শহরে যখন গল্প নেই

সুহান রিজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন সুহান রিজওয়ান (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৮/১০/২০০৯ - ১২:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"A wastepaper basket is the only true friend of a Writer"- Isaac Bashevis Singer

আজকাল আর শহরে গল্প খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা যারা একসাথে গল্প খুঁজি; তাদের কেউই প্রথমে খেয়াল করিনি যে আমাদের গল্পের ভাঁড়ার ফুরিয়ে এসেছে। আমাদের সময় কাটে গল্প লিখে যাওয়াতে, নির্বিবাদে, অনায়াসে। আমরা কেবল আড্ডা দিই, এমনকী লোকাল বাসে রুশো-রুশদী-রশোমনের তত্ত্ব নিয়ে কথা বলি, ঈদ আর পূজা উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যায় মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপণ আছে এমন পাতায় আমাদের গ... "A wastepaper basket is the only true friend of a Writer"- Isaac Bashevis Singer

আজকাল আর শহরে গল্প খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা যারা একসাথে গল্প খুঁজি; তাদের কেউই প্রথমে খেয়াল করিনি যে আমাদের গল্পের ভাঁড়ার ফুরিয়ে এসেছে। আমাদের সময় কাটে গল্প লিখে যাওয়াতে, নির্বিবাদে, অনায়াসে। আমরা কেবল আড্ডা দিই, এমনকী লোকাল বাসে রুশো-রুশদী-রশোমনের তত্ত্ব নিয়ে কথা বলি, ঈদ আর পূজা উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যায় মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপণ আছে এমন পাতায় আমাদের গল্প দিতে সম্পাদকদের নিষেধ করি। কিন্তু আমরা খোঁজ নিই না, আমাদের গল্পগুলো কেমন আছে- তারা ঠিক মত বড় হচ্ছে কি না- তাদের সকলের চেহারা আলাদা হয়েছে কী না।

আমরা তাই গল্প নিয়ে ভাবি না। গল্প লিখতেই আমাদের যত সময় ব্যয় হয়- তাই আমাদের আর গল্প নিয়ে ভাবা হয় না। আমরা জানি গল্পগুলো বেঁচে আছে; আমাদের ডায়রীর পাতায়, আমাদের মাথার কোটরে, আমাদের ল্যাপটপের সেইভ করা নোটপ্যাডের মাঝে। আমরা জানি আমাদের গল্পগুলা ভালোই আছে- তারা ঠিকমতই বড় হচ্ছে- তারা দেখতে আর চরিত্রে সবাই আলাদা। গল্পদের খোঁজ করার সময় কোথায় আমাদের?? সময় নেই। কিন্তু গল্পগুলো আছে, আমরা ঠিক জানি, আমরা নিশ্চিত।

তাই যখন একদিন গল্পকার ছোটন আহমেদ আমাদের আড্ডায় এসে জানায় যে তাঁর গল্পগুলোকে পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা তখন তাকে পাত্তা দেই না। আমরা বাদাম খাই, হাসি, ভয় পাওয়া ছোটনকে নিয়ে তামাশা করি- তাঁর আশঙ্কা আমাদের স্পর্শ করে না। একটু ধাতস্থ হবার পর ছোটনকে আমরা বলি যে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, অনেকদিন ধরে টানা গল্প লেখার পর এরকম হতে পারে- তারপর আজকাল ঢাকা শহরে গরম একটু বেশিই পড়েছে। কিন্তু আমাদের উপদেশ দীর্ঘস্থায়ী হয় না, হাবিজাবি সব উপদেশের পরে আমরা আবার হাসি; ছোটনের পালিয়ে যাওয়া গল্পগুলোকে নিয়ে রসিকতা করি...। কিন্তু বাসায় এসে আমরাও সবিস্ময়ে আবিষ্কার করি আমাদের সযতনে রেখে দেয়া গল্পগুলোও নিখোঁজ হয়েছে। আমরা এইবার একটু অবাক হই। তারপর আবার খোঁজা শুরু করি- ডায়রীর পাতা খুঁজি- ল্যাপটপের সেইভ করা নোটপ্যাডের মাঝে খুঁজি- মাথা শীতল করার জন্যে টিভি বিজ্ঞাপণে দেখা সবচেয়ে কার্যকরী তেল মেখে পুরাতন গল্পগুলো মনে করার চেষ্টা করি। এবং আমরা সেগুলো খুঁজে পাই না।

পরদিন আড্ডায় আমরা সবাই আবার একত্রিত হই। ধানমন্ডির কয়েস চৌধুরীর লেখার টেবিলের ড্রয়ারের, শাঁখারীবাজারের বিজয় বসুর শোবার বিছানার তোষকের নীচের অথবা মালিবাগের নুরুল হুদার বুকপকেটে রাখা ডায়রীর থেকে গল্প নিখোঁজ হবার সংবাদ আমাদের কানে আসে। আমরা এইবার অসুবিধার মধ্যে পড়ি। আমরা এইবার মুখস্থ করা রুশো-রুশদী-রশোমনের তত্ত্ব আওড়াই না, সম্পাদকের বারংবার আসতে থাকা মুঠোফোন বার্তার জবাব দেই না। আমাদের গল্পগুলো যে অবাধ্য হয়ে গেছে, সেই বিষয়ে আমাদের সংশয়ের কোন অবকাশ থাকে না এবং আমাদের প্রভূত যত্নের পরেও গল্পগুলোর এইরকম পালিয়ে যাওয়া যে তাদের কৃতঘ্নতার উদাহরণ মাত্র এই নিয়েও আমরা নিঃসংশয় হই। তবুও এই পালিয়ে যাওয়া গল্পগুলোকে ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর হয়ে উঠি, ফলে জনপ্রতি মাত্র দুই কাপ চা আর দুইটা সিগারেট পুড়িয়েই আমাদের অনুসন্ধানে নামতে হয়।

আমরা তাই গল্পগুলোর খোঁজে আজিজ মার্কেটে যাই এবং আমরা নিরাশ হই। সেখানে পোস্ট মর্ডান কবি আর গল্পকারদের ভীড়ে আমরা পালিয়ে কিংবা হারিয়ে যাওয়া গল্পগুলোকে খুঁজে পাইনা। আজিজের কিছুদিন আগেও অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকা গলিতে গলিতে সদ্য খোলা বুটিক শপের মালিকেরা আর টি-শার্ট কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবকেরা আমাদের অনুসন্ধানে বিরক্ত হয়- " কোত্থেইক্যা যে আসে এইসব আজাইরা লোকজন... এত্তো বিরক্ত করতে পারে এরা !" বলে আমাদের নিরস্ত করতে চায়। কিন্তু আমাদের মাঝে স্বার্থক এবং জনপ্রিয় প্রেমের গল্পকার হাসানুজ্জামান হাসুকে দেখে এই যুবকেরাই আমাদের চা-নাস্তা খাওয়ানোর জন্যে পীড়াপীড়ি করে আর কি খুঁজছে না জেনেই আমাদের খোঁজাখুঁজিতে সাহায্য করে কিংবা সাহায্য করবার ভান করে। অযথাই। আমরা আজিজে ব্যর্থ হই, একই ভাবে ব্যর্থ হই বাংলাবাজারে, নীলক্ষেতের মোড়ে।

গল্পের খোঁজে এইবার আমরা লাইব্রেরীতে যাই। পাবলিক লাইব্রেরী, বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী, ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরী। সেখানকার বইয়ের পাতার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের গল্পগুলো অথবা তাদের কিছু ভ্রুণ থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা হয়। আমরা তাই বইগুলোর পাতা উল্টাই। নানাবিধ গল্পের মাঝে আমাদের গল্পগুলো খুঁজি। সাকির গল্প, বনফুলের গল্প, পি এইচ লাভক্র্যাফট, বিক্রম শেঠ অথবা খুশবন্ত সিং এর গল্প। সবিস্ময়ে আমরা দেখি - আমাদের গল্পগুলোর নামগন্ধ পর্যন্ত নেই এইখানে। আমরা অনেক পাতা উল্টিয়েও আমাদের গল্পগুলোর সাড়া পাই না। হতবুদ্ধি আমাদের মাঝে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গল্পকার সরাসরি এইসব বই থেকে গল্প তুলে দেয়ার কথা বললে আমরা তাঁকে তিরষ্কার করি- তাঁর কথায় ব্যথিত হই। গল্পগুলোও ব্যথিত হয় বোধহয়- কারণ কোন চিহ্ন না রেখেই আমাদের হাতে ধরা বইগুলো থেকে তারা স্রেফ উড়ে যায়। হারিয়ে যায়।

কাজেই ঢাকা শহরের জন্যে নির্ধারিত "নগর গল্প-পিতা"র কাছে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় থাকে না। প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে এই শহরের জন্যে যেই লোকটা গল্প যুগিয়ে আসছে; আশ্চর্যের বিষয়, আমরা শহরের খ্যাতিপ্রাপ্ত গল্পকারেরা তাঁর ঠিকানাটাই মনে করতে সমর্থ হই না।কিন্তু পরক্ষণেই, কেবল প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বে লিটল ম্যাগে লিখে যাওয়া গল্পকারেরা ছাড়া কেউ তাঁর কাছে যায় না- এই জাতীয় একটা ধারণা মনে এনে আমরা নিজেদের দুর্বল স্মরণশক্তির গায়ে প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা করি। এই দুর্বল স্মরণশক্তি আমাদের আরো কিছুক্ষণ তাঁর বাসা কোথায় হতে পারে- এই ভ্রান্তিতে দোলায় এবং অবশেষে আমাদের মাঝের অপেক্ষাকৃত নবীন গল্পকার নেয়ামুল করিম ঝিগাতলার কোন এক তস্য গলিতে নগর গল্প-পিতার আবাস, এই তথ্য মনে করার প্রয়াস পায়।

শেষ বিকেলে সেই তস্য গলির এক বিবর্ণ তেতলা বাড়ির চিলেকোঠার উদ্দেশ্যে উঠবার সময় সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে আমাদের মাঝে কিছু স্মৃতিকাতরতা ভর করে এবং আমাদের মাঝে কেউ কেউ তাদের প্রথম গল্পটি নির্মানের সময় কী ভীষণ উত্তেজনা নিয়ে তারা এই সিঁড়ি বেয়ে চিলেকোঠার নগর গল্প-পিতার কাছে গিয়েছিলো সেই স্মৃতি বর্ণনার প্রয়াস পায়। যে সকল গল্প ভাঙ্গিয়ে আমরা গল্পকারেরা পরবর্তীতে অঢেল পুরষ্কার গ্রহণ করেছি, সেইসব গল্পের প্রায় প্রতিটির ভ্রূণ যে নগর গল্প-পিতার সবরাহকৃত এই সত্য মনে করে আমরা একটু লজ্জাও বোধ করি। কাজেই চিলেকোঠায় উঠে গল্প-পিতার দৈন্যদশা এবং ভগ্নস্বাস্থ্য দেখে আমরা তাঁর কুশল জিজ্ঞাসা করবার খানিক নীরবতা পালন করি। গল্প-পিতা তাঁর ঘড়ঘড়ে স্বরে আমাদের দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং আমাদের আগমনের হেতু তাঁর কাছে বোধ্য হচ্ছে না বলে মত প্রকাশ করেন। নীরবতা ভেঙ্গে তাই প্রবীন গল্পকার দেবাংশু সাহা গল্প-পিতাকে আমাদের গল্প সংকটের কথা জানান। আমাদের প্রত্যেককে তিনজোড়া গল্পের ভ্রূণ দেবার আবেদন জানিয়ে দেবাংশু সাহা-আমাদের মুখপাত্র- হয়তো সাশ্রয়ের আশাতেই যোগ করেন যে প্রতি জোড়া গল্পের জন্যে আমরা হাজার টাকা দিতে প্রস্তুত। গল্প-পিতার হতদরিদ্র অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে দেবাংশু সাহা আরো বলেন যে এরকম অবস্থাতে এতগুলো পুরোনো খদ্দেরকে হাতছাড়া করা তাঁর কিছুতেই উচিৎ হবে না- বিশেষতঃ যেহেতু প্রায় তিন দশক পূর্বে গল্প-পিতা স্বয়ং আমাদের কাছেই প্রতি জোড়া ভ্রুণ কুড়ি টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন।

গল্প-পিতা অতি কষ্টে উঠে দাঁড়ান। এই সামান্য কাজেই তাঁর প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা এবং মুখে কষ্টের ছোপ দেখতে পেয়ে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি। আমাদের মনে সন্দেহ জাগে যে গল্প-পিতার ভ্রূণ উৎপাদন ক্ষমতা অব্যহত আছে কি না। খানিক নীরব সময় পরে - যে সময়টাকে গল্প লিখতে ব্যাকুল ছোটন আহমেদ কিংবা কয়েস চৌধুরী অথবা বিজয় বসুর কাছে অনন্তকাল বলে ঠেকে- তিনি কথা বলেন। গল্প-পিতা আমাদের সকলের মুখের দিকে চেয়ে , জড়ানো স্বরে বলেন- তাঁর কাছে অবশিষ্ট আর কোন গল্প নাই; তাঁর কাছে ১৯৭১ আছে কেবল...

...আমরা এখন জানি যে এই শহরে আর গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না, তাই আমরা আজকাল অন্য কোথাও গল্পের খোঁজ করি। আমরা কুৎসিত কর্পোরেট সংস্কৃতি নিয়া গল্প লিখতে পারি, আমরা প্রায় নিস্পৃহভাবে অথচ নৃশংসতার সাথে ইয়াসমিন অথবা নাজনীন হত্যার গল্প লিখতে পারি, আমরা হ্যালভেশিয়ার একজোড়া চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীমের মাধ্যমে কীভাবে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের বন্ধুত্ব হয় সেই গল্পটাও লিখতে পারি- কিন্তু আমরা তো ১৯৭১ নিয়া লিখতে পারি না...


মন্তব্য

এনকিদু এর ছবি

একটাই কথা ।

টুপি খুলে কুর্নিশ ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

একটাই জবাব...
এনকিদুকে ধন্যবাদ !!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

খেকশিয়াল এর ছবি

আমার কাছে এটা এখনো পর্যন্ত সুহানের লেখা সেরা গল্প
অসাধারণ

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হুমম, বটে ?? যাক- অন্তঃত একজন পাওয়া গেলো যে আমার অপগল্পগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ে...
থাঙ্কু শিয়ালদা !!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সবজান্তা এর ছবি

লেখাটা আসলেই বেশ চমৎকার হয়েছে। তবে আমি একটা সমস্যা অনুভব করছি- লেখার মধ্যে একজনের ছায়া মাঝে মধ্যেই, প্রগাঢ় হয়ে উকিঝুঁকি মারছে, জানিনা তার কেউ অনুভব করেছেন কিনা। তবে এতেও আমি খুব সমস্যা দেখি না- শুরু করার সময় হয়তো ছায়ার প্রকোপ একটু আধটু থাকে। সময়ে এই সবই ঝরে যাবে।

তবে প্রচেষ্টা দারুণ। আমার মনে হয় লেগে থাকলে আর নিরীক্ষা চালাতে থাকলেই, তোমার স্বতন্ত্র একটা স্টাইল বের হয়ে আসবে।

আরো পড়ার প্রত্যাশায়।


অলমিতি বিস্তারেণ

খেকশিয়াল এর ছবি

হ্যাঁ, সমস্যা তো নাই, এই গল্পটা ক নগরের থেকে আমার কাছে আরো একটু পরিপক্ক মনে হয়েছে। তবে আজিজের প্রসঙ্গে কিছুটা লঘু ভাব এসেছে যেখানে কিছুটা হলেও সুর কাটে, কিন্তু ঠিক হয়ে যাবে আশা করি। লেখতে লেখতেই স্বাতন্ত্র বেরিয়ে আসবে নিশ্চিত।

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সবজান্তা এর ছবি

সমস্যা থাকপো ক্যা ! দেঁতো হাসি

আসলে কমেন্টটা করার পর বুঝতে পারসি যে ভাষাগত একটু সমস্যা আছে। যে কেউ পড়লে ভাববো আমি শুধু সমস্যার কথাই কইতেছি। ঘটনা আসলে তা না। লেখাটা আমার ভালো লাগছে, অনেক ম্যাচিওরড লাগছে। ইভেন যার ছায়া আমি দেখতেছি, তার ছায়া আরো অনেকের গল্পেই দেখছি, তয় এইটায় অনেক স্মার্ট উপস্থাপনা। সব মিলায়া সুহানের গল্পটা আমার কিন্তু ভালো লাগছে- এইখানে ভুল বোঝার স্কোপ নাই।


অলমিতি বিস্তারেণ

খেকশিয়াল এর ছবি

ভুল বুঝসি তোরে কে কইলো! গেলি!

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হে হে, সবজান্তা ভাই, বুঝবার পারসি- কিন্তু বইটা তো এখন আপনার কাছে দেঁতো হাসি
আসল কথা হচ্ছে আগের গল্পটা লেখার সময় ঐ বিশেষ লেখকের লেখা পড়ছিলাম। কাজেই মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই সেটার মাঝে একটা ছায়া রয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এবার আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি প্রভাব থেকে দূরে থাকতে...। নিজের একটা প্যাটার্ন খুঁজে নেয়ার চেষ্টা চলছে।
... ধন্যবাদ উৎসাহের জন্যে।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

অসাধারন অসাধারন অসাধারন

গল্প লিখতেই আমাদের যত সময় ব্যয় হয়- তাই আমাদের আর গল্প নিয়ে ভাবা হয় না।

এই লাইন্টা মনে ধরছে খুব দেঁতো হাসি
-------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

থাঙ্কু থাঙ্কু। আমার কিন্তু আপনার বেশিরভাগ ছবিই মনে ধরে... !!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

মূলত পাঠক এর ছবি

ওহে ছোকরা তোমার বয়স কতো? এমন পরিণত হাত জোগাড় করলে কোত্থেকে?

এমন ধরণের গল্প মূল স্রোতে (পশ্চিমবঙ্গীয়) কম দেখা যায়, বরং প্রতিক্ষণ ইত্যাদির প্রকাশনায় দেখা যায়। তাছাড়া বছর বিশেক আগে তবু লেখা হতো, এখন আর দেখি না, তার ভুল অর্থ না হয় সেজন্য খুলে বলি, তামাদি নয়, প্রায় পিরিয়ড পিস বলছি।

বেশি না লিখে ভালো করো, মাঝে মাঝে এমন লেখাই ভালো বরং।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি কি বিশ্বাস করবেন এই বালক মোটে চৌদ্দ ক্লাশে পড়ে?!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পাঠুদা, অনেক বড় কম্পলিমেন্ট দিয়ে ফেললেন - সত্যি, অনেক বড় প্রশংসা দিয়েছেন, এখন দায় বেড়ে গেলো বলে মনে হচ্ছে...

পান্ডবদা, আপনার উপদেশ স্মরণে রাখার চেষ্টা করছি- "নিজেই নিজের গল্পের কঠোর পাঠক হও" - ঐটে...

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সচল জাহিদ এর ছবি

সুহান এটা তুমি কি লিখলা ? এটি কি আমাদের পরিচিত সেই সুহান নাকি পরিনত, বলতে গেলে পরিপূর্ণ একজন লেখক সুহান রিজওয়ান যাকে আজ নতুন করে আবিষ্কার করলাম।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

জাহিদ ভাই, আপনার মুখে এই কথা শুনে আসলেই অনেক- অনেক ভালো লাগছে...। পরিপূর্ণ লেখক তকমাটা অনেক বেশি যদিও- এর ধারে কাছে যাবার সামর্থ্যও আমার নাই...

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

স্বাধীন এর ছবি

কেমনে যে লিখ, ভাইবা পাই না। মন খারাপ

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

শিক্ষক মানুষ, আপনি না উঝলে ক্যাম্নে কী ??? দেঁতো হাসি

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

নাহার মনিকা [অতিথি] এর ছবি

চমতকার লেখা! খুব ভালো লাগলো!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

মুহম্মদ জাফর ইকবাল লিখছিলেন "সুহানের স্বপ্ন"। সেইটা পইড়া তত মুগ্ধ হই নাই। যতটা মুগ্ধ হইলাম "সুহানের গল্প" পইড়া। হাসি
বুঝছি, আমাগো সুহান বড় হইয়া গেছে গা!
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হিহি, নিমকি ছড়া পইড়ে একরাতে বড় হইয়া গেসি... দেঁতো হাসি
'সুহানের স্বপ্ন' আমারো বেশি ভাল্লাগে নাই- বরং 'নিঃসঙ্গ গ্রহচারী' নামের একটা বইতে সুহান নামে একটা কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলো- ঐটা আমার অনেক বেশি পছন্দের...।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সুহান, গল্পের কাঠামো বা ভাষায় সাম্প্রতিক ভালোলাগা কোন লেখকের প্রভাবের ব্যাপারে সিমন তোমাকে আগেই হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল। এই গল্পের কাঠামো আর ভাষায় সেই প্রভাব প্রবলভাবে বিদ্যমান। এটি গল্প লেখক হিসেবে তোমার একটি সাময়িক সমস্যা বলে মনে করছি। আশা করি শীঘ্রই এটি কাটিয়ে তোমার নিজস্ব স্টাইল তৈরি হয়ে যাবে। তোমার আগের গল্পের তুলনায় এই গল্পটি কয়েক হাজার মাইল এগিয়ে আছে - কী ভাষায়, কী প্লটে, কী কাঠামোতে। ভুল বানান, ভাষার গুরুচণ্ডালী দোষ ইত্যাকার বিষয়গুলো তুমি নিজেই সম্পাদনা করতে পারো। তোমার চেষ্টা চালিয়ে যাও। বিশ্বাস রাখি তুমি পারবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

উৎসাহের জন্যে ধন্যবাদ পান্ডবদা।
... ঐ লেখকের যাবতীয় লেখা আমি এখন সযতনে দূরে রাখছি- কারণ সিমন ভাইয়ের ঐ বক্তব্য। তবে ঐ লেখার প্যাটার্ন আমার আসলেই পছন্দ হয়েছে এবং চেষ্টা করছি- এরকম আমারই একটা ধাঁচ দাঁড়া করাতে...।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

চমৎকার লাগলো পড়ে! চলুক
একটা প্রশ্ন জাগলো, গল্প-পিতাকে দিয়ে লেখক গল্প বিক্রী করালেন কেন?

একটা ক্রিটিকাল মন্তব্য, গল্প লেখার এই স্টাইলটা উপভোগ্য, পড়ে অন্যরকম স্বাদ পাওয়া যায়, তবে এই স্টাইলে অধিকাংশ সময়েই দেখা যায় যে লেখক উত্তম পুরুষে বন্ধুদের অবতীর্ণ করে "আমরা" হয়ে গল্পের বয়ানে যান ... এটাকে বাদ দিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন ... যেমন এই গল্পে কোন আমি থাকবেনা, থাকবেন কয়েকজন লেখক শুধু

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হা হা, ভালো প্রশ্ন। বস- কথা হচ্ছে এইখানে আসলে রুপক বলতে কিছু নাই। আমার মনে হলো, গল্প-পিতাকে একটু জাগতিক রুপে উপস্থাপন করা দরকার...। গল্প বিক্রী ছাড়া এটা ঠিক জমলো না...।

আর ক্রিটিকাল মন্তব্য মাথায় পেতে নিলাম। কখনো সুযোগ বুঝে চালিয়ে দেবো...।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পাঁচ তারা।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আজকে আমার ভালো থাকার দিন ...!!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

অনিকেত এর ছবি

সুহান ভায়া---বলার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না!
অনেকখন চেষ্টা করে শেষমেষ এইটা বলাই স্থির করলাম --"দূর্দান্ত লাগল"।

অনেকে কোন এক লেখকের কথা বলেছেন ---আমি তো কিছুই বুঝলাম না। কার কথা বলা হচ্ছে এইখানে?? একটু আলোকিত করলে ভাল হয়। আমার সাম্প্রতিক কালের সাহিত্যচর্চা নিয়ে কোন ধারণা নেই বলেই হয়ত তোমার লেখায় কারো 'প্রভাব' চোখে পড়েনি। বরং এক ধরনের মোহাবিষ্ট হয়েছি তোমার গল্পের কাহিনী বুননে, গল্প বলার ভাষায়।

সত্যি বলছি---একেবারেই চমকে গিয়েছি আমি।

নিরন্তর শুভেচ্ছা।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

অনিকেত দা, অসাধারণ পেরিয়ে কয় মাইল ??? দেঁতো হাসি
... থাঙ্কু বস, শুনে ভালো লাগছে। আর প্রভাবের কথা তো জানলেনই- বিস্তারিত পরে বলা যাবে খন।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

হিমু এর ছবি

...আমরা এখন জানি যে এই শহরে আর গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না, তাই আমরা আজকাল অন্য কোথাও গল্পের খোঁজ করি। আমরা কুৎসিত কর্পোরেট সংস্কৃতি নিয়া গল্প লিখতে পারি, আমরা প্রায় নিস্পৃহভাবে অথচ নৃশংসতার সাথে ইয়াসমিন অথবা নাজনীন হত্যার গল্প লিখতে পারি, আমরা হ্যালভেশিয়ার একজোড়া চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীমের মাধ্যমে কীভাবে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের বন্ধুত্ব হয় সেই গল্পটাও লিখতে পারি- কিন্তু আমরা তো ১৯৭১ নিয়া লিখতে পারি না...

এইটুকু ছাড়াও গল্পটা শেষ হতে পারতো কিন্তু।

ছায়ার কথা বলবো না, ছায়া শিগগীরই সরে যায়। কায়াটুকু সুন্দর হয়েছে। মনমেজাজ বিলা ছিলো, একটা ভালো গল্প পড়ে মনটা একটু ভালো হলো। ধন্যবাদ।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এইটুকু ছাড়াও গল্পটা শেষ হতে পারতো কিন্তু।

একদম একমত। ড্রাফটে গল্পটা দুইদিন এই শেষের প্যারা ছাড়াই রেখেছিলাম, ঘষামাজা করছিলাম। কী মনে করে কাল যেন শেষের প্যারা যোগ করলাম।
... মন ভালা করেন, বিলা কইরা লাভ নাই।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

অতিথি লেখক এর ছবি

সুহান ভাই এক কথায় অসাধারণ।

ধন্যবাদ।
দলছুট।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দলছুট ভাই, আপনাকেও ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

নির্জন স্বাক্ষর এর ছবি

এক টানা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়লাম। অসাধারন লাগলো। চলুক

তিনটা কথা
১. টুপি খুলে কুর্নিশ।
২. পাঁচাইতে পারিনা, কিন্তু পছন্দের পোস্টে যুক্ত করলাম।
৩. আপ্নে একটা অমানুষ। হিংসা আর হিংসা, কেন যে আমি লিখতে পারিনা।

----------------------------------------------------------------------------

ডানা ভাঙ্গা একলা কাক, পথ শেষে থাক...একলাটি থাক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

১। কই মিয়া, ছবিতে তো দেখা যায় টুপি খুলেন নাই- মজা লন ?? !!!
২। কৃতজ্ঞতা
৩। আরে আপনি যা পারেন, সেটাও কিন্তু আমার জন্যে ঈর্ষার বিষয়। আর আমি এমন কিছু লিখিয়ে নই- হঠাৎ ভালো হয়ে গেছে মালুম লাগে।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

"আমাদের সময় কাটে গল্প লিখে যাওয়াতে, নির্বিবাদে, অনায়াসে।"

"কিন্তু আমরা খোঁজ নিই না, আমাদের গল্পগুলো কেমন আছে- তারা ঠিক মত বড় হচ্ছে কি না- তাদের সকলের চেহারা আলাদা হয়েছে কী না।"

বাহ্!! চমৎকার!! চলুক চলুক চলুক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমাদের গল্পের চেহারা তো আলাদা হইসেই, সিমন ভাইরে জিগান। দেখবেন- আমার গল্প রহস্যোপ্ন্যাসের আকারে কওন যায় না- আপনারটা যায়... দেঁতো হাসি
ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

রেনেট এর ছবি

চমৎকার!
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

থ্যাঙ্কু রেনেট ভাই !!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

৭১ নিয়ে আমি একটা গল্প নিয়া ঘুরতেছি। কিন্তু ঠিকঠাকমতো ক্রাফটিং-ই করতে পারছি না! আশংকা করছি, একদিন হারিয়েই যাবে মাথার ভেতর থেকে।
গল্পটা খুব ভালো হয়েছে সুহান। অনেকেই তোমাকে ছায়ায় কথা বলেছে। এইসব কিচ্ছু না! একদিন তুমি নিজেই নিজের ছায়া তৈরি করতে পারবে!
........................................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পান্থদা তো আবার পারফেকশনিস্ট , তাই ভালো গল্প আশা করছি।
... ৭১ নিয়ে ভালো গল্প আসলেই কম পড়সি, মনেও আসতেসে না তেমন। লিখে দেন একটা।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হের ধুগোকে ধনিয়াপাতা।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

সুহান! ব'লে বুঝানো মুশকিল- এমনই ভালো লাগলো! দুর্ধর্ষ হয়েছে!
আমিও পৃথিবীতে পাঠক হিসেবে খুবই কিপ্টুস, গরিব। আমিও নির্দিষ্ট ক'রে নিশ্চিত ক'রে বুঝতে পারছি না- কার প্রভাবে সাময়িক-দুষ্ট ব'লে বলা হচ্ছে তোমার এই স্টাইলকে! তবে, আমি কিন্তু মনে করি- মোটাদাগের (মানে প্রথমত বা প্রধানত) প্রকারভেদে কয়েকটা বড় আঙ্গিকেরই কোনো না কোনোটার মধ্যে পড়বে তোমার বা আমার লেখা। পুরোপুরি ইউনিক আর মৌলিক স্টাইল এখন সভ্যতার এই পর্যায়ে এসে ক'জন বের করতে পারবে নতুন ক'রে?! পৃথিবীতেই কালের মহাপরিক্রমায় যদি পাঁচ কোটি লেখকও (ম্যাথমো-হাইপোথেটিক্যাল সংখ্যা নিলাম) লেখালিখি ক'রে থাকেন, তার মধ্যে যদি সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার লেখক-ও হন একদম পাঁচতারা-উপযোগী (আউট-অব-দ্য-স্কেল না হয় বাদই দিলাম!), তবু তাদের প্রত্যেকের লেখার ধরন কি ইন্ডিভিজুয়ালি (অ্যান্ড অ্যাবসল্যুটলি) ডিফরেন্ট হয়ে পঞ্চাশ হাজার রকমেরই?! আমি বিশ্বাস করি না। বড়জোর না হয় পঞ্চাশ রকমেরই হ'লো! আর আউট-অব-দ্য-স্কেলও যদি ধরি এখন আরো অন্য পাঁচ হাজার, তবে তাদেরগুলোও কি প্রত্যেকেরটাই পুরোপুরি মৌলিক হয়ে পাঁচ হাজার আলাদা ধরনের?! বড়জোর পঁচিশ ধরনেরই হ'লো না হয়!
পুরোপুরি নভেল ইউনিক স্টাইল তো এখন আর আনা-টা প্রায় অসম্ভব মনে করি আমি! অবশ্যই মোটাদাগের ওই প্রধান বিভাজনটায় ওই পঞ্চাশটা (হাইপোথেসিস অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংখ্যক) ধারার কোনো না কোনোটার মধ্যেই হয়ে তার মধ্যেও অবশ্যই নিজের কিছু না কিছু সেটার মধ্যে যোগ হবেই হবে, না হয়ে পারেই না। তাই, এইটা নিয়ে টেনশন না করতে পরামর্শ দিচ্ছি আমিও। অনেক ভালো হয়েছে। আরো অনেক ভালো হবে। চলুক

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অনিকেত এর ছবি

চলুক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই রকম গুছানো মন্তব্যের একটা মোক্ষম জবাব দেয়া উচিৎ...পার্লাম না।
ভবিষ্যতেও আশা রাখি আপনাদের উপদেশ পাবো- সেটা ছাড়া উন্নতি করার আশা নাই।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

অনিকেতদা', সুহান দু'জনেরই উদ্দেশ্যে- একটা হাসি

হ্যাঁ সুহান, এখন আমিও মিলাতে পারছি। তবে, এখনও বলছি- সমস্যা নাই। ভয় পাওয়ার চে' বরং ভর পাওয়া ভালো ব'লে মনে করি। হ।

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনি কি সম্প্রতি শহীদুল জহিরে ডুবেছেন সোহান?
ডুব দেয়া দরকারী- মনিমুক্তো আহরনের জন্য, দক্ষ ডুবুরীরা পরিমানমতো আহরন শেষমাত্রই ভেসে উঠতে জানেন।

গল্প ভালো লাগলো। শেষের প্যারা অপ্রয়োজনীয় মনে হলো। গল্পের মেসেজ ঠিক আগের প্যারাতেই পাওয়া গেছে।

আবারো ভালো লাগা নিশ্চিত করলাম।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মোরশেদ ভাই ধরে ফেলেছেন। শহিদুল জহির পড়েই আমার এই জাতীয় প্যাটার্ন পছন্দ হলো। কিন্তু আপাততঃ আর পড়ছি না ওনাকে,এই ছায়াভূত নামাতে...।
শেষ প্যারাটা আসলেই বাড়তি অঙ্গের মত দেখাচ্ছে।
ধন্যবাদ পড়েছেন বলে...।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

নিবিড় এর ছবি

শিল্পী সাহেব আপনি আসলেই আস্তে আস্তে শব্দের শিল্পী হয়ে যাচ্ছেন চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মুহাহাহাহা !!!!
বড় নিবিড় করে বললেন ভাইডি ...

বিশাল ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

মামুন হক এর ছবি

...আমরা এখন জানি যে এই শহরে আর গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না, তাই আমরা আজকাল অন্য কোথাও গল্পের খোঁজ করি। আমরা কুৎসিত কর্পোরেট সংস্কৃতি নিয়া গল্প লিখতে পারি, আমরা প্রায় নিস্পৃহভাবে অথচ নৃশংসতার সাথে ইয়াসমিন অথবা নাজনীন হত্যার গল্প লিখতে পারি, আমরা হ্যালভেশিয়ার একজোড়া চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রীমের মাধ্যমে কীভাবে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের বন্ধুত্ব হয় সেই গল্পটাও লিখতে পারি- কিন্তু আমরা তো ১৯৭১ নিয়া লিখতে পারি না...

---আমার কাছে আবার এই প্যারাটা ভালোই লাগলো। গল্প সম্পর্কে অন্যেরা তো বলেই দিয়েছেন। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। আগাগোড়া!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দেখেছেন মামুন ভাই, পাঠকের বৈচিত্র্য ?? আমি এটা কিন্তু একদম লেখার শেষে জুড়ে দিয়েছিলাম। মূল গল্পের সাথে যায় না অবশ্য- তবে আমার যোগ করতে ইচ্ছা হলো।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

বালক এর ছবি

অনেকদিন এরকম ভালো গল্প পড়া হয়ে উঠে না।

_____________________________________________
তুমি হতে পারো একটি স্বার্থক বিষাদের সংজ্ঞা। স্বার্থক নদী, স্বার্থক ক্লান্তি অথবা স্বার্থক স্বপ্ন।

____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

রেশনুভা এর ছবি

নীড়পাতায় আসার সাথে সাথেই পড়ছিলাম। কি লিখব বুঝতেছিলাম না। এখন অবশ্য যেটা বলতাম সেটা অন্য সবাই বলে দিছেন।
প্রিয়তে রাখলাম।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

ফকির লালন এর ছবি

অসাধারন লাগলো ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

থ্যাঙ্কু !!!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

কনফুসিয়াস এর ছবি
সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ কনফুসিয়াস ভাই !!

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সুহান ওরফে শব্দশিল্পী ওরফে জাত লেখক, লেখাটা কয়েকদিন ধরে একবা রকরে পড়ি আর তাড়িয়ে তাড়িয়ে মজা উপভোগ করতেসি, ইচ্ছা করেই মন্তব্য করতেছিলাম না, তাহলে যদি ভুলে যাই, এ নিয়ে ৪ বার পড়লাম, দুর্দান্ত বললে কম বলা হয়, রাতে ঘুমাও কেমনে মিয়া। মনে হয় ঘুমের মাঝেও তোমার মাথায় লেখার প্লট ঘুরে। এমন লেখা পড়লে মনে হয়, সচল হওয়া দরকার, এখানে ভোট দিতে না পারার কষ্টটা থেকে যায়।

কোট করে তোমার লেখাকে সঠিক সম্মান দেওয়া সম্ভব না, লেখাটা সবার খোমাখাটায় ঝুলানো শেষ হইসে, এখন তাই আমি ঝুলাবো, চাই আরো অনেকে পড়ুক, আর অতিথি দের সবার পড়া একান্ত আবশ্যক করা উচিত এই লেখাটা। কেউ যখন মানদন্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলবে তখন আমি নির্দ্বিধায় এই লেখাটা দেখিয়ে বলব, এটা পড়েন, তাহলে বুঝবেন, একটা ভালো লেখা কেমোন হওয়া উচিত। তোমার লেখাটা এখনকার পেশাদার লেখকদের পড়াইতে খুব মনে চায়, বিশেষ কইরা হুমা। তোমারে মিয়া আমার বসের লিস্টে ঝুলাইতে বাধ্য হইলাম। গুরু গুরু

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সাইব্বাই, কী যে সব বলেন - আমি খালি গল্প লেখার চেষ্টা করি মাত্র, লিখতে পারিনা মোটেই। যা লিখি তা এই সচলের লোকেদেরই উপদেশের গুণে। এই সচলে অনেক অনেক বস্‌ লেখক আছেন- তাদের ধারেকাছে যাওয়ার ক্ষমতা আমাদের অনেক পেশাদার লেখকের নাই, এটা জানি...।

ঝুলানোর জন্যে ধন্যবাদ।
... আর আমারে বসের লিস্টে ঝুলাইলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার সাইব্বাই:D

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনার লেখা আগে পড়ি নাই।অড্রে টা পড়েছিলাম আগে , আজ এটা পড়লাম। ভালো লেখেন দেখি। অন্যের প্রভাব মুক্ত হবার একটা সহজ পথ বলি। এক লেখকের সব লেখা এক নাগাড়ে না পড়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা পড়েন। আর লিখতে থাকেন। সবাই আপনাকে উপদেশ দিচ্ছে দেখে মাইন্ড কইরেন না। আপনি বয়সে ছোট তো। তাই সুযোগ পাইলেই সবাই উপদেশ ঝাড়তেছে। আমারটা উপদেশ না ভেবে পরামর্শ ভেবে নিয়েন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।