ভাবছি।
অলস দুপুর, টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে বাইরে, এখানে যেমন পড়ে অনেকটা সেরকম টুপটাপ। বৃষ্টির ছাট থেকে কাচে লেগে যাওয়া পানির ফোঁটা খুব সন্তর্পনে জানালার কাচ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অভিকর্ষের টানে। আমি তাকিয়ে আছি সেই অনিবার্য পতনের দিকে, তাকিয়ে আছি জানালা দিয়ে বৈশিষ্ট্যহীন একলা আকাশের দিকে। চিৎ হয়ে শুয়ে আছি, আর ভাবছি। আমি বেশ ভাবি, মাঝেসাঝে, এই আবজাব, অর্থহীন, অলস, বৈশিষ্ট্যহীন, অমৌলিক আর এলোমেলো সব ভাবনা।
একটা কবিতার লাইন ঘুরছে মাথায় বেশ কয়েকদিন ধরেই, আটকে গেছে কোথাও ছিঁড়ে যাওয়া ঘুড়ির মত নিঃসঙ্গ। আমার এরকম হয়, একলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে হয়, কখনও আবার হয় না, আবার কখনও তাকিয়ে না থাকলেও হয়। রুদ্রর একটা নিঃসঙ্গ কবিতা, “থাকুক তোমার একটু স্মৃতি থাকুক, একলা থাকার খুব দুপুরে, একটি ঘুঘু ডাকুক”। মনে হয়, ডাকলে ডাকুক, রুদ্রের মত এত সুন্দর করে কে কবে কোন ঘুঘুকে ডাকতে বলেছে! চিৎ হয়ে শুয়ে ভাবছি। আমি বেশ ভাবি, মাঝেসাঝে, এইসব ছেঁড়াখোঁড়া, জীর্ণ, অস্বচ্ছ, ছায়ার মত অশরীরি ভাবনা।
পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে, জানালায় লেগে থাকা ছাটের মত সন্তর্পনে স্মৃতির জানালায় লেপ্টে থাকে কিছু পুরোনো দিনের গল্প, আবার কিছু গল্প শুকিয়ে যায় বিকেলের রোদে, কিছু গল্প পিছলে নামতে নামতে হারিয়ে যায়। স্মৃতি কিছুটা ভ্রান্তি, অথবা কিছুটা কল্পনা, আবার কিছুটা বিস্মৃতিও হয়ত স্মৃতির অংশ। স্মৃতি সম্ভবত কিছুটা স্মৃতি-শূন্যতা তা নাহলে স্মৃতি খুব সম্ভবত ইতিহাস হত, অথবা ঘোলা হয়ে যাওয়া, অনেকটা পুরোনো ছবির মত, অ্যালবামে আটকে রাখলেও কিছুটা রঙ বদলাবে, চটে যাবে কিছু অংশ, সেই চটে যাওয়া অংশটাই জলজ্যান্ত একটা ছবিকে স্মৃতি বানিয়ে দেয়। সেই হিসেবে দেখলে এখনকার স্মৃতিতে বিস্মৃতির অংশ কম, হয়ত অনেকটা ইতিহাসের মত, অন্তত স্মৃতি যদি ছবিতে আটকে রাখা হয় সেক্ষেত্রে। ডিজিটাল ছবিতে আর সেই রঙ বদলানো বিস্মৃতি কই! সেলফোন খুলে গ্যালারীতে ঢুকি। বিভিন্ন সময় তোলা ছবিগুলো দেখে যাই। কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় সেলফি নিয়ে রাখছি। বিস্মৃতি না হোক, কিছু ইতিহাস না হয় জমা থাকুক। শুয়ে শুয়েই একটা সেলফি নিয়ে নিলাম। থাকুক আমার একটু স্মৃতি থাকুক, অথবা ইতিহাস।
ভাবছি। কারন আমি ভাবি। বেশ ভাবি, এলোমেলো, ছন্নছাড়া। পুরোনো অনেক কথা মনে পড়ে, অনেক পড়েনা। একটা মেয়েকে পছন্দ করতাম, আরেকটা মেয়েকেও করতাম, তার আগে। তার আগের স্মৃতি কিছুটা বিস্মৃতি। ওদের কথা মনে পড়ে, ওর কথা মনে পড়ে। ওকে নিয়ে ভাবি, নিঃসঙ্গ, শীতল সেইসব ভাবনা। ভাবতে ভাল লাগে। একদিন সোমবারে হাত ধরেছিলাম, সম্ভবত আমিই, নাকি ও, হতেও পারে। একদিন মঙ্গলবারে কিছুটা উষ্ণ হয়েছিলাম আমি, কিছুটা হয়ত ও। বুধবারে কিছু হয়েছিল কিনা মনে নেই, বৃহস্পতি তো বেশ ব্যস্ত থাকতাম আর শুক্রবারের সব কথা মনে পড়ে না, শনি রবি বোধহয় ভালোই কেটেছিল, আবার কিছু শনি রবি ভাল কাটেনি, কিছু সোম আর মঙ্গলও কাটেনি। কিছু বৃহস্পতিবার ঠিক কাজ ফাঁকি দিতাম। ভাবছি ওকে নিয়ে লিখব একদিন। কিছুমিছু। গল্প হতে পারে, যদিও খুব ভাল পারিনা সেটা, অথবা কবিতা। অথবা না লিখলেও চলে। শঙ্খ ঘোষের মত অতটা দ্বিধা কি আমার ভেতরেও ছিল? “বলিনি কখনো? আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে। এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে, সেই এক বলা। কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো কোনো ভাষা নেই, কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে যতদূর মুছে নিতে জানে, দীর্ঘ চরাচর তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই।” সে সব কথা ঠিকভাবে মনে পড়ে না, সেটুকু বিস্মৃতি, তাই ভাবছি, জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখছি একলা আকাশ থেকে ঝরে পড়া জল। জল পড়ে পাতা নড়ে তোমার কথা মনে পড়ে।
মাথার কাছ থেকে একটা বই তুলে নিলাম। বিছানা মেঝেতে আমার, একটা তোষক আর নিচের কার্পেটে বেশ চলে যায়। মাথার কাছে কিছু বই রেখেছি, পড়ি মাঝেসাঝে, আবার পড়ি না। না পড়লেও থাকে। লোকজন ঘরে ঢুকলে জ্ঞানী লোক মনে করে, ভাল লাগে। কিছু বই উলটে পালটে দেখি, কিছু বই অর্ধেক, কিছু পুরোটা, কিছু বইয়ের সারাংশ বা রিভিউ পড়েই বেশ খুশি হয়ে উঠি। গুগল হাতড়ানো হাতুরে জ্ঞান দিয়ে মাঝেসাঝে লোকজনকে চমকে দেই, দিতে ভাল লাগে, মাঝে সাঝে দেই না আবার। কিছু শক্ত শব্দ শিখে রাখি, কিছু কঠিন সংখ্যা, কিছু অচেনা লেখক, কিছু কম পরিচিত বইয়ের নাম আর সারমর্ম, কিছু ইতিহাস, কিছুটা বিজ্ঞান, কিছুটা দর্শন, কিছুটা ধর্ম। এলোমেলো ভেবে কিছু এলোমেলো ভাবনা বের করি, কখনও অন্যের ভাবনায় চামড়া লাগিয়ে মেরে দেই, বেশ লাগে। এখন বেশিরভাগ লোক বই পড়ে না, সেটুকু বুঝি অন্তত, বড় বড় লেখকেরাও দেখি বই না পড়েই বইয়ের নাম কপচিয়ে যায়। আমি লেখক নই, আমি শুধু ভাবি, মাঝে সাঝে, তাও অমৌলিক, বৈশিষ্ট্যহীন।
এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বই এনেছি একটা। লেখক স্যাম হ্যারিস। বইয়ের নাম ‘দ্যা মরাল ল্যান্ডস্কেপ - হাউ সাইন্স ক্যান ডিটারমাইন হিউম্যান ভ্যালুস’। ইউটউবে একটা লেকচার দেখেছিলাম এই নিয়ে, বেশ ভাল লেগেছিল। বইটা বেশ খানিকটা পড়েছি, এখন পর্যন্ত নতুন কিছু পেলাম না তেমন। সেই আধাঘন্টার ভিডিওকেই টেনেটুনে লম্বা করেছে, অনেক উদাহরণ দিয়ে, এক্সপেরিমেন্টের কথা বলে। অনেকটা ছোটবেলার ভাবসম্প্রসারণের মত। যে জিনিস সহজে বোঝা যায়, সে জিনিস ভাবসম্প্রসারণ করলে বরং আবেদন হারায়, লেবু কচলালে তিতা হয়। এখন বেশ কয়েকটা বই দেখলাম এরকম লেখা হচ্ছে, বিশেষ করে পপুলার সায়েন্সের বইগুলো এমন হচ্ছে, একই বিষয়বস্তু নিয়ে চর্বিত চর্বন করছেন অনেকেই। বই লেখার ক্ষেত্রেও লিটারেচার রিভিউটা মনে হয় বেশ ভালভাবে শুরু করা দরকার। অন্যদিকে বাংলা ভাষায় প্রায়-অনুবাদ বই নিজের মৌলিক বই হিসেবে ছেপে যাচ্ছেন লেখকেরা, অনেক সময় মূল বই বা বইগুলোর অবদান স্বীকার না করেই। এগুলো বেশ অস্বস্তিকর ভাবনা, অবশ্য সম্ভবত বই লিখে ফেলার একটা লোভ আছে অনেকের মধ্যেই, সেটা আমার নিজের মধ্যেও বেশ খানিকটা আছে, টের পাই। নিজে লিখলেও কি আর সেরকম মৌলিক কিছু হবে? সেই হয়ত চর্বিত চর্বন করব। তাই ভাবছি, চিৎ হয়ে শুয়ে, এলোমেলো, অবিন্যস্ত, অশরীরি।
আরেকটা বই এনেছিলাম লাইব্রেরি থেকে। এডগার অ্যালান পো এর বই। কেবল শুরু করেছি পড়তে। অনেক পুরোনো বইটা, বইয়ে পো এর সাথে প্রচুর পাঠকের স্মৃতি বিস্মৃতিও যোগ হয়েছে। পুরোনো বইয়ের ভেতর লেখকের সাথে পাঠকের আত্মাকেও কিছুটা পাওয়া যায়। কত রঙের কালিতে কত লাইন রাঙ্গিয়ে দিয়েছে কত পাঠক, কার কোন লাইনটি কেন ভাল লেগে গেল, তার পেছনের গল্পগুলো কল্পনা করে নিতে ভাল লাগে। প্রায়ই কল্পনা করে লিখে ফেলতে ইচ্ছে করে বইয়ের সাথে যোগ হয়ে যাওয়া পাঠকের গল্পগুলো। বইয়ের পাতার ফাঁকে একটা চাপা পড়া গোলাপের পাপড়ি, কে কার জন্য রেখে দিয়েছে কে জানে! আবার কেউ একজন নীল কালিতে দাগিয়ে রেখেছে,
The happiest day -- the happiest hour
My sear'd and blighted heart hath known,
The highest hope of pride and power,
I feel hath flown.
জানি কোন মিল নেই, কিন্তু আমার মনে হঠাৎ মনে পড়ে, “শহরের উষ্ণতম দিনে পিচগলা রোদ্দুরে বৃষ্টির নিঃশ্বাস তোমায় দিলাম আজ -” কেন পড়ে কে জানে!
সেলফোনে টুঁট্টুঁট শব্দ হয়। ফেসবুক নোটিফিকেশান সম্ভবত। ফোনটা হাতে নেই। স্ক্রীনে বৃষ্টি ছাট ঠিক জানালার কাচের মত আস্তে আস্তে খুব সন্তর্পনে গড়িয়ে পড়ছে। উইন্ডোজ নামটা আসলেই বেশ। কিন্তু এই জানালা বন্ধ জানালা, খোলা যায় না ইচ্ছেমত। ঘরের জানালার কাচেও গড়িয়ে পড়ছে পানি। অবশ্য ফোনের জানালায় বেশ খানিকটা সবুজ। আকাশের বড় অংশ ঢেকে রেখেছে গাছের সবুজ। পাতা। তির তির করে নড়ছে। জল পড়ে পাতা নড়ে তোমার কথা মনে পড়ে, আবার। ফেসবুক খুলে দেখি। স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম একটা কিছুক্ষণ আগে। ঘন্টাখানেক হবে। বেশ কিছু লাইক পড়েছে দেখা যাচ্ছে। লাইক পেলে বেশ ভাল লাগে। ভাবনাগুলো মাঝে সাঝেই ফেসবুকে ঠেসে দিই। ভাবনার জন্য ক্যামেরার মত কোন টাইম মেশিন নেই যে একটা বাটনের চাপে বন্দী করে ফেলব সময়কে। একসময় ডায়রী লিখতাম অল্প-স্বল্প, এখন ধৈর্য কমে গেছে। কেউ কেউ ছবির পরে ছবি ঠেসে দেয় ফেসবুকে ইতিহসের মত, আমি ঠেসে দেই আমার ভাবনা, স্মৃতির মত। কারন আমি ভাবি। কারন আমি ভাবছি। চিত হয়ে শুয়ে আমি ভাবছি, অবিন্যস্ত, অর্থহীন।
আমিও কয়েকটা ভাবনায় লাইক চেপে দেই, কিছু ছবিতেও। কিছু ভাল লাগে বলে, কিছু বন্ধু বলে, আর কিছু দেনা পাওনার হিসেব। হঠাৎ শক্তির কবিতা মনে পড়ে, “বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভাল, ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়”। এত সুন্দর লাইনের বিপরীতে আমার মনে হয় অদ্ভুত অর্থহীন কথা, ফেসবুকে কিছু বন্ধু থাকা ভাল, লাইক দিলে লাইক পাওয়া যায়। বুকে হাত দেই, ধ্বনি দেবার চেষ্টা করি, কিন্তু কোন প্রতিধ্বনি শুনতে পাই না, তবে লাইক দিলে লাইক পাওয়া যায়। বুকের ভেতরে কোন একটা পাথরের অভাব বোধ করি, একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগে। মনে মনে ভাবি, ভাবলে এমন হয়। হঠাৎ আমার না থাকা পাথরটার জন্য কষ্ট হয়, মনে হয় আবুল হাসানের একটা পাথর ছিল যা কেবল লাবণ্য ধরত, মায়াবী করুণ এক পাথর। আমি পাথর খোঁঁজার চেষ্টা করি, পাথর না পেয়ে জানালায় পুরানো প্রেমিকাদের খুঁজে বেরাই। জানালায় দেখতে পাই দুরে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ হেঁটে বা দৌড়ে যাচ্ছে, পুরোনো প্রেমিকারা, শুধু পুরোনো প্রেমিকারাই বোধহয় ঠিক ওভাবে পুরোনো হয় না, তবুও তারা পুরোনো প্রেমিকাই থেকে যায়। আবার রুদ্র ভর করে, থাকুক তোমার একটু স্মৃতি থাকুক, একলা থাকার খুব দুপুরে একটা ঘুঘু ডাকুক। হঠৎ করে মনে হয় ঘুঘুর ডাক শুনিনি কখনও আমি। তবুও মনে হয় ঘুঘুটা খুব পরিচিত স্বরে ডাকতে থাকে। আমার মনে হয়, ঘুঘুটা বুঝি ধ্বনি দিয়ে প্রতিধ্বনি পাবার চেষ্টা করছে।
চিৎ হয়ে শুয়ে ভাবতে থাকি। আমি তো বেশ ভাবি, অশরীরি, এলোমেলো, জীর্ণ। একেবারে মৌলিক কোন ভাবনা এমনও নয়। তবুও ভাবতে ভাল লাগে। ভাবতে ভাল লাগলেও সব ভাবনা যে ভাল লাগে এমন নয়। লোকে বলে, এখন খবর বাতাসের আগে যায়। এটা আসলে ভুল কথা, খবর এখন আক্ষরিক অর্থেই আলোর বেগে চলে। বাতাসের বেগ আর আলোর বেগের পার্থক্য বেশ বড়সর, কারণ অবস্থা বুঝে বাতাসের বেগ কখনও শূণ্যের কাছাকাছিও হতে পারে, আর বেশি হলেও সে খুব বেশি একটা নয়। মন খারাপ করা যেসব খবরে বাতাস হয়ত গুমোট পাকিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে থাকে, সেইসব খবরও আলোর সাথে ভেসে চলে আসে মুহূর্তে। আলো সম্ভবত গুমোট বাঁধতে জানে না, না হলে সহস্র আলোকবর্ষ দূরের মৃত নক্ষত্রের আলোও কোন আশা নিয়ে ছুটে চলে দূরতম প্রান্তে? আমি হলে অত বিশাল নক্ষত্রের মৃত্যুর কষ্ট বুকে নিয়ে ঐ অত বেগে ছুটতে পারতাম না নিশ্চিত। অত দূরের আলো অবশ্য আমার চোখে পড়ে না। আমার চোখে পড়ে শুধু আমার জানালায় যতটুকু আলো এসে পড়ে ঠিক ততটুকু। সেই আলোর সাথে খবর আসে, বাচ্চা দুটো ছেলেকে নাকি ধর্ম অবমাননার মত হাস্যকর অজুহাতে আটকে রেখেছে জেলের ভেতর। কিছুদিন ধরে দেশে ফিরে যাব যাব ভাবছি, চিত হয়ে শুয়ে অর্থহীন ভাবনা নয়, সত্যিকারের ভাবনা। কিন্তু ভয় হয়, আমার দেশে ফিরে গেলে আমি আমার কথা বলতে পারব তো? আবার মনে পড়ে রুদ্রকে, ‘আফিম তবুও ভাল, ধর্ম সেতো হেমলক বিষ’। বিষের কথা ভাবতে মনে পড়ে রফিক আজাদের কথা। রফিক আজাদের কী যেন একটা লাইন ছিল, “আমিও জানি কী করে বশ করতে হবে স্বৈরিণীকে, জেনে-শুনেই তোমার থেকে এক ফোঁটা বিষ পান করেছি”। দুপুরবেলার ভাবনায় কোন লাগাম নেই সম্ভবত। নাহলে পুরোনো প্রেমিকাদের কথা বারবার মনে পড়তে হবে কেন? পুরোনো প্রেমিকাদের কথা মনে পড়লেই আমার মনে পড়ে যায় প্রিয় কবিতাদের কথা, ওরাও খুব প্রিয় কিন্তু ওদের ইচ্ছেমত রাখতে আটকে রাখতে পারি, ঠেসে দিতে পারি ডায়রীর পাতায় বা উড়িয়ে দিতে পারি আলোর বেগে। কিছুদিন আগে প্রিয় কবিতাদের নিয়ে একটা কবিতা লিখেছিলাম।
সবকিছু বহমান, বয়ে যায় প্রবাহিত নদী
ছুঁয়ে দিয়ে বয়ে যায় পদ্মা, মেঘনা কুশিয়ারা
সব কিছু ছুঁয়ে দিয়ে সেভাবেই চলে যেত যদি
সেভাবেই চলে গেছে ছুঁয়ে দিয়ে প্রিয় প্রেমিকারানা ছুঁয়েই বয়ে চলে রাজপথ নাগরিক নদী
নগরের রাজপথে ঝরে যায় সবুজ পাতারা
ঘাসফুল মাঠে ঘাটে চাপা পড়ে মরে থাকে কত
না দিয়েই কোন আলো নিভে যায় কত কত তারা
কে আর লিখেছে গান নিভে যাওয়া সেই তারা নিয়ে
সেইসব তারাদের মত করে ক্ষয়ে গেছে যারা
অথবা লিখেই গান, লিখেই কবিতা ওকে নিয়ে
কে পেরেছে থামাতে সে উত্তাল বুনো কুশিয়ারানদী আর নারী শুধু বহমান, চলে ছুঁয়ে দিয়ে
থামানো কঠিন খুবই প্রবাহিত নদ-নারী-ধারা
শুধু প্রবাহিত হতে গিয়ে, শুধু ছুঁয়ে দিতে গিয়ে
কোন ভুলে থেমে গেছে শুধু সেই প্রিয় কবিতারাযখন ফেরাতে চাই, প্রিয় মুখ, প্রিয় ফুল, পাখি
হয়ত কলমে নয় ক্যানভাস কাঠপেন্সিলে
যখন ফেরারী আমি আনমনে অতীতকে আঁকি
প্রিয়তম কবিতারা জমা হয় স্মৃতির মিছিলে।
এইরকম অলস দুপুরে এইসব ভাল লাগে, এইসব অলস দুপুরে চিৎ হয়ে শুয়ে ভাবতে ভাল লাগে, মাঝেসাঝে, এই আবজাব, অর্থহীন, অলস, বৈশিষ্ট্যহীন, অমৌলিক, ছেঁড়াখোঁড়া, জীর্ণ, অস্বচ্ছ, ছায়ার মত অশরীরি সব ভাবনা। কেন ভাল লাগে, আমি জানিনা, হয়ত সুলতা জানলেও জানতে পারে,
সুলতা জানে, সুলতা জানে ভালো,
আকাশে মেঘ-দীঘিতে কেন হাঁস,
সুলতা জানে, সুলতা জানে ভালো
কবিরা কেন নারীর ক্রীতদাস!
সুলতা জানে, সুলতা জানে ভালো,
প্রেমিক কেন থাকে না চিরকাল
সুলতা জানে, সুলতা জানে ভালো
দহনে শ্রুতি নির্মম বহুকাল।
(সিকদার আমিনুল হক-এর কবিতা)
মন্তব্য
ভালো লেখা। বাই দ্য ওয়ে- সুলতারা কিচ্ছু জানে না- আমরা কেউ কিচ্ছু জানিনা শেষ পর্যন্ত। জানার প্রচেষ্টায় একটা ছোট্ট জীবন দীর্ঘ ক্লান্তি নিয়ে কেটে যায়।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
অনেক ধন্যবাদ মণিকাদি। সেইটাই, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত ধারণা করি, সুলতা জানে, হয়স সুলতা জানে। কিন্তু একটা জীবন তো সুলতাকে খুঁজতে খুঁজতেই কেটে যাচ্ছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনুচ্ছেদ ১-৫ = গদ্য কবিতা। একটু খাটাখাটুনি করলে এখান থেকে কয়েকটা কবিতা বের হবে।
অনুচ্ছেদ ৬-৮ = সাম্প্রতিক ধারার বই সম্পর্কিত আলোচনা। এটা আলাদা ভাবে বিস্তারিত পোস্ট আকারে আসা উচিত ছিল।
অনুচ্ছেদ ৯-১২ = আদর্শ ওয়েব লগ। প্রিয় কবিতাদের নিয়ে কবিতাটা এখানে গুঁজে দেয়াটাতে কবিতাটির প্রতি সুবিচার করা হলো না। তাকে আলাদাভাবে পোস্ট করলে ঠিক হতো।
আর কে কী জানে এই ব্যাপারে বুড়া শয়তানটা বলে গেছে,
আমার নদীর যে ঢেউ ওগো জানে কি কেউ
যায় বহে যায় কাহার পানে। কে জানে।।
যখন বকুল ঝ'রে
আমার কানন তল যায় গো ভ'রে
তখন কে আসে-যায় সেই বনছায়ায়,
কে সাজি তার ভরে আনে। কে জানে।।
অর্থাৎ, কেউ কিছু জানে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক, লেখক আমাদের পুরো প্যাকেজ একসাথে সাপ্লাই করে দিয়েছেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পাণ্ডবদা, আপনার মন্তব্য তো সবসময়েই ঋদ্ধ করে।
কমেন্টে কয়েকটা মনের কথা বলে দিয়েছেন, আমার। কবিতা লিখব লিখব করে খসড়া করতে গিয়ে গধ্যের মত হয়ে গেল। তারপর পড়ে দেখলাম কাব্যগন্ধী হলেও নিজের কাছে খারাপ লাগছে না।
সাম্প্রতিক বইগুলোর আলোচনায় যাবার ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে। কিন্তু সেটার জন্য আরেকটু সময় দিয়ে লিখতে হবে, এটার মত একটানে লিখে ফেলতে পারব না, তাই আপাতত চিন্তার খসড়া এখানে তুলে রাখলাম।
প্রিয় কবিতাটা কয়েকদিন আগে লেখা, এখানের একটা ঘরোয়া কবিতার আসরের জন্য লিখেছিলাম। আমি সাধারণত দু-তিনটা পছন্দের কবিতা বাছতে পারলে এক সাথে একটা কবিতার ব্লগ দেয়ার চেষ্টা করি। এই লেখাটা লিখতে গিয়ে কবিতাটার কথা মনে হল, তাই ভাবলাম দিয়ে দেই।
আর হ্যাঁ বুড়োবাবু মানুষের অনুভূতি নিয়ে সম্ভবত কিছুই বলা বাদ রাখেননি। তারপরেও আমরা চুনোপুটিরা চেষ্টা করে যাই, নিজেদের মত করে কিছু লিখতে। নিজেদের জন্যেই।
ভাল থাকবেন পাণ্ডবদা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কবিতার আকার যা-ই হোক সেটা একটা একটা করে পোস্ট করা উচিত। একসাথে তিন/চারটা কবিতা পোস্ট করলে পাঠকের পক্ষে ঠিক মন্তব্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন বেশিরভাগ জন দায়সারা মন্তব্য করে কেটে পড়েন। পক্ষান্তরে কবিতার সংখ্যা একটা হলে সেটাকে বিশ্লেষণ করা, সেটা নিয়ে আলোচনা করা সহজতর হয়। তাই নিজের স্বার্থেই একটা করে কবিতা পোস্ট করা উচিত।
অনেক কবি তো একটা কবিতা দিয়ে একখানা আস্ত বইও বের করেছেন। বাংলা ভাষায় এমন বই দেখেছিলাম আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ্'র।
বুড়া অনেক কিছু বলে গেছেন বলে কি আমরা মুখ (কলম/কী-বোর্ড) বন্ধ করে রাখবো নাকি! আমরা আমাদের কথা আমাদের মতো করে বলে যাব।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সেটা অবশ্য ঠিকই বলেছেন পাণ্ডবদা, একটা করে কবিতা দিলে আলোচনার সুযোগ থাকে বেশি। আবার অনেক সময় ভাবী কবিতার পাঠক যেহেতু বরাবরই কম, তাই একেবারে দু-তিনটা করে দিলে পাঠকের হয়ত পড়ার আগ্রহ বাড়বে।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ্'র বইটার নামটা কি মনে আছে পাণ্ডবদা?
আর সেটাই বুড়ো সব বলে গেছেন বলে কি আমরা বসে থাকব নাকি। আমরা বলব আমাদের মত করে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বাহ! সেরাম মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য।
____________________________
যদি ভুল করে না থাকি, বইটির নামঃ "বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা", দুটি মাত্র কবিতা, নাম কবিতাটি আর 'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি'
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধইন্যা সাক্ষীদা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাক্ষীদা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বেশ লাগল পড়তে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দারুণ লাগলো!!!
____________________________
অনেক ধন্যবাদ প্রফেসর সাহেব।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
"আমি হলে অত বিশাল নক্ষত্রের মৃত্যুর কষ্ট বুকে নিয়ে ঐ অত বেগে ছুটতে পারতামনা নিশ্চিত"
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি আর কতটুকু জানি! কারা কারা জানে, জানতে পারে, হয়ত বা জানতে পারে, জানি না ত তাও! এ ও জানি না, আসে যায় কি না কোনো কিছু মতামত দিলে বা না দিলে! ! আমি শুধু জানি, "প্রিয়তম কবিতারা জমা হয় স্মৃতির মিছিলে।"
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই, সুলতা জানলে জানুক।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অনবদ্য গীতিকবিতা। অনিন্দ্য সুন্দর আর এমন মোহনীয় গদ্য আমি অনেকদিন পড়িনি। অনেক কিছু বলতে চাইছি কিন্তু এমন রুপময় গদ্যের প্রতিদানে আর কিছু বলার থাকে না।
আপনার সব কবিতার মতো এই কবিতা টিও দারুন হয়েছে। তবে এটি আলাদা করে পোষ্ট করলে সুখকর হতো। এমন অমৌলিক, বৈশিষ্ট্যহীন, অলস লেখা লেখেন কি করে আমাকে একটু শিখিয়ে দিবেন?
মাসুদ সজীব
খুব বেশি প্রশংসা করে ফেলেছেন মাসুদ ভাই। কবিতার প্রশংসা শুনে ভাল লাগছে। আর অমৌলিক হোক মৌলিক হোক, হাউ টু সিরিজ তো চরম উদাসদার কপিরাইট। ওইটা আমি ক্যামনে দেই?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সত্যি গদ্যছন্দ ভীষন ভালোলেগেছে। কবিতাও তাই, চরম দা তো এখন এসো নিজে করি সিরিজ অফ রাখছে।
মাসুদ সজীব
আগামী বইমেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
লেখাটা পড়তে পড়তে কয়েকবার ডুবলাম, ভাসলাম, ডুবলাম আবার ভাসলাম। এরকম লেখাগুলো আনমনা করে দেয়। জানালার কাঁচে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির ফোঁটার মতো ভাবনাগুলো, স্মৃতিগুলো চুঁইয়ে চুঁইয়ে নামতে থাকে আর্কাইভ থেকে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অনেক ধন্যবাদ সন্ধানীদা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সত্যিই লেখটা পড়তে পড়তে আমিও হয়তো হারিয়ে গিয়েছিলাম, পার করে আসা জীবনের কোন বাঁকে।
'অাধেক জীবন কেটে গেছে তোমাকে পাবার আকাঙ্খায়,
আর বাকি অাধেক হয়তো যাবে তোমার অপেক্ষায়।'
অনেক ধন্যবাদ। কেমন আছেন আপনি?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গদ্য পদ্য দিনলিপির আদলে গল্প। ভালো লাগলো!
ধইন্যাপাতা শিমুল ভাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
চমৎকার লেখা।
নেট গোলযোগে দেরিতে পড়লাম।
এইসব ভাল লাগে না এখন আর। কিছুই ভাবতে ভাল লাগে না আসলে। বুড়ো হয়ে গেছি।
...যতই ভাবি একটু দূরে যাই, বিরতিতে যাই, বিশ্রামে যাই, অন্য কিছুতে ডুবে থাকি - ততই মনে হয় এ জীবনের বাজি ধরা হয়ে গেছে। পেছনে ফিরবার আর সুযোগ নেই।
এন্ড অফ দ্যা ডে, আই হ্যাভ অনলি ওয়ান লাইফ টু প্লে।'
এই লাইন কটা কাল ফেসবুকে চোখে পড়ে মনে ধরল খুব!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
যাক নেটের সমস্যা কাটছে।
বুড়ো হওয়া নিয়ে আমার বিশেষ কোন আপত্তি নাই, বয়স বাড়ছে তো বটেই, কিন্তু সেটা গুরুত্বপূর্ণ লাগেনা। আর জীবন নিয়ে কোন বাজিও ধরি নাই, সামনে পেছনে কিছু আছে বলেও মনে হয় না, বাজি টাজি কিচ্ছু না, আমার কাছে দ্যা জার্নি ইজ দ্যা রিওয়ার্ড। হেহে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আলবৎ ঠিক! একটু যোগ করে বলি, জীবনানন্দের মত এত নিবিড় করে আর কেইবা ঘুঘুর ডাক শুনেছে?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বাংলার পথে ঘাটের কোন ডাক শোনাই সম্ভবত জীবনবাবু বাদ দেন নাই।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ভালো লাগলো। অনেক কিছুই একসাথে পাওয়া গেল। সাখাওয়াৎ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নতুন মন্তব্য করুন