা আছে সোবহান; ১২ বছুরে শরীরের শক্তিতে কুলায় না, অরে লইয়াই পাক্কাইয়া পইড়া যাইতে চায়।
কিন্তু, সোবহানেরও জিদ কম না; জানে- যদি একবার ছাড়ে, তাইলে আর ধরতারতোনা।
ছুইট্টা গেলেই কাম হারা আর আব্বায় যেই কেল্লামেল্লা লাগাইবো!
নাহ, আরো জুড়ে জাইত্যা ধরে সোবহান- প্রাণপন।
সাহায্যের জন্য অসহায়ের মতো ডাইনে বামে তাকায় পাঁঠা আর সোবহান- পার্থক্য শুধু পাঁঠাডা ব্যামায় আর সোবহান ঘামে; দড়দড় করে।
পাশে রাখা বড় ইন্ডিয়ান রসুনের দুইটা কোয়া রোদ পরে চকচক করছে; খোসা ছাড়ানো- পালিশ করা শরীর নিয়ে।
সেদিকে তাকিয়ে, সিরসির করে ওঠে সোবহানের শরীর।
আব্বার ছাগুলে দাড়িঅলা মুখটার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকায়। আব্বারে সীমারের ভাইল লাগে যেন-
নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরে দাঁ দিয়ে বাঁশের কঞ্চির মাথা ছুঁলছে রহমান মুনসী, একমনে।
এই কাজের সময় মুখে ক্রুঢ় একটা হাসি ফোঁটে তার, সমস্ত চেতনা কঞ্চির তীক্ষ্নতার দিকে।
নিজে টের পায় না যদিও, তবে সোবহানের কাছে আব্বাকে এই সময় অচেনা লাগে।
ঠাইস্যা- ঠ্যাং চাইপ্যা ধইরা রান দুইডা দুইদিকে ফাঁক কর; ছেলের দিকে না তাকিয়েই হুকুম জারি করে রহমান।
যন্ত্রের মতো কাজটা করে সোবহান-
রহমান হাজামের পুত পরিচয়ের চেয়ে এখন অ্যাসিসটেন্ট পরিচয়টাই বড়।
হাজাম হিসাবে রহমানের নাম-যশ প্রবাদতুল্য।
পুরা কর্ণঝোরা ইউনিয়নে তার চেয়ে দ্রুত আর নিঁখুত ভাবে খাসি করার কাজ আর কেউই পারে না।
সারাটা দিনই ময়লা চটের ব্যাগ আর পুলাডারে নিয়া এই বাড়ি ঐ বাড়ি ঘুরে বেড়ায় আর একটার পর একটা পাঁঠার পুরুষত্ব ফালা ফালা করে;
এইটা তাদের তিন পুরুষের পেশা।
নীল রঙের পাঞ্জাবী, খয়েরী লুঙ্গী আর মাথায় সবুজ একটা পাগড়ি পরা রহমানকে দেখলেই তাবত গুঁড়া-গাড়া আর অকর্মা বৃদ্ধদের উতসব-উতসব ভাব শুরু হয়।
পাঁঠাকে খাসি করার অপারেশানে রহমানের হাতযশ ব্যাপারটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
দেখার মইধ্যেও একটা আরাম আছে।
ব্যাগের ভেতরে থাকে- একটা ধারাল দাঁ, মুলি বাশের একটা বাঁতা, কিছুপুরনো ন্যাকড়া, কয়েকটা বিভিন্ন সাইজের রসুন আর মোমবাতি-ম্যাচ।
গত মাস থেকেই সোবহানকে কাজ শেখানোর জন্য নিয়ে বের হয় রহমান।
এই ব্যবসারে সবাই ঘিন্না করলেও, বাপ-দাদার কাম না শিখলে কেমনে চলব, আবর ট্যাকাও আছে।
পুরুষানুক্রমে একদিন খাসি করা হাজাম হিসাবে সোবহান পুরা শেরপুর অঞ্চল চষে বেড়াবে- এমন স্বপ্ন মাঝে মাঝেই দেখে সে।
তবে, সোবহান স্কুলেও যায়- ক্লাস ফাইভে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাইছে গতবছর।
টিএনও সাবও হেরপর সোবহানরে মাথায় হাত দিয়া আদর কইরা দিছে ঐদিন; দেইখা চোক্ষে পানি আইয়া পরছিল রহমানের।
বড় ভালা মানুষ টিএনও সার।
সবাই রহমানরে কয়, দেইখো মুনসী- লিচ্চিত পুলা তুমার জজ অইবো।
অতটা আশা না করলেও- সোবহানরে নিয়া সে বহুত স্বপন তার। পাঁঠার কাইষটা গন্ধের সাথে জড়াজড়ি করে, মোটা চালের ভাত খাইয়ে- লুঙ্গী পরা জীবন ছাইড়া, ভদ্রলুকের নাখাল অপিস করবো পুলা- তাইলেই না বাপ হইয়া শান্তি!!
বাকি দিনগুলান, বাতেনরে সাথে নিয়া কাম সারলেও- বাইছা বাইছা স্কুল বন্ধেরদিন খালি সোবহানরে কামে আনে, পড়ালেহা করুক ঠিক আছে; বাপ-দাদার ব্যবসাডাও শিখা দরকার। এমনিতে পোলাডা কইলজার টুকরা হইলেও, কামের সম কুন খাতির নাই। শাসন না করলে, ঝাড়ি-ভরকি না দিলে এই কাম শিখা মুশকিল।
আপাতত সোবহানের কাম হইল, পাঁঠার পিছনের দুই রানের চিপা দিয়া দুই হাত বাড়াইয়া কেঁচকি দিয়া কে্ল্লা চাঁইপ্পা ধরা।
এই গিরিঙ্গি প্যাঁচে ধরলে- কঞ্চি দিয়া টান দিয়া বিঁচি দুইডা ফালাইয়া দেওয়ার সময় পাঁঠা আতকা শইল ঝাড়া দিলেও ছুডে না।
তারপর, জায়গামতো রসুনের কোয়া ভইরা, ন্যাকড়া পুড়াইয়া ব্যান্ডেজ কইরা দিলে- পরের তিনদিন একটু খোড়াইয়া-ল্যাংড়াইয়া হাঁটে; পরে খাসি হইয়া যায়।
আর, পাঁঠা তো একটা থাকলেই হয় পুরা গেরামে; খাসী না কইরা মুসলমানরা গোস্ত খায় না।
যতো সোজা মনে হইতাছে ততো না আবর, কামের ভিতরে দিগদারিও কম না। একসিডেনও অয় মাঝে মাঝে-
একহাতে খাসির যন্ত্র চাইপা ধইরা কঞ্চি দিয়া টান দিল রহমান, বিচি দুইডা বড়ইয়ের মতো খুইলা- টপ টপ কইরা নিচে বিছাইন্যা ছালার উপর পরে।
সোবহানডা একটু আটলাগরা আছে, রসুন ভরার আগেই এর মইধ্যেই অর হাত থেইকা বিচি ছাড়া কালা খাসিডা ছুইট্টা দিল লৌড়; রক্ত পইরা জমিন ভাইস্যা যাইতাছে। অশ্রাব্য ভাষায় পুলারে গাইলাইলো রহমান।
হারামীর পুত, তর নাঙরে যে ছাইড়া দিলি- অহন!! যা ধর ধর-
পাশের থেকে বাতেন (রহমানের সব সময়ের অ্যাসিসটেন্ট) আর তার সাথে গুড়া-গাড়া সবাই খাসির পিছনে পিছনে দৌড়াল।
সবতে মিল্লা যতক্ষনে ধইরা আনলো, ততক্ষনে দেরি হইয়া গেছে। তবুও, বাকি অপারেশন করল; বিকালবেলা খাসিডা গেল ঠুস কইরা মইরা।
সালিশে, ৪০০ ট্যাকা দন্ডি দিতে হইল; একটারে খাসি করলে ২০ ট্যাকার বেশি কেউ দেয়না।
তার মানে অইলো, সোবহানের একটা আকামে এক কুড়ি খাসি করার ট্যাকা ফাও।
বাসায় ফিরা, যা্ইত্যা ধইরা ছেড়ারে হাবুইট্যা কিলঘুষি মারলো কতক্ষন। হাঁপাইয়া গেলেও ছাড়লো না-
শান্তি না পাইয়া ইচ্ছামতো বেতাইলো আবার। খাসি হওয়া পাঁঠার মতো ব্যামাইলো সোবহান- কেউ বাঁচাইতে সাহস করলো না।
রহামানের রাগ বড় চন্ডাল; পুলার মায় পর্যন্ত ধরার সাহস করে না।
পিঠটা একবারে, দাগড়া দাগড়া হইয়া গেল।
তারপরে, চেইত্যা রহমানে কইল,
হারামজাদা, কামে মন থাহে না- পইড়া কি জজ/ব্যারিস্টার অবি নাহি?
আরেকদিন যদি হাতের তে ছুডে- তাইলে তরেই খাসি কইরা দিমু।
বলতে বলতে তার মুখে সেই ক্রুঢ় হাসিটা ফিরে আসে, যেন সোবহান নয়- কালা একটা পাঁঠারে শাসাইতাছে।
এইডা অবশ্য ভয় দেহানের লাইগাই কইছিল।
কিন্তু, সোবহান আতঙ্কে নীল হয়েযায়।
রাত্রে মাইরের ওজনে নাইলে খাসি হবার ভয়েই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে সোবহানের।
রাইতভর আবছা আবছা স্বপ্ন দেখে সে, বাতেন কাহা অরে যাইত্যা ধরছে আর আব্বা দাও দিয়া ধার করা কঞ্চি নিয়া- একহাতে অর লঙ্গি টান দিয়া খুইলা ফালাইছে।
তিন-চার বার ঘুমের ভেতরেই লাফিয়ে ওঠে সোবহান,
মাফ কইরা দেও আব্বা,আমারে খাসি কইরো না! কিরা কাটতাছি- আর ছুডব না।
০০০০০০০০
গোঙাছিল, ধরফর করে ঘুম থেকে ওঠে বসে জাস্টিস এম. সোবহান আলী।
আবার, সেই দু:স্বপ্নটা দেখেছেন তিনি।
শরীরের ঘামে কম্ফোর্টারটা ভিজে গেছে-অথচ ঘরে এসি চলছে; তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রীর মতো হবার কথা।
সরকারী বিরাট বড়বাসায় তিনি আর কাজের লোক ছাড়া কেউ নাই।
বেড সুইচ জ্বেলে, বেড সাইডে রাখা পানির জাগ থেকে এক গ্লাস পানি খায়।
হাঁপাচ্ছেন, দুর্বল হার্টের উপর এমন অত্যাচার আর সহ্য হয়না।
নঈমা গেছে ফিলাডেলফিয়াতে মেরিনার কাছে; ওদের একমাত্র মেয়ে মেরিনা চেয়েছিল সন্তান হবার সময় যাতে মা পাশে থাকে: তাছাড়া ৩৫ বছর বয়সে সন্তান হবার কম্লিকেসিও অনেক। কেন যে, এই বয়সে কনসিভকরতে গেল?
তিনি জানেন, শুধু অনাগত নাতি নয়- ১৩ বছরের নাতনি ফ্লোরার আকর্ষণও কম না।
গত বছর উইন্টারে আসছিল বেড়াতে, সপরিবারে মেরিনা।
ফ্লোরার শরীরে তুলির ছটফটে ভাব আর কুট কুট করে আঁধো আঁধো বাংলা বলার চেষ্টায় সবারই খুব আদর লেগেছে।
এমনকি, রাশভারি সোবহান সাহেবের সাথেও মেয়েটার বেশ মিষ্টি বন্ধুত্ব হয়েছিল।
সবাই অবাক, মেরিনা পর্যন্ত বাবাকে যমের মতো ভয় পায়- আর সেই দিনের মেয়ে কিনা বন্ধুর মতো হাত ধরে ঘুরে বেড়ায়!
হঠাত ঘুম ভেঙে নাতনির মুখটা মনে পরলো সোবহানে সাহেবের।
আহারে, কেমন যেন আছে দাদুটা! নঈমার প্রতি একটু ঈর্ষাও হলো।
ইস! তিনি যদি যেতে পারতেন?
গত মাসের ২১শে নঈমা গেছে; এই দু'সপ্তাহেও স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে অভ্যস্ত হতে পারেননি ; ৪০ বছরের সংসারে এই প্রথম এতোদিন নঈমাকে ছাড়া থাকা।
নাহ, অভ্যাস মানুষকে বংশদবদ করে ফেলে।
খাটের উপর থম মেরে বসে থাকলেন কতক্ষণ, হার্টবিট নরমাল না হওয়া পর্যন্ত।
এক ফাঁকে ঘড়ি দেখলেন, রাত সাড়ে তিনটা বাজে।
নাহ, আর ঘুম আসবে বলে মনে হয় না : এই স্বপ্নটা এখন তার জীবনের একটা শনি হয়েছে।
যেদিন দেখেন সেদিন আর বাকি রাত ঘুমাতে পারেন না, কেমন যেন একটা ভয় গ্রাস করে।
এখন, বাকী রাতটা জেগে কাটানোই সমস্যা।
হাত বাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে দাবার বোর্ডের মতো একটা বোর্ড টেনে নিলেন, একটা বাক্সের মতো; ভেতরে অনেকগুলো ছোট ছোট ডাইজ আর একটা ইলেকট্রনিক ডায়েরী। ডাইজগুলোর উপরে শূন্য থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যা লেখা আছে।
ডায়রীটার অনেকগুলো পাতাতে পরপর সমস্যা লেখা; এর বেশিরভাগই সলভ করে ফেলেছেন তিনি।
এখন, হায়ার অর্ডারের একটা বেছে নিয়ে দেখে দেখে ৪৮ টা ঘর সাজালেন।
বাকীগুলো এখন অংক করে করে বসাতে হবে।
বেশ জটিল আর সময় সাপেক্ষ।
মেরিনা বছর কয়েক আগে জাপানে বেড়াতে গিয়ে কিনে- আব্বুকে উপহার পাঠিয়েছে; এমনিতে যে কোন উপহারের প্রতি এলার্জি থাকলেও মেয়ের এই উপহারটা বেশ মনে ধরেছে তার। বেশ সময় কেটে যায়, এটা নিয়ে বসে বসে অনেক জটিল, উদ্ভট আর নতুন চিন্তা আসে।
এই খেলার সমাধান একটাই; যতক্ষন না হবে- ততক্ষন অংক চলবেই।
সেই স্বপ্নের কথা মাথা থেকে তাড়াতে, শিশুতোষ উত্তেজনায় বোর্ডের দিকে ঝুঁকে পরে সোবহান।
০০০০০০০০
বিয়ের পর প্রথম যখন এমন স্বপ্ন দেখে লাফিয়ে উঠেছিলেন; তখন নঈমা খুব অবাক হয়েছিল।
ভাগ্যিস নইমা সাইকোলজিতে পড়তো ঢাবি তে, তাই তার এই স্বপ্ন নিয়ে হাসি-ঠাট্টা না করে রীতিমতো গবেষনা করেছে।
প্রথমে লজ্জা পেয়েছিলেন সোবহান; তার মতো মানুষ খাসি হবার ভয়ে চিতকার দিয়ে ঘুম থেকে জাগে, এটা কাজের কথা নয়।
সদ্য পড়া সাইকোলকির জ্ঞানের নিঁখুত একটা সাবজেক্ট পেয়ে তেড়ে রিসার্চ করেছিল নঈমা, এমনকি তার এক প্রফেসর মিসির সাহেবও এনিয়ে বহুদিন কাজ করেছে।
মিসির সাহেবের নানান ধরনের আঁকা-বাঁকা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শৈশবের সমস্ত স্মৃতি উগলে দেন তিনি।
প্রফেসর মিসির আলীই বলেছিল,
দেখুন সোবহান সাহেব, হিউম্যান ব্রেইনের কাজ খুব স্ট্রেইঞ্জ; হিপোক্যাম্পাস নামে একটা প্রোগ্রাম সেখানে কাজ করে; এর কাজ অবচেতনে সংগ্রহ করা ইনফরমেশনগুলো- ঘুমের ভেতরে মেমোরির লাইব্রেরিতে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখা।
কোন আবেগের মাত্রা তীব্র হলে, ভালবাসলে অথবা প্রচন্ড ভয় পেলে ঘটনার তথ্যগুলো হিপোক্যাম্পাস খুব যত্ন করে রাখে।
মাঝে মাঝেই, অন্য কোন কিছু নিয়ে দু:শ্চিন্তা করলে বা একটু উদ্বেগের সময় জমানো স্মৃতিগুলোকে স্বপ্নের মতো দেখায়।
আপনারটাও তেমনি; খাসি করার ঐ শৈশব স্মৃতি আপনার ব্রেইনে মূল্যবান তথ্য হিসাবে সজ্জিত।
এমনিতে ওটা দেখবেন না, তবে যখনি- গুরুত্বপূর্ন কোন মামলার কারনে বা অন্যভাবে বেশি উদ্বিগ্ন হবেন বা ভয় পাবেন; তখন দেখতে পারেন।
এর কোন চিকিতসা নেই। তবে, ঘাবড়ানোরও কোন কারন নেই।
তারপরেই ঠাট্টা করে বলেছিল,
তাছাড়া স্বপ্নে ওরকম দেখলেও বাস্তবে যে আপনি সুস্থ আর উন্নত মানের খেলোয়াড় তা নঈমা আমাকে বলেছে।
এই বয়সে একটা ঘোড়ার মতোই টগবগে আপনি, খাসি হবার সুযোগই নাই। বলে মিচকি মিচকি হাসি আর থামতেই চায় না তার।
যেন, খুব একটা মজার কথা বলে ফেলছে!!
একটু বিরক্ত হলেও কিছু বলে না সোবহান।
জানে, গবেষনার প্রয়োজনে নঈমাকে তাদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের কথাও প্রফেসরকে বলতে হয়েছে; ডাক্তারের কাছে কিছু লুকোতে নেই।
নিজে গাইয়া হলেও, নঈমা তো বনানীতে বড় হওয়া আধুনিক মেয়ে, তার কোন পিউরিটান প্রেজুডিস নেই।
সহকারী জজ হবার পরেই বিয়ে করেছিলেন, সুপ্রীম কোর্টের জাঁদরেল জাজ আমিনুল হক পাটোয়ারীর একমাত্র মেয়েকে।
পাটোয়ারী সাহেবের তিন ছেলের মধ্যে বড়জন বর্তমান সরকারের খাদ্যমন্ত্রী হিসাবে দাপটের সাথে কাজ করে চলেছে।
মেজো কানাডাতে নিযুক্ত হাইকমিশনার আর ছোটজনের গ্রুপ অফ কোম্পানির প্রোডাক্টের অ্যাডভারটাইজের যন্ত্রনায় তো টিভিই দেখা যায় না।
এরকম একটা ফ্যামিলিতে বিয়ে করারকথাই ছিল না হাজামের ছেলে সোবহানের; তার উপর আবার খাসি করা হাজাম!
কিন্তু, তার বিয়ের ইতিহাসটাও অদ্ভুত।
সহকারী জজ হিসাবে প্রথম পোস্টিং ছিল নারায়নগঞ্জ, ইনসিটু পোস্টে তিনি অতিরিক্ত জেলা জজের এজলাসে বসেছিলেন, তখন টানবাজারের লোহিতপ্রদীপপল্লীর প্রবাদপ্রতীম খ্যাতি। দিনরাত চলে জমজমাট ব্যবসা।
দৌলতদিয়ার সাথে আকচা-আকচি প্রতিযোগিতা। সারা দেশ ঘুরে দালালরা পয়সার লোভ দেখিয়ে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বা প্রতাড়না করে সুন্দরী মেয়েদেরকে ধরে এনে বাড়িওয়ালী মাসির কাছে বিক্রি করে দেয়। নিমতলী- টানবাজার এলাকা জুড়ে রইস আদমি আর লম্পটদের আনাগোনা। এলাকাটাতে সভ্য মানুষ থাকতে পারতো না। গঞ্জ এলাকা।
পাশেই শীতলক্ষার ঘাটে কিংবা সিএন্ডবি ঘাটে জেলা-মহকুমা থেকে পাট- ধান-চাল আর নানান রকমের পণ্যে বোঝাই বড় বড় গয়নার নৌকা থামতো।
নৌকাতে আসা মাঝি-মাল্লা কিংবা ব্যাপারিদের বহুদিনের জন্য নদীতে ভেসে থাকতে হতো।
শারীরিক দাবী মেটানোর রমরমা ব্যবস্থা একটাই, টানবাজার।
নানা শ্রেণির খদ্দের ধরার জন্য বহুভোগ্যা রমনীদের হই-হট্টগোলে সরগরম এলাকা।
কারো খাকতি ৫০ তো কারো ৫০০।
লাইসেন্সবিহীন মদের দোকান- দেশি মালের ঠেক। নানান প্রকার অন্যান্য নেশা জাতীয় বস্তু।
কনডম-আর জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বিক্রির দোকান। সুস্বাদু খাবারের অজস্র মুখরোচক ব্যবস্থা এখানে সুলভ।
সারাদিনের হৈ-হট্টগোল, উগ্র পারফিউমের আর ভাজাপোড়া তেলের সাথে পাউডার-ঘামের গন্ধ বাতসকে ভারী করে রাখে।
উচ্চস্বরে বাজে চটুল হিন্দী আর বাংলা সিনেমার গান।
এখানে ওখানে বাতি জ্বলে- আর গলির মোড়ে ভীর করে দেহপসারীনিরা। খদ্দের দেখলেই, নানা ঢংয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা তাদের।
কখনো কখনো, কাউকে টেনে নিয়ে যায় ঘরের ভিতর। আবার, বিকৃত রুচির বা খচ্চর-কৃপণ গাহেকের সাথে বচসাও দৈনন্দিন।
পাশাপাশি দালালের দৌরাত্ব্য আর নিজেদের মধ্যে মারামারি নিয়ে দেন-দরবার মেটাতে লোকাল এমপি, পাতি নেতা আর থানার পুলিশের টু-পাইস বৃষ্টির মতো ঝরে। বখড়া নিয়েও কাইজা-ফ্যাসাদ কম না।
তেমনই, একটা ফক্করে কিশোরী একটা পতিতা ধুম করে খুন হয়ে গেল।
এটা নতুন কোন ঘটনা না। কিন্তু, কেমন করে যেন সব পতিতারা আন্দোলন করে বেশ হৈচৈ ফেলে দিল।
জয়েন করার ২য় মাসে অদ্ভুত মামলাটা ওঠে সোবহানের কোর্টে।
টানবাজারের এক বাড়িওয়ালী মামলা করে লোকাল ওসি আর এমপির ভাইস্তার উপরে।
বিকৃত রূচির এমপির ভাইস্তা ঐ মেয়েটাকে বলাতকার করে- পরে ছুড়ি দিয়ে স্তন আর অন্যান্য অঙ্গ কেটে- পরে বালিশ চাপা দিয়ে মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিল।
হয়তো তার বিকৃত খাহেশ মেটাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দাম চুকাল মেয়েটা।
পরিস্কার কেস, ঐ বাড়ির আরো ১৫টা বেশ্যা চাক্ষুস সাক্ষী; কিন্তু ওসি টাকা খেয়ে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিথ্যা সুরতহাল দিয়ে ঘটনার দায় চাপায় এক দালালের ওপর।
পাবলিক প্র্রসিকিউটার বাদীর পক্ষে থেকেও অদ্ভুত শুনানি দেয়, সমস্ত দায় যেন বেশ্যাগুলোর; ওরা মানুষ না।
দু’চারটে পতিতাকে বালিশ চাপা দিয়ে মারাটা যেন পূন্যের কাজ।
মুসলমান প্রধান এই দেশে পতিতাদের এমন মৃত্যুই সবার কাম্য!!
সেই মামলায়, কাঠগড়া্য় দাঁড়ানো প্রতিটা পতিতাকে ভরা আদালতে জঘন্য সব প্রশ্নের উত্তরে নিজেদের আব্রু খোয়াতে দেখেন সোবহান।
আসামী পক্ষের উকিল- বোম্বে ফিল্মের উকিলের স্টাইলে এমন সব বিষয়ের অবতাড়না করেন যা সব মানুষই জানে।
তবে, রাতের বেলা চারদেয়ালে বাতি নেভানোর মাধ্যমে গোপন রাখতে চায়।
তবু, তারা অটল ছিল, সবাই চাচ্ছিল নিহত মেয়েটা বিচার পাক।
প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে তারা ধৈর্য ধরে।
সোবহানের উপর অনেক চাপ ছিল।
লোকাল এমপি, পুলিশ সুপার এমন কি জেলা জজও খুব চেপেছিল মামলার রায়ে এমপির ভাইস্তা আর ওসিকে খালাস করে দিতে।
সোবহান পারেন নি, পতিতাবৃত্তির প্রতি তার সমর্থন নেই।
কিন্তু, তিনি খুনের মামলার সাথে পতিতাবৃত্তি মিশিয়ে ফেলতে দেননি। সূক্ষ্নভাবে তীক্ষ্ন ধী শক্তির পরিচয়ে দুটো আলাদা ভাবে হাইলাইট করা জাজমেন্ট দিয়েছিলেন,
খুনের মামলাতে ডেথ পেনাল্টির এখতিয়ার প্রয়োগ করেছিলেন।
আর, মামলার রায়ে ব্যাখ্যার একপর্যায়ে টানবাজার তুলে দেবার জন্য সুপারিশ ছিল।
৯৫ সালের ঘটনা এটা।
সারা দেশে ঝড় বয়ে যায়। এই মামলার রায়কে পুঁজি করে, সবাই মিলে পতিতাপল্লী উচ্ছেদ করে দেয়।
নিমিষেই, কোটি কোটি টাকার ব্যবসার দফারফা।
এর ফলে তার উপর খড়গ নেমে আসে।
সাসপেন্ড হন তিনি।
যেহেতু, ডেথ পেনাল্টির মামলা’; হাইকোর্ট অনেক শুনানির পরে দ্বিমত প্রকাশ করে আসামীকে যাবজ্জীবন দেয়- এখানেও ব্যারিস্টারদের কু-যুক্তি আর নগ্নভাবে পাওয়ার চর্চা হয়েছিল।
সহায় সম্বলহীন মেয়েগুলো ছেড়ে দেয়নি।
গতর বেঁচা টাকার শ্রাদ্ধ করে হলেও নামী ব্যারিস্টার ভাড়া করে আপীল বিভাগে গেল, তখন তা জাস্টিস আনিসুল হক পাটোয়ারীর এজলাসে ওঠে।
সোবহানের রায় পরে, ঘাঁঘু জজ পাটোয়ারী সাহেব বুঝে যান, এই ছেলে কোটিতে একটা।
নিজের রায়েও সোবহানের রায়ের হুবহু বজায় রাখেন তিনি।
তারপর খোঁজখবর নিতে গিয়ে আশ্চর্য হয়ে যান!
এই ছেলের বাবার কাজ পাঁঠা- খাসি করা, কিন্তু নিতান্তই মেধার জোরে আর বৃত্তির টাকায় ছেলেটা এই পর্যন্ত উঠে এসেছে ভারত সীমান্তের কাছের একটা গ্রাম থেকে।
টাকা-পয়সার কাছে নতি স্বীকারের ছেলে এ না।
মুক্ত সংস্কার আর ভবিষ্যত বিশ্লেষণের সহজিয়া প্রতিভাবান।
এমন একটা ছেলেই অনেকদিন ধরে খুঁজছিলেন তিনি।
তাছাড়া, ছেলের পারিবারিক দুরবস্থার অর্থ হলো- ছেলে তার ঘরজামাই হয়ে থাকতে রাজি হবে।
নিজের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সোবহানকে ঢাকায় সিএমএম কোর্টে নিয়ে আসেন তিনি।
আর, নিজের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একমাত্র মেয়ের সাথে বিয়ে দেন।
কিন্তু, দুঁদে জাজ পাটোয়ারির হিসবে ছোট্ট ভুল হয়, সোবহান তার স্ত্রীকে নিয়ে সরাসরি সরকারি বাসায় ওঠে।
বিয়ের পরে অবশ্য, আরেকবার প্রমানিত হয় জাজ হিসাবে পাটোয়ারী সাহেবের ফয়সালা।
সোবহান তার সততা আর নিখুত রায়ের সিড়িতে পা দিয়ে আজ আপীল বিভাগের তৃতীয় জৈষ্ঠ জাজ, তার এতোটা উন্নতি আনিসুল সাহেব দেখে যেতে পারেন নাই।
তবে, তার মৃত্যুর পরেও তার তিন ছেলে বাড়ির জামাইকে শ্রদ্ধার সাথেই নিয়েছে; এমনকি খাদ্যমন্ত্রী হলেও জহিরুল পাটোয়ারী তার ছোটবোনের স্বামীর কোন কথাইফেলে দেন না- প্রতিটা কথা ভেবে দেখেন: তিনি জানেন আর যাই হোক- প্রতিটা কথা বলারআগে সোবহান সেটা মেপে নেয়।
কেমন করে যেন, সবচাইতে খাতির হয় বাড়ির মেজো ছেলে আমীরুলের সাথে, আমীরুল তুখোড় মেধাবী- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
তাদের দুজনের বন্ধুত্ব বাড়ির আবহাওয়া শান্ত করে।
ধীরে ধীরে, জাস্টিস এম সোবহান আলী পাটোয়ারী পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই সমাদৃত হয়।
০০০০০০০০
কোথা থেকে যে সময়টা উড়ে গেলে টের পেলেন না তিনি।
এই খেলায় অংক নিয়ে বসলে এভাবে সময় চুরি হয়ে যায়।
চুপচাপ বসে ফজরের আযান শোনেন সোবহান; আরেকটা রাত না ঘুমিয়েই গেল।
অথচ,কালকের দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বোর্ড গুটিয়ে রাখেন, আজও মেলেনি অংকটা।
তাড়া নেই অবশ্য, জানেন- আবারও হয়তো কালকেই- ঘুম ভেঙে এটা নিয়ে বসতে হবে।
ফজরের নামাজে আজ অনেক্ষণ বসে আছেন সোবহান: তার মনটা স্থির না।
তার আর জাস্টিস শুভেন্দু দাসের দ্বৈত বেঞ্চে আজ ‘অ্যাসাসিন পেন্টাকল’এর রায় দেবার কথা।
গত এক বছরের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর মামলা; কতোবার যে প্রথম সারির দৈনিকগুলোর লীড নিউজ হয়েছে, তা গোনার চেয়ে ঝাঁকের কাক গোনা সহজ।
আল-জাজিরাতেও এ নিয়ে একটা রিপোর্ট হয়েছে।
স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আর আইনমন্ত্রী এটি নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে হর-হামেশাই।
বিরোধীদল থেকেও সবাই সোচ্চার
গতকালের হেডলাইন ছিল, আগামী কাল রায়: বিজ্ঞ আদালতে কি ন্যা্য্য বিচার পাবে শিশু সেহরীন আর শিল্পপতি আজিজ?
সোবহান একপ্রকার নিশ্চিত শুভেন্দু কি রায় দিতে যাচ্ছে; সম্ভবত লোয়ার কোর্টেরডেথ পেনাল্টি বজায় রাখবে।
অন্তত: গণমাধ্যমের আশা পূরনের জন্য হলেও এমন রায়প্রয়োজন, স্বীকার করে সোবহান; কিন্তু সেটা কি উপযুক্ত হবে?
তার কাজ কি মিডিয়ার দাবী পূরণ? না দৃষ্টান্তমূলক ন্যায্য বিচার?
তার বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, চলমান মামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের সাথে সাথে- ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত না হতে পারে- তার ব্যাবস্থা পত্র দেয়া।
সোবহানের মাথায় আবছাভাবে ভিন্ন এক ইউনিক সাজার কথা আসছে, নামাজে দাঁড়ালেই এরকম সঠিক ফয়সালা পায় সোবহান।
তবে, মাথাটা ভার ভার লাগছে, স্বপ্নটা আজকেই দেখলো কেন?
আজকের মামলাটার সাথে কি স্বপ্নটার সম্পর্ক আছে?
০০০০০০০০
সারাদিন ধরে ব্রেকিং নিউজ আদালতের একটা রায়।
প্রতিটা টিভি চ্যানেলের নীচে স্ক্রল করে যাচ্ছে এই সংবাদ।
সেনসেশনাল অ্যাসাসিন পেন্টাকল মামলার দ্বৈত বেঞ্চের বিভক্ত রায়।
দেশের সবার মনেই সন্দেহ ছিল, এই মামলার সঠিক বিচার হবে না।
সন্দেহ আরো ঘনীভূত করেছে- নিম্ন আদালতে দ্রুত বিচার আইনে পাঁচজন আসামীর চারজনের ডেথ পেনাল্টি আর রাজসাক্ষীর যাবজ্জীবন হয়েছিল।
হাইকোর্টও তা পুনর্বহাল রাখে।
এখন, বিচারপতি শুভেন্দু দাস চারজনের ডেথ পেনাল্টি বহাল রেখে রাজসাক্ষীর সাজা কমিয়ে দশ বছর করার পক্ষপাতি।
গোল বেঁধেছে জাস্টিস এম. সোবহান আলীর রায় নিয়ে, তিনি কোন রায় দেন নি-বরং একটা গোলকধাঁধাঁময় বক্তব্য আর একটা অবাস্তব সাজার আভাস দিয়েছেন।
যা নি:সন্দেহে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে আর এটা মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ঘটাবে।
তার বক্তব্যের শুরুটা চমতকার ছিল।
তিনি বলেন, এটি আসলে দুটি পৃথক অপরাধ।
একটি খুন, আরেকটি ধর্ষণ।
যদি খুনের মামলার রায় দিতে হতো, তবে নি:সন্দেহে আমি নিম্ন আদালতের ফাঁসির রায় বহাল রাখতাম।
কিন্তু, ধর্ষনের শাস্তি কেবল ফাঁসি হতে পারে না।
ফাঁসি মানে তো- দুমিনিট রশিতে ঝুলে ব্যস। মোটামুটি আরামদায়ক মৃত্যু।
তাহলে কি ন্যায়বিচার হয়?
যে শিশুটিকে ধর্ষন ও পরে হত্যা করা হয়েছে তার হত্যার বদলে ফাঁসি ঠিক আছে, তবে ধর্ষণের সাজাকোথায়?
এভাবে মৃত্যুদন্ড দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পারে না।
এটুকু শুনে চারদিকে ফিসফাস শুরু হয়; তবে কি, কথার মারপ্যাঁচে ফাঁসি মওকুফ করে দেবার মতলব?
তীব্র প্রতিবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল সবাই-
তাদের থামিয়ে দিলজাস্টিস সোবহানের শেষ অংশটুকু,
এমন সাজা দিতে চাই- যা প্রতিটা ধর্ষনেচ্ছুকে ধর্ষনের আগে বহুবার ভাবাবে, আতঙ্কিত করবে।
আমি এই রকম সাজার কথা ভাবছি।
তবে, দেশের প্রচলিত আইনতার জন্য উপযুক্ত প্রস্তুত নয়।
চাই, কাকুরো।
আইনমন্ত্রণালয়ের জণ্য সুপারিশ আকারে প্রেরণ করা হলো তার খসড়া।
প্রস্তুত হবার আগ পর্যন্ত আমি রায়দিতে পারিনা: সে পর্যন্ত আদালত মুলতুবি।
দেশের প্রতিটা আনাচে-কানাচে চায়ের কাপে ঝড় উঠছে।
প্রিন্ট মিডিয়া আর টকশোগুলোতে কাকুরো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা চলছে, তবে কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনলেই বুঝতে পারছে, সবচেয়ে বিভ্রান্ত আসলে বিশেষজ্ঞরাইঁ!
সবা্রই প্রশ্ন, কি এই কাকুরো?
কি এমন সাজা, যা ধর্ষণকারীদরকে ধর্ষণ করার আগে বারে বারে ভাবতে বাধ্য করবে?
মৃত্যুর চেয়ে বড়, আবার কোন সাজা হয় নাকী?
(চলবে, তিন খন্ডে সমাপ্য)
(গল্পের সময়ের হিসাবে বিভ্রান্ত হবার কিছু নাই, এটা মূলত: ২০৩০ সালের আঙ্গিকে লেখা।)
স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট
মন্তব্য
অপেক্ষায় আছি। একটু একটু বুঝতেছি যদিও----
স্বয়ম
কি বুঝতেছেন!! ( ) রহস্য কি তৈরি হইছে?
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
জাপানি কাকুরো তো সুডোকুর বড়ো ভাই, তাই না? কিন্তু সেটা কে কেন শাস্তির নাম হিসেবে প্রস্তাব করা হলো ভাবছি। সম্ভাব্য শাস্তির আভাসও পাওয়া যাচ্ছে পুরো গল্প থেকে, তবু পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
মোটাদাগে বলতে গেলে তাই, কাকুরো আসলে সুডোকুর খালাতো ভাই। আমি এখনো পরের পর্ব লিখি নাই। তবে, খসড়া একটা ধারনা মাথায় আছে। দেখা যাক- আমিও ভাবতেছি।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
হ্যাঁ, আমিও পরের পর্বের অপেক্ষায়
ধন্যবাদ। এই পর্ব নিয়ে কিছু বললেন না যে?
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
আপনেও ইস্টাইলটা নিয়া নিলেন, এমন জমাটি গল্পে জায়গামত চলবে বসায় দিলেন!
থাকি এখন অপেক্ষায়!
- একলহমা
আসলে এই পর্যন্তই লিখছি। বাকীটা মিলাইতে পারি নাই এখনো।
মজার ব্যাপার হলো, প্যারা আর এডিটিং নিয়া কোন অবজেকশান এখনো আসে নাই। আপাতত, এইটাই খুশু-খুযু।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
পরের পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
পরের পর্ব লিখছি। আশাকরি, এইটা নীড়পাতা থেকে গেলেই পরেরটা দিতে পারবো। পড়ার জন্য ধইন্যবাদ।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
ভাল লাগলো, উৎকন্ঠাও জাগলো। দেখা যাক কি ঘটে পরবর্তী পর্ব দুটিতে।
আসলে, আভাস দিয়ে বিপদে পরে গেছি। এখন, লিখতে গিয়ে মিলতেছে না। আমিও তাই বলি, দেখা যাক কি ঘটে পরের পর্ব দুটিতে!!
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
দারুন, দারুণ। খুব ভালো লাগছিলো পড়তে।
সময়ের হিসাব নিয়ে শেষ লাইনটা পড়ে শান্ত হলাম। নাহলে ৪০ বছরের বিবাহিত জীবনের সাথে ১৯৯৫ সাল মিলছিলো না বলে মন্তব্যের ট্যাগলাইন রেডীই ছিলো।
কিন্তু শয়তানের বাজারের সেই দেয়াল ঘেরা জায়গাটা আবার আসবেতো পরের পর্বে?। খুব আগ্রহ হচ্ছে হাসপাতাল আর দেয়াল ঘেরা জায়গাটা নিয়ে।
*************
একটা ছোট্ট কথা বলি।
এই যে আমি আগের বাক্যটার পাশে এই কথাগুলো না লিখে একটা Enter চেপে পরের লাইনে চলে এলাম সে ষ্টাইলটা আপনার লেখায় অনেক।
পাশাপাশি পড়তে পারলে দৃশ্যটা কল্পনায় আনা বেশী সহজ হতো বলে আমার মনে হয়েছে।
স্বপ্নীল, এটা আমার ধারণা। এটা নিয়ে আবার ভাববেন না বেশী। ষ্টাইল পালটে ফেলার কারণে না আবার গল্পের মজাটাই হারিয়ে যায়।
***********
অপেক্ষায়তো রাখলেন। তাড়াতাড়ি এই অপেক্ষার পালা যেন শেষ হয়, ভাইডি।
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
এডিটিংয়ে আমি গোল্লা। শয়তানের বাজার আনা যায় কি না- চেষ্টা করতেছি
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
আপাতত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
লিখছি, কাটছি- বড় হয়ে যাচ্ছে। তিন পর্বে শেষ হবে কিনা বুঝতেছি না।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
জমজমাট গল্প। অপেক্ষায় থাকবো।
গল্পের অনেক শাখা-প্রশাখা বের হয়ে গেছে। বুঝতেছি না- পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
শয়তানের বাজার থেকে বের হয়ে একটু ধাঁধায় পড়েছিলাম।
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা,
আশা রাখছি দীর্ঘায়িত হবেনা ।।
হা হা হা । কেন!!! আরেহ, ঐটা তো ধরতাই- সামনে এরকম আরো ধাঁধাঁ তৈরি করতে পারলে শান্তি পেতাম। না না, নীড়পাতা থেকে প্রথম খন্ড বের হয়ে গেলেই দিয়ে দিব (যদি ছাঁপায়) ।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
একটা ছোট্ট জায়গায় অনেকগুলো ঘটনা হাঁসফাস করছে বলে মনে হলো। শয়তানের বাজার, হাজামের পরিবার থেকে উঠে আসা জাজ, টানবাজার, ধর্ষণের রায়। আশা করি, গল্প দ্রুত শেষ করার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। পড়তে ভালো লেগেছে। কিছু টাইপো আছে। চিতকার> চিৎকার, চিকিতসা> চিকিৎসা। আর কিছু জায়গায় দু'টো বাক্য একসঙ্গে এসে গেছে। আরেকবার চোখ বুলালেই আপনার চোখে পড়বে।
শুভকামনা
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ঘটনাগুলো ছড়িয়ে দিব- পরের পর্বতেই। আমি অভ্র ব্যবহার করে লিখি- খন্ড ত লিখা শিখি নাই; এডিটিং নিয়েও ভেজাল হয়।
আর, এটা ধর্ষনের রায় তো না!!!
ধর্ষনের কথা পরে বলবো- জট যখন পাঁকিয়েছি; নিজেই খুলে দিব।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
গল্পের প্লটটা মাথায় কিভাবে আসল জানতে ইচ্ছে করছে
বুলস আই প্রশ্ন: আমার নতুন চাকুরীতে প্রথম পোস্টিং গারো পাহাড়ের কোলে- আজন্ম ঢাকাবাসী আমি হতবাক হয়ে গেছি এটা নিয়ে। বাকী ঘটনাগুলো এখান ওখান থেকে জীবনের টুকরো ছবি। আর, যখন ভারতে প্রথম বাসে একটা মেয়েকে, তারপর বিহারে একজন নারীকে ধর্ষণ করা হয় তখনই ভাবি এটা নিয়ে লিখতে হবে। তারপরো, সাম্প্রতিক সাংবাদিক মেয়েটার ধর্ষণ আমাকে লিখতে বাধ্য করলো। সত্যি কথা বলতে, এই প্লটটা আমার মাথায় আপনাতেই চরিত্রগুলো সাজিয়ে দিয়ে গেছে। আমার সাথে সোবহান সাহেবের মাঝে মাঝেই ঘুমের ঘোরে কথা হয়।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
গল্প ভাল লেগেছে, এটা এবং আগেরটাও। এতগুলি ক্যারেক্টার তবে কোন ঝামেলা হয়নি সেগুলোকে এগিয়ে নিতে। বাইদাওয়ে, পোস্টিং কোথায় ছিল? নালিতাবাড়ি না শেরপুর? নির্ঝঞ্ঝাট একটা জায়গা তাই না?
পরের পর্ব জলদি আসুক
মানুষগুলো খুবই সরল আর গরীব। হুম নির্ঝঞ্ঝাট, একটু বেশিই।।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
অনেকদিন বাদে একটা টানটান গল্প পড়ার সুযোগ হইলো। ওয়েটাইতেছি......
ফাটাইয়া রাইটাইতাসি।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
তারাতারি করেন। পপ্পনের পয়সা শ্যাষ হইয়া গেলে কইলাম ৫৭ ধারায় মামলা কইরা দিমু
জমজমাট গল্প। অপেক্ষায় থাকবো।
ধন্যবাদ।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
খুব দ্রুত কাহিনী এগিয়েছে- বাকী দুই পর্বেও কি একইভাবে কাহিনী আগাবে?
শুরুটা এবং শেষটা অসাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
-নিয়াজ
এটা উপন্যাসের প্লট, গল্পে দিয়েছি- সংলাপ কম। তাই দ্রুত মনে হয়েছে।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
ঠিক আছে। আপাতত গল্প।
পরে উপন্যাসের দাবী জানিয়ে রাখলাম ।।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
আপনার সুবিধার্তে -
'ৎ' লিখতে 't' একবার চেপে পরপর দু'বার 'Esc' এর ঠিক নীচের 'কী' টা (যেটা '1' এর আগে) চাপুন।
তাইলেই ম্যাজিক!!
ভালো থাকবেন ভাই।
অখন্ড 'বিচার' এর অপেক্ষায়...।
---------------------------------
কামরুজ্জামান পল।।
ও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অখন্ড দিতে গেলে- এতো বড় হবে যে পড়ার উতসাহ হারিয়ে ফেলবেন (আপনার কথামতো করতে পারি নাই, তার প্রমাণ এই মন্তব্যেই আছে ।)
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
উৎসাহ= ut``sah , ৎ= t``
দারুণ গল্প। তবে ২০৩০ সালের বিষয়টা নোটে না দিয়ে গল্পের ভেতরে ঢুকিয়ে দিলে আরো ভালো হয়
০২
বহুত কষ্ট করেও গল্পকারের নাম বানান করতে পারলাম না। ভবিষ্যতে রেফারেন্স দিতে গেলে তো বিপদে পড়ব
০১। কোথাও স্কোপ পাই নি দেবার মতো, আসলে তার প্রয়োজনও ছিল না; টানবাজারের ঘটনাটা আনতে গিয়েই যত্ত গোলমাল- সময়ের হিসেব প্যাঁচ লেগে গেল। পরের দিকে- কিছু ঘটনা আছে যা বর্তমান সময়ের জন্য অস্বাভাবিক; তাই- বাধ্য হয়ে ২০৩০।
০২। এটা একটা পেন নেম। সরকারি চাকুরির নিয়মের বেড়াজালে, কলম আটকে আটকে যায়। তাই, নিক নিলাম।
নামের দ্বিতীয় অংশটা একটা ইংরেজি শব্দ- সমনামবিউলিজম এর তদ্ভব।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
আমার চমৎকার লেগেছে।
বেশ অনেকগুলো চরিত্র, অনেকগুলো ঘটনা, অনেক দৃশ্যসমগ্র। তাও যথেষ্ট মসৃণভাবে পড়তে পেরেছি। আশা করি পরের দুই পর্বে সবকিছুর আন্তঃসম্পর্ক আরও খোলতাই হবে।
অনুচ্ছেদ ও মাঝের ফাঁকা জায়গা নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছিল পড়ার সময়, কিন্তু সেখানে বোধহয় লেখকের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য থাকতেই পারে।
আন্ত: সম্পর্ক খোলতাই হবার কথা- চেষ্টা করছি। আর, এডিটিং নিয়ে বলতে বলতে আমি হয়রান- আমার আসলে একজন এডিটর দরকার রে ভাই।। সামনে আরও দৃশ্য- চরিত্রের আমদানি আছে- কি জানি শেষমেশ কি দাঁড়ায়!!
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
তিন পর্বে সমাপ্য দেখে আর পড়লাম না। শেষ করেন আগে, তারপর পড়ব - না হলে হিমু ভাই এর হড়ড় হয়ে গেলে বিপদ - অপেক্ষা আর শেষ হয়না!
____________________________
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
নতুন মন্তব্য করুন