কৌতুকের সংবেদনশীলতা অথবা সংবেদনশীলের কৌতুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি
লিখেছেন ত্রিমাত্রিক কবি (তারিখ: সোম, ২৯/০৬/২০১৫ - ৩:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রসিক বা সেন্স অফ হিউমার সম্পন্ন লোক, যাঁরা মানুষকে হাসাতে পারেন বা হাসার দারুণ সব উপলক্ষ বের করতে পারেন তাঁরা সাধারণত অনেকের কাছেই হালকা মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন। কিন্তু আমি তাদেরকে খুব সংবেদনশীল মানুষ মনে করি। কৌতুক বা হিউমার খুব সূক্ষ্ম একটা ব্যাপার। সেই সূক্ষ্মতার দিকে নজর না দিলে হিউমার খুব সহজেই হিউমিলিয়েশানে পরিণত হয়। সংবেদনশীল মানুষের আলাদাভাবে সেই দিকে নজর দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। রসিক বা সেন্স অব হিউমার সম্পন্ন লোককে আমার খুব মানবিক মানুষ মনে হয়।

কাউকে নিয়ে রসিকতা করা মানে তাকে ছোট করা না, বরং তার কোনো ভুল বা অসংগতি বা কোনো বৈশিষ্ট্যকে হাসির মাধ্যমে সহজ করে নেয়া। এইজন্য আমরা কাছের বন্ধুকে পচাই সবচেয়ে বেশি, আপন মানুষকে নিয়ে সবচেয়ে নিশ্চিন্তভাবে মজা করা যায়। দূরের বন্ধুর সাথে অনেক সৌজন্য বজায় রাখতে হয়, তার ভুল ত্রুটি নিয়ে হাসি তামাশা করা যায় না, কারণ সেটাকে সে হিউমার হিসেবে না নিয়ে হিউমিলিয়েশান হিসেবে নিতে পারে। সংবেদনশীল মানুষকে এসব নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে হয় না।

কিন্তু অসংবেদনশীল মানুষ যখন কৌতুক করতে চেষ্টা করে তখন সেটা কৌতুক হয় না, সেটা হয় কখনও ভাড়ামো কখনো প্রতিপক্ষের দুর্বলতার প্রতি কটাক্ষ। খেয়াল করলে দেখা যাবে এই ধরণের রসিকতাগুলো কাছের মানুষকে নিয়ে করা যায় না, বরং প্রতিপক্ষকে নিয়ে করতে হয়।

এই ধরণের রসিকতা মূলত শস্তা রসিকতা। বাংলাদেশের অধিকাংশ ফানপেইজগুলোর রসিকতা এই ক্যাটেগরিতে পড়ে যাবে। অত্যন্ত অসংবেদনশীল কিছু মানুষ দিয়ে পরিচালিত হয় এই পেইজগুলো। এইজন্য তাদের কৌতুকের শিকার অধিকাংশ সময় প্রতিপক্ষ। একটা উদাহরণ দিলে জিনিসটা স্পষ্ট হবে। খেয়াল করলে দেখা যাবে বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তান খেলায় হারলে যে ভাবে পচানো হয় বা ট্রল করা হয় ভারত হারলে সেই ট্রলের ইন্টেন্সিটি অনেক বেশি থাকে কারণ এক্ষেত্রে ভারত হিন্দুদের দেশ তাই সঙ্গত কারণেই ৯০% মুসলিম দেশের জনপ্রিয় ফান পেইজের প্রতিপক্ষ। একই কারণে এইসব পেইজের প্রতিপক্ষ নারী, নারীদের পোষাক, অথবা হিটলারের হাতে নিহত হওয়া ইহুদি। তাদের কখনোই পাওয়া যাবে না সংখ্যালঘুদের পাশে, নির্যাতিত মানুষের পাশে। অথচ বিশ্বের বড় বড় কৌতুক শিল্পীরা সমাজের নিয়মকে কটাক্ষ করেন, শোষণ আর সিস্টেমের বিরুদ্ধে, সমাজ আর ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাঁরা পাশে দাড়ান মানুষের।

আর আমাদের জনপ্রিয় ফানপেইজগুলো কেবল মানুষের লালিত নোংরা ইচ্ছাগুলোকে উপজীব্য করে বেঁচে থাকে। নিজেদের নোংরা অবদমনকে প্রশমিত করে কৌতুকের নামে প্রতিপক্ষকে আক্রমণের মাধ্যমে।

[লেখাটি লিখেছিলাম ফেসবুক স্ট্যাটাস হিসেবে, হঠাৎ আসা ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে। দুইএকজন পরামর্শ দিলেন লেখাটা ব্লগে তুলে রাখতে। পোস্টটি খুব একটা ঋদ্ধ নয়, আমি এই ব্যাপারে খুব বেশি পড়াশোনা করিনি, নিজের কিছু পর্যবেক্ষণ শেয়ার করেছি মাত্র। আপনাদের মন্তব্যে আশা করি পোস্টটি ঋদ্ধ হবে।]

কিছু পর্যবেক্ষণঃ
[১] সাম্প্রতিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সমকামি মানুষের বিয়ে করার অধিকার আইনি স্বীকৃতি পাওয়ায় আমাদের ফান পেইজগুলোর একটা পরিচয় পাওয়া গেল। অবশ্য এই রকম পরিচয় নতুন নয় আগেও অনেক বিষয়ে এই রকম পরিচয় তারা রেখেছে।

[এটা আসল মুরাদ টাকলা না]

[নীচের মন্তব্য থেকে জানা গেল, এই মুরাদ টাকলা সেই মুরাদ টাকলা না। সম্ভবত মুরাদ টাকলার আদি পেইজ প্রো-জামাতি নয়। যদিও মাঝে মধ্যে ব্যক্তিগত নাম প্রকাশ করে দেয়া সহ বেশ কিছু কাজে তাদেরকেও অসাবধান হতে দেখা গেছে। তবে মুরাদ টাকলার উল্লেখ্য স্ক্রিনশট জামাতি মুরাদ টাকলার পেইজ থেকে নেয়া]

[২] কিছুদিন আগে ভারতীয় সমর্থক সুধীরকে স্টেডিয়ামের বাইরে হয়রানি, হেনস্থা করার সময়ও এই ধরণের পেইজগুলো তাদের হিন্দুবিদ্বেষ প্রসূত ভারত বিদ্বেষ বজায় রেখেছে।

মজা লস নামের পেইজে ঘুরে আরেকটা মজার জিনিস লক্ষ্য করলাম। সাম্প্রতিক ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সিরিজ জয় উপলক্ষে চমৎকার বেশ কিছু ট্রল মেমে বানিয়েছে তারা। সন্দেহ হওয়াতে একটু নিচে নামলাম। সেই সময়ের টাইমলাইনে গেলাম যখন বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করছিল। মজার ব্যাপার হলো এই নিয়ে ট্রল তো দূরের কথা একটা পোস্ট পর্যন্ত নাই। এমনিতেই তো আর বলে না, ল্যাঞ্জা ইজ আ রিয়েলি টাফ থিং টু হাইড।

[৩] নারী পুরুষের পোষাক নিয়ে মধ্যযুগীয় ধারণা পোষণ আর তা নিয়ে কৌতুক থেকে শুরু করে মূলত নারীদের নিয়ে নোংরা ট্রল করাও এই ধরণের পেইজগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

[৪] শুধু নারী নয়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা হিজরারাও এদের নোংরা কৌতুক থেকে রক্ষা পায় না।

[৫] মানুষের ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে ট্রল করাও এইসব পেইজের পুরানো অভ্যাস। এরকম উদাহরণ খুঁজলে অসংখ্য পাওয়া যাবে। বিশেষ করে আমাদের ক্রিকেটার আর তাদের স্ত্রীদেরকে নিয়েও এরকম নানা নোংরামি করতে ছাড়েনি। ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে ট্রল করার একটা প্রমাণ রেখে যাই।

[৬] বিভিন্ন ধরণের হত্যা, গণহত্যা এসব বিষয়ে নিপীড়িতের পক্ষে না দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অবস্থান থেকে এইসব পেইজ এসব নিয়ে সস্তা রসিকতা করে মূলত এইসব ঘটনার গুরুত্বকে হালকা করার চেষ্টা করে এবং এসব ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে ব্যবহার করে। হিটলারের ইহুদি হত্যায় জনপ্রিয় পেইজ মজালস থেকে শুরু করে সাম্প্রতিককালে প্যারিসের হামলার ঘটনাগুলোতে বিভিন্ন তথাকথিত ফানপেইজের এইরকম সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং পরিকল্পিত সস্তা রসিকতায় ভরপুর।

[৭] রাজাকারদের ফাঁসি বা এই ধরণের বিষয়গুলোতে হিরন্ময় নিরবতা পালন করলেও ব্লগার হত্যা এই ধরণের ঘটনাগুলোর পরে এদের আসল চেহারা বের হয়ে পরে।

মজা লস ও একজন করবী রাক্ষস

[৮] সাম্প্রতিক ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর আমাদের দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা প্রথম আলোর একটি নিম্নমানের কৌতুক চেষ্টার নমুনা দেখা যাচ্ছে এই ছবিতে। এই কিছুদিন আগেই ভারতের কিছু লোকজন মওকা মওকা নামে একটি ভিডিও ইউটিউবে ছাড়ে। সেটা নিয়ে আমাদের সমালোচনা ঝড় বয়ে যায় স্বাভাবিকভাবে, কারণ সেখানে তাচ্ছিল্য অপমান করার চেষ্টাটা ছিল স্পষ্ট, সেটা স্পোর্টিং পচানো বা স্রেফ মজা ছিল না। সেটা ছিল জাতিগতভাবে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা। এর প্রতিবাদের আমরাও একই ধরণের কাজ করার চেষ্টা করছি। মানে আমরা ওদের কৌতুকটাকে অপছন্দ করিনি। অপছন্দ করেছি কৌতুকটা আমাদের নিয়ে ছিল বলে। তাই আমরা সুযোগ পেলেই আমাদের বিভিন্ন পেইজ এমনি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় একই মানের কাজ করে যাচ্ছি কৌতুকের নামে।

[৯] মুক্তিযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা নিয়ে সস্তা রসিকতা

[১০] এই সমস্ত সস্তা কৌতুকের মাধ্যমে এইসব ফানপেইজ মূলত শিকার বা ফ্যানবেইজ সংগ্রহ করে। এরপরে শুরু হয় বিভিন্ন রকম অসত্য অর্ধসত্য খবরের মাধ্যমে সংগৃহীত ফ্যানবেইজকে বিভিন্ন ধরণের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রপাগান্ডার মাধ্যমে উত্তেজিত করে তোলার কাজ। ফান পেইজ ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল পেইজও একই মুলনীতিতে কাজ করে। এরা প্রথমে অশ্লীল ছবি, কৌতুক ইত্যাদির মাধ্যমে ফ্যানবেইজ তৈরি করে এরপর শুরু হয় সেই একই পেইজে বিভিন্ন ধর্মীয় বাণী থেকে শুরু করে দেশবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য তৈরির মাধ্যমে একটা গণঅসন্তোষ তৈরি করা বা বিশেষ কোনো সম্প্রাদাইয়ের ওপর সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলা। তবে এই ধরণের অশ্লীল পেইজগুলোর থেকে এই তথাকথিত ফানপেইজগুলোর ফারাক হলো, এই ফানপেইজগুলোর ফ্যানবেইজ সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত উচ্চশ্রেণির মানুষ অন্যদিকে উল্লেখ্য অশ্লীল পেইজগুলোর ফ্যানবেইজ মূলত সমাজের তথাকথিত কমশিক্ষিত সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের নিচের দিকে অবস্থান করা মানুষ। কিন্তু ফ্যানবেইজ যে রকমই হোক না কেন, এই দুই ধরণের পেইজের উদ্দেশ্য মোটামুটিভাবে একই রকম। খুঁজলে এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। আমি বরং সম্প্রতি মজালক নামক পেইজের ফেইসবুক বন্ধ এবং ভিপিএন দিয়ে ফেইসবুক ব্যবহার করা নিয়ে একটি মিথ্যা প্রপাগান্ডামূলক প্রচারণার খবর দিয়ে এই লেখার ইতি টানি।

[১১] শেষমেষ

অনেক অনেক কিছু বাদ পড়ে গেল। এরকম আরও অনেক অনেক আছে। লিস্ট দিয়ে পোষাবে না। হিউমার আর হিউমিলিয়েশান, ট্রলিং আর সারকাজমের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে নিচের ভিডিও দু'টা দেখতে পারেন


মন্তব্য

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

এইসব দেখে শরীর ঘিনঘিন করছে।
বিষয়টা এত পরিশ্রম করে তুলে আনার জন্য পাঁচতারা।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

শুধু ফানপেইজ না বেশিরভাগ জনপ্রিয় পেইজের পেছনেই রয়েছে ছাগুগোত্রীয় লোকজনের হাত। এদের পরিচালকদের অনেকেই সরাসরি জামাতি না হলেও ছাগুবান্ধব, সুশীল। লাইকের জন্য এরা যে কোনো কিছু করতে পারে। এমনকি আমাদের ক্রিকেটারদের ফ্যানপেইজগুলো যারা পরিচালনা করেন তাদের কর্মকাণ্ডও সন্দেহমুক্ত নয়। ওর আসলে সব জায়গায় ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শেহাব এর ছবি

এই সংকলনটি দরকার ছিল।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ শেহাব ভাই। আপনার চোখে কিছু পড়লে এখানে মন্তব্যে যোগ করে দিতে পারেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হিউমারের সময় কয়েকটা জিনিস খেয়াল করতে হয়। টার্গেট অডিয়েন্স কারা, জিনিসটা শেষ পর্যন্ত কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে - তাতে অডিয়েন্স কারা কারা হতে পারে, অডিয়েন্সের হিউমার বোঝার ও হজম করার ক্ষমতা কতটুকু, যা বলা হলো সেটা কি বিশেষ কোন ব্যক্তি/গোষ্ঠীর পারপাস সার্ভ করার জন্য হয়ে গেলো কিনা, যা বলা হলো তা কোন ব্যক্তি/গোষ্ঠীকে অন্যায়ভাবে হেয়/ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য হয়ে গেলো কিনা, যা বলা হলো তা মানবিকতার সীমা ছাড়িয়ে গেলো কিনা ইত্যাদি। সমস্যা হচ্ছে কি কমনসেন্স জিনিসটা খুব আনকমন একটা ব্যাপার। তাই লোকে মজা করার নামে ব্যক্তি/গোষ্ঠীকে হেয় করে ছাড়ে। এটা ভিকটিমের জন্য কতোটা বেদনাদায়ক সেই বোধও তাদের থাকে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

জাতির বৈশিষ্ট্য বা কোনো বিশেষ ফিচার নিয়ে করা কৌতুকও এই সংবেদনশীলতার স্কেলে পাশ করে যেতে পারে। ইন্টেনশান দেখেই বোঝা যায় ব্যাপারটা। আমি রাসেল পিটারসএর স্ট্যান্ডআপ কমেডি দেখি প্রচুর। বিভিন্ন রেইস নিয়ে করা জোক তার জোক কালেকশানের একটা বিরাট অংশ। কিন্তু তাকে কখনোই রেসিস্ট মনে হয় নি আমার। সবাইকে নিয়ে মজা করে বলা, সবাই আমার বন্ধু, এইজন্য সে ভারতীয় এক্সেন্ট নিয়ে হাসতে পারে, হাসাতে পারে, আরবদের নিয়ে হাসতে পারে আমেরিকা নিয়ে হাসতে পারে, নিজেকে নিয়ে মজা করতে পারে। কিন্তু আমাদের কৌতুকে সবাই আমাদের প্রতিপক্ষ, যে ভারত নিয়ে জোক করে সে পাকিস্তানের ব্যাপারে কিছু শুনলে মুখ কালো করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত কমনসেন্স, এমপ্যাথি, ইন্টেনশান এই জিনিসগুলাই সূক্ষ্ম পার্থক্যটা গড়ে দেয় সম্ভবত।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মন মাঝি এর ছবি

এই নিয়ে ভারতীয় কমেডিয়ান মীরের সাথে চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের ব্যাপক ঝগড়া হয়েছিল। মীর ঋতুপর্ণকে নিয়ে মিমিক্রি করেছিলেন / করতেন (এই কাজটি তিনি সব সেলিব্রেটিদের নিয়েই করেন), যা ঋতুপর্ণের সহ্য হয়নি। তবে ঋতুপর্ণের বক্তব্য ছিল - এতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আঘাত পাননি, কিন্তু বৃহত্তর ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটি পেয়েছে। শুধুমাত্র এজন্যেই তিনি ক্ষুব্ধ। পক্ষান্তরে যদ্দুর মনে পড়ে মীরের বক্তব্য ছিল - তিনি ট্রান্সজেণ্ডারত্ব বা ঐরকম মানুষদের হেয় করে এমন কিছু করেননি। এমনকি ব্যক্তি ঋতুপর্ণকে হেয় করাও তার 'ইন্টেনশান' ছিল না। তার প্রতি তিনি পুরোপুরিই শ্রদ্ধাশীল।

ঋতুপর্ণ তাঁর নিজের টিভি অনুষ্ঠানে মীরকে ডেকে এনে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারটা এন্ট্র্যাপমেন্ট-মূলক, অসৎ, অনৈতিক ও নিম্নরুচির মনে হয়েছিল আমার কাছে যা ঋতুপর্ণের মত মানুষের কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। তবে এই সাক্ষাৎকারটা নিয়ে, হিউমার-সংবেদনশীলতা-পলিটিকাল কারেক্টনেসের পারস্পরিক সীমানা, ভূমিকা, ইত্যাদি নিয়ে পরে নরমে-গরমে পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক আর আলোচনার ঝড় বয়ে যায় পশ্চিম বাংলা কেন্দ্রিক অফলাইন-অনলাইন ও সোশাল মিডিয়াতে। অনুষ্ঠান পরবর্তী এই বিতর্কটা আমার এত ইন্টারেস্টিং লেগেছিল যে মন্ত্রমুগ্ধের মত বেশ কিছুদিন এটা ফলো করেছিলাম।

সে যাহোক, সাক্ষাৎকারে ঋতুপর্ণের এ্যাপ্রোচটা আমার একদম ভালো না লাগলেও, একেবারে মূল অভিযোগ যেটা সেটাও বোধহয় উড়িয়ে দেয়ার মত না। আলোচনার যোগ্য বিষয় অবশ্যই, ঋতুপর্ণ সেটা সঠিকভাবে হ্যান্ডল করতে না পারলেও। এইদিক থেকে কৌতুকের সংবেদনশীলতা নিয়ে এই অনুষ্ঠানটা আমার কাছে একটা ক্লাসিক মনে হয়েছে। অন্তত আমি এরকম কিছু আগে কখনও দেখিনি মিডিয়াতে। আগে দেখা না থাকলে দেখতে পারেন এখানে - https://www.youtube.com/watch?v=TkKTM2skj9U

****************************************

স্যাম এর ছবি

ইন্টারেস্টিং আলাপচারিতা!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই সাক্ষাতকারটা দেখেছিলাম। ঋতুপর্ণের অ্যাপ্রোচটা আমার ভালো লাগেনি। মীরের পচানিটা নিয়েও আমি আগে মজা পেয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ উড়িয়ে দেবার মতো মনে হয় নি আসলে। একদিক দিয়ে দেখলে অমিতাভ বচ্চনকে পচানো গেলে ঋতুপর্ণকে পচানো যাবে না কেন? কিন্তু তখন মনে হয় ঋতুপর্ণ অন্তত পুরো ঋতুপর্ণ না হলেও ঋতুপর্ণের বিশেষ কিছু আচরণ একটা একটা নির্দিষ্ট ধরণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা সমাজে উপেক্ষিত, অনেক ক্ষেত্রেই হাস্যরসের পাত্র। সেক্ষেত্রে ব্যক্তি ঋতুপর্ণের এই আচরণগুলোকে ছাড় দেয়া যেত কিনা সেটা অবশ্যই ভেবে দেখার দাবী রাখে।

তবে ঋতুপর্ণের অনেক কিছুই ভালো লাগেনি সেই সাক্ষাৎকারে, বিশেষ কয়রে তার হামবড়া ভাব। যাই হোক সেটা এই আলোচনার অংশ নয় যেহেতু সেই আলোচনার লোভ এখানে পরিত্যাগ করি বরং।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তিথীডোর এর ছবি

পাণ্ডবদার কমেন্টে পাঁচতারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

"সমস্যা হচ্ছে কি কমনসেন্স জিনিসটা খুব আনকমন একটা ব্যাপার। তাই লোকে মজা করার নামে ব্যক্তি/গোষ্ঠীকে হেয় করে ছাড়ে। এটা ভিকটিমের জন্য কতোটা বেদনাদায়ক সেই বোধও তাদের থাকে না।" - মর্মান্তিকভাবে সত্যি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাঙ!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শেহাব এর ছবি

"ভারত হিন্দুদের দেশ "

ভারত আসলে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। যেহেতু সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু কাজেই কিছু কিছু মাথার মধ্যে 'ভারত হিন্দুদের দেশ' এরকম একটি ধারণা কাজ করে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বাংলাদেশকে যারা মুসলমানের দেশের বাইরে ভাবতেই পারে না, তাদের কাছে ভারত হিন্দুদের দেশ তো হবেই। কোথাও মানুষ নেই, শুধু হিন্দু মুসলিম আর বিধর্মী মন খারাপ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

মানুষের মুখে হাসি ফোটানো জগতের সবচাইতে কঠিন কাজ, অথচ আমাদের অঞ্চলে যারা হাসি ফোটানোর কাজ করেন তারা হাসির পাত্রই থেকে যান। অবশ্য, সেটার জন্য কে দায়ী আমি নিশ্চিত না: তাঁরা কি উচ্চমার্গের হাসির কন্টেন্ট পান না, নাকি শ্রোতাদের লেভেল চিন্তা করেই উচ্চমার্গের দিকে পা মাড়ান না!

হাসির জন্য হালকা মানের কন্টেন্টকে আমি তেমন খারাপ কিছু মনে করি না। এবং সেটাই প্রধানত হয়ে আসছে এসব তথাকথিত হাসির পেইজগুলোতে (এবং বিস্ময়কর/মজার ভিডিও টাইপের পেউজগুলোতে)। এখন এসব পেইজ তো চালায় সব ছাগুরা, এবং তারা তাদের লক্ষ্যে কিন্তু খুবই সফল। ছাগুরা/প্রতিক্রিয়াশীলরা ঠিকই মানুষের কাছাকাছি যায়, তাদের ভাষা বোঝার চেষ্টা করে। বিপরীতে, প্রগতিশীলরা মানুষের কাছ থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। এখন সাধারণ মানুষ তো এসব হাসির জিনিসপাতি, বিস্ময়কর ভিডিও/ছবি এসব চায়, বেশ ভালোভাবেই চায় (তাদের পেইজের সাবস্ক্রাইবার তো ব্যাপক)। এবং এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে পাত্তা না দেয়ার তো কোনো কারণ দেখি না। প্রগতিশীলরা না করলে সেটা তো প্রতিক্রিয়াশীলরা করবেই।

আমি মনে করি প্রগতিশীলরা ধর্মীয় পেইজও চালানো উচিত, যেখান থেকে মানুষ ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে, কিন্তু মানুষ খুন করার কোনো উৎসাহ পাবে না! বা সেরকম কোনো পেইজ যদি থেকে থাকে, সেটাকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করা।

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হালকা কন্টেন্ট মানেই খারাপ কিছু সেটা আমি বলি নাই আসলে। একাবারে নন্সেন্স হিউমারও দারুণ হিউমার হইতে পারে। কিন্তু আমাদের অনেক ক্ষেত্রেইই এগুলা কুচিন্তিত নন্সেন্স ইন্সেন্সিটিভ আক্রমণ হয়ে যায়।

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষদের কাছে যেতে পারছি না এটা সত্যি। এর কারণ অনেক ক্ষেত্রেই আমরা স্ট্র্যাটেজিক না। আর ছাগুরা অল দ্যা ওয়ে স্ট্র্যাটেজিক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মন মাঝি এর ছবি

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষদের কাছে যেতে পারছি না এটা সত্যি। এর কারণ অনেক ক্ষেত্রেই আমরা স্ট্র্যাটেজিক না। আর ছাগুরা অল দ্যা ওয়ে স্ট্র্যাটেজিক।

এটা স্ট্র্যাটেজিকতার কারনে না। আমার ধারণা এর প্রধান কারন ৩টি (এই মুহূর্তে যেগুলি মনে পড়ছে):

১। উন্নাসিকতা
২। লেখাপড়ার অভাব, বা বলা ভাল একচক্ষু পড়াশোনার প্রাদুর্ভাব
৩। সহমর্মিতা ও এম্প্যাথির অভাব

****************************************

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পয়েন্ট। অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারলাম না কিন্তু এর প্রায় প্রত্যেকটি (না হলেও ২ আর ৩) আরও প্রকটভাবে ছাগুগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপকভাবে আছে। কিন্তু স্ট্র্যাটেজি আর কর্মপরিকল্পনার জোড়ে তারা এইসব প্রচারণায় বা জনগনের কাছে পৌছানোর ব্যাপারে এগিয়ে গেছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মন মাঝি এর ছবি

আমার বক্তব্যটা আসলে বুঝিয়ে বলতে পারিনি এই অল্প কয় লাইনে। প্রত্যেকটা পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলাম প্রথমে, কিন্তু সেটা এত বিরক্তিকরভাবে বড় হয়ে যায় যে পরে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছি। হাসি

২ নং পয়েন্টটা ছাগুদের মধ্যে যদি বেশি হলেও, ওটাই কিন্তু আসলে ইফেক্টিভ বেশি আপনার 'সাধারণ মানুষের' ক্ষেত্রে। এবং তা শুধু "স্ট্র্যাটেজি আর কর্মপরিকল্পনার জোড়ে" না (এটাতো আছেই), ওরা যা জানে ও প্রগতিশীলদের চেয়ে বেশি ইফেক্টিভলি কমিউনিকেট করতে পারে তা চরিত্রগতভাবে সাধারণ মানুষের অনেক বেশি নিকটবর্তী বলে, তাদের পার্সেপশনে অনেক আপন, এ্যাক্সেসিবল আর কম্ফোর্টেবল বলেই ছাগুরা এটা পারে। এসব প্রগতিশীলরা জানে বা পারে না ঠিকমত। এজন্যেই প্রগতিশীলরা হেরে যায়। আমি কি বলতে চাইছি ধরতে না পারলে বইলেন, ঐ হাতি কমেন্টটা সেইভ করা আছে - ঝেড়ে দিমুনে! চোখ টিপি

৩ নং-টাও ছাগুদের মধ্যে বেশি থাকলেও, যেটুকু আছে সেটা তারা অনেক বেশি ইফেক্টিভলি কমিউনিকেট করতে পারে ও সেইমত মানুষকে ম্যানিপুলেট করতে পারে। কেন পারে ভেবে দেখেছেন কখনও, বা কিভাবে প্রগতিশীলরা এই কাজটা ওদের চেয়ে ভালভাবে পারতে পারে?

****************************************

হিমু এর ছবি

প্রগতিশীলেরা আর্ট অফ গ্র্যাজুয়েশনটা রপ্ত করতে পারেনি কোনোকালেই। তাদের কথাগুলো গোঁড়াদের স্বস্তিবলয়ের এতোই বাইরে থাকে যে মাঝখানের দূরত্বটুকু পূরণের সেতু কোনো পক্ষই তৈরি করতে যায় না। ছাগুরা বাস করে গোঁড়াদের স্বস্তিবলয়ের ভেতরেই, সেতুবন্ধনের খাটনি তাদের নেই। আর যেখানে সে খাটনিটা আছে, সেখানে তারা এক আনা দু'আনা করে এগোয়ে, এক পুরুষ সামনে গিয়ে মক্সদ হাসিল করার পরিকল্পনা নিয়ে। প্রগতিশীলের কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেই, সে খেটে খায় অবসরে প্রগতি করে, তার সবকিছুই আজ-কাল-পরশুর মধ্যে করে ফেলার তাড়া।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাঁধিয়ে রাখার মতো কমেন্ট! একটা স্বাভাবিক প্রশ্ন, মানুষ কি জন্মগতভাবে মূলত গোঁড়া? এই প্রশ্নের উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে জিজ্ঞাস্য হচ্ছে সামাজিক শিক্ষাই যদি তাকে গোঁড়া বানিয়ে থাকে তাহলে সামাজিক শিক্ষার গড়নটা এমন হলো কী করে? কেনই বা তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়? কেনই বা মানুষ যত সহজে ছাগু হতে পারে ততো সহজে প্রগতিশীল হতে পারে না।?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

আমার মতে "গোঁড়া" শব্দটা এখানে বোধহয় ঠিক লাগসই না। বেশির ভাগ মানুষ আসলে ইন্সটিংক্ট ও আবেগ নির্ভর, বুদ্ধিবৃত্তির বিষয়টা পরে আসে। সমাজের সংখ্যালঘু এক শ্রেণীর মানুষই কেবল এই অর্ডারটা বা ক্রমে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন নিজেদের বেলায় - এদেরকেই আমরা “প্রগতিশীল” বলি হয়তো। তবে নীচে এক লহমা যেমন বলেছেন, এই ক্রমের পরিবর্তনটা গ্রেডেশনাল। আমি ব্যক্তিগতভাবে অবশ্য এই গ্রেডেশনের ব্যাপারে কড়াকড়িভাবে জাজমেন্টাল হওয়ার পক্ষপাতি না, কারন এই গ্রেডেশনের কোন চূড়ান্ত ও পূর্ণ মানদণ্ড আমার জানা নেই। কারও জানা আছে কিনা, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত না।

যাহোক, এই অর্ডার বা ক্রমটা বোধহয় বিবর্তনের দান - ইন্সটিংক্ট ও আবেগের অনেক পরেই বোধহয় বুদ্ধিমত্তার আগমন দেহে ও মনে। এই ক্রমের উত্তরাধিকার আমরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেত্রে। এই এ্যানিমাল ইন্সটিংক্টের সাথে যোগ হয়েছে একরকম ইউনিক কল্পনাশক্তি যা আবার (অন্য) এ্যানিমালদের নাই। এই কল্পনাশক্তি সম্পর্কে ইতিহাসবিদ ইউভাল হারারি এখানে কিছুটা বলেছেন এক সাক্ষাৎকারে, এবং এখানে আরেকটু বিস্তারিত একটি লেকচারে। আমরা যখন ভয়ভীতি, বিপদ, অনিশ্চয়তা, অক্ষমতা, অজ্ঞানতা, নিরাশা বা বাঁচার লড়াই বা কম্পিটিশন ইত্যাদির মুখে পড়ি এবং চট করে এর সমাধান করতে পারিনা - তখন প্রায়ই আমাদের বিপদ থেকে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার প্রাগৈতিহাসিক এ্যানিম্যাল ইন্সটিংক্টটা কিক-ইন করে। এই নিরাপদ আশ্রয়টা যখন বাস্তব জীবনে পাইনা বা তৈরি করে নিতে অক্ষম হই বা তৈরি করার জন্য ইন্টেলেকচুয়ালি যথেষ্ট ইকুইপড হই না, তখনই আমরা হারারি-কথিত আমাদের ঐ মনুষ্যোচিত ইউনিক কল্পনাশক্তি খাটিয়ে "নিরাপদ আশ্রয়"-টা কল্পনাতেই তৈরি করে নেই। এই "কাল্পনিক নিরাপদ আশ্রয়টাকে" আমরা বাস্তব জীবনে বিভিন্ন নামে ও রূপে চিনি এবং এটা তৈরি করতে খুব একটা শিক্ষা-দীক্ষার প্রয়োজন হয় না (তাই বলে এটা অশিক্ষিতদের মনোপলি না কিন্তু!)। এর সুবিধা ও সমস্যা এখানেই। রাগ করুন, আক্ষেপ করুন আর যাই করুন, এটাই আমাদের প্রকৃতিগত বাস্তবতা এবং হারারির মতে এই কল্পনাশক্তি দুধারি ছুরির মত অনেক দুর্দশার পাশাপাশি প্রাণিজগতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের জন্যেও দায়ী।

তবে এইখানেই আসে ছাগুদের ভূমিকা। সবসময় না হলেও অনেক্সময়ই শিক্ষাগত ও বৌদ্ধিকভাবে আনইকুইপড বা লেস ইকুইপড সাধারণ মানুষের চেয়ে এনারা বেশি ইকুইপডই হন। তারা সাধারণ মানুষের সামনে তখন নিজেদের মনোমত ও স্বার্থমত বানানো কাল্পনিক নিরাপদ আশ্রয়ের প্রাসাদ খুলে বসেন - এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নিজেদের সামনে আর কোন এ্যাক্সিসিবল বা নিজেদের এ্যক্সেস-ক্ষমতার সীমার মধ্যে থাকা বিকল্পের অভাবে ঐ কাল্পনিক নিরাপদ আশ্রয়টাতেই হুড়হুড় করে আশ্রয় নেন। এই আশ্রয় থেকে তাদের বের করে আনা খুবই কঠিন কাজ। কেই বা একটা নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে অনিশ্চয়তার পথে হাটতে চায়? এটা আমাদের চিরন্তন ইন্সটিংক্টের মধ্যে পড়ে না, বা বলা ভালো নিশ্চিত আশ্রয় আঁকড়ে থাকাটাই আমাদের চিরন্তন ইন্সটিংক্ট (সম্ভবত বিবর্তনিক উত্তরাধিকার) -- এবং এজন্যে মনে হয় মানুষকে খুব একটা দোষও দেয়া যায় না। মানুষ এমনই। ব্যস। সংখ্যালঘু একটা শ্রেণী অবশ্য এই ইন্সটিংটের বা 'ক্রমের' শিকল ছিড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন বিভিন্ন মাত্রায়, যাদের আমরা "প্রগতিশীল" বলছি। কিন্তু তাদের দিয়ে বাকিদের মূল্যায়ন করাটা বোধহয় ভুল বা অনুচিত হবে। বরং বাকিদের নিজেদের পর্যায়ে তুলে না আনতে পারার ব্যর্থতা, ছাগুদের কাছে নিজেদের সেই নেতৃত্বের দায়িত্ব abdicate করা বা তাদের কাছে হেরে যাওয়ার দায়িত্ব তাদের (প্রগতিশীলদের) উপরেই বর্তায় অনেকখানি। অনিচ্ছা বা বাধা বা সার্বিক সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিকুলতা - যে কারনেই হোক না কেন, এই দায়িত্বটা যদি প্রগতিশীলরা ইফেক্টিভলি পালনে অক্ষম হন, তাহলে নিদেনপক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকতে পারেন তারা হয়তো। আমি অন্তত তেমনটাই অনুভব করি অধিকাংশ সময় (যখন ঠাণ্ডা মাথায় থাকি আরকি!)। এটাও একরকম বিবর্তন, আর বিবর্তনে দোষারোপের কোন জায়গা নেই। কেবলই জয়-পরাজয় আছে।

নেহাতই আমার দুই কড়ি মূল্যের মতামত / অনুভূতি। তার বেশি কিছু না।

****************************************

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

এক লহমা এর ছবি

গুরু গুরু অসাধারণ!
এই তাড়ার চোটে তাদের নিজেদের মধ্যে সংযোগেও ঘাটতি থেকে যায়। তার সাথে যুক্ত থাকে আরেকটা সমস্যা। বহু মানুষের মধ্যেই প্রগতিশীলতা আর পশ্চাৎপদতার একটা দ্বান্দিক সহাবস্থান জারী থাকে। প্রগতিশীল ধারণাগুলি যেহেতু ক্রমাগত নিজেকে যাচাই করার শর্তপালনের মধ্য দিয়ে এগোয়, প্রগতির বিভিন্ন অবস্থানে দাঁড়ানো মানুষগুলি পারস্পরিক সাংঘর্ষিক অবস্থানও নিয়ে নিতে পারে, নেয়। বিপরীতে, পশ্চাৎপদতার নিজেকে যাচাই করার কোন দায় নেই বলে সম্মিলিত পশ্চাৎপদতার বৃহৎ সমুদ্রে সকলেই একই সাথে বিভিন্ন স্তর পর্যন্ত নিজেদের নিমজ্জিত রেখে সে সমুদ্রের সুনামিতে বারে বারেই প্রগতিশীলতার বিচ্ছিন্ন কীর্তিস্তম্ভগুলিকে ডুবিয়ে বা ভেঙ্গেচুরে ক্ষতিগ্রস্ত করে দিতে পারে, দেয়।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

হাততালি

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মন মাঝি এর ছবি

ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় আর সুধীরের ঘটনায় বাংলাদেশি ফ্যানদের একাংশের এবারের প্রতিক্রিয়াটা যতটুকু না গৎবাঁধা হিন্দুবিদ্বেষ প্রসূত ভারত বিদ্বেষ ছিল, আমার মনে হয় তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল একদিকে ভারতীয় মিডিয়া, কোচ, ফ্যান, কমেন্টেটর, বিজ্ঞাপনদাতা - সবার সম্মিলিত ও অনবরত প্রকাশ্য অপমানজনক ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যমূলক মন্তব্য, বক্তব্য, ব্যঙ্গবিদ্রুপ, হেয়কারী ভিডিও, বিজ্ঞাপন, প্রচারণার তোড় -- আর অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড কাপে আনফেয়ার রেফারিং-এর পিছনে ভারতীয় প্রভাবের পার্সেপশন থেকে শুরু করে আইসিসি-সহ পুরো বিশ্বক্রিকেট ব্যবস্থায় বিসিসিআই-এর উদ্যোগে একধরণের প্রায় বর্ণবাদী এপার্টহাইড-সদৃশ বিকট বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার প্রবর্তন। আর এর সবকিছুর উপরে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘায়ের মত সুধীরের ঘটনাটা ভারতীয় মিডিয়াতে অতিরঞ্জিত ও উষ্কানিমূলকভাবে প্রকাশের ফলে সোশাল মিডিয়াতে, কিছু কিছু ভারতীয় অন-এয়ার ও অনলাইন নিউজ আউটলেটগুলিতে ও সেগুলির মন্তব্য সেকশনগুলিতে মুসলিম-বিদ্বেষ প্রসূত বাংলাদেশ-বিদ্বেষের রূপ ধরে অকথ্য, রোমহর্ষক, অশ্লীল-কূৎসিত-বীভৎস এসিডিক সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদী-রেইসিস্ট-জেনোফোবিক-জিঙ্গোইস্টিক বিদ্বেষ আর এ্যাবিউজের যে সুনামি বয়ে গেল - অনেকটা তার প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এবারে বাংলাদেশি ফ্যানদের এইরকম কিছু প্রতিক্রিয়া হয়েছে সম্ভবত। ভারতীয় সাইটগুলিতেও তাদের কেউ কেউ তাদের প্রতিবাদ রেখে আসাতে বুঝতে পারছি এ বিষয়টা এখানে অনেকেরই নজরে পড়েছে, তাদের স্পর্শ করেছে, গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। অনেক ভারতীয় অনলাইন সোশাল বা নিউজ সাইটে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত যেকোন প্রসঙ্গে পাঠকদের এরকম মুসলিম-বিদ্বেষপ্রসূত বর্ণবাদী-সাম্প্রদায়িক-জেনোফোবিক-জিঙ্গোইস্টিক এ্যাবিউজের মহোৎসব একটা নিয়মিত ব্যাপার। প্রায় অবসেশনের মত।

আমি দেশি ফ্যানদের অন্যায়, অশোভন বা অসভ্য আচরণ কোনভাবেই জাস্টিফাই করছি না! এধরণের আচরণ বিনাতর্কে, একবাক্যে নিন্দনীয়। শুধু এটুকুই বলবো - আত্নসমালোচনা ভালো, কিন্তু তা পূর্ণাঙ্গ সত্য চেপে গিয়ে নয়।

****************************************

মরুদ্যান এর ছবি

ভারত/ পাকি ফ্যান দের একটা বড় অংশ অনেক হারামি। আপনার কথা ঠিকাছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মন্তব্যের অনেক অংশের সাথেই একমত। এটা লুকাতেও চাইছি না। কিন্তু তাতে বোধহয় পোস্টের মূল বক্তব্য পালটায় না। এই ভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণ আপাতত এই পোস্টে আমি আর করছি না। প্রাসঙ্গিক কোনো পোস্ট আসলে নিশ্চয়ই করা যাবে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মন মাঝি এর ছবি

এই 'ভিন্ন' আলোচনা আমিও আর বাড়াতে চাই না। হাসি

****************************************

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ফেসবুকে নতুন কোনো ফান পেইজ দেখলেই অপেক্ষায় থাকি কখন ল্যাঞ্জা বের করবে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমার ক্যান জানি শুরু থিকাই এই রসিকতাগুলোকে খুবই শস্তা লাগছে। মানে কোনো কিছু না জাইনাও আমি একটা পেইজেও লাইক দেই নাই এগুলার। এইরকম ল্যাঞ্জা বাইর হইলে নিজের জাজমেন্টে মুগ্ধ হয়ে যাই খাইছে

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

সেম টু সেম লইজ্জা লাগে

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

পুনশ্চঃ এই লিস্টের "মুরাদ টাকলা" কিন্তু আসল "মুরাদ টাকলা" না।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আবির আনোয়ার এর ছবি

সত্যানন্দ সাহেব আমার মন্তব্যটা করে দিসেন। আপনাকে ধন্যবাদ। আর পোস্টে চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আসল টাকলা নকল টাকলাও আছে আবার? নকল হইলেও প্রায় ৫০ হাজার লাইক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এইটা আসল। আর এইটা নকল। (আরো আছে) নিজ দায়িত্বে বাঘ মার্কা দেখে ক্লিকান!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কল্যাণ এর ছবি

আপনার পর্যবেক্ষণ ঠিক আছে। আমাদের কালচারে রসিকতা মোটাদাগে হিউমিলিয়েশনের একটা অস্ত্র বিশেষ। আমাদের শালীনতা বা সৌজন্যবোধের ডেফিনিশন এর কারণ সম্ভবত।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সো এর ছবি

সহমত।

সুজন চৌধুরী এর ছবি
ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

এক লহমা এর ছবি

চলুক ট্রলিং বনাম সারকাজম এর ভিডিও উদাহরণ চমৎকার হয়েছে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

ফান পেইজ গুলার বিবর্তন দেখলে একটা কথাই মনে হয় - ল্যাঞ্জা ইজ আ ভেরি ডিফিকাল্ট থিং টু হাইড ইনডিড।

আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এদের সবগুলার পিছনে অর্গানাইজড একটা গোষ্ঠী টিম কাজ করে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ওডিন এর ছবি

ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ইন্ডীয়ান ক্রিকেট টিমের আধকামানো মাথার ছবি নিয়া প্রথম আলোর ট্রোলিং দেখলাম। এই জিনিসটা যদি আমাদের পুলাপানদের নিয়া অনন্দবজর পত্রিকা করতো, তাইলে ঘটনা কি হইতো সেইটা কল্পনাও করতে চাচ্ছি না।

দুঃখজনক হইলেও- বাংগালীর রসবোধ নাই।
বাঙ্গালীর কমন সেন্স আরো বেশি নাই। মন খারাপ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমি আরেকটা জিনিস অবাক হই, বিদেশি কোনো প্রাক্তন খেলোয়ার যখন নিজের দেশের পক্ষে কথা বলে যে এবার আমাদের দেশে ভালো করবে, আমাদের ভালো টিম তখন তাকে ধুয়ে দেই আমরা। মানে দেখলাম গাঙ্গুলি ইন্ডিয়ান টিম নিয়ে পজেটিভ কিছু বলছে যেটা নিয়ে বিশাল হাউকাউ। আমাদের কেউ যদি বলে হ্যা এবার আমাদের টিম ভালো, অস্ট্রেলিয়াও পাত্তা পাবে না সেইটা কিন্তু আবার গর্বের বিষয়। সময়ের সাহসী সন্তান। নিরন্তর হিপোক্রিসির মধ্যে বসবাস আমাদের।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

এদের কাজ এককথায় জঘন্য। পরিশ্রম, সংগ্রহ, পোষ্টে চমৎকার উপস্থাপনের জন্যে ১০/১০।
সাদা মেঘদল

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

প্রয়োজনিয় লেখা। খাটুনির লেখা চলুক

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

খাটনি হয় নাই আরকি। আমি চোখে কিছুমিছু পড়লে ফোল্ডারের চিপায় ইস্কিনশট নিয়া রাখি। সেইখান থিকা আপ কইরা দিলাম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই প্রয়োজনীয় একটা লেখা। ফেবুতে মোটাবুদ্ধির মানুষের এধরণের কৌতুক নামের অকৌতুক সত্যিই বিরক্তিকর।
Jaraahzabin

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সজল এর ছবি

আমি ইন্টারনেটে ভেসে বেড়ানো বাংলা জোক/মিম এর বেশিরভাগের স্থূলতা দেখে অবাক হই, তার চেয়ে বেশি অবাক হই এত মানুষ এইগুলা পছন্দ করে দেখে।

হিউমারের সময় সীমাটা বুঝা অনেক কঠিন আসলে। আমি ব্যক্তিগত জীবনে সারকাজম ব্যবহার করি অনেক, লোকজনকে পচাইও অনেক। কখনো কখনো কাউকে হার্টও করে ফেলি বা করতাম। আমার নিজস্ব পদ্ধতি হচ্ছে সজ্ঞানে কারো ইনহেরেন্ট দুর্বলতায় আঘাত না দেয়া, যার সাথে হিউমার করলাম তার প্রতিক্রিয়া আমলে নেয়া ইত্যাদি।

আবার এটাও ঠিক, যত চিন্তাভাবনা করেই করা হোক না কেন কিছু হিউমার কাউকে না কাউকে আঘাত করবেই। যেমন, সৃষ্টিতত্ত্ব, জেনেসিস নিয়ে ধর্মের গল্পগুলার রেফারেন্স টেনে গল্প ফেঁদে বসলে কারো না কারো অনুভূতিতে আঘাত চলে আসে।

এনিওয়ে, ভালো কালেকশন। তবে, মানুষের মাঝে শিক্ষার চেয়ে ইন্টারনেটের স্প্রেড বেশি হওয়াতে, আমার মনে হয় না নিকট ভবিষ্যতে এর কোন উন্নতি হবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিউমার কাউকে আঘাত করবেই এটা সত্যি। এখানেই আসলে নিজেকে প্রশ্নটা করা জরুরী। আমি কি আঘাত করতেই চাইছি? নাকি এটা আমার অবচেতন ঘৃণার অনিচ্ছুক বহিঃপ্রকাশ? যদি এমন হয় আঘাত করতেই চাচ্ছি ভেবে চিনতে তাহলে সেটা এক রকম। আমি চাইতেই পারি সমাজের নানা অসংগতি (যদিও সেটা ব্যক্তিনির্ভর) হাসি তামাশা স্যাটায়ারের মাধ্যমে তুলে ধরতে। সেটাকে আমি সংবেদনশীলতার অভাব বলব না।

এনিওয়ে, ভালো কালেকশন। তবে, মানুষের মাঝে শিক্ষার চেয়ে ইন্টারনেটের স্প্রেড বেশি হওয়াতে, আমার মনে হয় না নিকট ভবিষ্যতে এর কোন উন্নতি হবে।

এইটা ঠিক আছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রানা মেহের এর ছবি

খুব ভালো কাজ হয়েছে।

মজা লস যে এখনো 'হিউমার' করার চেষ্ট করে এতেই আমার আশ্চর্য লাগে।

তারা নাকি ট্রল পেইজ। তাদের প্রথমে 'পিএম' অফিস থেকে হুমকি দেয়া হলো।
লোকজনের ঝাড়ি খেয়ে 'পিএম' অফিস ডিলিট করে বললো 'ঊপরের' নির্দেশে পেইজ বন্ধ করে দিতে হবে।
তারপর তারা 'ক্যানাডা' চলে গেল। ভারতীয় এক গায়কের ছবি চালিয়ে দিল অ্যাডমিনের নামে।

ওহ গুডনেস!!!!

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই পিএম নাটক একটা চরম ফানি ব্যাপার ছিল দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

বিগ ব্যাং থিওরি সিরিজ টি সুন্দর ভাবে যে কাউকে, যে কোন কিছুকে পচানোর একটি অসাধারাণ উদাহরণ মনে হয় আমার কাছে, এত উইটি কৌতুক বোধহয় সবার দ্বারা সম্ভব হয় না।
অনন্যা

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

কৌতুক উইটি হতেই হবে এমন কথা নেই। কিন্তু অন্তত সেটা যেন রাগ মেটানোর আর ঘৃণা প্রকাশের জন্য আঘাতের অস্ত্র না হয়।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নজমুল আলবাব এর ছবি

জন্মকষা হইলে যা হয়, ফান/টান মনে ধরে না। তাই এইসব জিনিসপাতি খুব কমই খেয়াল করি। দুয়েকটায় লাইক লুইক থাকে, ওই পর্যন্তই। তবে যতটারে দেখি, সবটারেই ছাগল মনেহয়।

লেখায় উত্তম জাঝা!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

প্রায় সবগুলাই ছাগু, যারা ছাগু না তারা আবার ছাগল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীড় সন্ধানী এর ছবি

'মজা লস' টাইপ ফানপেজগুলা ছাগুরা চালায় বলে জানলেও 'মুরাদ টাকলা'র পেজটা দেখে অবাক হলাম। ওই পেজটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং এন্টি ছাগু বলেই জানতাম। আদিটাতে আমার ফ্রেণ্ডলিস্টের অনেকে আছে যারা সচলসহ নানান প্রগতিশীল ব্লগে আছে। কিন্তু ছাগুদের টাকলায় ফ্রেণ্ডলিস্টের কেউ নাই। খোঁজ নিয়ে জানলাম মুরাদ টাকলার আসল পেজটার অনুকরণে ছাগুরা একটা মুরাদ টাকলা বানাইছে। এখানে যে স্ক্রিনশট আছে সেটা ছাগুদের তৈরী মুরাদ টাকলা। আদি মুরাদ-টাকলা পেজটার জন্ম ২০১২ তে, নকল মুরাদ টাকলার জন্ম ২০১৩তে শাহবাগ আন্দোলনের পর।

আদি মুরাদ-টাকলা হলো https://www.facebook.com/MuradaTakala
ছাগু মুরাদ টাকলা হলো https://www.facebook.com/Murad-Takla-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%BE-1411205932436033/?fref=ts

ছাগুদের ফেসবুক পেজ চুরির আরেকটা নমুনা এইটা!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ইয়ামেন এর ছবি

নীড়সন্ধানী ঠিক বলেছেন এটা আসল মুরাদ টাকলা পেজ না এই জিনিসটা লেখায় যোগ করে দিলে ভালো হয়
এ ছাড়া চমত্কার লেখা, এবং দরকারী

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সম্পাদনা করে দিলাম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

মুরাদ টাকলা পেজ নিয়ে অজ্ঞতাবশত আপনি একটা ভুল করেছিলেন, ভুলটা জানতে পেরে সেটা সম্পাদনাও করে দিয়েছেন। মুরাদ টাকলা পেজের অ্যাডমিনও দেখলাম এই ব্যাপারে সংবেদনশীল আচরণই করেছেন। কিন্তু মুরাদ টাকলার কিছু ফলোয়ার দেখলাম এই সুযোগে কমেন্টে সচলায়তনকে বেশ এক হাত দেখে নিচ্ছে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হ্যাঁ, পোস্টটা দেখেছি। তাদের গোস্বা করার কারণ আছে। এডিট করে দিয়েছি তথ্য পাওয়া মাত্রই। ফলোয়ারদের আচরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কোনো কারণ নাই। সচলায়তনের ওপর অনেক মানুষই খ্যাপা। ফলোয়ারদের ওপর তো আর কারও নিয়ন্ত্রণ নাই।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।