ভেবেছিলাম ঘোর কেটে গেলে লিখব, অথবা সম্ভবত ঘোর কেটে গেলেই লিখব। সেই ভেবেই অপেক্ষা করছিলাম, দু-চার দিন, কিন্তু ঘোর কাটল না, কাটছে না, বরং ঘোরের মধ্যেই পড়ে ফেললাম আরেকটা বই। সে জন্যেই লিখতে বসা। ঘোর কাটার অপেক্ষায় থাকলে হয়ত লেখাই হয়ে উঠবে না। লেখা না হয়ে ওঠা আরও অনেক সম্ভাবনাময় লেখার মত হারিয়ে যাবে, অনেক লেখাই যে রকম ভ্রুণ অবস্থায় হারিয়ে যায়। অবশ্য তাতে বিশেষ কিছু ক্ষতি হয়নি বা হয়না। আমি এমন কিছু লিখিয়ে নই যে আমি লিখিনি বলে কেউ অপেক্ষায় দাঁতে কামড়ে হাতের নখ ক্ষয় করে ফেলবে অথবা আমি লিখেছি বলেই লেখা পড়ে কেউ দুরন্ত পায়চারীতে অস্থির করে দেবে অন্ধকার ব্যালকনি। তাছাড়া আমি লেখকও নই, না লিখলে আমারও যে বিশেষ কিছু এসে যায় এমন নয়। কিন্তু এই লেখাটা সেরকম কোন উদ্দেশ্যেই লেখা নয়, লেখার উদ্দেশ্য অনেকটাই উগড়ে দেবার মত, এমন উগড়ে দেবার অনুভূতি অনেক দিন কোন বই পড়ে হয় নি।
কথাটা পরিষ্কার করেই বলতে হবে, এটা সম্ভবত কোন বুক রিভিউ নয়, সম্ভবত এটা কিছুই নয়। কিছু হতে হবে তেমন পরিকল্পনা করে লিখছিও না, শুধু যতটুকু উগড়ে দিতে পারলে নিজের আরাম হয়, স্বার্থপরের মত শুধু সেটুকু উগড়ে দেব সম্ভবত। তবে উগড়ে দেবার একটা সমস্যা আছে, সেটা বোধহয় খুব একটা হিসেব করে দেয়া যায় না। বিবমিষার জন্য দোষী সাব্যস্ত পানীয় বা খাবারের সাথে গতকালের খাওয়া নির্দোষ পুষ্টিকর আর অনাকাঙ্খিত খাবারের অংশও বের হয়ে আসে নির্দ্বিধায়, আবার অনেক সময় অধিক পুষ্টিকর খাদ্যের ভার দেহ সহ্য করতে না পেরে উগড়ে দেয় নির্বিচারে, আমার অবস্থা বোধহয় কিছুটা সেরকমই। এখন এই অবস্থায় লিখতে গেলে অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছু যদি লেখা হয়ে যায় অথবা যেটুকু উগড়ে দেব ভেবেছিলাম সেটা যদি না বেরোয়, সে দোষ পাঠক আমাকে দিলেও তার দায় নিতে আমি অপারগ।
শুরুটা সাদামাটা, একটু বেশিই হয়ত, চমক নেই কোন। ভাইবোনের সংসার, খুঁনসুটি, ঝগড়া, হাসাহাসি আর অভিমান। এই নিয়ে শুরু। এর মধ্যে নতুন কিছু নেই যে আচ্ছন্ন হয়ে যেতে হবে, কিন্তু এই কিছু না থাকার মধ্যেই লেখক আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেন। অদ্ভুত তাঁর উপমার ব্যবহার, একেবারেই অন্যরকম তাঁর ঘটনার বর্ণনা। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস পড়েছি আগেই, তুলনা করাটা ঠিক হবে না হয়ত, কিন্তু বর্ণনা আর উপমায় মাহমুদুল হক আর ইলিয়াসকে পাশাপাশি না রাখলেও কাছাকাছি রাখা যেতে পারে। কিন্তু ঠিক সেই কারনেও এই লেখার অবতাররণা নয়।
একেবারে আটপৌঢ়ে ঘটনা আর কথোপকথনের পেটে ছুরি চালিয়ে মাহমুদুল হক একেবারে নাড়িভুড়ি পর্যন্ত বের করে আনেন নির্লিপ্তভাবে, অনেকটা ইলিয়াসের মতই। কিন্তু পড়ার সময় আমি লেখককে টের পাই না একেবারেই, গল্পের মধ্যে ততক্ষণে আমি ঢুকে পড়েছি খোকা হয়ে। বুঝতে না বুঝতেই রঞ্জু, মঞ্জু আর অঞ্জু আমার বোন হয়ে যায়। মঞ্জু আর অঞ্জু তলিয়ে যেতে থাকে অতলে, ঠিক জীবনের মত, রঞ্জু বেঁচে থাকে সেও জীবনের মত। জীবন অদ্ভুত! জীবন যেন ঠিক খোকার বোনের মত, জীবন যেন অনেকটা ঠিক আমার বোনের মত।
এই লেখাটা ২০১২ তে পড়তে পারতাম বা ২০১১ বা তারও আগে। মাহমুদুল হক আগে কেন পড়িনি সেজন্যে শুরু করার পর থেকেই একটু মন খারাপ হতে থাকে। এই লেখককে চিনতে এতগুলো বছর কাটিয়ে দিলাম? সচলের কনফুসিয়াস কোন একটা লেখায় বোধহয় এনাকেই বলেছিলেন সাঁপুড়ে লেখক, অদ্ভুত সম্মোহনে সম্মোহিত করে ফেলেন। কিন্তু বইটি যতই পড়তে থাকি যতই একটা করে পৃষ্ঠা পড়া হয়, ততই মনে হয় এই বই পড়ার জন্য এর চেয়ে ভাল সময় বোধহয় আর হতে পারত না, একটা করে পৃষ্ঠা আগাতে থাকে আর মনে হয় এই বইটা ঠিক এই সময়েই পড়তে হত। আর ঠিক সেইজন্যেই বইটি নিয়ে লিখতে বসা।
বইটি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা। পুরোটা ঠিক মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিও নয় বরং আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ব্যক্তিগত জীবনের যে সংকট, যে টানাপোড়েন, যে দ্বন্দ্ব, যে হিসেব-নিকেশ, সেইসব উঠে এসেছে খোকা নামের এক আত্নমগ্ন, আপাতসচেতন, পড়ুয়া অথচ নির্বোধ যুবকের জীবনের মধ্যে দিয়ে। এক হিসেবে গল্পের নায়ক বা মূল চরিত্র তাকে বলা যেতে পারে, কারন তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় সব চরিত্র আর সংলাপ। অথচ একটু খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায় গল্পের মূল চরিত্র আসলে সেই সময়ের সংকট, সেই সময়ের স্বপ্ন, সেই সময়ের নির্মাণ আর বিনির্মাণ। আর আরেরকটু খেয়াল করলে বুঝতে পারি, সেই সংকট কেবল সেই সময়ের নয়, বরং সেই সংকট সেই সময়কে অতিক্রম করে কখন যেন আজকের নাস্তার টেবিল, রাস্তার পাশে চায়ের দোকান অথবা রাজপথের সংকট হয়ে উঠেছে।
'জীবন আমার বোন'কে আমি দেখলাম দুই হাজার তের এর ভেতর দিয়ে অথবা অন্যভাবেও বলা যায় দুই হাজার তের কে দেখলাম 'জীবন আমার বোন'-এর ভেতর দিয়ে। সম্প্রতি আমি মুক্তিযুদ্ধকে দেখতে চেষ্টা করেছি শাহবাগের সানগ্লাস চোখে লাগিয়ে, তাতে মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করা হয় হয়ত, শাহবাগের সানগ্লাস চোখে লাগিয়ে সত্তর আর একাত্তরের ক্যানভ্যাস দেখতে গেলে পুরো ক্যানভাসের অনেকটাই ঢাকা পড়ে হয়ত। কিন্তু এর চেয়ে ভাল সানগ্লাস আমার হাতে আর কীইবা আছে! আমি বরং দুই হাজার তের বা শাহবাগকে সানগ্লাস হিসেবে না দেখে একটা দূরবীন হিসেবে দেখি। 'জীবন আমার বোন' সেই দূরবীনের লেন্স নয় বরং ফোকাস রিং, তাতে আগের চেয়ে অধিক দূরত্বে যে দৃষ্টিপাত করতে পারি তা নয়, কিন্তু আগের চেয়ে অনেক পরিষ্কার দেখি এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। এই জায়গাতেই জীবন আমার বোন শুধু একাত্তরের গল্প নয়, এটা হয়ে ওঠে দুই হাজার তের এরও গল্প। এটা একাত্তরের ঢাকা থেকে আজকের শাহবাগে এসে থমকে দাঁড়ায়, আমি আর আমার বন্ধুদের চ্যাটবক্সে আর ফেসবুক স্ট্যাটাসে। চায়ের কাপে অথবা স্কাইপ ভাইবারে এক একটা 'জীবন আমার বোন' রচিত হতে দেখি। আমার আশেপাশের সবাই, আমি তুমি আর সে সবাই মিলে কেউ হয়ে যাই খোকা, কেউ মুরাদ বা ইয়াসীন, কেউ নীলাভাবী বা লুলু চৌধুরী, কেউ বা বোকার মত রাজীব ভাই হয়ে বসে থাকি। আর কেউ কেউ অঞ্জু মঞ্জু রঞ্জু হয়ে কেবল তলিয়ে যায় জীবনের মত। আর কোন কোন খোকা না বুঝে শুধু সেই রঞ্জু মঞ্জু আঞ্জুকে আঁকড়ে ধরতে গিয়ে জীবনটাকেই কোথায় যেন হারিয়ে ফেলে।
খোকার মধ্যে যখন খুঁজে পাই এই সময়ের ফেসবুকের বামপাশে 'আই হেইট পলিটিক্স' ঝুলিয়ে রেখে চেগেভারার টি-শার্ট পরে ঘুরে বেড়ানো তরুণটিকে, তখন এই লেখাটি না লিখে উপায় থাকে না। অথবা রাজনীতিকে বইয়ের পাতায় আটকে ফেলে রাজনীতিবিদদের গালাগাল দেয়া মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া তরুণীর ফেসবুক স্ট্যাটাসের সাথে খোকার এই উপলব্ধির পার্থক্য কতটুকু? “রাজনীতির ব্যপারটাই আগাপাস্তলা একটা জমকালো ছেনালি; একজন শিক্ষিত নাগরিকের দায়িত্ব সম্পর্কে তার পুরোপুরি ধারণা থাকলেও ভোটার লিস্টে সে তার নাম তোলেনি। রাজনীতির ব্যাপারটা তার কাছে শিকার ফসকাতে না দেওয়া হুবহু সেই মাদামোয়াজেল ব্লাশের মত”।
অথচ এই অস্থির সময় কাউকে রেহাই দেয় না। ফেসবুক বা টি-শার্টে 'আই হেইট পলিটিক্স' ঝুলিয়ে রাখা যে তরুণ প্রতিদিন অ্যালিয়ন, প্রেমিও বা সদ্য কেনা বাইকের পিছে প্রেমিকাকে চাপিয়ে ঢাকার রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, সাইলেন্সার খুলে রেখে বিশাল শব্দে জানান দিয়ে যে যুবক বসুন্ধরার ফাঁকা রাস্তায় কার রেসিং করে বন্ধুদের সাথে, হরতাল বা অবরোধে তাকেও রিকশা বা হাঁটা পায়ে পৌছাতে হয় গন্তব্যে, কখনও বা পৌছানোই হয়ে ওঠে না। সেই ঘৃণা করা পলিটিক্সের উত্তাপ তার গায়ে এসেও যখন লাগে তখন সেও কি খোকার মত করে ভাবে নি বা ভাবে না? এইসব প্রশ্ন আমাকে পেয়ে বসে, তাই লিখতে বসি।
এইসব ঝামেলা, ফেসবুক আর রাজপথের উত্তাপ থেকে আমি বা আমরাও কি কখনও খোকার মত নীলাভাবীর ড্রইংরুমে আশ্রয় খুঁজিনি? এতসব তর্কবিতর্ক, গালাগালি আর কথার মারপ্যাচে একে অপরকে হেনস্থা করার সময় খোকার মত আমারও কি কখনও অর্থহীন মনে হয়নি সবকিছু? আমিও কি কখনও এসব থেকে মুক্তি চেয়ে খোকার মতই কোন এক সেগুনবাগিচার দিকে অগ্রসর হতে হতে মনে মনে বলে উঠিনি? নিজেকে বোঝাইনি? “কথার প্যাঁচে ফেলে একে অপরকে অহেতুক হেনস্তা করার অপপ্রয়াসই নেই ওখানে। আড্ডা আর তর্কের মুখোশ এঁটে বন্ধুরা যখন মাঝে মাঝে হীন মনোবৃত্তির আশ্রয় নিয়ে একে অপরের নামে কাদা ছোড়াছুড়ি করে, জারিজুরি ফাঁসের ব্যপারে পরস্পর নোংরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়, তখন তার মন বিশ্রী রকম তেতো হয়ে যায়”।
কিন্তু নীলাভাবীর ড্রয়িংরুমে সেই আগের নেশা কোথায়? সময় বোধহয় সবসময় আর নীলাভাবীদের নিয়ে ভাবার সময় দেয় না, সময়ের প্রয়োজনেই সময়কে চিনতে হয়। এই সময় আর সেই সময়ের মাধ্যে পার্থক্য কতটা? পার্থক্যের মাত্রা হিসেব করতে গেলে হয়ত বিস্তর ফারাক পাওয়া যাবে, কিন্তু প্রকৃতিগত মিল সম্ভবত ব্যপক। খোকার মত তাই এখন আমার বা অনেকেরই অনুভূতি হয়, “কি দ্রুত বদলে যাচ্ছে যাবতীয় দৃশ্যপট, বদলে যাচ্ছে মুখের আদল, দ্রুত দ্রুত, দ্রুত এবং ধাবমান, গ্লেসিয়ারের মত দাবমান; দুর্মদ মৃত্যুর মত দরগলমান গ্লেসিয়ার। এই সময়ে কত বন্ধু হারিয়ে ফেললাম, কত মুখোশ খুলতে দেখলাম, কত মুখই বদলে গেল”। মিছিলে হাজার মানুষে মানুষে হাজার পার্থক্যের ভেতরেও একটা শ্লোগান থাকে, সেই শ্লোগানে সুর না থাকলেও গানের মত মনে হয়। সেই সময়ের শ্লোগান আর এই সময়ের শ্লোগানের মধ্যে ফারাক কতটুকু? এই বদলে যাবার মিছিলে কেউ যোগ দেয় কেউ যোগ দেয় না, কিন্তু সেই মিছিলের উত্তাপ সবার গায়েই লাগে, সেটা কেউ উপলব্দি করতে পারে, কেউ বা খোকার মত পালিয়ে বেড়ায়। এই উত্তাপের মাত্রা একাত্তর আর আজকে এক নয় নিঃসন্দেহে, কিন্তু সেই উত্তাপের প্রকৃতি আর কারন অনেকটাই অভিন্ন।
“সমস্ত ব্যাপারটা খোকার কাছে নিছক খেয়ালখুশি চরিতার্থ করার মত কিছু একটা মনে হয়, মিছিলের মানুষগুলোর মুখে দুরারোগ্য অসুস্থতার অক্ষর পড়তে থাকে সে। কোন স্তরের মানুষের সঙ্গেই আমার কোন সম্পর্ক নেই, কেমন একটু ভিন্নধাতে গড়া আমি- খোকা মনে মনে নিজেকে সামাল দিতে থাকে, কি ঘটছে না ঘটছে আমি তার কোন তোয়াক্কাই করি না, অথচ ফুটপাতের পানওয়ালা থেকে মাটিকাটা কামালারাও কমবেশি কিছু না কিছু বলতে সক্ষম; সময় বদলে দেয় মানুষকে, অথবা মানুষই কান মুচড়ে চাঙ্গা করে তোলে প্রাণশক্তি-বিবর্জিত নির্জীব সময়কে, এবং আমি কোন কিছুর ভিতর নেই। দেশ দেশের কল্যাণ, দেশের ভবিষ্যত, দেশপ্রেম, এসবের কিছুই তার মগজে ঢোকে না। এইসব ভজকট ব্যাপারে নিরর্থক অপচয়িত না হয়ে বরং শিথিল আলসেমির ভিতর ডুবে থাকা ভাল, অন্তত নিরাপদ তো বটেই।” এই গল্প একাত্তরের না গতকালকের এই পার্থক্য কে এঁকে দেবে? সময়কে অস্বীকার করে কূপমন্ডুক হয়ে বেঁচে থাকতে চাওয়া নপুংসক প্রজন্ম শুধু এই সময়ের সন্তান নয়। এরা সবসময়ই ছিল, সময়ের উত্তাপ থেকে বেঁচে থাকতে এরা নীলাভাবীর আঁচলের নীচে আশ্রয় নিতে চায়। কিন্তু নিষ্ঠুর সময় নীলাভাবীকে চিনতে পারে না। নীলাভাবীর আঁচলও একসময় সময়ের উত্তাপে গলে যায়।
জীবন আমার বোন কোন গল্পকে ঘিরে আগায় না, গল্প সেখানে থমকে থাকে বেশিরভাগ সময় নীলাভাবীর বেডরুম অথবা লুলু চৌধুরির খসে পড়া আঁচলে, কখনও রঞ্জুর সাথে খুনসুটিতে, মুরাদ বা ইয়াসীনের সাথে চায়ের কাপে। থমকে থাকা এক একটা মুহুর্ত থেকে মাহমুদুল হক এক একটা রত্ন বের করে নিয়ে আসেন। সেই রত্নের জ্যোতি শুধু সেই সময়ে আটকে থাকে না, সেটা অতীতকে পেছনে ফেলে ঘটমান বর্তমানের অংশ হয়ে ওঠে। মুরাদ যখন সময়কে কাজে লাগিয়ে তার কবিতার একটা বই প্রকাশের কথা ভাবতে থাকে, আমরা তখন মুরাদের মধ্যে আজকের শাহবাগকেও কি কিছুটা খুঁজে পাই না?
অথবা গল্পের সেই আসাদের সাথে আমাদের রাজীবের পার্থক্য কোথায়? খোকা যখন বলে, “আমি ভাবতেই পারি না আসাদ নেই। খুব কষ্ট হয় আমার। এই যে ও নেই, তার জন্য কার কি এমন ক্ষতি হয়েছে, কি এমন যাচ্ছে আসছে?” আমার কিন্তু ঠিক ঠিক রাজীবের কথা মনে হয়। রাজীব ঠিক আমার মতই একজন ছিল হয়ত, কিন্তু আজকে আমার কী এমন আসছে যাচ্ছে? আবার ঠিক তখনই আমার ভেতর থেকেই মুরাদ কি বলে ওঠেনি, “চোখটা নিজের দিক থেকে ফিরিয়ে দেশ ও দশের স্বার্থের মাপকাঠিতে ফেলার চেষ্টা কর, দেখবি আজ আর এটা নিছক একটা নাম নয়, ঝকঝকে সোনার তরোয়ালের একটা প্রতীক, বিশাল দেশের ওপর স্থির বিদ্যুতের মত যা ঝুলে রয়েছে।”? রাজীব কি আমাদের আজকের আসাদ নয় অথবা লেখক কি আসাদের নাম দিয়ে আমাদের রাজীবের কথাই বলেন নি? ঝকঝকে সোনার তরোয়ালের সেই প্রতীক কি আজকের রাজীব নয়?
লাইন ধরে ধরে কোটেশান দেব বলে এই লেখা লিখতে বসিনি। সেটা করতে গেলে পুরো বইটিই এখানে তুলে দিতে হবে। গল্পের ডাইমেনশানও একমাত্রিক বা দ্বিমাত্রিক নয়, কম করে হলেও ত্রিমাত্রিক বা চতুর্মাত্রিক। সেই আলোচনায় যাব বলেও লিখতে বসিনি। সেটা বুক রিভিউ যদি কখনও লিখতে বসি তখন চিন্তা করে দেখব। খোকার চরিত্র বিশ্লেষণ করে খোকার গুষ্টি উদ্ধার করাও আমার আজকের লেখার উদ্দেশ্য নয়। শুধু বইটি পড়তে গিয়ে আমি বারবার যখন নিজের মধ্যে কখনও খোকা, কখনও মুরাদ বা কখনও লুলু চৌধুরীকে খুঁজে পেয়েছি, তখন মনে হয়েছে এই বইটি এখন শুধু আমি একা পড়লে হবে না, 'জীবন আমার বোন' এই সময়ে সবাই মিলে পড়তে হবে। না হলে যখন খোকার মত আমি বা আমরা বুঝতে পারব, তখন দেখব, অর্ধনিমজ্জিত যে বোনকে আমি বা আমরা জীবন মনে করে আঁকড়ে ধরছি, নিজেকে আড়াল করে মিছিলের উত্তাপ থেকে পিঠ বাঁচাতে চাইছি, সেই বোন কখন যেন টুপ করে সময়ের এঁদো পুকুরে ডুবে গেছে।
মন্তব্য
পড়ার লিস্টি কেবলই বাড়ছে
নিজের অ্যাড দেন নাকি?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মাহমুদুল হককে নিঃসন্দেহে লিস্টির একেবারে ওপরের দিকে রাখতে পারেন।
অ্যাড দিলাম একটু চান্সে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার ঘোরলাগা আবেগ দেখে চট জলদি ইবুক আকারে 'জীবন আমার বোন' পাওয়া সম্ভব কিনা খোঁজ করতেই পেয়ে গেলাম বইটার কয়েক পাতা পড়েছিলাম। পুরোটা পড়ে ফেলা হবে এবার আশা করছি। সেজন্য আপনার সাধুবাদ পাওনা ।
বেশ লাগলো আপনার অনুভূতিটুকু জেনে। যদিও ভূমিকায় কিছুটা রাশ টানার অবকাশ ছিল। কিন্তু কবি'রে আবেগের রাশ টানতে বলার আমি কে! একটা ভারী কাকতলীয় ব্যাপার, সচলে আসবার আগে আমিজীবন রে ছাড়িয়া যাসনা মোরে পিচ্চির এইটা শুনছিলাম। এখানে এসে দেখা হয়ে গেল মাহমুদুল হকের জীবনের সাথে।
ঘোরের কারনেই তো লেখা। তাই ভূমিকাটুকুই লেখার মূল, সেজন্যেই বলে দিয়েছি পাঠক আমাকে দোষারোপ করলেও তার দায় নিতে আমি অপারগ। বইটি পড়ে যটটুকু উচ্ছসিত হয়েছি সেটুকু বলার চেষ্টা না করলে সেটা মামুলি বুক রিভিউ হিয়ে থাক্ত, সম্ভবত সেটাও হত না।
পড়তে শুরু করুন নির্দ্বিধায়। ঠকবেন না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ত্রিমাত্রিক কবি 'জীবন আমার বোন' শেষ করলাম গতরাতে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই!
'কালো বরফ' কালো বরফ' করে হেঁদিয়ে মরেছি অনেকটা সময়। আমি আবার যেটা দিয়ে শুরু করতে চাই
সেটা দিয়ে শুরু না করতে পারলে উদ্ভট একরোখামির কারণে আর পড়াই হয় না অনেক কিছু। তবে বর্তমানে এমন বিলাসিতার(বাংলা বই পাওয়া বেশ কষ্টকর বিধায়) আর তেমন সুযোগ পাইনা বলে সাধাভাত পায়ে না ঠেলে তুলে নেই লক্ষি মেয়ের মত। সেভাবেই 'জীবন আমার বোন' পড়ে নেয়া হলো। বলাই বাহুল্য খুব ভালো লাগলো বইটা।
এত এত উপমা আর ইঙ্গিতময়তা তাঁর লেখায়, ওসবরে ঘোরে পড়ে গেলে পাঠকের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায় গল্পের গভীরে ঢুকে পড়াটা। আর আমার মত আকাঠের তো ত্রাহি মধুসূদন অবস্হা! তবে সত্যি বলতে কী, আপনি এই পাঠ'কে যেভাবে শাহবাগ আর বর্তমান সময়ের সাথে একটা সুতায় বেঁধেছেন এটা বেশ চমকপ্রদ লেগেছে। 'শাহবাগ' নামের অবাক সময়টা আমাদের নাড়া দিয়ে না গেলে এই পাঠটা হয়ত অন্যভাবেই শেষ হতো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটটি
এত বিশাল আর বিপুল যার বয়ান কোনো একক লেখকের পক্ষে এক রচনায় দেয়া সম্ভব নয়, নানাজনকে নানাভাবে যে বয়ান দিয়ে যেতে হবে৷ মাহমুদুল হক তাঁর 'জীবন আমার বোন' এ এই অভিজ্ঞতা বয়ান করেছেন খোকা, রঞ্জু দুই ভাইবোন আর তাদের(প্রধানত খোকারই) সংস্পর্শে আসা কিছু চরিত্রকে ঘিরে। এক তরফাভাবে খোকা অন্যসব চরিত্রদের উপর নিজের বিচার বিশ্লেষণ যেভাবে চাপিয়ে দিয়েছে অন্যদের সেভাবে সুযোগ দেয়া হয়নি এমনকি রঞ্জুকেও নয়। এটা আমার কাছে এট্টু আক্ষেপের(পাঠক হিসেবে আমি তো লেখকের কাছে চাইতেই পারি এট্টু বেশি ) যদি স্পষ্ট করে জানা যেত অন্য চরিত্রগুলোও কি ভাবছে তবে মুরাদকে নিয়ে খোকা হুদাই মনে জটিলতা সৃষ্টি করছে কিনা, খোকার মত দেশের বর্তমান নিয়ে না ইয়াসীন কি শুধুই নিজের বিয়ে নিয়েই ভাবনায় আর্বত এমন সব ব্যাপারগুলো খোলসা হতো হয়ত। এতে করে একচেটিয়াভাবে খোকার চরিত্রে চূড়ান্ত স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক, ইগোয়িষ্ট, কুসংস্কারাছন্ন ইত্যাদির তকমা এঁটে যেতো না হয়ত। লেখক এমনটিই চেয়েছিলেন নিঃসন্দেহে। তবুও মুরাদ কি সত্যিই রঞ্জুর প্রতি দুর্বল ছিল, পাশাপাশি রঞ্জুরও কি সায় ছিল তাতে?
সব স্বার্থপরতা ভুলে ইয়াসিন, রহমান তারা কিভাবে নেমে পড়লো যুদ্ধে এসব প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর না পাওয়াতে মনের কোণে কিছুটা খেদ রয়েই গেল যেন! মুরাদ চরিত্রটিকে আমার বেশ পছন্দ। খোকা একটা জ্ঞানপাপী। গ্রেগর স্যামসন, জেন ডিকসন, বোকাচ্চিও সেভেন্টির অনিতা, মোঁপাসার লা হোর্লা চাখলেই যে জীবনের সব জানা হয়ে যায় না এটা বুঝতে তাকে মেলা মাশুল গুনতে হলো। যাইহোক একটা আনন্দপাঠ হয়ে গেলো। আর সেটা নিয়ে কিছু ফরফরও করে গেলাম। নইলে কেম্নে বুঝে লুকে বইটা আমি ঠিকঠিক পচ্চি
--------------------------------------
অ:ট: আপনি অতীন বন্দোপাধ্যায়ের নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে পড়েছেন? ওটার পরের পর্বগুলোর(অলৌকিক জলযান' ঈশ্বরের বাগান) ইবুক লিংক থাকলে মুক্তহস্তে দান করার আহ্বান থাকলো।
গল্পের ভেতরে ঢুকতে হয় না, সেটাই বোধহয় ইন্টারেস্টিং। গল্পের ভেতরে না ঢুকেও অনেক কিছু পাওয়া যায়। আচ্ছন্ন হয়েছি সম্ভবত এ কারনেই। মূলধারার অধিকাংশ উপন্যাস বা আখ্যানে একটা পরিণতর আকাঙ্খা থাকে। এখানে সেই পরিণতির সেই আকাঙ্খা নেই। আসলে জীবনে তো পরিণতি বলে তো কিছু নেই, সবই তো যাপিত জীবন, সেই জীবনে গল্প থাকে, পরিণতি থাকে না। আমার এই পথ চলাতে আনন্দ। মাহমুদুল হক যেটুকু পড়লাম তাতে দেখলাম লেখকের পরিণতির দিকে আগ্রহ নেই, উনি শুধু নির্লিপ্তভাবে যাপিত জীবনের কথা বলে যান।
নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে পড়েছি। পরের পর্বগুলোর পিডিএফ নেই আমার কাছে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ইবই এর লিঙ্ক শেয়ার করা যাবে?
ফেসবুকের ইনবক্স চেক করেন সাফি ভাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
লিংক দিয়েছেন কবিভাই, সফিভাই তাই আর চিন্তা নাই
আয়নামতি, বইটা পড়া শেষ হলে একটা রিভিউ লিখতে মতি হোক!
@তানিম্ভাই , বাপ্রে! আমি লিখবো বইয়ের রিভিউ!!!!! ইহা আমার কাজ নহে
আমিও দাবী জানায়ে গেলাম
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
যাঁরা বইটি পড়ে ফেলবেন, তাঁরা এখানে রেটিং করতে পারেন।
জীবন আমার বোন by Mahmudul Haque
এই বইয়ে পাঁচতারা ছাড়া কিছু ঠোকা গেল না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ওনার কাছের এক সাহিত্যিক জানিয়েছিলেন সম্ভবত উনি বইটির নাম রাখার প্রেরণা পেয়েছিলেন বরিস পাস্তেরনায়েকের মাই সিস্টার লাইফ কবিতা থেকে। এই নিয়ে কিছু পড়েছেন?
facebook
নাহ এই নিয়ে কিছু পড়িনি অণুদা। কবিতাটা পড়লাম। সেই হিসেবে কবিতার শরীরের সাথে এই উপন্যাসের শরীরের মিল নেই সম্ভবত। কোথায় পড়েছিলেন আপনি?
‘My sister – Life’s overflowing today’
My sister – Life’s overflowing today,
spring rain shattering itself like glass,
but people with monocles still complain,
and sting, politely, like snakes in the grass.
The elders have their logic of course,
certainly yours is foolish, no doubt:
that eyes and lawns glow lilac in storms,
and sweet perfume blows from the south.
That in May, when traveling you see
the timetable on the Kamyshin line,
the Bible’s penned no less magnificently,
while in reading it you’re mesmerised.
That sunset has only to show a village,
girls crowding the track as we flee,
and I find that it’s not my stop today,
the sun offering its sympathy.
With three splashes the bell swims by,
‘Sorry, not here’: its apology’s far.
Burning night seeps under the blind,
the steppe plunges, from step to star.
Winking, blinking, sweetly somewhere,
my love, a fata-morgana, sleeps yet,
while, like my heart, splashed on platforms there,
the carriage throws window-light over the steppe.
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
স্মারক গ্রন্থে এই সম্পর্কিত রেফারেন্স আছে। মাহমুদুল হক স্মারক গ্রন্থ পড়ার তালিকায় যোগ করে নিন, ভাল লাগবে।
লিনক পাওয়া যাবে নাকি তানিম ভাই? কী নাম সেই গ্রন্থের? মাহমুদুল হককে জানতে ইচ্ছে করছে খুব।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দিলেন বাচাল বানিয়ে! মাহমুদুল হক পড়া শুরু হয় এই বইটি দিয়েই। তারপর মাহমুদুল হক এর সব বই কেনা হয়েছে, পড়া হয়েছে। তিনি একমাত্র লেখক যার ব্যক্তি মানস সম্পর্কে আমার তুমুল আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, স্মারক গ্রন্থ সে কৌতূহল কিছুটা মিটিয়েছে। ‘কালো বরফ’ পড়েছেন মনে হয়, মাহমুদুল হক পুরোপুরি বোঝার জন্য এই বইটা পড়া খুব দরকার... তারপর ‘প্রতিদিন একটি রুমাল’ হয়তো কোন এক ‘মাটির জাহাজ’ হয়ে আপনাকে জানিয়ে দেবে- ‘অনুর পাঠশালা’ নামে কোন ‘খেলাঘর’ কোথাও ছিলোনা তাই মাহমুদুল হক নিজ থেকে লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ‘কালো বরফ’ এর ইংরেজি অনুবাদ-ও বের হয়েছে, ‘Black Ice' নামে। তাঁর সবগুলো বই পড়ে ফেলুন, সব।
আমি আপনার সাথে একটু দ্বিমত করতে চাই, একদম নিজস্ব অভিমত। একজন ইলিয়াস এর সাথে একজন মাহমুদুল হক এর মধ্যে তুলনা করতে গেলে ইলিয়াস’কে হতে হবে অভিমানী তিনি যা নন, বরং স্পষ্ট, উক্ত, শাণিত, সরাসরি আর তীব্রতর মাত্রায় কোন ছন্দপতন নেই, কাব্য করার প্রয়োজন নেই, আর যদি থাকে-ও তবে সেটা কোন ধ্যানের ধার ধারে না। আর মাহমুদুল হক! মাহমুদুল হক ঘোরগ্রস্ত লেখক বলেই মনে হয় খুব বেশি দূরাগত, তাঁর লেখায় অতিক্রান্ত কাব্য এত বেশি অকপট, এত বেশি বিশুদ্ধ, এত বেশি তাঁর মত করে আবেগি আর বিলাসী তাই হয়তো-বা ছন্দোবদ্ধ নয়, কিন্তু এমন পরিমিতিবোধে সন্নিবেশিত যে, একজন আবদুল খালেক এর সামগ্রিক অস্তিত্বের বোধ খুঁজে পেতে আমাদের শেষ লাইন থেকে পড়া শুরু করতে ইচ্ছে করবে আবার! কালো বরফ এমন একটা মহৎ লেখা যার তুলনা মেলা ভার, নোবেল কমিটি’র লোকজন এই বইটা পড়তে পারেনি এটা তাদের দুর্ভাগ্য। মাহমুদুল হক এর বই আক্ষরিক অনুবাদ করা সম্ভব না, ভাবানুবাদ করতে হবে। তিনি যা লিখতেন তাই, গ্রন্থিত পুস্তকের সংখ্যা আরও কম, একটানা লিখতেন, কোন ঘষামাজা নেই, তিনি ঘষামাজা করতেন-ও না। কেবলই রহস্য একজন মাহমুদুল হক ঘিরে, কোন প্রথা নেই।
কালো বরফ যারা পড়ে নাই, তাদের সবার দ্রুত পড়ে ফেলা দরকার। কয়েকটা লাইন...
'এইভাবে সবকিছু একদিন গল্প হয়ে যায়। জামার পকেটে একটা ফিতে, ফিতেয় চুলের গন্ধ, যে গন্ধে অনেক দুঃখ, যে দুঃখে অনেক ভালবাসা, যে ভালবাসায় অনেক ছেলেবেলা...'
এতটা আচ্ছন্ন হয়েছি, এই তিন চারদিনে কালো বরফ শেষ করলাম, এখন পড়ছি অনুর পাঠশালা। এখানে তো কাগজের বই সংগ্রহের সুযোগ নেই, অনলাইনে যা পাওয়া যায় সেই ভরসা। তবে এত তাড়াহুড় করে পড়লেও আসলে হবে না, আরেকবার কমপক্ষে আরেকবার পড়তে হবে, তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে। প্রত্যেকটা বাক্য, শব্দ আর উপমার স্বাদ নিতে হবে।
ইলিয়াসে সাথে মাহমুদুল হকের পার্থক্য তো আছেই, সুস্পষ্ট পার্থক্যই আছে। আমি যেখানে মেলাতে চাইছিলাম, সেটা ভাষা আর বর্ণনার শক্তি, আঞ্চলিক ভাষা আর শব্দের ব্যবহারে নৈপুণ্য, অদ্ভুত সব উপমায় পাঠককে আচ্ছন্ন করে ফেলা। ইলিয়াসও ও যখন প্রথম পড়ি, আচ্ছন্ন হয়েছিলাম, মাহমুদুল হকও আচ্ছন করলেন। সেই হিসেবেই ইলিয়াস আর মাহমুদুল হককে এক বাক্যে উচ্চারণ করেছি।
কালো বরফের বেলায় আপনার কথার সাথে একমত, শুধু বাংলায় লেখা হল বলেই হয়ত বইটি নোবেল পেল না, অবশ্য নোবেলে কী বা এসে যায়। কালো বরফের অনুবাদ, বা মোটের ওপর মাহমুদুল হক বা ইলিয়াসের অনুবাদ প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হয় আমার কাছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
না ভাই, অতিশায়িত মনে হলো!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
হেহে কিছুটা অতিশায়িত তো বটেই। মুগ্ধতার এই এক সমস্যা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মাহমুদুল হকের বই পড়া শুরু 'কালো বরফ' দিয়ে। সেটা পড়ার পরও আমার এমন ঘোর লাগা অবস্থা ছিল! ঘোরের চাইতেও বেশি কিছু ছিলো, আমি মনে হয়ে পুরাটা সময় নিজেই তাঁর বর্ণনার, চিত্রকল্পের মধ্যে ছিলাম। বই শেষ করার পরও কেমন একটা হাহাকার লেগে ছিল! 'জীবন আমার বোন' মাত্র পড়ে শেষ করলাম। বই সুখপাঠ্য, মাঝে মধ্যে অবশ্য উপমাতে আটকে যাচ্ছিলাম। তবে বই শেষ করার পর আবারো কেমন আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। এই বইটা পড়ার সময় আমারও আফসোস হলো কেন আরো আগে মাহমুদুল হক পড়লাম না!
একেবারেই লক্ষ্যভেদ!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
'পাশাপাশি' আর 'কাছাকাছি'- এর মধ্যে পার্থক্য কি, ত্রিমাত্রিক ভাই?
আর পাশাপাশি রাখলেই বা কি সমস্য? বেশ তো পড়তে পারছি! বর্ণনা আর উপমায়!
যাইহোক, আপনার আবেগদীপ্ত বুক-রিভিউ ভালই লাগল।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
পাশাপাশি আর কাছাকাছির ব্যাখ্যা দিতে সম্ভবত পারব না। তবে উপমা আর ভাষার ব্যবহারে দুজনের মুন্সিয়ানা আমাকে আচ্ছন্ন করেছে। দুজনের হাজার পার্থক্যের কারনে তাদের একেবারে পাশাপাশি তো রাখা গেল না, কিন্তু মাহমুদুল হক পড়তে গিয়ে যেহেতু ইলিয়াসের কথা মনে হয়ে গেল, সেই হিসেবে কাছাকাছি না রেখে উপায় কী!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার রিভিউ কিংবা আবেগময় প্রকাশ ভালো লেগেছে।
বইটি পড়ে তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা আরও একটু হলে কাটুক এই প্রত্যাশা করি।
অনেক ধন্যবাদ।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
লেখায় ১০ কেজি ঝোলা
আমি কালো বরফ পড়ে কদিন যে কি রকম ঘোরের মধ্যে ছিলাম ! যাকে বলে একেবারে স্পেল বাউন্ড হয়ে গিয়েছিলাম ! জীবন আমার বোন পড়ি পড়ি করেও পড়া হয়নি । আপনার লেখাটা পড়ে বইটা ভীষণ পড়তে ইচ্ছে করছে । দুয়েক দিনের মধ্যে পড়ে ফেলব ।
তাহসিন রেজা
পড়ে ফেলুন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কালো বরফ অসাধারন আবেগ আর উপমার সমাহারে অসাধারন এক লেখা।
জীবন আমার বোন বইটা পড়া হয়নি, আপনার রিভিউ পড়ে পড়ার ভীষন আগ্রহবোধ করছি।
মাসুদ সজীব
পড়ে ফেলেন মাসুদ ভাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আবেগটা মন ছুঁয়ে গেল কবি ভাই, ভীষণ আগ্রহ হচ্ছে বইটি পড়ার।
আশা করি খুব দ্রুত পড়ে ফেলব।
রিভিউ ভাল লেগেছে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
পড়ে ফেলুন। পড়ে আপনার অনুভূতি জানিয়ে লিখে ফেলুন কিছু একটা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গত পরশু আমার ঘরে এক অতিথি (তিনিও মোটামুটি পড়ুয়া) এসে বুক শেলফ দেখতে দেখতে বললেন- আপনার প্রিয় লেখক কে? বললাম- অনেকেই, তবে মাহমুদুল হক আর হুমায়ূন আযাদ তালিকার একে আর দুয়ে। হুমায়ূন আযাদকে চিনলেও মাহমুদুল হককে তিনি চেনেন না।
দীর্ঘশ্বাস___
'জীবন আমার বোন' এক কথায় অসাধারণ, তবে 'কালো বরফ'কে আমি এক ধাপ এগিয়ে রাখবো।
আপনার লেখা চমৎকার হয়েছে।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
হুম মাহমুদুল হকের নাম আমি জেনেছি দুই কি তিন বছর আগে।
কালো বরফকে আমিও এগিয়ে রাখব, লিটারেচার হিসেবে। কিন্তু 'জীবন আমার বোন' এর টানাপোড়েনের সাথে আমার সাম্প্রতিক সময়ের টানাপোড়েনের অদ্ভুত সাজুয্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। মূলত সে কারনেই লিখতে বসা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মাহমুদুল হকের বই প্রবাসে পাবার উপায় কি?
প্রবাসে পাওয়ার উপায় জানা নেই মুর্শেদ ভাই, কোন বাংলা বই পাবার উপায়ই জানা নেই আসলে। মাহমুদুল হকের তিনটা বইএর স্ক্যান্ড কপি আছে পিডিএফ আকারে। সেটা চাইলে পাঠাতে পারি।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
১।
এইভাবে আগে ভেবে দেখিনি কখনো
২। বইটা লিস্টিতে রাখলাম।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে তো দেখাই যায় না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার প্রোপিকে অবশ্য আপনাকে বেশ দেখা যাচ্ছে।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনার দৃষ্টিকে সংযত করুন। লাইনে আসুন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মাহমুদুল হক খুব বেশী পড়া হয়নি। কিশোর বয়সে পড়েছিলাম "কুশল ও চিক্কোর মারণ কাবুক" - শব্দের যে রঙ হতে পারে এই ধারনাটাই আমার পৃথিবী আলোড়িত করে দিয়েছিল।
পরে মাহমুদুল হকের যে কয়টা লেখা পড়েছি, অদ্ভুত এক মুগ্ধতা বিহবল করে রেখেছিল।
____________________________
মাহমুদুল হকের সব পড়তে হবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
খুব সম্ভবতঃ মাহমুদুল হকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে ১৯৮৩ সালে, তাঁর গল্প 'হৈরব ও ভৈরব' পাঠের মধ্য দিয়ে, আমি তখন নবম শ্রেণির ছাত্র। মহফিল হক সম্পাদিত, রংপুর কবিসভা প্রকাশিত, 'বাংলাদেশের গল্প' নামে মোটামুটিভাবে প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশের গল্পের এমন একটি সংকলনে গল্পটি সংকলিত হয়। তখন মাহমুদুল হক আজকের মতন তেমন আলোচিত ছিলেন না, কিন্তু ঐ গল্পটিতে শব্দশৈলীর এক বিস্ময় তিনি রচনা করেছিলেন। সেটি এমনই বিস্ময় যে, বিস্ময়াভিভূত হতে গিয়ে পাঠের গতি স্তম্ভিত হয়ে পড়ে না, বরং ফল্গুধারার মতই তা বেগবান হয়। তবু তাঁর উপন্যাস কিম্বা জিগাতলার কোন একটি বাড়িতে যাপিত নিভৃত জীবনের গল্পের সাথে আমার সচলে লিখবার আগ অবধি কোন পরিচিতি ছিল না।
মনে আছে, একদিন সচল নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, "ধুর মিয়া, 'কালোবরফ' পড়েন নাই, আপনার জীবনটাই বৃথা!" নজরুলের পাঠ্যাভাস, বই ও বৌভাগ্যে আমি বরাবরই ঈর্ষান্বিত। তাই, তাঁর উক্তিটি আমি নির্দ্বিধায় মেনে নিই। 'কালোবরফ', 'জীবন আমার বোন', 'খেলাঘর' পড়ি। বইপড়ুয়া নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে তাৎক্ষণিক পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় লিখি, "কালোবরফের মাহমুদুল হক জীবন আমার বোনে এসে আরো অনেক পরিণত হয়েছেন"। নজরুল ভুল বুঝে আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, "কালোবরফ কি তবে পরিণত নয়?" আমি তা বলিনি। বাংলা গদ্যে প্রভুত্ব করার যে ক্ষমতা মাহমুদুল হক কালোবরফে দেখিয়েছেন আমার এই প্রতিক্রিয়াটি ছিল সেটিকে সমর্থন করেই বরং জীবন আমার বোনে তার মহীরূহ হয়ে বিকাশের লক্ষণকেই ইঙ্গিত করেছিল।
পরবর্তিতে বইপড়ুয়াতে আহমেদ মোস্তফা কামালের সাথে পরিচিতির সুবাদে মাহমুদুল হক সম্পর্কে আরো বেশি জানার সুযোগ প্রসারিত হয়। আমি এটা, এটা এবং এটা পড়ি। তারপর নিজের মতো করে আবার ভাবি। আমার কেন জানি মনে হয় মাহমুদুল হকের সাথে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বিস্তর ফারাক আছে। তিনি নিজস্ব বৈশিষ্টে দীপ্যমান একেবারেই এক ভিন্ন মেজাজের লেখক। বরং অনুজ শহীদুল জহিরের মাঝে চকিতে চকিতে তাঁর ছায়াপাত দেখতে পাই।
আপনার লেখাটি আবেগ মথিত, বিস্ময়স্পৃষ্ট বললেও বোধকরি অত্যুক্তি হবে না। সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক, শহীদুল জহির --- এঁরা যতবেশি আলোচিত ও অনূদিত হবেন, তাদের ও আমাদের জন্য বোধকরি ততই ভালো।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
চমৎকার রোমেল ভাই। মোস্তফা কামাল ভাই আপনাকে যে লিঙ্কগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখা ভাল হোক মন্দ হোক, লেখার পরে এই আলোচনাগুলোর জন্যেই আসলে লেখার লোভ সামলানো যায় না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মাহমুদুল হক,বিশেষ করে কালোবরফ এর মাহমুদুল হকের কথা অনেকের মুখে শুনেছি।লিস্টিতে আগেই এডানো ছিল।কিন্তু চমৎকার রিভিউ আর এত অসাধারণ সব মন্তব্যের পরে এইবার মাহমুদুল হক না পড়া পর্যন্ত শান্তি পামু না নিশ্চিত।
কাক্কেশ্বর কুচকুচে
পড়ে ফেলেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
খুব ভালো রিভিউ, দারুণ লাগলো!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
অনেক ধইন্যবাদ রাজিবভাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মাহমুদুল হকের নিরাপদ তন্দ্রা এবং মানুষ মানুষ খেলাও পড়ুন। মানুষ মানুষ খেলার মত গথিক ঘরানার গল্পের কালেকশান আমি বাংলাতে আর পড়ি নাই।
ওয়াইফাই ক্যানসার
মাহমুদুল হকের সবই পড়ব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ আপনার সাজেশানের জন্য।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অসাধারণ লাগলো। এত ভাল লিখেছ শান্ত যে কি বলব! তোমার কাছ থেকে ভাই আরও আলোচনা আশা করব। কেবলই হাতে এল 'অনুর পাঠশালা' আর 'কালো বরফ।' পড়ে ফেলি বাবা তাড়াতাড়ি!
অনেক ধন্যবাদ মনি ভাই। কত কিছু নিয়ে যে আলোচনা করার আছে, কিন্তু লেখাটা ঠিক হয়ে ওঠে না। সময় পেলে বইগুলো পড়ে আপনিও একটা প্রতিক্রিয়া লিখে ফেলতে পারেন কিন্তু। আগ্রহ নিয়ে পড়ব।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নতুন মন্তব্য করুন