চারিদিকে একেবারে বরফ টরফ জমে একাকার। টানা দুইদিনের তুষারপাতে একেবারে অচলাবস্থার কাছাকাছি পৌছে গেছে শহরটা। এর মধ্যে দশ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাও অসম্ভবের কাছাকাছি কাজ। মোবাইল স্ক্রিনটা দেখে নেয় চট করে, তাপমাত্রা মাইনাস এগার দেখাচ্ছে। এখানে আবার তাপমাত্রার সাথে আরেকটা জিনিস লেখা থাকে, যেটাকে বলে ‘ফিলস লাইক’, দেশে থাকতে এই ব্যাপারে তার কোন ধারণাই ছিল না। হুহু করে ঠান্ডা বাতাসও বইছে, তাপমাত্রা মাইনাস এগার হলেও ‘ফিলস লাইক’ দেখাচ্ছে মাইনাস আঠার। প্রায় বিশ মিনিট ধরে বাইরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এই কনকনে ঠান্ডায়। হাতমোজা আর কানঢাকা টুপিটা পরেও ঠান্ডাকে আটকে রাখা যাচ্ছে না মোটেই। বারবার ফোনে চেষ্টা করেছে ইমরানকে ধরার, কিন্তু ফোন বেজে বেজে থেমে যাচ্ছে বারবার।
বরফের ভেতরে দাঁড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে ইমরানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে ওর বাসার নিচে। ইন্টারকমের নাম্বার লেখা আছে যদিও ওখানেই, ইমরান হাসান, একটা হ্যাশ চেপে জিরো ওয়ান থ্রি চাপলেই রিং বাজবে। কিন্তু সেটা চেপে বাসায় ঢুকে যাওয়া ঠিক হবে কিনা সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। বাসায় সম্ভবত ইমরান নেই, নামাজ পড়তে মসজিদে যাবার কথা। ওকেও যেতে বলেছিল, একটু গাঁইগুঁই করায় ওকে বাসার নিচে আটটার দিকে চলে আসতে বলেছে ইমরান। কিন্তু প্রায় সাড়ে আটটা বাঁজতে চলল, ইমরানের দেখা নেই। ইমরানের স্ত্রীর বাসায়ই থাকার কথা, কিন্তু একটা অস্বস্তি কাজ করছে ভেতরে। বাসায় সম্ভবত ওর স্ত্রী একাই আছে। হুট করে একা একা বাসায় ঢুকে পড়লে কে কী মনে করে সেটা ভাবছে। আবার আর কিছুক্ষন এভাবে এখানে থাকলে মনে হচ্ছে ফ্রস্টবাইট হয়ে যেতে পারে, কান আর হাতের আঙ্গুল জমে যাচ্ছে রীতিমত। এখানে আসার আগে কে যেন গল্প করেছিল, ঠান্ডায় কার যেন একবার কান জমে বরফ হয়ে গেছিল, পরে কান নাকি কেটে কেটে ফেলে দিতে হয়েছিল। কে জানে সত্যি কিনা, মনে মনে ভাবে, বাসায় গিয়ে গুগল সার্চ করে দেখতে হবে ফ্রস্টবাইটের ব্যাপারে। ঢুকবে ঢুকবে করেও তাই ঢুক্তে পারে না। এখানকার লোকজন এখনও সেভাবে চেনা হয়নি ওর। এইসব সামান্য ঘটনাকে তিল থেকে তাল বানানোর মত লোক অনেক আছে এই ব্যাপারে বেশ ভাল ধারণা আছে ওর। তাই শীতের মধ্যে কষ্ট হলেও অপেক্ষা করতেই হবে। অস্থির হয়ে আরেকবার ডায়াল করে ইমরানের ফোনে। এইবার ফোন ধরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে জানা যায়।
ইমরানের বাসায় আগে আসা হয় নি ওর। অবশ্য এই শহরেই ও নতুন। আসলে দেশের বাইরেই এই প্রথম। অনেক দিন থেকেই ইমরান বলছে বাসায় যেতে, সময় করে উঠতে পারে নি এতদিন পড়াশোনার চাপে। আজকে মিডটার্ম ব্রেকের সুযোগে তাই একটু সামাজিকীকরণের চেষ্টা। কারও বাসায় এখন পর্যন্ত না যাওয়া হলেও অনেকের সাথেই বেশ ভাল খাতির হয়ে গেছে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে এইসব ভাবতে হয়। ফ্রাইডে নাইট ছাড়া অন্য কোন দিন হলে এতক্ষণ বেশিরভাগ বাড়ির আলো দেখা যেত না, শুক্রবার রাতটা এখানে অনেকেই একটু পার্টি করে ক্লাবিং করে কাটায়, বিশেষ করে এখানকার লোকজন। শীতকালে সেটাই সম্ভবত এখানকার সবচেয়ে সহজ আর আরামদায়ক কাজ। একটু ক্লাবিং, বন্ধুদের সাথে ঘুরে ফিরে একটু আধটু মদ্যপান, একটু নাচানাচি, সিঙ্গেল যারা তাদের জন্য সঙ্গী খুঁজে পাবারও একটা ভাল উপায়ও বটে। একদিন এখানকার বন্ধুদের সাথে ঘুরে আসতে হবে, সবকিছুর একটা অভিজ্ঞতা থাকা ভাল, মনে মনে সেরকমই ভেবে রেখেছে। দেশের বাইরে যেহেতু চলেই এসেছে সবকিছু দেশের মত করে ভাবলে চলবে কেন। কথাই তো আছে ‘যস্মিন দেশে যদাচার’। এইসব ভাবতে ভাবতে ইমরানের গাড়ি এসে থামে। গাড়ি থেকে আরও কয়েকজন লোক নামে, একজনকে চেনে ও, রফিক ভাই, বাকিরা সম্ভবত বাংলাদেশি না, বোঝা যায় নামাজ পড়ে এসেছে ইমরানের সাথেই।
বাকিরা চলে যায় পাশের অ্যাপার্টমেন্টের দিকে। ইমরান আর রফিক এগিয়ে আসে। বারবার সরি বলে দেরি করার জন্য। মনে মনে মেজাজ একটু খারাপ হলেও হাসিমুখে ব্যাপারটা কাটিয়ে যায়। ভেতরে ঢুকে একটু স্বস্তি পায় এতক্ষণে। বাসায় গিয়ে লিভিংরুমে বসে পড়ে সবাই। বেশ চমৎকার সাজানো গোছানো রুম। ও একা থাকে কয়েকজন ব্যাচেলরের সাথে, একেবারেই অগোছালো জীবন যাপন। তাই ঘরে ঢুকেই গোছানো টিপটপ চারিদিক দেখে মন ভাল হয়ে যায় কিছুটা। বাসার কথা মনে হয়। আরও দুয়েকজনের আসার কথা আশেপাশেই বাসা ওদের। ইমরান ফোন করে ওদেরকে।
হেলালও অপেক্ষা করে থাকে বাকিদের আসার জন্য। ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে। সেই সকালে খেয়ে বের হয়েছিল সারাদিন তেমন কিছু খাওয়া হয়নি। দুপুরে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে একটা জুনিয়র চিকেন, কিন্তু তাতে পেটের কোনাও ভরেনি ওর। টেবিলে সাজানো অনেক রকম খাবার দেখে পেটে মোচড় দেয়, মনটা ভাল হয়ে যায় ওর। এখানে আসার পর অনেকদিন ভালমন্দ খাওয়া হয়নি। নিজে রান্না করে খেলে কীইবা এমন খাওয়া যায়। কোনমতে মুখে ঢোকানোর মত কিছুমিছু রান্না করে খাওয়া হয়। এতসব রান্না দেখে তাই এতক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য যে সামান্য মেজাজ খারাপ ছিল সেটা ভুলে যায়। মনে মনে ভাবে এতদিন ধরে ইমরান ভাই আসতে বলছে বাড়িতে, আরও আগেই আসা উচিৎ ছিল। আপুর সাথেও কথা হয়। আপু চমৎকার মানুষ।
কথা বলতে বলতে বাকি দু’জনও চলে আসে, সাইফ আর জামাল। সবার সাথেই আগে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে ক্যম্পাসে, তাই নতুন করে পরিচয়ের ঝামেলায় যেতে হয় না। সবাই এসে গেলে খাবার টেবিলে হানা দেয় সবাই।
হেলাল এখানকার কার্টেসির ব্যাপারস্যাপার এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি, কার্টেসির ব্যাপারে এমনিতেই ও খুব একটা সুবিধার না। প্রথম কারও বাসায় আসা এখানে এসে, তাই বাসা থেকে নিজে মুরগি রান্না করে এনেছে, এটা অবশ্য ওর মায়ের পরামর্শ। ও ব্যাগ থেকে একটা টিফিন বক্স বের করে বলে, “ভাই কালকে চিকেন রান্না করছিলাম বাসায় ছিল আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম তাই”। বের করে গরম করার জন্য ওভেনে ঢুকায়। সবাই হেসে ওঠে একটু, সবাই বলে, "ইমরান ভাইয়ের বাসায় কেউ খাবার নিয়ে আসে না”। আপু আর ইমরান ভাইও খাবার নিয়ে আসার জন্য মৃদু ভর্ৎসনা করে। এটা অবশ্য স্বাভাবিক ও পাত্তা দেয় না। ওভেন থেকে গরম শেষে টিফিন বাটিটা টেবিলের এক কোনার রেখে দেয় রাখে। আপু বারবার বলতে থাকে, “তুমি শুধুশুধু আবার ঝামেলা করে এসব করতে গেছ কেন? আমাদের বাসায় আসলে আর কিছু নিয়ে আসবানা কখখনো”। মনে মনে বেশ খুশিই হয়ে ওঠে হেলাল, ভাবে, এখানে বেশ আদর যত্ন পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে।
হঠাৎ ইমরান বলে ওঠে, “হেলাল একটা কথা বলি কিছু মনে করবা না তো”। হেলাল বুঝতে পারে না কী এমন বলবে, তাই বলে, “আরে বলেন, সমস্যা কী, বলে ফেলেন”। “ চিকেন কিনছ কই থেকে?”, জিজ্ঞেস করে ইমরান ভাই। প্রশ্নের মাথামুন্ড বুঝতে পারে না ও। একটু অস্বস্তিতে পড়ে যায়। উওর দেয়, “কেন কই থেকে কিনব আবার? সুপারস্টোর!। আপনারা কই থেকে কেনেন?”
বাকিরা একটু মুখ চাওয়া চাওয়ি করে। হেলাল ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। সবার মধ্যে একটা অস্বস্তি দানা বেঁধে উঠেছে সেটা টের পাওয়া যায়। নিজেরা কিছুক্ষণ মুখ চাওয়া চাওয়ি করে আরেকবার। আবার মুখ খোলে ইমরান। রফিককে বলে, “তুমি বল রফিক, ও নতুন আসছে নাই জানতে পারে, আসলে আমাদেরই দোষ, ওকে আমাদেরই আগে বলা দরকার ছিল”।
হেলাল অস্বস্তি নিয়ে বসে থাকে। কিছুক্ষণ নীরবতার পরে রফিক বলতে শুরু করে, “তুমি তো কিছুই জানো না দেখি, সুপারস্টোরের চিকেন কি হালাল নাকি মিয়া”। চিকেনের আবার হালাল হারাম কী, ভাবতে ভাবতে বলে হেলাল, “চিকেন তো হালালই, চিকেন কবে থেকে হারাম হইল?” এবার মনে হয় ওদের অবাক হবার পালা, হেসে ওঠে ওরা সবাই, এবার ইমরান আর রফিক একসাথেই বলে ওঠে, “আর ঠিকমত জবাই না দিলে কি হালাল হয় নাকি, তুমি তো কিছুই জানোনা দেখি”।
হেলাল জিজ্ঞেস করে, “তাহলে চিকেন কই থেকে কেনেন আপনারা?” রফিক ভাই বলে ওঠে, “তুমি তো নামাজেও আস না, জুম্মার নামাজে মনে হয় দুই-একদিন দেখছি, এখানকার মুসলিম কমিউনিটির সাথে পরিচয় না হইলে তুমি জানবা কই থেকে! যে এরকম কত হারাম খাইবা, তার ঠিক আছে! আর আমরা তোমারে সতর্ক করি নাই বইলা গুনার ভাগীদার হব আমরা”।
একটু চিন্তিত হয়ে পরে হেলাল, বলে, “আলাদা হালাল মাংসের দোকান থাকে নাকি আবার? দেশে তো সব দোকান থেকেই মাংস কিনতাম। আমি তো জানিই না, জানলে না হয় ওখান থেকেই কিনব। কিন্তু চিকেনের মধ্যে যে আবার হালাল হারাম হয় এইটাই তো জানা ছিল না আমার, তা আমাকে একদিন চেনায়ে দিয়েন”। খুশি হয়ে ওঠে রফিক আর ইমরান, সম্ভবত একজন বিপথগামী মুসলিম ভাইকে পথে আনতে পারায় ব্যাকগ্রাউন্ডে নেকীর হিসাব নিকাশ চলতে থাকে। রফিক চেহারায় বেশ খুশি ফুটিয়ে বলে, “আমাদের ব্রাদার রেহানের একটা হালাল শপ আছে, আমরা সবাই তো ওখান থেকেই মাংস কিনি”। রেহানকে চেনে হেলাল, দেখা হয়েছে বেশ কয়েকদিন, ব্যাটা তো পাকিস্তানি মনে মনে ভাবে। ওদের বাসার আশে পাশেই থাকে, পাকিস্তানি জানার পর থেকেই ওকে এড়িয়ে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে হেলাল।
পাকিস্তান কথাটা শুনে একটু দমে যায় হেলাল। হালাল মাংস তো খাওয়া দরকার, তাই বলে পাকিস্তানীর দোকান থেকে হালাল মাংস কিনতে হবে? পাকিস্তানীদের দোকানে আবার হালাল জিনিস কীভাবে থাকে? হেলাল চুপ করে থাকে, কিছু বলে না। মনে মনে ভাবে, ভালোও তো হতে পারে, পাকিস্তানী মাত্রই তো আর নিশ্চয়ই খারাপ না। কিন্তু এই পাকিস্তানী কারও সাথে দেখা হলেই, মুখে একটা তেলতেলে হাসি ফুটিয়ে যখন ‘ব্রাদার’ বলে এগিয়ে আসে, ব্যাপারটাকে সে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না। তেলতেলে মুখের ‘ব্রাদার’ ডাক কেন সে সহ্য করতে পারেনা সেই ব্যাখ্যা তার নিজের কাছেও খুব পরিষ্কার না, কিন্তু সে চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পায়, সে পাকিস্তানী দোকান থেকে হালাল চিকেন কিনছে, আর দোকানদার তেলতেলে হাসিমুখে তাকে জিজ্ঞেস করছে, “হেয়ার ইজ ইওর চেঞ্জ ব্রাদার, জাঝাকাল্লাহু খায়রান”। হয়ত উর্দু বলারও একটা চেষ্টা করে দেখতে পারে ওর সাথে। হালাল মাংস কেনার ব্যাপারটাকে ওর রীতিমত দুঃস্বপ্নের মত মনে হয়। কিন্তু কী আর করা, হালাল মাংসের আর কোন ব্যবস্থা না থাকলে তো আর কোন উপায় নাই।
অনেকদিন পরে একজন অজ্ঞ আর বিপথগামী মুসলিম ভাই পেয়ে ইমরান আর রফিকও বেশ উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ওরা উত্তেজিত কন্ঠে বকে যেতে থাকে বেশ জোশের সাথে। বলে, “এখানে খাওয়া দাওয়ার ব্যপারে সাবধান থাকাই ভাল, দেখবা মনে হবে সব ঠিক আছে, কিন্তু এই শালার ইহুদি নাসারারা আমাদের ধর্ম ধ্বংসের পায়তারা করে রাখছে চারিদিকে, জালিমের দেশ, পারুটি কিনতে যাবা, একটা ব্র্যান্ড ছাড়া বাকি সবগুলাই কিন্ত হারাম, রুটি কিনবা দেখবা শালারা দিয়ে রাখছে শুয়োরের চর্বি, আইস্ক্রিমেও একই অবস্থা”।
চিন্তায় পড়ে যায় হেলাল। কী কী কিনেছে কোথা থেকে মাথার মধ্যে ভাসতে থাকে। পারুটি আইস্ক্রিম সবই তো কিনেছে, খেয়েছে না জেনে, ম্যাকডোনাল্ডেস আর কেএফসিতেও তো নিয়মিত খায়, নিশ্চয়ই ওখানেও জবাই ঠিকঠাক মত করে না। শুয়োরের চর্বি খেয়ে ফেলল নাকি। একটু চিন্তায় পড়ে যায়। দেশে থাকতে তো এত হিসাব করে চলতে হয়নি, কে কীভাবে মাংস জবাই করেছে, সেই খোঁজখবর নেয়ার তো দরকার পড়েনি দেশা থাকার সময়। “আইস্ক্রিমও পাকিস্তানি দোকান থেকে কিনতে হবে?” বেশ কৌতুকের সাথেই জিজ্ঞেস করে। কৌতুকের টোনটা মনের অজান্তেই চলে আসে কথার ভেতরে, কেন আসে সেটা নিজেও ঠিক বুঝতে পারে না।
ওর টিউটোরিয়াল সেশান বাকিরা বেশ ভালোই উপভোগ করছে বলে মনে হচ্ছে। সবাই বেশ হাসিমুখে বসে আছে। ইমরানের স্ত্রী মনে হয় একটু অস্বস্তিতে পড়েছে, প্রথম দিন হেলালকে বাসায় এনেই এরকম তালিম দেয়াটা মনে হচ্ছে ঠিক নিতে পারছে না সহজভাবে। এক বাটি মুরগী রান্না করে এসে যেন বেশ ভালভাবেই ফেঁসে গেছে হেলাল। ইমরানের স্ত্রী এবার হেলালকে একটু উদ্ধারের চেষ্টা করে। বলে, “তোমরা ওকে বাসায় ডেকে তো স্কুল খুলে বসছ, এখন খাওয়া দাওয়া কর, ওকে তালিম দেয়ার সময় আরও পাবা”। হেলালও যেন কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচে। সবার যেন হঠাৎ করে খেয়াল হয় কথায় কথায় রাতও বেশ হয়ে গেছে। ক্ষুধাটাও টের পায় সবাই হটাৎ করে। হালাল হারামের প্রসংগ চাপা পড়ে যায়, সবাই টেবিলের দিকে আগায় প্লেট নিয়ে খাবার তুলে নিতে থাকে। যদিও হেলালের রান্না করা মুরগীর বাটির দিকে কেউ হাত বাড়ায় না। ওটা বেশ নিঃসঙ্গভাবে টেবিলের এক কোনায় পড়ে থাকে।
খাবার প্লেট হাতে নিতেই আলাপের প্রসংগ পালটে যায়। কিছুক্ষণ রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলে। এই ব্যাপারে খুব বেশি হালানাগাদ না থাকায় আলোচনায় খুব একটা অংশগ্রহণ করতে পারে না। সবার আলোচনা শুনতে থাকে। মাঝে মাঝে দুই-একটা ফোঁড়ন কাটে। আলোচনা বার্সেলোনা থেকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে ঘুরে গ্রাজুয়েট লাইফের সংগ্রামে গিয়ে থামে। সেখান থেকে প্রফেসরের গুষ্টি উদ্ধার হয় কিছুক্ষণ, কে কবে দেশে ফিরে যাবে, দেশের এই দুরবস্থায় দেশে ফিরে যাওয়া যায় কিনা এইসব নিয়ে কথা হয়। এইসব কথা হতে হতে প্রসংগ আবার বদলায়। জামাল নামের ছেলেট জিজ্ঞেস করে, “ভাই ধুম থ্রি দেখছেন নাকি?” ইমরান আর রফিক একসাথে জবাব দেয়, “ধুরো ধুম থ্রি দেখে পুরাই হতাশ হইছি, এইটা কী করল ধুম থ্রি তে”, “আমির খান এইটা কী করল? ক্যাটরিনা ছাড়া দেখার মত কী আছে মুভিতে?”, বলে রফিক। হিন্দী সিনেমা খুব একটা দেখে না হেলাল, তবে ক্যাটরিনাকে তারও পছন্দ। ধুম থ্রির গান দেখেছে সে ইউটিউবে। হিন্দী বোঝেনা খুব একটা কিন্তু কী যেন একটা গানে ক্যাটরিনা “নিমা কামলি নিমা কামলি” বলতে বলতে গায়ের কাপর খুলতে থাকে সেটা নিয়ে আলোচনা চলে। সাইফ নামের ছেলেটা বলে সে দেখে নাই ধুম থ্রি, গানও দেখে নাই। নেটফ্লিক্সে আছে কিনা জিজ্ঞেস করে। সবাই বলে, “ভাল মুভি কি নেটফ্লিক্সে ছাড়ে নাকি?” বলার মধ্যে একটা বেশ রাগ প্রকাশ পায় সবার কন্ঠে।
এর মধ্যে ইমরান বলে, “হেলাল চিকেনটা নিও, তোমার ভাবী খুব ভাল রান্না করছে”। হেলাল উঠে টেবিল থেকে কয়েক টুকরো চিকেন তুলে নিয়ে আসে। আসলেই ভাল হয়েছে খেতে। রফিক ভাই টিভি স্ক্রিন চালু করে ইউটিউবে ‘কামলি ধুম থ্রি’ লিখে সার্চ দেয়। গান শুরু হয়, জামাল বলে, “ভাই একটু টেনে দেন, প্রথমে মজা নাই”। সবাই হেসে ওঠে। রফিক ভাই গানটা টেনে বেশ খানিকটা সামনে নিয়ে ছাড়ে। ক্যাটরিনা ততক্ষণে নীচের সাদা বড় প্যান্টটা খুলে ফেলেছে, ওপরে একটা শার্ট পরা, লম্বা লম্বা পায়ে একটা কালো হাফপ্যান্ট আর লম্বা মোজা পড়া। সবাই চোখ চকচক করে দেখতে থাকে। জামাল বলে, “ভাই মুভি যাই হোক ক্যাটরিনা কিন্তু নাচছে ভাল”। সবাই সম্মতি দেয়।
হেলালও সবার সাথে উপভোগ করতে থাকে। হেলাল ইমরানকে বলে, “ভাই আপনে তো চিকেন নিলেন না, শেষ হয়ে যাবে কিন্তু।” হেলালের কথা শুনে সবার টনক নড়ে, উঠে চিকেন নিয়ে আসে বাটি থেকে। পাকিস্তানি দোকানের হালাল চিকেন লেগ খেতে খেতে ওরা ক্যাটরিনার লম্বা লম্বা সুন্দর পা দু’টি দেখতে থাকে।
মন্তব্য
পাঞ্চিং লাইনটা সাঙ্ঘাতিক!
আমাদের আশে-পাশে এমন অসংখ্য ইমরান-রফিকের দেখা মেলে। এরা ব্যাক্তিজীবনে ইসলামের ধারে-কাছে দিয়েও যায় না, কিন্তু এদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সর্বত্র ভয়ানক সাম্প্রদায়িক গন্ধ! নগ্নতার জৌলুসে গা ভাসিয়ে দিতে আপত্তি নেই এদের, আপত্তি আছে একজন অমুসলিমকে সত্যিকারের মানুষের মর্যাদা দিতে! বিশ্বাস করুন, আমি এমন চরিত্রও দেখেছি, এক ওয়াক্ত নামাযও পড়ে না, সারাদিন মদ-মেয়ে নিয়ে হইহুল্লোড় করে বেড়ায়, অথচ হেফাজতের ১৩ দফাকে সমর্থন করে! এই উজবুকগুলোর মাথায় মনে হয় এই চিন্তাই কাজ করে যে, হেফাজতের হুজুরদের না মানলে ভয়ানক গুনাহ্ হবে; অথচ এত প্রিয় যে ধর্ম, তার কোন কিছুই প্রাকটিস করে না। এরা শুধু জানে ধর্মকে নিয়ে অহংকার করতে! এরা আসলে ধর্মকে ভালবাসে না, ধর্মীয় জাতীয়তাকেই ভালবাসে, অথচ ছাগু মস্তিষ্কের কারণে তা জানতেই পারে না এরা কখনো!
এদের চরিত্র নিয়ে একসময় লিখেছিলাম, যদিও সবাই ভেবেছিল, এই চরিত্রগুলোকে প্রমোট করার জন্যই বুঝি লেখা হয়েছে।
আপনি এই শব্দটিকে খুব পছন্দ করেন, তাই না?
এড়িয়ে যায় হবে নাকি?
এই জায়গাটা সবচেয়ে ভাল লেগেছে আমার।
যাই হোক, আপনার গল্পগুলোই বেশী ভাল লাগে আমার। গল্পে আপনার হাত কিন্তু দারুণ খোলে!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
কাছাকাছি শব্দটা পছন্দ করি কিনা খেয়াল করে দেখিনি, ভবিষ্যতে কোন কিছু লেখার সময় খেয়াল করতে হবে। আর ব্রাদার ডাকটা মনে হয় না কখনও সহ্য করতে পারব, সহ্য করতে চাইও না।
ভাল থাকবেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
প্রবাসের বাস্তব চিত্র । সত্যি লিখেছেন । আমরা জায়গামত সব ভুলে যাই ।
জোনাক পোকা
প্রবাস না সব জায়গায়ই আছে, আমাদের ভন্ডামি, ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। এক এক জায়গায় এক এক ভাবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনি কোন সিটিতে থাকেন, ভাই? ওদেরকে আমার সিটিতে পাঠায়ে দেন, আরকানসা'র মন্টিসেলোতে। কোত্থেকে যে হালাল মাংস পাবে, আর ক্যামনে খাবে, বড়ই চিন্তায় পড়ে গেলাম ওদেরকে নিয়ে। হি হি হি___
হেহে কোন স্পেসিফিক সিটির গল্প না এটা ভাই। সব শহরে একই অবস্থা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হেলালের হারাম হালাল বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন হয়ে গেল আমি ভাবছি তার রান্না করা মুরগির কী হলু!
বেচারার একবেলা ভরপেট খাওয়ার মত খাবারটা কি নস্টই হলু
নেটফিক্সে ধুম ১ এবং ২ যখন আছে আশা করা যায় অচিরেই ৩'ও এসে যাবে।
সাইদভাইকে টেনশন নিতে বারন করুন হেহেহে মজাক করলাম এট্টুক।
'এখানকার লোকজন এখনো চেনা হয়নি ওর' এই লাইনটার সাথে পরবর্তী লাইনের কেমন জানি একটু ঠোকাঠুকি আছে।
হেলাল কিন্তু নিজেই ভাবছে ঐ ব্যাটা পাকি...তার নামটাই উচ্চারণ করা হয়েছে শুধু ঠিক না?
যেকারনে
এ লাইনটি যায় না যেন।
কিছু টাইপো:
ঢুক্তে-ঢুকতে, কেটে কেটে(দু'বার হয়েছে), পারুটি(এটা টাইপো না যদিও, তবে সেভাবে ব্যবহার হতে দেখিনা)
'রেখে দেয় রাখে(হেলালের যখন তার রান্না মুরগির বক্সটা রাখছে' সেখানে পাবেন)'
জামাল নামের ছেলেট/ছেলেটা
ক্যম্পাস/ক্যাম্পাস
গল্প ভালো হয়েছে। শেষ লাইনটা তো লাজওয়াব
তেলতেলে 'ব্রাদার' না, আমার খুব প্রিয়সুরেলা ব্রাদার/সিস্টার
শুনে দেখেন তো পিত্তিজ্বলে কিনা? আরো অনেক গপসপ লিখুন কবি।
মনোযোগী পাঠকের মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আয়নাদি। প্লট এডিট করতে গিয়ে কয়েক জায়গায় কন্সিস্টেন্সি একটু হারিয়েছে দেখতে পাচ্ছি। চেষ্টা করছি ঠিক করে দেবার। তাড়াহুড়ার টাইপোগুলোও ঠিক করে দিচ্ছি।
শেষ লাইনটাই গল্প। নাহ 'ব্রাদার' যত মধুর সুরেই বলেন না ক্যান আমার সহ্য হবে না। গপসপ লেখার চেষ্টা তো করি আবজাব। আপনারা সাথে থাকলে চেষ্টা চলবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এহহে আমার নেটফ্লিক্স ভানাম্ভুল কিরাম রে এতসুন্দর গানটা শুনতে মন করলো না
আদব কায়দা পিতিমি থেকে ওঠেই যাচ্ছে দিনদিন
নাস্তিক বোলগার যত। হালাল চিকেনের লেগপিস চেখে দেখা আর হট চিকের লেগ চোখে দেখার মধ্যে কোনো পাপ আছে নাকি?
চিক যে কখন হালাল হয় আর কখন হারাম হয় বোঝা বড় শক্ত
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এই লুক এইখানে কি করে র্যা?
ছড়া বলি একটা ,
বিয়ে করে দিশেহারা
আমাদের কৌ
খালি খালি ঘুরছে
সাথে নিয়ে বৌ
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
যত্ত গাঁজা! এখনও একা একা বেচেলর জীবনই যাপন করিতেছি প্রায়...
কেনু গো?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম। কিছুদিন আগে ফেসবুকে বিখ্যাত একজনের উক্তি পড়েছিলাম এদেশের ধর্ম নিয়ে [আমার নাম ও উক্তি লাইন বাই লাইন মনে নাই তবে] এমন ছিল যে বাঙ্গালী কোনো ধর্মকে অবিকৃত রাখেনি, যা এ ভূমিতে এসেছে সবটাকেই নিজের সুবিধামত করে গুছিয়ে নিয়ে আপন করে নিয়েছে, সেটা আর্যধর্ম হোক কিবা ইসলাম। ৮০/৯০ এর দশকের বাচ্চারা এভাবেই বড় হয়েছে; জুম্মার নামায শুধু পড়েছে আবার মসজিদ থেকে ফিরেই ভাত খেতে খেতে এমটিভি দেখেছে। কেউ তাদের বলেনি এটা ভুল কারণ তারা একান্তভাবে কোন সংস্কৃতির চর্চা করেনি। তারা নিজেদের একটা সংস্কৃতি তৈরি করেছে। সেটা ঠিক/বেঠিক সেই তর্কে যাব না। কিন্তু তাই বলে তাদের ডাবল-স্ট্যান্ডার্ড ও বলব না।
পুরো লেখাটা একজন সদ্য নতুন দেশে পা দেওয়া, নিজের টাকায় কষ্ট করে রান্না নিয়ে কথা শুনে, তার অপচয় দেখে আহত হয়ে অন্যের খুঁত ধরার তাড়না থেকে লিখা। দৃষ্টিভঙ্গীটা একটু ন্যারো হয়ে গেল বলে মনে হচ্ছে।
লেখকের লেখা ভাল না লাগতে পারে তাই বলে লেখকের কল্পনা শক্তির ওপর ভরসা রাখবেন না এটা কি ঠিক হল? যে কোন গল্প লিখলেই সেটা কি লেখকের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা হতে হবে? গল্প কোন দৃষ্টিভঙ্গি নয়, গল্প একটা গল্প একটা ঘটনা, সেটা ভাল লাগুক বা নাই লাগুক সেটা একটা গল্প বটে।
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কি গল্পে কোথাও বলা হয়েছে? শুধু দুইটা প্যারালাল ঘটনা দেখানোর চেষ্টা করেছি। তাতে আপনারই না মনে হল ডাবল স্ট্যান্ডার্ড!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কল্পনার উপর ভরসা রাখলাম না কে বলল? লেখকের দৃষ্টিভঙ্গির উপর গল্পের প্লট দাঁড়িয়ে থাকে।
কমেন্টে বলেছেন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড তাই বললাম। দুইটা প্যারালাল ঘটনা আপনার কাছে পরস্পরবিরোধী মনে হয়েছে, সেটা আরো বিশ/ত্রিশ বছর আগে মানুষজনের মনে হলে এভাবে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগতে হত না।
লেখক হিসাবে আমি চেষ্টা করি দৃষ্টিভঙ্গিটাকে পাশে সরিয়ে রাখতে শুধু ঘটনাটাকে তুলে আনতে। গল্পের চরিত্রের দৃষ্টিভঙ্গি লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি নাও হতে পারে। লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি সরিয়ে কোনদিন গল্প লিখতে পারব সেই আশা করছি নিজেকে নিয়ে।
স্ববিরোধিতা আমাদের সবার মধ্যেই আছে কম বা বেশি, কিন্তু সেটাকে স্বীকার করতে চাই না আমরা। স্বীকার প্রক্রিয়া শুরু হলে সেটাকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও করা যাবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি তো উত্তরণের পথ দেখিনা। পুরোপুরি হালাল হতে গেলে মৌলবাদী হয়ে যায় আর না হলে নাস্তিক হয়ে যেতে হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে হলেও কিছু আইডিয়া দেন তো ভাই
নো দাইসেলফ, এ তো আজকের কথা নয় অনেক পুরানো কথা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পুরোপুরি হালাল হতে গেলে মৌলবাদী হতে হবে কেন! মৌলবাদীতাতো সব ধর্মেই রয়েছে। এমনকি জঙ্গি বা মৌলবাদি নাস্তিক ও রয়েছে। নিজের ধ্যান ধারণা অন্যের উপর চাপিয়ে না দিলেই তো হয়। আমার হালাল বাবাদের সাথে স্ট্রিপক্লাবে জাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন আপনি হালাল খাইতেই পারেন, আপনার ইচ্ছে। কিন্তু তাই বলে যে খায়না তাকে এই নিয়া যাচাই করলে মুশকিল। মজার ব্যাপার হলো দেশে থাকতে হোটেলে কুত্তা বিড়াল খাইলাম কিনা নাকি হালাল টাকায় বাজার হইলো কিনা এই নিয়া কারো কোন টেনশন দেখিনাই। কিন্তু বিদেশে আইসা হারাম/হালাল নিয়া যেই মাতামাতি সেইটা দেশে করলে দেশের দূর্নীতির বাধাটা প্রথমে পরিবার থেকেই আসত।
এক পাকির সঙ্গে পরিচয় ছিল। সে নিয়মিত নামাজ পড়ত; খাওয়াদাওয়ার সময় খুব হালাল-হারাম মেনে চলতো; মদ-সিগারেট কিচ্ছু ধরত না। কিন্তু পাশাপাশি ইন্টারনেটে পর্ণগ্রাফিও দেখত; আমি যখনই স্ট্রিপ ক্লাবে যেতাম, সেও আমার সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরত। একদিন বাধ্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম মদ খাওয়ায় তার আপত্তি আছে, কিন্তু নগ্ন নারীদেহ দেখার ব্যাপারে তার এত আগ্রহ কেন। উত্তরে বলল (আমি অনুবাদ করছি), "মদ হারাম, নারীদেহ হল আরাম।" এই হল মুসলমানদের নীতিবোধ!
Emran
সাফি ভাই এই ধরণের আচরণের ক্ষেত্রে আমার দুইটা ঝামেলা মনে হয়
১) অন্যকে পুশ করা, নিজে যা করে সেটা অন্যকেও করতে হবে এমন চাপ দেয়া।
২) নিজের মধ্যে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লালন করে চলা, সেই ডাবল স্ট্যান্ডার্ডগুলা যদি মানুষ অ্যাড্রেস করত তাহলে অনেক সমস্যাই দূর হয়ে যাইত।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
মেলাদিন পর আপনার গল্প পড়লাম, থিম ভালো লাগছে। ইয়ে মানে ফেরার ফিরে আসার কোন খবর আছে কবি?
হেহে আপনার কমেন্ট দেখলে ভাল লাগে। ফেরা নিশ্চয়ই ফিরবে। অন্তত আপনার জন্য হলেও ফেরা উচিৎ।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হে হে, এই যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে কত যে গেছি শুরুর দিকে। দাওয়াতে গিয়ে আযান দিয়ে হালাল মুরগি খোঁজা (মানে দুইবার ফোন দিয়ে মনে করিয়ে দেওয়া যে তারা হালাল মুরগি ছাড়া খায় না, আর তারপর দাওয়াতে সবাইকে শুনিয়ে জিজ্ঞেস করা মাংস হালাল কি না) লোকে ফেসবুকে সমানে ডেইলি মোশনে ইয়ে ভিডিও শেয়ার দিত। গিয়ে বলতে ইচ্ছে হত, ভাই দেখলে দেখেন, প্রাইভেসিটা ঠিক করলে দেখেন।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হেহে আপু এই অভিজ্ঞতা মনে হয় অসংখ্য মানুষের। ব্যাপারগুলা এরা কীভাবে প্রসেস করে আমি ঠিক ভেবে পাইনা। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে এইরকম ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ব্রেইনে কিভাবে প্রসেসিং হয়!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বিষয়ের জন্য ৫ তারা। লেখা, আয়না-দিদি যেমন বলেছে, আর একটু গোছানোর পরিসর রয়েছে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
হ্যাঁ গোছাতে তো হবেই। কিছুদিন পরে নিজে পরলেই অনেক ভুলভাল চোখে পড়বে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আয়নামতির ব্যান চাই - সে শুধু আমার মন্তব্য আগেই করে ফেলে
কবির লেখা অনেকদিন পর পড়লাম - মাঝে লেখা কবিতাটি (এর আগের পোস্ট) কবে দিলেন?! চোখ এড়িয়ে গেছে। তবে 'জীবন কি আমার বোন?' মিস করিনি... লেখা চলুক
হেহে সামান্য ভুল জায়গায় মন্তব্য করে ফেলছেন মনে হচ্ছে। ব্যাপারনা।
কবিতা দিলাম ঐ যে ভালবাসা দিবসে! লোকজনের ভালবাসার বহর দেখে। আপনি যখন বলছেন লেখা তো চালাতেই হবে স্যামদা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পিলিইজজজ লাগে বেন করার বেপারটা নিয়ে এট্টু কোমরবেঁধে নামেন। এই তালে বিখ্যাত হয়ে যাই
শান্ত ভাই, লেখার টপিক জটিল পছন্দ হয়েছে।
একদম মনে হল বিদেশের দৈনন্দিন জীবন দেখলাম।
এইসব হিপক্রেটরা বিদেশের বদনাম করতে করতে মুখে ফেনা তুলে দেয় কিন্তু দেশেও ফিরে যায়না কখনও। কি অদ্ভুত জীব!!!
জায়নামাজ না থাকা অপরাধ কিন্তু জাতীয় পতাকা বা একটা বই না থাকাটাই স্বাভাবিক।
আর "ব্রাদার" বিষয়ক ভালবাসার কথা, এই গল্পে আর নাই বা বললাম !!!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
হেহে পুরুষ মানুষের পুস্টে মেয়েদের কমেন্ট করা ঠিক না। গুনাহ হয় সিস্টার!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
শফি হুজুরের থেকে সবক নেওয়া লাগবে। বলগে লেখে লেখে নাস্তিক হয়ে যাচ্ছি।
সব দুষ সচলের!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
হা হা হা! জোশ গল্প!
আমি ছয় মাস ধরে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায়, তবে ইমরানের গুষ্টিরা ধারেকাছে ভিড়তে পারে নি। কোনো পাত্তাই দেই না। জ্যাকসন হাইটসে বাজার করতে গেলে চোখে একটা হিংস্র "উষ্টা মারুম" লুক নিয়ে ঘুরি, ঐটা দেখে বিশেষ একটা আগ্রহী হয় না কেউ!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আমি এইটাও শুনছি যে হালাল মাংসের নাকি স্বাদই আলাদা। শুধু উষ্টা না মাইরা একটু খেয়ে দেখেন। দুনিয়া ও আখিরাত দোজাহানের নেকী হাসিল হবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গল্পটা ভালোই লাগলো
আরে প্রিয় গল্পকার সুহান যে! খুশি হয়ে গেলাম।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
যা লিখেছেন না দাদা, কি আর বলব !! এইগুলারে স্ট্রেইট উষ্টা দেওয়া দরকার।
ইয়ে মানে ফেরাটা এবার ফিরলে ভালো হয় আরকি। আর কত দিন অপেক্ষা করাইবেন !
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
ফেরার পাঠক পেলে আমি একটা অদ্ভুত ঝামেলায় পড়ে যাই। একদিকে খুবই আনন্দ পাই, আমার মত অর্বাচীন লেখকের সামান্য এক লেখাকে এখনও কিছু পাঠক মনে রেখেছেন আবার সেটা উদ্যোগ নিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছেন বলে। অন্যদিকে খারাপ লাগে বাকিটা আর লেখা হচ্ছে না বা লিখতে পারছি না বলে। তবে আশা করি শেষ করব অবশ্যই। ভাল থাকুন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নতুন মন্তব্য করুন